#ডিম্যান_কিং_সিরিজ#
#সুপ্রিম_বিয়িং#
পর্ব:৬৫
লেখকঃহৃদয় বাপ্পী
.
.
.
জ্যাক, এরিয়েল এবং এথিনা তিনজনেই তাদের জায়গা মতো দাঁড়িয়ে ছিলো। যদিও এরিয়েল এবং এথিনা জ্যাক এবং লোকির সামনে দাঁড়িয়ে থাকা ব্যক্তিটার ব্লাডলাস্টে স্পর্শিত হলো না, তবে লোকটা একটা পান্সে যে লোকিকে সেন্সলেস করে দিবে সেটা কখনোই তারা আশা করে নি। এরিয়েল এবং এথিনা তাদের ফাইট বন্ধ করে দিয়েছে। লোকি ডাউন হওয়ার ফলে তার মাইন্ড জেমের ইফেক্টও এখন এথিনার উপরে আর কাজ করছিলো না। তাই তাদের ফাইট আর সামনে নেওয়ার কোনো মানেই ছিলো না। অপর দিকে জ্যাক দাঁড়িয়ে ছিলো তবে তার হাঁটু এখনো কাপছিলো। সে আজ পর্যন্ত কারো এতো শক্তিশালী ব্লাডলাস্ট অনুভব করে নি। তাই তো সে অনেক অবাক এবং ভয়ের মধ্যে আছে জ্যাক। জ্যাকের এরকম ভয় সে অনেক দিন হলো পায় নি। তাই তো নিজের কাছেই তার একটু লজ্জা হতে লাগলো।
-->> তোমার নাম কি?
লোকটা লোকিকে একটা পান্সে সেন্সলেস করে দিয়েছে। এবার সে জ্যাকের দিকে তাকালো। জ্যাক লোকটাকে কোনো ভাবেই চিনতে পারলো না। জ্যাক মূলত লোকটার পিছনের গডকে দেখার চেষ্টা করতে লাগলে, তবে সেটা সফল হলো না। সে লোকটার চোখে যতবার তাকাচ্ছে ততই তার মনে ভয় তৈরী হচ্ছিলো।
-->> জ্যাক্। (জ্যাক)
-->> তোমার ঔ দুর্বল বডি নিয়ে একটা শক্তিশালী গডের অ্যাভেটারকে হারানো অসম্ভব।
লোকটা কথাটা বলে সেখান থেকে চলে যেতে চাচ্ছিলো, তবে তখনি একটা জিনিস তার নজরে আসলো। মাটিতে একটা চিঠি পরে ছিলো যেটা লোকির সাথে জ্যাকের ফাইটের সময়ে জ্যাকের পকেট থেকে পরে গিয়েছে। লোকটা এগিয়ে গেলো এবং চিঠিটাকে উঠালো। হাত দিয়ে ধরার চিঠিটাকে ধরার সাথে সাথে লোকটার হাত থেকে সবুজ কালারের একটা আগুন বের হলো। যা পুরো কাগজটাকে পুরিয়ে দিলো। জ্যাক বুঝতে পারলো না লোকটা কেনো সেটা করলো তবে তার মন বলছিলো লোকটার সাথে ফাইট না করতে।
-->> এটা কি তোমার ছিলো?
লোকটা জিজ্ঞাসা করলো জ্যাককে কথাটা। জ্যাক কিছুটা বিরক্ত হলো লোকটার প্রশ্নে। একে তো সে কাগজটা পুরিয়ে দিয়েছে এখন আবার সে জিজ্ঞাসা করছে সেটা জ্যাকের কিনা। তারপরও জ্যাক স্বাভাবিক হয়ে উত্তর দিলো।
-->> হ্যাঁ....
জ্যাক আরো কিছু বলতে যাবে তার পূর্বেই লোকটা থামিয়ে দিলো এবং বলতে লাগলো,
-->> ঠিক আছে এর ভিতরে থাকা চারটা মুভের একটা ব্যবহার করে দেখাও তাহলে।
জ্যাক এবার কিছুটা বুঝতে পারলো লোকটা কে হতে পারে। যেহেতু মুভের কথা বলেছে তাই অবশ্যই সেই মুভ গুলো তৈরী করা ব্যক্তিই সে।
"তাহলে এটাই ডোয়ার্ক মল্ট।" (জ্যাক ভাবছে)
জ্যাক কোনো কথা বললো না বরং সে ডোয়ার্ক মল্টের দিকে তাকিয়ে ছিলো। দেখে মোটেও বয়স্ক কোনো লোক মনে হচ্ছিলো না। ছাব্বিশ থেকে সাতাশ হবে তার বয়স। চেহারা এতো সুন্দর যে তা থেকে একটা উজ্জ্বল ভাব বের হচ্ছিলো। লোকটা দাঁড়িয়ে ছিলো জ্যাকের একশনের জন্য।
"তাহলে এটাই সেই ব্যক্তি যে একটা গডের পাওয়ারকেও ছাড়িয়ে গিয়েছে।" (জ্যাক ভাবছে)
জ্যাকের উক্ত কথাটা বলার মানে হলো এই টাওয়ারের মধ্যে অনেক শক্তিশালী গডের অ্যাভেটার রয়েছে। যদিও অধিকাংশ গডই তাদের অ্যাভেটারদের কাজে নাক গলায় না তবে কিছু গড রয়েছে যারা তাদের অ্যাভেটারের শরীরকে নিয়ন্ত্রন করছে। যেমনঃ এথিনা এবং লোকি। অ্যাভেটার গুলো তাদের গডদের আংশিক পাওয়ার ব্যবহার করতে পারে। তাই পুরো টাওয়ারের মধ্যে একটা গুজব ছরিয়ে গিয়েছে। জ্যাকের সামনের ব্যক্তি ডোয়ার্ক মল্ট যে কোনো গডেরই অ্যাভেটার নয় তারপরও সে সকল গডদের অ্যাভেটারদের থেকেও শক্তিশালী। এরজন্য সবাই বলে সে গডদের পাওয়ারও ছারিয়ে গিয়েছে। জ্যাকের হঠাৎ মনে হতে লাগলো, তার জ্যাক ইনকার্নেটের সময় তার মাস্টার ছিলো একজন। নিয়াক ইনকার্নেটের সময়ও সে গোল্ডেন ড্রাগনের থেকে অনেক কিছু শিখেছে। টিটান ইনকার্নেটের সময়ে এক হিসাবে সোর্ড এবং ট্রিশুল তাকে ট্রেনিং দিয়েছিলো পানির নিচের একটা জায়গার মধ্যে। তাছাড়াও সে যখন গড ছিলো তখন তারও একজন মাস্টার ছিলো। জ্যাক নিজের চোখটা বন্ধ করলো এবং হঠাৎ তার পুরানো কিছু স্মৃতি মনে পরতে লাগলো। তার চোখের সামনে হঠাৎ এথিনার আম্মা মেটিস ভেসে আসলো। জ্যাক তার মাথাকে একটু নারা দিলো এবং মুখে মুচকি একটা হাসি এনে ভাবতে লাগলো,
"হয়তো অসীম শক্তি পেয়ে তুমি ভুলে গিয়েছো মেটিসের উপদেশটা। কিন্তু আমি এখনো ভুলি নি।" (জ্যাক ভাবছে)
জ্যাক তার শরীরের এস এনার্জিকে একসাথে করতে লাগলো এবং তা দিকে একটা সহজ মুভ ব্যবহার করতে চাইলো। যেহেতু তার স্ট্যােমানা এখন তেমন নেই তাই বড় একটা মুভ তার জন্য সম্ভব না। সে ভেবেছিলো লোকিকে খুব সহজেই সে হারিয়ে দিতে পারবে, কিন্তু লোকি তার সমস্ত ট্রিকের জন্য প্রস্তুত হয়ে এসেছিলো। তাইতো জ্যাক কিছুই করতে পারে নি। জ্যাক তার ডান হাতকে পিছনের দিকে মুঠো করে রাখলো। এবং বাম হাতকে সামনের দিকে মুঠো করে রাখলো। সে তার ডান পা কে পিছনের দিকে এবং বাম পা কে সামনের দিকে রাখলো। এবং শরীরে থাকা এস এনার্জি সে তার ডান হাতে চ্যানেল করতে লাগলো। এনার্জি ডান হাতে চ্যানেল হাওয়ার পর সে দুই বার ঘুরে নিলো এবং লাফ দিয়ে একটা সুপারম্যান পান্স দিলো। পান্সের সাথে সাথে তার ডান হাত থেকে লাল কালারের একটা পাখির মতো বের হলো। যা তেমন পরিপূর্ণ না হলেও এট্যাকটা শক্তিশালী ছিলো। পান্সের ইমপ্যাক্টটা মাটির উপরে পরার পর সে মাটির অনেকটা জায়গা ফেটে গর্ত হয়ে গিয়েছে।
-->> হুমমম। তাহলে তোমার কাছেই চিঠিটা ছিলো। আমার নাম ডোয়ার্ক মল্ট, এবং আজ থেকে আমি তোমার মাস্টার। (মল্ট)
লোকটা কথাটা বলেই পিছনে ফিরলো। জ্যাক সরাসরি এরকম কোনো কথা আশা করে নি। তার এমনিতেই ট্রেনিং এর দরকার ছিলো। বিশেষ করে এই মুভ গুলো পুরোপুরি মাস্টার করার দরকার ছিলো।
"আমি শুধু চারটার ব্যাসিক শিখতে পেরেছি। আমাকে এই চারটা মুভকে মাস্টার করতে হলে অবশ্যই এই লোক থেকে ট্রেনিং নিতে হবে। অবশ্য সেটা খারাপ বিষয়ও হবে না। এমনিতেও এখনো আমি আমার ড্রাগন গুলো খুঁজে পাই নি।" (জ্যাক ভাবছে)
জ্যাককে তার ড্রাগন খুঁজে পেতে এখনো অনেক সময় লাগছে। আর তাছাড়াও তার গন্তব্য এক্সব্লকে যেখানে যাওয়ার পর তার এখানে তৈরী কৃত ম্যাজিক পাওয়ার কোনো কাজেই দিবে না। তাই জ্যাক তার বডিকে শক্তিশালী করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
-->> ঠিক আছে মাস্টার, আমার ট্রেনিং করান। (জ্যাক)
এক্সব্লকের একটা নিয়ম যদি কেউ কখনো কাউকে নিজের ফাইটিং মুভ বা টেকনিক শেখায় তাহলে সে সেই ব্যক্তির মাস্টার হয়ে যায়। এটা সম্মানের ক্ষেত্রে বলা হয়। পৃথিবীতে স্কুল পড়ুয়া ছেলে মেয়েরা যেমন তাদের শেখানো ব্যক্তিদের স্যার বা শিক্ষক বলে ঠিক তেমনি মার্শাল দুনিয়ায় শেখানো ব্যক্তিকে মাস্টার বলা হয়। জ্যাকও তাই তাকে মাস্টার বলতে দেরী করলো না। সে একটু পূর্বেই বুঝতে পেরেছে তার সামনের ব্যক্তিটা কতটা শক্তিশালী।
"যদি গুজব সত্য হয় তাহলে আমার এই সিদ্ধান্ত অবশ্যই ঠিক আছে।" (জ্যাক ভাবছে)
* * * * *
(টাওয়ারের কোনো এক জায়গা)
গ্রিড এতোক্ষনে জ্যাক এবং লোকির হয়ে যাওয়া ফাইট দেখতে ছিলো। এক সময়ে সে জ্যাকের বডির উপরে আগ্রহী ছিলো এবং সেটাকে নিজেরও করতে চেয়েছিলো তবে সেটাও তার জন্য পারফেক্ট হতো না। আপাতোতো জ্যাকের থেকে জিতুর বডিটা তার জন্য পারফেক্ট ছিলো, তাই তো জিতুর বডিকেই সে হোস্ট বানিয়েছে।
-->> তবে এটাও আমার নতুন পাওয়ারগুলো বেশীদিন ধরে রাখতে পারবে না। (গ্রিড)
এখন আপাতোতো জিতুর শরীরটা তার পাওয়ার গ্রহন করলেও কিছুদিন পরে সেটাও পূর্বেরটার মতো গ্রহন করতে চাইবে না। তখন আবারো গ্রিডকে নতুন একটা বডি খুঁজতে হবে। আপাতোতো যে রকম হচ্ছে তাতে জ্যাকের বডিও এক সময়ে গ্রিডের জন্য পারফেক্ট হয়ে যাবে বলে গ্রিড আশা করছে। তবে সেখানে একটা সমস্যা আছে।
-->> আমি অলিম্পাসের কারো শরীর দখল করে পরে পুরো অলিম্পাসকে শত্রু বানাতে চাচ্ছি না। অবশ্য আপাতোতো চাচ্ছি না। একবার আমার গ্রেট আইটেম এবং ডিম্যান থ্রোনটা নিজের করতে পারলে তখন আর কাউকে ভয় পেতে হবে না আমার। তখন ডিম্যানরাই পুরো এক্সব্লক রাজ করবে। হাহাহাহাহাহাহাহা (গ্রিড)
হাসার কারনে গ্রিডের কাশি চলে আসলো। তার কাশি দেওয়া শেষ হলে সে এবার তার পূর্ব কাজে দৃষ্টি দিলো। লোকি এবং জ্যাকের ফাইটের মধ্যে যে ডোয়ার্ক মল্টের আগমন হবে সেটা কোনো ভাবেই প্রেডিক্ট করে নি গ্রিড।
-->> তারপরও ভালোই হয়েছে। অন্তত লোকি বুঝতে পারবে তাদের লেভেলের পার্থক্য এবং এখান থেকে চলে যাবে। তবে যাওয়ার পূর্বে অবশ্যই আমাকে গুঙনির এনে দিতে হবে ওর। নাহলে ওর সাথে কি হবে সেটা তো ও নিজেই জানে না। (গ্রিড)
গ্রিড খুব চালাক একটা ব্যক্তি। যদিও সে অনেক চালাক তারপরও লোকির কাছে সে কিছুই না। এক্সব্লকের সবথেকে ধূর্ত ব্যক্তি হিসাবে লোকিকেই ধরা হয়। আর এজন্যই তার টাইটেল গড অফ মিসচিফ। লোকির ধূর্ততাকে কন্ট্রোলে রাখার জন্য গ্রিড কিছুটা কাজ প্রথম থেকেই করে রেখেছে যাতে সে কোনো রকমের ট্রিক এখানে ব্যবহার না করতে পারে।
-->> তাহলে লোকি কি করবে এবার তুমি? (গ্রিড)
গ্রিড কথাটা বললো এবং সেখান থেকে টেলিপোর্ট হয়ে অন্য একটা জায়গার মধ্যে চলে গেলো। জায়গাটা একদম আজব ছিলো। হাটু পর্যন্ত ব্লাডের পুকুর ছিলো যার উপরে গ্রিড উড়ছিলো। তার সামনে একটা ম্যাজিকাল আইটেম ছিলো। যেটা খুব আজব ভাবে রাখা হয়েছে। কিছু লাল রঙের গাছের ডাল একত্র হয়ে একটা বুক সমান উঁচু একটা জায়গা তৈরী করেছে। জায়গাটার উপরে ভাসমান রয়েছে একটা ম্যাজিকাল আইটেম। আইটেমটা দেখতে একটা চোখের মতো। চারপাশে থাকা হাটু পর্যন্ত ব্লাড সেই পেঁচিয়ে থাকা কান্ডের মাধ্যমে সেই আইটেমের মধ্যে জমা হচ্ছিলো।
-->> তাহলে আর কিছু দিনের অপেক্ষা। এরপর আমার নিজের "আই অফ এনাহিলেশন" হয়ে যাবে। (গ্রিড)
* * * * *
(টাওয়ার অফ এনভি)
সাত ডিম্যান টাওয়ারের মধ্যে টাওয়ার অফ এনভি আরো একটা টাওয়ার। প্রতিটা ডিম্যান টাওয়ারের স্পেশাল কিছু ইফেক্ট রয়েছে। যেমনঃ
টাওয়ার অফ প্রাইডের ভিতরে সবাই নিজেদের সম্মান নিয়ে ফাইট করে, সেখানে নিজের সম্মান হারিয়ে ফেলা মানে নিজের জীবন হারিয়ে ফেলা।
টাওয়ার অফ র্যাথের ভিতরে সবাই ডিসট্রাকশন নিয়ে পরে থাকে। যেখানে তাকাবে সেখানেই শুধু ডিসট্রাকশন দেখা যায়।
টাওয়ার অফ গ্লাটোনির মধ্যে প্রতিটা ব্যক্তি ক্ষুধার্ত থাকবে। তারা সর্বোচ্চ ক্ষমতা পেলেও আরো চাইবে।
টাওয়ার অফ গ্রিডের মধ্যে প্রতিটা ব্যক্তি লোভী হবে। তারা অন্যের জিনিস পাওয়ার জন্য সব কিছুই করতে পারবে।
টাওয়ার অফ লাস্টের মধ্যে সকল ব্যক্তি নিজ বা বিপরীত লিঙ্গের প্রতি আকৃষ্ট হবে, তারা একে অপরের সাথে কি করবে সেটা তাদের উপরেই ডিপেন্ড করে।
টাওয়ার অফ এনভির মধ্যে প্রতিরা ব্যক্তি অপর ব্যক্তির প্রতি হিংসা বোধ করবে। এই হিংসার কারনে অপরকে তারা হত্যা করবে কিংবা খারাপ কিছু করবে তাদের বিরুদ্ধে।
এবং সর্বশেষ টাওয়ার অফ স্লোথ, যেটা বাকি টাওয়ারের মতো কাজ করে না। এই টাওয়ারের স্পেশাল ইফেক্ট হলো এটার সময় বাইরের সময়ের থেকে অনেক দ্রুত চলে। যার কারনে এর ভিতরের ব্যক্তিদের বয়স বাইরের ব্যক্তিদের চেয়ে দ্রুত বৃদ্ধি পাবে।
যাইহোক টাওয়ার অফ এনভি অনেকটা টাওয়ার অফ র্যাথের মতোই। দুটো জায়গায় শুধু ডিসট্রাকশনই দেখা যায়। টাওয়ার অফ র্যাথের ডিসট্রাকশনের মূল কারন ছিলো সেটার মধ্যে থাকা ডিম্যান প্রিন্স অফ র্যাথ সাটান। আর অন্যদিকে টাওয়ার অফ এনভির ডিসট্রাকশনের মূল কারন ডিম্যান প্রিন্স অফ এনভি নয় বরং এখানে ব্যক্তি গন। টাওয়ার অফ এনভি সময় অনেক আস্তে চলে এরকম একটা প্লানেটে দেখা দিয়েছে। প্লানেটে শুধু মানুষ নয় মানুষের সাথে আরো বিভিন্ন ধরনের স্পিসিজ বাস করতো। তাদের মধ্যে, ভ্যাম্পায়ার, বিস্টম্যান, গবলিন, এল্ফ, ড্রাগন এমনকি ডাইনোসর। প্লানেটের সময়টা এমন ছিলো যে তারা পাথরে তৈরী অস্ত্র দিয়ে একে অপরের সাথে যুদ্ধ করতো। সব স্পিসিজের মধ্যে ড্রাগন এবং ডাইনোসরদের সবচেয়ে শক্তিশালী ধরা হতো। তবে টাওয়ার যখন এই প্লানেটে প্রথম দেখা দিলো তখন সব স্পিসিজই একটা করে সুযোগ পেলো শক্তিশালী হওয়ার। তাই তো এখন একটা মানুষও একটা ড্রাগনের সাথে ফাইট করতে পারে এবং সেটাকে হত্যা করতে পারে। এখানের প্রতিটা ব্যক্তি একে অপরের প্রতি হিংসা বোধ করে তাইতো ভাই ভাইকে হত্যা করে, বোন বোনকে হত্যা করে। আবার তো কিছু সময়ে স্বামী স্ত্রীকে বা স্ত্রী স্বামীকেও হত্যা করে। টাওয়ার অপ এনভি এই প্লানেট এসেছে আজ অনেক বছর হয়েছে। আর এতোদিনে পুরো টাওয়ার কেউ ক্লিয়ার করতে পারে নি। সবাই একে অপরের প্রতি হিংসা বোধ করার কারনে একটা ফ্লোর ক্লিয়ার করতে গেলে তাদের হাতে মনস্টার কম বরং নিজ প্লানেটের স্পিসিজ গুলোই বেশী হত্যা হয়। তাই তে মাত্র বিশতম ফ্লোরের উপরে কেউই এখনো ক্লিয়ার করতে পারে নি টাওয়ারটা।
সব গুলো ডিম্যান প্রিন্স যেহেতু রেইনকার্নেট হয়ে যাচ্ছিলো তাই ডিম্যান প্রিন্স অফ এনভিও আর বেশীক্ষন চুপ থাকতে পারলো না। যদিও ডিম্যান প্রিন্সরা রেইনকার্নেট না হলে তাদের সউল ইটার্নাল স্লিপের মধ্যে থাকে, তারপরও ডিম্যান কিং এর তৈরী করা এই স্পেশাল টাওয়ার গুলোতে তাদের সউল থাকার কারনে টাওয়ারের কোথায় কি হচ্ছে সেটা তারা স্বপ্নের মতো করে দেখতে পায়। তাই কখন কি করতে হবে সেটা তারা ভালো করেই জানে। ইটার্নাল স্লিপের মধ্যে থাকলেও টাওয়ারের নিয়ম কানুন পাল্টাতে পারে তারা। যেটার কারনে ভালো একটা হোস্টকে তারা খুঁজে বের করে। ঠিক এই নিয়মেই ডিম্যান প্রিন্স অফ এনভি এ.কে.এ লেভিয়াথন তার হোস্টকে খুঁজে বের করেছে। টাওয়ারের সব থেকে শক্তিশালী স্পিসিজের মধ্যে এবং টাওয়ারের সবথেকে শক্তিশালী ব্যক্তিকে সে তার হোস্ট বানাতে যাচ্ছে।
একটা ড্রাগন, যে প্রায় অর্ধ মৃত অবস্থায় পরে ছিলো। এই টাওয়ারের সবচেয়ে শক্তিশালী ব্যক্তি সেই ছিলো। তবে তার নিজ স্পিসিজ এবং অন্যরা একসাথে মিলে তাকে এট্যাক করে প্রায় অর্ধমৃত করে দিয়েছিলো। নিজের ভাগ্য ভালো থাকায় সে কোনো রকমে তাদের থেকে বেঁচে অন্য একটা জায়গায় আসতে পেরেছে। তবে সতার নিজের কাছেও মনে হচ্ছে না সে বেশী ক্ষন বাঁচবে। আর লেভিয়াথন ঠিক সেই সময়েই সেই ড্রাগনকে নিজের হোস্ট বানিয়ে ফেললো। একজন ডিম্যান প্রিন্সের জন্য কাউকে হোস্ট বানানো একদম সহজ। এটা অনেকটা গডদের অ্যাভেটার কন্ট্রাকের মতো হলেও কিছুটা ভিন্ন। লেভিয়াথন ড্রাগনটার বডিকে নিজের হোস্ট বানিয়ে রেইনকার্নেট হওয়ার সাথে সাথে ড্রাগনের শেইপটা চেঞ্জ হতে শুরু করলো। সেটা মানুষের মতো দেখতে একটা শরীর হয়ে গেলো। যদিও একটা বাচ্চা দেখলেও বলে দিতে পারবে সেটা কোনো মানুষ নয়। পিঠে দুটো ড্রাগনের ডানা এবং চোখ দুটো হলুদ ড্রাগনের দেখা দিচ্ছিলো তার।
-->> আমি এখন আসলেই অনেক রেগে আছি। বাকিদের টাওয়ার কত সুন্দর সুন্দর জায়গার মধ্যে রয়েছে আর আমার টাওয়ার এখানে যেখানের স্পিসিজ গুলো নিজেদের জন্য ভালো করে জামা কাপড়ই তৈরী করতে পারে না। অবশ্য একটা ড্রাগনের শরীরে থেকে অন্তত ভেবেছিলাম জামা কাপড়ের চিন্তা করতে হবে না। তবে হিউম্যান ফর্মে আসবো সেটা ভেবেছে কে? (লেভিয়াথন)
লেভিয়াথন প্রথমে আশে পাশে একটু দেখতে লাগলো এবং বলতে লাগলো,
-->> আমাকে প্রথমে আমার শক্তি গুলো অর্জন করতে হবে। আর সেটার জন্য এই টাওয়ারকে দ্রুত ক্লিয়ার করতে হবে। এরপর বাকিদের সাথে দেখা করতে হবে এবং ডিম্যান কিং এর গ্রেট প্লানটা সবার কাছে বলতে হবে। আমি চাচ্ছিনা ডিম্যান কিং এর প্লান অনুযায়ী আমি নিজের অস্তিত্ব হারিয়ে ফেলি। সবাইকে না জানালে হয়তো ডিম্যান কিং তার প্লানে জয়ী হয়ে যাবে। (লেভিয়াথন)
লেভিয়াথনের হঠাৎ একটা কথা মনে হলো। সময়টা ছিলো গ্রেট ওয়ারের। যেখানে ডিম্যান কিং এর সাথেই তারা ফাইট করছিলো। কেউ লক্ষ না করলেও লেভিয়াথন তার পাওয়ারের মাধ্যমে লক্ষ করেছিলো। ডিম্যান কিং এর সাথে একজন ব্যক্তি ছিলো। যাকে লেভিয়াথন পূর্বে কখনো দেখে নি। সেটা একটা মেয়ে ছিলো, যার দিকে তাকালেই মনে হচ্ছিলো লেভিয়াথন সমস্ত সৃষ্টিকে নিজের দুই চোখে দেখছিলো। লেভিয়াথন তখন তাদের দুজনের কথার দিকে ফোকাস দিয়েছিলো। নিজ কানে লেভিয়াথন বিশ্বাস করতে পারে নি সে কি শুনছিলো। এখনো ডিম্যান প্রিন্স অফ এনভির বিশ্বাস করতে কষ্ট হচ্ছে। তারপরও সে নিজের জীবনটা অন্য কারো ভালোর জন্য দিতে রাজি নয়।
-->> যেহেতু ডিম্যান কিং এখন মারা গিয়েছে তাই তার প্লানটা সবাইকে বলে দেওয়া উচিত এবং আমাদের মধ্যে ফাইট না করাই ভালো হবে আপাতোতো। (লেভিয়াথন)
লেভিয়াথন চাচ্ছিলো এখনি বাকি ডিম্যান প্রিন্সদের কাছে গিয়ে কথাটা বলতে। তবে সে এখন অনেকটা দুর্বল। টাওয়ার থেকে বের হওয়ার ফলে তার পাওয়ার সে হারিয়ে ফেলেছিলো অনেক পূর্বেই। তবে এতো দিন ইটার্নাল স্লিপে থাকার ফলে কিছুটা সে ফেরত পেয়েছে। বাকিটা ফেরত পেতে হলে তাকে এই টাওয়ারকে ক্লিয়ার করতে হবে বাকিদের মতো করেই।
* * * * *
(আরো একটা ইউনিভার্সে)
একটা প্লানেট থেকে রাতারাতি একটা টাওয়ার হারিয়ে গিয়েছে। কি হয়েছে কেউ বলতে পারে না। টাওয়ারে থাকা সকল ব্যক্তি হঠাৎ করেই বের হয়ে গিয়েছে এক রাতে। টাওয়ারটার নাম ছিলো টাওয়ার অফ লাস্ট, যার মধ্যে আজ থেকে প্রায় পঞ্চাশ বছর পূর্বে সেই প্লানেটের সমস্ত ব্যক্তি প্রবেশ করেছিলো। আধুনিক একটা প্লানেট হওয়ার ফলে তার মধ্যে একশত বছরে এই প্লানেটে মাত্র এক লক্ষ জনসংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছিলো। টাওয়ার যখন উদয় হয় তখন পুরো প্লানেটে জনসংখ্যা ছিলো মাত্র ত্রিশ হাজার। তবে যে রাতে টাওয়ার হারিয়ে যায় এবং টাওয়ারে থাকা সমস্ত ব্যক্তি বের হয় তখন তাদের মোট জনসংখ্যা বাচ্চা বয়স্ক দিয়ে দাড়ায় চল্লিশ লক্ষ। টাওয়ারের মধ্য থেকে বের হওয়ার পর সবাই দুঃখ বোধ করছিলো না, যদিও টাওয়ারের ভিতরে তাদের জন্য স্বপ্নের মতো ছিলো জায়গাটা তারপরও এখন যেহেতু তারা বের হয়েছে তাই তাদের কাছে মনে হচ্ছে তারা হেল থেকে মুক্তি পেয়েছে।
-->> আমি জানি না কি হয়েছে তবে এখন থেকে আর তিন চারটা মেয়ের সাথে আমার সারা দিন থাকতে হবে না।
-->> আমি তো ছেলে হওয়ার পরও দশ বারোটা করে ছেলে আমার পিছনে ছুটে বেরিয়েছে।
-->> ছয় বছরে আমি পাঁচটা বাচ্চার আম্মা হয়েছি।
-->> আমি পুরো ক্লান্ত।
-->> এরকম নাইটমেয়ার আমি আর দেখতে চাই না।
-->> মনে হচ্ছে শেষ মেষ একটু বিশ্রাম নেওয়ার সুযোগ পাবো।
-->> আমাদের সবার তো মনে হচ্ছে এইচআইভি টেস্ট করাতে হবে এখন মনে হচ্ছে।
পুরো প্লানেট জুড়েই শান্তির কান্না দেখা যাচ্ছিলো। তারা এখন নিজেদের শান্তি মতো শান্তি করে ঘুমাতে পারবে। তাদেরকে আর লাস্ট ইফেক্ট ছুতে পারবে না এখন। যদিও প্রায় সকল ব্যক্তিই খুশি ছিলো তারপরও তাদের মধ্য থেকে কিছু ব্যক্তি ছিলো, বিশেষ করে কিছু মেইডেন ছিলো যারা টাওয়ার হারিয়ে যাওয়ার জন্য কান্না করছে।
-->> এখন আমাদের কি হবে? আমরা তো স্যার এসমোডিয়াসের হতে পারলাম না।
-->> আমি এই জীবনটা আর রাখতে চাই না।
-->> কেউ কি বলবে কি হয়েছিলো যে টাওয়ার অফ লাস্টের সাথে যে সেটা এভাবে হারিয়ে গেলো।
টাওয়ারের মালিক এসমোডিয়াস ছিলো সকল মেয়েদের প্রাণ। যেসব মেয়ে এসমোডিয়াসকে দেখেছে সবাই তার জন্য প্রাণ দিতেও রাজি ছিলো। শুধু মেয়েরা না যেসব ছেলেরা এসমোডিয়াসকে দেখেছে তারাও তাদের প্রাণ দিতে চেয়েছে তার জন্য। তাই যারা এসমোডিয়াসকে দেখেছে সবাই টাওয়ার এবং এসমোডিয়াসের সাথে কি হয়েছে তা জানার জন্য ব্যাকুল ছিলো।
উক্ত প্লানেটটা অনেক আধুনিক ছিলো। তার উপরে মধ্যে বেশ উঁচু আধুনিক দালান ছিলো। একটা দালানের উপরে দাঁড়িয়ে ছিলো এক ব্যক্তি। তার শরীরের পোষাক এবং উচ্চতা দেখে বোঝা যাচ্ছিলো সে আঠারো থেকে বিশ বছরের কোনো মেয়ে হবে। মাটি পর্যন্ত বেণী করা চুল ছিলো তার। মুখে একটা মাস্কের কারনে তার চেহারা দেখা যাচ্ছিলো না। তবে মাস্কের উপরে কিছু ব্লাড লেগে ছিলো যা এখনো তরতাজা ছিলো। বোঝা যাচ্ছিলো সে কাউকে হত্যা করেছে। তার পিছনে মাটি পর্যন্ত বেণী করা চুল বাতাসের সাথে উড়ছিলো। চুলের একদম মাথায় একটা ছোট ড্যাগার বাথা ছিলো যার ব্লেডেও ব্লাড দেখা যাচ্ছিলো।
-->> ডিম্যান প্রিন্স অফ লাস্ট শেষ, তাহলে এখন ডিম্যান প্রিন্স অফ র্যাথের পালা।
মেয়েটার হাতে একটা কাগজ ছিলো। যেখানে সাতটা ব্যক্তির নাম ছিলো। সাতটা ব্যক্তির মধ্যে প্রথম নামটা ছিলো এসমোডিয়াসের এবং সর্বশেষ নামটা ছিলো বিলজবাবের। মেয়েটা কাগজটাকে তার হাতে থাকা স্পেস রিং এর মধ্যে রেখে দিলো এবং প্রায় পঞ্চাশ তলা ভবন থেকে দুই হাত দুই সাইডে করে পরে গেলো।
* * * * *
(টাওয়ার অফ গ্রিড)
আজ এক সপ্তাহ সময় পার হলো, জ্যাক ডোয়ার্ক মল্টের থেকে স্পেশাল ট্রেনিং পাচ্ছে। অবশ্য ডোয়ার্ক মল্ট সেটাকে স্পেশাল ট্রেনিং বললেও জ্যাকের জন্য এটা মোটেও স্পেশাল ট্রেনিং নয়।
-->> লিডার, বুঝলাম আপনি সেই মনস্টারকে মাস্টার হিসেবে মেনে নিয়েছেন। কিন্তু আপনার সাথে আমাদের এরকম ট্রেনিং কেনো করতে হচ্ছে? (লুইস)
-->> হ্যাঁ, লিডার এটা কিন্তু কথা ছিলো না। আমি আরেকদিন এরকম ট্রেনিং করলে মারা যাবো। (ব্রান্ডেন)
-->> আমি বাসায় যাবো। আমার আর টাওয়ারে যেতে হবে না। (ভুসেকা)
শুধু যে জ্যাক ট্রেনিং করছে এমন না। যেহেতু জ্যাকের একটা পার্টি রয়েছে তাই ডোয়ার্ক মল্ট জ্যাকের সাথে তার পার্টির সকল ছেলেদেরই স্পেশাল ট্রেনিং দিচ্ছে। সবাই শুধু প্যান্ট পরে আছে এবং দুই পা দুটিকে ছড়িয়ে দিয়ে দুই হাতের উপরে একটা পুরো গাছের কান্ড ধরে রেখেছে। যে যতটুকু উঠাতে পারে করতে তার কাছে তত বড় গাছের কান্ডই ছিলো। প্রথম প্রথম এই ট্রেনিংটা সহজ মনে হলেও তারা এখন বুঝতে পেরেছে কতটা কষ্টকর এটা। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত তাদের এভাবেই এক ইঞ্চি না সরে দাঁড়িয়ে থাকতে হবে। সবার পাছাটা একটু বাকা করে নিচের দিকে ছিলো এবং তার নিচে ডোয়ার্ক মল্ট বেশ কিছু সূচালো কাটা রেখে দিয়েছে। মানে কেউ যদি বসতে চাই তাহলে সেখানেই প্রথমে তাদের পাছা লেগে যাবে।
-->> আমি হালকা হতে যাবোওওওওওওওওও। (ভুসেকা)
(২৯৮৪ শব্দ)
* * *
To Be Continued
* * *
কেমন হলো জানাবেন।