[গল্পটা পুরো কাল্পনিক, বাস্তবের সাথে এর কোনো সম্পর্ক নেই।]
#Demon_King#
লেখকঃ হৃদয় বাপ্পী
পর্বঃ১৭
।
।
আজ চতুর্থ দিন টেস্টের। সব টিমই ডিমনিক ফরেস্টের সাথে সুন্দর সম্পর্ক তৈরী করতে পেরেছে। প্রথম জোনের সব ডিমনিক বিস্ট খুব সহজেই সবাই শিকার করতে পারছিলো। প্রথম জোন বড় হলেও বাকি জোন গুলোর তুলনায় এটার আকার তেমন বড় না। আর বেশী ডিমনিক বিস্টের বসবাসও না এই জোনের মধ্যে। তাই সবার গন্তব্য দ্বিতীয় জোনের দিকে। ডিমনিক বিস্ট শিকার করা অনেকটা নেশার মতো। যেটা নোবেলদের খুবই পছন্দের। একবার একটা দুর্বল ডিমনিক বিস্ট হত্যা করলে এই নেশাটা কাটানো অনেক কষ্টের হয়ে যায়। ঠিক তেমনি প্রতিটা টিমের নোবেলরা ডিমনিক বিস্ট খোজার চেষ্টায় আছে। নোবেল ছেলেমেয়েদের কথাবার্তা এরকম,
-->>দ্বিতীয় জোনে যাওয়ার পূর্বে আমাদের প্রথম জোনের সব বিস্ট হত্যা করে যাওয়া উচিত।
-->>কমনারদের শুধু শুধুই আমাদের সাথে আনা হয়েছে। তাদের সাথে আমাদের কিভাবে একত্র রাখে একাডেমি আমি বুঝতে পারি না।
-->>ডিমনিক বিস্ট দেখে সকল কমনারই ভয়ে কাপছে এদের কেনো যে একাডেমিতে প্রবেশ করানো হয়েছে আমি জানি না।
-->>আমি তো একটা ডিমনিক বিস্টও তাদের হত্যা করতে দিবো না।
-->>সেই লাইটনিং এবং ফায়ার এট্রিবিউট আনলক করা ছেলেটাকে আমি মিস করতেছি। যদিও সে কমনার তারপরও তার সাথে আমার জুড়ি ভালোই মানাবে।
সকল টিমের নোবেল ছেলে মেয়েদের কথা বার্তা বেশিরভাগই কমনারদের বিরুদ্ধ নিয়ে। তারা কমনারদের দেখতে পারে না। কমনারদের ছোট করে দেখার দুটো কারনের মধ্যে একটা তারা দুর্বল এবং অন্যটা তারা অর্থহীন। তবে এই দুটো কারনের মধ্যে একটা যদি কোনো কমনার পেয়ে থাকে, তাহলে সমাজে তার সম্মানের অভাব নেই। যার উধাহরন এবারের দুটো শক্তিশালী এট্রিবিউট আনলক করা কমনার ছেলে।
সব টিমেই কমবেশী নোবেল এবং কমনারের মধ্যে বৈষম্য রয়েছে। শুধু একটা টিমই এমন যেখানে কমনার কিংবা নোবেল নিয়ে কেউ গুরুত্ব দেই না। লিডার চেইনের টিম। এই টিমের মধ্যে শুধু এলেক্সই একজন কমনার। বাকি সবাই নোবেল। একজন তো ডিউকের কন্যা। ডুফেস এবং জেয়াব যদিও তাদের ক্ষমতা নিয়ে বরাই করে, তারাও এলেক্সের পরিচয় সম্পর্কে কিছু বলে না। মূলত এটা দশ টিমের মধ্যে সবচেয়ে ব্যালেন্স একটা দল।
* * *
আজ চতুর্থ দিন যেখানে বাকি সবাই দ্বিতীয় জোনের দিকে যাচ্ছে, সেখানে চেইনের টিম খাদ্য সংগ্রহে ব্যস্ত। গাছের ফল থেকে শুরু করে নদীর মাছ যা কিছু পাচ্ছে সব কিছুই চেইনের আদেশে সংগ্রহ করছে পুরো টিম।
-->>আমাদের কি প্রয়োজন এখনি খাবার সংগ্রহ করার। একাডেমি থেকে দেওয়া খাবার তো এখনো শেষই হয় নি।
ডুফেস বিরক্ত হয়ে বলতে লাগলো। ডুফেস, এলেক্স, জেয়াব, মাইরা এবং স্নিরা এসেছে ফল সংগ্রহ করতে। গাছে এলেক্স ছাড়া কেউ উঠতে না পারায়, সবাই নিচে দাড়িয়ে গাছ থেকে এলেক্সের পেরে দেওয়া ফল সংগ্রহ ছাড়া কোনো কাছ ছিলো না। টিমের বাকিরা নদীতে মাছ ধরার চেষ্টায় আছে। ডুফেস খুব বিরক্ত হয়ে তার হাতে থাকা চার পাঁচটা আপেল ফল ছুড়ে ফেলে দিলো মাটিতে।
-->>বাকি টিম তো আমাদের পূর্বেই দ্বিতীয় জোনে চলে যাচ্ছে। আর আমরা এখানে আমাদের সময় নষ্ট করছি। খাবার তো আমরা দ্বিতীয় জোনে গিয়েও সংগ্রহ করতে পারতাম।
ডুফেস আবারো রাগে বলতে লাগলো। তার কথায় স্নিরা এবং জেয়াবও সায় দিলো। তাদেরও বিরক্ত লাগছে এভাবে সময় নষ্ট করার জন্য। তবে মাইরা উত্তর দিতে লাগলো,
-->>আমরা আমাদের মাথা ব্যবহার করছি না এখানে। আমি আমাদের লিডারের সিদ্ধান্তকেই সঠিক মনে করছি।
-->>কিন্তু এতে তো আমরা পিছিয়ে পরবো বাকিদের থেকে।(ডুফেসের জবাব)
-->>একাডেমি থেকে আমাদেরকে সাতদিনের খাবার দেওয়া হয়েছে। আমরা যদি একটু ভাবি তাহলেই বুঝতে পারবো যে এটা কেনো দেওয়া হয়েছে। প্রথম জোন থেকে দ্বিতীয় জোনের পথ মোট সাতদিনের। আর খাবারের ব্যবস্থাও সাতদিনের। অনেকেই ভাববে যে সাতদিনের খাবার শেষ হলে দ্বিতীয় জোন থেকে সেগুলো সংগ্রহ করে নিবে।(মাইরা)
মাইরা খুব সাধারন একটা ব্যাখ্যা দিলো। তার কথায় হঠাৎ এবার স্নিরা বলে উঠলো,
-->>সেটা করলেই তো ভালো হতো।(স্নিরা)
-->>কিন্তু আমরা একটা জায়গায় ভুল করছি। হান্টারদের মতে প্রথম জোনের সকল খাবারই নিরাপদ শুধু ডিমনিক বিস্ট বাদে। কিন্তু দ্বিতীয় জোন থেকে সেটা পুরো বদলে যায়। দ্বিতীয় জোনের খাবার বেশীরভাগই বিশুদ্ধ না। যেটা খেলে আমাদের মৃত্যুও হতে পারে।
মাইরার কথা শুনে সবাই চুপ হয়ে গেলো। সবাই তাদের গলার ঢোক গিলে আবারো ফল সংগ্রহে মনোযোগী হলো। এলেক্স গাছের উপরে থাকায় সে এগুলো শুনতে পায় নি। সে কোনো চিন্তা ছাড়ায় গাছের আপেল গুলো ছুড়ে নিচে ফেলে দিচ্ছে। এখানে সে চাইলেই তার স্কিল ব্যবহার করে পুরো গাছের আপেল পারতে পারবে। কিন্তু এলেক্স সবার সামনে নিজের ক্ষমতাকে তুলে ধরতে চাই না।
"আমার সকল স্কিল এই রিং অফ বিলজবাব এর মাধ্যমে আমার হচ্ছে। যেহেতু এটাও একটা ম্যাজিকাল আইটেম তাই আমি কাউকে জানাতে চাই না যে আমার কাছে শক্তিশালী কোনো ম্যাজিকাল আইটেম রয়েছে।"
এলেক্স একটু জোড়ে দম ছাড়লো এবং আবারো আপেল ছিড়তে ব্যস্ত হয়ে গেলো। অন্যদিকে চেইন, এবা, মিও এবং লুবা নদীর তীরে মাছ ধরতে ব্যস্ত। চেইন যত ভালো লিডারই হোক না কেনো। তার একটা দুর্বলতা, সেটা হলো লুবা। পাঁচ বছর হয়ে যায় সে লুবাকে পছন্দ করে। কিন্তু আজও বলার সাহস হয় নি তার। এই টেস্টে যখন সে জানতে পারে তার টিমে লিবা থাকবে তখন তার খুশি দেখে কে। মূলত ডুফেস এবং জেয়াবের কথা ছিলো মাছ ধরার। কিন্তু চেইন লুবাকে ইমপ্রেস করার জন্য তাদেরকে ফল আনার জন্য পাঠিয়েছে। দুই অংশের দূরত্ব বেশী না। একটা ছোট খাল রয়েছে যেটার তীরে চেইন নেমে মাছ ধরছে এবং বাকি তিনজন কিনারায় থেকে সে মাছ সংগ্রহ করছে। খালটার পাশেই বেশ কিছু ফলের গাছ যেখানেই এলেক্স এবং বাকিরা ফল সংগ্রহ করছে। তাই তাদের আপাতোতো ডিমনিক বিস্টের কোনো ভয় নেই। চেইন হাটু পানিতে দাড়িয়ে আছে। নিচে ছোট ছোট সাদা টুকরো পাথর থাকায় পুরোটা স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে। চেইন দেখে দেখে বড় বড় মাছই ধরার চেষ্টায় আছে। কিন্তু এখনো কোনো বড় মাছ তার হাতে পরে নি।
-->>একটা বড় মাছ তো অন্তত আমার হাতের কাছে আয়। লুবা আমার দিকে তাকিয়ে আছে। আমি তো আমার দুর্বলতা দেখাতে পারি না। আর তাছাড়াও আরো দুজন মেয়ে আছে যারা আমার দিকেই তাকিয়ে আছে। আমাকে বড় একটা মাছ ধরতেই হবে।(চেইন খুব ধীরে ধীরে বললো কথাটা)
চেইন মাছের দিকে তাকিয়ে ছিলো। একটা বিশাল মাছ। যেটা তার হাতে পরার জন্য রেডি হয়ে ছিলো। সে ঝাপিয়ে পরবে কিন্তু তখনি,
"ঝাপ্"
পানিতে হাতি পরার মতো একটা শব্দ হলো। চেইনের নজর মাছের দিক থেকে একবার সরে শব্দের দিকে চলে গেলো। আবারো যখন মাছের দিকে নজর পরলো তখন সেটাকে সে আর দেখতে পেলো না।
"আমার হিরো হওয়া আর হলো না।"
চেইন মনে মনে চিন্তা করলো। সে এবার বিরক্তকর একটা চেহারা বানিয়ে ডুফেসকে বলতে লাগলো,
-->>তোমার জন্য বড় একটা মাছ ধরতে পারলাম না৷
-->>আমি দুঃখিত তবে আমার ভুল ছিলো না এখানে। এলেক্স ফল ছেড়ার সময় একটা মৌমাছির বাসায় হাত দিয়েছিলো। আমি নিচে থাকায় মৌমাছির কিছুটা মধূ আমার মাথায় পরে। আর ব্যাস আমাকে দৌড় দিতে হলো।
এই ফরেস্টের মৌমাছি সাধারন মৌমাছি নয়। এই মৌমাছির মধূর ঘ্রাণ যাদের শরীরেই থাকবে তাদেরকেই মৌমাছি আক্রমন করবে। ডুফেস এটা জানতো না। তবে মাইরা যখনি একটা তাকে বলে কোনো উপায় না দেখে ডুফেস সোজাসোজি পানিতে ঝাপ দেই। তার সুন্দর ত্বক তার অনেক পছন্দ। সে চাই না কোনো মৌমাছির আদরে সেটা আরো মোটা হোক।
-->>এলেক্সের কি হয়েছে?(মিও)
মিও কিনারা থেকে প্রশ্ন করলো, তার উত্তরের জবাবে ডুফেস বলতে লাগলো,
-->>আমি ওকে দেখি নি গাছের উপরে থাকায়। যেহেতু ও হাত দিয়েছে তাই আমার মনে হচ্ছে কিছু একটা হয়েছে। ও আমার পিছনে কিছু একটা রয়েছে মনে হচ্ছে।
ডুফেস একটা জিনিসের উপরে বেসেছে। সেটা নারাচরা দেওয়ায় তার সুরসুরি হচ্ছিলো। তাই হাত দিয়ে ধরার চেষ্টা করলো সেটাকে। একটা বড় সিলভার ফিস তার হাতে পরলো। চেইন হা করে তাকিয়ে রইলো। এই দুই ফুট সাইজের সিলভার ফিস ধরার জন্য সে অনেকক্ষন ধরে চেষ্টা করছে। কিন্তু ডুফেসের ভারী শরীরের নিচে সেটা খুব দুঃখজনক ভাবে চাপা পরে আছে দেখে তার আত্মহত্যা করতে মন চাচ্ছে। তারপরও সে আপাতোতো এলেক্সের খোজ নেওয়ার কথা ভুলে গেলো। সিলভার ফিসের দিকে তার নজর গেলো। কারন ডুফেস এখনো বসে আছে সেটার উপরে। একবার উঠলে নিজের শক্তিতে ধরতে পারবে না সেটাকে। তাই সেও ডুফেসের সাহায্যে এগিয়ে আসলো।
অন্যদিকে এলেক্স মৌমাছির চাকে হাত দিয়েছে। মূলত অজান্তে না। ইচ্ছা করেই সে হাত দিয়েছে। মধূ খাওয়ার অনেকটা লোভ তার হচ্ছিলো। তার ওয়ার্ল্ড পৃথিবীতে মধূ অনেকটা লোভনীয় পানীয়। যেটার লোভ কারোই সহ্য হয় না। কিন্তু কয়েক ফোটা মধূ নিচে পরায় ডুফেস দৌড়ে গিয়ে হাতির মতো ঝাপ দেই পানিতে। এলেক্সও ভয়ে গাছ থেকে ঝাপ দেই। কারন মৌমাছি তার উপরে হামলা করার চেষ্টায় ছিলো। উপর থেকে সে কোথায় পরবে সেটা ঠিক করতে পারছিলো না। নিচে জেয়াব সরে গিয়েছে মৌমাছির কথা শুনেই। শুধু মাইরা আর স্নিরাই উপরে এলেক্সের দিকে তাকিয়ে দেখার চেষ্টা করছে সে ঠিক আছে কিনা। এলেক্স তাদের সরে যাওয়ার পূর্বেই সরাসরি স্নিরা এবং মাইরার উপরেই পরে। মাইরা এবং স্নিরা দুজন এলেক্সের হঠাৎ আগমন দেখতে পারে নি ভালো ভাবে। তাই তারা কিছু করতে পারে নি।
"ধপাস"
একটা শব্দ হলো। স্নিরা এবং মাইরা দুজনে নিচে পরে গেলো। এলেক্স চিৎ হয়ে পরছিলো। তবে শেষ সময়ে স্নিরা এবং মাইরা সরতে না পারায় এলেক্সকে ধরার চেষ্টায় করেছে। এতে করে তিনজনের ব্যথা একটু কমই লেগেছে। এলেক্স কি হয়েছে বুঝতে না পেরে কিছুটা হ্যাং হয়ে রইলো। দুটো মেয়েকে বিছানা বানিয়ে চিৎ হয়ে শুয়ে থাকা কোনো স্বাভাবিক বিষয় না। তাই তার ব্রেইন কিছুক্ষনের জন্য কাজ করা বন্ধ করে দিলো।
-->>উহুম।
এলেক্স মাইরার কাশির শব্দে স্বাভাবিক হলো এবং লজ্জায় উঠে গেলো। সে লজ্জা পেয়ে মাথাটা নিচু করে রাখলো। বাকি দুজনও লজ্জায় কোনো কথা বলছে না। তখনি স্নিরা তার হিলিং স্পেল ব্যবহার করতে লাগলো।
-->>"হিল"
প্রান এনার্জি ইউজারদের স্পেল মানা এনার্জি ইউজারদের তুলনায় অনেক ভিন্ন। আর তাছাড়াও স্নিরা অনেক ট্যালেন্টেড একজন নোবেল কন্যা। তাই তিনজনের শরীরের ছোটখাটো সব ব্যথা এবং ক্ষত সাথে সাথেই দূর হয়ে গেলো।
* *
To Be Continue
* *
কেমন হলো জানাবেন।