[গল্পটা পুরো কাল্পনিক, বাস্তবের সাথে এর কোনো সম্পর্ক নেই।]
#Demon_King#
লেখকঃ হৃদয় বাপ্পী
পর্বঃ০৭
।
।
আজ এক সপ্তাহ পার হলো এলেক্স ক্যাপিটালে এসেছে। এই সময়ের মধ্যে এই ওয়ার্ল্ড সম্পর্কে যতটা তার জানার দরকার সেটুকু সে মারিয়ার থেকে জানতে পেরেছে। এক বছর পূর্বে সে এই ওয়ার্ল্ডের কেউই ছিলো না। এমনকি তার নাম এলেক্সও ছিলো না। সে খুব সাধারন একটা মানুষ ছিলো পৃথিবীর, যে টাওয়ারের মধ্যে জোরপূর্বক ঢুকেছিলো। তারপর থেকেই তার জীবন পুরো পাল্টে যায়। এলেক্স কখনো কল্পনাও করতে পারে নি যে ওয়ার্ল্ড ট্রাভেল করা সম্ভব। কিন্তু সব কিছু তার সাথে হওয়ার ফলে তাকে সেটা বিশ্বাস করতেই হবে। এলেক্সের মনে এখন অনেক প্রশ্ন। টাওয়ারের রহস্য এবং সেগুলো মানুষের সামনে উদয় হওয়ার কারন এলেক্সকে ভাবাচ্ছে। তার রিং এতো শক্তিশালী হলেও সেটা কোনো উত্তর দিতে পারছে না সে বিষয়ে। তাহলে টাওয়ারের মধ্যে আরো কতো রকমের ম্যাজিকাল আইটেম রয়েছে সেটা এলেক্স ভেবে পাচ্ছে না। তাকে শীঘ্রই টাওয়ারে প্রবেশ করতে হবে। একমাত্র টাওয়ারই এমন একটা জায়গা যেখানে এলেক্স সব কিছুর উত্তর পাবে।
Tower of Gluttony তে প্রবেশের বেশ কিছু নিয়ম রয়েছে। এগুলো টাওয়ার নিজে তৈরী করে নি। বরং চার Empire এর রয়েল পরিবার হাজার বছর পূর্বে এই নিয়ম তৈরী করেছিলো। চার Empire মিলে একাডেমি নির্মান করে যার মূল লক্ষ ছিলো Elite দের শিক্ষা দেওয়া। টাওয়ারে প্রবেশের অধিকারও তাদেরকে দেওয়া হয়। এরপর থেকে একাডেমি টাওয়ারের প্রবেশ করানোর সকল অধিকার হাতে নিয়ে নেই। যার ফলস্বরূপ এখন কাউকে টাওয়ারে প্রবেশ করতে হলে একাডেমিতে প্রবেশ করতে হয় কিংবা একাডেমির অনুমতি প্রয়োজন হয়। এলেক্স জানে তাকে টাওয়ারে প্রবেশ করতে হলে একাডেমিতে প্রবেশ করতেই হবে। আর তাছাড়াও এই ওয়ার্ল্ডে বিভিন্ন বড় পদের চাকরির জন্যও একাডেমিতে প্রবেশ করতে হয়। অনেকটা পৃথিবীর শিক্ষার মতোই। স্কুল থেকে কলেজ, কলেজ থেকে ভার্সিটি। পড়ার কোনো শেষ নেই, অবশেষে একটা ভালো চাকরির পিছনে দৌড়াতে হয়। এলেক্স এখানেও একই নিয়ম দেখতে পেলো। তবে এলেক্স তার ওয়ার্ল্ডকে অনেক মিস করছে। অচেনা জায়গাকে সহজেই আপন করা যায় না। এলেক্সের জন্য বিপরীত কোনো কিছু হচ্ছে না। যদিও এলমন্ড এবং মারিয়াকে সে নিজের পরিবার বলে মেনে নিয়েছে, কিন্তু তার মন এখানে থাকতে চাচ্ছে না। তার মন পৃথিবীর কথা বললেও তার শরীর এই ওয়ার্ল্ডের বাইরে যেতে চাচ্ছে না। সে যতই গবেষণা করুক না কেনো আজও বের করতে পারে নি সে কিভাবে অন্য একটা শরীরের মধ্যে প্রবেশ করেছে। অনেক কিছুই তার অজানা। যেগুলো তাকে বের করতে হবে।
"কাজল কালো চুল আকাশে ভাসছিলো, চোখের মধ্যে কোনো মায়া কিংবা মমতা কিছুই ছিলো না। মনে হচ্ছিলো একদম জীবিত বরফের মতো। ফর্সা মুখের মধ্যে রক্তের ছিটা যেটা তাকে একজন প্রফেশনাল কিলারের মতো বানাচ্ছিলো। ঠিক পিঠ বরাবার এলেক্সের পিঠের মধ্যে ছোট একটা Sword ঢুকিয়ে দিয়েছে। সেটা থেকে Poison এলেক্সের সারা শরীরে প্রবেশ করছে। এলেক্স নরতে পারছিলো না। এলেক্স সেই ঠান্ডা চোখ দুটোর দিকে তাকিয়ে রইলো। চোখ দিয়ে পানি পরছিলো তার, এতোক্ষনে তার সকল বন্ধুও মারা গিয়েছে, সে কাপা কন্ঠে বলে উঠলো,
-->>কেনো করলে এমনটা? এতো দিনের ভালোবাসা, এতো প্রমিস কি সব তাহলে মিথ্যা ছিলো?
মেয়েটা তার Cold ভাব নিয়ে নিচে পরে থাকা একটা লাশের শরীরে নিজের হাতের Sword এ লেগে থাকা ব্লাড মুছে ফেললো। সে কোনো কথা বলছে না। মেয়েটা সাথে থাকা আরেকটা ছেলের পিছন পিছনে চলে যাচ্ছিলো, এলেক্স চিল্লিয়ে বলতে লাগলো,
-->> কেনো করলে এটা আমার সাথে?
এলেক্সের চিল্লানিতে মেয়েটা পিছনে ফিরলো ঠান্ডা একটা লুক নিয়ে। সে লুকের মধ্যে কোনো মায়া ছিলো না এলেক্সে জন্য।
-->>দোষ অন্যকে না দিয়ে নিজেকে দাও দুর্বল হওয়ার জন্য।
মেয়েটা আর কিছু না বলেই হারিয়ে গেলো অজানায়।"
এলেক্স ঘুম থেকে লাফিয়ে উঠলো। সে এতোক্ষন স্বপ্ন দেখছিলো। তার সারা শরীর ঘেমে ভিজে গিয়েছে। তার স্বপ্নটা কোনো অবাস্তব কিছু নয়। বরং সে তার অতীতের ঘটনায় আবার চোখের সামনে দেখতে পেয়েছে।
তার শরীর থেকে এতোক্ষনে কালো এনার্জি বের হচ্ছিলো, সেটা সে লক্ষ করলো মাত্র। তবে সেই এনার্জি হারিয়ে যেতে সময় লাগলো না। এলেক্স আস্তে করে বলতে লাগলো,
-->>হ্যা দোষ আমারই ছিলো দুর্বল হওয়ার জন্য। কিন্তু সেই ভুল দ্বিতীয়বার হবে না। আমি কথা দিচ্ছি শক্তিশালী না হওয়া পর্যন্ত আমি পৃথিবীতে পা দিবো না।
এলেক্স উঠে আবার বেলকনিতে গিয়ে দাড়ালো। চাঁদের আলোতে সে পূর্বের ভুল গুলো খুজতে লাগলো। তাকে শক্তিশালী হতেই হবে, সে স্বপ্নটার মতো আর কোনো বাস্তবতা চাই না। এই বাস্তবতা দ্বিতীয়বার তৈরী না করতে চাইলে তাকে এমন পাওয়ার লাগবে যেটা দেখে সবাই ভয়ে কথা হারিয়ে ফেলবে।
-->>হ্যা আমার এই টাওয়ারের পিছনে যে শক্তি রয়েছে সেটা প্রয়োজন।
একটা মুচকি হাসি দিয়ে এলেক্স কথাটা বললো।
* * * * *
Tower of Sloth,
প্রথম ফ্লোরের কোনো এক Dungeon এর মধ্যে তিনজন মেয়ে প্রবেশ করেছে। বিশাল Skeleton Army তাদের সামনে আসে যাদেরকে একটা কাটানার Slash এর মাধ্যমে হত্যা করে জাপানী একটা মেয়ে। তার নাম হিনা। তার কাটানা থেকে লাল রঙের একটা তরঙ্গ বের হয় যেটাকে মূলত Sword Aura বলা হয়। এটা এতোটা শক্তিশালী ছিলো যে হাজার Skeleton এক স্লাশেই মারা যায়। এখন শুধু তাদের হাড় ছাড়া আর কিছুই নেই সেখানে। তিনজনের মধ্যে একজন মেয়ে এগিয়ে গেলো, পিছনে জাপানী মেয়ে হিনা এবং আমেরিকার একজন মেয়ে ম্যারি ফলো করতে লাগলো সামনের মেয়েটাকে। ম্যারি হঠাৎ ইংরেজিতে বলে উঠলো,
-->>মিরা তুমি হঠাৎ আমাদের এখানে আনলে কেনো?
সামনে হাটা মেয়েটার নাম মিরা। সে একজন বাংলাদেশী। Cold একটা লুক নিয়ে সে পিছনে তাকিয়ে উত্তর দিলো,
-->>আমি তোমাদেরকে এখানে আনি নি। বরং তোমরা দুজনেই আমার পিছনে এসেছো। কোনো কাজ না থাকলে আমি চাইবো আমাকে একা রেখে চলে যাও তোমরা।
-->>এটা কোনো কথা হলো। আজ এক বছরের আমাদের গভীর বন্ধুত্ব আর তুমি এখনো আমাদের সাথে ভালো মতো কথা বলো না।
কথাটা ম্যারি দুঃখজনক ভাব নিয়ে বললো। মিরা উত্তর দিতে লাগলো,
-->>আমি পূর্বেও বলেছি আমার কোনো বন্ধুর দরকার নেই। আমি একা থাকতেই পছন্দ করি।
-->>না না আমি জানি এটা তোমার মনের কথা না। তুমি দেখতে যতই Cold Blooded হও না কেনো মনে তোমার কোমলতা আছেই।
ম্যারির কথায় মিরা কোনো উত্তর না দিয়ে সামনে হাটতে লাগলো। সে একটা জায়গায় এসে দাড়ালো। যেখানে সে পূর্বের কিছু কথা মনে করছে। তখনি হিনা বলে উঠলো,
-->>আমি এই এক বছরে তোমার চোখে কখনো এরকম লুক দেখি নি। জায়গাটা কি অনেক গুরুত্বপূর্ন
--হিনা তুমি আবার দেখলে কবে সব সময় তো চোখ বন্ধ করেই রাখো তুমি।
ম্যারি হিনার কথায় মজা নিয়ে বললো কথাটা। কথাটা বলার যুক্তি হলো হিনা সব সময় তার চোখ বন্ধু করে রাখে। কিভাবে সে সব কিছু দেখতে পায় সেটা ম্যারি আজো জানে না। মিরা অনেকক্ষন চুপ থাকার পরে বলতে লাগলো,
-->>এখানে আমি আমার জীবনের অনেক গুরুত্বপূর্ন একটা জিনিস হারিয়েছি, হয়তো সেটা আমার কাছে আসলেও আর কখনো আমি আপন করে সেটাকে ফিরে পাবো না।
-->>কি এমন জিনিস হারিয়ে ফেলেছো? যেটার জন্য তোমার চোখ থেকে পানি পরছে?
মিরা বুঝতেই পারে নি তার চোখ থেকে পানি পরছে। তবে হিনার কথায় সে অবাক হয়ে তার চোখের পানি বুঝতে লাগলো। ম্যারি অবাক হলো আজ প্রথম মিরাকে কাদতে দেখে। তাদের এক বছরের বন্ধুত্ব। একে অপরের সম্পর্কে বেশী কিছু না জানলেও তারা প্রত্যেকের ব্যবহার এবং স্বভাব সম্পর্কে খুব ভালো করেই জানে। ঠান্ডা বরফের মতো ছিলো মিরা, যার মুখে কখনো হাসি কিংবা দুঃখ কিছুই দেখে নি, সেই মিরা আজ কাঁদছে। বরফ যতই ঠান্ডা হোক গরম পেলে সেটা এক সময় নাহয় একসময় গলতে শুরু করবেই। সেটাই হচ্ছে মিরার সাথে।
* * * * *
(মিরা রূপে)
সেদিনের দ্বিতীয় পথটা বেছে নেওয়া আমার জন্য সঠিক হয়েছিলো না ভুল হয়েছিলো আমি আজও বের করতে পারছি না। এখন তোমার জন্য অপেক্ষা ছাড়া আমি কিছুই করতে পারছি না হৃদয়। কোথায় আছো কেমন আছো কিছুই জানতে পারছি না। তার কথা যদি সত্য নাহয় তাহলে আমি নিজেকে কখনোই ক্ষমা করতে পারবো না। তোমাকে যে করেই হোক ফিরতে হবে আমার কাছে। আমি সারা জীবন তোমার অপেক্ষা করবো। তোমার মনে আমার জন্য যত ঘৃণায় থাকুক না কেনো, আমি চাই তুমি আবারো আমার কাছেই ফিরে আসো।
* * * * *
Agnolenia এটাকে ম্যাজিকাল ওয়ার্ল্ড বলা যায় না। এটা খুব সাধারন একটা ওয়ার্ল্ড, যার মধ্যে বেশীদিনের না ম্যাজিকের Origin। এটা কোনো ফ্যান্টাসি ওয়ার্ল্ডও নয়, তাই এর মধ্যে Magical, Mystical, Legendary প্রানী থাকে না। ম্যাজিক শুধু নাম মাত্রই ছিলো এখানে, যেটার সঠিক ব্যবহার এক হাজার বছর পূর্বে কেউ জানতো না। তবে যখন থেকে Tower of Gluttony এই ওয়ার্ল্ডে উদয় হয়েছে তখন থেকেই ম্যাজিকের ব্যবহার শুরু হয়। ম্যাজিক শক্তিশালী একটা অস্ত্র হয়ে উঠে। কিন্তু কেউ জানে না কারা এই টাওয়ারের পিছনে রয়েছে, কেনো দিচ্ছে এতো ক্ষমতা সবাইকে।
* * *
মেফাস একাডেমি,
আজ একাডেমিতে বছরের প্রথম দিন। প্রতিবছর এই সময়ে নতুন নতুন ছেলেমেয়েদের একাডেমিতে প্রবেশের একটা সুযোগ দেওয়া হয়। একাডেমি থেকে বেশ কিছু ইনভাইটেশন লেটার পাঠানো হয় রয়েল এবং নোবেল দের কাছে। রয়েল এবং নোবেলদের শুধু এনার্জি টেস্টের মাধ্যমেই একাডেমিতে প্রবেশের সুযোগ রয়েছে। হয়তো সাধারন মানুষ নিজেদেরকে বঞ্চিত ভাবতে পারে। এজন্য তাদের জন্য ভিন্ন রকমের টেস্টের ব্যবস্থা করা হয়। রয়েল এবং নোবেলদের একটু বিশেষ সুবিধা তাদের টাইটেলের জন্য নয়, বরং তাদের বংশের এনার্জির উপরে ডিপেন্ড করে দেওয়া হয়। একটা কিংডমের মধ্যে শক্তিশালী Aura, Pran কিংবা Mana ব্যবহারকারীরাই মূলত নোবেল পদ পেয়ে থাকে। সময়ের সাথে সাথে তার পরিবার অনেক শক্তিশালী হয়ে উঠে। সেই সাথে তাদের বাচ্চারাও এনার্জি ব্যবহারে সাধারন মানুষের তুলনায় অনেক এগিয়ে থাকে। তাই মূলত তাদেরকে একটু স্পেশাল ট্রিটমেন্ট দেওয়া হয়।
উচ্চ পদ ধারী ছেলে মেয়েরা শুধু এনার্জি টেস্টের মাধ্যমে প্রবেশ করে একাডেমিতে। তাদের বেশীরভাগই এনার্জি টেস্টে পাশ করে, কারন সেটা তাদের ব্লাডে থাকে। খুব কম সংখ্যকই এখানে বাদ পরে যায়। টেস্টে পাশ করা রয়েল কিংবা নোবেল ছেলে মেয়েদের তাদের এনার্জি হিসাবে তিন ক্লাসে নিযুক্ত করা হয়। E, D, C এই তিন ক্লাসে তারা ভর্তি হওয়ার সুযোগ পায়।
অন্যদিকে Commoner দেরকে প্রথমে এনার্জি টেস্ট দিতে হয়। যেখানে অনেক সংখ্যক বাদ পরে যায়। এরপর নেওয়া হয় লিখিত টেস্ট। যেখানে বেশ কিছু প্রশ্নের উত্তর দিতে হয়। সাধারনত রয়েল কিংবা নোবেল ছেলেমেয়েরা ছোট থেকেই বিভিন্ন জ্ঞান অর্জনের সুযোগ পায়, কিন্তু Commoner দের সেই সুযোগ না থাকায় এখানে ৯৫% বাদ পরে যায়। এই টেস্টের পরে কমন মানুষদের সর্বশেষ ক্লাসে ভর্তি করানো হয়।
একাডেমির মধ্যে দশটা ক্লাস রয়েছে, এগুলো ছোট থেকে যথাক্রমে 'F', 'E', 'D', 'C', 'B', 'A', 'A+', 'S', 'SS', 'SSS'। রয়েল, নোবেল, কমন মানুষ সবাই আস্তে আস্তে এই ক্লাস গুলো বেয়ে উঠে। ৯৯% কমন মানুষদেরকে 'F' ক্লাসে প্রবেশ করানো হয়। তবে একাডেমিতে প্রবেশ করেই খুশি হওয়ার কোনো বিষয় না। কারন এরপরের বিষয়গুলো আরো কষ্টের।
একাডেমির সকল নিয়ম কানুন সম্পর্কে জানতে পারলো এলেক্স। সে এতোক্ষন এতোকিছু প্রিন্সিপালের অফিসে বসেই শুনতে লাগছিলো প্রিন্সিপালের কাছ থেকে। সে কখনো ভাবতেও পারে নি একদিন পূর্বে মেফাসের প্রিন্সিপালের লেটার সে সরাসরি পাবে। আজ একাডেমি টেস্ট চলছে, যেটা দুটো অংশে বিভক্ত, একটা উচ্চপদস্থদের জন্য। আরেকটা কমন মানুষদের জন্য। তবে এলেক্সকে প্রিন্সিপাল টেস্টে দিতে না দেওয়ায় মারিয়া অবাক হচ্ছে। এলমন্ড এবং মারিয়া দুজনে বসে আছে দুই পাশে, এলেক্স তাদের মাঝখানে বসে আছে।
-->>প্রিন্সিপাল আপনি বলতে চাচ্ছেন আমাদের এলেক্সকে কোনো টেস্টেই অংশ নিতে হবে না! আমরা কমন মানুষ হলেও তো আমাদের কাছে একটা ইনভাইটেশন লেটার রয়েছে। এমন নয় যে আমরা চুরি করেছি সেটা। ডিউকের কন্যা নিজেই এলেক্সকে দিয়েছে সেটা।
এলমন্ড উত্তেজিত হয়ে বললো। সে মনে করছে হয়তো প্রিন্সিপাল এলেক্সকে একাডেমিতে প্রবেশ করতে দিবে না। তাকে প্রিন্সিপাল বলতে লাগলো,
-->>মিস্টার এলমন্ড, আপনার চিন্তার কোনো কারন নেই, আমি আপনাদের ছেলের টেস্ট বাতিল এজন্য করছি না যে সে একাডেমিতে প্রবেশ করতে পারবে না, এজন্য করছি কারন সে একাডেমিতে ভর্তি হয়েই আছে। তাই তাকে টেস্টে অংশ নেওয়ার কোনো প্রয়োজন নেই।
প্রিন্সিপালের কথায় মারিয়া সন্দেহ নিয়ে বলতে লাগলো,
-->>প্রিন্সিপাল আমরা সাধারন Commoner একজন প্রিন্স কিংবা প্রিন্সেসও মনে হয় এমন কোনো সুযোগ পায় না। যেখানে তাদের অন্তত এনার্জি টেস্টে তো অংশ নিতে হয়। তো আমার ছেলে এমন সুযোগ পাচ্ছে কেনো যেখানে একজন কিং নিজে পায় না।
প্রিন্সিপাল মুচকি হাসলেন। তিনি বুঝতে পারলের চেসলির কথা মতো এরা সাধারন কোনো দম্পতি নয়। তাই তাদের রহস্যে সে পা পারালো না। তবে তার আগ্রহ ছোট ছেলেটার উপরে। তাই সে বলতে লাগলো,
-->>আসলে এক সপ্তাহ পূর্বে আমার মেয়েটা ক্যাপিটালে প্রবেশ করছিলো। তখন সে আপনাদের ছেলেকে একজন Commoner কে সবার সামনে সাহায্য করা দেখতে পেয়ে অনেক ইমপ্রেজ হয়। ঘটনাটা সে আমাকে বলে, আর তাছাড়া চেসলির সাথে আমার অনেক ভালো একটা সম্পর্কে। চেসলিও আমাকে আপনাদের ছেলের ব্যাপারটা বললো।
মারিয়া অবাক হলো প্রিন্সিপালের মুখে চেসলির নাম শুনে। তাহলে কি চেসলি প্রিন্সিপালের সাথে যোগাযোগ করেছে। মারিয়া বিশ্বাস করতে পারছে না পুরো প্রিন্সিপালকে। কিন্তু এলেক্সের এনার্জি গোপন রাখার জন্য এটা ভালো সুযোগ। যদিও এনার্জির বিষয় গোপন রাখার ব্যবস্থা মারিয়া করেছিলো, কিন্তু প্রিন্সিপালের সহযোগিতায় সেটা আরো সহজ হয়ে যাবে।
-->>কিন্তু আমি বুঝতে পারছি না, চেসলির সাথে ভালো সম্পর্ক থাকলেও, একজন অচেনা Commoner কে একাডেমির নিয়ম ভেঙে সাহায্য করাটা তো অন্যায়। আমি চাই না আমার ছেলে পিছনের দরজা দিয়ে একাডেমিতে প্রবেশ করুক। আমরা Commoner হতে পারি, তবে সম্মান আমাদেরও আছে।
এলমন্ড খুব আগ্রহ নিয়ে কথাটা বললো। প্রিন্সিপাল আরেকটা সুযোগ খুজে পেলো। তার আরো Demonic Energy Stone এর প্রয়োজন। যেটা সে এখন পেতে পারবে। আর তাছাড়াও রুমের মধ্যে তাদের ছাড়া কেউ নেই। এতে করে এলেক্সের বাবা মাও তার সাহায্য চাইবে এই আশা করছে প্রিন্সিপাল।
-->>আচ্ছা মিস্টার এলমন্ড আপনি যখন এলেক্সকে পিছনের দরজা দিয়ে প্রবেশ করাতে চান না, তাহলে ওর এনার্জি টেস্ট হয়ে যাক এখানে। যেহেতু আপনাদের কাছে লেটার রয়েছে একটা তাই এনার্জি টেস্ট হয়ে গেলে আপনাদের আর কোনো আপত্তি থাকবে নাতো?
-->>না না একদমই না। যদিও এটাকেও পিছনের দরজা দিয়েই ঢোকা বলে, তারপরও এটা একটা সম্মানের বিষয়।
এলমন্ড উত্তর দিলো বুক ফুলিয়ে। মারিয়া কিছু কথা বলছে না। সে প্রিন্সিপালের ভাবনা ধরতে পেরেছে। মনে মনে মারিয়া একটা হাসি দিলো। কারন সে জানে প্রিন্সিপালের প্লান এখানে কাজ করবে না।
প্রিন্সিপাল একটা চুটকি বাজালে আঙ্গুল দিয়ে। সাথে সাথে তার রুমের জানালার উপরের একটা তাক থেকে বড় এনার্জি স্টোন উড়ে চলে আসলো। টাওয়ারের মধ্যে পাওয়া উচ্চ এনার্জি স্টোন এটা। এটার মাধ্যমে আনলিমিটেড এনার্জি পরিমাপ করা যায়। প্রিন্সিপাল ভাবছে এটা দিয়ে সে এলেক্সের শরীর থেকে অনেক সংখ্যক ডিমনিক এনার্জি এবজোর্ব করতে পারবে। মূলত এনার্জি স্টোন শরীর থেকে এনার্জি এবজোর্ব করার মাধ্যমে গ্লো করে এবং বিভিন্ন এনার্জি ডিটেক্ট করে। একটা উচ্চ লেভেলের এনার্জি স্টোন এক হাজার মিডিয়াম লেভেল এনার্জি স্টোনের সমান এনার্জি এবজোর্ব করতে পারে। যেটাকে আনলিমিটেড ও বলা হয়ে থাকে।
স্টোনটা টেবিলের উপরে এসে থামলো। প্রিন্সিপাল বলতে লাগলো,
-->>আমি মেফাসের প্রিন্সিপাল। এখানে এলেক্স এলমন্ড এর এনার্জি টেস্ট নিচ্ছি।
প্রিন্সিপাল অনেক কৌতুহলী হলেন। তার এক ঢিলে দুই পাখি মারা হয়ে যাবে। এক সাথে সে উচ্চ লেভেল এনার্জি স্টোন পেয়ে যাবে এবং এলেক্সের ডিমনিক এনার্জির ব্যাপারটা এখানে ফাস হলে এলেক্সের বাবা মা তার সাহায্য চাইবে বিষয়টা গোপন রাখার জন্য। যার মাধ্যমে প্রিন্সিপাল এলেক্সকে নিজের কাছে রাখতে পারবে। তার জীবন এবং ভবিষ্যতের জন্য এলেক্সের ডিমনিক এনার্জি অনেকই গুরুত্বপূর্ণ।
মারিয়া এই সময়ের জন্য পূর্বে থেকে প্রস্তুত হয়ে এসেছিলো। প্রিন্সিপালের সকল আশা ভেঙে গেলো যখন এনার্জি স্টোনে কোনো রকমের ব্লাক কালার উধয় হলো না। স্টোনটা নীল রঙে পরিবর্তন হলো। যেখানে এলমন্ডের সকল আশা ভেঙে দিলো। এলমন্ড ভেবেছিলো এলেক্স Aura user হবে। সেটা না হলেও অন্তত ওর মায়ের মতো Pran user হবে। কিন্তু তাদের দুটোর কোনোটায় না হয়ে এলেক্স একজন Mana user। যদিও এটা খারাপ কিছু না। তবে এলমন্ডের মন তেমন খুশি হলো না এই ব্যাপারে। এলমন্ড ছেলের সাথে Swordmanship প্রাকটিস করতে চেয়েছিলো যেটায় তার হতাশ হতে হলো। প্রিন্সিপাল অবাক হলেও সে ভাবতে লাগলো, হয়তো সেদিন অনেকটা এনার্জি এবজোর্ব হওয়ার কারনে এখন কোনো এনার্জি ছিলো না। তবে সে সুযোগ হারাচ্ছে না। পরে কোনো এক দিন কিংবা সময়ে সে আবার সুযোগ পাবে। কারন এলেক্স এখানেই আছে, কোথাও যাচ্ছে না।
* * *
To Be Continue
* * *
কেমন হলো জানাবেন। ভুল ত্রুটি তুলে ধরার চেস্টা করবেন।