[প্রথমেই বলি গল্পটা পুরো কাল্পনিক, কেউ বাস্তব কিংবা ধর্মের সাথে তুলনা করবেন না]
#ডিম্যান_কিং_সিরিজ#
#সুপ্রিম_বিয়িং#
পর্ব:০৭
লেখকঃহৃদয় বাপ্পী
.
.
.
জ্যাক চলে আসলো ক্যান্টিনে। কলেজের ছেলেমেয়েদের খাবারের জন্য তৈরী হয়েছে ক্যান্টিন। এখানের খাবার গুলো অর্ধেক দামে বিক্রী করা হয়। যেটা শুধু কলেজের ছেলে মেয়েদের জন্যই বরাদ্দ করা হয়েছে। প্রতিজন সিমীত পরিমান খাবারই ক্রয় করতে পারবে, তাই বেশী ক্রয় করে রেখে দেওয়ার কোনো উপায় নেই এখানে।
জ্যাক তার মাথায় ক্যাপটা ঠিক করে ক্যান্টিনের ভিতরে এসে দাড়ালো। যদিও এখানে সে আসতে চাই নি তারপরও আর কোনো জায়গা নেই। কারন তার কাছে সিমীত পরিমান টাকায় আছে। ক্যান্টিনের কাউন্টারে এই সময় ভীর না থাকলেও ক্যান্টিনের মধ্যে কয়েকজন ছিলো বসা। যাদের চেহারা জ্যাকের কাছে পরিচিত মনে হলো।
বেশ কয়েকজন ছেলে এবং মেয়ে ক্যান্টিনের একটা টেবিলে আড্ডা দিচ্ছিলো। আকাশের স্মৃতি অনুযায়ী আকাশের বাবা জীবিত থাকার সময়ে এই ছেলে মেয়েরাই তার কাছের বন্ধু ছিলো, যারা বিপদে আপদে সব সময় আকাশের পাশে ছিলো। কিন্তু তারা আজ কোথায়?
জ্যাক তাদের দিকে গুরুত্ব না দিয়ে কাউন্টারে চলে গেলো। সেখান থেকে দুটো চিজ বার্গার এবং একটা সফ্ট ড্রিংক্স নিয়ে এসে জ্যাক দূরের একটা টেবিলে বসে খেতে লাগলো। অনেকটা ক্ষুধা লাগায় খাবারের প্রতি তেমন গুরুত্ব তার ছিলো না, তাই সামান্য পেট ভরাতে পারলেই হলো। আর সে এখানেই তার টাকা শেষ করতে চাই না।
দূরে এক পাশে তিনজন ছেলে এবং তিনজন মেয়ে বসে আড্ডা দিচ্ছে। তাদের আড্ডার মূল বিষয় আকাশ চৌধুরীকে নিয়েই,
-->>গাইস আমি এখন সত্যিই আকাশকে অনেক মিস করতে শুরু করেছি। ওর টাকার জন্য আমাদের খাবারে কোনো সমস্যায় হতো না। এখন আমরা আমাদের মন মতো খাবার গুলো খেতে পারছি না।
তাদের মধ্য থেকে একজন ছেলে কথাটা বলে উঠলো। তার নাম রিয়াজ। বাকি গুলো যথাক্রমে রাসেল, অনন্ত, শ্রেয়া, দিবা এবং ঔশী। রিয়াজের কথা শুনে অনন্ত উত্তর দিতো লাগলো,
-->>তুই ওর কথা মনে করতেছোস কেনো এই সময়ে? ওর এখন কিছুই নাই, তাই আমাদের কোনো কাজেই আসবে না।(অনন্ত)
-->>কি অপমম অবস্থা, আমাদের ক্রাশের আজ এই অবস্থা হবে। যাইহোক আমি এমনটায় আশা করেছিলাম। আমাদের মতো তিন সুন্দরী কে ইগনোর করলে এমনটা তো হবেই।(ঔশী)
ঔশীর কথা শুনে রাসেল বলতে শুরু করলো,
-->>বাব্বা এক মাস পূর্বেও যাদের সামনে আকাশের বিরুদ্ধে একটা কথা বলা যেতো না তারা আজ এটা বলছে।(রাসেল)
সবাই আড্ডায় ব্যস্ত, তখনি ঔশীর নজর হঠাৎ দূরের একটা টেবিলে গিয়ে পরলো।
-->>ঔটা আকাশ না?(ঔশী)
ঔশীর কথা শুনে সবাই ঔশীর তাকানো দিকে তাকালো। তারা সবাই আকাশকে দেখতে পেলো। একটা বার্গার নিয়ে বসে সে আছে এবং অন্যটা খাচ্ছে। এই ধরনের খাবার আকাশকে তারা কখনো খেতে দেখে নি।
-->>আমরা কি যাবো ঔখানে?(দিবা)
-->>না না কোনো প্রয়োজন নেই। আমরা ওকে দেখি নি।(ঔশী)
ঔশীর উত্তর শুনে বাকিরাও আর সেদিকে তাকালো না। সবাই নিজেদের নতুন আড্ডায় মগ্ন হয়ে গেলো,
-->>শুনেছি রাজ নাকি আজ পার্টি দিবে?(শ্রেয়া)
শ্রেয়া হঠাৎ তাদের টপিক বদলে ফেললো। তার কথা শুনে ঔশী উত্তর দিলো,
-->>ও তো একটা মেয়েবাজ, আমি জানতামই না জারার মতো একটা মেয়ে ওর সাথে রিলেশন করবে।(ঔশী)
-->>বাইরে থেকে যাদের ভালো দেখা যায়, মূলত ভিতরে তারাই সবচেয়ে খারাপ হয়ে থাকে।(রাসেল)
-->>হ্যা বন্ধু এটা একদম ঠিক। আকাশের টাকা থাকার সময় আকাশের পিছনে ছিলো সব সময়, যখনি আকাশের টাকা শেষ তখনি রাজের পিছনে চলে গিয়েছে, এরা আর কি বলবো আমি।(রিয়াজ)
-->>যাইহোক আমাদের লা লিগায় ইনভাইট করেছে সবাইকে তাই মিস করতে চাই না আমি।(অনন্ত)
-->>তুই তো শুধু খাবারের জন্য যাবি। তোর কি মনে আছে যদিও আমরা আকাশের সাথে নেই, তারপরও আমাদের অপমান করার জন্যই মূলত ইনভাইট করেছে। সব দোষ এখন আকাশের।(দিবা)
-->>দূর বা* বাদ দে এই টপিক, শুনেছি কাল থেকে স্পেশাল ক্লাস শুরু হবে। তোরা কি শুনেছিস এই বিষয়ে?(রাসেল)
সবাই রাসেলের কথায় চুপ হয়ে তার দিকে তাকিয়ে রইলো। রাসেলের মনে হচ্ছিলো সে এমন কিছু বলেছে যেটা তার বলা উচিত হয়নি।
-->>কিসের স্পেশাল ক্লাস?(অনন্ত)
-->>আমি তো এই ব্যাপারে কিছু শুনি নি, ঔশী তুই কিছু শুনেছিস?(শ্রেয়া)
-->>না বাপ।(ঔশী)
তাদের কথা শুনে রিয়াজ বলতে শুরু করলো,
-->>শুনেছি এসোসিয়েশান এই স্পেশাল ক্লাসের ব্যবস্থা করবে, তাই আমার মনে হয় না কোনো সহজ কিছু হবে আমাদের জন্য।(রিয়াজ)
-->>কি এসোসিয়েশান?(ঔশী)
-->>ভালো কিছু করতে পারলে হয়তো আমাদের জন্য এটা ভালো কিছু হতে পারে। যেহেতু আমরা টাওয়ারে প্রবেশের সুযোগ পাচ্ছি না, সেই হিসাবে এসোসিয়েশানে একটা পদ পেতে পারলে আমাদের ভাগ্যই খুলে যাবে।(রাসেল)
-->>দোস্ত আমি আমার সর্বোচ্চ চেষ্টা করবো। তোরা না পারলেও এসোসিয়েশানে একটা পদ আমি দখল করবো, তারপর তোদের সবাইকে দেখার দায়িত্ব আমার।(ঔশী)
-->>হয়ছে হয়ছে তোর আজাইরা বক বক? স্পেশাল ক্লাস গুলো এতোটাও সহজ না।(দিবা)
-->>তোরা কি এই ব্যাপারে কিছু জানিস?(শ্রেয়া)
-->>যতদূর আমার কানেকশন রয়েছে, এসোসিয়েশান এর স্পেশাল ক্লাসগুলো সব সময় হাই লেভেল সিকিউরিটি ব্যবহার করে করানো হয়। যার ফলে যারা ক্লাস করেছে তারা ব্যতীত অন্য কেউ এটা সম্পর্কে বলতে পারে না।(রিয়াজ)
-->>তাহলে আমাদের তাদের একজনকে ধরা উচিত যারা পূর্বে স্পেশাল ক্লাস করেছে তাই না?(অনন্ত)
-->>হ্যা অনন্ত ঠিক বলেছে। আমাদের তেমন একটা লোক খোজা দরকার।(ঔশী)
-->>এতো সহজ হলে তো এরিয়া এক্সের ঘরে ঘরে সবাই এটা সম্পর্কে জানতো। আমি শুনেছি স্পেশাল ক্লাসের পরে যারা এসোসিয়েশান এ যুক্ত হতে পারে না তাদের মেমোরি মুছে দেওয়া হয় স্পেশাল ট্রেনিং সম্পর্কে।(রিয়াজ)
-->>আমার তো এসোসিয়েশান এর নাম শুনলেই লোম দাড়িয়ে উঠে ভয়ে।(রাসেল)
ছয়জনে এই নিয়ে আরো অনেক কিছু আলোচনা শুরু করলো।
* * *
অন্যদিকে জ্যাকের বার্গার শেষ হওয়ার পরেই সে বেরিয়ে আসলো ক্যান্টিন থেকে। তার থাকার মতো জায়গা এখানে না। যদিও আকাশের ব্যক্তিগত জীবনে জ্যাক নাক গলাতে চাই না। তারপরও যেহেতু আকাশের শরীরে সে রয়েছে তাই তাকে আকাশের পরিচয়কে কিছুটা হলেও মেনে নিতে হবে।
কলেজ থেকে লুকিয়ে বেরিয়ে পরলো জ্যাক। তার গন্তব্য ব্লাক মার্কেট, বিকালের পর থেকেই ব্লাক মার্কেট অনেক প্রানপ্রিয় হয়ে উঠে। জ্যাক পূর্বের সেই ব্যক্তিকে খোজার চেষ্টায় ব্লাক মার্কেটে প্রবেশ করতে চাচ্ছে।
"আমি নিশ্চিত এই রিং এর মতো আরো অনেক শক্তিশালী কিছু লোকটার কাছে আছে।"
জ্যাক ব্লাক মার্কেটে প্রবেশ করলো, তবে পুরো মার্কেট খুজেও সেই বৃদ্ধ লোকটাকে খুজে পেলো না। অনেকটা নিরাশ হতে হলো জ্যাককে। তবে একেবারেই যে খারাপ হলো এমনটা নয়।
জ্যাক মার্কেটের এক গলির সামনে দাড়িয়ে ছিলো। একটা চিৎকার তার কানে পৌছে যায়। একটা মেয়ে সাহায্যের জন্য চিৎকার করছিলো। শব্দটা গলির মধ্য থেকে আসার ফলে জ্যাক কিছুটা হলেও ভয় পাচ্ছে প্রবেশ করতে,
-->>একটা মেয়ের সাহায্য না করলে আমি নিজেকে ছেলে বলে পরিচয় কিভাবে দিবো।(জ্যাক)
জ্যাক সব ভয়কো দূরে ফেলে দিলো। গলির মধ্যে সে প্রবেশ করলো। কিছুটা ভিতরে প্রবেশ করার পরই সে একটা মেয়েকে দেখতে পেলো। মেয়েটা মাটির উপরে পরে চিৎকার করছে। জামা কাপড় দেখে ধনী পরিবারের মেয়েই মনে হচ্ছে। তার সামনে তিনজন মাক্স পরা ছেলে দাড়িয়ে আছে। যাদের চরিত্র মোটেও ভালো লাগছে না জ্যাকের।
তিনজনকে দেখে জ্যাকের মনে পরলো। এই তিনজন কালকের তিনজনই যারা জ্যাককে ছিনতাই করার চেষ্টা করেছে।
"দূর আবারো এই তিনজনের সাথে দেখা হবে।"
জ্যাক নিজের ভাগ্যটাকেই দোষ দিতে শুরু করলো। এই তিনজনের জন্য তাকে তিনবার মারা যেতে হয়েছে, যেটার প্রতিটায় বেদনাদায়ক ছিলো। আবারো যে মারা যাবে এটার কোনো সন্দেহ নাই। তবে একটা নারীকে যদি তাদের হাত থেকে না বাচিয়ে সে চলে যায় এখান থেকে, তাহলে তাকে তো কাপুরুষ বলা হবে।
জ্যাক তিনজনের পিছনে এসে দাড়ালো। মেয়েটাকে দেখে ধনী মনে হলেও আকাশের স্মৃতিতে এই মেয়ের সম্পর্কে কিছু নেই। তাই জ্যাক তাকে চিনতে পারলো না। তারপরও অচেনা মেয়েকে তাকে রক্ষা করতেই হবে। এভাবে তিনটা পশুর কাছে তো সে ফেলে রেখে যেতে পারে না একটা নিরীহ মেয়েকে। তাই হিরোর মতো এন্ট্রি নিলো জ্যাক।
-->>এই তোদের বাসায় কি মা বোন নাই?(জ্যাক)
জ্যাকের হঠাৎ তার পৃথিবীতে থাকার সময়ের একটা ডাইলগ মনে পরলো। অনেক কমন একটা ডায়লগ ছিলো, তবে বেশ জনপ্রিয় ছিলো এটা। জ্যাক সেটাকেই ব্যবহার করলো তিনজনের মনোযোগ তার দিকে দেওয়ানোর জন্য।
তিনজন হঠাৎ অন্য এক ব্যক্তির কথা শুনতে পেয়ে পিছনে তাকালো। পিছনে তাকিয়ে তিনজনেই একটা পরিচিত চেহারা দেখতে পেলো। তারা একে অপরের সাথে কথা বলতে লাগলো,
-->>বস কালকে ওর জন্যই আমরা প্রায় এরিয়া ব্যারিয়ারের বাইরে চলে যেতে ছিলাম। ও তো আবার এসেছে।
-->>বস আমার মনে হয় পাশের এরিয়ার এলিয়েন হবে এটা।
-->>বস আমি এখানে থাকবো না। আমি যাচ্ছি।
-->>বস আমিও থাকছি না এখানে।
যেটা বস তার পিছনে থাকা দুজন হঠাৎ করেই ভয়ে দৌড়িয়ে চলে গেলো সেই গলি থেকে। দুজনেই ভয় পাচ্ছে কারন তারা কালকে এই ছেলেটার জন্যই অনেক দূরে পৌছে গিয়েছিলো যেটা কখনোই হওয়ার কথা ছিলো না। বেশ কিছুদিন যাবৎ এলিয়েনের একটা গুজব শোনা যাচ্ছে, যার কারনে তারা এখানে থাকতে চাচ্ছে না।
দুজন চলে গেলেও বসটা যেতে যাচ্ছে না। কারন তার পিছনেই একটা ধনী পরিবারের মেয়ে পরে ছিলো, যার থেকে তার অর্থের অভাব হবে আর কোনোদিন। এই সুযোগ সে কোনো ভাবেই মিস করতে চাই না।
-->>কালকের জিনিসটার সাথে এই ছেলের কোনো সম্পর্কে থাকতে পারে না।
মাক্স পরা লোকটা জ্যাকের দিকে এগিয়ে গেলো তার হাতের ছুড়ি নিয়ে। পূর্বের দিন তিনজন থাকায় জ্যাকের অনেকটা সমস্যা হচ্ছিলো তাদের সাথে লড়াই করতে। কিন্তু বর্তমানে এখানে একজন থাকায় জ্যাকের একটা চান্স থাকতে পারে এখানে। জ্যাক প্রস্তুত হলো আক্রমন করার জন্য।
লোকটা তার হাতের ছুড়ি দিয়ে জ্যাকের বুকে আঘাত করতে গেলো। তবে জ্যাক তার ডান হাত দিয়ে লোকটার হাতের কব্জিতে আঘাত করে ছুড়িটা ডান সাইডে ফেলে দিলো। এবার সে তার ডান পা দিয়ে একটা লো কিক দিলো লোকটার কান বরাবর। একটা কিকের ফলে লোকটা মাটিতে পরে গেলো। কিকটা ভালোই শক্তিশালী ছিলো। যার কারনে লোকটা জ্ঞান হারালো।
জ্যাক হঠাৎ ভয় পেয়ে গেলো। যদিও এমন না যে সে পূর্বে কাউকে হত্যা করে নি, তবে একটা মানুষকে কখনো হত্যা করেছে কিনা এটা তার মনে পরছে না।
-->>মরে গেলো নাকি?(জ্যাক)
জ্যাক লোকটার হার্টবিট চেক করার চেষ্টা করলো। লোকটাকে জীবিত পেয়ে তার মনে শান্তি জেগে উঠলো। বড় একটা দম ফেললো সে।
"আমার হঠাৎ মনে হচ্ছে কালকের থেকে অনেকটা শক্তিশালী হয়েছি। এটা কি ঔ এসোসিয়েশান এর মেয়েটার কন্ট্রাকের জন্য?" ( জ্যাক ভাবছে)
জ্যাক কালকেও কয়েকটা মেরেছিলো এই তিনজনকে। তবে কিছুই হয় নি তখন তাদের, তবে আজ যে একটা কিকেই বেহুস হয়ে যাবে এটা আশা করে নি সে। যাইহোক সেদিকে সে গুরুত্ব দিলো না আর। মেয়েটা ভয়ে এখনো মাটির উপরেই পরে ছিলো। জ্যাক তার দিকে এগিয়ে গেলো। তার হাত বারিয়ে দিলো সে মেয়েটাকে উঠানোর জন্য।
মেয়েটা এতোক্ষন আরো একজন অচেনা মানুষকে দেখে ভয় পাচ্ছিলোয় তবে সে বুঝতে পেরেছে যে তাকে সাহায্য করার জন্যই ছেলেটা এসেছে। তাই জ্যাকের বারিয়ে দেওয়া হাত ধরে উঠার চেষ্টা করলো সে।
জ্যাকের হাতটা যখনি মেয়েটা স্পর্শ করলো তখনি জ্যাকের পুরো শরীরে কারেন্ট তৈরী হলো। জ্যাকের মনে হলো ১০০০ বোল্টের কারেন্ট তার শরীর দিয়ে চলে গেলো। তাই সাথে সাথেই সে মেয়েটার হাত ছেড়ে দিলো।
-->>আমি দুঃখিত।(জ্যাক)
মেয়েটা হঠাৎ বুঝতে পারলো না ছেলেটা তাকে হাত বারিয়ে দিয়ে আবার ছাড়িয়ে নিলো কেনো। তবে সে নিজেও লজ্জা পেয়েছে, তাই এবার হাত ধরার চেষ্টা না করে নিজেই উঠে পরলো এবং জামায় থাকা ময়লা মুছতে লাগলো।
-->>আপনাকে অনেক ধন্যবাদ। আপনি না থাকলে যে আমার কি হতো আমি নিজেই জানতাম না।(মেয়েটা)
মেয়েটা কৃতজ্ঞতা জানিয়ে একটা হাসি দিয়ে জ্যাককে কথাটা বললো। সে অনেকটা খুশি তাকে কেউ সাহায্য করেছে বলে। জ্যাক অন্য কিছু নিয়ে চিন্তা করলো না। সে মেয়েটাকে প্রশ্ন করলো,
-->>রাত হচ্ছে, এখন আপনি একা মেয়ে হয়ে এখানে কেনো আসছেন?(জ্যাক)
মেয়েটা মাথা নিচু করে রইলো। কোনো উত্তর না পেয়ে জ্যাক বলতে লাগলো,
-->>তারাতারি চলে যান এখান থেকে। ব্লাক মার্কেট মোটেও ভালো জায়গা না।(জ্যাক)
জ্যাক আকাশের স্মৃতি থেকে জানে ম্যাক্সিমাম চোর বাটপারের জায়গা এই ব্লাক মার্কেট। যেখানে একটা নিরীহ মেয়ের একা যাওয়া মোটেও উচিত নয়।
-->>এর পর থেকে এরকম জায়গায় একা আসবেন না।(জ্যাক)
মেয়েটা কিছুক্ষন চুপ থেকে এবার কথা বলতে শুরু করলো,
-->>আসলে আমি লা লিগায় যাচ্ছিলাম। তবে এই এরিয়া এক্সে আমার প্রথম দিন এটা। আমার গার্ডদের থেকে লুকিয়ে একটু ব্লাক মার্কেট কেমন সেটা দেখার চেষ্টা করেছিলাম, তখনি আমি হারিয়ে যায়।(মেয়েটা)
জ্যাক বুঝতে পারলো মেয়েটা আসলেই ধনী। যেহেতু গার্ডের কথা বলেছে, খুব কম মানুষই আছে যারা গার্ডের ব্যবহার করে। তার মধ্যে আকাশেরও এক সময় গার্ড ছিলো বেশ কয়েকটা। তাই জ্যাকের মাথায় ভালো একটা বুদ্ধি আসলো।
-->>আপনি আমাকে যে সাহায্য করেছেন আমি চাইলেও সেটা পরিশোধ করতে পারবো না। তবে আমার শেষ একটা সাহায্য করুন প্লিজ।(মেয়েটা)
জ্যাক নিজেই কিছু একটা বলতে চাচ্ছিলো, তবে সে চুপ হয়ে গেলো মেয়েটার কথা শুনে।
"এটাই তো আমি চাচ্ছিলাম।"
-->>দেখুন আমি ব্যস্ত আছি। একটা জব খোজার চেষ্টায় ছিলাম, তবে আপনার চিৎকারে এখানে আস্তে হয়েছে, যার জন্য মনে হচ্ছে জবটা আমি আর পাবো না।(জ্যাক)
জ্যাক একটা বুদ্ধির কাজে লাগালো। এমন হাজার হাজার বুদ্ধি তার মাথায় সব সময় কাজ করে। যেহেতু একটা রাজ্যকে সে জিরো থেকে তৈরী করেছিলো তার ওয়ার্ল্ডে তাই সামান্য টাকা ইনকাম তার জন্য বড় ব্যাপার না।
-->>ও আমি আসলেই অনেক দুঃখিত। আমার ভুলের জন্য আপনার সময় নষ্ট হয়েছে। কিন্তু আপনি আমাকে এই একটা সাহায্য করুন আমি কথা দিচ্ছি একটা ভালো জবের ব্যবস্থা করে দিবো আমি আপনার।(মেয়েটা)
জ্যাক মনে মনে এটাই চাচ্ছিলো। জব যেমনি হোক একটা বড়লোকের থেকে ভালোই বেতন পাওয়া যাবে। যেটা থেকে এই অর্ধমৃত পৃথিবীতে জ্যাকের জীবনটা কিছুটা হলেও ভালো হবে।
-->>ঠিক আছে, তবে জবের জন্য আমি আপনাকে সাহায্য করছি না। একটা মেয়েকে আমি এভাবে একা এখানে রেখে যেতে পারি না। জব তো পরেও পাওয়া যাবে।(জ্যাক)
জ্যাক হাটতে শুরু করলো লা লিগার দিকে। জ্যাকের পিছনে মেয়েটাও যেতে লাগলো। আকাশের স্মৃতি থাকায় এই এরিয়ায় কোথায় কি আছে সেটা জ্যাকের মুখস্ত। তাই তাকে জায়গা নিয়ে কোনো ঝামেলায় পড়তে হচ্ছে না। মেয়েটা অনেকটা আগ্রহে ছেলেটার দিকে তাকিয়ে আছে।
"অনেক আজব। ছেলেটা আমার দিকে একবারও তাকালো না। আমি কি ওর কাছে দেখতে এতোটাই অসুন্দর। মনে হচ্ছে এরিয়া এক্সে একজন ইন্টারেস্টিং পারশন খুজে পেয়েছি আমি।" (মেয়েটা মনে মনে ভাবতে লাগলো।)
* * *
To Be Continued
* * *
কেমন হলো জানাবেন।