#ডিম্যান_কিং_সিরিজ#
#সুপ্রিম_বিয়িং#
পর্ব:৭০
লেখকঃহৃদয় বাপ্পী
.
.
.
জ্যাক দাঁড়িয়ে ছিলো একটা গাছের সামনে। এই গাছটাতেই সে একটু পূর্বে একটা পান্স দিয়েছিলো। পান্সটা যদিও সাধারণ চোখে মারাত্মক ছিলো তারপরও জ্যাকের হাত তাতে মারাত্মক আঘাত প্রাপ্ত হয়েছিলো। সকল মানুষের একটা লিমিট থাকে। মানসিক শারিরীক সব কিছুতেই তাদের জন্য লিমিটার বসানো রয়েছে। যা জ্যাক ভালো করেই জানে। একজন ফর্মার কন্সটেলেশন হওয়ার কারনে সে সকল স্পিসিজদের সম্পর্কেই ভালো করে জানে। সব স্পিসিজদের মধ্যে এক মাত্র মানুষই রয়েছে যাদের মধ্যে বেশী লিমিটার বসানো রয়েছে। এটার কারন সম্পর্কে জ্যাক জানে না তবে কিছু একটা কারন না থাকলে সান এবং মুন কন্সটেলেশন মানুষের উপরে এতো লিমিটার বসাতো না। জ্যাক আপাতোতো ভাবছে তার পূর্ব ইনকার্নেট গুলোর কথা। এই পর্যন্ত তার যে কয়টা ইনকার্নেট মারা গিয়েছে তারা সকলেই অনেক নিঃস্ব এবং দুর্বল ছিলো। ইটার্নাল কার্সের কারনে সব গুলো ইনকার্নেটের ভাগ্যই অনেক খারাপ ছিলো। তবে সবশেষে যখন জ্যাক মানে পোসেইডনের সউল পাঁচ ভাগে ভাগ হয়ে যায় এবং পাঁচটা আলাদা ইনকার্নেটের জন্ম হয় তখন জ্যাক সম্পূর্ণ আলাদা হয়ে যায়। সউল ভাগের সাথে সাথে কার্সের ইফেক্টও কমে যায়। আর কার্সের ইফেক্ট কমে যাওয়ার ফলে জ্যাক, হৃদয় টিটান এবং নিয়াকের উপরে কার্স তেমনটা কাজ করে নি। এমন নয় যে একদমই তাদের উপর থেকে কার্স সরে গিয়েছিলো। শুধু বলা যায় তাদের উপরের সকল কার্স হৃদয় বাপ্পী এবং আকাশ চৌধুরীর উপরেই ছিলো। কার্স অনুযায়ী পোসেইডন অনেক কষ্ট পেয়ে মারা যাবে, যা তার আকাশ ইনকার্নেট মারা গিয়েছিলো। এমনকি হৃদয় বাপ্পী ইনকার্নেটও মারা যাচ্ছিলো শুধু উইশ মেকার নামক এক অদ্ভুদ ব্যক্তির জন্য সে জীবিত বেঁচে যায়। যদিও সশরীরে বাঁচে নি তারপরও বলা যায় সে বেঁচে আছে এক শরীরের মধ্যে।
জ্যাক গাছের সামনে দাঁড়িয়ে ছিলো। গাছের গায়ে একটা হাত রাখলো। সে পান্স করতে চাচ্ছিলো কিন্তু তার ভয় হচ্ছিলো। একটু পূর্বে অনেকটা ব্যথা সে পেয়েছে। তাই তার ডান হাত এখন হালকা কাপছিলো।
-->> আমি এটারই ভয় করছিলাম। (জ্যাক)
জ্যাকের হাতটা কাঁপছিলো। তার মনের মধ্যে কোনো এক জায়গায় ভয় লুকিয়ে ছিলো, যেটার প্রকাশ সে করছিলো না বরং আটকে রেখেছিলো। জ্যাক বুঝতে পারছিলো তার সাথে কি হয়েছে। সে একটা স্কিল অনেকদিন যাবৎ ব্যবহার করে আসছে। ভালো ভাবে বললে স্কিলটাই তাকে ব্যবহার করছিলো। "ব্রিং মি ব্যাক" এটা এমন একটা স্কিল যা জ্যাককে তার মৃত্যুর এক ঘন্টা পূর্বের সময়ে পাঠিয়ে দেই। এই স্কিলটা নামে যত ভালো মনে হয় এটা তেমন ভালো স্কিল না। অনেকেই ভাবতে পারে এমন একটা স্কিল থাকা তো ভাগ্যের ব্যাপার। কারো কাছে এমন স্কিল থাকলে কেউ তাদেরকে হত্যা করতে পারবে না। কিছু কন্সটেলেশন আছে শুধু যারা এই কন্সটেলেশন সম্পর্কে জানে।
-->> রুলার অফ ডেড আসলেই অনেক আজব একটা ব্যক্তি ছিলো। আমি জানি না সে এতো বড় একটা বোমা তার মাথায় নিয়ে কিভাবে দিন পার করতো। (জ্যাক)
এই স্কিলটা যদিও জ্যাককে তার মৃত্যুর এক ঘন্টা পূর্বে নিয়ে আসে তবে এটার কিছু লিমিট এবং সাইড ইফেক্টও রয়েছে। জ্যাক এটার লিমিট সম্পর্কে কিছু জানে না কিন্তু অতীতে ম্যাডুসার সাহায্যে সে এটার সাইড ইফেক্ট সম্পর্কে শুনেছিলো। যত বেশী এই স্কিলটা ব্যবহার করা হয় তত ব্যবহারকারীর মন থেকে অনুভূতি গুলো সিল হতে থাকে। ইমোশন গুলো মনের কোনো এক কোনে বন্ধী থাকে, যত মৃত্যু হবে এবং এই স্কিলটা একটিভ তত ততই ব্যবহার কারী ভয় বোধ করবে না। আস্তে আস্তে এক সময়ে মৃত্যুর কোনো ভয়ই থাকবে না ব্যবহারকারীর। আর জ্যাকের সাথেও তেমনি হচ্ছে। তার ইমোশন গুলো আস্তে আস্তে মনের এক কোণে বন্ধী হয়েছে। যদিও এখনো সেগুলো সম্পূর্ণ বন্ধী হয় নি তারপরও জ্যাক এখন মৃত্যুকে তেমনটা ভয় করে না।
এটা ভালো করে ক্লিয়ার করা যাক। জ্যাক ভয় অনুভব করে না মৃত্যুর সময়। তবে এমন নয় যে সে ভয়কে জয় করেছে। তার তার মনের মধ্যে এখনো ভয় রয়েছে। সেটা ডোয়ার্ক মল্টের ব্লাডলাস্টের সময় দেখা গিয়েছিলো। মূলত স্কিলটা আস্তে আস্তে জ্যাকের মনের মধ্যে ভয় সহ আরো ইমোশন গুলোকে একটা খাঁচার মধ্যে বন্ধী করে রাখছিলো। এটা শুধু তাদের বন্ধী করে রাখছিলো যাতে করে জ্যাকের মন সেগুলোকে অনুভব না করতে পারে তবে জ্যাকের শরীর ঠিকই সেটার বিরুদ্ধে কাজ করবে। জ্যাক এখন ভয় পাচ্ছিলো না, তবে তার হাত কাঁপছিলো। এটা দেখে সে বুঝতে পারলো তার স্কিলটার সাইড ইফেক্ট দেখা দিয়েছে।
-->> এখন থেকে মৃত্যু আমার জন্য কোনো অপশন হতে পারে না। (জ্যাক)
জ্যাক সিদ্ধান্ত নিয়ে নিলো সে আর এই স্কিলটা ব্যবহার করবে না। কারন এটা যত ব্যবহার করবে তার সাইড ইফেক্ট গুলোও অনেক শক্তিশালী হয়ে যাবে। এক সময় দেখা যাবে সে মন থেকে কোনো কিছুকেই ভয় না করে কিছু অপরিবর্তনশীল সিদ্ধান্ত নিয়ে নিবে। জ্যাক ভবিষ্যতের জন্য প্রস্তুত হচ্ছিলো আর তার প্লানকে পূর্ণ করতে হলে তাকে তার ইমেশনকে নিজের মধ্যেই রাখতে হবে। তাই তো সে শক্তিশালী হওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। জ্যাক তার কাঁপা হাতের দিকে লক্ষ না করে আস্তে আস্তে অর্ধফুটো হওয়া গাছের দিকেই পান্স করতে লাগলো। এবার সে এক হাত দিয়ে পান্স না করে দুটো হাতের ব্যবহার করতে লাগলো একসাথে। দুই হাত দিয়ে এক এক করে সে পান্স দিয়েই যাচ্ছে আস্তে আস্তে।
-->> শক্তিশালী হতে হবে আমাকে। (জ্যাক)
* * * * *
ডোয়ার্ক মল্ট দাঁড়িয়ে ছিলো ঝর্নার উপরে। পুকুরের এই দিকটায় কেউ আসে নি। ১০ মিটার উঁচু একটা ঝর্ণা যা থেকে পানি নিচে পরে যাচ্ছে। এতো উপরে পানির উৎস থাকাটা আসলেই আশ্চর্যকর একটা বিষয়। তবে মল্ট এই আশ্চর্যকর জায়গাটা খুঁজে পেয়েছিলো টাওয়ারে প্রবেশের পর এবং নিজেকে আরো অনেকটা শক্তিশালী করতে পেরেছে এটার মাধ্যমে। সে আকাশের দিকে তাকালো। সাধারণ কারো চোখে না পরলেও তার নজরে পরলো জিনিসটা। অদৃশ্য বৃষ্টি, যা আকাশ থেকে টপ টপ করে পরছিলো। মল্ট তাকিয়ে দেখছিলো। যেহেতু কেউ এখনো এই জায়গাতে আসে নি তাই কেউই এই অদৃশ্য পানি সম্পর্কে জানে না। এখানে আসলে জানার সম্ভবনা ছিলো, কারন পানি দেখা না গেলেও সেটার নিচে গেলে অবশ্যই ভিজে যেতে হবে। পানিটা একটা পুকুরের মতো জায়গায় পরছিলো যেটা থেকে স্রোত তৈরী হয়ে একটা ঝর্না তৈরী করেছে। বৃষ্টির পানি অদৃশ্য হলেও সেটা যখন পুকুরে পরছিলো তখন সেটাকে ক্লিয়ার দেখা যাচ্ছিলো। একটা অদ্ভুদ একটা জায়গা যেটা টাওয়ারে অনেক রয়েছে। এই জায়গার বা এই পানির কোনো স্পেশাল ইফেক্ট নেইশ এটা শুধু দেখার মতো জায়গা। তবে এমন নয় যে কেউ কোনো ইফেক্ট তৈরী করিয়ে নিতে পারবে না। ডোয়ার্ক মল্ট তার হাতের স্পেস রিং থেকে পঞ্চাশটার অধিক নীল কালারের ছোট-বড় স্টোন বের করলো। স্টোন গুলো সে উপরের পানিতে ফেলে দিলো।
-->> এক সপ্তাহের জন্য এই মুন স্টোন গুলো বডি রেইনফোর্স করতে সাহায্য করবে। (মল্ট)
স্টোন গুলোর নাম মুন স্টোন। সেগুলো অনেক রেয়ার একধরনের স্টোন যা চাঁদের থেকে এনার্জি এবজোর্ব করতে পারে। যেহেতু ডোয়ার্ক মল্টের উপরে কোনো রকম এনার্জি কাজ করে না এমনকি সে একমাত্র চি এনার্জি বাদে অন্য কোনো এনার্জি ব্যবহার করতে পারে না তাই এই এনার্জিও সাধারণ ভাবে তার ব্যবহার করতে পারার কথা না। তবে এখানে কিছু বিষয় রয়েছে। মুন স্টোন বেশ কয়েক ভাবে ব্যবহার করা যায়। যাদের মধ্যে একটা প্রক্রিয়া হলো পানির মধ্যে ফেলে রাখা। মুন এনার্জি ম্যাজিকাল কোনো এনার্জি না। বরং এটাকে ফিজিকাল এনার্জি বলা যেতে পারে। এটা দিয়ে কেউ কোনো স্পেল বা স্কিল ব্যবহার করতে পারবে না। তবে এটার সবচেয়ে কাজের দিক হলো এটা একজনের শরীরকে শক্তিশালী করতে পারে।
মল্টের উপরে সরাসরি এই এনার্জি কাজ করে না। তাই তাকে কনভার্টার ব্যবহার করতে হচ্ছে। পানির মধ্যে মুন স্টোন রাখলে মুন এনার্জি পানির সাথে মিশে যায়। এই সময়ে পুকুরের মধ্যে কেউ থাকলে তাদের শরীরে মুন এনার্জি প্রবেশ করতে থাকে এবং শরীরকে শক্তিশালী করে। তবে এখানে কিছু রহস্য রয়েছে। যেহেতু ডোয়ার্ক মল্ট সরাসরি চি এনার্জি ব্যতীত অন্য কোনো এনার্জি ব্যবহার করতে পারে না। তাই মুন এনার্জি তার কোনো কাজেরই নয়। তবে এমন নয় যে সে মুন এনার্জিকে ব্যবহার করতে পারবে না। একটা টেকনিক আবিষ্কার করেছে মল্ট যার মাধ্যমে সে মুন এনার্জিকে চি এনার্জিতে পরিণত করতে পারছে।
মুন স্টোন পানিতে রেখে দিলে দিনের সময় সেটা কোনো কাজে দিবে না। রাত হলে এবং চাঁদ আকাশে দেখা গেলে তা থেকে আস্তে আস্তে এনার্জি সংগ্রহ করতে থাকে এই স্টোন গুলো যা সরাসরি এবজোর্ব করা না গেলেও কিছু নিয়ম রয়েছে সেরা এবজোর্ব করার। যার মধ্যে একটা হলো, পানির মধ্যে এই স্টোন রাখলে রাতের সময় তা থেকে এনার্জি বের হয় যা পানির প্রতিটা বিন্দুতে বিন্দুতে মিশে যায়। যদিও পানির সাথে মিশে যাওয়ার ফলো এর মাত্রা অনেক কমে যায় তারপরও এটাই সবচেয়ে সহজ একটা নিয়ম মুন স্টোন থেকে এনার্জি ব্যবহারের। এটা সহজ হলেও ডোয়ার্ক মল্টের কোনো কাজের ছিলো না। তাই তাকে অন্য রকম একটা নিয়ম কাজে লাগাতে হয়েছে। চি বা কাই যেটাই বলা হোক না কেনো এটার আরেকটা নাম হলো প্রাকৃতিক এনার্জি। এটা এমন একটা এনার্জি যা সরাসরি প্রকৃতি থেকে আসে। যেখানে জীবন রয়েছে সেখানে এই এনার্জির অবস্থান থাকবে। এটাই একমাত্র এনার্জি যেটা কোনো কন্সটেলেশন ব্যবহার করে নি।
-->> এটাই একমাত্র এনার্জি যা সর্বপ্রথম মানুষেরা আবিষ্কার করেছিলো। (মল্ট)
হ্যাঁ এটা এমন একটা এনার্জি যেটা মানুষেরা আবিষ্কার করে। এই নিয়ে ডোয়ার্ক মল্ট বেশী কিছু জানে না। তার জ্ঞান টুকুই বিশ্লেষন করা হচ্ছিলো এতোক্ষন। যাইহোক আসল বিষয়ে যাওয়া যাক। ডোয়ার্ক মল্ট চি এনার্জি ব্যবহার করতে পারে। যা প্রকৃতিতে থাকে। পানি, গাছপালা, পাহাড়, বন, মাটি সব কিছুই এই চি এনার্জির উৎস। আর মুন এনার্জি যখন পানির সাথে চি এনার্জির সাথে মিশে যায় তখন আস্তে আস্তে মুন এনার্জিও চি এনার্জিতে পরিবর্তন হতে শুরু করে। এটা অনেকটা খারাপ সঙ্গীর সাথে থেকে খারাপ হয়ে যাওয়ার মতো। মুন এনার্জি চি এনার্জির সংস্পর্শে এসে আস্তে আস্তে চি এনার্জি হতে শুরু করে। যা পরে ডোয়ার্ক মল্ট এবজোর্ব করে নিতে পারে। যদিও সেটা চি এনার্জি হয়ে যায় শুধু নামেই তবে তার ইফেক্ট ঠিক মুন এনার্জির মতোই থাকে।
-->> আমার তো অনেক হয়েছে। এই এক সপ্তাহ আমার স্টুডেন্ট যে এক সময়ে আমাকে হত্যা করবে তাকে এখানে রাখতে হবে। (মল্ট)
ডোয়ার্ক মল্ট কথাটা বলে সেখান থেকে চলে গেলো। কোথায় গেলো তা কেউ জানে না। অপরদিকে জ্যাকের পার্টির সদস্যরা ট্রেনিং করে যাচ্ছে। তারা এক মাস ট্রেনিং করার পরই নিজেদের মধ্যে পার্থক্য লক্ষ করেছিলো যা থেকে সবাই বেশী মোটিভেশন পেয়ে যায় ট্রেনিং এ। যদিও সময় নষ্ট করে ট্রেনিং করার থেকে সবাই মনস্টার হত্যা করে শক্তিশালী হওয়ার চিন্তা করেছিলো তবে একটা বিষয় তারা লক্ষ করেছে। ট্রেনিং করলে তাদের লেভেল বৃদ্ধি হয় না। অন্যদিকে মনস্টার হত্যা করলে তাদের লেভেল বৃদ্ধি পায়। লেভেল বৃদ্ধি পাওয়া যে একবারে ভালো বিষয় তা কিন্তু নয়। হ্যাঁ লেভেল বৃদ্ধি পাওয়ার সাথে সাথে শারিরীক শক্তি, ম্যাজিক পাওয়ার এবং স্কিলের পাওয়ার গুলো বৃদ্ধি পায়। তবে তারা লেভেল বৃদ্ধি না করে যদি সেই শক্তি পেয়ে যায় তাহলে কেমন হয়?
-->> আমার মনে হয় আমি এখন আমার থেকে ১০-১৫ লেভেল উপরের প্লেয়ারদের সাথেও ফাইট করতে পারবো। (লুইস)
-->> মনস্টার এক কথা প্লেয়ার এক কথা। সেটা হয়তো আমার পূর্বে দেখতে পেয়েছিলাম। (শাও)
-->> হ্যাঁ আমি আশা করছি ব্লাক পার্টির সেরকম সদস্যের সাথে আর কোনোদিন না দেখা হোক আমাদের। (ব্রান্ডেন)
-->> ট্রেনিং এ আর কিছু হোক বা না হোক আমাদের সবার সিক্সপ্যাক বের হয়েছে এটাই আমাদের জন্য অনেক। (লুইস)
-->> তুমি কি মেয়ে পটানোর জন্য ট্রেনিং করছিলে? এটা তো আর আমাদের পূর্ব পৃথিবী না। এখানে বুড়ো বুড়ো লোকদেরও সিক্স প্যাক রয়েছে। (আয়াব)
-->> আমি অবাক হচ্ছি ভুসেকার ট্রান্সফরমেশন দেখে। এতো কম সময়ে ভুসেকাকে তো চেনায় যাচ্ছে না। (ব্রান্ডেন)
-->> সেদিনের ঘটনা আমাদের ফানি ভুসেকাকে পুরো বদলে দিয়েছে। আমার মনে হয় না সেটা আমাদের করার কোনো দরকার ছিলো। (আয়াব)
-->> আমরা তো সরি বলেছি, তারপরও ভুসেকা আমাদের সাথে তেমন করে কথা বলে না আর। (শাও)
-->> সবচেয়ে আনলাকি তো আমি ছিলাম। আমার পুরো শরীর মাখিয়ে গিয়েছিলো ভুসেকার বোমার রেডিয়েশনে। পুরো দুদিন আমার শরীর থেকে গন্ধ যায় নি। (লুইস)
ভুসেকা সবার থেকে দূরে পুশ আপ দিচ্ছিলো পিঠে ফুটবলের আকারের দুটো পাথর নিয়ে। তার বডি আর পূর্বের মতো নেই। পূর্বে সে অনেক মোটা ছিলো যা তার মুভমেন্টে অনেক সমস্যা করতো। তবে এবার তাকে পুরো একটা রেস্লিং প্লেয়ারের মতো লাগছিলো। তার বডি দেখে যে কারো ভয় পেয়ে যাবার কথা এখন। ভুসেকা তার পুশ আপ দেওয়া বন্ধ করে দিলো। এক হাতে ভর করে সে কাধ হওয়ার চেষ্টা করলো। দুটো পাথরই তার পিঠ থেকে পরে গেলো। সে তার টি শার্ট দিয়ে মুখের ঘাম মুছতে মুছতে বাকিদের কাছে চলে গেলো। বাকিরা রেস্ট নিচ্ছিলো পাঁচ মিনিটের জন্য। তাই ভুসেকাও তাদের কাছে গেলো।
-->> গাইস, এই পুরোটা সময় যাবৎ আমার মাথায় একটা জিনিস ঘুরছিলো। পূর্বে আমি বলি নি কারন তাতে অনেকেই আমাকে পাগল বলবে। কিন্তু হঠাৎ একটা কন্সটেলেশনের অ্যাভেটার হওয়ার পরে আমি বুঝতে পারলাম। (ভুসেকা)
-->> কি? (সবাই একসাথে)
-->> এই টাওয়ার, যা পূর্বে কোনোদিন আমাদের পৃথিবীতে ছিলো না। যার সম্পর্কে কেউ কোনোদি শুনে নি। এমনকি এটা সম্পর্কে কোনো লিজেন্ডও নেই। তাহলে এটা আসলো কোথা থেকে? (ভুসেকা)
-->> হয়তো কন্সটেলেশন গুলো যেখানে থাকে সেখান থেকে এসেছে। তারাই পাঠিয়েছে আমাদেরকে শক্তিশালী করার জন্য। (লুইস)
-->> তাহলে এই কন্সটেলেশন গুলো কারা? হ্যাঁ এটা ঠিক আমরা কিছু কিছু কন্সটেলেশন গুলোর নাম শুনেছি, যেমনঃ মাংকি কিং, জিউস, ওডিন, থর,লোকি। কিন্তু কথা হচ্ছে আমাদের যারা অ্যাভেটার বানাচ্ছে আমরা তাদের নাম কেনো শুনি নি? (ভুসেকা)
-->> কারন তারা কন্সটেলেশন এবং তারার মধ্যে থাকে, তাদের সাথে আমাদের কোনো যোগাযোগ ছিলো না পূর্বে তবে আমাদের মর্মম অবস্থা দেখে তারা এখন সাহায্য করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। (লুইস)
-->> আমার পয়েন্ট এখানেই, তারা কেনো পৃথিবী ধ্বংসের পরে আমাদের সাহায্য করতে চাইলো। পূর্বে করলে তো এতো কিছু হতো না আমাদের সাথে। (ভুসেকা)
-->> কি বোঝাতে চাচ্ছো তুমি? (আয়াব)
-->> আমি বলতে চাচ্ছি এই কন্সটেলেশন গুলো কেনো আমাদের এখন সাহায্যে করছে তাদের পাওয়ার দিয়ে। অবশ্যই আমরা জানি জীবনে কোনো কিছু ফ্রিতে নয়। বড়লোকেরা কখনো তাদের সম্পদ গরীবদের মিলিয়ে দিতে পছন্দ করে না। তাই এই কন্সটেলেশন গুলোও তো তাদের পাওয়ার আমাদেরকে ফ্রিতে দিবে না। তারা হয়তো অনেক বড় কিছু আমাদের থেকে নিচ্ছে বা নেওয়ার চেষ্টা করে যাচ্ছে। (ভুসেকা)
-->> তারা অনেক কিছু নিচ্ছে তোমাদের থেকে। (জ্যাক)
পিছন থেকে জ্যাক হেঁটে হেঁটে আসলো বন থেকে। অনেকদিন হলো জ্যাক তাদের সাথে এভাবে দেখা করে না। জ্যাককে দেখতে পেয়ে সবাই অনেকটা খুশি হলো। তবে তারা সেটা প্রকাশ করার সময় পেলো না।
-->> প্রতিটা কন্সটেলেশন অনেক অনেক বছর বাঁচতে পারে। কন্সটেলেশন লেভেলে উঠতে পারলে একটা বিশেষ ধরনের এনার্জি ব্যবহার করা যায়। যেটাকে বলা হয় লাইফ এনার্জি। প্রতিটা কন্সটেলেশন জীবিত বস্তুর মধ্য থেকে বিভিন্ন উপায়ে লাইফ এনার্জি ড্রেইন করে নিতে পারে। আর এই লাইফ এনার্জিই তাদেরকে এতো বছর বাঁচার সুযোগ দিয়েছে। তবে কয়েক হাজার বছর পূর্বে প্রতিটা কন্সটেলেশনের উপরে নিয়ম বানিয়ে দেওয়া হয়েছিলো। তারা ইচ্ছামতো কারো লাইফ এনার্জি গ্রহন করতে পারবে না। এর পর থেকে কন্সটেলেশন গুলো তাদের অ্যাভেটার তৈরী করতে থাকে। অ্যাভেটার গুলো তৈরীর মাধ্যমে কন্সটেলেশন গুলোকে আর নিয়ম ভাঙতে হচ্ছিলো না। তার নিজেদের অ্যাভেটারের লাইফ এনার্জি এবজোর্ব করতে পারতো। তবে তাতেও নিয়ম বসিয়ে দেওয়া হয়, কারন প্রথম দিকে অনেক কন্সটেলেশন তাদের অ্যাভেটারদের লাইফ এনার্জি ড্রেইনের মাধ্যমে তাদের হত্যাই করে ফেলতো। সর্বশেষ নিয়মে প্রতিটা কন্সটেলেশন তাদের অ্যাভেটারের শরীরে ৬০-৭০ বছরের লাইফ এনার্জি রেখে বাকিটা এবজোর্ব করে নেই। (জ্যাক)
জ্যাকের কথা সবাই মনোযোগ দিয়ে শুনতে ছিলো।
-->> এজন্য দিন দিন আমাদের গড় আয়ু গুলো কমতে শুরু হয়েছে? (লুইস)
-->> হ্যাঁ, মানুষ এক হাজার বছর পূর্বেও ১২০ বছরের বেশী সময় বেঁচে থাকতো। তবে কন্সটেলেশন গুলো তাদের অ্যাভেটার তৈরী মাধ্যমে শুধু যে তাদের অ্যাভেটার থেকে লাইফ এনার্জি সংগ্রহ করছে এমন নয় অ্যাভেটার বংশধরদের থেকেও লাইফ এনার্জি সংগ্রহ করে নিচ্ছে। এজন্যই দিন দিন আমাদের গড় আয়ু আরো কমে যাচ্ছে। (জ্যাক)
-->> লিডার আপনি বলতে চাচ্ছেন, আমরা কন্সটেলেশন গুলোর অ্যাভেটার হয়ে তাদেরকে আমাদের লাইফ এনার্জি সাপ্লাই দিচ্ছি? (আয়াব)
-->> আর আমাদের জন্য আমাদের বংশধরদের এনার্জিও আমাদের কন্সটেলেশন গুলো পাবে? (শাও)
-->> এটাই তো আমি সন্দেহ করেছিলাম। তারা আমাদের থেকে আমাদের লাইফ এনার্জি নিচ্ছিলো এজন্যই তো তাদের এনার্জি আমাদের ব্যবহার করতে দিচ্ছিলো। (ভুসেকা)
-->> কিন্তু আমি শুনেছি কন্সটেলেশন গুলো অনেক দিন বাঁচতে পারে, তাই তাদের আমাদের লাইফ এনার্জি দিয়ে কি হবে? (লুইস)
-->> সব কিছুর সৃষ্টিকর্তা ব্যতিত কোনো কিছুই ইমমর্টাল নয়। আমরা শুধু সেগুলোকে কিছু হাস্যকর নামেই ডাকি। একটা উচ্চ লেভেল কন্সটেলেশন দুই থেকে পাঁচ হাজার বছরের মতো গড় আয়ু পায়। যেহেতু কন্সটেলেশন গুলো তাদের এই গড় আয়ু বৃদ্ধি করতে পারে তাই কোনো কন্সটেলেশনই চাই না মারা যেতে। তাইতো তারা অন্যদের লাইফ এনার্জি সংগ্রহ করে নিজেদের গড় আয়ুকে আরো বৃদ্ধি করে। (জ্যাক)
-->> লিডার আপনি এতো কিছু জানলেন কিভাবে? (ভুসেকা)
-->> আমার কন্সটেলেশন বলেছে। (জ্যাক)
জ্যাকের কোনো কন্সটেলেশন নেই, তারপরও সে এই কথাটা বললো।
-->> এতো তাড়াতাড়ি কন্ট্রাক করে ফেলেছেন আপনি? তা কোন কন্সটেলেশন আপনাকে অ্যাভেটার বানালো? (শাও)
জ্যাক এই বিষয়ে উত্তর দিলো না। সে সবার সাথে কিছুটা গল্প করে নিজের মনকে শান্ত করে নিয়েছে। এবার সে চলে যাচ্ছে পুকুরে দিকে।
-->> শরীরে দুর্গন্ধ তৈরী হয়েছে। হয়তো তিনমাস গোসল না করার ফল এটা। (জ্যাক)
জ্যাক তিন মাস গোসল করে না। সে তার ট্রেনিং এর মধ্যে এতোটা ফোকাস ছিলো যে সে গোসলের কথা ভুলেই গিয়েছিলো। আজকে মনে পরতেই সে ফরেস্ট এরিয়া থেকে বের হয়েছে গোসল করতে। মাঝপথে তার পার্টি মেম্বারের সাথে কথাও বলে নিয়েছে জ্যাক। তাই বলা যায় এক ঢিলে দুই পাখি মারতে যাচ্ছিলো জ্যাক। পুকুর পাড়ে জ্যাক গিয়ে একটা জিনিস লক্ষ করলো। পাড়ের চারপাশ দিয়ে বেশ কিছু গাছের কান্ড ফেলে রাখা ছিলো। যা সেখানে থাকার কথা ছিলো না। একটার গায়ে লেখা ছিলো।
"রাতে এখানে ট্রেনিং করবে।"
জ্যাক লেখাটা দেখেই বুঝতে পারলো সেটা ডোয়ার্ক মল্ট মানে তার মাস্টারের ছিলো।
-->> তাহলে আমি আজ রাত থেকে এখানে ট্রেনিং করতে পারবো আবারো? (জ্যাক)
জ্যাকের মুখে ছোট একটা হাসি ফুটে উঠলো। শুধুমাত্র মাস্কের কারনে তার হাসিটা দেখা যাচ্ছিলো না। আর এমনিতেও এখানে কেউ ছিলো না যে জ্যাকের হাসিটা দেখবে এখানে, তাই ছোট বিষয়ে সে পাত্তা না দিয়ে গোসল পানিতে ঝাপ দিলো।
"আমি জানি না এই পানিতে কি আছে তবে সেদিন রাতের ট্রেনিং এর পর থেকে আমার বডি অনেকটা শক্তিশালী হয়েছে।" (জ্যাক ভাবছিলো)
জ্যাক পানির ভিতরে আপন মনে সাতার কাটছিলো। যেহেতু অনেকদিন পর সে গোসল করতে এসেছে তাই মনের তৃপ্তি নিয়েই সে গোসল করছিলো। তবে তার গোসল আর বেশীক্ষন হলো না।
[নিয়াক]
জ্যাকের মাথার ভিতরে একটা আওয়াজ শুনতে পেলো সে। আওয়াজটা পরিচিত ছিলো তাই সে উত্তর দিলো সাথে সাথে,
-->> গোল্ডি। (জ্যাক)
[এটা কিন্তু বন্ধুকে বেয়াদবি করে কথা বলা হচ্ছে। তারপরও আমি মাইন্ড করছি না। শত হলেও একটা বাচ্চার মতো মাইন্ড তোমার পোসেইডন।]
কথাটা জ্যাকের মাইন্ডে বলছিলো গোল্ডেন ড্রাগন। যে পূর্বে নিয়াকের মধ্যে সিল ছিলো তবে বর্তমানে নিয়াকের বডি আকাশ চৌধুরীর সাথে মার্জ হয়ে যাওয়ার ফলে ড্রাগনটাও এক শরীরে সিল রয়েছে।
-->> আমি আর এই নাম ব্যবহার করি না এখন। আমাকে জ্যাক বলতে পারো এখন থেকে। (জ্যাক)
[একটা গুরুত্বপূর্ণ খবর দেওয়ার জন্য ইটার্নাল স্লিপের মধ্যে থাকার পরও আমাকে জোর পূর্বক উঠতে হয়েছে।]
-->> কি এমন গুরুত্বপূর্ণ কথা? আমি কি আরো পাওয়ার ব্যবহার করতে পারবো তোমার থেকে? (জ্যাক)
[আমরা একসময়ে মোট ৭২ টা ট্রু ড্রাগন ছিলাম। যাদের এক সময় সুপ্রিম কন্সটেলেশনও ভয় করতো। তবে পুরো কাহিনী বলদে যায় যখন সকলের উপরে লিমিটার বসানো হয়। যদিও আমাদের ৭১ ট্রু ড্রাগনের পাওয়ার লিমিটে চলে আসে লিমিটারের জন্য তবে আমাদের মাঝে একটা ড্রাগন ছিলো যার উপরে কোনো রকম লিমিটার কাজ করতো না।]
-->> তুমি ব্লাড ড্রাগনের কথা বলছো? (জ্যাক)
জ্যাকের পূর্বের স্মৃতির কারনে সে ড্রাগনদের সম্পর্কে হালকা পাতলা কিছু জানে। তাই সে অবাক হলো না। তবে গোল্ডেন ড্রাগন কি বলতে চাচ্ছে সেটা শোনার জন্য জ্যাক আগ্রহী হলো।
[৭২ ট্রু ড্রাগনের মধ্যে দুটো ড্রাগন মারা গিয়েছিলো। যার মধ্যে ব্লাড ড্রাগন একটা ছিলো। সুপ্রিম কন্সটেলেশন দুজন সাহস করেও ব্লাড ড্রাগনকে হত্যা করতে পারে নি, তবে খুব রহস্যময় এক ব্যক্তি ব্লাড ড্রাগনকে হত্যা করে সুপ্রিম কন্সটেলেশন এর রাস্তা সহজ করে দিয়েছিলো। তোমরা হয়তো সবাই তাকে ড্রাগন স্লেয়ার নামে চিনো।]
-->> এতো না পেঁচিয়ে সোজা কথায় আসো। এসব কিছু তো আমি জানি। (জ্যাক)
[ব্লাড ড্রাগন আবার রেইনকার্নেট হয়েছে। আবারো মুন এবং সান কন্সটেলেশন এর কপালে ঘামের দেখা দিবে। আর আমার মনে হয় ড্রাগন স্লেয়ারের দেখা আবার পাওয়া যাবে।]
-->> হ্যাঁ। (জ্যাক)
জ্যাকের মুখ থেকে কথা বের হচ্ছিলো না। এমনিতেই তার মাথার ভিতরে অনেক কিছু চলছিলো। প্রথমে নিজের প্লান এবং এরপরে কিং অফ ডেস্টিনির প্রফেসি এবং সবশেষে ব্লাড ড্রাগনের রেইনকার্নেট। সব মিলিয়ে জ্যাক আর সামনে ভাবতে পারছিলো না। সে পুকুরের মধ্যে চিৎ হয়ে ভাসতে লাগলো এবং সব কিছু ভাবতে শুরু করেছে।
* * *
To Be Continued
* * *
কেমন হলো জানাবেন