[গল্পে ব্যবহৃত অধিকাংশ বিষয়বস্তু কাল্পনিক ও অবাস্তব, বাস্তব বা কোনো ধর্মের সাথে এ গল্পের কোনো সম্পর্ক নেই।]
#Demon_King#
The Beginning
পর্ব:২১৭
লেখকঃ হৃদয় বাপ্পী
.
.
.
এলেক্সের চোখ বন্ধ হয়ে আসলো। এমন অবস্থায় ছিলো এলেক্স যেখানে সে নিজের সেন্সও হারায় নি আবার ঘুমিয়েও পরে নি। তারপরও এলেক্স একটা স্বপ্ন দেখছে।
(স্বপ্নে),
একটা দোকানের সামনে একটা ছেলে বসে আছে। দোকানটা শহরের সবচেয়ে বড় এবং সবচেয়ে নামকরা ব্রান্ডের দোকান হওয়ার কারণে সব প্রভাবশালী, সেলেব্রেটি, সুপার হিরো, বিজনেসম্যান এবং অন্যান্য ধনী ব্যক্তিরা এখানেই আসে। আর সেই দোকানের সামনে রোডের উপরে একটা প্লেট নিয়ে একটা ছেলে ছেঁড়া একটা চাদর পেঁচিয়ে বসে আছে। ছেলেটাকে দেখে মনে হচ্ছিলো সে এক সপ্তাহ ধরে তেমন কিছুই খায় নি এবং যেকোনো সময়ের মধ্যেই মারা যেতে পারে। পাতলা গরনের শরীর যেখানে মাংস খুঁজে পাওয়ায় কষ্ট। মনে হচ্ছিলো একটা জীবন্ত কঙ্কালের উপরে চামড়া পরানো হয়েছে। ছেলেটার শরীরে একটুও শক্তি ছিলো না বসা অবস্থান থেকে নরার। রাত হয়ে আসছিলো এবং সেখানেও ঠান্ডার পরিমাণ আরো বৃদ্ধি পাচ্ছিলো। ছেলেটার মন উঠার চেষ্টা করলেও তার শরীর তার কোনো কথা শুনছিলো না। ঠিক এমন সময় কতগুলো ছেলে এসে একটা লাথি মেরে ছেলেটাকে ফেলে দিলো। একটা ব্যাট দিয়ে তার শরীরে কয়েকটা আঘাত করলো।
-> ছোটলোকের বাচ্চা, তোকে কতবার বলেছি এখানে বসে ভিক্ষা না চাইতে।
ছেলেটা এখন কানেও একটু কম শুনতে পারছিলো। তার অবস্থা অনেক খারাপ ছিলো এই সময়ে। ব্যাটের আঘাতে একটা হাত ভেঙে গিয়েছে তার। অপরদিকে ছেলেগুলোর দিকে তাকিয়ে মনে হচ্ছিলো তারা আরো আঘাত করার জন্য প্রস্তুত ছিলো। তবে ঠিক সেই সময়ে সেখান দিয়ে ১৮ বছরের মতো একটা মেয়ে যাচ্ছিলো। নিচে পরে থাকা ছেলেটার দিকে মেয়েটা তাকালো।
-> তুমি আবার কে? এখান থেকে সরে দারাও নাহলে এই ভিখারির মতো অবস্থা হবে।
ছেলেগুলোর মধ্যে থেকে একজন কথাটা বললো। তবে মেয়েটার চোখের দিকে তাকানোর সাথে সাথেই তারা আর কোনো কথা না বলে সেখান থেকে চলে গেলো। মেয়েটা নিচে পরে থাকা ছেলেটার কাছে গেলো এবং ছেলেটাকে ধরে বসিয়ে দিলো। মেয়েটার স্পর্শ পাওয়ার সাথে সাথে ছেলেটার ভাঙা হাত এমনকি পেটের ক্ষুধার্থ ভাবও কেটে গেলো ছেলেটার। মেয়েটার এক হাতে একটা প্যাকেট ছিলো যেখানে তার পছন্দের বার্গার এবং কয়েকটা স্যান্ডউইচ ছিলো। মেয়েটা প্যাকেটটার দিকে অনেকক্ষণ তাকিয়ে থেকে সেটা ছেলেটার হাতে তুলে দিলো। এতোক্ষণে একটা কথাও বলে নি ছেলেটাকে। তবে প্যাকেটটা দিয়ে বলতে লাগলো,
-> ঔ ছেলে গুলো আর বিরক্ত করবে না।
এই কথাটা বলেই মেয়েটা এই জায়গা থেকে হেঁটে হেঁটে চলে গেলো। ছেলেটা শুধু তাকিয়েই রইলো মেয়েটার চলে যাওয়ার দিকে। মেয়েটা একবারের জন্যও পিছনে তাকালো না। এবার ছেলেটাও প্যাকেটের দিকে তাকালো, সাত দিন সে কোনো কিছু খায় নি। তার শরীরে এখন শক্তি ছিলো হঠাৎ করে এবং ভাঙা হাতও ঠিক হয়ে গিয়েছে। কোনো রকমের ব্যথাও সে অনুভব করতে পারছিলো না। খাবারের প্যাকেটের মধ্যে থেকে অনেক সুন্দর একটা ঘ্রাণ বের হচ্ছিলো, কিন্তু ছেলেটা বের করলো না খাবার। বরং ছেলেগুলোর লাথি মারা বাটি থেকে পরে যাওয়া কিছু কয়েন সংগ্রহ করে ছেলেটা রওনা দিলো।
একটা বস্তির সামনে চলে আসলো ছেলেটা যেখানে ভাঙা একটা ঘরের মধ্যে কোনোরকম ভাবে প্রবেশ করলো। ভিতরে প্রবেশ করার সাথে সাথে একটা ছোট মেয়ে ছেলেটাকে জরিয়ে ধরলো। ৫ বছরের মেয়েটা ছেলেটার ছোট বোন। সাতদিন ধরে সে কিছু না খেলেও সে তার বোনকে না খাইয়ে রাখতে পারবে না। যেহেতু ছেলেটা কথা বলতে পারে না তাই কোনো রকমের কাজও তাকে কেউ করতে দেই না। অপরদিকে তার ছোট বোন তার ভাইয়ের দিকে তাকিয়ে বলতে লাগলো,
-> ভাইয়া আজকেও সেই ভয়ানক লোকটা এসেছিলো। আমি আড়াল থেকে দেখেছি, সে পুরো বস্তির লোকদের ওয়ার্নিং দিয়ে গিয়েছে। এই এলাকা আজকের মধ্যে না ছাড়লে তারা আমাদের সবাইকে মেরে ফেলবে।
ছেলেটা কথা না বলতে পারে না এমনকি শুনতেও পারে না। তবে সে অন্যের কথা বলার সময়ে তাদের মুখ নারানো দেখে বুঝতে পারে তারা কি বলছে। এই সময়ে ছেলেটা তার বোনকে হ্যান্ড সাইনের মাধ্যমে বোঝালো তারা চলে যাবে, এখন খাওয়া দাওয়া হলেই কোথাও বেরিয়ে পরবে।
-> কিন্তু ভাইয়া এখান থেকে আমরা যাবো কোথায়? আমাদের তো আর কোনো জায়গাও নেই। কোনো আত্মীয়ও আমাদের জায়গা দিবে না।
বোনের কথা শুনে ছেলেটা তার বোনের কপালে হাত বুলিয়ে দিতে লাগলো। এতোক্ষণে বোন খাবার বের করে খাওয়া শুরু করে দিয়েছে। বার্গারটা কামড় দিচ্ছে খাচ্ছে এবং প্যাকেটটা তার ভাইয়ের দিকে এগিয়ে দিলো। ছেলেটাও একটা স্যান্ডউইচ সেটার ভিতর থেকে বের করে অর্ধেক ভেঙে নিয়ে খেয়ে বাকিটা রেখে দিলো। তার বোন ময়লা পানি সংগ্রহ করে নিয়ে এসেছে পুকুর থেকে যা একটা কাপড় দিয়ে ফিল্টার করে নিয়ে সেটা নিজে পান করে বাকিটা বোনের জন্য রেখে দিলো।
বোনের খাওয়া শেষ হলে দুজনে তাদের প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র গুছিয়ে নিলো এবং একটা কাপরের ব্যাগ বানিয়ে সেটার মধ্যে সব গুলো রেখে ছেলেটা পিঠে নিয়ে বোনকে সাথে করে বেরিয়ে গেলো। ছেলেটা ভাবতে লাগলো,
❝এই রাতে আমি কোথায় যাবো আমার বোনকে নিয়ে?❞
দুজনেই কয়েকটা গলি পার করে একটা নির্জন জায়গায় এসে দাঁড়ালো। সামনের গলিতে ২০ জন মানুষ দাঁড়িয়ে ছিলো বড় বড় বন্ধুক হাতে নিয়ে। তাদেরকে দেখে দুজনেই ভয় পেয়ে গেলো। তারা যেখানে দাঁড়িয়ে ছিলো সেখানে একটা বাতি থাকার কারণে দূর থেকে তারা কি বলছিলো সেটা ছেলেটার বোন শুনতে না পারলেও তাদের মুখ নারানো দেখে ছেলেটা বুঝতে পারলো।
❝কালকে পর্যন্ত সময় দিয়ে এরা আজকে রাতেই কেনো সবাইকে মেরে ফেলতে চাচ্ছে? আমাকে যে করেই হোক আমার বোনকে নিয়ে পালাতে হবে। অন্যদের সাথে কি হবে সেটা আমি জানি না তবে আমার বোনকে আমাকে সুরক্ষিত রাখতে হবে।❞ (ছেলেটা ভাবছে)
ছেলেটা তার কাঁধে থাকা ব্যাগটা ফেলে দিয়ে তার বোনকে কোলে নিলো এবং পিছনের দিলে দৌড় দিলো। তবে তার ব্যাগ ফেলার শব্দ পেয়ে বাতির নিচে থাকা মানুষগুলো সজাগ হয়ে গেলো।
-> মনে হচ্ছে ঔখানে কেউ ছিলো এবং আমাদের কথা শুনতে পেরেছে।
-> এই বস্তির মানুষদের এক বছর ধরে সময় দেওয়া হচ্ছে তারপরও তারা এরিয়া ক্লিয়ার করছে না। এজন্য বস আজকে আদেশ দিয়েছে যাতে কালকে একটা বডিও দেখা যায় না এখানে।
-> তাহলে এই পালিয়ে যাওয়া ভিখারি দিয়েই শুরু করা যাক আজকের হান্ট।
ছেলেটা আর পিছনে তাকাচ্ছে না। সে তার বোনের মুখে হাত দিয়ে দৌড়াচ্ছে। তার শরীর পারছিলো না দৌড়াতে। কখন পরে যাবে সেটা ছেলেটাও জানে না। তারপরও সে দৌড়াচ্ছে।
❝আমি যদি একটু শক্তিশালী হতাম, আমার বডি যদি একটু ভালো হতো, আমি যদি আরেকটু দৌড়াতে পারতাম। আমার মনে হচ্ছে তারা পিছন থেকে গুলি করবে।❞ (ছেলেটা ভাবছে)
দুজনকে ধরতে না পেরে পিছন থেকে গুলি করতে শুরু করেছে। কিন্তু আজব করার বিষয় গুলিতে বন্ধুকে একটা শব্দও বের হচ্ছিলো না। বন্ধুকে শব্দ না হলেও ছেলেটার দৌড় এখন হাটায় পরিণত হয়েছে। আর পারছিলো না ছেলেটা। এটায় তার লিমিট ছিলো শরীরের। বাতির আলো দুজনের উপরে পরলো। তার ছোট বোন চোখ বন্ধ করে রেখেছিলো, কিন্তু তার ভাইয়ের দিকে তাকালো এখন। তার ভাইয়ের চোখ দিয়ে পানি পরছিলো কিন্তু মুখে মুচকি একটা হাসি ফুটে রয়েছে। যে ছেলেটা এতোদিন কোনো কথা বলে নি, যে কথা বলতেই পারে না তার মুখ দিয়েও একটা কথা বেরিয়ে আসলো।
-> আমাকে মাফ করে দিস বোন আমার। তোর এই ভাই আরেকটু শক্তিশালী হলে হয়তো আমরা দুজনেই সুখে শান্তিতে বাস করতে পারতাম।
কথাটা বলেই ছেলেটা তার বোনকে জরিয়ে ধরলো। এই সময়ে ২০ টা বন্ধুক হাতে থাকা মানুষগুলো একসাথে তাদের ২০ টা বন্ধুক দিয়ে একটা করে গুলি মারলো। প্রতিটা গুলি ছেলেটার শরীরে লাগলো এবং তার শরীর ভেদ করে তার বোনের শরীরেও লাগলো। লোকগুলো বলতে লাগলো,
-> বাচ্চা মারতে যদিও আমার খারাপ লাগে, তারপরও কিছু করার নেই।
লোকগুলো গুলি করা হয়ে গেলে সে জায়গা থেকে চলে গেলো। সেখানে শুধু পরে রইলো দুজনের রক্তাক্ত শরীর। ছেলেটা পাশে পরে গেলো। তার কথা বলার কোনো শক্তি ছিলো না। সে শুধু শেষ বারের মতো তার বোনের দিকে তাকালো, হাতটা কোনো রকমে বারিয়ে সে তার বোনের মাথার উপরে রাখলো। তার বোনের নিস্তেজ শরীর সে একদম কাছ থেকে অনুভব করতে পারছিলো। ছেলেটার মনে হচ্ছিলো হয়তো তার বোনের সউল তাকে কিছু একটা বলছিলো,
✪ভাইয়া আমাদের বাবা-মা আমাদের এভাবে ফেলে না দিলে হয়তো আমরা অন্যান্য ছেলেমেয়েদের মতো স্কুলে যেতাম তাই না? হয়তো এখন আমি মায়ের পাশেই তাকে জরিয়ে ধরে ঘুমিয়ে থাকতাম। বাবা আমাদের সাথে হয়তো এমন কিছু হতে দিতো না। দেখেছো আমি তোমার পরে এই দুনিয়ায় এসে তোমার আগেই চলে যাচ্ছি, তাহলে আমি কি তোমার বড় বোন না এখন? ভাইয়া আমি চাই না তুমি এখনি আমার কাছে আসো। আমি তোমার থেকেও বড় হয়ে যাবো তারপর তুমি আসবে আমার কাছে। তখন এমনিতেই তোমাকে বড় বোন বলতে হবে আমাকে, হিহিহিহি✪
ছেলেটার চোখে শুধু পানি পরছিলো এই সময়ে। সে তার শরীরকে কোনো ভাবেই নারাতে পারছিলো না। মনে মনে সে ভাবতে লাগলো,
❝তাদের মতো গিফট এর সাথে জন্মালে হয়তো আমি আমার বোনের হাসিটা আমার মৃত্যুর আগ পর্যন্ত দেখতে পারতাম। আমি শুধু বুঝতে পারছি না আমাদের বাবা-মা এবং অন্যান্য ভাই বোন কেনো এরকম কিছু অনুভব করতে পারে না যেটা আমি অনুভব করছি এখন। এটা কি তাদের ক্ষমতা এবং স্ট্যাটাসের কারণে?❞
ছেলেটা তার মৃত্যুর জন্য অপেক্ষা করছিলো। কিন্তু এই সময়ে তার কানে একটা আওয়াজ শুনতে পেলো। জন্মের পরে এই প্রথম একটা আওয়াজ শুনতে পারলো ছেলেটা। তার অবস্থা একদম খারাপ থাকার কারণে সে অবাকও হতে পারছে না।
✘আলো এবং অন্ধকার এই দুইটা বস্তু দিয়ে সবকিছুর সৃষ্টি হয়েছে। যেখানে আলো জীবনের উপরে রাজত্ব করে আর অন্ধকার অজীবিত বস্তুর উপরে রাজত্ব করে। আলো এবং অন্ধকার দুজনেই তোমার স্ট্রাগেল লক্ষ্য করেছে এবং তোমাকে একটা সুযোগ দিতে চাচ্ছে। এখন তোমার উপরে নির্ভর করছে, তুমি কি আলোর সুযোগ নিয়ে মানুষের উপরে রাজ করতে চাও নাকি অন্ধকারের সুযোগ নিয়ে অজীবিত বস্তুর উপরে রাজ করতে চাও।✘
ছেলেটা আওয়াজটা শুনে শুধু ভাবা ছাড়া আর কিছু করতে পারলো না।
❝যে মানুষ গুলো আমাদের দূরে সরিয়ে রেখেছে সব সময়। সমাজের আবর্জনা হিসেবে দেখেছে তাদের উপরে রাজত্ব করার আমার কোনো ইচ্ছা নেই। আমি শুধু আমার বোনকে আরেকবারের মতো দেখতে চাই।❞
ছেলেটার ভাবনাকে এই অদৃশ্য আওয়াজ শুনতে পেলো এবং সেটার সাথে সাথে আবারো জবাব দিলো
✘অন্ধকার তোমাকে শুভেচ্ছা জানাচ্ছে। অন্ধকার তোমাকে বলছে, '..........................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................✘
আওয়াজটা শেষ হওয়ার সাথে সাথে হঠাৎ করে ছেলেটার চারপাশ থেকে কয়েকটা কালো হাত বেরিয়ে আসলো মাটির মধ্য থেকে। সেগুলো ছেলেটার পুরো শরীরকে শক্ত করে ধরে মাটির উপরে থাকা কালো ছায়ার মধ্যে নিয়ে গেলো। সেখানে শুধু পরে রইলো ছেলেটার বোনের রক্তাক্ত শরীর, যেটা তার ভাইয়ের জন্য অপেক্ষা করছিলো। ছেলেটা ছায়ার মধ্যে হারিয়ে যাওয়ার পূর্বে শেষ বারের মতো তার বোনের চেহারাটা দেখতে পারে নি। কিন্তু সে মনে মনে চিন্তা করে নিয়েছে,
❝জীবিত বা মৃত আমি জানি না কি হবে আমার সাথে। কিছুই আমার মাথায় ঢুকছে না। শুধু আমি এটুকুই জানি, আমি যে অবস্থাতেই থাকি না কেনো আমার বোনকে আরেকবারের জন্য হলেও আমাকে দেখতে হবে। আমি কথা দিচ্ছি এর পরে যদি আমি আমার বোনের কাছে যেতে পারি তাহলে কোনোদিনও ওকে কষ্টে থাকতে দিবো না।❞ (ছেলেটার শেষ ভাবনা)
(স্বপ্নটা শেষ)
এলেক্স মাত্র কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে পুরো স্বপ্নটা শেষ করলো। পূর্বে সে এরকম কখনো অনুভব করে নি। স্বপ্নটা সে সম্পূর্ণ ছেলেটার মধ্যে থেকে দেখেছে, ছেলেটা যা কিছু করছিলো সেটা এলেক্সের নিজেরই করা কাজ মনে হচ্ছিলো। স্বপ্নটা নিয়ে এলেক্স তেমন কিছু ভাবছে না। কারণ এই সময়ে তার স্বপ্নে কাটানো একদিন সম্পূর্ণ নিজেরই মনে হচ্ছিলো। যে ছেলের হাসি কান্নার কোনো ইমোশন দেখা যাচ্ছিলো না তার চোখ দিয়ে রক্তাক্ত পানি পরছিলো। যেহেতু ফ্লোরের সাথে পিষে রয়েছে এলেক্স তাই ফ্লোরের টাইলসের ধারালো অংশ লেগে চোখের পাশ দিয়ে কেটে গিয়ে। চোখের পানি রক্তের সাথে মিশে লাল করে দিয়েছে। এতোক্ষণে তার উপরে যে প্রেসার পরেছে তা মেঝেতে অনেকটা জায়গা নিয়ে গর্ত করে দিয়েছে। এলেক্স অনুভব করলো মাত্র তার চোখ দিয়ে পানি পরেছে। তার চিন্তা প্রিন্সিপালের থেকে সরে নিজের ইমোশনের দিকে চলে আসলো। কোনোরকমের দুঃখ সে প্রকাশ করতে পারে নি এতোদিন। নিজের আম্মা এবং পরিবার মারা যাবার পরেও এলেক্স একদম স্বাভাবিক ছিলো। সেই এলেক্সের চোখ দিয়ে পানি পরছিলো। এতোক্ষণ সে ফোর্স প্রয়োগ করে উঠার চেষ্টা করলেও এখন সে হার মেনো নিয়েছে। একদম নিস্তেজ হয়ে গিয়েছে তার শরীর।
ཌএটায় তোমার জন্য বুদ্ধিমানের কাজ। আমাকে আস্তে আস্তে তোমার সকল সিক্রেট বের করতে দাও। আমি দেখতে চাই ডিম্যান কিং আমার থেকে এতো কি সিক্রেট লুকিয়ে রেখেছে।ད
প্রিন্সিপালের চেহারাটা উজ্জ্বল হয়ে গিয়েছিলো সৌন্দর্যে, কিন্তু তার ভয়ানক হাসির কারণে যে কেউ সে চেহারা দেখলে ভয়ে জ্ঞান হারিয়ে ফেলবে। হঠাৎ করে প্রিন্সিপাল হা করলো এবং তার মুখ থেকে তার জিহ্বাটা অনেকটা বড় হয়ে বেরিয়ে এসে এলেক্সের মাথায় লাগলো। ঠিক এই সময়ে এলেক্সের চোখের সামনে একটা স্ক্রিন ভেসে উঠলো।
꧁ཌওয়ার্নিং, হোস্টের জীবন ঝুকিতে থাকার কারণে হোস্টের ফ্যামিলিয়ার "কাইসেল" ডিম্যান কিং সিস্টেমের কোড ভাঙার চেষ্টা করছে। ডিম্যান কিং সিস্টেমের কোড ভাঙা সম্ভব হয় নি। তাই ফ্যামিলিয়ার "কাইসেল" হোস্টের ওয়ার্ল্ডের একটা ড্রাগনকে নিজের অ্যাভেটার বানিয়েছে। "কাইসেল" ডিম্যান কিং সিস্টেমের কোডের লুপহোল ব্যবহার করে হোস্টের ওয়ার্ল্ডে প্রবেশ করেছে। "কাইসেল" এর সম্পূর্ণ পাওয়ার সিল করা সম্ভব নয়। "কাইসেল" ২ মিনিট হোস্টের ওয়ার্ল্ডে থাকলেই তার এনার্জিতে পুরো ওয়ার্ল্ড ধ্বংস হয়ে যাবে। ওয়ার্নিং!ད꧂
লেখাটা সামনে আসার সাথে সাথে পুরো আবহাওয়া চেঞ্জ হয়ে গেলো। রুমের মধ্যে বাইরের আবহাওয়া চেক করা না গেলেও ভিতর থেকেই বাইরের আবহাওয়া বলে দেওয়া সম্ভব ছিলো। আকাশ, পাতাল, পরিবেশ সব কিছুর কালার সাদা কালো হয়ে গিয়েছে। কোথাও রঙের কোনো অস্তিত্ব নেই। পৃথিবীতে থাকা সকল মানুষ চোখের পলকের মধ্যে তাদের সেন্স হারিয়ে যেখানে ছিলো সেখানেই পরে গেলো। প্রিন্সিপালও তার জিহ্বাটা তার মুখের মধ্যে নিয়ে এলেক্সকে ছেড়ে দিলো। তবে তার প্রেসার সে বন্ধ করলো না। আশেপাশে তাকালো প্রিন্সিপাল, কিন্তু কিছুতেই বুঝতে পারলো না কি হচ্ছিলো।
ཌকি হচ্ছে? এখনি তো এক্সব্লকের সাথে মার্জ হওয়ার সময় না। না কিছু একটা এদিকে আসছে!ད
লাক্সের হাই সিকিউরিটি ব্যারিয়ারের মধ্য দিয়ে আলোর স্পিডে কিছু একটা প্রবেশ করলো। সেটার যাত্রা পথে কোনো দেওয়ালও কিছুই করতে পারলো না। অরিয়েন্টেশন ক্লাসের দেওয়াল ভেদ করে সেটাকে না ভেঙে একদম এলেক্সের পিছনে উড়ে এসে নামলো একটা বস্তু।
ཌড্রাগন! এই সব কিছু সামান্য ড্রাগনের কাজ?ད
প্রিন্সিপাল কথাটা বলে আর শ্বাস নিতে পারলো না। তার গলা আটকে আসছিলো। সে বুঝতে পারলো তার সামনের ড্রাগনটা কোনো সাধারণ ড্রাগন নয়। এতোক্ষণে এলেক্সের উপরে প্রেসারটা দূর হয়ে গিয়েছে। ড্রাগনটা তার মাথা নিচু করে দিয়ে এলেক্সকে বলতে লাগলো,
ཌমাস্টার, যেহেতু আপনার সিস্টেমের ফ্যামিলিয়ার অপশন এখনো চালু হয় নি তাই আমাকে জোর পূর্বক আসতে হয়েছে এখানে। আমি এখানে বেশিক্ষণ থাকতে পারবো না। আপনি শুধু আদেশ করুন আমি সামনের এই ব্যক্তিকে অস্তিত্ব থেকে মুছে ফেলবো।ད
ড্রাগনটার প্রতিটা কথায় প্রিন্সিপালের মনে হচ্ছিলো সে মারা যাচ্ছিলো। সে ভাবছে,
❝এতোটা এনার্জি আমি শুধু একবারই অনুভব করেছিলাম। সেটাও সুপ্রিম কন্সটেলেশন যখন আমাদের সামনে ছিলো এবং একে অপরের সাথে ফাইট করছিলো। কিন্তু যদি এই ড্রাগন আমার মতো কন্সটেলেশনের মাইন্ডকে এভাবে এট্যাক করতে পারে তাহলে নিশ্চয় এটা একটা ট্রু ড্রাগন না যেহেতু ড্রাগনটা ছেলেটাকে মাস্টার বলছে তাই আমি নিশ্চিত কোনো ট্রু ড্রাগনের অ্যাভেটার হবে ছেলেটা এবং ড্রাগনটা কোনো ট্রু ড্রাগনের বংশধর হবল। আমার মনে হচ্ছে আমি ভুল মানুষের সাথে ফাইট নিয়ে ফেলেছি। ড্রাগন স্লেয়ার হারিয়ে যাওয়ার পর থেকে সুপ্রিম কন্সটেলেশনও ট্রু ড্রাগনদের কিছু করার সাহস পাচ্ছে না। সেখানে আমার এই কাজটা যদি ট্রু ড্রাগন এবং কন্সটেলেশনদের মধ্যে আবারো একটা যুদ্ধ তৈরি করে, তাহলে কি উচ্চতর কন্সটেলেশন গুলো আমাকে বাঁচতে দিবে?❞ (প্রিন্সিপাল ভাবছিলো)
এলেক্স কোনো রকমের কথা বলছিলো না। সে ভাবনায় পরে গেলো। প্রথমত ড্রাগনটা যেটাকে তার পরিচিত মনে হলেও আবার পরিচিত মনে হচ্ছে না। আবার সেটা তাকে মাস্টার বলছে, সব মিলিয়ে সময় তার ভাবনাতেই চলে গেলো। তাই ড্রাগনটা বলতে লাগলো,
ཌদুঃখিত মাস্টার, মনে হচ্ছে আমি আর এক সেকেন্ড বেশি থাকলে সব ধ্বংস হয়ে যাবে।ད
কথাটা বলার সাথে সাথে ড্রাগনটার রং আস্তে আস্তে ফিরে আসলো। এক এক করে সব কিছু স্বাবাভিক হয়ে গেলো। সাদা কালো থেকে সব কিছু আবারো স্বাভাবিক হয়ে গেলো। এলেক্স এবার ড্রাগনটার দিকে তাকিয়ে খেয়াল করলো, লাল এবং কালো রঙের মিশ্রনের একটা ড্রাগন তার সামনে দাঁড়িয়ে আছে। ড্রাগনটা এলেক্সকে দেখার সাথে সাথে মুখ দিয়ে জরিয়ে ধরলো। এলেক্স খেয়াল করলো, তার সামনে প্রিন্সিপালও সেন্স লেস অবস্থায় পরে আছে।
-> অনেক কিছু হয়েছে যেটা আমার মাথায় আসছে না। (এলেক্স)
এলেক্সের সামনে আরো একটা স্ক্রিন চলে আসলো।
꧁ཌকনগ্রাচুলেশন, ডিম্যান কিং সিস্টেম ৮০% আনলক হয়েছে। স্কিল ক্যালকুলেশন করা হচ্ছে।..........
স্কিল গুলো ক্যালকুলেশনের পূর্বে হোস্টকে দ্বিতীয় টেস্টে অংশ নিতে হবে। শুভেচ্ছা রইলো হোস্টকে তার দ্বিতীয় টেস্টের জন্য।ད꧂
লেখাটা এলেক্স পরার পরেই পরে যেতে লাগলো। ড্রাগনটা সাথে সাথে তাকে ধরে ফেললো। গভীর একটা ঘুমের মধ্যে চলে গেলো এলেক্স।
* * * * *
To Be Continued
* * * * *
কেমন হলো জানাবেন।