[প্রথমেই বলি গল্পটা পুরো কাল্পনিক, কেউ বাস্তব কিংবা ধর্মের সাথে তুলনা করবেন না]
#ডিম্যান_কিং_সিরিজ#
#সুপ্রিম_বিয়িং#
পর্ব:০৫
লেখকঃহৃদয় বাপ্পী
.
.
.
-"হোস্ট মারা গিয়েছে।"-
-"স্কিল "ব্রিং মি ব্যাক" একটিভ হচ্ছে।"-
-"হোস্ট তার মৃত্যুর এক ঘন্টা পূর্বে পৌছে যাবেন।"-
[নোটঃ(পূর্বে বিরিং ব্যবহার করেছি, এখন থেকে ব্রিং ব্যবহার করা হবে।)]
জ্যাক তার বিছানা থেকে লাফিয়ে উঠলো। বুকের মধ্যে ধকধক করতে ছিলো তার। মারা গিয়ে এক ঘন্টা পূর্বে ফেরত আসলেও জ্যাকের যে মৃত্যু যন্ত্রনা ভোগ করতে হয়েছে। সবচেয়ে নির্মম মৃত্যুর মধ্যে একটা মৃত্যু হলো আগুনে পুরে। জ্যাকের পুরো শরীরটা আগুনে পুরেছে। যেটা আজ থেকে তার সবচেয়ে যন্ত্রনা দায়ক মৃত্যু ছিলো। জ্যাক বিছানা থেকে উঠে বসলো। সারা শরীর ঘেমে গিয়েছে তার। উঠে আবারো ছাদের কিনারায় এসে দাড়ালো।
-->>একটু পরেই আবারো আসবে তারা।(জ্যাক)
তিনজনকে জ্যাক আকাশের স্মৃতির মাধ্যমেও চিনতে পারে নি। শুধু কার্ড দেখার মাধ্যমে বুঝতে পেরেছে যে তারা এসোসিয়েশানে কাজ করে। তবে এসোসিয়েশান তার পিছনে আসবে কেনো? আর আকাশ যে মারা যাবে এবং জীবিত হবে না এটাই বা জানলো কিভাবে? জ্যাকের মাথায় বিভিন্ন চিন্তা আসতে লাগলো, তবে সে বেশীক্ষন সেটা নিয়ে ভাবতে লাগলো না।
-->>তাহলে এই ওয়ার্ল্ড আমার মতো বাকিদেরও ক্ষমতা দিয়েছে।(জ্যাক)
জ্যাক বুঝতে পারলো সে একা না যে ক্ষমতা পেয়েছে। আরো লোক রয়েছে যারা তার মতো ক্ষমতা না পেলেও স্পেশাল ক্ষমতার অধিকারী। তবে সে একটা জিনিসই বুঝতে পারছিলো না।
-->>কালো পোষাক ধারী লোকটার সাথে সম্পর্ক কি এখানে?(জ্যাক)
মেয়েটা জ্যাককে হত্যা করেছে তখনি যখনি জ্যাক সেই কালো পোষাক পরা লোকটাকে চিনতে পেরেছে। তাই সে বুঝতে পারছে না কি হচ্ছে।
জ্যাক ছাদের কিনারায় দাড়িয়ে ছিলো, এতোক্ষনে আবারো তিনজন ব্যক্তি তার দরজার লক খুলে ছাদের উপরে এসে পৌছে গেলো। সাদা কোর্ট পরিহিত এক মহিলা এবং তার পিছে কালো কোর্ট পরিহিত দুজন বডিবিল্ডার লোক।
-->>মিস্টার আকাশ চৌধুরী, আমাদের কিছু প্রশ্ন রয়েছে, অনুগ্রহ করে আমাদের সাথে কোঅপারেট করুন।(মেয়েটা বললো)
মেয়েটার আবারো একই প্রশ্ন। তার চেহারায় কোনো অনুভূতি দেখা গেলো না। মনে হচ্ছিলো জ্যাকের সামনে একটা রোবট কথা বলছিলো। জ্যাক মেয়েটাকে যতই দেখে ততই ধমকে দাড়ায়। কারন তার চেহারাটা ঠিক আফরিয়েল এর মতো। একদম সরাসরি না মিললেও অনেকটা মিল রয়েছে দুজনের চেহারায়।
-->>জ্বী বলুন।(জ্যাক)
জ্যাক এবার আর তাদেরকে রুমের মধ্যে নিয়ে গেলো না। এখানে দাড়িয়ে কথা বলানোর চেষ্টা করছিলো। সে আগের মতো পরিস্থিতে পরতে চাচ্ছে না আবার।
-->>একটু প্রাইভেটে গিয়ে কথা বললে ভালো হতো।(মেয়েটা)
মেয়েটা ছাদের ছোট্ট রুমের দিকে তাকিয়ে কথাটা বললো। জ্যাকের মাথায় হঠাৎ আলাদা একটা বুদ্ধি চলে আসলে এই পরিস্থিতি এরানোর জন্য।
-->>এখানেই বলুন, আমি কোনো মেয়ের সাথে প্রাইভেটে যায় না। কখন কে আমার হ্যান্ডসাম চেহারা দেখে কি করে ফেলে সেটা আমি নিজেও জানি না।(জ্যাক)
জ্যাকের পূর্ব চেহারা হ্যান্ডসাম না হলেও বর্তমানে আকাশ চৌধুরীর শরীরে সে আছে। এটাকেও হ্যান্ডসাম বলা যায় না। চেহারাটা দেখতে অনেকটা কিউট কিউট লাগে। যদিও জ্যাক জানে চেহারা আসল জিনিস না মেয়ে পটানোর জন্য। তাই পিক আপ লাইন মারতে শুরু করলো,
-->>আমি আবার ভদ্র ছেলে, যদিও বাবার সম্পতি হারিয়ে ফেলেছি, তারপরও পূর্বের গুনগুলো হারায় নি।(জ্যাক)
মেয়েটা কথাটা শুনে কিছুটা বিরক্ত হলো৷ তবে প্রথমেই তার বিরক্ত ভাব প্রকাশ করলো না। সে তার প্রশ্নে সোজাসোজি চলে আসলো,
-->>ঠিক আছে, আমাদের দুজনের গুরুত্বপূর্ন সময় নষ্ট না করে সোজা মেইন টপিকে আসি।(মেয়েটা)
জ্যাক হঠাৎ নিজের দম বন্ধ হওয়ার মতো অনুভব করলো। এমনটা সে প্রথম অনুভব করে নি। সামনের মানুষটা যে কিলিং ইনটেন্ট তৈরী করছে এটা সে বুঝতে পারলো। একজন ব্যক্তি খুব শক্তিশালী হলে তার শরীর থেকে বিভিন্ন ধরনের এনার্জি বের হয়। যদি সে ব্যক্তিটার কারো প্রতি ঘৃনা কিংবা হত্যা করার অনুভূতি তৈরী হয় তাহলে তার শরীর থেকে একটা এনার্জি বের হয়। এটাকে কিলিং ইনটেন্ট বলা হয়।
-->>আপনি কি এবিলিটি ইউজার?(মেয়েটা)
আবারো একই প্রশ্ন। তবে জ্যাক এবার চুপ রইলো না।
-->>এবিলিটি ইউজার?(জ্যাক)
মেয়েটা আবারো চুপ রইলো। পিছন থেকে কালো কোর্ট পরা দুজনের একজন আবারো হাত দিয়ে আগুন তৈরী করলো এবং অন্যজন অদৃশ্য হয়ে গেলো। জ্যাক যতবারই এটা দেখছে ততই অবাক হয়। কারন তার সামনে কোনো ম্যাজিক দেখানো হচ্ছে না।
-->>আকাশ চৌধুরী, কাল রাতে নিশ্চয় বেশ কিছু এসাসিন আপনাকে হত্যার চেষ্টা করেছিলো, আপনার মারা যাওয়ার কথাও ছিলো, কিন্তু আজ সকালে আপনি আমার সামনে দাড়িয়ে আছেন জীবিত।(মেয়েটা)
জ্যাক কি বলবে এখনো ভেবে পাচ্ছে না। কারন সব কিছু আবারো পূর্বের মতোই হচ্ছে।
-->>হয়তো আমি মারায় যেতাম। তবে শেষ সময়ে আকাশ থেকে একটা উজ্জ্বল আলো দেখতে পেয়েছিলাম, তারপরে কি হয়েছে আমি বলতে পারবো না। যখন চোখ খুলি তখন রাতের সময় ছিলো এবং অচেনা একটা গলির মধ্যে পরে ছিলাম।(জ্যাক)
জ্যাক আকাশের স্মৃতির মাধ্যমে বুঝতে পেরেছে, এসোসিয়েশান অনেক মারাত্মক একটা জিনিস। তাছাড়া পূর্বের সাক্ষাতে জ্যাক নিজেও সেটা বুঝতে পেরেছে। তাই খুব তারাতারি একটা মিথ্যা বলে দিলো জ্যাক। তার মিথ্যাটা একদম ন্যাচারাল ছিলো, যার কারনে মেয়েটা কোনো সন্দেহ করছে না বলে তার মনে হচ্ছে।
অন্যদিকে মেয়েটা তার চোখের চশমাটা খুলে তার হাতে নিলো। অন্য হাতে থাকা ফাইলের মধ্য থেকে একটা ছবি বের করলো। এটা পূর্বেরই হাতে আকা একটা ছবি। যেখানে কালো পোষাক পরা একজন লোক রয়েছে। মেয়েটা জ্যাকের সামনে সেটা ধরে জিজ্ঞেস করলো,
-->>এই ছবির ব্যক্তিটাকে কি চিনেন?(মেয়েটা)
জ্যাক জানে এখানে রিয়াকশন দিলেই তার জীবন শেষ হয়ে যাবে। তাই সে মেয়েটাকে বলতে লাগলো,
-->>আপনি কি মজা করছেন আমার সাথে? চেহারা ঢাকা থাকলে আমি কিভাবে তাকে চিনবো?(জ্যাক)
জ্যাক একটা লজিক বের করলো, যেহেতু পুরো শরীর কালো কাপড়ে ঢাকা, তাই তার শরীরের কোনো অংশই দেখা যাচ্ছিলো না। তাই স্বাভাবিকতই তাকে দেখে কারো চেনার কথা না। তার লজিকের কথা সে খুব স্বাভাবিক ভাবেই তুলে ধরলো।
মেয়েটা কিছুক্ষন চুপ হয়ে ভাবলো কিছু একটা। তারপর হঠাৎ বলতে লাগলো,
-->>আপনার মৃত্যুর পূর্বে.......
হঠাৎ মেয়েটা এটুকু বলেই থেমে গেলো। তার নজর আকাশের বাম হাতে থাকা একটা রিং এর উপরে চলে গেলো। রিংটা একদম স্বচ্ছ কালো রঙের। রিংটা থেকে কি রকম একটা এনার্জি বের হতে দেখা গেলো। যেটা মেয়েটাকে বিচলিত করলো।
জ্যাক এই নতুন সিন দেখে অনেকটা অবাক হলো। তার রিং এর দিকে এভাবে তাকিয়ে আছে কেনো মেয়েটা এটা সে বুঝতে পারছে না।
"এক মিনিট, আমি তো এই রিং এর মাধ্যমেই আমার স্পেশাল ক্ষমতাটা লাভ করেছি, এটা কি এই মেয়ে বুঝতে পেরেছে?" (জ্যাক মনে মনে ভাবতে লাগলো)
মেয়েটার বেশ কিছুক্ষন চুপ ছিলো, অনেক কিছু তার চিন্তায় আসছে কিন্তু সে কিছু মিলাতে পারছে না।
"না এটা কিভাবে সম্ভব? এটা এখানে ওর কাছে আসা কখনোই সম্ভব না।"
মেয়েটা আবারো একবার চেষ্টা করলো আকাশকে চেক করার জন্য। তার কাছে একটা স্পেশাল পাওয়ার রয়েছে, যেটার মাধ্যমে এই জায়গার সম্ভাব্য সকল ব্যক্তির ইনফরমেশন দেখা যায়। পাওয়ারটা ব্যবহার করলে চোখের সামনে একটা স্ক্রিনের মতো তৈরী হয় যেখানে যেকোনো ব্যক্তির সকল ইনফরমেশন চলে আসে। কিন্তু এটা কাজ করছে না আকাশের উপরে, তাই মেয়েটা অনেক চিন্তা করতে শুরু করেছে।
-->>এইটা পেয়েছেন কোথায় আপনি?(মেয়েটা)
মেয়েটার অনেক উত্তেজিত প্রশ্ন ছিলো এটা। জ্যাক বুঝতে পারলো কোনো কিছু নিয়ে এখানে সমস্যা আছে। রিং টার পরিচয় শুধু সে না, আরো একজন জানে। জ্যাক বেশী চিন্তিত না হয়ে উত্তর দিলো স্বাভাবিক। এখানে তার মিথ্যা বলারও সুযোগ নেই। যদি কিছু বলে তাহলে পিছনে থাকা আগুনের ক্ষমতা ওয়ালা লোকটা তাকে পুরিয়ে মারবে। জ্যাক সেই মৃত্যুকে আর উপভোগ করতে চাই না।
-->>কাল এটা আমি ব্লাক মার্কেটে পেয়েছিলাম। কেনো জানি রিংটা অনেক ভালো লেগেছিলো, তাই কিনে নিয়েছিলাম। ব্লাক মার্কেট থেকে বের হওয়ার পরই আমার উপরে হামলা করা হয়। আমি মৃত্যুর মুখেই ছিলাম, কিন্তু শেষ সময়ে আকাশে উজ্জ্বল আলো দেখতে পেলাম, মনে হচ্ছিলো ডানা ওয়ালা মানুষকে দেখছিলাম। তারপরে যখন চোখ খুললাম আমি নিজেকে জীবিত পেয়েছি অচেনা একটা গলিতে।(জ্যাক)
জ্যাক খুব সুন্দর করে কথাটা বললো। মিথ্যা হলেও বেশ কিছু জিনিস সত্য ছিলো। আকাশের শরীরে প্রবেশের পূর্বে আকাশ একবার ব্লাক মার্কেটে গিয়েছিলো এবং তারপরই তার হত্যা হয়। যেটা আকাশের স্মৃতির মাধ্যমে ক্লিয়ার ভাবে জ্যাক জানতে পেরেছে। তাই একটি সাজিয়ে সুন্দর করে সে বলে দিলো।
রিং টাকে নিয়ে এতো উত্তেজিত হবে মেয়েটা এটা জ্যাক কখনো আশা করে নি। কিন্তু কিছু জিজ্ঞাসা করবে সে সাহসও পাচ্ছে না। তাই চুপচাপ রয়েছে জ্যাক।
"আমার পূর্বের ক্ষমতাগুলো থাকলে এভাবে লজ্জাজনক একটা পরিস্থিতিতে পরতে হতো না কখনো।"
জ্যাক তার পূর্বের সময়ের কথা মনে করতে লাগলো, কতই না ভালো ছিলো যখন সে সবার শীর্ষে পৌছে গিয়েছিলো, থর এবং ড্রাকুলাও তার কাছে কিছুই ছিলো না। তবে এবার তার কাছে কিছুই নেই। মৃত্যু থেকে আবার জীবিত হওয়ার ক্ষমতা থাকলেও তার কাছে আক্রমনের কোনো ক্ষমতা নেই। শারিরীক দিক দিয়ে সে একজন মানুষ। যদি শক্তির দিক দিয়ে বিবেচনা করা যায় তাহলে মানুষ সবচেয়ে দুর্বল প্রানী বাকি প্রানীদের তুলনায়। তবে বুদ্ধির দিক দিয়ে মানুষ শ্রেষ্ঠতম জীব। তাই আপাতোতো জ্যাককে বেঁচে থাকতে হলে তার মাথার ব্যবহার করতে হবে।
মেয়েটা হঠাৎ তার মনোযোগ আকাশের দিলে দিলো। সে হাত দিয়ে একটা চুটকি বাজালো এবং একটা শব্দ বললো,
-->>"বুকপেইজ"।(এরিয়েল)
মেয়েটার কথাটা বলার সাথে সাথে জ্যাক এবং মেয়েটার মাঝে উজ্জ্বল আলো জ্বলে উঠতে লাগলো। হঠাৎ তাদেী আশে পাশ চেন্জ হয়ে যেতে লাগলো। চারিদিক অন্ধকার হয়ে গেলো। শুধু নিচের ফ্লোর দেখা যাচ্ছিলো।
-->>ওয়েট, এটা তো ফ্লোর নয়?(জ্যাক)
জ্যাক বুঝতে পেরেছে তারা কিসের উপরে দাড়িয়ে আছে। বিশাল একটা বই যেটা তাদের প্লাটফর্মের কাজ করছে। দুজনে বইয়ের পাতার উপরে দাড়িয়ে আছে। বইয়ে বিভিন্ন কিছু লেখা রয়েছে তবে সেদিকে জ্যাক নজর দিলো না। মেয়েটা এবার বলতে লাগলো,
-->>ওয়েলকাম টু মাই বুকপেইজ। আমার নাম এরিয়েল এবং এটা আমার লেখা গল্প।(মেয়েটা)
মেয়েটা কি বললো সেটার কানাকোনাও জ্যাকের মাথায় ঢুকলো না। তাই সে হাবার মতো তাকিয়ে রইলো। মেয়েটা সাথে সাথে একটা কাগজ বের করলো তার হাতে থাকা ফাইলে থেকে এবং সেটা জ্যাকের দিকে এগিয়ে দিলো। সেখানে লেখা ছিলো,
"বিকাম এ হিরো অফ দিস ব্রোকেন ওয়ার্ল্ড"
"হ্যা/না"
-->>তো মিস্টার আকাশ চৌধুরী, আপনি কন্ট্রাকে সাইন করবেন নাকি আমার এই বুকপেইজের মধ্যে চিরকাল বন্ধী থাকবেন।
মেয়েটা একটা হাসির মাধ্যমে কথাটা বললো হাসিটা এতো সুন্দর ছিলো যে সে কি বললো সেটা না শোনা জ্যাক শুধু মেয়েটার দিকেই তাকিয়ে রইলো।
* * *
To Be Continue
* * *
কেমন হলো জানাবেন। কোথাও ভুল ত্রুটি হলে ইনবক্সে জানাতে পারেন।