[গল্পটা পুরো কাল্পনিক, বাস্তবের সাথে এর কোনো সম্পর্ক নেই।]
#Demon_King#
লেখকঃ হৃদয় বাপ্পী
পর্বঃ২৬
।
।
(এলেক্সের বাসা)
ছোট একটা টেবিলে মারফি এবং মারফা বসে চা পান করছে। দুজনে খুব অবাক হয়েছে, তারা ভাবতেই পারে নি এমন একটা জায়গায় মারিয়া থাকবে। যদিও সাধারন একটা নোবেলের জন্য এটা একটা আদর্শ জায়গা তারপরও এরকম জায়গায় তাদের মতো কেউ থাকে না। তাই অনেকটা অস্বস্তি বোধ করতে লাগলো। দুজনের মনেই অনেক প্রশ্ন এবং আগ্রহ। কিন্তু তাদের ফুপি মারিয়া একটারও উত্তর দিচ্ছে না।
-->>এরকম একটা জায়গায় এতো বছর কিভাবে রয়েছে তারা আমি বুঝতে পারছি না?(মারফা)
হঠাৎ ছোট বোন বড় বোনকে প্রশ্ন করলো। যদিও জায়গাটা তাদের থাকার মতো নয় তারপরও একটা আদর্শ জায়গা মনে হলো মারফির কাছে। কোনো কিছুর ঝামেলা নেই, সব কিছুতে পারফেক্ট। তবে আসলেই তাদের জন্য এরকম জায়গা না।
-->>এলেক্স, তাহলে জুনিয়র এলেক্সের জন্ম হয়েছে। মারফি তোমার কি দেখতে ইচ্ছে করছে না?
হঠাৎ এলেক্সের নামটা আবার শুনে মারফির মনটা খারাপ হয়ে গেলো। সে হঠাৎ নিরাশ একটা কন্ঠে বলতে লাগলো,
-->>হয়তো তার মতোই দেখতেই হবে।(মারফি)
-->>আমার মনে হয় এটা একদম ভালোই হয়েছে। যেহেতু প্রথম এলেক্সের বিয়ে করা বউ তুমি তাই জুনিয়র এলেক্সের সাথেও বিয়ে হওয়ার সম্ভবনা তোমার রয়েছে।(মারফা)
মারফা ছোট হলেও লজিকের কথা সে বড়দের মতোই বলতে পারে। বড় বোনের সাথে পুরো ফ্রি ভাবে কথা বলার অভ্যাস তার। তাই কোনো কিছু আটকায় না তার মুখে। তবে মারফি তার বোনের কথায় অনেকটা দুঃখ পেয়ে গেলো। যদিও বিয়েটা কাগজে কলমেই শুধু হয়েছিলো বয়স বেশী ছোট থাকার কারনে, তারপরও তো বলা যায় সেটা বিয়েই ছিলো। তাই হারানো স্বামীর দুঃখ কেমন সে ভালো করেই বুঝতে পারছে। যাক এদিকে সে মনোযোগ দিলো না। সে তার বোনকে বলতে লাগলো,
-->>এরকম আর হওয়ার কোনো সম্ভবনা নেই। দুই এলেক্সের মধ্যে আকাশ বাতাস পার্থক্য রয়েছে, সে সে ছিলো এবং ছোটটা ছোটজনই। আমার চিন্তা বাদ দিয়ে নিজের কথা ভাবো। যেহেতু দুজনের বয়স প্রায় কাছাকাছি তাই আমার মনে হয় না বাবা তোমার হাত অন্য কারো হাতে তুলে দিবে।
এবার মারফির কথায় মারফা অনেকটা লজ্জা পেয়ে গেলো। যদিও সে লজ্জাভাব দেখাতে চাইলো না তবে তার যে মুখ লাল হয়ে গেছে এটা সে ঢাকতে পারে নি। তাই মারফি আর এ বিষয়ে কিছু বললো না। সে জানে বেশী লজ্জা তার বোনকে দিলে সে কেদে দিবে। আর বোনকে কাদাতে সে চাই না।
-->>আচ্ছা আমরা এই বিষয় বাদ দেই। আমি জানি তোমার এই ডিমনিক ফরেস্ট নামক জায়গায় যাওয়ার অনেক ইচ্ছা জাগছে।(মারফি)
মারফার আসলেই ডিমনিক ফরেস্টে যাওয়ার জন্য অস্থির হয়ে যাচ্ছিলো। কিন্তু এটা সে লজ্জায় বলতে পারছে না। কারন যে একটু পূর্বেই টাওয়ারে চলে যাওয়ার জন্য বাইনা করছিলো সে যদি এখন বলে সে এই জায়গাটা ঘুরে দেখতে চাই তাহলে সেটা কেমন দেখাবে।
-->>তুমি জানলে কিভাবে?(মারফা)
-->>এটা তো তোমার মুখই বলে দিচ্ছে।(মারফি)
আসলে মারফা ডিমনিক ফরেস্টে তিনটা জিনিস দেখার জন্য অধীর আগ্রহে আছে। প্রথমত ডিমনিক ফরেস্ট জায়গাটা। টাওয়ার থেকে অনেক শুনেছে এই জায়গার সম্পর্কে, তাই এটাকে দেখার প্রতি আগ্রহ তো তৈরী হবেই।
দ্বিতীয়ত টাওয়ারে প্রবেশের জন্য কি এরকম টেস্ট সম্পূর্ন করতে হচ্ছে ছেলেমেয়েদের এটা দেখার জন্যও অনেকটা আগ্রহ মারফার জাগছে। এবং সবশেষে এলেক্সকে দেখার জন্য। যেহেতু এটা জুনিয়র এলেক্স তাই তাকে দেখার জন্য কৌতহল জাগছে সেই হিলার টাওয়ার থেকে এলেক্সের সম্পর্কে শোনার পর থেকেই। এখন তিন কারন তো সে তার বোনকে বলতে পারছে না। তাই সে বললো,
-->>আমার ডিমনিক ফরেস্টটা দেখার অনেক ইচ্ছা জাগছে।(মারফা)
মারফি আর বোনকে কিছু বললো না। সে জানে কিছু বললে লজ্জা পাবে। সে বুঝে না তার বোন একজন ইনফরমেশন এক্সপার্ট কিন্তু লজ্জা পেলে কেঁদে দেই। যে ইনফরমেশন বের করার জন্য এতো টর্চার করে যেটা সাধারন মানুষ দেখলেই সেন্স হারিয়ে ফেলবে। সেখানে এই একটা দুর্বল দিক তার রয়েছে, যেটা অনেকটায় হাস্যকর।
মারিয়া রান্না ঘরে রান্না করছিলো। হঠাৎ সে রুম থেকে দুজনের এনার্জি অনুভব করতে পারছিলো না। সে পিছনে ফিরলো কিছুটা। এবং বলতে লাগলো,
-->>এদের এই অভ্যাসটা এখনো যায় নি। আমার চিন্তা অনেকটা বারিয়ে দিলো এখন। আমি আশা করবো এটার ফলে এলেক্সের উপরে কোনো বিপদ না আসুক।(মারিয়া)
মারিয়া চিন্তা মুক্ত হলো কিছুটা। এলেক্সকে নিয়ে প্রতিনিয়ত তার চিন্তার শেষ নেই। যদি পূর্বের মতো কিছু হয়ে যায় তাহলে কি করবে মারিয়া। তাই এবার এলেক্সকে ডিমনিক ফরেস্টে পাঠানোর পূর্বে অনেক সুরক্ষার ব্যবস্থা সে করে দিয়েছে। আর তাছাড়া এলমন্ডের বিশ্বস্ত ফ্যামিলিয়ার দূর থেকে এলেক্সকে প্রটেকশন দিচ্ছে। যদি আরো দুজন এলেক্সের সুরক্ষায় যুক্ত হয়ে যায় তাহলে সেটাকে খারাপ মনে করছে না মারিয়া। তবে তার নিষ্পাপ ছেলের জন্য চিন্তাও হচ্ছে।
-->>ছেলেটা শুধু তার বাবার মতো না হলেই হলো।(মারিয়া)
মারিয়ার অনেক কষ্ট হয়েছে তার স্বামীকে লাইনে আনতে। তাই সে চাই না সে পথ তার ছেলেও শিখে যাক। তাই একটু চিন্তা হচ্ছে। কারন পুকুরের পানি তো আবার পুকুরেই এসে পৌছে যায়।
* * * * *
রসিফ এবং চেইনের পুরো শরীরটা ক্ষতবিক্ষত হয়েছে ফক্সের সাথে ফাইট করতে গিয়ে। তারা ফক্সকে অনেকটা ঘায়েল করেছিলোও, তবে সেটা একটা হাইব্রিড হওয়ার ফলে তার রিজেনারেট ক্ষমতা বেশী ছিলো। হাইব্রিড ফক্স পাশে থাকা মৃত ডিমনিক ফক্সদের মাংস খেয়ে নিজের শরীর ঠিক করতে পারতো এবং সেই সাথে নিজেকে শক্তিশালী করছিলো। যার কারনে মাত্র আধা ঘন্টাতেই দুজন সেন্স হারিয়ে ফেলে তাদের এনার্জি হারিয়ে। অনেকটা হিরো ভাব নিয়ে দুজনে এট্রি নিয়েছিলো, বিশেষ করে চেইনের এন্ট্রিটা অস্থির ছিলো। দুজনের সেন্স অনেকক্ষন পূর্বেই ফিরেছে, তবে লজ্জায় উঠতে পারছে না। দুই টিম এক জায়গায় চলে এসেছে। সবাই এক সাথে গোল করে দাড়িয়েছে। যেহেতু প্রধান দুই লিডার বেহুস হয়ে আছে তাই আপাতোতো লিড করার কেউ না থাকায় সবার মনের মধ্যে ভয় কাজ করছিলো। কি করবে সেটা কেউই বুঝে উঠতে পারছিলো না। কিন্তু দুজন ব্যক্তি এমন ছিলো যারা এই অবস্থায়ও মুচকি হাসি দিচ্ছে। প্রথম ব্যক্তি যে কিনা এলেক্স, তোর ভয়ের অনুভূতিটা অনেক পূর্বেই মারা গিয়েছে। যার ফলে সে ভয় অনুভব করে না। ভয়ের সময়েও তার হাসি পাই। আর যেহেতু তার সামনে একটা আননোন লেভেল এর ডিমনিক বিস্ট রয়েছে তাই হাসির সাথে উত্তেজনাও কাজ করছে। ইনফো স্কিল একটিভ করার মাধ্যমে এলেক্স ডিমনিক হাইব্রিড ফক্সটার লেভেল দেখতে পেয়েছে। ফক্সটার মাথায় প্রশ্নবোধক চিহ্ন রয়েছে। যেটা দেখে এলেক্স বুঝতে পারলো এটার লেভেল অনেক তার থেকে।
"এটা অনেক দুঃখজনক যে আমার গ্লাটোনির কুলডাউন সময় শেষ হয় নি। তা নাহলে আমি এক চান্সেই এটাকে এবজোর্ব করে নিতে পারতাম। আর তাছাড়াও এটার হাড্ডিকে আমার গোলাম করে নিতে পারলে অনেক ভালোই হতো।"
এলেক্সকে খুব উত্তেজিত দেখা যাচ্ছে। শুধু সেই এমন একা নই। বরং অন্য কে ও আছে যার মুখে মুচকি হাসি ফুটে উঠেছে। এলিন দাড়িয়ে আছে। একটু পূর্বে তার ব্রেসলেটে থাকা ফিনিক্স পাখিটা তার সাথে কথা বলেছে। পাখিটা ট্যালিপ্যাথিক ভাবে কথা বলতে পারে তাই কোনো রকম শব্দ তৈরী হয় না। সে জানিয়েছে শেষ চাবির এনার্জি এই ফরেস্টের মধ্যে সে অনুভব করেছে, তবে সেটার পরিমান খুব কম হওয়ায় এখনো সেটার আসল লোকেশন বের করতে ব্যর্থ হয়েছে পাখিটা। এলিনের জন্য শুধু এটুকু শোনায় যথেষ্ঠ ছিলো। সে মানা টেস্টের দিন থেকেই সন্দেহ করছিলো কিছুটা। কিন্তু এখন হয়তো সে সিওর হতে পেরেছে যে তাদের মধ্যেই একজনের কাছে শেষ চাবি জিডুরী রয়েছে। তবে কার কাছে সেটা রয়েছে এখনো ভালো ভাবে সে বলতে পারছে না। কোনো নোবেলের কাছেই সেটা থাকার কথা। তাই সে আশা করছে সেটা যেনো তার ভাইয়ের কাছে না থাকে।
সবাই ফরমেশনে দাড়িয়ে ছিলো। সামনে থেকে রেফ এবং মিও এট্যাক করছিলো তাদের স্পেল দিয়ে। এটা ফক্সকে কিছু না করতে পারলেও অনেকটা সময় দিচ্ছিলো তাদের জন্য। তবে পরিস্থিতি তেমন ভালো মনে হচ্ছিলো না। সবাই ভয়ে কাপছিলো। এমনকি একটু পূর্বে যে এক এক করে তার শক্তিশালী লাইটনিং স্পেল দিয়ে ফক্সদের হত্যা করেছে সে ডিউক পুত্র এডওয়ার্ডও ভয়ে কাপছে। তবে তার বোন এলিন থেমে থাকলো না।
এলিন এগিয়ে আসলো বাকিদের থেকে। এবং নিজের আইস ম্যাজিক ব্যবহার করতে লাগলো। সে তার ফ্রিজ স্পেলের মাধ্যমে ফক্সের শরীরের নিচের অংশ জমিয়ে দিলো। কিন্তু এটা হাইব্রিড ফক্স হওয়ায় মুহূর্তেই জমে যাওয়া বরফকে ভেঙে ফেললো। এলিনের স্পেল কোনো কাজেই দিচ্ছিলো না।
হঠাৎ এই অবস্থায় রেফের এনার্জি শেষ হয়ে গেলো। বাকিরা এগিয়ে আসছে না। এলেক্সও কিছু করতে চাচ্ছে না এখনি। তাই মিও আর অপেক্ষা করলো না। সে বলতে শুরু করলো।
-->>সবাই আমার পিছনে চলে আসো। কারন এখন জায়গাটা অনেকটা ঠান্ডা হয়ে যাবে।(মিও)
মিও এর কথায় সবাই অনেকটা পিছনে চলে গেলো। সাথে সাথে মিও হাত দিয়ে একটা চুটকি বাজালো। অনেকটা জায়গা পুরো চেন্জ হতে শুরু করলো। আকাশ থেকে বরফ পরতে শুরু করলো। মুহুর্তেই পুরো মাটি বরফে জমে গেলো। রেফ বাকিদের সাথে পিছনে দাড়িয়ে ছিলো। সে অবাক হয়ে বলতে লাগলো,
-->>আইস ডোমেইন! তাহলে এই মেয়েটা এই বয়সেই ডোমেইন ব্যবহার করতে পারে!(রেফ)
পুরো ঠান্ডা একটা পরিবেশ তৈরী করে ফেলেছে মিও। যেটার মধ্যে শুধু তারই রাজ চলবে। সব বরফ গুলো তারই সৈন্য। যা বলবে মিও সেটাই শুনবে তারা। হ্যা এটাই ডোমেইন। এবং বিশেষ করে আইস ডোমেইন, একটা শক্তিশালী মরন জায়গা শত্রুদের জন্য।
* * *
To Be Continue
* * *
কেমন হলো জানাবেন।