[প্রথমেই বলি গল্পটা পুরো কাল্পনিক, কেউ বাস্তব কিংবা ধর্মের সাথে তুলনা করবেন না]
#ডিম্যান_কিং_সিরিজ#
#সুপ্রিম_বিয়িং#
পর্ব:০১
লেখকঃহৃদয় বাপ্পী
.
.
.
-->>যা আছে সব নিচে ফেলে রাখ।
তিনজন মাক্স পরা লোক হাতে ছোট ধারালো ছুড়ি নিয়ে দাড়িয়ে আছে। তাদের একজন কথাটা বললো। তাদের সামনে একটা ছেলে দাড়িয়ে আছে। বয়স আঠারো কিংবা উনিশের মতো হবে তার। করুন ভাবে নিজের হাত দুটোর দিকে তাকিয়ে আছে সে।
-->>কিরে তোর কানে যাচ্ছে না আমি কি বলছি? তোর সাথে কি মজা করছি মনে করেছিস। যা আছে সব দিয়ে দে নাহলে কাল তোর লাশ পাওয়া যাবে এই গলির মধ্যে।
তিনজনের একজন খুব উত্তেজিত হয়ে বললো কথাটা। কিন্তু ছেলেটার সেদিকে নজর ছিলো না। তার মুখে হঠাৎ হাসি ফুটে উঠলো এবং হাসিমুখে সে তিনজনকে প্রশ্ন করলো,
-->>ভাইয়ারা আমি কোথায় আছি, আজকে কয় তারিখ, আজকে কোন মাস, আজকে কত সাল এবং এটা এটা কি আদৌও পৃথিবী?
ছেলেটাকে দেখে বড়লোকের কোনো পথ হারিয়ে যাওয়া ছেলে মনে হয়েছিলো তিনজন ছিনতাইকারীর। তবে এটা যে কোনো পাগল হবে এটা আশা করে নি। হয়তোবা কোনো এলিয়েন হতে পারে। এগুলো ভেবেই তিনজনের একজন বাকিদের কানে কানে বললো,
-->>আমি শুনেছি পাশের এলাকায় একটা এলিয়েন ল্যান্ড করেছে। যেটা তার সাথে সংস্পর্শে আশা সবাইকে খেয়ে ফেলছে। এমনকি যে কোনো মানুষের রূপও নিতে পারে সেটা। আমার মনে হচ্ছে আমাদের এখান থেকে পালানোটাই সবচেয়ে ভালো হবে।
বাকি দুজনও এই কথায় সম্মতি জানালো। এই আধুনিক সময়ে কেউ হয়তো কয় তারিখ জিজ্ঞেস করতে পারে, কোথায় আছে জিজ্ঞেস করতে পারে। কিন্তু মাস এমনকি সাল কি কেউ ভুলে যায়। সেটা বাদে সে যে পৃথিবীতে আছে কিনা সেটাই যদি সন্দেহ করে তাহলে সে এলিয়েন ছাড়া আর কি হতে পারে।
তিনজন দৌড় দিলো তাদের চাকু ফেলেই। জীবনের থেকে বড় কিছু হতে পারে না। এলিয়েনকে ছিনতাই করবে এটা তারা আশা করে নি। তাদের দৌড়ে চলে যাওয়ার দিলে ছেলেটা তাকিয়ে রইলো। ওয়েল এটা হওয়ার কথায় ছিলো। বেশ আজব প্রশ্ন করেছে তাদেরকে। কিন্তু এটা জানার প্রয়োজন ছিলো তার। না জানলে বুঝবে কিভাবে সে কোথায় আছে।
-->>যতদূর আমার মনে আছে আমি ডিভাইন গেইটের মধ্যে প্রবেশ করেছিলাম। তারপর কিছু ভালো করে মনে পরছে না। আমার স্মৃতি ঘোলাটে হয়ে আছে। তবে একটা কালো পোষাক পরা লোকের চেহারা ভেসে আসছে। দূর কিছুই বুঝতে পারছি না।
ছেলেটা আশেপাশে সব কিছু ভালো করে দেখার চেষ্টা করতে লাগলো। তেমন কিছু দেখতে পারলো না যেটা দিয়ে সে তুলনা করবে যে আদৌও এটা পৃথিবী কিনা। যদিও সব কিছু ঠিক স্বাভাবিক ছিলো, তবে একটা জিনিস অস্বাভাবিক লাগলো ছেলেটার কাছে। দূরে বিশাল বড় একটা স্তম্ভ দাড়িয়ে আছে। যেটার উচ্চতা মাপার ব্যর্থ চেষ্টা করলো ছেলেটা। স্তম্ভটা আকাশের সাথে মিশে গিয়েছে, তাই শেষটা দেখা যাচ্ছে না।
-->>এটা কোথায় চলে আসলাম আমি?
ছেলেটা ছোট্ট গলি থেকে হেটে বের হতে লাগলো। কোথায় এসেছে এটা সে ভেবে পাচ্ছে না।
* * * * *
(ছেলেটার চরিত্রে)
আপাতোতো কোনো কিছু বুঝতে পারছি না। আমার মাথায় কিছু অজানা স্মৃতি এসে বাসা বেধেছে। এমনটা আমার সাথে প্রথমবার হয় নি। এর পূর্বেও বেশ কয়েকবার হয়েছে আমার সাথে এটা। আমি এটায় বেশী গুরুত্ব দিলাম না। কারন আমি বুঝতে পেরেছি এটা আমার নিজের শরীর না।
আমি কোনো ধরনের এনার্জি অনুভব করতে পারছি না আমার শরীর থেকে। আমার কাছে থাকা ছয়টা ড্রাগনকেও আমি অনুভব করতে পারছি না। তাই দুটো সিদ্ধান্তে আমি পৌছালাম। এটা আমার শরীর না এবং আমি আমার সকল ক্ষমতা হারিয়ে ফেলেছি।
আমার নাম জ্যাকসন। অনেকটা বলা যায় এটা আমার পূর্ব নাম। এটা অনেকটা কনফিউজিং বিষয় হতে পারে। তবে এটা আমার জন্য নতুন কিছু না। আমি অন্য একটা শরীরে প্রবেশ করেছি যেটা মোটেও আমার নয়। এই শরীর যার ছিলো তার নাম আকাশ চৌধুরী। বড়লোক বাবার একমাত্র ছেলে ছিলো সে। তবে কিছুদিন পূর্বে তার বাবা মারা যাওয়ার পর তারই সম্পতি তার বাবার ভাই মানে আপন কাকা দখল করে নেই এবং ঘর থেকে বের করে দেই আকাশকে। পরিস্থিতি শুধু এখানেই শেষ না। কিছু এসাসিন ও ঠিক করে আকাশকে হত্যার জন্য। যেটার ফলে আকাশকে একটা ক্লিন মৃত্যু দেওয়া হয়।
ওয়েল এতোকিছু আমি জানলাম কিভাবে? কারন আকাশের সমস্ত স্মৃতি আমার মাথায় মিক্সড হয়ে রয়েছে। সহজ ভাষায় বললে আমি আকাশের শরীরে রেইনকার্নেড হয়েছি। তাই তার সকল স্মৃতি অনেকটা আমারই বলা চলে। এসব কনফিগারেশনে আমরা না যায়। আমি সিওর এটা আমার ইউনিভার্স না। তবে এটা যে পৃথিবী সেটা আমি না করতে পারছি না। প্রথমেই আমার ইনফরমেশন দরকার ছিলো। যেটা আপাতোতো এই শরীরের স্মৃতি থেকে আমি বের করতে পারছি।
এটা পৃথিবী হলেও আমার পৃথিবীর মতো না। আমার পূর্বের জীবনের পূর্বের জীবনে আমি পৃথিবীতে আঠারো বছরের মতো সময় অতিবাহিত করেছি তাই আমি পার্থক্য খুব সহজেই করতে পারছি। আমরা বর্তমানে বাংলাদেশ কিংবা পাকিস্তানে নেই। এটা মূলত এরিয়া এক্স নামে পরিচিত। পুরো ভারত, পাকিস্তান এবং বাংলাদেশ এক সাথে মিলিয়ে এরিয়া এক্স। যদি ডিটেইলস এ বলি তাহলে এই পৃথিবী অনেক ইন্টারেস্টিং একটা জায়গা। যেটা আমার মতে ডেভিল কিং এর ইন্টারেস্ট খুব সহজেই কেরে নিতে পারে।
কিন্তু একটা জিনিস আমি বুঝতে পারছি না। আমার ক্ষমতা ছাড়া আমি এই ঝুলে থাকা ওয়ার্ল্ডে কি করবো? আপাতোতো বেশী কিছু ভাবলাম না। সব কিছু সময়ের সাথে সাথে ক্লিয়ার হয়ে যাবে। তাই আপাতোতো আমাকে থাকার একটা জায়গার ব্যবস্থা করতে হবে।
* * * *
জ্যাক ওরফে আকাশ হাটতে শুরু করলো জনবহুল একটা রাস্তার দিকে। জায়গাটা আকাশের স্মৃতি অনুযায়ী একটা ব্লাক মার্কেট। যেখানে অনেক ধরনের পন্যই পাওয়া যায়। সেসব পন্যের মধ্যে ম্যাজিকাল অনেক জিনিস রয়েছে।
"আমি আদৌও জানি না এই আকাশের স্মৃতি গুলো সত্য নাকি। তবে যদি সত্য হয় তাহলে আমার আগ্রহ আরো বেড়ে যাবে এই পৃথিবীর জন্য।"
জ্যাক তার ভাবনাকে আটকাতে পারছে না। একের পর এক চিন্তা তার মাথায় আসতে শুরু হয়েছে। সে আপাতোতো সেগুলো এক সাইডে করে ফেললো। ব্লাক মার্কেটকে ঘুরে দেখতে লাগলো। আপাতেতো সে সাধারন একজন মানুষ ছাড়া কিছুই না। তার পূর্বের কোনো ক্ষমতা তার শরীরে নেই। তাই সাধারন একটা চাকুতেই মারা যাবে সে। যদি এই ব্লাক মার্কেটে আসলেই ম্যাজিকাল কোনো পন্য পাওয়া যায় তাহলে সেটা জ্যাকের সুরক্ষার জন্য অনেক ভালো হবে। জ্যাক খুব দ্রুতচিন্তার লোক। তাই সে জানে আকাশের শরীরে রেইনকার্নেড হওয়ার কারনে তার শত্রুর অভাব নেই। আর নিজের ক্ষমতা হারানোর ফলে কিছু করতেও পারবে না তাদের বিরুদ্ধে। তাই আপাতোতো নিজের সুরক্ষার জন্য কিছু জিনিস তার প্রয়োজন।
জ্যাক একটা দোকানে থামলো। যেখানে পোস্টারে লেখা,
-এখানে ম্যাজিকাল আইটেম পাওয়া যায়।-
জ্যাক সব জিনিস গুলো দেখতে লাগলো। একটা বৃদ্ধ লোক বসে আছে দোকানে। এটা একটা ব্লাক মার্কেট হওয়ায় যে কেউ এখানে কেনা বেচা করতে পারে। তাই দোকানগুলো রাস্তার উপরেই কম ডেকোরেশন এর মাধ্যমে তৈরী করা হয়। রাস্তার উপরে ছোট একটা কাঠের উপরে বেশ কিছু পন্য রয়েছে। যেগুলো জ্যাক দেখতে লাগলো এক এক করে। বৃদ্ধ লোকটা বলতে লাগলো তাকে,
-->>এই সবই আসল ম্যাজিকাল আইটেম। যদিও আমি একজন হিরো না তারপরও আমি সিওরিটি দিচ্ছি সব গুলোই ম্যাজিকাল আইটেম যেগুলো টাওয়ার থেকে এসেছে। জ্যাক কিছুক্ষন তাকিয়ে রইলো। একটা আংটি এবং বেশ কিছু রান্না করার সামগ্রি সেখানে পরে ছিলো। যেহেতু আকাশ নিজেও হিরো ছিলো না৷ তাই জ্যাক বলতে পারছে না আদৌও এগুলো ম্যাজিকাল আইটেম কিনা। তবে রিংটার উপরে জ্যাকের আগ্রহ চলে গেলো। সে এই রিংটা কোথাও হয়তো দেখেছে।
"মনে পরছে না। কিন্তু কোথাও তো দেখেছি এটাকে।"
জ্যাক রিং টাকে হাতে নিয়ে বলতে লাগলো। এই সব গুলোই পরিক্ষিত ম্যাজিকাল আইটেম। কোনোটায় ডুপ্লিকেট নয়। এটায় বৃদ্ধ লোকটা বললো। তাই জ্যাকও কিছুটা আগ্রহী এগুলোর ব্যবহার দেখার জন্য।
-->>এগুলো ব্যবহার কিভাবে হয়?(জ্যাক)
জ্যাক বৃদ্ধ লোকটাকে বললো। লোকটা জ্যাকের দিকে একটা করুন চেহারায় তাকালো।
-->>আমি হিরো না হওয়ায় বলতে পারছি না। তবে একজন হিরোই একটিভ করতে পারবে এগুলো।(বৃদ্ধ লোকটা)
জ্যাক কিছুটা অসন্তুষ্ট হলো। যদিও তার আগ্রহ ম্যাজিকাল আইটেম দেখা, কিন্তু সে নিজেও হিরো নয়। আর এখানে হিরো পাওয়া কি সহজ হবে? আকাশের স্মৃতি অনুযায়ী হিরো তাদের বলা হয় যারা আকাশ ছোয়া স্তম্ভে প্রবেশ করার সুযোগ পায়। এমন নয় যে যেকেউ হিরো হতে পারবে। টাওয়ার নিজে পছন্দ করে কারা তার মধ্যে প্রবেশ করতে পারবে এবং কারা পারবে না। তাই আপাতোতো জ্যাকের জন্য এটা কোনো কাজেরই না।
হঠাৎ একটা শব্দ শুনতে পেলো জ্যাক। তাই পাশে তাকালো। পাশ থেকে একটা পাজারো তার দিকেই আসছিলো। ভিতরে তিনজন মাক্স পরা ছেলে বসা ছিলো। যারা পূর্বে জ্যাককে ছিনতাই করার চেষ্টা করে ছিলো। জ্যাকের রিফ্লেক্স পূর্বের মতো নেই, সেই সাথে তার ক্ষমতা নেই। তার শরীর পূর্বের মতো শক্তিশালী নেই আর। তাই গাড়িটা তার উপর দিয়ে খুব তারাতারি চলে গেলো। জ্যাকের মৃত্যু হলো সেখানেই,
* * * * *
"রিং তার নতুন মাস্টারের সাথে এডজাস্ট হয়েছে"
"স্বাগতম রুলার অফ ডেড"
"আপনি একটা স্কিল "বিরিং মি ব্যাক" পেয়েছেন"
"আপনার স্কিল "বিরিং মি ব্যাক" একটিভ হয়েছে। পুরো ওয়ার্ল্ডের সময় একঘন্টা পিছিয়ে যাবে। এবং আপনি আপনার মৃত্যুর এক ঘন্টা পূর্বের সময়ে জীবিত হবেন।"
"স্কিল একটিভ করার পদ্ধতিঃ অবশ্যই মারা যেতে হবে।"
"কুলডাউন সময়ঃ নেই।"
হঠাৎ জ্যাক জীবিত হয়ে গেলো এক ঘন্টা পূর্বের সময়ে। হাত বুলিয়ে সে নিজের অবস্থাকে দেখতে লাগলো। একটু পূর্বে সে সরাসরি মৃত্যুকে অনুভব করেছিলো। কিন্তু সেটা থেকে আবার ফিরে এসেছে। যেটা জ্যাককে কিছুটা পাগল করছেই। কিন্তু এটা ড্রাকুলার সেই ট্রেনিং এর কাছে কিছু না হওয়ায় জ্যাক তারাতারিই স্বাভাবিক হয়ে গেলো। তার সামনে হাওয়ার মধ্যে কিছু আজব দৃশ্য ভেসে বেরাচ্ছে, যেটা কখনো সে দেখে নি। যেগুলোতে বিভিন্ন জিনিস লেখা রয়েছে।
-->>রুলার অফ ডেড! জানি না কি এটা। তবে ভালো একটা নাম।(জ্যাকের মুখে একটা হাসি ফুটে উঠলো)
* * *
To Be Continue
* * *
প্রথম পর্ব কেমন হলো জানাবেন। এটাকে রিবুট করার মূল কারন পূর্বের থিমটা জনপ্রিয় একটা ওয়েবসিরিজ এর মতোই হয়ে যাচ্ছিলো। তাই নিজের কাজে কেমন জানি কপিবাজ মনে হচ্ছিলো। তাই থিম চেন্জ করে নতুন ভাবে লেখার চেষ্টা করলাম। ডিমন কিং এর সাথে মার্জ করলাম এতে অনেকটা ইন্টারেস্টিং হবে দুটো গল্পই৷ যদি ভালো না লাগে তাহলে জানাবেন।