[গল্পটা পুরো কাল্পনিক, বাস্তবের সাথে এর কোনো সম্পর্ক নেই।]
#Demon_King#
লেখকঃ হৃদয় বাপ্পী
পর্বঃ১৮
।
।
আজ ছয়দিন টেস্ট শুরু হয়েছে। এই ছয়দিনে বাকি টিমগুলো দ্বিতীয় জোনের খুব কাছে পৌছে গেছে। শুধু চেইনের টিমই সবার পিছনে। তারা গত দুইদিন শুধু খাবার সংগ্রহের উপরে নিজেদের নজর রাখায় পুরো টেস্ট শেষ করার মতো খাবার তাদের কাছে সংগ্রহিত হয়েছে। তাই তাদের খাবারের চিন্তা করতে হবে না আর। বাকি টিমের মতো চেইনের টিমও সরসরি দ্বিতীয় জোনের দিকে যাচ্ছে। তারা আর সময় নষ্ট করতে চাই না প্রথম জোনেই।
-->>আমাদের একটু তারাতারি করতে হবে। যেহেতু আমরা দুই দিন পিছিয়ে আছি সবার থেকে। তাই আজ রাতেও আমাদের এগোতে হবে। মাইরা এবং এবা এর লাইট ম্যাজিকের মাধ্যমে রাতে আমাদের কোনো সমস্যা হবে না।(চেইন)
চেইন হঠাৎ তার প্লানের কথা বলতে লাগলো। চেইন চাচ্ছে যে দ্বিতীয় জোনের ভিতরেই অন্য একটা কিংবা একাধিক টিমের সাথে সাক্ষাত করতে। এর ফলে তার টিমের জন্য ভালো হবে। তৃতীয় জোনে শক্তিশালী ডিমনিক বিস্ট চেইনের দল সহজেই এড়াতে পারবে। কিন্তু সমস্যা সেখানে নয়। যদি কোনো হাইব্রিড তৃতীয় জোনে তাদের সামনে চলে আসে তখন বিষয়টা অনেক কষ্টকর হবে। যদিও চেইন এবং লুবা টাওয়ার থেকে এসেছে, তারপরও তাদের জন্যও তৃতীয় জোনের হাইব্রিড বেশীই শক্তিশালী হয়ে যায়।
চেইন সবার সামনে হাটছে। তার বাম হাতে একটা ছোট ম্যাপ এবং ডান হাতে একটা লং সোর্ড। সোর্ড দিয়ে সে প্রতিটা গাছের বুকে আঘাত মেরে নিশানা বানাচ্ছে। এটা মূলত করা হয় যাতে ডিমনিক ফরেস্টে কেউ হারিয়ে না যায়। সবাইকে ইউনিক কিছু নিশানা বানাতে হয়, নাহলে অন্যের নিশানা দেখে ভুল করে রাস্তা হারিয়ে ফেলে অনেকেই। চেইন টাওয়ারে দুটো ডানজ্যান(Dungeon বা অন্ধকূপ) রেইডে অংশ নিয়েছিলো তাই এই টুকটাক জিনিস সে শিখতে পেরেছে।
-->>আমাদের লিডার আসলেই অনেক কুল।(ডুফেস হঠাৎ বলতে শুরু করলো)
প্রথমে চেইন হাটছে। মাঝে সকল মেয়েরা আর পিছনে তিন ছেলে। সবাই সময় কাটানোর জন্য গল্প করছে। কিন্তু শুধু চেইনই মনোযোগ দিয়ে কোনো কথা ছাড়া তার কাজ করছে। যেটা ডুফেসকে অনেক ইন্সপায়ার করছে।
-->>আমার তো মনে হয় বাকি টিমগুলোর লিডারও এমন। কারন সবাই তো টাওয়ার থেকে এসেছে। টাওয়ারে ঢুকলে তো সবাই কুল হয়ে যায়।(জেয়াব)
জেয়াব ডুফেসের কথায় উত্তর দিলো। ডুফেস তার ভারী শরীর নিয়ে কিছুটা লাফিয়ে উঠলো। সে রেগে জেয়াবকে বলতে লাগলো,
-->>আমাদের টিম লিডার বাকিদের থেকে বেশী শক্তিশালী এবং বেশী কুল। আমিও টাওয়ারে প্রবেশ করলে এমনি হতে পারবো।
জেয়াব জানে ডুফেসের সাথে তর্ক করে সে পারবে না। তাই সে তর্ক আগালো না। কিন্তু এলেক্সের দিকে তাকিয়ে সে বলতে লাগলো,
-->>এলেক্স টেস্টে পাশ করার পর তো আমরা টাওয়ারে প্রবেশের সুযোগ পাবো। কি করবে তুমি টাওয়ারে প্রবেশের পর?
এলেক্স মনোযোগ দিয়ে দুজনের তর্ক শুনছিলো। তখনি হঠাৎ জেয়াবের প্রশ্নে সে ভাবতে লাগলো,
"কি করবো আমি? আমাকে শীঘ্রই পৃথিবীতে পৌছাতে হবে। আর সেটার জন্য আমাকে গ্লাটোনি টাওয়ারের উপরের ফ্লোরে উঠতে হবে। কিন্তু এটা তোআর আমি তাদের বলতে পারবো না।"
এলেক্সের ভাবনা তার মধ্যেই রইলো। সে বলতে শুরু করলো,
-->>টাওয়ারে সবাই প্রবেশ করে শক্তিশালী হওয়ার জন্য। আমিও এখানে ব্যতিক্রম নয়।
-->>হাহাহাহাহা।
এলেক্সের কথা শুনে ডুফেস হেসে উঠলো। তার হাসিটা এজন্য না যে এলেক্স কোনো জোক্স বলেছে। বরং সে হাসছে এটার জন্য যে এলেক্স ডার্ক এট্রিবিউট নিয়ে শক্তিশালী হবে।
-->>হাসছো কেনো ডুফেস?(জেয়াবের প্রশ্ন)
-->>অবশ্য এলেক্সের এই স্বপ্ন অসম্ভব কিছু না। তবে এটা পূরন করতে হলে টাওয়ারের টেস্ট নেওয়ার পূর্বে তোমাকে আরেকটা এট্রিবিউট আনলক করতে হবে। ফায়ার কিংবা লাইটনিং হলে তো কথায় নাই।(ডুফেস বুক ফুলিয়ে বলতে লাগলো)
এলেক্স ডুফেসের কথা শুনলো। তার মন খারাপ না। সে জানে তার ডার্ক এট্রিবিউট অন্যগুলোর মতোই এখন। কারন সে তার স্পেল চান্টিং করতে পারে সঠিক ভাবে এখন। এট্রিবিউট ছাড়াও এলেক্সের স্কিল রয়েছে। যেটার জন্য তার অন্যের কোনো কথায় মন খারাপ করতে হয় না।
-->>সব কিছু সময় হলেই হবে।(এলেক্স)
ডুফেস এবং জেয়াব হঠাৎ কেনো জানি থেমে গেলো। এলেক্স তাদের রেখেই সামনে চলে গেলো। দুজন হঠাৎ কিছু সময়ের জন্য একটা অন্ধকারে নিজেদেরকে খুজে পেয়েছিলো। ঘন অন্ধকার, যেটা তাদেরকে খেয়ে ফেলতে চাচ্ছিলো। এলেক্স তাদের থেকে দূরে চলে যাওয়ার পরেই ডুফেস এবং জেয়াব আবারো সাধারন হয়ে গেলো। কিন্তু দুজনেই কাপছিলো ভয়ে। ভয়টা অন্যদের না দেখানোর জন্য তারাও স্বাভাবিক ভাবে হাটা শুরু করলো।
* * * *
কোনো এক অজানা জায়গায় এক ব্যক্তি আকাশে উড়ছে। শরীর কালো কাপড়ে ঢাকা। বাতাসের সাথে তার কাপড়ের প্রতিটা অংশ নারা খাচ্ছে। রাতের অন্ধকারে তার হুডে ঢাকা চেহারা দেখা যাচ্ছে না। শরীরের কোনো অংশই কালো কাপড়ের জন্য দেখা যাচ্ছে না। মিলিটারী স্টাইলে আরামে দাড়িয়ে সে আকাশে সামনের দিকে শুয়ে উড়ছিলো। সে হঠাৎ থামলো। আকাশে একটা জায়গায় সে ভাসতে লাগলো। সে কিছুটা সতর্ক হলো। কিছুক্ষন যাবৎ সে লক্ষ করেছে তাকে কয়েকজন ফলো করছিলো। যাদের এনার্জি অনেকটায় শক্তিশালী।
-->>এভাবে একা একজনকে দশজন মিলে ফলো করাটা কিন্তু ঠিক না।
কালো ব্যক্তিটা বলতে দেরী হলো কিন্তু তার চারপাশ দিয়ে দশজন লোক বের হতে সময় লাগলো না। হঠাৎ হাওয়ার মধ্যে থেকে তারা এমন ভাবে বের হলো যেটা দেখে মনে হবে যে তারা এতোক্ষন অদৃশ্য ছিলো।
-->>রুল অফ স্পেস। এমন পৌরাণিক একটা জায়গায় আমি রুল অফ স্পেস ব্যবহার কারীদের দেখা পাবো, এটা কখনো আশা করি নি।
লোকটা অবাক হলো কিছুক্ষনের জন্য। তার চারিদিক দিয়ে দশজন লোক দাড়িয়ে আছে। যাদের সবার শরীরে সাইনিং আর্মার রয়েছে। যেগুলো রাতের অন্ধকারেও উজ্জল আলো দিচ্ছিলো। প্রতিজনের হাতেই একটা করে সাইনিং সোর্ড রয়েছে, যেগুলো থেকে লাইট বের হচ্ছে। দশজনের লিডার যে সে বলে উঠতে লাগলো,
-->>পাঁচ বছর খোজার পর আজ আমাদের হাতে এসেছে দ্যা ব্লাক ম্যান। এ.কে.কে দ্যা উইশ ম্যাকার। চুপচাপ আমাদের সাথে আসো নাহলে আমাদের কাছে তোমাকে হত্যার অর্ডার রয়েছে।
দশজনের শরীর থেকে মারাত্মক আকারের এনার্জি বের হচ্ছিলো। যেটা কোনো স্বাভাবিক বিষয় না। কিন্তু সবচেয়ে বেশী এনার্জি বের হচ্ছিলো মাত্র কথা বলা তাদের লিডারের শরীর থেকে। কালো লোকটা কিছুটা নিরব রইলো। বেশ কিছুক্ষন তাদের মধ্যে নীরবতা থাকার পরে উইশ ম্যাকার বলতে শুরু করলো,
-->>তাহলে রুলার অফ স্পেস আমাকে মৃত চাচ্ছে।
কালো লোকটার কথা শুনেই দশজনের লিডার অবাক হলো। সে ভাবতে লাগলো,
"আমাদের দেখেই আমাদের মাস্টার কে সেটা জানতে পারে এমন ওয়ার্ল্ডে কয়জনই বা আছে? মাস্টার এই লোকটার পরিচয় সম্পর্কে আগ্রহী। জীবিত কিংবা মৃত একভাবে তাকে দেখতে চাই মাস্টার। আমি শুনেছি কিছু বেছে নেওয়া লোকদের তিনটা ইচ্ছা পূরন করে এই উইশ ম্যাকার। কিন্তু আমি তার শরীরে একটুও এনার্জি অনুভব করতে পারছি না। একদম মনে হচ্ছে আমার মাস্টারের মতো। আমরা কি আদৌও মাস্টারের হুকুম মানতে পারবো?"
দশজন লোক যারা সাইনিং আর্মারে দাড়িয়ে আছে আকাশে কালো লোকটাকে ঘিরে সবাই কিছু ক্ষনের জন্য নীরব রইলো। তখন আবারো কালো লোকটা নীরবতা ভাঙলো,
-->>আমি জানি না আমাকে কিভাবে খুজে বের করেছো। কিন্তু আমি উপদেশ দিবো তোমরা সরে যাও। কারন রুলার অফ স্পেস নিজেও আমার প্রতিদন্ধী নয়।
লোকটার কথা শুনে দশজনের মুখেই হঠাৎ ভয়ের ছাপ দেখা গেলো। কারন এতোক্ষন লোকটার শরীর থেকে এনার্জি বের না হলেও এখন কালো এক ধরনের এনার্জিতে পুরো আকাশ ঢেকে গেছে। দশজনের লিডার বলে উঠলো,
-->>আমরা নাইট অফ স্পেস। আমাদের মাস্টারের আদেশের বাইরে আমরা কখনো যায় না।
দশজন ভয় পেলেও তাদের স্প্রিরিট হারিয়ে গেলো না। সবাই লড়াই এর জন্য প্রস্তুত হলো। কিন্তু তখনি আকাশ থেকে উজ্জ্বল আলো দেখা গেলো। তাদের উপর থেকেই একটা স্পেস গেইট তৈরী হয়েছে। যেটা থেকে পাঁচজন লোক বের হলো। তিনজন ছেলে দুজন মেয়ে। সাইনিং আর্মার পরা দশজনের চেহারায় হাসি ফুটে উঠলো। কারন তাদের সামনে আসা পাঁচজনের একজন তাদের মাস্টার রুলার অফ স্পেস। পাঁচজনের শরীর থেকেই উজ্জ্বল আলো বের হচ্ছিলো। যেটা তাদেরকে সাধারন ব্যক্তির থেকে আলাদা করছে। উইশ ম্যাকার তাদের দেখেই বলতে লাগলো,
-->>এটা অনেক রেয়ার একটা মুহুর্ত যেখানে আমি পাঁচটা রুলারকে একসাথে দেখতে পাচ্ছি। রুলার অফ স্পেস, রুলার অফ ফায়ার, রুলার অফ ওয়াটার, রুলার অফ ফরেস্ট, রুলার অফ পয়জন।
উইশ ম্যাকারের কথায় পাঁচজনই অবাক হলো। কারন সে তাদের পরিচয় জানলেও তারা উইশ ম্যাকারের অরিজিন সম্পর্কে কিছুই জানে না।
-->>উইশ ম্যাকার। আমরা জানি না কে তুমি? কিন্তু কিং অফ ডেসটিনি আমাদের আদেশ দিয়েছে তোমার অরিজিন সম্পর্কে জানার। সেটার জন্য তোমাকে আমাদের বন্ধী করতে হবে। আমরা চাইবো ভালোই ভালোই নিজেকে আত্মসমর্পণ করো আমাদের কাছে।
রুলার অফ ফায়ার তার কথাটা বলে ফেললো। পিছন থেকে রুলার অফ স্পেস তার দশ নাইটকে বলতে লাগলো,
-->>তোমরা এখান থেকে অনেকটা দূরে সরে যাও। এখানে এখন ভয়ানক একটা লড়াই শুরু হতে পারে।(রুলার অফ স্পেস)
তাদের মাস্টারের আদেশ শুনে সাথে সাথে তারা সরে গেলো সেখান থেকে। যদিও তারাও লড়তে চাচ্ছিলো। কিন্তু যেখানে পাঁচ রুলার একসাথে এসেছে সেখানে তাদের থাকা উচিত হবে না। তারা সরে গেলো অনেকটা দূরত্বে।
-->>আমি কোনো ঝামেলা চাচ্ছিলাম না। কিন্তু মনে হচ্ছে কিছু রুলার তাদের জায়গা থেকে চলে আসছে আমাকে ধরার জন্যই। কি হবে এখন কেই জানে। তো আমি একটা অফার রাখি? যে আমাকে হারাতে পারবে আমি তাকে তিনটা উইশ চাওয়ার সুযোগ দিবো।
উইশ ম্যাকারের মুখ থেকে একটা হাসি শোনা গেলো তার কথার সাথে সাথে। বাকি সবাই তাদের ঢোক গিলে ফেললো। একটা ভয়ানক লড়াই হওয়ার পথে।
* *
To Be Continue
* *
কেমন হলো জানাবেন।