[প্রথমেই বলি গল্পটা পুরো কাল্পনিক, কেউ বাস্তব কিংবা ধর্মের সাথে তুলনা করবেন না]
#ডিম্যান_কিং_সিরিজ#
#সুপ্রিম_বিয়িং#
পর্ব:১২
লেখকঃহৃদয় বাপ্পী
.
.
.
এরিয়া এক্সের মধ্যে একটা নাম বন্যার পানির মতো ছরিয়ে যেতে লাগলো। "মাক্সম্যান" এখন পুরো এরিয়া এক্সের ট্রেন্ডিং বিষয়। সে কে কোথায় থেকে এসেছে এটা জানার জন্য সবাই আগ্রহ নিয়ে বসে আছে। মার্শাল আর্ট নিয়ে এমনিতেই এই ওয়ার্ল্ডে অনেক তোলপাড় রয়েছে আবার সেই সাথে নতুন একজন মাস্টারের আগমনকে মার্শাল ওয়ার্ল্ডকে একবার নারা দিয়ে তুলেছে। অনেক মাস্টারই এখন এই মাক্সম্যানকে খুজতে ব্যস্ত। কারো ভালো নিয়তে আবার কেউ বা খারাপ নিয়তে আছে।
বাইরে কি আলোড়ন হচ্ছে এদিকে জ্যাকের কোনো খেয়াল নেই। সে রাতে তার হোস্টেলে চলে এসেছে। ভেবেছিলো হয়তো কোনো জব কিংবা এমন কিছু পাবে কিন্তু এমিলি তেমন কিছুর ব্যবস্থা করে নি৷ তাই প্রথমে জ্যাক হতাশ হয়েছিলো। কিন্তু,
-->>এই কার্ডের মধ্যে বেশ কিছু অর্থ আছে। আমি জানি আমার জীবন বাঁচানোর জন্য আপাতোতো এটা যথেষ্ট নয় তবে আপনি এটা গ্রহন করেন। আমি সময় মতো আপনাকে আমার কৃতজ্ঞতা জানাবো।(এমিলি)
এটায় ছিলো এমিলির শেষ কথা। জ্যাক কার্ডটা নিয়ে চলো এসেছিলো সেখান থেকে। কারন পরিস্থিতি তেমন ভালো ছিলো না লা লিগার মধ্যে। মাক্সম্যানের পরিচয় বারতে শুরু হচ্ছিলো গ্যালারির মধ্য থেকে। মাক্সম্যানের ভক্ত বারতে শুরু হচ্ছিলো তাই জ্যাক সেখান থেকে তারাতারি বেরিয়ে আসে।
-->>কত আছে এই কার্ডে?(জ্যাক)
জ্যাক তার রুমের মধ্যে শুয়ে কার্ডটা হাতে নিয়ে কথাটা বললো। সে জানে না তার ছোট একটু সাহায্যের জন্য মেয়েটা তাকে কত টাকা দিয়েছে। কিন্তু ভালো হতো যদি বেশ কিছুদিনের খাওয়া দাওয়ার ব্যবস্থা হতো তাহলে।
আর বেশী চিন্তা না করে জ্যাক গভীর ঘুমে চলে গেলো। তার শরীরে এখনো আঘাতের দাগ গুলো স্পষ্ট। জামা কাপড় খুলে থ্রি কোয়ার্টে সে ঘুমাচ্ছে। রাজ খানের ফাইটারের সাথে লড়াই এর ফলে জ্যাকের শরীরের বেশ কিছু জায়গায় আঘাত প্রাপ্ত হয়েছে।
প্রতিটা জায়গায় স্পষ্ট দাগ দেখা যাচ্ছিলো। জ্যাক শরীরে হালকা ব্যথা নিয়ে গভীর একটা ঘুমের মধ্যে চলে গেলো। বাইরে হঠাৎ টুপটুপ করে বৃষ্টি পরতে শুরু করলো। বৃষ্টি কিছু সময়ের মধ্যেই প্রবল ভাবে পরতে লাগলো। এটা অনেক আশ্চর্যকর সময়। প্রতি বছরে এক বার কি দুইবার বৃষ্টির দেখা পাওয়া যায়। তবে আজ হঠাৎ বৃষ্টি নামছে। তার উপরে এতো নামছে যে থামার নামই নিচ্ছে না। পাঁচ কি দশ মিনিট এতোদিন বছরে একবার বা দুই বার করে বৃষ্টি নেমেছে। তবে এক ঘন্টা বৃষ্টি নামার পরও আজ থামছে না।
এমন মনে হচ্ছিলো আকাশ আজকে কাঁদছিল। তাই তো তার চোখের জল হিসাবে বৃষ্টি পরছে। হঠাৎ হোস্টেলের সাথে রুমের দরজা খুলে গেলো। ভিতর থেকে ঘুমন্ত জ্যাক হঠাৎ হাওয়ার মধ্যে উঠে গেলো। কাছ থেকে দেখলে দেখা যাবে পানির অনেকগুলো কনা একা একাই আকাশে ভাসছে, যেগুলো জ্যাকের শরীরকে ভাসিয়ে তুলছে।
পানির কনা গুলো একত্র হয়ে জ্যাককে তুলে রুমের বাইরে নিয়ে আসলো। ছাদের উপরে সে ভাসছে পানির মধ্যে। তার কানে হঠাৎ আওয়াজ আসতে শুরু করলো।
-->>আমি এসে গিয়েছি মাস্টার আপনার কাছে কিং অফ গডের অভিশাপ ধুয়ে ফেলতে।
হঠাৎ পানির কনাগুলো একটা রূপ নিলো যেটা থেকে কথাটা বেরিয়ে আসলো। জ্যাক এখনো ঘুমিয়ে আছে। তার সাথে কি হচ্ছে তার বিন্দুমাত্র ধারনায় তার নেই। বৃষ্টির পানির কনা গুলো এক এক করে জ্যাকের শরীরের সকল ক্ষতগুলো ঠিক করতে শুরু করলো। যেখানেই পানি লাগছিলো সেখানের ফুলে যাওয়া অংশ ঠিক হয়ে যাচ্ছিলো। আবারো একটা শব্দ শোনা গেলো,
-->>আমার মাস্টার আমি এখন থেকে সর্বদায় আপনার সাথে থাকবো।
পানির কনাগুলো জ্যাককে তার পূর্বের জায়গায় রেখে দিলো। এবং সাথে সাথে সব কিছু পূর্বের মতো হয়ে গেলো। জ্যাকের শরীরের কোনো আঘাতের দাগ রইলো না। বাইরের বৃষ্টিও বন্ধ হয়ে গেলো।
হোস্টেল এর বিল্ডিং এর সামনে একটা বিরাট এপার্টমেন্ট ছিলো। যার সর্বোচ্চ ফ্লোরের জানালার ধারে একটা মেয়ে দাড়িয়ে ছিলো। মেয়েটার নাম আর কেউ না বরং এমিলি। তার কাধে একটা পেঁচা পাখি বসে আছে এবং নজর সামনের বিল্ডিং এর সাথে। হঠাৎ সে বলে উঠলো,
-->>মানুষ হয়ে জন্ম নেওয়ার পরেও পানি তোমাকে ভালোবাসে, পোসেইডন। এটা অন্তত তোমার প্রাপ্য ছিলো গড অফ ওয়াটার থেকে। কিন্তু ভেবো না আমিও তেমন।
জানালার পর্দাটা টেনে দিয়ে এমিলি তার বিছানার দিকে রওনা দিলো। বুকের মধ্যে এক ঝাক রহস্য নিয়ে এসেছে সে। তবে তার ট্রিপটা এবার ব্যর্থ হয় নি। যাকে কয়েক শত বছর ধরে সে খুজছে আজ সে তার সামনেই আছে। কিন্তু আদৌও কি তার কাছে যাওয়া ঠিক হবে?
এমিলি অনেক বিসন্ন মনে বিছানায় শুয়ে পরলো। হাজার বছরের স্মৃতি তার সামনে চলে আসছে। সে তো সাধারন মানুষ নয় যে সব কিছু ভুলে যাবে। জন্মের পর থেকে সে বা তারা কোনো কিছুই ভুলতে পারবে না। কিন্তু যে লোকটা তাকে সবচেয়ে বেশী কষ্ট দিয়েছে সেই লোকটা সব কিছু ভুলে এখানে একটা সাধারন মানুষ হয়ে আছে। এটা এমিলি নিতে পারছে না। এমিলি তার পেঁচার দিকে তাকালো এবং বলতে লাগলো,
-->>আমরা কি আদোঔ ঠিক করছি?(এমিলি)
পেঁচার মুখ থেকে কথা বেরিয়ে আসলো,
-->>মাস্টার আপনার কোনো চিন্তার কারন নেই। যেহেতু আমাদের আসল শরীর টাওয়ারের বাইরে আসে নি তাই কোনো সমস্যা নেই আমাদের।(পেঁচা)
পেঁচার কথা শুনে এমিলি কিছুটা হাসলো।
"হ্যা এটাই ভালো।" (এমিলি ভাবলো)
সে রুমের লাইট অফ করে ঘুমিয়ে পরলো।
* * * * *
(জ্যাক চরিত্রে)
সকালে ঘুম ভাঙলো আমার। কালকের দিনটা আসলেই আমার জন্য খারাপ ছিলো। রাতে এতো খাবার ছিলো সামনে তারপরও একটা মুখে দিতে পারি নি। ক্ষুধায় আমার পেট টন টন করছে।
আমি উঠলাম ঘুম থেকে। উঠেই নিজের খালি শরীরে জামা কাপড় দিতে যাবো তখনি ম্যাজিক লক্ষ করলাম। ম্যাজিক বলতে, আমার শরীরে যে ক্ষতের দাগ গুলো ছিলো মানে জিতু নামক ব্যক্তির আঘাতে রক্ত জমা হয়ে থাকা জায়গা গুলো ঠিক হয়েছে। পূর্বে আমাকে কোনো রকম ক্ষত নিয়ে চিন্তা করতে হতো না কারন তখন আমার ক্ষত গুলো এমনি এমনি ঠিক হয়ে যেতো বা ভ্যালিরার পাওয়ারে ঠিক হতো। কিন্তু এখন আমি সাধারন মানুষ। তাই এটা ম্যাজিকই লাগছে আমার কাছে।
আমি দরজা খোলা দেখতে পেলাম, তাই মনে হলো হয়তো কেউ এসেছিলো। কিন্তু কে আসবে এখানে? আমার ঠিকানা এসোসিয়েশান এর মেয়েটা বাদে আর কেই বা জানে? অবশ্য জানতে সময় লাগবে না।
আমি জামা পরে নিয়ে দরজার বাইরে বের হলাম। ছাদে সূর্যের অনেক কড়া আলো পরেছে। বাইরের দৃশ্য দেখে বুঝতে পারলাম বৃষ্টি হয়েছে কাল রাতে। ছাদে অনেকটা পানি হয়ে আছে। অধিকাংশ পরে গিয়েছে তবে ভালোই লাগছে দেখতে এখন। আমি ছাদে কাউকে দেখতে না পেয়ে আবারো রুমে প্রবেশ করলাম। রুমের মধ্যে ছোট টেবিলের উপরে ছোট একটা কাগজ পরে আছে। বুঝলাম কারো চিঠি হবে হয়তো কারন এখানে এটা ছিলো না। আমি দরজা খোলা দেখেই বুঝতে পেরেছি কেউ এসেছিলো এখানে।
"
"এমিলি নামক মেয়েটার থেকে দূরে থাকবে।"
"
এটাই লেখা রয়েছে চিঠিতে। আমি হাতের লেখা দেখেই বুঝতে পারলাম এটা এরিয়েল নামক সেই মেয়েটার। বইয়ের মধ্যকার হাতের লেখা আমার এখনো স্পষ্ট মনে আছে। আর তাছাড়া কালকেই তো আমাকে একটা চিঠি দিয়েছিলো এরকম।
আমি বুঝলাম না এমিলির থেকে দূরে থাকতে বললো কেনো। যদিও এমিলি মেয়েটার মাথা নষ্ট আমি মনে করি তারপরও ব্যবহার যথেষ্ট ভালো। আর তাছাড়া একটা টাকার কার্ডও আমাকে দিয়েছে।
-->>আর এমনিতেও আমাদের একবার দেখা হয়েছে আর তো হবে না।
আমি মুখ দিয়ে কথাটা বললাম। সেই সাথে চিঠিটা মুরিয়ে রুমের একটা কোনে ফেলে দিলাম। বুঝতে পারলাম না এসোসিয়েশান এর মেয়েটা কি চাচ্ছে। যায় হোক আমি বেরিয়ে পরলাম। কারন এভাবে বসে সময় নষ্ট করলে হোস্টেলেও আমার জায়গা হবে না। হোস্টেলের রেসট্রিকটেড একটা জায়গায় আমি থাকছি তাই আমার নামে কোনো ফল্ট তৈরী হলে অসুবিধা আছে।
আমি পা দিলাম কলেজে যাওয়ার জন্য। হোস্টেল এর সাথেই কলেজ। পুরো এরিয়া এক্সের মধ্যে একটায় কলেজ যেটা উচ্চ শিক্ষা দিয়ে থাকে ছেলে মেয়েদের। তাছাড়া একটা কিন্ডারগার্ডেন স্কুল এবং একটা হাই স্কুল রয়েছে। কলেজে মূলত উচ্চ শিক্ষা এবং উচ্চতর শিক্ষা দেওয়া হয়। আমি মানে আকাশ চৌধুরী উচ্চশিক্ষার দ্বিতীয় বর্ষে ছিলো। উচ্চতর শিক্ষা তো এখনো পরেই আছে।
কলেজ মূলত আমার জন্য না আমি বুঝতে পারলাম। আকাশের শরীরে থাকার জন্য তার ব্যক্তিগত জীবনটা আমাকে অনেক ভালো ভাবে ইফেক্ট করছে। আকাশ এক সময় অনেক বড়লোক ছিলো। তার বাবা এই শহরের সবচেয়ে বড়লোক ব্যক্তি ছিলো। তার হঠাৎ মৃত্যুর পরে তার সব সম্পতি তার ছেলের হাতে না গিয়ে চলে যায় ছোট ভাইয়ের হাতে। আর তার ছোট ভাই আকাশকে বের করে দেয় চৌধুরী পরিবার থেকে। শুধু এটুকুই হয় নি। টাকা পয়সা, পরিবার হারিয়ে আকাশ নিজের জীবনও হারিয়ে ফেলে। আর সেই জায়গায় আমি চলে এসেছি। মানে জ্যাকসন এ কে কে জ্যাক। তার পরিস্থিতি এখন না দেখার মতো। আকাশ মারা গিয়ে তো বেঁচেছে কিন্তু আমি ক্ষমতা হারিয়ে তার শরীরে আটকা পরেছি।
লোকজনের চাহনি দেখলেই মন চাই চোখ তুলে ফেলতে। কিন্তু আপাতোতো কিছুই করার ক্ষমতা আমার নেই। তাই তারা তাকিয়ে আছে সেটা আমি দেখছি। প্রথমে তো এগুলো আমি ইগনোর করতে চাচ্ছিলাম। কিন্তু আকাশের স্মৃতি আমার মাঝে মিক্স হয়ে আছে, যেটার ফলে আমিই বর্তমানে আকাশ হয়ে আছি। তার অতীত আমার অতীত হয়ে গিয়েছে, তার বর্তমান আমার বর্তমান এবং তার ভবিষ্যৎ আমার ভবিষ্যৎ হয়ে দাড়িয়েছে।
লোকজন তাকিয়ে থাকার এক নম্বর কারন হলো আমার কাছে এখন কিছুই নেই। টাকা পয়সা সব কিছুই আমি হারিয়েছি। এক সময়ে যে টাকা পয়সার উপরে ঘুমিয়েছে তার কাছে আজ টাকা নাই এটা তো দেখারই বিষয়। হয়তো এই ওয়ার্ল্ডই এমন। টাকা ছাড়া কোনো দাম নেই এখানে।
-->>ঔটা আকাশ চৌধুরী না?
-->>আরে চৌধুরী না। এখন তো শুধু আকাশ। নিজের চাচা তো সব সম্পত্তি মেরে দিয়ে চৌধুরী নামটাও কেটে দিয়েছে।
-->>একদম ঠিক হয়েছে এক সময় টাকার কত অহংকার ছিলো তাই না?
-->>শহরের সব মেয়েরা এক সময় পাগল ছিলো ওর। কিন্তু এখন তো বেচারাকে ভিক্ষাও কেউ দিবে না।
-->>কিন্তু এখানে আসছে কেনো? কলেজে তো ভিক্ষুকদের জায়গা হয় না।
-->>হাহাহাহাহা।
সবার কথাগুলো কানে বাধতে লাগলো। কিছুই না করতে পেরে আমি সোজা ক্লাসের দিকে রওনা দিলাম। ক্লাস আবার কি, পুরো ক্লাসে আমি চিরিয়া খানার পশুর হয়ে বসে ছিলাম। সবাই আমাকে নিয়ে বিভিন্ন আলোচনা করলো আমি শুধু শুনলাম। তবে সবার আলোচনার একটা আলোচনা আমার আকর্ষন কেরে নিলো,
-->>ঔ তোরা কি জানিস নতুন একটা মার্শাল আর্ট মাস্টার এসেছে আমাদের এরিয়াতে।
-->>কি বলিস?
-->>শুনিস নি তুই এখনো? পুরো এরিয়া এক্সের মধ্যে তো রাতারাতি ফেমাস হয়ে দাড়িয়েছে।
-->>তোরা মাক্সম্যানের কথা বলছিস?
-->>আরে হ্যা।
-->>আরে আমি তো কাল রাজের পার্টিতে ছিলাম। সরাসরি দেখেছি ফাইটটা।
-->>ইস আমরা গেলেও অনেক ভালো হতো। মাক্সম্যানের ক্ষমতা দেখতে পারতাম।
-->>মাক্সম্যানের অনেক শক্তিশালী। রাজের যে শক্তিশালী ফাইটার জিতুকে হারাতে মাত্র একটা কিক লেগেছে তার। সেটা খুব সাধারন কিক ছিলো। তবে সেই কিকেই পুরো ফ্লোর ভেঙে ফেটে চুরমার হয়ে যায়।
-->>কি বলিস?
-->>বিশ্বাস হয় না আমার কথা? আমি নিজ চোখেই দেখেছি। এমনকি জিতু ভাইয়ের মুখেই শুনেছি যে মাক্সম্যান নাকি কোনো এনার্জিই ব্যবহার করে নি। যদি করতো তাহলে নাকি পুরে লা লিগায় ভেঙে যেতো।
-->>এতো শক্তিশালী মার্শাল মাস্টার এতোদিন কোথায় ছিলো?
-->>এটায় তো সবাই জানার জন্য অপেক্ষা করছে।
-->>আমি তো বিয়ে করলে মাক্সম্যানকেই করবো।(এক মেয়ে)
-->>যদি মাক্সম্যান বুড়ো হয়। আমি তো শুনেছি অধিকাংশ মার্শাল মাস্টার বুড়ো খুনখুনে হয়ে থাকে।
-->>অবশ্য না আমিও ছিলাম পার্টিতে। লোকটা মাক্স পরা থাকলেও তার কন্ঠ এবং ফিগার দেখে মোটেও বয়স্ক মনে হয় নি।
-->>আমার মনে হয় কোনো বড় এরিয়ার বড় পরিবারের সন্তান হবে।
সবাই নিজেদের গল্পে ব্যস্ত ছিলো। ক্লাস তো মূলত নামেই। এখনো শুরু হয় নি। তবে এর মধ্যেই ইন্টারেস্টিং কিছু একটা দেখা দিলো। আমি যেটা দেখতে চাচ্ছিলাম না আবারো সেটা আমার চোখে চলে আসলো।
রাজ খান এবং জারা চৌধুরী প্রবেশ করলো ক্লাসের মধ্যে। একে অপরের সাথে কাধে কাধ মিলিয়ে হাত ধরে রোমান্টিক ভাবে তাদের এন্ট্রি হলো ক্লাসের মধ্যে। আমাকে দেখে দুজনেই অবাক হলো। হয়তো আশা করে নি এখানে আমাকে। রাজ কিছু বলতে যাবে তখনি ক্লাসের শিক্ষক চলে আসার ফলে কিছু বলতে পারলো না সে। তবে মনের মধ্যে ঠিকই রাখলো কথা গুলো।
আমার পাশ দিয়ে রাগি লুক নিয়ে চলে গেলো রাজ। মনের মধ্যে কিছুটা শান্তি লাগলো। অবশ্য আমি দিন দিন আকাশের মতো ভাবতে এবং ব্যবহার করতে শুরু করেছি। যেখানে আমি এক সময় কোনো কিছু নিয়ে বেশী চিন্তা করতাম না সেই আমিই ছোট ছোট জিনিসের ভাবনা আটকাতে পারছি না। অবশ্য এখানে আকাশের স্মৃতির হাত রয়েছে তাই কিছু করার নেই। আপাতোতো এই স্মৃতি আমার জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ, নাহলে এই ওয়ার্ল্ডে আমি নবজাতক শিশুর মতো হয়ে যাবো।
আমি আরেকটা জিনিস আশা করি নি যেটা আমার সাথে ঘঠে গেলো। ক্লাসে শিক্ষকের সাথে প্রবেশ করেছে এমিলি। যে অনেকটা হাসি লুক নিয়ে তাকিয়ে আছে। তার লুকটা আমার দিকে ছিলো সেটা বুঝতে সন্দেহ হলো না।
-->>পরিচয় করিয়ে দি। এ হলো এমিলি, আমাদের নতুন ট্রান্সফার স্টুডেন্ট। এখন থেকে আমাদের কলেজেই পড়বে। আশা করি সবাই ভালো ব্যবহার করবে। এমিলি যাও একটা সিট নিয়ে নাও।(শিক্ষক)
শিক্ষক সবার সামনে পরিচয় করিয়ে দিলো এমিলিকে। আশে পাশে অনেক সিট রয়েছে যেগুলো খালি রয়েছে। বিশেষ করে আজ আমার পাশে কেউ বসে নি। সিঙ্গেল টেবিল এবং চেয়ারের সব ডেক্স। পুরো পঞ্চাশটা সিট হবে। আমার আশে পাশের চারটায় খালি। কেউ বসবে না সেটা বোঝা যাচ্ছে। তবে এমিলি অবাক করে দিয়ে আমার সামনে এসে বসলো।
অবশ্য তার ব্যাপার নিয়ে আমি ভাবলাম না। তার বান্ধুবী এখানে পড়ে তাই স্বাভাবিক ব্যাপার এটা। কিন্তু লোকজন আবারো আমার দিকে তাকিয়ে আছে কড়া নজরে এটা নিয়ে চিন্তা না করে থাকতে পারলাম না। সবার ধারনা হয়তো এই মেয়ে আমাকে চিনে।
আমি ভাবছি যদি মেয়েটা আমার মাক্সম্যান পরিচয় এখানে ফাশ করে দেয় তাহলে কতবড় একটা ঝামেলা হবে। কথা বলতে চাচ্ছিলাম না, কারন এরিয়েলের নিষেধ ছিলো। যদিও আমাকে ওয়ার্নিং দিয়েছে তার আদেশ না মানলে আমার সাথে খারাপ কিছু হবে। তারপরও এমিলির সাথে কথা বলতেই হবে।
"খারাপ আর কি হবে, মারা তো আর যাবো না।"
* *
ক্লাসের পরে,
-"স্কিল "ব্রিং মি ব্যাক" একটিভ হচ্ছে।"-
-"হোস্ট এক ঘন্টা পূর্বে পৌছে গেছেন।"-
আবারো সেই ক্লাস, আবারো সবার একই কথাবার্তা। আবারো শিক্ষকের বোরিং লেকচার।
-->>আসলেই খারাপ কিছু হয়েছে।(জ্যাক)
* * *
To Be Continued
* * *
কেমন হলো জানাবেন।