আসসালামু আলাইকুম। গল্প প্রতি শনিবার, সোমবার এবং বুধবার রাত ১০টা থেকে ১১ টার মধ্যে ওয়েবসাইটে পোস্ট হবে।

Want Premium Membership!

Demon King পর্বঃ ৯২

হৃদয় বাপ্পী
Please wait 0 seconds...
Scroll Down and click on Go to Link for destination
Congrats! Link is Generated


[প্রথমেই বলি গল্পটা পুরো কাল্পনিক, কেউ বাস্তব কিংবা ধর্মের সাথে তুলনা করবেন না]

#Demon_King#

পর্ব:৯২

লেখকঃহৃদয় বাপ্পী
.
.
.
(টাওয়ার অফ স্লোথ)

প্রায় এক বছর সময় পার হয়েছে টাওয়ার অফ স্লোথের পঞ্চাশ তম ফ্লোর ক্লিয়ার হয়েছে। টাওয়ার অফ স্লোথের সময় অনেক দ্রুত চলে, তাই সেটার সাথে সময়ের মধ্যে অনেক পার্থক্য রয়েছে। এই এক বছরের মধ্যে অনেক কিছু হয়েছে টাওয়ার অফ স্লোথের মধ্যে। পঞ্চাশ তম ফ্লোর ক্লিয়ার করার ফলে সকল ব্যক্তিই টাওয়ার থেকে বের হওয়ার একটা সুযোগ পেয়েছিলো এবং পঞ্চাশ তম ফ্লোর ক্লিয়ার করার মধ্যে নিজেদের ইফোর্ট অনুযায়ী সবাই একটা করে উইশ পেয়েছিলো। ফ্লোর ক্লিয়ার করার পরে অনেক মানুষই টাওয়ার থেকে বের হয়েছিলো। প্রথম প্রথম সকল ব্যক্তিই টাওয়ারের মধ্যে আটকা ছিলো, তারা কোনে ভাবে টাওয়ার থেকে বের হতে পারছিলো না। পনেরো বছর পরে এতো বড় একটা সুযোগ পেয়ে অনেকেই সেটা হাতছাড়া করে নি। বেশীরভাগ টাওয়ারের দুর্বল ব্যক্তি গুলোই বেরিয়ে গিয়েছে টাওয়ার থেকে। তবে এখনো অনেক মানুষ রয়েছে যারা সাহস করে টাওয়ারের মধ্যে রয়েছে এবং পুরো টাওয়ারকে ক্লিয়ার করার সিদ্ধান্ত নিয়ে রয়েছে। তাদের জন্য টাওয়ার অনেকটা নেশার মতো হয়ে গিয়েছে যেখানে থাকা ছাড়া তারা অসীম শক্তি অর্জন করতে পারবে না। 

টাওয়ারের একটা জায়গার মধ্যে টাওয়ারের গাইড ভাসমান অবস্থায় ছিলো। তার সামনে কোনো থ্রিডি স্ক্রিন বা মনিটর ছিলো না, তারপরও সে সব কিছু দেখতে পাচ্ছিলো। টাওয়ারের মধ্যে কোথায় কি হচ্ছে সব কিছু সম্পর্কে টাওয়ার অফ স্লোথের গাইড এ.কে.এ জিরো জানে। 

[মাস্টার, আমি বুঝতে পারছি না আপনি একটা সামান্য মানুষকে নিজের সবচেয়ে মূল্যবান জিনিস আপনার বডিটা কেনো দিলেন।]

জিরো অনেক কিছু বুঝতে পারছিলো না। প্রথমত সাত ডিম্যান প্রিন্সের মধ্যে পাঁচটা ডিম্যান প্রিন্সের বডিই নষ্ট হয়ে গিয়েছিলো ইটার্নাল স্লিপে যাওয়ার পূর্বে। তার মাস্টারের বডিটা স্পেশাল হওয়ার কারনে সেটা ঠিক ছিলো, তবে তার মাস্টার হঠাৎ করে তার স্পেশাল বডিটা কেনো সাধারণ একটা মানুষকে দিবে সেটা বুঝতে পারছিলো না। ডিম্যান প্রিন্স অফ স্লোথ তো চাইলেই নিজের বডিতে রেইনকার্নেট হতে পারতো। কিংবা সেই মানুষের সউলটাকেও নিজের করে নিতে পারতো। 

[হয়তো আমার মাস্টারের কোনো গ্রেট প্লান হবে। তাই আমাকে সব কিছু চুপ করে দেখতে হবে। এবং মাস্টারের রেইনকার্নেটের জন্য অপেক্ষা করতে হবে।]

জিরোর অতীতের একটা স্মৃতি হঠাৎ মনে পরতে শুরু করলো। স্মৃতিতা তার জন্য সবচেয়ে বিস্ময়কর ছিলো। সাত ডিম্যান প্রিন্সের মধ্যে ডিম্যান প্রিন্স অফ স্লোথকে খুব কম ডিম্যান এবং অন্য স্পিসিজরা দেখেছে। যার মূল কারন ছিলো ডিম্যান প্রিন্স অফ স্লোথ সারা দিন, সারা মাস এবং সারা বছর শুধু ঘুমিয়েই সময় পার করতো। এজন্য তাকে খুব কম ব্যক্তিই দেখেছে। যে কয়েকজন তাকে দেখেছিলো সবাই হ্যান্ডসাম একটা পুরুষের বসেই দেখেছিলো এবং ডিম্যান প্রিন্স অফ স্লোথের চার্মে আকৃষ্ট হয়েছিলো। ঠিক সেই ব্যক্তিদের মধ্যে ডিম্যান প্রিন্স অফ স্লোথের রয়েল মেইড জিরোও ছিলো। প্রথম দিকে ডিম্যান প্রিন্স অফ স্লোথের কোনো পারশোনাল মেইড ছিলো না। তাই ডিম্যান কিং কোনো গুরুত্বপূর্ণ কাজ দিলে সেটা ডিম্যান প্রিন্স অফ স্লোথের কাছে পৌঁছাতে সময় লাগতো। তাই তখন সে তার পারশোনাল মেইড বানিয়ে ফেলে জিরোকে এবং তার সমস্ত কাজের দায়িত্ব দিয়ে দেই তার উপরে। ডিম্যান প্রিন্স অফ স্লোথ বেলফেগরের আসল পরিচয় তখন শুধুমাত্র ডিম্যান কিং ব্যতীত আর কেউ জানতো না। তবে বেলফেগরের রয়েল মেইড হওয়ার পর জিরোও এই অজানা সত্য জানতে পারলো। 

-->> জিরো আমি কাউকে আমার এই রূপ দেখাতে চাই না। বিশেষ করে কোনো ছেলেদের না। এটা অনেকটা আমার কাছে অভিশাপের মতো, যাকে লুকানোর একটা সুযোগ আমাকে ডিম্যান কিং দিয়েছে। তাই তো আমি তার জন্য আমার জীবনও দিতে রাজি আছি। (বেলফেগর)

জিরো অতীতের চিন্তা এখানেই শেষ করলো। সে তার মাস্টারের সেই কথাকে ভাবতে লাগলো। 

[মাস্টার আপনার ইচ্ছাই আমার কর্তব্য।]

জিরো তার মাস্টারের ইচ্ছার বিরুদ্ধে কোনো কাজ করে না। তাই এবারো কোনো কাজ করে নি। তবে তার মনে এখনো দ্বিধা রয়েছে। কারন একজন সাধারণ মানুষ তার মাস্টারের বডিকে ব্যবহার করতে কোনো ভাবেই পারে না। যদিও তার মনে কষ্ট হচ্ছিলো তারপরও সে আপাতোতো তার মাস্টারের রেইনকার্নেটের অপেক্ষা ছাড়া আর কিছু করতে পারবে না।


* * * * *

অন্যদিকে পুরো টাওয়ার অফ স্লোথের চেহারা পাল্টে গিয়েছে। পঞ্চাশ তম ফ্লোর ক্লিয়ার করার পর সবাই তাদের ইফোর্ট অনুযায়ী টাওয়ারের গাইড থেকে একটা স্বপ্ন বা ইচ্ছা পূর্ন করতে পেরেছে। ইচ্ছা গুলো অনেকটা স্বপ্নের মতো। কেউ একটা মনস্টার হত্যা করলে তার সেই একটা মনস্টারের উপরেই খুব সামান্য একটা স্বপ্ন পূর্ণ হয়েছে। আবার কেউ এক হাজার মনস্টার হত্যা করলে সেটার উপরে একটু বড় ইচ্ছা পূর্ণ হয়েছে।

একটা করে ইচ্ছা বা স্বপ্ন পূর্ণ করার পর পুরো টাওয়ারই এখন পাল্টে গিয়েছে। যারা শক্তিশালী ছিলো তারা আরো শক্তিশালী হয়েছে এবং যারা দুর্বল ছিলো তাদের অধিকাংশই টাওয়ার থেকে বেরিয়ে গিয়েছে। পূর্বের টাওয়ারের শক্তিশালী ক্লান যারা সবাইকে তাদের শক্তি দিয়ে দমিয়ে রেখেছিলো তারা হলো আমেরিকান ক্লান। এক বছর পূর্বেও তারা পুরো টাওয়ারের মধ্যে অনেক শক্তিশালী ক্লান ছিলো। তবে বাংলাদেশী ক্লানের লিডারের হাতে যুদ্ধের ময়দানে আমেরিকান ক্লানের লিডারের মৃত্যু হওয়ার পর তারা এখন ততটাও শক্তিশালী নয়। তাদের শক্তির পতন হওয়ার ফলে এখনো বেশ কিছু ক্লান টাওয়ারের টপ শক্তিতে পৌঁছে গিয়েছে। যাদের মধ্যে জাপানিজ ক্লান এখন শীর্ষে আছে।

মোট পাঁচটা ক্লান এখন ক্ষমতার চূড়ায় বসে আছে। যাদের মধ্যে জাপানিজ, চাইনিজ, রাশিয়ান, আমেরিকান এবং বাংলাদেশী ক্লান রয়েছে। যদিও দেশ হিসেবে বাংলাদেশ অনেক ছোট। তারপরও টাওয়ারের মধ্যে ক্ষমতার দিক দিয়ে সেই দেশের মানুষেরা সবার মনের মধ্যেই ভয় তৈরী করেছে। টপ পাঁচ ক্লান বর্তমানে একটা চুক্তির মধ্যে এসেছে। যেহেতু তাদের সবারই গন্তব্য টাওয়ারকে ক্লিয়ার করা, তাই সেটা করার জন্য তাদের অবশ্যই একে অপরের সাহায্যের প্রয়োজন হবে এখন। তারপরও কেউ কাউকে বিশ্বাস করে না। শুধুমাত্র নিজেদের স্বার্থের জন্যই তারা চুক্তি করেছে একে অপরের সাথে। পাঁচটা টপ ক্লানই ৫৫তম ফ্লোরে রয়েছে এবং সেটা ক্লিয়ার করার চেষ্টা করছে। পঞ্চাশ তম ফ্লোর পর্যন্ত তাদের জন্য অনেকটা সহজ ছিলো। তবে তার উপরে আসার পর থেকে এখন অনেক কষ্টকর হয়ে যাচ্ছে। বিশেষ করে এখনকার বস গুলো এতো শক্তিশালী যে তারা এক এট্যাকেই একটা ক্লানের সব সদস্যদের হত্যা করে দিতে পারতো। কোনো উপায় না দেখেই টপ ক্লান গুলো একে অপরের সাথে চুক্তি করেছে।

-->> এই ফ্লোরের সাধারণ মনস্টার গুলোই তো এতো শক্তিশালী, তাহলে বস মনস্টার কতটা শক্তিশালী হবে?

-->> চিন্তা কিসের, এদের হত্যা করে আইটেম গুলোও অনেক ভালো এবং উচ্চ র‍্যাংকের পাওয়া যাচ্ছে।

-->> আমি ভাবছি আবারো কি টপ ক্লানের মধ্যে ফাইট হবে?

-->> আমি শুনেছি বাংলাদেশী ক্লানের ভাইস লিডার নাকি মারা গিয়েছে আমেরিকান ক্লানের স্পাই এর হাতে। তাহলে কি আরেকটা যুদ্ধ আশা করা যাচ্ছে না এখানে?

-->> আমি বুঝতে পারছি না, বাংলাদেশী ক্লানের পয়জন লেডি মারা যাওয়ার পরও কিভাবে সেটা এতো শক্তিশালী রয়েছে? 

-->> আমাদের ক্লানের লিডারে কারনে। সে একাই পুরো একটা ক্লানের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে পারে। তার আর্মার এই টাওয়ারের মধ্যে সবচেয়ে শক্তিশালী এবং ইনডিসট্রাক্টেবল। (বাংলাদেশী ক্লানের একজন)

পাঁচ ক্লানের সদস্যরা একসাথে ৫৫তম ফ্লোর ক্লিয়ার করার চেষ্টা করছিলো। সাধারণ মেম্বার গুলো সাধারণ মনস্টার হত্যা করছিলো এবং ক্লানের গুরুত্বপূর্ণ মেম্বার গুলো বস মনস্টার হত্যার চেষ্টা করছে।

-->> আবির, আমার মনে হয় না আমরা এভাবে বস মনস্টারকে হত্যা করতে পারবো। আমাদের প্লান চেঞ্জ করতে হবে। (উইলিয়াম)

রাশিয়ান ক্লানের লিডার হঠাৎ কথাটা বললো। তার সাথে চাইনিজ ক্লানের লিডারও বলতে লাগলো,

-->> আমাদের এট্যাক গুলো যথেষ্ট না এই বসের জন্য। এই সময়ে আমাদের পয়জন লেডিকে দরকার ছিলো। তার পয়জন বেশ কাজে দিতো এই ফাইটে। (জং মিং)

পয়জন লেডির কথা শুনতে পেরে বাংলাদেশী ক্লানের লিডার আবিরের চোখে রাগের ছাপ দেখা গেলো। সে চিল্লিয়ে বলতে লাগলো।

-->> আমি এখানে ট্যাংক কাজ করছি একাই এবং বসের সকল এট্যাক গুলো নিচ্ছি। আর তোমাদের ফালতু কথা বলার সময় হচ্ছে। তোমরা নাকি সবচেয়ে শক্তিশালী ব্যক্তি এইটুকুই নাকি তাহলে তোমাদের এট্যাক। (আবির)

বাকি দুই লিডার কোনো কথা বললো না। তবে চাইনিজ এবং রাশিয়ান ক্লানের লিডার দুজন আবিরকে বোঝানোর চেষ্টা করলো। তবে তারা বোঝাতে সক্ষম হলো না। মূলত তারা তাদের ম্যাচের মতো বসের সাথে আসে নি ফাইট করতে। তাদের সামনের বস ছিলো "সউল কালেক্টর"। যে দেখতে বিশাল দশ হাত ওয়ালা বানরের মতো। এই বসের স্পেশাল পাওয়ার, এই ফ্লোরে যত ব্যক্তি মারা যাবে তাদের সউলের বিনিময়ে সেই বস শক্তিশালী হতে থাকবে। আপাতোতো সেই বস এতোটা শক্তিশালী হয়েছে যে তার বিরুদ্ধে টপ ক্লানও কিছুই করতে পারছে না।

-->> আবির আমাদের এক সপ্তাহ পরে আবারো এই ফ্লোর ক্লিয়ার করার চেষ্টা করতে হবে। আপাতোতো এই বস মনস্টার এতোটা শক্তিশালী হয়েছে যে সে চাইলে আমাদের সবাইকে হত্যা করে ফেলতে পারবে। (উইলিয়াম)

রাশিয়ান ক্লানের লিডার কথাটা বললো জোর গলায়। কথাটা আবিরের পছন্দ না হলেও এটাই তাদের জন্য সবচেয়ে বেস্ট ছিলো। তাই তারা বসকে একা রেখে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিলো। তারা সেখান থেকে চলে আসবে ঠিক তখনি একটা লাল বুলেটের মতো কিছু একটা "সউল কালেক্টর" বসের বুক বরাবর লাগলো। বুলেট বললে ভুল হবে জিনিসটা অনেকটা একটা লেজারের মতো ছিলো। সেটা উপর থেকে নিচু হলো এক পলকের মধ্যে, যা পাঁচ টপ ক্লানের লিডারও দেখতে পারে নি। তখনি সউল কালেক্টরের মতো শক্তিশালী একটা বস দুই টুকরো হয়ে গেলো। তার শরীরের ব্লাড গুলো বের হতে শুরু করলো এবং সেটা একটা বিশাল গোল বলের তৈরী করলো। ব্লাডের বলটা এতো বড় ছিলো যে সেটা চাইলেই একটা বড় দালান ভেঙে দিতে পারতো। বলটা হঠাৎ আকাশের দিকে উড়তে লাগলো। পাঁচ ক্লানের লিডারই আপাতোতো এই জায়গায় ছিলো, তাছাড়া তাদের সাথে যারা এসেছিলো এখানে তারা সবাই মারা গিয়েছে। বাকিরা পিছনের ছোট ছোট মনস্টার গুলো হত্যা করছিলো বলে এসব সামনে থেকে দেখতে পারে নি। তবে সবারই নজর আকাশের দিকে ছিলো। লাল ব্লাডের রঙের পুরো পোষাকে ঢাকা একটা মেয়ে আকাশে ভাসছিলো। ভাসছিলো বললে ভুল হবে। সে তার বাম হাতে একটা ছাতা ধরে রেখেছিলো, যেটা তাকে হাওয়ার মধ্যে উড়তে সাহায্য করছিলো। বিশাল বলটা উড়ে তার দিকেই যাচ্ছিলো। বিশাল বলটা মেয়েটার যত কাছে যাচ্ছিলো তার আকারও ততই কমে যাচ্ছিলো। দেখতে দেখতে সেটা এক বিন্দু ব্লাডের কণা হয়ে গেলো যা ঠিক মেয়েটার ডান হাতের আঙ্গুলের সামনে এসে থামলো। সেই ব্লাডের কণাটা মেয়েটার ডান হাতের আঙ্গুলের মধ্যে এবজোর্ব হয়ে গেলো। হঠাৎ সবারই মনে হচ্ছিলো মেয়েটার শরীরের ব্লাডের রঙের যে পোষাকটা সেটা আরো উজ্জ্বল হলো। কিছু ক্ষনের জন্য সবার নজরই এখানে ছিলো। আবার কিছুক্ষনের জন্য তাদের নজরটা ান্য জায়গায় চলে গেলো। কেউই মেয়েটা খুঁজে পাচ্ছিলো না। বিষয়টা অনেকটা ম্যাজিকের মতো মনে হচ্ছিলো। হঠাৎ তাদের সামনে এসে আবার হঠাৎ এর জন্যই হারিয়ে গিয়েছে।

সবচেয়ে বেশী অবাক হয়েছিলো পাঁচ ক্লানের লিডারগন। তারা এতোদিন এরকম শক্তিশালী কোনো ব্যক্তি সম্পর্কে শুনে নি বা দেখে নি। আপাতোতো টাওয়ারের সবচেয়ে শক্তিশালী ব্যক্তি যাকে একটা মনস্টার বলে ডাকা হয় সেটা তাদের সাথেই ছিলো। তাহলে এরকম একটা ব্যক্তি কিভাবে তাদের সামনে এখন আসলো সেটা কেউই বুঝতে পারলো না।

-->> আমাদের প্রতিটা মেম্বারকে জানিয়ে দাও, যেখানেই এই মেয়েটাকে দেখবে তারা যেনে সবার প্রথমে আমাকে খবর দেই। আমি তাকে আমাদের ক্লানে যুক্ত করতে চাই, যে ভাবেই হোক।

উক্ত কথাটা চার ক্লানের লিডারই বললো। তবে জাপানিজ ক্লানের লিডার চুপ ছিলো এবং মনে মনে ভাবছে,

"হিনা, তোমার ফ্রেন্ড তাহলে জীবিতই আছে।" 


* * * * * 

(৫৬ তম ফ্লোর)

৫৫তম ফ্লোর ক্লিয়ার করার সাথে সাথেই ৫৬ তম ফ্লোর আনলক হয়েছে। এই ফ্লোরে প্রথম যে ব্যক্তি প্রবেশ করেছে সে হলো একটা মেয়ে। রক্ত লাল ড্রেসে সে আজকের পর থেকে পুরো টাওয়ারেই জনপ্রিয় হয়ে যাবে। হাতের ছাতাকে বন্ধ করে সেটা গাড়ের সাথে হেলিয়ে রেখে হাঁটতে ছিলো মাহাবি। 

-->> আমি আর অপেক্ষা করতে পারছি না। এই এক বছরে এই নতুন শরীরের পাওয়ারের সাথে নতুন কিছু জ্ঞানের সাহায্যে আমি অবশেষে বের করতে পেরেছি কিভাবে আমি হৃদয়ের কাছে যেতে পারবো। সব কিছু রেডি এখন শুধু আমাকে একটা জিনিসের ব্যবস্থা করতে হবে। (মাহাবি)

মাহাবি এমন একটা জায়গার মধ্যে এসেছে যেটা সম্পর্কে হয়তো এই টাওয়ারের মানুষগুলোর মধ্যে সে একাই জানে। অবশ্য এখনো যেহেতু কোনো মানুষই ৫৬ তম ফ্লোরে প্রবেশ করে নি তাই কারো জানারও কথা না। মাহাবি স্বাভাবিক ভাবে প্রবেশ করলে সে নিজেও এটা সম্পর্কে জানতো না। মাহাবির পাওয়া নতুন বডিতে শুধুমাত্র স্পেশাল স্কিল নয় বরং সেটার মধ্যে পুরো একটা জ্ঞানের ভান্ডার রয়েছে। যা মাহাবি প্রতিটা স্বপ্নে এক এক করে দেখতে পায়। একটা স্বপ্নের মাধ্যমেই সে জানতে পেরেছে এই স্পেশাল জায়গা সম্পর্কে। যেখানে ডিম্যান কিং নামক এক ব্যক্তি অনেক স্পেশাল ভাবে একটা বস্তু রেখেছিলো।

-->> তাহলে এটাই সেই জায়গা? (মাহাবি)

মাহাবি একটা জায়গার মধ্যে এসে থেমে গিয়েছে। সামনে সোজা খাঁড়া বিশাল একটা পাহাড়, যার উপরে উঠার কোনো রাস্তা নেই। মাহাবি এগিয়ে গেলো এবং পাহাড়ের খুব স্পেশাল একটা পয়েন্টের সামনে গিয়ে দাঁড়ালো। একটা পাজেল রয়েছে এখানে, যা সে তার স্বপ্নে দেখেছিলো। ডান হাতের আঙ্গুলকে সে পাহাড়ের দেওয়ালের দিকে নিয়ে আসলো। যার সাথে সাথে তার আঙ্গুলের সামনে থেকে এক ফোঁটা ব্লাড বের হলো। ব্লাডের ফোঁটাটা লেজারের মতো পাহাড়ের গায়ে লাগলো। পাহাড়ের গায়ে ব্লাডের স্পর্শ লাগার সাথে সাথে পাহাড়ের ছোট একটা অংশ দরজার মতো খুলে গেলো। মাহাবি কোনো রকম দ্বিধাবোধ না করে ভিতরে প্রবেশ করলো।

-->> তাহলে সেই ব্যক্তিটা এই বস্তুকে এখানে লুকিয়ে রেখেছে। (মাহাবি)

ভিতরে বিশাল ড্রাগনের হাড্ডি রয়েছে। যার আকার এতো বড় ছিলো যে মাহাবি নিজ থেকে উপরের উচ্চতা বুঝতে পারছিলো না। মাহাবি এগিয়ে গেলো সেই ড্রাগনের হাড্ডির দিকে। একটা জাদুঘরে ডাইনোসরের সব গুলো হাড্ডি প্রথমবার একত্রে দেখার মতো মাহাবি ড্রাগনটার দিকে তাকিয়ে ছিলো। 

-->> ট্রু ড্রাগন! (মাহাবি)

বিশাল দুটো ডানা যুক্ত ড্রাগনের দিকে তাকিয়ে ছিলো মাহাবি। সে এখানে অবাক হয়ে তার সময় নষ্ট করতে চাচ্ছে না। তাই সে তার হাতের ছাতাকে ফুটিয়ে নিলো। ছাতা ফুটানোর সাথে সাথে সে হাওয়ার মধ্যে ভাসতে শুরু করলো। মাহাবি উড়তে উড়তে চলে গেলো ড্রাগনটার মুখের সামনে। এবার মাহাবি তার ডান হাতের তালুটা সামনের দিকে রাখলো। তার হাতের সামনে হঠাৎ বিশাল ব্লাডের বল তৈরী হতে শুরু করলো। সময়ের সাথে ব্লাডের বলটা আরো বড় হতে শুরু করলো। 

"৭২ ট্রু ড্রাগনের একজন, ব্লাড ড্রাগন জাগ্রত হও।"

মাহাবি কমান্ড দিলো এবং তার হাতের সামনের বিশালাকার ব্লাডের বলটাকে সামনের দিকে পাঠিয়ে দিলো। ব্লাডের বলটা ড্রাগনের শরীরে লাগার পূর্বেই পানি ভর্তি বেলুন ফাটার মতো ফেটে গেলো এবং পুরো ব্লাড চারিদিকে ছড়িয়ে যেতে চাচ্ছিলো। তবে তখনি সেই ব্লাডগুলো যেভাবে ম্যাগনেট একে অপরের সাথে যুক্ত হয় ঠিক সেভাবেই সবটুকু ব্লাড ড্রাগনের শরীরে যুক্ত হয়ে গেলো। একটা আলোর ফ্লাশ দেখা দিলো সেখানে এবং তারপর আর বিশাল ড্রাগনের হাড্ডিকে দেখা গেলো না। 

[কিউউউ কিউউউ কিউউ কিউ]

একটা ছোট ড্রাগনের বাচ্চা কান্না করতে করতে নিচে পরছিলো। ড্রাগনের বাচ্চাটা একদম ছোট ছিলো যদিও সেটা নিচে পরে গেলো মারা যেতো না বরং এখনি তার ডানা দিয়ে উড়তে শিখে যেতো তারপরও মাহাবি তার হাতের ব্যাট ছাতার সাহায্যে অনেক স্পিডে এগিয়ে গিয়ে ড্রাগনের বাচ্চাটাকে ধরলো। ড্রাগনটাকে ধরে সে ছাতার সাহায্যে খুব আস্তে আস্তে মাটিতে নেমে গেলো। ড্রাগনের বাচ্চাটা খুব ছোট ছিলো, মাহাবি তাকে ডান হাত দিয়ে বাচ্চা কোলে নেওয়ার মতো করে ধরে রেখেছে। ছোট বাচ্চা মায়ের কোলে যেভাবে ঘুমায় ঠিক সেভাবেই ড্রাগনের বাচ্চাটা ঘুমাচ্ছিলো। মাহাবি এবার তাকালো ড্রাগনটার দিকে, যেটা দেখতে তার নামের মতোই। ব্লাডের রঙের মতোই ছিলো ড্রাগনটা।

-->> খুব দ্রুত আমাদের দেখা হবে হৃদয়। (মাহাবি)

মাহাবির হঠাৎ পুরানো কিছু কথা মনে পরতে শুরু হলো। সময়টা অনেক অনেক পূর্বের ছিলো। তখন মাত্র তারা টাওয়ারে প্রবেশ করেছিলো। তারা বলতে হৃদয় এবং মাহাবি। দুজনে বিবাহিত ছিলো। টাওয়ারে আসার পূর্বে তাদের জীবনটা বলা যায় অনেকটা সুখের ছিলো। যদিও প্রথমে মাহাবির মানতে কষ্ট হয়েছিলো তারপরও সে এক সময়ে হৃদয়কে মেনে নিয়েছিলো এবং তাকে ভালোও বাসতে শুরু করেছিলো। তবে সব কিছু টাওয়ারে আসার পর হঠাৎ পাল্টে গেলো। প্রতিটা স্বামীর কর্তব্যই ছিলো তাদের স্ত্রীকে সুরক্ষিত রাখা। ঠিক তেমনি টাওয়ারে প্রবেশ করার পর হৃদয় তার স্ত্রী মাহাবিকে সুরক্ষিত রাখতো। টাওয়ারে প্রবেশকৃত মানুষদের মধ্যে শক্তিশালী এক ব্যক্তি এবং লিডার বলে পরিচিত লাভ করেছিলো হৃদয় খুব দ্রুতই। তবে সব কিছু পাল্টে যায় যখন হৃদয় একটা ম্যাজিকাল আইটেম পায়। একটা আজব রিং যেটা হৃদয়কে অন্য কোনো ম্যাজিকাল আইটেম ব্যবহার করতে দিতো না বরং কোনো ম্যাজিকাল আইটেম হাতে নিলেই সেটাকে সাধারন একটা আইটেম বানিয়ে দিতো। এরকম পরিস্থিতিতে মাহাবিকেই তার স্বামীর যত্ন নিতে হচ্ছিলো। সব কিছু একদম ঠিক ঠাক চলছিলো, মাহাবি কোল্ড স্বভাবের হলেও সে তার স্বামীকে অনেক বেশী ভালোবাসতো। শুধু সেটা সে প্রকাশ করতে পারতো না অন্যদের মতো। তার মনের মধ্যে সব সময় একটা কথায় চলতো,

"আমি এক সময়ে অন্যকে ভালোবেসেছিলাম। এই বিষয়ে হৃদয় জানে তারপরও সে আমাকে বিয়ে করেছে। আমি এখন ওকে ভালোবাসি, তবে এটা অন্যদের মতো প্রকাশ করলে হয়তো সবাই আমাকে লো ক্লাস একটা মেয়েই মনে করবে।"

এই চিন্তার কারনে মাহাবি কখনোই তার অরিজিনাল ফিলিংস তার স্বামীর সাথে শেয়ার করে নি। বিষয়টা ভয়ের ছিলো। তাইতো সব সময় সে নিশ্চুপ থাকাটাই পছন্দ করেছে এবং তার স্বামীকে ভালোবেসে গিয়েছে। তবে সব জিনিসই চেঞ্জ হতে শুরু করে। তাদের সম্পর্কটাও চেঞ্জ হতে শুরু করেছিলো। বাকিদের মতো তাদের মধ্যে তৃতীয় কোনো মানুষ আসে নি যারা তাদের সম্পর্ককে আলাদা করবে। বরং এমন একটা বিয়িং এসেছিলো যার সম্পর্কে মাহাবি কোনো কিছুই জানতো না। একটা কালো কালো ছায়ার মধ্যে ঢাকা এক ব্যক্তি বের হয়েছিলো হৃদয়ের হাতের রিং থেকে এবং একটা মেসেজ মাহাবিকে দিয়েছিলো।

[তুমি যদি তোমার স্বামীকে জীবিত চাও তাহলে তোমার কাছে দুটো রাস্তা আছে। প্রথমত যা কিছু হতে যাচ্ছে তা হতে দিতে হবে। তবে এতে তোমার স্বামীর মারা যাওয়ার সম্ভবনায় বেশী থাকবে। এবং দ্বিতীয় তুমি তোমার স্বামীকে বিশ্বাস ঘাতকতা করে তোমার পয়জন সোর্ড দিয়ে গুরুতর আহত করবে। একটা এন্টিডোট তার কাছে ফেলে রেখে বিষয়টাকে বিশ্বাসঘাতকতার মতো দেখিয়ে সেখান থেকে চলে যাবে। এখানে দুটি পসিবিলিটি রয়েছে, যদি তোমার স্বামী এন্টিডোটটা গ্রহন করে তাহলে তোমাদের দেখা আর কোনোদিনই হবে না কিন্তু যদি সে এন্টিডোটটা গ্রহন না করে তাহলে তোমাদের দেখা খুব শীঘ্রই হবে। এখন সিদ্ধান্ত নেওয়ার দায়িত্ব তোমার। দুটোর একটা পথ বেছে নিবে নাকি স্বাভাবিক ভাবে তোমার স্বামীকে হত্যার মুখে ফেলে দিবে?]

মাহাবি ব্যাপারটাকে তখন স্বাভাবিক ভাবে নিতে পারে নি। সে শত চেষ্টা করেও নিজের স্বামীকে হারাতে চাই নি। এই ট্রাপ হয়ে থাকা টাওয়ারের মধ্যে তার একমাত্র পরিবারই ছিলো তার স্বামী, তাকে কিভাবে সে বিশ্বাসঘাতকতা করতে পারে। যদিও সে তার ভালোবাসাটা প্রকাশ করে না অন্যদের মতো, তারপরও সে তার হৃদয়কে অনেক ভালোবাসতো। এভাবে অনেকদিন পার হলো তারপরও মাহাবি সেই লোকটার বলা কথা মতো কাজ করে নি। প্রতি রাতেই মাহাবির সামনে একই মেসেজ আসতে থাকে, এবং সেই সাথে হৃদয়ের উপরে বিপদ গুলোও বারতে থাকে। এক সময়ে হৃদয়ের উপরে সবচেয়ে বড় বিপদটা চলে আসে। আর সেটা হলো আবির। আবির সেই ছেলেটা যার সাথে মাহাবির অনেক পূর্বে সম্পর্ক ছিলো প্রায় এক বছরের। যদিও তাদের সম্পর্কটা তত গভীরের ছিলো না তারপরও আবির অনেকটা ভালোবাসতো মাহাবিকে এবং তার জন্য সবকিছুই করতে পারতো। টাওয়ারে এর পূর্বে আবিরের সাথে মাহাবির কোনোদিন দেখা হয় নি৷ যেদিন দেখা হয়েছিলো সেদিনই আবির হৃদয়কে হত্যা করতে চেয়েছিলো যা মাহাবির জন্য সম্ভব হয় নি। মাহাবি সেই কালো ছায়ার ব্যক্তিটার মেসেজকে বুঝতে পারলো এবং বুকে কষ্ট রেখে সে অনুযায়ী কাজ করলো। 

(এরপরের কাহিনী আপনারা ভালোই জানেন।)

মাহাবির অতীতের ফ্লাশব্যাক এখানেই শেষ হলো। তার চোখ দিয়ে কয়েক ফোঁটা পানি পরছিলো। সে তার বাম হাতের ছাতাটা ছেড়ে দিলো হাত থেকে। ছাতাটা হাওয়ার মধ্যেই ভাসতে লাগলো একা একা। বাম হাত দিয়ে মাহাবি তার চোখের পানি মুছে নিলো এবং ড্রাগনটার দিকে আবার তাকালো।

-->> আমি ডেস্টিনি কে বিশ্বাস করতাম না। তবে এখন বুঝি সেটা আসলেই অবিশ্বাসযোগ্য একটা জিনিস। কারন আমাদের হাতেই আমাদের ডেস্টিনি চেঞ্জ করার সুযোগ রয়েছে। আর আমি এখন আমার ডেস্টিনি চেঞ্জ করবো এবং যার বাহুতে আমার জায়গা তার কাছে চলে যাবো। (মাহাবি)


* * * * * 

(টাওয়ার অফ গ্লাটোনি)

টাওয়ার অফ গ্লাটোনির মধ্যে মোট তিনটা কিংডম রয়েছে। যার দুটো সব সময় একে অপরের সাথে যুদ্ধতে ব্যস্ত থাকে। এবং অন্যটা বেশ কিছুবছর হলো চুপ রয়েছে। তিন কিংডমের মধ্যে একাডেমি রয়েছে। যার মধ্যে ব্লু কিংডমের একাডেমির মধ্যে ইনসাইডার এবং আউটসাইডার সকল স্টুডেন্টই রয়েছে। ব্লু কিংডমের একাডেমির মধ্যে একটা বিশাল ইভেন্ট শুরু হয়েছে। এটা পাঁচ বছর অন্তর অন্তর উৎযাপিত হয়। এই ইভেন্টের মাধ্যমে একাডেমির সবচেয়ে মেধাবী এবং শক্তিশালী টিম গুলো বের করা হয় এবং তাদেরকে তাদের প্রাপ্ত সম্মান দেওয়া হয়। 

টুর্নামেন্টের মোট তিনটা রাউন্ড রয়েছে। যার মধ্যে প্রথম রাউন্ড হলো কয়েন সংগ্রহ করা। মোট তিন ধরনের কয়েন একাডেমির এক হাজার ড্যানজনের মধ্যে লুকিয়ে রাখা হয়েছে। এই টুর্নামেন্টে অংশ নেওয়া সকল টিমের একটাই কাজ সেটা হলো এই কয়েন গুলো সংগ্রহ করা। তিন ধরনের কয়েনের মধ্যে প্রথমটা ব্রোঞ্জ কয়েন। এরপরের টা সিলভার কয়েন। এবং সর্বশেষ রয়েছে গোল্ড কয়েন। সিলভার এবং গোল্ড কয়েন পাওয়ার সম্ভবনা খুবই কম হওয়ার কারনে সব গুলো টিমই ব্রোঞ্জ কয়েন খুঁজে পাচ্ছে। তিন ধরনের কয়েন ম্যাজিকের মাধ্যমে তৈরী হওয়ার কারনে সেগুলো বাইরের লেনদেনের কাজে ব্যবহৃত হবে না। আপাতোতো প্রতিটা টিমই বিভিন্ন ড্যানজনের মধ্যে রয়েছে এবং কয়েন সংগ্রহ নিয়ে ব্যস্ত আছে। শুধুমাত্র একটা টিমই কয়েন সংগ্রহ করছিলো না বরং এক জায়গায় বসে রেস্ট নিচ্ছিলো।

এলেক্স ড্যানজনের দেওয়ালের গায়ে পিঠ লাগিয়ে বসে আছে। কোনো কথা সে বলছে না। অন্যদিকে স্নেরা প্রথমে সেন্স ফিরে পাওয়ার ফলে প্রথমত ডুফেস এবং জেয়াবকে হিল করতে যাচ্ছিলো। তবে এলেক্স তাকে প্রথমে এনরিকে হিল করতে বলেছে। এলেক্সের কথা মতো স্নেরা এনরিকে তার হিলিং ম্যাজিক দিয়ে হিল করে তাকে সেন্সে নিয়ে আসে এবং এরপর দুজনে একসাথে বাকিদের হিল করতে শুরু করে। সবাই হিল হয়ে তাদের সেন্সে ফিরে আসলেও এখনো এলিন তার সেন্স ফিরে পায় নি। এনরি এবং স্নেরা প্রাণ এনার্জি কম থাকার কারনে তারা সবার পুরো ইনজুরি হিল করতে পারে নি। শুধু সবার ব্লিডিং টা বন্ধ করেছে এবং মারাত্মক ক্ষতকে ঠিক করতে পেরেছে। তাছাড়া এখনো সবার শরীরে ক্ষতের দাগ রয়েছে। যা অভিজ্ঞ একজন হিলারের কাছে গেলেই ঠিক হয়ে যাবে। মূলত তাদের কাজ ছিলো কয়েন সংগ্রহ করা, তবে সবাই তাদের মোটিভেশন হারিয়ে ফেলেছে। পরিবেশ পুরো নিরব ছিলো। যার মধ্যে কোনো কথা হচ্ছিলো না। তবে হঠাৎ ডুফেস কথা বলতে শুরু করলো।

-->> গাইস, আমাদের এভাবে বসে থাকলে চলবে? এলিনের সেন্স ফিরে আসে নি, আমরা কয়েকজন ওকে নিয়ে ড্যানজনের বাইরে চলে যায় আর বাকিরা কয়েন সংগ্রহ করি। (ডুফেস)

ডুফেস কথা বললেও কেউ তার কথায় সারা দিলো না। সবাই এই টুর্নামেন্টের সামনে আর যেতে চাচ্ছিলো না। প্রথমত তারা এখনো এতোটা শক্তিশালী না আর দ্বিতীয়ত অনেক টিম রয়েছে যারা মোটেও স্বাভাবিক নয়। সবাই অনেকটা ভয় পেয়ে আছে। তবে তাদের মধ্যে এলেক্স ছিলো না। এলেক্স ড্যানজনের দেওয়ালে পিঠ ঠেকিয়ে বসে ছিলো। সে বসে বসে ভাবছে

"আমি এখনো সেই লেভেলে যেতে পারি নি। একজন ব্যক্তিকে হত্যা করা ছাড়া তাকে আমি সহজে হারাতে পারি নি। আমার আরো পাওয়ার দরকার। এমন পাওয়ার যেখানে আমার কিছুই করতে হবে, বরং তার পূর্বেই আমার প্রতিপক্ষরা তাদের হাঁটুতে চলে আসবে।" (এলেক্স)

এলেক্স তার হাতের মুঠোকে শক্ত করে ধরে রাখলো। তার আশে পাশে আরোহী উড়ে বেরাচ্ছিলো। এলেক্সের শরীর থেকে একটা এনার্জি বের হচ্ছিলো। বিশেষ করে তার হাতের রিং থেকে। যে এনার্জিটা অন্য কেউ খেয়াল না করলেও আরোহী সেটা খেয়াল খেয়াল করেছে। এনার্জিটা এমন ছিলো যা আরোহীর শরীরের লোম গুলোকে দাঁড় করিয়ে দিচ্ছিলো। সেই সাথে তার শরীরও কাঁপতে শুরু করলো। আরোহী হঠাৎ একটা বুদ্ধি পেয়ে গেলো। সে এভাবে এখানে সবাইকে চুপ করে বসে থাকতে দেখতে পারছিলো না। যেহেতু তারা সবাই তাদের মোটিভেশন হারিয়ে ফেলেছে এবং এলিনের জন্য অপেক্ষা করছিলো তাই আরোহী দুটো কাজই একসাথে করতে চাইলো। সে এলিনের শরীরের কাছে গিয়ে তার শরীরের মধ্যে প্রবেশ করলো। এবং সেটাকে প্রজেস করে ফেললো। প্রথমে আরোহী পুরো পুরি ভাবে শরীরের কন্ট্রোল পেলো না কারন এলিনের বডিতে বেশ কিছু সিল ছিলো, যার গার্ড হিসাবে দাঁড়িয়ে ছিলো একটা ফিনিক্স বার্ড। হেল ফায়ার ফিনিক্স বার্ড আরোহীর এন্ট্রিকে আটকে দেওয়ার চেষ্টা করছিলো। জায়গাটা ঠিকই এলিনের বডির মধ্যে ছিলো, তবে একটা খালি শূন্য হীন জায়গা যার মধ্যে একটা বিশাল গেইট ছিলো। গেইটের সামনে দাঁড়িয়ে ছিলো হেল ফায়ার ফিনিক্স। যার সামনে আরোহীও তার হিউম্যান ফর্মে এসে দাড়ায়।

[আমি আমার মাস্টারের শরীরকে অন্য কাউকে প্রজেস করতে দিতে পারি না। বিশেষ করে তোমার মতো ডার্কনেস রয়েছে যার সউলের মধ্যে তাকে তো কখনোই প্রজেস করতে দিতে পারি না।] (ফিনিক্স)

-->> ও আচ্ছা, আমি এলেক্সের সাথে থেকে এই কয়েকদিনে এই টিমের সাথে বেশ ক্লোজ হয়ে গিয়েছি। যদিও এরা আমাকে দেখতে পারে না। তারপরও আমি সবার ভালোই চাই। আপাতোতো এলিনের জন্য সবাই এখানে অপেক্ষা করছে। তাই আমি চাচ্ছিলাম এলিনকে উঠিয়ে দিতে। (আরোহী)

আরোহী একটা স্বাভাবিক মেয়ের মতো কথাটা বললো। সে হেল ফায়ার ফিনিক্সের কথাটা বুঝতে পারে নি। 

[আমাকে মনে হয় না দ্বিতীয়বার বলতে হবে আমার কথাটা। এখনি এখান থেকে বের হয়ে যাও। আমি জানি না এলেক্সের সাথে তোমার সম্পর্ক কি। তবে আমার মাস্টারের শরীরকে তুমি যদি আরো একবার কন্ট্রোলে নেওয়ার চেষ্টা করো তাহলে আমার হেল ফায়ার দিয়ে তোমার সউলকে পুড়িয়ে ছাই করে দিবো।] (ফিনিক্স)

ফিনিক্সের কথাটা শুনতে পেরে এবার আরোহী অনেকটা ভয় পেয়ে গেলো। তার চোখ দিয়ে পানি বের হয়ে গেলো।

-->> তুমি সত্যিই একটা পঁচা পাখি। তোমার সাথে আমার কোনো কথা নেই। তোমাকে একটা খাঁচার মধ্যে বন্ধী করে রাখা উচিত। (আরোহী)

আরোহীর কথা শেষ না হতেই হেল ফায়ার ফিনিক্স কালো ডার্কনেসের তৈরী একটা খাঁচার মধ্যে বন্ধী হয়ে গেলো। যার মধ্য থেকে সে কোনো কথা বলতে পারছিলো না। সেই সাথে কোনো তার হেল ফায়ারও সেই খাঁচাকে ভাঙতে পারছিলো না।

-->> আমি জানি না কি হয়েছে। তবে মনে হচ্ছে লাক্ আজকে আমার কাছে আছে। (আরোহী)

আরোহী চোরের মতো আস্তে আস্তে হাটার নাটক করে খাঁচার পাশ দিয়ে চলে গেলো এবং বিশাল গেইটটাকে খুলে ফেললো।


সবাই এলিনের চোখ খোলার অপেক্ষা করছিলো। বিশেষ করে মাইরা। পুরো টিমের মধ্যে এলিনই বেশী গুরুতর আহত হয়েছিলো। পরের চারজন সেটা দেখতে পারে নি। ছয়জন যখন কয়েন কালেক্ট করছিলো তখন ডিউকের কন্যার টিমের সবগুলো ফায়ার এট্রিবিউটর একসাথে তাদের সবচেয়ে শক্তিশালী স্পেল দিয়ে এট্যাক করেছিলো এলিনের উপরে। এলিনের আইস স্পেল শক্তিশালী হলেও সে একা সবার জন্য যথেষ্ট ছিলো না। সবার এক এট্যাকেই পাঁচজন  গুরুতর আহত হয় এবং নিজেদের সেন্স হারানোর পথেই ছিলো। শুধু মাত্র এলিনই দাঁড়িয়ে ছিলো তাদের মধ্যে। তবে সবাই তাদের শক্তিশালী স্পেল আরো দুইবার ব্যবহার করে যার কারনে এলিন অনেক গুরুতর আহত হয়। নিজের সেন্স হারিয়ে ফেলার পূর্বে মাইরা শুধু একটা কথায় শুনেছিলো।

-->> তোমাদের চিন্তা করতে হবে না। একটা ডিভাইন বিস্টের সাথে কন্ট্রাক করলে কেউ কখনো এই সামান্য এট্যাকে মারা যাবে না।

উক্ত কথাটা ডিউকের কন্যা হেয়া বলেছিলো যা এখনো মাইরার কানে ভাসছিলো। মাইরা তাদের টিমের লিডার ছিলো। সে এই অবস্থায় তাদের টিমকে কি বলবে কিছু ভেবে পাচ্ছিলো না। সে নিজেই নিজের মোটিভেশন হারিয়ে ফেলেছে। একজন ডিউকের কন্যা হওয়ার ফলে সে জানে একজন নোবেল কিভাবে অন্যদেরকে ছোট করে দেখে। তবে এটা অনেকটা বেশীই ছিলো। তাদের টিমে দুজনের ডিভাইন বিস্ট থাকলেও তারা এতোটাও শক্তিশালী ছিলো না। তারপরও একটা এস র‍্যাংকের টিম কিভাবে তাদেরকে এভাবে আহত করতে পারে সেটা মাইরা বুঝতে পারছিলো না। হঠাৎ এলিনের সেন্স ফিরে আসতে দেখে সবার নজর সেদিকে চলে গেলো। শুধু মাত্র এলেক্স তার জায়গা থেকে নরছিলো না। সবাই এলিনকে তার অবস্থা সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করছিলো। এলিনের শরীরে এখন আরোহী থাকার ফলে সে আপাতোতো সবাই একটু সাহায্য করতে চাচ্ছিলো একটা মোটিভেশন বক্তব্য দিয়ে, তবে সেটার সুযোগ এলেক্স কেড়ে নিলো। 

-->> টাওয়ারের মধ্যে সব জায়গাতেই আমাদের থেকে শক্তিশালী ব্যক্তি রয়েছে। এখন এখানে যদি আমরা ভয় পেয়ে যায় তাহলে কোনো ভাবেই আমরা টাওয়ারের মধ্যে বেঁচে থাকতে পারবো না। এই টাওয়ার পুরো একটা জঙ্গলের মতো, যেখানে শক্তিশালীরা শিকার করে এবং দুর্বলেরা শিকার হয়। এখন তোমরা বেছে নাও শিকারী হবে নাকি শিকার হবে। (এলেক্স)

এলেক্স সব সময় চুপ থাকতে পছন্দ করে। তাই কেউ তার থেকে এই কথা আশা করে নি। তবে এলেক্সের এই কথাটা শোনার পর সবার মাঝেই একটা আগুন জ্বলে উঠলো। পূর্বের ফাইটটা সবার জন্যই লজ্জাজনক ছিলো। তাই শক্তিশালী হওয়ার উত্তেজনা সবার মাঝেই কাজ করতে লাগলো। 

-->> এরকম আরো অনেক টিমের সাথে আমাদের দেখা হবে। বরং তার থেকেও শক্তিশালী টিমের সাথে ও দেখা হতে পারে। তাই যদি তোমরা শিকারী হতে চাও তাহলে এখন থেকেই শিকার করা শিখতে হবে। (এলেক্স)

কথাটা বলেই এলেক্স হাটতে শুরু করলো। সে ড্যানজনের ভিতরে যাচ্ছিলো না বরং বাইরের দিকে যাচ্ছিলো। যাওয়ার পূর্বে সে আরো একটা কথা বলতে লাগলো,

-->> আমি যাচ্ছি শিকার করতে, তবে তোমরা এখনো প্রস্তুত না। তাই আমি বলবো ড্যানজনের বাইরে গিয়ে রেস্ট নাও এবং নিজেদের এনার্জি সংগ্রহ করে রাখো, কারন আমরা একদিন পর দ্বিতীয় রাউন্ডে উঠতে যাচ্ছি। (এলেক্স)

এলেক্স কথাটা পিছনে না তাকিয়েই বললো। এরপর সে হাঁটতে হাঁটতে ড্যানজনের মধ্য থেকে বের হতে লাগলো। 

-->> জিডুরী? (এলেক্স)

এলেক্সের সাথে জিডুরীর কথা হয় না অনেকদিন। তবে হঠাৎ এলেক্সের একটা কথা মনে পরলো। তাই সে জিডুরীকে ডাক দিলো। এলেক্সের ডাকে সারা দিয়ে তার রিং এর মধ্য থেকে জিডুরী বলতে লাগলো,

[জ্বী মাস্টার।] 

-->> এতো দিনে রিং অফ বিলজবাব অর্ধেক আনলক হয়েছে, তাই আমি নিশ্চিত তোমার অনেক স্মৃতিই ফেরত এসেছে। (এলেক্স)

এলেক্স রিং অফ বিলজবাব এর আনলক এর পার্সেন্টেজ তার সিস্টেমের প্রধান স্ক্রিনে দেখতে পায়, যার কারনে সে জানে কতটা আনলক হয়েছে তার রিং। যেহেতু রিংটা পঞ্চাশ পার্সেন্টেজ আনলক হয়েছে তাই তার অনেক হিডেন অপশন অবশ্যই আনলক হয়েছে যা সম্পর্কে এলেক্স জানে না। আর সেটার সম্পর্কে এলেক্সকে একজনই বলতে পারবে, সে হলো জিডুরী, যাকে মূলত রিং এর নামেই ডাকা হয় এখন। হঠাৎ রিং থেকে একটা ফ্লাশের মতো আলো জ্বলে উঠলো। যা থেকে একটা সুন্দরী মেয়ে বেরিয়ে আসলো। মেয়েটা ঠিক তেমনি দেখতে যেমনটা এলেক্স দেখেছিলো একবার। প্রথম প্রথম সিস্টেম এর মাধ্যমে ভিডিও কলের মতোই জিডুরী এবং এলেক্স কথা বলতে পারতো। অনেকটা AI সিস্টেম হিসেবে কাজ করে জিডুরী। তাই এলেক্স একবার তাকে দেখেছিলো। তবে সামনে থেকে দেখতে আরো বেশী এট্রাকটিভ জিডুরী। তবে সমস্যা হলো জিডুরী একজন মানুষ নয়। 

[হুহ,,, আমি কত সুন্দর নতুন একটা রোমান্টিক গল্প পড়তে শুরু করেছিলাম। তবে এমন সময় আপনি আমাকে ডাক দিলেন।]

[যায়হোক, সবার প্রথমে মাস্টারের আদেশ। আমি কি করতে পারি মাস্টার?]

-->> এতোদিনে অনেকটা স্মৃতি তোমার ফেরত এসেছে তাই না? একটা সেকেন্ডারী এনার্জি কোরের প্রয়োজন আমার। আর সেটার রেসিপি তোমার জানার কথা এখন নিশ্চয়। (এলেক্স)



(৪৪৪৭ শব্দ)


* * *  

To Be Continued 

* * * 

কেমন হলো জানাবেন।

About the Author

হৃদয় বাপ্পী
Hello Friends, My Name is Bappy and Welcome To Our Website. My Passion is to Share Knowledge With Everyone. Also I am a writer.

3 comments

  1. Onek sondor hoice bro
  2. অস্থির হয়েছে বিশেষ করে মাহাবির ড্রাগনকে জীবিত করার সময় কিন্তু একটা জিনিস বুঝলাম না সব ড্রাগন আনলক হবার পর ছোট কিউট আকারে কেন হয়🤔🤔🤔
  3. অনেক সুন্দর হয়েছে।
Cookie Consent
We serve cookies on this site to analyze traffic, remember your preferences, and optimize your experience.
AdBlock Detected!
We have detected that you are using adblocking plugin in your browser.
The revenue we earn by the advertisements is used to manage this website, we request you to whitelist our website in your adblocking plugin.
Site is Blocked
Sorry! This site is not available in your country.