[প্রথমেই বলি গল্পটা পুরো কাল্পনিক, কেউ বাস্তব কিংবা ধর্মের সাথে তুলনা করবেন না]
#ডিম্যান_কিং_সিরিজ#
#সুপ্রিম_বিয়িং#
পর্ব:১১
লেখকঃহৃদয় বাপ্পী
.
.
.
লা লিগার এরিনার মধ্যে একটা ফাইট হচ্ছে। একজন অজানা মাস্টার এবং রাজ খানের সেরা ফাইটারের মধ্যে লড়াই হচ্ছে। সবার নজরই এখন এরিনার মধ্যকার দুজনের দিকে।
জিতু জ্যাকের দিকে একটা ঘুষি মারলো। তার ধৈর্য্য ছিলো না জ্যাকের মতো এতোটা। সে শুধু জানতে চাইছে জ্যাক আদৌও কোনো মাস্টার কিনা। জ্যাকের মুখের এক্সপ্রেশন দেখলে হয়তো তাকে এতো কষ্ট করে বুঝতে হতো না।
মাক্সের কারনে জ্যাকের চেহারা এবং মুখের এক্সপ্রেশন কেউ দেখতে পাচ্ছে না। নাহলে অনেকক্ষন আগেই বুঝতে পারতো সে সাধারন একজন মানুষ মাত্র।
জ্যাক প্রথম ঘুষিটা এড়িয়ে ফেলেছে। শুধু প্রথমটা নয়। জিতু বেশ কয়েকটা ঘুষি জ্যাকের দিকে ছুরলো এরপর যেটা জ্যাক এড়াতে সক্ষম হয়েছে। হয়তো এটা পূর্বে হাজারো ফাইট করার মাধ্যমে সম্ভব হয়েছে। তাছাড়াও জ্যাকের মনে হচ্ছে,
"মেয়েটার সাথে দেখা করার পর থেকে মনে হচ্ছে আমার সেন্সও বৃদ্ধি পেয়েছে।"
জ্যাক ভাবছে এসোসিয়েশান এর সেই মেয়ে এরিয়েলের কথা। আশ্চর্যকর একটা কন্ট্রাক তৈরী হয়েছে তাদের মাঝে। মেয়েটা গল্প, হিরো এসব নিয়ে কি বক বক করছিলো সেটা জ্যাকের মাথায় ঢুকে নি। তবে একটা জিনিস ঠিকই বুঝতে পেরেছে সেটার পর থেকে তার সেন্স অনেকটা বৃদ্ধি পেয়েছে। সেন্স মূলত চিন্তা ভাবনা করার ক্ষমতাকে বলা হয়। সাধারন ভাবে বলতে গেলে আমরা কোন সময়ে কোন সিদ্ধান্ত নিবো সেটা সেন্সের মাধ্যমে হয়ে থাকে। যেহেতু জ্যাকের সেন্স অনেকটা বৃদ্ধি পেয়েছে তাই তার মনে হচ্ছে সে প্রতিটা ঘুষিকে দেখতে পাচ্ছিলো। যদিও সেগুলোর স্পিড তার চোখে ধরছিলো না। তারপরও মনে হচ্ছিলো সে দেখছিলো।
জিতু এবার আর ঘুষিতে সীমাবদ্ধ রইলো না। সে হাতের সাথে তার পায়ের ব্যবহারও শুরু করলো। একের পর ঘুষি এবং কিক শুরু করলো। জ্যাক যদিও প্রথমে ঘুষি গুলো এড়াতে পারছিলো। কিন্তু এখন আর সেটা হলো না। দশটা আঘাতের মতো সাতটা জ্যাকের শরীরে লাগছিলো, যেগুলো জ্যাক তার হাত কিংবা পায়ের মাধ্যমে ঠ্যাকাচ্ছিলো।
"আমার হাত পা মনে হচ্ছে প্রতিটা আঘাতের ফলে ফুলে যাচ্ছে।"
জ্যাক দুজনের শক্তির মধ্যে পার্থক্য বুঝতে পারলো। তার হাত পায়ের যেখানে জিতুর আঘাত গুলো লাগছে সেখানে প্রচুন্ড ব্যথা শুরু হয়েছে। তবে জ্যাক কোনো কিছু প্রকাশ করছে না তার মাক্সের কারনে। সবাই ফাইটটা দেখে যাচ্ছে প্রচন্ড আশ্চর্যে।
-->>আমি ভাবলাম ভালো কিছু দেখতে পারবো। কিন্তু আমার মনে হচ্ছে মিস্টার মাক্সম্যান খেলা করছে।
-->>রাজ খানের সবচেয়ে শক্তিশালী ফাইটারে এতো আঘাতেও কিছুই হচ্ছে না তার। আমার মনে হচ্ছে সে সুযোগ দিয়েছে জিতুকে আঘাত করার জন্য।
-->>এটা তো খান পরিবারের জন্য অনেক বড় অপমান, যদি না জিতু কিছু করতে পারে।
-->>একজন মাস্টারের সামনে আর কিই বা করবে জিতু।
এরিনার গ্যালারি থেকে অনেকেই অনেক রকমের কথা বলতে শুরু করলো। তাদের কথা বেশীরভাগ জ্যাকের পক্ষে ছিলো। আবার অনেকে বিপক্ষেও রয়েছে।
-->>আমি ভাবছিলাম কোনো মাস্টার হবে যেহেতু এতো বড়লোক মেয়ের সাথে আছে। কিন্তু এ তো জিতুকেই সামলাতে পারছে না।
-->>হ্যা আমার মনে হচ্ছে জিতু ভাইয়ের মুভ গুলো দেখে মাক্সের মধ্যে ভয়ে আছে।
-->>কোনো মাস্টার হলে এই ফাইট কখনই শেষ হয়ে যেতো।
-->>আমার মনে হয় শক্তিশালী হওয়ার নাটক করছে। এমন হলে তো সুন্দর একটা মনস্টারের মাক্স কিনে আমরা টাকা ইনকাম করতে পারবো।
সমালোচনা করতে মানুষ ভুলে না। সবাই অপেক্ষা করছিলো ভালো কিছু দেখার জন্য। যেমন আসল মার্শাল আর্ট। কিন্তু এখানে তেমন কিছুই হচ্ছে না। একজন মার দিচ্ছে আরেকজন মার খাচ্ছে দাড়িয়ে। একটা জিনিস দেখার বিষয় সেটা হলো মাস্ক পরা লোকটা মার খাওয়ার পরও তার জায়গা থেকে নরছে না। যেটার মাধ্যমে অনেকেই তাকে শক্তিশালী ভাবছে।
"আমার একটা আঘাতও কিছুই হচ্ছে না। লোকটা তার শরীর দিয়ে প্রতিটা আটকে দিচ্ছে। আমার মনে হচ্ছে মাস্টার না হলেও আমার মতো লেভেলের হবে। যেহেতু ছোট মালিক আমাকে গুরুত্বপূর্ণ একটা কাজ দিয়েছে তাই আমাকে এসব নিয়ে ভাবলে আর হবে না।"
রাজ খানের ফাইটার জিতু আর অন্য ভাবনা মাথায় রাখলো না। তাকে এই ফাইট তারাতারি শেষ করতে হবে। তাই সে তার মার্শাল আর্ট ব্যবহার করা শুরু করলো। ডান পা কে পিছনে এবং বাম পা কে সামনে দিলো, বাম হাতকে জ্যাকের দিকে তুলে ধরলো এবং ডান হাত দিয়ে পেট বরাবর মুটো করে ধরে রাখলো।
জ্যাক হঠাৎ জিতুর এই অবস্থা দেখে অবাক হলো। সে অবুঝ শিশু নয়। দেখার সাথে সাথে বুঝতে পারলো তার প্রতিপক্ষ মার্শাল আর্ট ব্যবহার করতে যাচ্ছে।
-->>তাহলে এটায় মার্শাল আর্ট!(জ্যাক আস্তে করে অবাক সূরে বললো কথাটা)
জ্যাক কখনো মার্শাল আর্ট দেখে নি। শুধু সে না আকাশের স্মৃতিতেও এটার উল্লেখ নেই। এমন নয় যে চৌধুরী পরিবারে মার্শাল আর্টিস্ট নেই। শুধু আকাশ এই বিষয়ে ইন্টারেস্ট রাখতো না তাই কখনো তার দেখা হয় নি।
জিতু যে মার্শাল আর্ট স্টাইলে দাড়িয়ে ছিলো, ভালো ভাবে বললে এটাকে টেকনিক বলা হয়। মার্শাল আর্ট কে বিভিন্ন ভাবে আলাদা করা হয়ে থাকে। যার মধ্যে একটা হলো টেকনিক। এক মাস্টারের নিচে শিখলে তার ছাত্রদের টেকনিক সব সময় একই থাকে, তবে ভিন্ন ভিন্ন মার্শাল মাস্টারের টেকনিক ভিন্ন রকম। জিতু যে টেকনিক ব্যবহার করছে সেটাকে বলা হয় "এক্সট্রিম ফিস্ট"। এটা ঘুষির একটা টেকনিক যেটা তার শরীরের ক্ষমতাকে একটা ঘুষির জন্য দশগুন করে দিবে।
জিতু তার ডান হাত কে পেট বরাবর মুটো করে রেখেছে। এখানে সে অপেক্ষা করছে শরীরের এনার্জি সংগ্রহ করার জন্য। দেখতে দেখতে এক ধরনের লাল এনার্জি সংগ্রহ হতে শুরু করলো জিতুর হাতে। যদিও সেটা সামান্য ছিলো তবুও সবার নজর ঠিকই কেড়ে নিলো।
-->>এইতো বেবী এটার কথা বলছিলাম।
-->>আসল মার্শাল আর্ট দেখতে পারবো তাহলে এখন।
-->>এখন তো জিতু ভাই এক ঘুষিতে বিল্ডিং এর দেয়াল ফুটো করে দিতে পারবে।
-->>মাস্কম্যান এখন অনেক বিপদে আছে।
-->>এক্সাইটমেন্ট আর ধরে রাখতে পারছি না আমি।
এরিনার গ্যালারির মধ্য থেকে এক একজন এর কথাবার্তা স্পষ্ট শোনা যাচ্ছে। জ্যাক কিছুটা অবাক হলো।
"এটাও ম্যাজিক এনার্জি নয়। বরং অন্যকিছু।"
জ্যাক এই ওয়ার্ল্ডের এনার্জি সম্পর্কে বুঝতে পারছে না। লোকটার হাতে এনার্জি ঠিকই ছিলো কিন্তু সেটা জ্যাকের পরিচিত ম্যাজিক এনার্জি নয়। বরং লাল রঙের এনার্জি যেটা কখনো সে দেখে নি কিংবা অনুভব করে নি।
"ছবিতে দেখেছি চরিত্র গুলো অপেক্ষা করে যতক্ষন না ভিলেন তার এট্যাক করছে। কিন্তু আমি মোটেও সেটা চাইছি না।"(জ্যাক ভাবছে)
যেহেতু জ্যাক জিতুকে এট্যাক করছে না তাই জিতু চোখ বুঝেই তার টেকনিক ব্যবহার করার জন্য প্রস্তুত হচ্ছে। সে কিছুটা সিওর যে সামনের জন মাস্টার না হলেও তার লেভেলের কেউ, তাই তাকে সুযোগ দিয়ে পরীক্ষা করছে।
"আমি আপনার এই সুযোগটা হাসি মুখেই নিবো।" (জিতু ভাবছে)
জিতু যে টেকনিক ব্যবহার করছে সেটা সে মাত্র শিখেছে, তাই ব্যবহারের জন্য তাকে অনেক মনোযোগ দিতে হয়। আর সেটার জন্য তাকে চোখ বন্ধ করে এক মিনিটের মতো সময় বাইরের সব কিছু থেকে ছিন্ন থাকতে হয়। এই সময়ে সে বাইরে কি হচ্ছে সেদিকে মনোযোগ দিতে পারবে না। তবে এটা তার "এক্সট্রিম ফিস্ট" এর জন্য যথেষ্ট। কারন সেটা একবার ব্যবহার করলে নিজের কাছে মনে হয় যে কেউ সুপারম্যান হয়ে গিয়েছে।
"আর কয়েক সেকেন্ড মাত্র।" (জিতু)
জ্যাক এনার্জিটা দেখেই নিজেদের ক্ষমতার দূরত্ব বুঝতে পারলো। মাত্র জ্যাক এই ওয়ার্ল্ডে এসেছে, একজন সাধারন মানুষ হওয়ার ফলে তার কাছে কোনো পাওয়ার নেই। তারপরও হারতে সে কখনো চাই না। যদিও আন্ডারহ্যান্ডেড বুদ্ধি ব্যবহার করছে জ্যাক, তারপরও সে আর নিতে পারছে না। জিতুর প্রতিটা আঘাত সে শরীর দিয়ে ঠ্যাকালেও সেটার লিমিট আছে। তার প্রতিটা অংশ যেখানে জিতুর কিক কিংবা ঘুষি লেগেছে সে ফুলে লাল হয়ে আছে। শুধু জামা দিয়ে ঢাকা থাকার কারনে কারো নজরে আসছে না।
জ্যাক এবার এক পা দু পা করে রাজ খানের ফাইটারের কাছে চলে গেলো। ফাইটারটার সেদিকে কোনো খেয়ালই নাই। সে চোখ বন্ধ করে তার এনার্জি একত্র করছে। জ্যাক লোকটার একদম কাছে গিয়ে দাড়ালো। কোনো অপেক্ষা করা ছাড়ায় লোকটার কাধ বরাবর এলেক্স একটা হাই কিক মারলো। আকাশ এমনিতেও অনেকটা লম্বা ছিলো তাই একটা হাই কিক মারতে কোনো সমস্যা হলো না জ্যাকের।
এরকম একটা কিকের জন্য মোটেও প্রস্তুত ছিলো না জিতু। তার কাছে মনে হলো একটা গাড়ি তাকে ধাক্কা দিলো। সোজা মাটিতে পরে গেলো জিতু। তবে ইমপেক্ট ভয়ানক তৈরী হলো। যেহেতু রাজ খানের ফাইটার অনেকক্ষন যাবৎ এনার্জি সংগ্রহ করেছিলো তাই তার হাতের ফিস্ট টেকনিকটাও প্রায় তৈরী ছিলো। জ্যাকের দেওয়া আঘাতের ফলে সে ফ্লোরে পরে যায়। সে সময়ে তার মুঠো করা হাতও ফ্লোরে পরে। যেটা ফ্লোরের অনেকটা অংশকে ফাটিয়ে নিচু করে ফেলেছে। সেই সাথে ফ্লোরের টাইলস ভাঙার ফলে গুড়ো গুড়ো পাউডারও তৈরী হয়েছে যেটার তাদের আশেপাশ দিয়ে একটা ধোঁয়া সৃষ্টি করেছে।
-->>আমি জানতাম না মাক্সম্যান এতো পাওয়ারফুল হবে।
-->>একটা কিকে জিতু ভাইকে হারিয়ে ফেললো।
-->>এটায় হয়তো আসল মার্শাল আর্ট।
-->>আমি এরকম ভয়ানক কিক কখনো দেখি নি। এক কিকে ফ্লোর ফেটে গুড়োগুড়ো হয়ে গিয়েছে।
-->>আমি ভুলেও কখনো এই মাক্সম্যানকে অসম্মান করবো না।
-->>তোমরা কি কেউ জানো মাক্সম্যান শিক্ষার্থী নিচ্ছে কিনা?
ধোঁয়া উড়ে যাওয়ার সাথে সাথে সবাই স্পষ্ট দেখতে পেলো কি হয়েছে। রাজ খানের সবচেয়ে শক্তিশালী ফাইটার ফ্লোরে পরে আছে একটা কিক খাওয়ার পরেই। সবাই মাক্স পরা জ্যাকের ক্ষমতা দেখে অবাক হয়ে গেলো। কারন একটা কিক লাগলো তার জিততে আর সেই কিকে এতো শক্তি ছিলো যে ফ্লোর ভেঙে টুকরো টুকরো করে দিলো।
তবে আসলেই কি সেটা হয়েছে। জ্যাক নিজেও অবাক কম না। আসলে যেটা হয়েছে রাজ খান এর শক্তিশালী ফাইটার জিতু হাতে এনার্জি সংগ্রহ করেছিলো তার মার্শাল আর্ট টেকনিক ব্যবহার করার জন্য। টেকনিকের নাম "এক্সট্রিম ফিস্ট"। এটা সঠিক ভাবে ব্যবহার না করতে পারলে ব্যাকলিস দেখা দেয়। সাধারন ভাবে বলতে গেলে জ্যাক যখন জিতুকে কিক মারে তখন জিতুর শরীরের সকল ভর এবং মনোযোগ তার ডান হাতের মুঠোর মধ্যে ছিলো। যেটা একটা মার্শাল আর্ট টেকনিক ব্যবহার করতেই যাচ্ছিলো। জ্যাকের কিকের ফলে সেই টেকনিকটা সঠিক ভাবে ব্যবহার হতে পারে নি। শুধু সেটায় নয় ফ্লোরে তার ঘুষিটা লাগার ফলে ফ্লোর তো ভেঙে যায়ই সেই সাথে একটা মারাত্মক শক ও তৈরী হয় যেটা জিতু সামলাতে পারে নি। যার কারনে সে সেন্সলেস হয়ে পরে গেলো।
জ্যাক নিজেও জানে এখানে তার কোনো হাত নেই। রাজ খানের ফাইটার নিজের দোষেই সেন্সলেস হয়েছে। কারন সব কিছু তার চোখের সামনেই ঘঠেছে। কিন্তু এটা হয়তো গ্যালারি তে থাকা কেউ বিশ্বাস করবে না। তাই জ্যাক ক্রেডিটটা নিজের ঘাড়েই নিয়ে নিলো।
দুজন লোক আসলো হাতে পানি নিয়ে। এসে রাজ খানের শক্তিশালী ফাইটার জিতুকে উঠালো। জিতু উপুর হয়ে পরে ছিলো। তার টেকনিকটা অনেকটা বাজে ভাবে ব্যাকলিস করেছে। তাই মাথায় ছোট খাটো একটা আঘাত পেয়েছে সে। আপাতোতো রেস্ট নিলে সে ঠিক হয়ে যাবে কোনো চিন্তার কারন নেই। দুজন লোক হয়তো জিতুর আন্ডারলিং হবে। দুজনে তাদের বসকে বসিয়ে দিলো তাদের শরীরে ভর করে। এবং হাতে আনা পানির বোতল থেকে পানি দিলো বসে মুখে। এক মিনিট ডাকাডাকির পর জিতুর সেন্স ফিরে আসলো।
কি হয়েছে জিতু কিছুই বুঝতে পারছে না। শুধু মনে আছে একটু পূর্বে খুব জোরে তার কাধে আঘাত লেগেছিলো। তার পরে কি হয়েছে আর মনে করতে পারছে না। এক বার নিজের ভাঙা ফ্লোরের দিকে সে তাকিয়ে রইলো, পরের বার জ্যাকের দিকে আবার তাকালো। জ্যাককে সে সেই অবস্থায় ঠান্ডা ভাবে দেখছে। জ্যাককে যতই সেভাবে দেখছে ততই জিতুর মনে সম্মান বেড়ে যাচ্ছে। কারন তার একটা আঘাতও কাজে লাগে নি। সেই সাথে লোকটার এনার্জি ছাড়া একটা আঘাতেই জিতু সেন্সলেস হয়ে গিয়েছে আর ফ্লোরের অবস্থা তো সে ভাবতেই পারছে না।
"এটা নিশ্চয় কোনো মাস্টার হবে। আমি এই সুযোগ হাত ছাড়া করতে চাই না।"(জিতু ভাবলো)
রাজের শক্তিশালী ফাইটার উঠলো কষ্ট করে দুজনের কাধে হাত রেখে। এবং জ্যাকের সামনে এসে সে সম্মান জানালো।
-->>আমি অনেক কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি যে মাস্টার জ্যাক আমার সাথে তার ফুল পাওয়ারে লড়ে নি। নাহলে এই জিতু হয়তো বেঁচে থাকতো না। মাস্টার জ্যাকের যদি কখনো প্রয়োজন হয় তাহলে আমি জিতু আমার জীবন দিয়েও সে প্রয়োজন পূর্ন করার চেষ্টা করবো।(জিতু)
মার্শাল ওয়ার্ল্ডের নিয়ম অনুযায়ী শক্তিশালী কারো জন্য কিছু করতে পারলে সে ব্যক্তি অবশ্যই তোমার জন্যও কিছু করবে। জিতু এটায় চাচ্ছে। একজন শক্তিশালী মাস্টারের সদয় চোখে আসতে পারলে অনেক ভাবে লাভবান হওয়া যায় যেটা জিতু মনে করে। আর তাছাড়া জ্যাকের কাছ থেকে যদি একটা দুটো উপদেশ সে গ্রহন করে তাহলে অনেকটা লাভ হবে জিতুর জন্য। সেটার জন্যই তো অপেক্ষা করছে হারার পরও জিতু।
জ্যাকের হঠাৎ মনে পরলো। যদিও আকাশ কখনো মার্শাল আর্টের প্রতি ইন্টারেস্ট রাখে নি। তার পরও একটা জিনিস আকাশের স্মৃতি থেকে জ্যাকের মাথায় আসলো।
"তাহলে প্রত্যেক লড়াই এর শেষে যে হারবে তাকে উপদেশ দিতে হয়।"
মার্শাল ওয়ার্ল্ডের নিয়ম অনুযায়ী ফ্রেন্ডলী ফাইটের মধ্যে যে হারবে সে উপদেশ চাইবে যে জিতবে তার কাছে থেকে। জ্যাক তার সামনের লোকটার চাহনীর মাধ্যমেই বুঝতে পারলো সে কি চাচ্ছিলো। জ্যাক তার জীবনে কম উপদেশ দেয় নি। একসময় সে কিং ছিলো যে ওয়ার্ল্ডে রাজ করেছে। আজ সাধারন মানুষ হলেও তার সেই প্রাইড তো চলে যায় নি।
"যদিও এই জিতা আমার পছন্দ না তারপরও আমার শক্তি অনুযায়ী আমার মেনে নিতে হবে।"
সবাই ভুল করছে জ্যাককে শক্তিশালী ভেবে। তবে এখানে তার কোনো হাত ছিলো না। একটা সামান্য কিকে তার সামনের লোকটা সেন্স হারিয়ে ফেলার মতো না। পূর্বে যে ছিনতাই কারীকে সে এক কিকে বেহুস করেছিলো সে অনেকটা দুর্বল ছিলো। তবে রাজ খানের ফাইটার জিতু মোটেও সেরকম না। সে অনেকটা শক্তিশালী সেই ছিনতাই কারীর তুলনায়। তাছাড়া সে একজন মার্শাল আর্টিস্টও বটে।
-->>কখনো নিজের মনোযোগ প্রতিপক্ষের থেকে সরাবে না। সে আক্রমন করুক আর না করুক।(জ্যাক একটা উপদেশ দিলো)
জিতু উপদেশটা অনেক মনোযোগ সহকারে শুনলো। এবং নিজের মনের মধ্যে গেথে রাখলো।
-->>মাস্টার জ্যাক, আমি আপনার উপদেশটা চিরকাল মনে রাখবো।(জিতু)
এটার মাধ্যমেই জ্যাক এবং রাজ খানের সেরা ফাইটারের মধ্যে ফাইট শেষ হয়ে গেলো। যদিও জ্যাক শক্তিশালী না তারপরও কিছুটা ভুল বোঝাবুঝির কারনে জ্যাকের নাম ছড়িয়ে পরলো সবার মুখে মুখে। এরিয়া এক্সে নতুন মাস্টার এসেছে, নাম "জ্যাক দ্যা মাস্কম্যান"।
ফাইট শেষ হয়ে গেলো। তবে এরিনা থেকে এখনি কেউ বের হলো না। সবাই জ্যাকের দিকে তাকিয়ে ছিলো। ঠিক এমিলির নজরও জ্যাকের দিকে ছিলো।
"কে ভেবেছিলো গড অফ ওয়াটার এর অবস্থা শেষমেষ এরকম হবে। পোসেইডন তুমি আসলেই অনেক নিচে নেমে গিয়েছো। যার ডিগনিটি এক সময় সবচেয়ে বেশী ছিলো। সে এখন এরকম আন্ডারহ্যান্ডেড ম্যাথোড ব্যবহার করে। তোমাকে বেশী অপেক্ষা করতে হবে না পোসেইডন। তোমার অভিশাপের থেকেও হাজারো গুন কষ্ট আমি এথিনা দিতে এসেছি তোমাকে।"
* * *
To Be Continued
* * *
কেমন হলো জানাবেন। ভুল ত্রুটিও তুলে ধরার চেষ্টা করবেন।