[প্রথমেই বলি গল্পটা পুরো কাল্পনিক, কেউ বাস্তব কিংবা ধর্মের সাথে তুলনা করবেন না]
#ডিম্যান_কিং_সিরিজ#
#সুপ্রিম_বিয়িং#
পর্ব:১৩
লেখকঃহৃদয় বাপ্পী
.
.
.
ক্লাস শেষে জ্যাক এমিলির সাথে কথা বলার চেষ্টা করতে লাগলো। তবে কোনো ভাবেই সেটা সম্ভব হয়ে উঠছে না। এমিলির চারপাশে ছেলে মেয়েরা ভীর করে রেখেছে। জ্যাক তার সাথে কথা বলার সুযোগই পেলো না। এই পৃথিবীতে এখন তিনটা জিনিস থাকলে তোমাকে সবাই গুরুত্ব দিবে। এক টাকা, দুই পাওয়ার এবং তিন মেয়েদের সৌন্দর্য্য। এমিলির কাছে তিনটায় রয়েছে। তার বডিগার্ডরা ক্লাসের বাইরে দাড়িয়ে আছে। আর এসেছে দামী গাড়িতে। আর তাছাড়াও তার সুন্দর চেহারা সবার আকর্ষনই কেড়ে নিচ্ছে।
সবাই এমিলির সাথে কথা বলতে ব্যস্ত তবে জ্যাক কোনো সুযোগই পাচ্ছিলো না। জ্যাক শুধু বলতে চাচ্ছিলো তার মাক্সের পরিচয় সবার কাছে গোপন রাখতে। তার মাক্সম্যানের পরিচয় গোপন রাখায় শ্রেয়। কারন সবাই যেটা আশা করছে মাক্সম্যান মূলত সেটা নয়।
"আমার পরিচয় খোলাসা হলে হয়তো আমার মাথার জন্য অনেকেই আসবে।"
যদিও জ্যাকের মৃত্যু নিয়ে কোনো চিন্তা নেই তারপরও ভয় সবার মনেই কাজ করে। মরতে কেই বা চাই। আর যদি যন্ত্রনা দায়ক হয় তাহলে তো কেউ চাইবেই না। মাক্সম্যান যেহেতু এক দিনে অনেকটা নাম করে নিয়েছে তাই শীঘ্রই তার সাথে লড়ার জন্য বিভিন্ন মাস্টার বের হবে এটা জ্যাক মনে করছে। সেটা হলে তার মৃত্যুর সম্ভবনা অনেকটা বেড়ে যাবে। জ্যাক এই বিষয়টা এখনি এড়িয়ে চলতে চায়।
পরবর্তী ক্লাস শুরু হবে, তার পূর্বে সবাই সবার ডেস্কে গিয়ে বসলো। হঠাৎ সামনে থেকে এমিলি পিছনে ঘুরলো এবং জ্যাকের সাথে কথা বলতে শুরু করলো।
-->>তাহলে আপনার আসল নাম আকাশ চৌধুরী।(এমিলি)
জ্যাক হঠাৎ অবাক হলো। তার নাম না জানা কোনো ব্যাপার না। তারপরও সে অবাক হয়েছে যে মেয়েটা একা একাই কথা বলছে তার সাথে। জ্যাক একটু পূর্বে কয়েকটা মেয়ের কথা শুনেছিলো, সবাই এমিলিকে এখান থেকে সরে বসতে অনুরোধ করছিলো। কিন্তু তার উত্তর ছিলো,
-->>এখান থেকে সব স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে বোর্ডে। আর তাছাড়া এখানে বসতে আমার ভালোই লাগছে।(এটায় বলেছিলো এমিলি)
এমিলির ব্যবহার জ্যাক আসলেই বুঝতে পারছে না। জ্যাক তার কালকের পরিচয় গোপন রাখতে বলবে এমিলিকে তার পূর্বেই এমিলি বলতে লাগলো,
-->>চিন্তা করতে হবে না, কালকের সব কিছু গোপন থাকবে আমার কাছে। তাছাড়াও এখন থেকে তোমাকে আকাশ বলেই থাকবো।(এমিলি)
জ্যাক হা করে তাকিয়ে রইলো। তার কেনো জানি মনে হচ্ছে মেয়েটা তার মনের কথা শুনতে পারছে। এমিলি জ্যাকের সাথে কথা বলছে এটা সবাই দেখছে।
-->>আমার মনে হয় ওরা দুজন পরিচিত।
-->>আকাশের এক সময় টাকা ছিলো অবশ্যই চিনতে পারে।
-->>কিন্তু এখন আকাশের সাথে কথা বলে লাভ কি?
-->> হাহাহা ঠিক বলেছিস। এখন তো পথের ফকির হয়ে আছে ও।
সবার কথা জ্যাকের কানে বিধতে লাগলো। জ্যাক সেদিকে খেয়াল না দিয়ে এমিলিকে ধন্যবাদ জানালো।
-->>ধন্যবাদ।(জ্যাক)
জ্যাক মুখ খোলার সাথে সাথে তার স্কিল একটিভ হয়ে গেলো।
-"স্কিল "ব্রিং মি ব্যাক" একটিভ হচ্ছে।"-
-"হোস্ট এক ঘন্টা পূর্বে পৌছে গেছেন।"-
জ্যাক চোখ খুললো। তার বুকের মধ্যে এখনো ধুকধুক করছে। মনে হচ্ছে তার হৃদপিণ্ডটা বেরিয়ে আসবে এখনি। সে তার সারা শরীরে ব্যথা অনুভব করছে। পুরো শরীর মনে হচ্ছিলো ঘেমে গিয়েছে।
"তাহলে আমি আবারো মারা গিয়েছি।"(জ্যাক ভাবছে)
জ্যাক এসোসিয়েশান এর সেই মেয়েটাকে এতো ভয়ঙ্কর মনে করে নি। শুধু মাত্র একটা মেয়ের সাথে কথা বলার জন্য তাকে মরতে হবে। এটা অস্বাভাবিক কিছু নয় কি? জ্যাকের মনে হঠাৎ মেয়েটাকে নিয়ে ভয় কাজ করছে। একটা অর্ডার তার কাছ থেকে এবং জ্যাক আবারো এক ঘন্টা পিছনে।
"আমি জানি না এই স্কিল পারমানেন্ট কিনা। তবে আমি শুধু এটার উপরে নিরপেক্ষ হতে পারবো না।"
স্কিলটা সবারই কাছে ওপি লাগতে পারে। তবে জিনিসটা আদৌও ভালো নয়। জ্যাক প্রতি মৃত্যুতে তার শরীরে নতুন কিছু অনুভব করতে পারছিলো। এক সময় ডেভিল কিং হলেও জ্যাকের অনুভূতি ভালো ভাবেই কাজ করতো। তবে এইখানে আসার পর থেকে প্রতিবার মৃত্যুর পর জ্যাক লক্ষ করছে তার ইমোশন গুলো দুর্বল হচ্ছে।
প্রতি জীবিত বস্তুর জীবন একটা থাকে। এই নিয়মটার ভিন্ন হয়ে গেলে যেকোনো বস্তুর মধ্যেই পার্থক্য লক্ষ করা যায়। জ্যাকের জীবনেও সে পার্থক্য দেখতে পাচ্ছে। তাই আপাতোতো সে নিজের এই স্কিলটা না ব্যবহারে মনোযোগ দিলো।
জ্যাকের সাথে আবারো সেই একই ঘটনা ঘঠতে লাগলো। সবার কথা বার্তা এবং সবশেষে ক্লাস শেষে এমিলি কথা বলা। এমিলির কথায় মুচকি একটা হাসি দিয়ে জ্যাক তার উত্তর বোঝালো। কিছু বললো না এমিলিকে। তবে বুঝিয়ে দিলো সে ধন্যবাদ জানাচ্ছে। এমিলি বুঝতে পারলো আকাশের কি সমস্যা। তাই তো সে আর জোর করলো না।
"এটা তোমার অভিশাপের ফল। প্রতি জন্মে তোমার জীবনটা প্রথমে আনন্দময় হলেও আস্তে আস্তে সব কিছু তোমার থেকে চলে যাবে। সবাই তোমার বিরুদ্ধে নানা কথা বলবে। এবং এভাবেই শেষে তোমার মৃত্যু হবে। তবে আমার মনে হয় না তোমার জন্য এটুকু শাস্তি যথেষ্ট। এর থেকে শতগুন কষ্ট আমি দিবো তোমাকে।"(এমিলি ভাবছে মনে মনে)
এমিলি জ্যাকের দিকে একটু কড়া নজরে তাকিয়ে আবার সামনের দিকে তাকালো। অনেক কষ্টের পরে সে এখানে আসতে পেরেছে এবং তার টার্গেটকে শেষ পর্যন্ত পেয়েছে। মনে এক ঝাক কষ্টকে ধামাচাপা দিয়ে সে তার বর্তমান প্লানে মনোযোগ দিলো।
* * * * *
অন্যদিকে এরিয়া এক্সের কলেজের প্রিন্সিপাল রুমে,
প্রিন্সিপাল একজন বয়স্ক ব্যক্তি। সে তার চেয়ারে বসে আছে। তার সামনে তিনজন ব্যক্তি। একজন কম বয়স্ক মেয়ে যাকে দেখলে কলেজের স্টুডেন্টই মনে হবে। আর দুজন কালো স্যুট পরা লোক পিছনে দাড়িয়ে আছে। বয়স্ক প্রিন্সিপাল কথা বলতে লাগলো,
-->>আমি আশা করি নি এসোসিয়েশান এতো তারাতারি রিচুয়াল শুরু করবে। কিন্তু যখন শুরু করছে তখন আমাদের আর কিছু করার নেই তাহলে।(প্রিন্সিপাল)
মেয়েটা এরিয়েল, যে এসোসিয়েশান এর পক্ষ থেকে এসেছে এবারের রিচুয়াল শুরু করতে। রিচুয়াল মূলত টাওয়ার এবং এসোসিয়েশান এর মধ্যে প্রবেশ করার একটা পূর্ব ধাপ। যেটা সম্পূর্ন করার মাধ্যমে শুধু প্রত্যেক কলেজের ছেলে মেয়েরাই টাওয়ারে কিংবা এসোসিয়েশানে প্রবেশের সুযোগ পায়। টাওয়ার মূলত প্রতিটা ব্যক্তিকে নিজ ইচ্ছায় প্রবেশ করার সুযোগ দেয় না। টাওয়ার যদি অনুমতি দেয় তাহলেই একজন ব্যক্তি টাওয়ারে প্রবেশ করতে পারবে। এবং রিচুয়ালের মাধ্যমে নিজের অস্তিত্বকে খুব তারাতারি টাওয়ারের কাছে প্রমান করা যায়।
এরিয়েল চেয়ারে বসে ছিলো প্রিন্সিপালের সামনে। সে প্রিন্সিপালের কথার পরে নিজের মুখ খুললো,
-->>তাহলে প্রিন্সিপাল স্যার কলেজ থেকে তো আমরা আপনাদের পুরো সহযোগিতা পাচ্ছি আবারো তাই না?(এরিয়েল)
প্রিন্সিপাল তার মাথা নারিয়ে উত্তর দিলো,
-->>হ্যা।
এরিয়েল আর সময় নষ্ট করলো না। প্রিন্সিপালের রুম থেকে সে বেরিয়ে গেলো। তার পিছনে দুজন কালো স্যুট পরা লোকও যেতে লাগলো। দেখতে দেখতে তারা বিশাল অডিটোরিয়ামের মধ্যে প্রবেশ করলো। অডিটোরিয়ামে বিশাল ভিড়ের মাঝে এরিয়েল এবং তার পিছনের দুই ব্যক্তি স্টেজের উপরে গিয়ে উঠলো।
অডিটোরিয়াম মূলত একটা রুম যেখানে বিভিন্ন প্রোগ্রাম হয়ে থাকে কলেজের। এটায় কলেজের সবচেয়ে বিশাল রুমের মধ্যে একটা। প্রথম ক্লাসের কিছুটা পরেই কলেজের সকল স্টুডেন্টকে অডিটোরিয়ামের মধ্যে প্রবেশ করতে আদেশ দেওয়া হয়েছে। উচ্চ শিক্ষা এবং উচ্চতর শিক্ষা দুই বিভাগের স্টুডেন্টই এখানে উপস্থিত আছে।
সব মিলিয়ে মোট ছয়টা ক্লাস। উচ্চ শিক্ষা বিভাগে দুটো এবং উচ্চতর শিক্ষায় চারটা। ছয়টা ক্লাসে মোট স্টুডেন্টের সংখ্যা দুইশত প্রায়। তাই অডিটোরিয়ামকে অনেকটা পূর্ন পূর্ন লাগছে। অডিটোরিয়ামের মধ্যে এতোক্ষন অনেক কথা বার্তা হচ্ছিলো। তবে এসোসিয়েশান এর তিন ব্যক্তির উপস্থিতির পরে পুরো অডিটোরিয়াম নিশ্চুপ হয়ে গেলো।
এরিয়েল স্টেজে উঠার পরে পুরো অডিটোরিয়ামের মধ্যে কালো স্যুট পরা লোকজনে ভরে গেলো। তারা চারিদিক দিয়ে পুরো রুমটাকে ঘিরে ধরলো। এমন মনে হচ্ছিলো খুব গুরুত্বপূর্ন ব্যক্তি এখানে আছে এবং তারা তাকে গার্ড দিচ্ছে। পুরো রুমের মধ্যে একটা প্রেসার তৈরী হলো। যেখানে সকল স্টুডেন্টদের হার্ট বিট বারতে শুরু হলো। সকল স্টুডেন্ট ঘামতে শুরু করলো। অনেকে ভয়ে কাপতে শুরু করেছে। কিন্তু কেউ মুখ দিয়ে একটা কথা বলার সাহস পাচ্ছে না।
সাদা পোষাকে ছিলো এরিয়েল। হঠাৎ স্টেজে আরো বেশ কিছু মানুষের দেখা পাওয়া গেলো। যাদের অধিকাংশ কালো স্যুটে ছিলো। তবে একজন ছেলে এবং আরেকজন মেয়ে ছিলো যাদের গায়ে সাদা স্যুট ছিলো। সাদা স্যুট পরা মেয়েটা কথা বলতে শুরু করলো,
-->>লেডিস এন্ড জেন্টেলম্যান তোমাদের সবাইকে স্বাগতম। আমাদের এখানে দেখে হয়তো সবাই বুঝতে পেরেছো এখানে কি হচ্ছে। তাই আসল কথায় আসি। যারা রিচুয়ালে অংশ নিতে চাও না তার এখনি এখান থেকে চলে যেতে পারো।
মেয়েটার কথার পর সে থামলো কিছুটা। ভীরের দিকে তাকিয়ে রইলো। কেউ যায় কিনা সেটা তার দেখার ছিলো। কিন্তু কেউই যাচ্ছিলো না। সবাই জানে এটা তাদের জন্য অনেক বড় সুযোগ। কেউ জানে না রিচুয়ালের মধ্যে কি হয় তবে সবাই জানে এটাই তাদের সুযোগ টাওয়ারে প্রবেশ করা। অনেকে তো এসোসিয়েশান এ প্রবেশের স্বপ্ন দেখছে। তাই কারো এখান থেকে যাওয়ার নিয়ত নেই আর। এমনি সময় হলে এখানে গল্পে মাছের বাজার হয়ে যেতো কিন্তু এসোসিয়েশান এর লোকজনের প্রেসারে কেউই মুখ খুলতে পারছে না।
-->>আমি শেষবার সাবধান করি সবাইকে। রিচুয়াল মোটেও সাধারন কিছু না। গতবারের রিচুয়ালে মৃত্যুর সংখ্যা ছিলো আশি শতাংশ। তাই আমি আবারো সাবধান করছি সবাই। কেউ যদি যেতে চাও এখনি যেতে পারো।
মেয়েটার মুখ থেকে মৃত্যুর কথা শুনে সবার মনের ভয় আরো বারতে শুরু হলো। কিন্তু এই ভয় তাদের আটকাতে পারবে না। এই নষ্ট পৃথিবীর শুধু একটায় হোপ রয়েছে। সেটা হলো টাওয়ার। আর মানুষ জীবন দিয়ে হলেও সেখানে প্রবেশ করবে।
-->>যেহেতু সবাই রিচুয়ালে অংশ নিবে তাই আমি রিচুয়াল সবার কাছে ব্যাখ্যা করে দিচ্ছি।
হঠাৎ মেয়েটার পাশে থাকা আরেকটা সাদা স্যুট পরা লোকটা তার মুখ খুললো। সে রিচুয়ালের রুলস এবং নিয়ম ব্যাখ্যা করতে লাগলো।
-->>নিয়ম বলার পূর্বে আমি সবার কাছে রিচুয়াল সম্পর্কে দুই লাইন বলতে চাই। যেহেতু সবাই অংশ নিবে এটায় তাই আর গোপন রেখে লাভ নেই। রিচুয়াল মূলত টাওয়ার কর্তৃক মানুষের জন্য একটা টেস্ট। রিচুয়ালের দুটো টেস্টে যদি মানুষ পাশ করতে পারে তাহলে তারা টাওয়ারে প্রবেশের সুযোগ পাবে। আবার কেউ যদি প্রথমটা পাশ করে পরের টেস্টে অংশ না নিতে চায় কিংবা দ্বিতীয় টেস্টে পাশ না করে তাহলে সে আমাদের এসোসিয়েশানে অংশ নেওয়ার সুযোগ পাবে। আর যারা দুটো একটা টেস্টও পাশ করতে পারবে না তাদের স্মৃতি মুছে দেওয়া হবে যদি তারা রিচুয়ালে মারা না যায়।
লোকটা আরো বলতে লাগলো,
-->>প্রথম টেস্ট এরিয়া এক্সের মধ্যে হবে। প্রথম টেস্টের নিয়ম একদম সহজ। সবাইকে এক মাস সময় সারভাইভ করতে হবে এই এরিয়া এক্সের মধ্যে। এখন অনেকেই ভাবতে পারে এর থেকে সহজ আর কি হতে পারে তাই না? আমি সবাইকে বলে রাখি আজকের পর থেকে যে এরিয়া এক্সকে তোমরা চিনতে সেটা পুরো পাল্টে যাবে। তাই আমি বলবো সবাই ভবিষ্যতে সাবধান থাকবে।
লোকটা আরো বলতে লাগলো,
-->>সবার হাতে একটা মোবাইল চলে আসার কথা এতোক্ষনে। আমি দেখতে পাচ্ছি সবাই পেয়েছে। কেউ না পেয়ে থাকলে হাত তুলো।
সাদা স্যুট পরা লোকটার কথা বলার পূর্বেই সবার হাতে হাওয়ার মধ্য থেকে জাদুর মতো একটা মোবাইল ফোন চলে এসেছে। যেটা বন্ধ ছিলো, যার কোনো বাটন ছিলো না। কিভাবে চালু হবে সেটা কেউই বুঝতে পারছিলো না। লোকটা আবারো বলতে লাগলো,
-->>বেশী কিছু বলে দেওয়া আসলে নিয়মের বাইরে চলে যাবে। এই টেস্টের মূল উদ্দেশ্য হলো তোমরা সব কিছু নিজে থেকেই বের করবে। কি করবে এবং কি করতে হবে। তারপরও আমি কিছুটা সাহায্যের টিপস দিয়ে দিচ্ছি। এখন থেকে সবার চিরো চেনা অর্থ আর কাজ করবে না। তবে এমন নয় যে সেটা একে বারে বেকার হয়ে যাবে। বর্তমানে এই রুমের মধ্যে যার কাছে যত অর্থ আছে সেটার বিনিময়ে সবার মোবাইলে নতুন কারেন্সি যোগ হবে। গোল্ড কয়েন, এই পুরো রিচুয়াল এবং যদি ভবিষ্যতে কেউ টাওয়ারে প্রবেশের সুযোগ পায় তাহলে গোল্ড কয়েনই হবে তাদের কারেন্সি। এক মিলিয়ন টাকার বিনিময়ে মাত্র একটা গোল্ড কয়েনই পাওয়া যাবে।
লোকটা আবারো থেমে নিলো,
-->>সবার মোবাইল বন্ধ আছে। সেটাকে খুলতে টাকা রিচার্জ করতে হবে। এক টাকা থাকলেও হবে আবার কয়েক মিলিয়ন থাকলেও হবে। কার্ড থাকলেও হবে আবার স্বর্ন কিংবা রৌপ্য থাকলেও হবে। সবাইকে শুধু সেগুলো তাদের মোবাইলের ক্যামেরা বরাবর ধরে রিচার্জ বলতে হবে। একবার রিচার্জ হয়ে গেলেই সবার একাউন্ড তৈরী হবে রিচুয়ালের টেস্টের জন্য এবং পরবর্তী পদক্ষেপ সবাই মোবাইলের মাধ্যমেই জানতে পারবে।
লোকটা আরো বলতে লাগলো,
-->>আমি আসলে এসব বক বক পছন্দ করি না। জানি কেউ কিছু বুঝে নি। অবশ্যও এটাই নিয়ম। কেউ বুঝতে পারলে এই টেস্টের কোনো মানেই হবে না। আমি আশা করছি এবারে মৃত্যুর সংখ্যা বেশী হবে না। সবাই নিজেদের রিচার্জ করে ফেলো।
* * *
লোকটা কয়েকটা কাশি দিলো। কেউ কিছুই বুঝে নি তার কথা। এতো খারাপ বিবরন কেউ হয়তো কোনোদিন শুনে নি। তবে তারা যে কিছু বলবে সেটার সাহস পাচ্ছে না। তাই যেটুকু বুঝেছে এবং পাশের দের কে যা করতে দেখছে তাই করছে সবাই।
অন্যদিকে সব কিছু খুব মনোযোগ দিয়ে শুনছিলো জ্যাক। তার মন ধুকপুকানি করছিলো রুমের মধ্যকার প্রেসারের মধ্যে। কিন্তু লোকগুলোর কথা শুনে উত্তেজিতও হচ্ছিলো অনেক। আশেপাশের সবাই যখন এক এক করে রিচার্জ দিতে শুরু করলো সেটা জ্যাকও দেখছে। কিন্তু তার কাছে কি আছে? সামান্য কিছু টাকা ছিলো। কয়েক হাজার হবে। তার আশে পাশে তো মানুষ লক্ষ লক্ষ টাকা রিচার্জ করছে। কিন্তু তার কাছে কয়েক হাজারই মাত্র আছে।
"ওয়েট এমিলির দেওয়া কার্ড রয়েছে আমার কাছে।"
জ্যাক তার পকেট থেকে এমিলির দেওয়া ক্রেডিট কার্ডটা বের করলো। কত টাকা আছে এর মধ্যে সে জানে না। কিন্তু এক দুই লক্ষ হলে খারাপ হয় না। তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর থেকে টাকার মান অনেক কমে গিয়েছে। টাকা এখন শুধু কাগজের নম্বরই। মিলিয়ন তো মধ্যবিত্তদের বলা চলে। আর বড়লোকরা তো বিলিয়নে খেলা করে।
জ্যাক তার কার্ডটাকে মোবাইলের ক্যামেরার সামনে ধরলো এবং বললো,
-->>রিচার্জ।(জ্যাক)
মোবাইল পুরো বন্ধ ছিলো তবে হঠাৎ পুরো কার্ডটাকে এবজোর্ব করে নিলো মোবাইলের ক্যামেরা থেকে একটা রশ্নি বের হয়ে। জ্যাক দেখতে পেলো তার মোবাইলের স্ক্রিনে আলো জ্বলে উঠেছে। সেখানে প্রথমেই লেখা,
-""ওয়েলকাম প্লেয়ার। ধন্যবাদ এক বিলিয়ন টাকা রিচার্জ করার জন্য। আপনার নাম ঠিক করুন।""-
জ্যাকের কাছে তার নাম লেখার জন্য কি বোর্ডের অপশন চলে আসলো। তার চোখ অবাক না হয়ে পারলো না। কার্ডের মধ্যে দশ বিলিয়ন টাকা ছিলো এটা তার বিশ্বাসই হচ্ছে না।
"এতো টাকা একটা মেয়ে কিভাবে অপরিচিত একটা ছেলেকে দিতে পারে?"
জ্যাকের মাথা কিছুক্ষনের জন্য কাজ করছিলো না।
* * *
To Be Continued
* * *
আজকে অনেক জায়গায় ভুল থাকতে পারে। চোখে পরলে তুলে ধইরেন আমার কাছে।