[প্রথমেই বলি গল্পটা পুরো কাল্পনিক, কেউ বাস্তব কিংবা ধর্মের সাথে তুলনা করবেন না]
#ডিম্যান_কিং_সিরিজ#
#সুপ্রিম_বিয়িং#
পর্ব:২১
লেখকঃহৃদয় বাপ্পী
.
.
.
এরিয়া এক্সের এক কোনো এক হোটেলের রুমের মধ্যে এমিলি বসে আছে সোফার উপরে। এমিলি যে এরিয়া পি থেকে এসেছে। সর্ব প্রথম মানুষ যে কিনা টাওয়ারে প্রবেশের পূর্বেই কোনো গডের অ্যাভেটার হওয়ার সুযোগ পেয়েছে। সাধারনত টাওয়ার অফ গ্রিডের মধ্যে প্রবেশের পরে বিভিন্ন উচ্চ শ্রেনীর মানুষদের গডরা বেছে নেয় তাদের অ্যাভেটার হিসাবে। কিন্তু এমিলির ক্ষেত্রে সেটা একদম ভিন্ন একটা ব্যাপার। সে টাওয়ারে প্রবেশের পূর্বেই একটা গডের অ্যাভেটার হয়েছে।
নামধারী গড বা রুলার সাধারনত অনেক শক্তিশালী কিছু বিয়িং যাদের একটা ওয়ার্ল্ড চোখের নিমিষেই ধ্বংস করে দেওয়ার ক্ষমতা রয়েছে। এই শক্তিশালী বিয়িং রা নিজেদের শক্তিকে নিজের কাছেই রাখে না বরং তারা দুর্বলদের সাহায্যও করে। মানুষ যারা টাওয়ারে প্রবেশ করে তাদেরকে এই গড রা বেছে নেই এবং নিজেদের অ্যাভেটারে পরিনত করে। অ্যাভেটার মূলত তাদের বলা হয় যারা গডদের পাওয়ার পেয়ে থাকে বা ব্যবহার করতে পারে। একজন গড অনেকজন অ্যাভেটার বেছে নিতে পারে। তবে বেশীরভাগ গডই বেশী অ্যাভেটার তৈরী থেকে বিরত থাকে। তাই দেখা যায় প্রতিটা গডের একজন করে অ্যাভেটারই থাকে।
রুলার বা গড শক্তিশালী বিয়িং হওয়ার কারনে তাদের সাধারন ওয়ার্ল্ডে প্রবেশ নিশেধ। ধারনা করা হয় তারা একটা ইউনিভার্সের একটা প্লানেটে দাঁড়ালে তাদের এনার্জির কারনে সে প্লানেট ধ্বংস হয়ে যাবে। এজন্য রুলার অথবা গড প্রধান টাওয়ার থেকে বের হয় না। তবে এমন নয় যে তারা সাধারন ওয়ার্ল্ড গুলোতে প্রবেশ করতে পারে না। অ্যাভেটার যারা তাদের গডদের পাওয়ার ব্যবহার করতে পারে, তার বিনিময়ে অ্যাভেটারকে নিজের শরীর দান করতে হয় তাদের গডের কাছে।
শরীর দান করতে হয় বলতে বোঝানে হয়েছে, একজন গড যখন তার অ্যাভেটার বেছে নিয়ে থাকে তখন সেটা জোরপূর্বক হয় না। যাকে বেছে নেই তার কাছে রুলারের মেসেজ পৌছে যায় এবং সেটা যদি বেছে নেওয়া ব্যক্তিটা মেনে নেয় তাহলেই অ্যাভেটার তৈরী হয়। এটা অনেকটা একটা কন্ট্রাকের মতো। মানুষকে বিভিন্ন কাজ করতে হবে এবং বেতন হিসাবে তারা রুলারের পাওয়ার ব্যবহার করতে পারবে।
একজন রুলার তাদের কন্ট্রাকে বিভিন্ন জিনিস উল্লেখ করে থাকে, যার মধ্যে বডি প্রজেস একটা রুল থাকে যেটার মাধ্যমে রুলার চাইলে তার অ্যাভেটারের মধ্যে প্রবেশ করতে পারবে। সব মিলিয়ে বলা যায় এমিলি বর্তমানে অ্যাভেটার হয়েছে অলিম্পাস এর বারো রুলার এর একজন, গডেস এথিনার। এথিনা বারো অলিম্পাস এর একজন গডেস। যদিও জিউসকে পুরো অলিম্পাস সবচেয়ে শক্তিশালী রুলার বা গড বলা হয়। কিন্তু পাওয়ারের দিক থেকে এথিনা জিউসকে অনেক পূর্বেই ছাড়িয়ে গিয়েছে। একটা গরগন এর সিল্ড, হাতে তলোয়ার এবং কাধে পেঁচা পাখি সহ এথিনাকে গডেস অফ উইশডম এবং ওয়ার বলা হয়ে থাকে। যে এথিনা তার জীবনে অংখ্য যুদ্ধে শত্রুদের হত্যা করেছে, যার থেকে কোল্ড অলিম্পাসের মধ্যে অন্য কোনো গডেস ছিলো না। সেই গডেস এর মনে একটা দুর্বল জায়গা ছিলো।
পোসোইডন যার সাথে এথিনার সবচেয়ে বেশী ঝগড়া হতো। ছোট ছোট বিষয় নিয়েও অনেক লড়াই যুদ্ধ হয়েছে তাদের মধ্যে। অলিম্পাসের খুব কম সংখ্যক লোকই জানে যে এথিনা পোসেইডন এর জন্য কতটা পাগল ছিলো। কতবার পোসেইডনকে বিয়ের প্রস্তাব দিয়েছে সেটা পোসেইডন নিজেও বলতে পারবে না। কিন্তু প্রত্যেকবারই এথিনাকে ফিরিয়ে দিয়েছে পোসেইডন। অলিম্পাসের সেরা সুন্দরী গডেস হওয়ার পরও পোসেইডন তাকে বিয়ে করতে রাজি হচ্ছিলো না। আর এই কষ্ট এবং ক্ষোপ এখনো এথিনার মধ্যে রয়েছে।
বর্তমানে গডেস এথিনার কন্ট্রাক অনুযায়ী সে এমিলি নামক মেয়েটাকে নিজের অ্যাভেটার তৈরী করেছে। আজব কন্ট্রাক হওয়ার পরও এমিলি রাজি হয়েছিলো। কন্ট্রাকে ছিলো এক বছরের জন্য গডেস এথিনা এমিলির শরীরকে প্রজেস করবে। তার পরে এমিলি চাইলে এথিনার পাওয়ার ব্যবহার করতে পারবে। এমিলি অনেক সহজেই এই কন্ট্রাকে রাজি হয়ে নিজেকে গডেস এথিনার অ্যাভেটার তৈরী করে।
এমিলি বসে আছে হোটেলের সোফার উপরে। এমিলি বললে ভুল হবে, গডেস এথিনা বসে আছে। যেহেতু এমিলির শরীর এথিনা প্রজেস করেছে তাই আপাতোতো বলা যায় এমিলি গভীর ঘুমে ব্যস্ত। সকল রুলার এভাবেই তাদের অ্যাভেটারের সাহায্যে বিভিন্ন ওয়ার্ল্ডে প্রবেশ করতে পারে। আর এথিনাও এটা ব্যবহার করেছে, তবে সে নিয়ম ভঙ্গন করেছে কিছুটা। সকল রুলার নিয়ম অনুযায়ী টাওয়ার অফ গ্রিডের মধ্য থেকে নিজেদের অ্যাভেটার বেছে নিবে, সাধারনত গ্রিডের সাথে এটায় তাদের চুক্তি ছিলো। তবে এথিনা একটু অন্যরকম ভাবে নিজের অ্যাভেটার বেছে নিয়েছে যার কারনে সে টাওয়ারের বাইরে থেকেই এমিলিকে অ্যাভেটার তৈরী করতে পেরেছে। যেহেতু সে একজন গডেস অফ উইশডম তাই তার কাছে এটা কোনো ব্যাপারই না।
-->>মাস্টার আপনি কি এখনো পোসেইডনকে নিয়ে চিন্তা করছেন? আমি জানি আপনার ওর উপরে ফিলিংস রয়েছে। কিন্তু....(পেঁচা)
-->>আমি জানি। আমি ওকে নিয়ে ভাবছি না। বরং চিন্তা করছি কেনো পোসেইডন হঠাৎ অলিম্পাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষনা করলো।(এথিনা)
-->>আপনি এটা তো এক হাজার বছর যাবৎ ভেবেই আসছেন।(পেঁচা)
-->>আমি জানি তুমি আমার জন্য চিন্তা করছো, কিন্তু ব্যাপারটা কি আজব না? যে নিজের কিংডমই ঠিক মতো চালাতে চাচ্ছিলো না সে হঠাৎ অলিম্পাসের রাজ সিংহাসনে আগ্রহী হয়ে উঠলো।(এথিনা)
-->>আমি সঠিক বলতে পারবো না। যদিও আমি আপনার উইশডম এর প্রতিক তারপরও কিং জিউস এবং তার ভাই পোসেইডন এবং হেডিস এর চিন্তা ভাবনা বোঝার সমর্থ নেই।(পেঁচা)
-->>হ্যা তুমি তো সাধারন একটা পেঁচা।(এথিনা)
এথিনা উপরের দিকে তাকালো। রুমের মধ্যে থাকা পাখা সে দেখতে লাগলো। এক হাজার বছরের বেশী হয়ে গিয়েছে কিন্তু সে এখনো বুঝতে পারছে না? যে ব্যক্তি তাকে আত্মবিশ্বাসী করেছিলো, যে ব্যক্তি তাকে শক্তিশালী হওয়ার কারন দেখিয়েছিলো, যে ব্যক্তি তাকে বেঁচে থাকার স্বপ্ন দেখিয়েছিলো আজ সেই অলিম্পাস এর ঘৃনিত ব্যক্তির মধ্যে একজন।
গড অফ ওয়াটার পোসেইডন যে অলিম্পাস এর বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষনা করেছিলো এবং এথিনার হাতেই পরাজিত হয়েছিলো। জিউস এর নির্দেশে তাকে হত্যা করা হয়েছিলো এবং পাঁচ অলিম্পাস রুলার মিলে শক্তিশালী এই রুলার অফ ওয়াটারকে একটা অভিশাপ দিয়ে দেই।
"পোসেইডন মারা যাবে না। বরং সে একজন রুলার থেকে মানুষে পরিনত হবে। আজীবন তার জীবনটা কষ্ট, বেদনায় কাটতে থাকবে। তার ভাগ্যটা থাকবে সবচেয়ে খারাপ। তার জীবন কখনো শেষ হবে না। একবার মৃত্যুর পরে আবারো মানুষ হয়ে রেইনকার্নেট হবে সে। এভাবে সারাজীবন কষ্টে কাটবে তার।"
-->>ইটারনাল কার্স দেওয়া হয়েছিলো পোসেইডনকে। কিন্তু মাস্টার আপনার কি মনে হচ্ছে না পোসেইডন অন্য রকম হয়ে যাচ্ছে?(পেঁচা)
এথিনা পেঁচার দিকে হঠাৎ তাকালো। পেঁচাটা আসলেই ঠিক বলেছে। এথিনা যে তিন দিনের মতো পোসেইডনের সাথে দেখা করেছে। আর এই সময়ের মধ্যেই সে বুঝতে পারছে কি একটা ঝামেলা এখানে তৈরী হয়েছে। যদিও পোসেইডন এক সময়ে একজন গড ছিলো কিন্তু এখন সে একজন মানুষ ছাড়া আর কিছু না। কিন্তু তারা কি এতোটাও শক্তিশালী যে একজন রুলার হয়ে অন্যজন রুলারের এরকম অবস্থা করতে পারবে?
-->>ইয়োলো তুমি নিশ্চয় জানো পোসেইডম তার গড ফর্মকে হারিয়ে ফেলেছে। সেই সাথে রুলার হিসেবে তার সকল স্মৃতি মুছে গিয়েছে। প্রত্যেক রেইনকার্নেটে তার পূর্বের স্মৃতিও মুছে যায়।(এথিনা)
-->>আমি জানি মাস্টার। এজন্যই আপনাকে বলছি। পোসেইডন সব কিছু ভুলে গিয়েছে। শুধু শুধু আপনি আর কষ্ট পাবেন কেনো?(পেঁচা)
-->>এটা পোসেইডন না হলেও তারই রেইনকার্নেট। হোক সে সব ভুলে গিয়েছে তারপর একজন গডেস হিসাবে জন্মের পরের একটা স্মৃতিও আমি ভুলি নি। হাজার চেষ্টার পরেও ভুলতে পারবো না। তাই তো আমার কষ্টটা দূর করার জন্য আমিও আমার মতো কষ্ট দিতে চাই।(এথিনা)
এথিনা পেঁচার কথা শুনলো না। পেঁচাটাকে এথিনা ইয়োলো বলে ডাকে। এথিনা নিজে গডেস অফ উইশডম হলেও সে কোনো কাজ করার পূর্বে এই পেঁচার উপদেশ শুনেই কাজ করে। ইয়োলো এথিনার প্রতীক হলেও সে একজন মাইথিক্যাল বিস্ট। যার জ্ঞান অন্যান্য গডদের থেকেও বেশী ধারনা করা হয়ে থাকে। এথিনা নিজপর চিন্তায় ব্যস্ত হয়ে থাকলো। সে জানে ইয়োলো তার ভালোর জন্যই তাকে উপদেশ দিচ্ছে কিন্তু এথিনা তার লক্ষে অনেক মজবুত এবার।
* * * * *
অন্যদিকে চৌধুরী পরিবারের সিকরেট বাঙ্কারের মধ্যে প্রবেশ করেছে জ্যাক এবং জিতু। আকাশের বাবার তৈরী বাঙ্কারের মধ্যে সব কিছুই আছে প্রয়োজনের, তবে সব থেকে কাজের জিনিসটা হলো সুপার কম্পিউটার। যেহেতু এরিয়া এক্সের ব্যাংক আসিফ চৌধুরীর ছিলো তাই সে এই সুপার কম্পিউটার তৈরী করেছিলো ব্যাংকটার সমস্ত ক্রেডিট সঠিক ভাবে নিয়ন্ত্রন করার জন্য। এটার লোকেশন আপাতোতো আকাশ ছাড়া আর কেউই জানতো না।
এখন মানুষ হাতে হাতে টাকা নিয়ে ঘুরে বেরায় না। তৃতীয় বিশ্ব যুদ্ধের পরে টাকা পয়সার চিহ্ন পৃথিবী থেকে মুছে গিয়েছিলো। এসোসিয়েশান যখন ছাব্বিশটা এরিয়ার মধ্যে আবারো সিভিলাইজেশনকে গড়ে তুলতে শুরু করে দশ বছর পূর্বে তখন থেকেই নতুন ভাবে আবারো অর্থের লেনদেন শুরু হয়। সব এরিয়ার মধ্যে একটা কারেন্সি বের করা হয়। তবে সমস্যা একটায়, কিছু মানুষ ভেবেছিলো বেশী টাকা বের করতে পারলে হয়তো তার বেশী বড়লোক হবে। যার ফলে ছাব্বিশ এরিয়ার মধ্যে মাত্রারিক্ত টাকার নোট বের হয়। যেটার ফলে টাকার মান একদম কমে যায়। মানুষকে এক বোঝা টাকা দিয়ে সামান্য কিছু কিনতে হতো।
আর তখনি সব এরিয়ার মধ্যে ব্যাংক তৈরী হয়। এসোসিয়েশান এসবের মধ্যে জরাতে চাই নি। তাই প্রত্যেক শহরের ক্ষমতাশালী পরিবার গুলোই ব্যাংক খোলার ব্যবস্থা নিয়ে থাকে। এরিয়া এক্সের মধ্যে তখন আসিফ চৌধুরী প্রথম ব্যাংক প্রতিস্থাপন করেন। আর তখন থেকেই শুরু হয় ডিজিটাল ব্যাংকিং। এরিয়া এক্সের মধ্যে এখন কেউ আর টাকা হাতে নিয়ে ঘুরে না। সবার কাছে ব্যাংক থেকে দেওয়া ক্রেডিট কার্ড রয়েছে যেটা দিয়েই সবার লেন দেন হয়ে থাকে।
আকাশের কাছেও ক্রেডিট কার্ড ছিলো একটা। তবে আফিফ চৌধুরী সমস্ত সম্পদের মালিক হওয়ার ফলে সেটা কাজ করা বন্ধ করে দিয়েছিলো। তাইতো সামান্য টাকা নিয়ে সে রাস্তায় হাটছিলো। জ্যাক আকাশের স্মৃতি থেকে সুপার কম্পিউটার সম্পর্কে জানতে পারলো। এটা সমস্ত এরিয়া এক্সের অর্থের হিসাব রাখে, এক হিসাবে বলা যায় এরিয়া এক্সের ব্যাংক সার্ভার এটা। যেটা তৈরী করেছিলো আকাশের বাবা।
"আমি ভেবেছিলাম টাকা পয়সার সামনে আসবো। কিন্তু খারাপ না এটা।"(জ্যাক ভাবছে)
জ্যাক কম্পিউটারের সামনে চলে গেলো। আর এদিকে জিতু সোফার উপরে বসে বিশ্রাম নিতে লাগলো। সে অনেকটা ক্লান্ত হয়ে গিয়েছে। এরকম জায়গায় আসবে কখনো চিন্তায় করে নি। যদিও যুদ্ধের সময় খান পরিবারের বাঙ্কারের মধ্যে ছিলো জিতু তারপরও এটা অন্য লেভেল এর একটা রুম। জিতুর কিছুটা সন্দেহ ছিলো কিন্তু সেটা নিমিষেই শেষ হয়ে গেলো। জিতু মাস্টার জ্যাককে কিছুটা সন্দেহ করেছিলো। যেহেতু এই জায়গা সম্পর্কে চৌধুরী পরিবারের কেউ ছাড়া অন্য কারো জানার কথা না। তাই জিতু প্রথমে আগ্রহী ছিলো এটা সম্পর্কে কিভাবে মাস্টার জ্যাক জানলো। যেহেতু জিতু জ্যাকের চেহারা দেখে নি মাস্কের কারনে তাই সে এটুকু সিওর ছিলো যে হয়তো চৌধুরী পরিবারেরই কেউ হবে জ্যাক। তবে কম্পিউটারের মুখ থেকে যখন তার আসল নাম শুনতে পেলো তখন সকল সন্দেহ কেটে গেলো জিতুর।
"আমি কল্পনাতেও ভাবি নি যে মাস্টার জ্যাক আসলে আকাশ চৌধুরী হবে। যায়হোক আমি তার পরিচয়ে আগ্রহী ছিলাম না এমনিতেও। সে যে একজন মার্শাল আর্ট মাস্টার এটায় আমার জন্য যথেষ্ঠ।" (জিতু ভাবছে)
জিতু তার ক্লান্ত শরীরটাকে বিশ্রাম দিলো কিছুটা। কখন ঘুমিয়ে পরেছে সে নিজেও জানে না। আর এদিকে জ্যাক মরিচের সামনে বসে ছিলো। কম্পিউটারের মধ্যে সকল ব্যক্তির ব্যাংকের ডিটেইলস রয়েছে। তাদের একাউন্ট নং থেকে পাসওয়ার্ড পর্যন্ত। তবে জ্যাক এতোটাও নিচু নয় যে সে অন্যদের টা মেরে খাবে। তার নজর শুধু এক জায়গায় ছিলো। তবে একটা জিনিস সে দেখতে পেলো।
-->>আমি কল্পনাও করি নি খান পরিবার এতো তারাতারি কাজ করবে।(জ্যাক)
জ্যাক কম্পিউটারের তেমন বেশী কিছু না পারলেও তার মধ্যে আকাশের স্মৃতি থাকায় জিনিসটা সহজ হয়ে দাঁড়িয়েছে। সে দেখতে পেলো খান পরিবারের যে একাউন্ট গুলো ছিলো তার সব টাকা ব্যাংক থেকে বের করা হয়েছে। জ্যাক বুঝতে পারলো খানরা তাদের টাকাকে সুরক্ষিত রাখার জন্য বের করেছে সব টাকা। যদিও জ্যাকের তাদের প্রতি কোনো আগ্রহ ছিলো না তারপরও সে একাউন্ট চেক করলো।
-->>একশত বিলিয়ন!(জ্যাক)
জ্যাক অবাক হলো, পুরো খান পরিবারের একাউন্টে একশত বিলিয়ন টাকা ছিলো। যেটা ধরা ছোয়ার বাইরে বলা যায়। জ্যাকের মাথায় এখন একটা জিনিসই শুধু কাজ করছে না,
-->>একটা ধনী পরিবারের যদি এই টাকা হয়, তাহলে এমিলির পরিবারের কত টাকা আছে?(জ্যাক)
জ্যাক এমিলির পরিবার সম্পর্কে জানে না। কিন্তু এটুকু বলতে পারছে যে তারা অনেক ধনী। বিশেষ করে এই খানের থেকে তো পাঁচ গুন বেশী হবেই। তা নাহলে অচেনা কাউকে দশ বিলিয়ন টাকা দেওয়া স্বভাবতই সম্ভব না। জ্যাকের মাথায় এখনো ঢুকছে না ছোট একটা সাহায্যের জন্য এতো টাকা কেনো দিবে এমিলি। জ্যাক তো এক দুই লক্ষ আশা করেছিলো। কিন্তু সেখানে দশ বিলিয়ন ছিলো এটা কি ভাবা যায় কখনো?
* * * *
অন্যদিকে আফিফ চৌধুরীর বাসার মধ্যে আফিফ চৌধুরী তার অফিস রুমে বসে আছে। তার সামনে তার ল্যাপটপ রয়েছে। টেবিলের অপর পাশে একজন মেয়ে বসে আছে।
-->>আমি আশা করি নি তুমি এরিয়া পি থেকে এসে একবারও আমার সাথে দেখা করবে না এমিলি।(আফিফ চৌধুরী)
এমিলি কিছুটা বিরক্ত হয়ে গেলো আফিফ চৌধুরীর কথায়। তাই সে জবাব দিতে লাগলো,
-->>আমি এখানে মাত্র জারার জন্য এসেছি। নাহলে তো কখনো পা দিতাম না।(এমিলি)
আফিফ চৌধুরী আবারো নরম ভাবে কথা বলতে লাগলো।
-->>এটা তো তোমারই বাসা। তুমি কষ্ট করে হোটেলে কেনো আছো?(আফিফ চৌধুরী)
-->>আমি এজন্যই এখানে আস্তে চাই না কখনো।(এমিলি)
এমিলির চোখে অনেকটা রাগ এবং ঘৃণা দেখা গেলো আফিফ চৌধুরীর জন্য। সে একটু পূর্বের কথা চিন্তা করতে লাগলো। হোটেলের মধ্যে ভালোই সে রিলাক্স করছিলো। কিন্তু হঠাৎ কোথা থেকে কয়েকজন লোক আসে এবং তাকে এখানে নিয়ে আসে। লোক গুলো এতোটা এক্সপার্ট ছিলো যে এমিলির বডিগার্ডদের চোখ ফাকি দিয়ে তাকে এখানে মানে আফিফ চৌধুরীর সামনে নিয়ে এসেছে।
-->>আপনার যদি আর কিছু বলার না থাকে, তাহলে আমি যাচ্ছি।(এমিলি)
এমিলি উঠে দাড়ালো এবং বের হওয়ার সিদ্ধান্ত নিলো। তবে আফিফ চৌধুরী চাচ্ছে না এমিলি যাক। যেহেতু তারই একমাত্র মেয়ে এমিলি তাই সে চাই না তার মেয়ে তার থেকে দূরে থাকুক।
যুদ্ধের সময়ের কাহিনী, তখন বিয়ে হয়েছিলো আফিফের সাথে সুন্দরী এক বিদেশী মেয়ের। যুদ্ধের সময়ে আফিফ বাংলাদেশে ছিলো এবং তার স্ত্রী তার মেয়েকে নিয়ে জাপানে ছিলো। যুদ্ধ শেষ হয়ে যায় তবে বিভিন্ন বড় বাঙ্কারের জন্য সামান্য পরিমান জনসংখ্যায় বেঁচে যায়। আর সেই জনসংখ্যার মধ্যে আফিফ চৌধুরীর পরিবার এবং তার স্ত্রীর পরিবার দুটোই বেঁচে যায়। এরিয়া পি এর মধ্যে অনেক নামধারী ধনী ব্যক্তিগন আছে। আর তাদের মধ্যে আফিফ চৌধুরীর স্ত্রীর পরিবার সর্বধনী।
যুদ্ধে পরে এমিলি আর এরিয়া পি থেকে এরিয়া এক্সে আসে নি। তাছাড়া আফিফ চৌধুরীও তাদের দেখা করতে এরিয়া পি তে যায় নি। আর এজন্য এমিলি এবং তার মা রেগে আছে আফিফ চৌধুরীর জন্য। এথিনার অ্যাভেটার হওয়ার জন্যই মূলত এখানে আস্তে হয়েছে এমিলিকে। তা নাহলে সে কখনো এখানে আসতোই না।
এমিলি বেরিয়ে আসলো সেখান থেকে। আফিফ চৌধুরী আর কিছু বললো না। সে অনেক কথায় বলতে চাচ্ছিলো কিন্তু বলতে পারলো আর কিছু। তবে এমিলি বেরিয়ে যাওয়ার পরে তার চোখ হঠাৎ আকাশে না উঠে পারলো না। তার একাউন্টের সমস্ত টাকা এক নিমিষেই শেষ হয়ে শূন্যে এসে দাড়িয়েছে। আফিফ চৌধুরী নিজের চোখকে বিশ্বাস করতে পারছে না। যার জন্য সে এতো কষ্ট করেছে। নিজের ভাইকে পর্যন্ত হত্যা করেছে আজ সেই টাকা তার চোখের সামনে থেকে চলে গিয়েছে। কি হয়েছে কিছুই বুঝতে পারছে না সে।
সুপার কম্পিউটার মরিচ যেটার উপরে আসিফ চৌধুরীরও কোনো কন্ট্রোল ছিলো না সেটায় এরিয়া এক্সের সকল লেন নিয়ন্ত্রন করতো। তাই আফিফ চৌধুরী বুঝতে পারলো না কি হয়েছে। সে মেয়েকে দেখার খুশিতে এতোক্ষন অনেক আনন্দিত ছিলো। তবে সেটা এখন নিমিষেই রাগে পরিনত হলো। সে তার সকল সিকিউরিটি মেম্বার এবং মার্শাল আর্টিস্টদের ডাক দিলো।
* * * * *
অন্যদিকে বাঙ্কার রুমের মধ্যে জিতু ঘুমাচ্ছে। এবং জ্যাক রুমের মধ্যে ট্রেনিং করছে। জ্যাকের মুখে বিশাল একটা হাসি ফুটে উঠলো। সে তার দামী সোর্ডটা হাতে নিয়েছে এবং ভ্যাম্পায়ার কুইন সিজন ২ এ তার মাস্টার লুসিফারের শেখানো সোর্ড টেকনিক গুলো মনে করার চেষ্টা করছে। অনেক বছর হয়ে গিয়েছে আর তাছারা সোর্ড টেকনিক তার তেমন ব্যবহার করা হয়ে উঠে না। যেহেতু জ্যাকের এনার্জির সাথে কোনো সম্পর্ক নাই, তাই আপাতোতো এই টেকনিকই পারবে তাকে শক্তিশালী করতে। সোর্ডকে সে হাতে নিয়ে চোখ বন্ধ করে দাড়িয়ে ছিলো।
"হ্যা আমি কিছু একটা অনুভব করতে পারছি।" (জ্যাক)
সোর্ড এনার্জি বা ব্লেড চি একটা স্পেশাল এনার্জি যারা শুধু ট্যালেন্টেড কিছু ব্যক্তিই ব্যবহার করে থাকে। আর তাদের মধ্যে জ্যাকের মাস্টার লুসিফার ছিলো। লুসিফার যদিও এক সময়ে জ্যাকের ডেভিল জেনারেল এর মধ্যে এক জন ছিলো। কিন্তু সিজন ২ তে পুরো কাহিনীই পাল্টে যায়। লুসিফার সোর্ড এনার্জি ব্যবহার করতে পারতো। যার ফলে বিভিন্ন টেকনিক তৈরী করেছিলো নিজেই। আর এক জায়গায় বেশ কিছু বছর বন্ধী হওয়ার পর জ্যাককে সব কিছুই শিখিয়ে দেয় সে। তবে এটা অনেক আগের কাহিনী হওয়ায় জ্যাক অনেক কিছুই ভুলে গিয়েছে।
-->>তারপরও বলে না খেলোয়াড় যতই না খেলুক, সে খেলা তো ভুলবে না।(জ্যাক)
জ্যাক চোখ বন্ধ করে কিছুটা লাল লাল দেখতে পাচ্ছিলো। তার মনে হচ্ছিলো তার সোর্ডের মাথাতেই সেগুলো জমা হচ্ছিলো। সে তার চোখ খুললো। হালকা হলেও তার সোর্ডের ব্লেডে সে লাল রঙের একটু এনার্জি দেখতে পাচ্ছিলো। জ্যাক আর অপেক্ষা করলো না, তার পুরানো শেখা স্কিল গুলো এক এক করে ব্যবহার করতে লাগলো।
* * *
To Be Continued
* * *
কেমন হলো জানাবেন।