[প্রথমেই বলি গল্পটা পুরো কাল্পনিক, কেউ বাস্তব কিংবা ধর্মের সাথে তুলনা করবেন না]
#ডিম্যান_কিং_সিরিজ#
#সুপ্রিম_বিয়িং#
পর্ব:২২
লেখকঃহৃদয় বাপ্পী
.
.
.
রিচুয়ালের এক মাস সময় শেষ হতে আর মাত্র এক ঘন্টা সময় বাকি। সকল প্লেয়ারই তাদের সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছে এই এক মাস সারভাইভ করতে। বেশ কিছু প্লেয়ার এই এক মাসের মধ্যে মারাও গিয়েছে। গেমটা এরকম ভাবে তৈরী করা হয়েছে যেখানে কেউই সেফ জোনে বসে থাকতে পারবে না। খাবারের জন্য সবাইকে বের হতে হয়েছিলো। আর দুর্বলরা তখনি টার্গেট হয়েছে। আবার অনেকে আছে যারা কোনো ভাবে নিজেদের বাঁচাতে পেরেছে এই হেলিস রিচুয়াল গেম থেকে।
* * * *
(জ্যাক চরিত্রে)
আমি চেয়েছিলাম বের হতে, কিন্তু যেহেতু এতো সুন্দর একটা জায়গা আমি পেয়েছি তাই আর আমি এটাকে ছাড়ি নি। আন্ডারগ্রাউন্ড বাঙ্কার তাউ আবার চৌধুরী পরিবারের নিচে, এর থেকে সুরক্ষিত জায়গা আর একটাও হতে পারে না। আর তাছাড়া আমি এখানে অনেক বড় একটা সম্পদও পেয়েছিলাম। সুপার কম্পিউটার মরিচের সাহায্যে আমি আমার না সরি আকাশের টাকা ফেরত পেয়েছি। তাই আমাকে আর বাইরে গিয়ে কিছু করতে হয় নি।
অনেকে ভাবতে পারে এই বদ্ধ রুমের মধ্যে আমরা কি করেছি? ওয়েল এই রুমটা বানানো হয়েছিলো পৃথিবীর সবচেয়ে শক্তিশালী একটা ধাতু দিয়ে, ধাতুটার নাম বলতে পারছি না। তবে আমাদের ট্রেনিং এর ফলে কার্যকারিতা দেখতে পেয়েছি। আমি এবং জিতু এখানে প্রবেশের পূর্বে আমাদের এক মাসের খাবারের সাপ্লাই কিনে এনেছিলাম ব্লাক মার্কেট থেকে। যার কারনে কোনো সমস্যা হয় নি এতোটা সময় কাটাতে।
আর তাছাড়া এক বিষয়ে যে আমি লাভবান হয়েছি। জিতুকে আমার একটা সোর্ড টেকনিক শিখিয়েছি, যার বিনিময়ে সে আমাকে তার এক্সট্রিম ফিস্ট স্কিলটা শিখিয়েছে। জিতু প্রথম থেকেই আমাকে মার্শাল আর্টিস্ট মাস্টার মনে করছিলো, কিন্তু আমি মোটেও মার্শাল আর্ট জানতাম না। কিন্তু যখন আমার সোর্ড স্কিল সে দেখেছিলো তখন বলেছিলে,
-->>আমি জানতাম না মাস্টার জ্যাক একজন সোর্ডসম্যানও। মার্শাল আর্টের সবচেয়ে শক্তিশালী একটা অস্ত্র হলো সোর্ডস স্কিল।(জিতু)
জিতুর কথায় আমি বুঝেছিলাম যে তলোয়ার নিয়ে নারাচারা করলেও মার্শাল আর্টিস্ট হওয়া যায়। তাই তো সে তার স্কিলের বিনিময়ে আমার স্কিল শিখতে আগ্রহী হয়েছিলো। যদিও আমি আপাতোতো সোর্ড ছাড়া ফাইট করতে পারতাম না, কিন্তু এখন একটা ট্রাম্প কার্ড রয়েছে আমার কাছে। এক্সট্রিম ফিস্ট একটা মার্শাল আর্ট টেকনিক বা স্কিল যেটা সাধারনত হাতের সাহায্যে ব্যবহার করতে হয়। একজন সাধারন মার্শাল আর্টের জন্য এটা একটা ব্যাসিক স্কিল। যদিও এটা সহজ মনে হবে কিন্তু প্রথম প্রথম অনেক মনোযোগের প্রয়োজন হয়। আর যেহেতু সময় আমার কাছে কিছুই নয়, তাই এটা আমার জন্য এক টুকরো কেকের মতোই লেগেছিলো।
আমি সাত দিনেই এক্সট্রিম ফিস্ট স্কিলটা মাস্টার করে ফেলেছি যেটা এক বছরের অধিক সময় লেগেছিলো জিতুর জন্য। যার ফল স্বরূপ আমার প্রতি জিতুর শ্রদ্ধা আরো বেশী বেড়েছে। যাইহোক আপাতোতো এই ডিটেইলসে না গিয়ে আসল কথায় ফেরা যাক। আমি আজকে জিতুকে আমার একাউন্টে বাইন্ড করেছে। যদিও পাঁচ জনকে আমি দ্বিতীয় জোনে নিতে পারবো, কিন্তু একজন আমার জন্য যথেষ্ট। আমার জিতুর উপরে পুরো ভরসা রয়েছে। আমি এখনো কোনো টাকা রিচার্জ করি নি। মূলত আমি কারো চোখে পরতে চাচ্ছিলাম না তাই এখনো অপেক্ষা করছিলাম। কিন্তু অপেক্ষার সময় শেষ। আমি জিতুর বানানো কার্ডের মধ্যে আফিফ চৌধুরীর একাউন্টে থাকা সকল টাকা ট্রান্সফার করেছিলাম। আর সেটা এখন আমার হাতে।
শুধু কি তাই, এই রুমের সিলিং দিয়ে একটা সিকরেট দরজা রয়েছে। যেটা দিয়ে উঠলে সোজা আসিফ চৌধুরীর ভল্টের মধ্যে পৌছানো যায়। দ্বিতীয় দিনে আমি এবং জিতু গিয়ে সেটা ক্লিয়ার করেছি। অনেক গোল্ড এবং বেশ ডাইমন্ড ছিলো সেখানে। যেটাও বর্তমানে আমার হাতে। সব মিলিয়ে কত টাকা আমার কাছে আছে আমি বলতে পারবো না। কিন্তু আমি এতোটুকু সিওর যে এক নম্বরে পৌছে যেতে পারবো এটা দিয়েই।
-->>মাস্টার আকাশ, সরি মাস্টার জ্যাক এখন কি রিচার্জ করবেন?(জিতু)
জিতু আমার পরিচয় জানতে পেরেছে। এটা অনেকটা সহজ, কারন চৌধুরী পরিবারের কেউ ছাড়া এখানের লোকেশন কারো জানার কথা না। আর আকাশ চৌধুরী ছাড়া কেউ সাহসও করবে না এমন কাজ করার। তাই জিতু ব্যাপারটা স্বাভাবিক ভাবেই নিচ্ছে। তবে একটা জিনিস তার জানতে খুব আগ্রহ।
"মাস্টার আকাশ কখন মার্শাল আর্ট শিখলো?"
আমি সময় নষ্ট না করে রিচার্জ শুরু করলাম। ডান হাতে মোবাইলটা নিয়ে বাম হাতে টাকার ক্রেডিট কার্ডটা ধরলাম। মোবাইলের ক্যামেরা বরাবর কার্ডটা রাখলাম।
-->>রিচার্জ।(আমি)
আমি রিচার্জ বলাতেই বাম হাতের কার্ডে হালকা আলো জ্বলে সেটা উধাও হতে শুরু করলো। এবং মোবাইলের মধ্যে একটা মেসেজ আসলো।
<কনগ্রাজুলেশন প্লেয়ার জ্যাক। আপনি দুইশত বিলিয়ন টাকা রিচার্জ করেছেন।>
<প্লেয়ার জ্যাক আপনি দুই লক্ষ গোল্ড কয়েন পেয়েছেন।>
আমি এটাতেই থামলাম না। সকল গোল্ডের উপরে ক্যামেরা রাখলাম এবং রিচার্জ করে নিলাম সেগুলো।
<কনগ্রাজুলেশন প্লেয়ার জ্যাক। আপনি একশত বিলিয়ন এর গোল্ড রিচার্জ করেছেন।>
<প্লেয়ার জ্যাক আপনি এক লক্ষ গোল্ড কয়েন পেয়েছেন।>
<আপনার মোট গোল্ড কয়েনের পরিমান তিন লক্ষ এক হাজার>
<এক লক্ষ গোল্ড কয়েন রিচার্জ করানোর জন্য প্লেয়ার জ্যাক স্পেশাল কিছু গিফট পাবেন>
<দুই লক্ষ গোল্ড কয়েন রিচার্জ করানোর জন্য প্লেয়ার জ্যাক স্পেশাল কিছু গিফট পাবেন>
<তিন লক্ষ গোল্ড কয়েন রিচার্জ করানোর জন্য প্লেয়ার জ্যাক স্পেশাল কিছু গিফট পাবেন>
<রিচুয়ালের দ্বিতীয় টেস্টে প্লেয়ার জ্যাক তার গিফট পেয়ে যাবে।>
<ধন্যবাদ প্লেয়ারকে এতো টাকা রিচার্জ করার জন্য।>
আমি অবাক হলাম না। তিনলক্ষ গোল্ড কয়েন আমার জন্য কম হয়ে যাচ্ছে।
-->>এক মিলিয়ন হলে একটা কথা ছিলো।(আমি)
-->>আমার মনে হয় এটাই অনেক হয়েছে। তাছাড়া আপনার উপরে কেউ র্যাঙ্কিং এ যেতে পারবে বলে মনে হচ্ছে না।(জিতু)
জিতু আসলেই ঠিক বললো। তিন লক্ষ এক হাজার গোল্ড কয়েন নিয়ে আমি সবার প্রথমে ছিলাম র্যাঙ্কিং এ। দ্বিতীয়তে রয়েছে এমিলি যার সোজা এক এক লক্ষ গোল্ড কয়েন রয়েছে। তিন নম্বরে যে রয়েছে তার সত্তর হাজার গোল্ড কয়েন রয়েছে। আমি অবাক হলাম যে রাজ কিংবা জারা কেউই টপ দশের মধ্যে নেই সেটা দেখতে পেয়ে।
-->>হয়তো সবাইকে গরীব ভেবেছিলাম।(আমি)
-->>ব্লাক মার্কেটের মধ্যে অনেক লোক আছে যাদের বাইরে থেকে ভিক্ষুক মনে হলেও টাকার দিক দিয়ে অনেকটা ধনী।(জিতু)
জিতুর কথায় বুঝতে পারলাম যে অনেক সম্পদশালী লোক রয়েছে এই এরিয়ার মধ্যে। যদিও তাদের ব্যাংকে বেশী ক্রেডিট নেই, তারপরও স্বর্ন এবং রৌপ্য তো বাদ দেওয়া যায় না। বআবার রয়েছে ডাইমন্ড। আমার কাছে বেশ কিছু রয়েছে, তবে আমি এখন এগুলো ব্যবহার করতে চাচ্ছি না। যদি সেটা পরে কাজে দেই কখনো তাহলে ব্যবহার করা যাবে।
* * * * *
জ্যাক এখনো বের হয় নি বাঙ্কার থেকে। সে এমন জায়গায় আছে যেখানে কেউ তাকে খুজে বের করতে পারবে না। এক ঘন্টা সময় পার হওয়ার পর সবার মোবাইলে মেসেজ আসতে শুরু করলো।
<কনগ্রাজুলেশন প্লেয়ারস। আমি টাওয়ার অফ গ্রিডের জি এম গ্রিড। যারা রিচুয়ালের প্রথম টেস্টে পাশ করার শর্ত পূর্ন করতে পেরেছো তাদের সবাইকে আমি শুভেচ্ছা জানায়।>
<যেসব প্লেয়ারদের একাউন্টে ১৫০০০ গোল্ড কয়েন বা বেশী রিচার্জ রয়েছে তারা এবং তাদের প্রত্যকের সাথে পাঁচ জন সিলেক্ট করা মানুষ রিচুয়ালের দ্বিতীয় টেস্টে পা রাখবে।>
<তাছাড়া বাকি সকল কিছু এবং সকল মানুষের কাছ থেকে এই রিচুয়াল ভিত্তিক সকল স্মৃতি মুছে যাবে। তাই নো টেনশন>
<পাশ হওয়া প্লেয়ারগুলো এখন দ্বিতীয় টেস্টের ওয়েটিং রুমে প্রবেশ করবে। তাই সবাইকে হ্যাপি গ্যামিং>
জ্যাক কিছু বলতে যাবে তখনি সে সহ জিতু বাঙ্কার থেকে সোজা টেলিপোর্ট হয়ে গেলো। একটা কালো আলোতে তাদেরকে ঘিরে ধরলো এবং যখন তারা চোখ খুললো তখন নিজেদের একটা আননোন জায়গার মধ্যে পেলো।
-->>এটা কোথায় আসলাম?(জ্যাক)
জ্যাক ভালো করে লক্ষ করলো, মনে হচ্ছিলো সে একটা থিয়েটারে বসে আছে। অনেক সংখ্যক সিটের মধ্যে অনেকটা পিছনে সে বসে আছে। তার পাশে জিতু টেলিপোর্ট হয়ে এসেছি। জ্যাক পরিস্থিতি বোঝার চেষ্টা করলো তখনি সামনে থেকে একটা আওয়াজ শুনতে পেলো।
-->>আমি সবাইকে শুভেচ্ছা জানায়। আমাকে হয়তো এখানের কিছু সংখ্যক লোকই চিনবে। তাই আমি আমার পরিচয় দিচ্ছি। আমার নাম ভ্যানসিহা। আমি এসোসিয়েশান হেডকোয়ার্টার এর প্রধান লিডার।
একটা সুন্দরী মধ্যবয়স্ক মহিলা কথা বলতে লাগলো। জ্যাক তার দিকে তাকিয়ে পরিস্থিতি বোঝার চেষ্টা করতে লাগলো। আশে পাশে খেয়াল করে সে দেখলো তার(আকাশের) পরিচিত অনেকেই রয়েছে।
-->>আমি জানি সবাই কনফিউশনে আছে যে কি হচ্ছে তাই না? মূলত রিচুয়াল শুধু এক এরিয়ার জন্য ছিলো না। এটা সমস্ত ছাব্বিশ এরিয়ার মধ্যেই সংঘঠিত হয়েছে আলাদা ভাবে। আর সেখান থেকে মাত্র আপনারায় সেকেন্ড টেস্টে অংশ নিতে পারবেন।
পুরো থিয়েটারের মতো জায়গাটা ভরা ছিলো। যেখানে প্রায় পাঁচ হাজারের মতো মানুষ রয়েছে। যাদের সবাই ছাব্বিশটা এরিয়া থেকে রিচুয়ালের প্রথম টেস্টে পাশ করে এখানে এসেছে। পাঁচ হাজারের মধ্যে আশি শতাংশই প্লেয়ারের সিলেক্ট করা পাঁচজন লোক। যারা অধিকাংশ ক্ষেত্রেই প্লেয়ারদের পরিবার হয়ে থাকে। এখানে যারা আছে তাদের মধ্যে হয়তো তারা ধনী ছিলো কিংবা শক্তিশালী কোনো ব্যক্তি ছিলো।
-->>অনেকের কাছে মনে হতে পারে, টাকার জন্য প্রথম রিচুয়াল সহজ বা কঠিন হয়ে দাড়িয়েছে। এমন কিন্তু নয়, টাওয়ার অফ গ্রিডের নামের সাথে কাজেরও মিল রয়েছে, যদি আপনাদের মধ্যে তীব্র লোভ না থাকে তাহলে টাওয়ারে কখনোই প্রবেশ করতে পারবেন না। তাইতো টাওয়ারের জি এম সবাইকে টাকার খেলায় নামিয়ে দিয়েছিলো। এমন নয় যে এতো টাকা নষ্ট করে আপনারা কিছুই পাবেন না? কারন পরবর্তী টেস্টে পাশ না করলেও কোনো ভাবে বেঁচে গেলে অনেক কিছুই পেয়ে যেতে পারবেন।
সবার মনোযোগ এসোসিয়েশান এর লিডারের দিকে রয়েছে। জ্যাকও সেদিকে তাকিয়ে রয়েছে। সে লক্ষ করলো মহিলাটার পিছনে পঁচিশ জন লোক দাড়িয়ে আছে। যাদের সবার পরনেই সাদা জামা। সামনের মহিলা একা একটা লাল জামা পরে আছে।
"এটা কি ড্রেস কোড নাকি? মনে হচ্ছে এসোসিয়েশানে ড্রেসের কালার দেখে তাদের পদের মান নির্নয় করা যায়।" (জ্যাক ভাবছে)
জ্যাক খেয়াল করলো পিছনে এরিয়েলও দাড়িয়ে আছে। মেয়েটা লাইনের মধ্যে সবচেয়ে ছোট। জ্যাক বুঝতে পারলো পঁচিশ এরিয়ার এসোসিয়েশান লিডার তারা। আর সামনের ব্যক্তিটা যে লাল কালারের ড্রেস পরে আছে সে এসোসিয়েশান হেডকোয়ার্টার এর প্রধান লিডার।
-->>আমি কারো সময় নষ্ট করবো না। সবাই হয়তো এতোক্ষনে বুঝে গিয়েছো যে টেস্টের মধ্যেই জি এম সকল নিয়ম কানুন বলে দিবে। তাই আমাদের এখানে বলার কিছু নেই। তবে একটা নিয়মই বলে রাখতে চাচ্ছি। এই টেস্টে শুধু শত্রু আপনাদের আশেপাশের মানুষ নয়, বরং ভয়ঙ্কর কিছু মনস্টারও রয়েছে। তাই চাইবো এবার সবাই বেশী সতর্ক থাকবেন।
-->>সবশেষে বলবো বেস্ট অফ লাক্।
থিয়েটারের মতো জায়গার মতো এখন শব্দ শুরু হতে লাগলো। এক এক জন কথা বলতে শুরু করেছে।
-->>এটা কি রকম ওয়েলকাম হলো?
-->>এসোসিয়েশান কি আমাদের সাথে খেলা করছে?
-->>এই এসোসিয়েশান লোকদের কাছে কিছুটা ক্ষমতা থাকায় তারা আমাদের ছোট করে দেখে।
-->>অন্তত কি করবে হবে আমাদের সেটা তো বলতো।
-->>এক মাস কষ্ট করেছি আমরা, এখন কি আবারো সেই একই জিনিস করতে হবে?
-->>আমি কি ভুল শুনলাম? সে বললো মনস্টারের কথা। সত্যি মনস্টার রয়েছে নাকি?
-->>সবাই একটু বেশী চিল্লাচিল্লি শুরু করেছে।
অন্যদিকে জ্যাক চুপ চাপ করে বসে ছিলো। মহিলাটার একটা কথা তাকে অনেক ভাবাচ্ছে।
-->>আসলেই কি মনস্টারদের সাথে আমাদের লড়তে হবে?(জ্যাক)
-->>মাস্টার জ্যাক আমি কি রেজিস্টার করে নিবো?(জিতু)
জ্যাক জিতুর দিকে লক্ষ করলো। জিতুর হাতে জ্যাকের মতো একটা ফোন রয়েছে। শুধু জিতুর হাতে নয়, এই রুমের সবার হাতেই একটা করে রয়েছে। যারা প্লেয়ারদের সাহায্যে এখানে এসেছে তাদের সবার হাতেই একটা করে মোবাইল এসেছে।
-->>হ্যা করে ফেলো।(জ্যাক)
জ্যাক বুঝতে পারলো সবাইকে প্লেয়ার বানানো হয়েছে এই টেস্টে। জ্যাক নিজের মোবাইল বের করলো। তার নিজস্ব ব্যবহার যোগ্য ইলেকট্রনিক ডিভাইস এখানে কাজ করছে না। কিন্তু জি এম এর দেওয়া মোবাইলটা কাজ করছে। মোবাইলে একটা মেসেজ রয়েছে,
<প্লেয়ার জ্যাক প্লেয়ার জিতুকে স্পনসার করেছে। প্লেয়ার জ্যাকের একাউন্ট থেকে পাঁচ হাজার গোল্ড কয়েন কেটে প্লেয়ার জিতুর একাউন্টে দেওয়া হয়েছে।>
-->>সবাই ভালো করে শুনে রাখেন। হয়তো এতোক্ষনে সবার কাছে মোবাইল পৌছে গিয়েছে। নিজেদের একাউন্ট তৈরী হয়ে যাওয়ার পরে মোবাইলের বিভিন্ন ফাংশন ব্যবহার করতে পারবেন।
মহিলাটা আবারো কথা বললো। সবাই কিছুটা বিরক্ত হলো। কারন সে একটু পূর্বেই তার ভাষন শেষ করে আবার শুরু করেছে কথা বলা এজন্য। তবে জ্যাক সেদিকে কান দিলো না। সে তার ভাবনায় ভাবতে লাগলো,
"আমার তো গিফট পাওয়ার কথা।" (জ্যাক)
জি এম এর থেকে একটা মেসেজ আসছিলো, সেখানে বলা হয়েছে জ্যাক একটা গিফট পাবে, কিন্তু এখনো কোনো গিফট পায় নি সে।
"তাহলে কি দ্বিতীয় জোন শুরু হলে পাবো আমি? আর মার্কেট অপশনটা খুলবে কখন? আমার তো ভ্যালিরাকেও কিনে রাখতে হবে।" (জ্যাক ভাবছে)
সবাই বুঝতে পারছে না এরপরে কি হবে। কোনো কিছু স্পষ্ট ভাবে কেউ ব্যাখ্যা দিচ্ছে না। কি থেকে কি করতে হবে কেউ ভেবে পাচ্ছে না। এসোসিয়েশান এর লোকদের প্রসারের কারনে কিছু বলাও যাচ্ছে না তাদের। তাই সবাই একে অপরের সাথে কথা বলেই সময় পার করছিলো।
-->>ঠিক আছে তাহলে আমাদের ওয়েটিং রুমের মিটিং শেষ, কারন এখনি সবাই দ্বিতীয় টেস্টের লোকেশনে পৌছে যাবেন.............
মহিলাটার বক বক জ্যাক শুনে যা বুঝলো তাতে একটা ডানজ্যানের মধ্যে তাদের সবাইকে প্রবেশ করতে হবে। ড্যানজনের দশটা ফ্লোর থাকবে, যারা প্রতি ফ্লোর শেষ করে শেষ ফ্লোরে পৌছাতে পারবে তারায় এই টেস্টে জয়ী হতে পারবে এবং টাওয়ারে প্রবেশ করতে পারবে। রিচুয়ালের এই টেস্টটা টাওয়ারের মধ্যে হবে, ড্যানজনটা টাওয়ার অফ গ্রিডের টেস্ট গ্রাউন্ডের মধ্যে রয়েছে।
"তাহলে এবার আমাদের ড্যানজনের মধ্যে প্রবেশ করতে হবে!" (জ্যাক)
জ্যাকের ড্যানজন নিয়ে অনেক খারাপ অভিজ্ঞতা রয়েছে। একবার এক গুহার মধ্যে প্রবেশ করে প্রায় এক যুগের বেশী সময় বন্ধী থাকতে হয়েছিলো তাকে।
"ভাগ্য ভালো সে জায়গাটা ড্রিম স্পেসের সাহায্য তৈরী ছিলো" (জ্যাক)
ড্যানজন মূলত আদি কালে তৈরী হতো মনস্টার কিংবা আসামীদের বন্ধী করার জন্য। যেহেতু মাটির গভীরে বাঙ্কারের মতো তৈরী হতো তাই কোনো মনস্টার কিংবা ভয়ানক আসামী ড্যানজন থেকে কখনো বের হতে পারতো না। জ্যাকের মনটা নতুন এডভেঞ্চারের জন্য উত্তেজিত হয়ে গেলো। সে পূর্বের একমাস তেমন কিছুই করে নি। তবে এখন ভালো একটা সুযোগ পেয়েছে।
-->>মাস্টার জ্যাক, আমি হয়তো বুঝতে পেরেছি আমাদের টাকার মান প্রতি বছরে এতো কমে যাচ্ছে কেনো।(জিতু)
-->>হ্যা সেটা তো আমিও বুঝতে পেরেছি।(জ্যাক)
প্রতি বছরে অসংখ্য পরিমান টাকা ব্যয় হয়ে যায় এই রিচুয়ালের মধ্যে। জ্যাক সুপার কম্পিউটারের রেকর্ড থেকে খেয়াল করেছে রিচুয়ালের শেষে আবার নতুন করে টাকা ছাপানো হয়। যার কারনে টাকার মান দিন দিন কমে যাচ্ছে। অবশ্য জ্যাকের এসব নিয়ে কোনো চিন্তা নেই, কারন সে বর্তমানের অবস্থাকে ভালো ভাবে পর্যবেক্ষন করছে।
জ্যাকের হাতে একটা চিঠি এসেছে, কালো স্যুট পরা এসোসিয়েশান এর এক লোক জ্যাকের কাছে একটা চিঠি পাঠিয়ে দিয়েছে। চিঠিটা কার থেকে এসেছে এটা বুঝতে সময় লাগলো না তার। ভিতরে তেমন কিছু ছিলো না,
[এই রাউন্ডে সকল গোল্ড কয়েন শেষ করে ফেলবে এবং প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র গুলো কিনবে। টাওয়ারে এই গোল্ড কয়েন গুলো কোনো কাজেই দিবে না। দেখা হবে টাওয়ারের মধ্যে এক সাথে।]
জ্যাকের শরীরে একটা কাপুনি দিয়ে উঠলো। সে ভুলেও এরিয়েল এর সাথে দেখা করতে চাই না, তারপরও এরিয়েল নিজ থেকে জ্যাকের সাথে দেখা করতে চাচ্ছে।
-->>মেয়েটা এতো চুম্বক কেনো? আমাকে কি একা থাকতে দিবে না?
আবারো সামনে থেকে মহিলাটা তার কথা শুরু করলো। লোকজন এমনিতেই তার উপরে বিরক্ত। কারন সে কথা শেষ করে এমন ভাবে যে আর কোনো কথা বলবেই না। কিন্তু আবারো একটু পরে শুরু করে।
-->>জি এম দ্বিতীয় রাউন্ড শুরু করেছে। সবার সাথে দেখা হবে আবার যদি ভাগ্যে থাকে।
মহিলাটা কথা শেষ করার সাথে সাথে সবার মোবাইলে মেসেজ আসতে শুরু করলো।
<ওয়েলকাম প্লেয়ারস। সবাইকে রিচুয়ালের দ্বিতীয় টেস্ট লোকেশনে পাঠানো হবে। তাই সবার সর্বোচ্চ চেষ্টা করবে।>
<এই টেস্টে ভালো পারফরমেন্স করলে শক্তিশালী বিয়িং যাদের রুলার বা গড বলা হয়, তাদের পছন্দ কারী অ্যাভেটার হওয়ার সুযোগ পাবে। একজন অ্যাভেটার চাইলে তাদের সিলেক্ট করা গডের ক্ষমতা ব্যবহার করতে পারবে।>
<তাই আমি চাইবো সবাই ভালো পারফরমেন্স করবে, কারন সবাই এক সময়ে হিরো হওয়ার যোগ্যতা অর্জন করতে পারবে।>
জ্যাক মেসেজ গুলোর দিকে তাকালো। বেশ গভীর চিন্তায় ব্যস্ত সে।
"শক্তিশালী বিয়িং যারা নিজেদের ক্ষমতা অন্যদের দান করতে পারে!" (জ্যাক ভাবছে)
জ্যাকের হঠাৎ বানরের কথা মনে পরলো। বানরটাও তো তাকে নিজের ক্ষমতা দান করেছিলো। আর যেহেতু তার সাথে বানরটার কন্ট্রাক রয়েছে একটা তার মানে কি সে মাঙ্কি কিং এর অ্যাভেটার?
* * *
To Be Continued
* * *
কেমন হলো জানাবেন। ভুল ত্রুটি তুলে ধরবেন, যাতে ঠিক করতে পারি।