[গল্পটা পুরো কাল্পনিক, বাস্তবের সাথে এর কোনো সম্পর্ক নেই।]
#Demon_King#
লেখকঃ হৃদয় বাপ্পী
পর্বঃ১৩
।
।
(এলেক্স রূপে)
আমি খুব চিন্তিত ছিলাম প্রথমে। বুঝতেই পারি নি কি হচ্ছিলো আমার সাথে। আজ মাত্র আমরা কয়েকটা স্পেল সম্পর্কে জানলাম কিন্তু এই সময়ের মধ্যেই দুই ডিউক কন্যা তাদের স্পেল ব্যবহারও করতে পারছে। হয়তো এটাকেই নোবেল এবং কমন মানুষের মধ্যের পার্থক্য যেটা সবাই বলে। কুড়ালে পা দিলে যেমন পা কেটে যায়, আমার সাথেও তেমন হলো। তবে একটা সুযোগ তৈরী হয়েছে অন্তত দুজনের কাছে যাওয়ার। যদিও আমি প্রথম সাক্ষাতে বুঝতে পারলাম এলিন যে কিনা স্বভাবের দিক দিয়ে কোল্ড-ব্লাডেড অন্যদিকে মাইরা নম্র এবং ভদ্র। মনে হচ্ছে এই মিশনটা মোটেও সহজ হবে না। আবার এই কিংডমের প্রিন্সেস রয়েছে, যাকে এখনো আমি দেখতেও পাই নি।
আমি এই বিষয়ে আর না ভেবে বাসার দিকে রওনা দিলাম। একাডেমি থেকে আমার বাসা আধা ঘন্টার রাস্তা। হয়তো একটা উড়ার ঝাড়ু থাকলে সেটা মাত্র দুই মিনিটের পথ করা যায়। সে যাইহোক, আমি হাটতে ছিলাম আমার বাসার দিকে। পথে বেশ কিছু ইন্টারেস্টিং জিনিস আমি দেখতে পাচ্ছিলাম। সকালে একাডেমিতে আমার আম্মা দিয়ে গিয়েছেন তাই রাস্তা আমার পুরো মুখস্ত হয়ে গিয়েছে। আমার উদ্দেশ্য যদিও বাসার দিকে যাওয়ার তারপরও পথের মধ্যে একটা খোলা মার্কেট ছিলো যেটা আমাদের বাসার কিছু দূরেই হবে। এটা নির্দিষ্ট কোনো মার্কেট নয়। তাই এখানে বেশীরভাগ কাস্টমার সাধারন মানুষই। আমার কিছুটা মন কেরে নিলো এই মার্কেট। একাডেমিতে যাওয়ার সময় সকালে দেখেছিলাম আমি এটা। তবে তখন আম্মা সাথে থাকায় আমার সাহস হয় নি বলার, যে আমি দেখবো ঘুরে। তবে এখন সমস্যা হবে না কোনো।
এই ওয়ার্ল্ডের অর্থ আমার পৃথিবীর থেকে ভিন্ন। এখানে মূলত কয়েন ব্যবহার হয়। কয়েনগুলোর মান যথাক্রমে কপার>সিলভার>গোল্ড। একশত কপার কয়েনের সমান একটা সিলভার কয়েন। আবার এক হাজার সিলভার কয়েনের সমান একটা গোল্ড কয়েন। বাবার মতে একটা গোল্ড কয়েন আমাদের পরিবারকে দুই মাস কোনো সমস্যা ছাড়ায় চালাতে পারবে। যতদূর আমি শুনেছি এখানের কয়েনগুলোর মান আমাদের পৃথিবীর মতোই। একটা কপার কয়েন মানে আমার দেশের এক টাকা।
যাইহোক আমরা কমনার হলেও আমার বাবা হান্টার হওয়ায়, প্রতিটা মিশনের ফলে বেশ ভালো অর্থ উপার্জন করে। তাই বলা যায় অর্থের দিক দিয়ে আমরা একজন লো ক্লাস নোবেলের মতো হবো। সেটার প্রমান আমার পকেটের থাকা একটা গোল্ড কয়েন দিচ্ছে। যদি আমি পৃথিবীর সাথে অর্থের মান তুলনা করি তাহলে আমার কাছে এখন দশ হাজার টাকা রয়েছে। একটা বাচ্চার কাছে এতো টাকা দেওয়া কি আদৌও ঠিক? অবশ্য দশ বারোটা সিলভারও রয়েছে। হয়তো এটাকে নোবেলের বিলাসতা বলা হয়। তবে আমি বিলাসী জীবন পছন্দ করি না। ছোট থেকে অর্থের মর্ম শিখে বড় হয়েছি। তাই আমি চিন্তা করছি সিলভার গুলো দিয়ে কিছু কেনার। যেহেতু আমি এই ওয়ার্ল্ডে এখনো কিছু ক্রয় করি নি, তাই এটা আমার প্রথম অভিজ্ঞতা হবে।
মার্কেটটা নির্দিষ্ট না হওয়ায় দোকান মাত্র কয়েকটা তৈরী ছিলো যেগুলোকে দোকান বলা যায়। বাকি সব পথের দুইপাশে মাটির উপরেই তৈরী হয়েছে। বেশ অনেক দোকান রয়েছে। পন্যও কম নয়। খাবারের দ্রব্য থেকে শুরু করে বিভিন্ন রকমের ম্যাজিকাল আইটেমও পাওয়া যায় এখানে। আমার আপাতোতো ম্যাজিকাল আইটেমের দিকে নজর নেই। কারন যতদিন পর্যন্ত না আমি আমার রিং কে ১০% আনলক করছি ততদিন আমার স্পর্শে সকল আইটেমের এনার্জি এবজোর্ব হয়ে যাবে। অনেকক্ষন ঘোরার পরে আমি একটা চেইন দেখতে পেলাম। যেটা বেশ অনেক সুন্দর লাগছিলো আমার কাছে। একটা বৃদ্ধা মহিলা বসেছে চেইনটা নিয়ে । সে আরো বিভিন্ন জুয়েলারি নিয়ে বসেছে । অবশ্য ছেলেদের জায়গা না এটা। তারপরও আমার কাছে মনে হলো আম্মাকে অনেক সুন্দর মানাবে চেইনটা। স্বচ্ছ সমুদ্রের মুক্তা দিয়ে চেইনটা তৈরী। অনেকে হার কিংবা নেকলেস বলবে এটাকে। তবে আমার কাছে চেইনই মনে হচ্ছিলো। আমি চেইনে হাত দিলাম দেখার জন্য। তখনি আরেকটা হাত সেটার উপরে পরলো। কে সেটা দেখার জন্য তাকালাম আমি। অচেনা একটা মুখ দেখতে পেলাম। সে তার মুখ থাকার জন্য একটা মাস্ক পরেছে, মাথায় একটা হুড রয়েছে তার। চোখ দুটো অনেক মায়াবী হলেও সেটায় ঠান্ডা ভাব রয়েছে। আমি সেই চোখে মুগ্ধ হলেও চেইন ছেড়ে দিলাম না। মেয়েটা ঠান্ডা গলায় বলে উঠলে,
-->>এটা আমি প্রথমে পছন্দ করেছি তাই এটা আমার।
আমি যদিও জানি মেয়েদের সব জিনিসে প্রথমে সুযোগ দিতে হয় তারপরও আমি সেটাকে ছারলাম না। শক্ত করে ধরলাম এবং বলতে লাগলাম,
-->>আমি এটাকে প্রথমে ধরেছি। তাই টেকনিক্যাল ভাবে এটা আমার।
দুজনের মধ্যে বেশ ভালো একটা লড়াই লাগার মতো অবস্থা তৈরী হয়েছিলো। আমি জানি না কে এই অচেনা মেয়েটা। তবে চেইনটা আমি তাকে দিতে রাজি নই। আমাদের ঝগড়া দেখতে পেয়ে বৃদ্ধা মহিলা যে কিনা চেইনটা বিক্রি করছে সে বলতে লাগলো,
-->>যে এটার বেশী দাম দিতে পারবে। চেইন তারই হয়ে যাবে।
সাথে সাথে দুটো গোল্ড কয়েন মেয়েটা বৃদ্ধার ছোট টেবিলের উপরে রেখে দিলো। যেটা দেখতে পেয়েই আমি অবাকে চেইনটা ছেড়ে দিলাম। দুটো গোল্ড কয়েন যেটা কোনো নোবেলের জন্য তেমন কোনো ব্যাপারই না। তবে সেটা আমাদের মতো কমনারদের জন্য অনেক বেশী জিনিস। চেইনটার সর্বোচ্চ দাম বলতে গেলে পাঁচ সিলভারের উপরে উঠবে না। যেহেতু মুক্তা তেমন দামী কোনো পন্য নয়। তারপরও আমি রাগ কিংবা অভিমান কিছু করলাম না। বৃদ্ধার মুখে হাসির একটা আনন্দ দেখতে পেলাম যেটা আমার মনকেও শান্তনা দিলো। আমি চেইনের কথা ভুলে গেলাম। মেয়েটা সেই চেইনটা নিয়ে চলে গেলো। সেদিকে আমি আর নজর দিলাম না। এক সিলভার কয়েন দিয়ে আমি বেশ কিছু আপেল নিয়ে বাসার দিকে রওনা দিলাম। আমি এই মার্কেটে বেশী সময় নষ্ট করতে চাচ্ছিলাম না। আমি ম্যাজিক সম্পর্কে সাধারন একটা ধারনা পেয়েছি তাই আমাকে শুধু কিছুটা প্রাকটিস করার দরকার।
*
আমি আমার ট্রেনিং গ্রাউন্ডে দাড়িয়ে আছি। মূলত আমার বাগিচাকেই আমি আমার ট্রেনিং গ্রাউন্ড তৈরী করেছি। একটা কাঠের সোর্ড রয়েছে আমার হাতে। আমার বয়স অনুযায়ী আমার হাতে সেটা ভালোই বানাচ্ছে। বাবা বলেছে যেহেতু আমি এক হাতে সিট আপ করি না তাই আমাকে কাঠের সোর্ড দিয়ে প্রাকটিস করতে হবে। একশতবার সোর্ড পিঠের উপর থেকে নিচে স্লাশ করতে হবে। অবশ্য এতে আমারই লাভ। সাধারনত এমন ট্রেনিং এ আমি শক্তিশালী হচ্ছি কিনা দেখতে পারতাম না। তবে যেহেতু আমার রিং এর কাছে স্ট্যাটাস অপশন রয়েছে তাই আমি সহজেই দেখতে পারি আমার ক্ষমতা বারছে কিনা।
আমি আমার সোর্ড দিয়ে স্লাশ দিতে লাগলাম। এটা বেশ কষ্টকর একটা ট্রেনিং। দশটা ঠিকমতো দেওয়ার পর আর জোর থাকে না। আমাকে আমার পায়ের উপরেও লক্ষ রাখতে হচ্ছে। শরীরের পুরো ওজন হাতের উপরে নিয়ে আসার ফলে পুরো শরীরের স্টেম্যানা খুব তারাতারি শেষ হয়ে যাচ্ছিলো। এক ঘন্টা সোর্ড নিয়ে ট্রেনিং এর পর আমার একশত স্লাশ শেষ হলো। আমি কিছুটা রেস্ট নেওয়ার জন্য ঘাসের উপরে বসে পরলাম। পাশে বাঁশের একটা কৌটা রয়েছে, যার মধ্যে পানি সংগ্রহ করা রয়েছে। আমি বাঁশের কৌটা থেকে পানি পান করলাম। কলিজা পর্যন্ত ঠান্ডা করে দিলো সেটা। আম্মা আমার কাছে আসলো আপেল কাটা নিয়ে। সেই সাথে তার হাতে একটা পিল(মেডিসিন) দেখতে পারছিলাম।
-->>এলেক্স একটু রেস্ট নিয়ে নাও। আর এই পিলটা খেয়ে নাও। এটা তোমার এনার্জি সংগ্রহ করতে সাহায্য করবে।
আমি জানি না আম্মা তার পরিচয় গোপন রাখছে কেনো। একজন হিলার এবং এ্যালকেমিস্ট এর দাম অনেক ক্যাপিটালের মধ্যে। হিলারদের থেকে এ্যালকেমিস্টদের গুরুত্ব বেশী দেওয়া হয়। আমার আম্মা যদি এ্যালকেমিস্ট টাওয়ারে প্রবেশ করে তাহলে বেশ ভালো একটা নোবেল পদ পেতে আমাদের সমস্যা হবে না। কিন্তু হয়তো তার পরিচয় গোপন রাখার কোনো কারন রয়েছে। আমি সেদিকে আর ভাবনা না বারিয়ে আম্মার দেওয়া পিলটা খেয়ে নিলাম। সাধারনত এসব পিলের মধ্যে অনেক এনার্জি থাকে। অনেকটা স্টোনের মতো কাজ করে এগুলো। তাই এ এনার্জিকে এবজোর্ব করতে হয় পেটের মধ্য থেকে। সবচেয়ে তারাতারি এবজোর্ব করার উপায় হলো মেডিটেশন। তবে আমার সেটার প্রয়োজন হবে না। আমার কাছে টাইটেল রয়েছে Consumer। আমি প্রতিদিন একটা করে খাবার খাওয়ার মাধ্যমে সেসবের এনার্জি এবজোর্ব করতে পারবো। তাই পিলের এনার্জি এবজোর্ব করতে আমার সময় লাগলো না। যদিও আমি এবজোর্ব করি নি, করেছে আমার রিং তারপরও বলা যায় আমিই করেছি।
আম্মা চলে গিয়েছেন ঘরের মধ্যে। আমি এখনো বাইরে বসে আছি। কিছুক্ষন মেডিটেশন করার মতো বসে ছিলাম। যদিও মেডিটেশন জিনিসটা খারাপ না। এতে করে অনেকটা এনার্জি জমা হয় রিং এর মধ্যে। কিন্তু আমার বিরক্ত লাগে। আমি কুনফু শিখছি না যে আমার দুই তিনদিন এক জায়গায় বসে থাকতে হবে।
আম্মা চলে যাওয়ার পরই আমি উঠলাম। যেহেতু আমি আজকে একটা স্পেলবুক পেয়েছি তাই আমার আগ্রহ অনেক ছিলো। সেই সাথে স্পেল সম্পর্কে আমার সাধারন একটা ধারনা তৈরী হয়েছে। আমি সিওর ছিলাম যে আমি স্পেল ব্যবহার করতে পারবো।
যেহেতু আমার নিজের কোর নেই তাই জিনিসটা ন্যাচারাল ভাবে আমি ফিল করতে পারছিলাম না। রিং এর ফলে আমার স্কিল ব্যবহার সহজ হচ্ছিলো, কিন্তু রিং থেকে এনার্জি নিয়ে স্পেল ব্যবহার করাটা একটু জটিল ছিলো তবে আমি আপাতোতো বুঝতে পেরেছি কিভাবে স্পেল কাজ করে। শুধু এমনই নয় নতুন স্পেল তৈরীরও একটা টপিক মাথায় এসেছে। জানি না কাজ করবে কিনা। তবে আমি সেটা পরে চেষ্টা করতে চাই। প্রথমে স্বাভাবিক স্পেলটাই ব্যবহার করি।
-->>ও গ্রেট মানা লর্ড, আই অ্যাম ডার্ক এট্রিবিউটর, প্লিজ লিসেন টু মাই কল এন্ড ভ্যানকুইস দ্যা লাইট, "ডার্ক বল"।
এটাই ছিলো চান্টিং। আমি ডান হাতে বই ধরে বাম হাত সামনের দিকে তুলে স্পেলের চান্টিং টা পরলাম। যদিও আমি প্রথমেই কিছু আশা করছিলাম না, তারপরও আমি আমার হাতের মধ্যে অনেকটা কালো রঙ দেখতে পেয়েছি। যার মাধ্যমে বুঝলাম যে চান্টিং ঠিক ছিলো। আমি বিভিন্ন ভাবে প্রাকটিস করতে লাগলাম। প্রাকটিস করতে করতে রিং এ জমা থাকা এনার্জিও শেষ করে ফেললাম।
* * * * *
উয়েক্সকুলের ম্যানসন,
ডিউককন্যা এলিনের রুমের মধ্যে বসে আছে এলিন এবং প্রিন্সেস এনরি। দুজনেই বেশ কিছু জিনিস নিয়ে কথা বলছিলো। মূলত প্রিন্সেস আজ গোপনে বের হয়েছিলো সেটাই মূল টপিক ছিলো। দুজনেই খুব কাছের বন্ধু।
-->>প্রিন্সেস এনরি বাবা তোমাকে বলেছে ম্যানসন থেকে না বের হতে। কিন্তু তুমি আজ বেরিয়ে গিয়েছিলে।
এলিন কঠোর ভাবে বললো কথাটা। কিন্তু প্রিন্সেস সেটাকে মিষ্টি একটা হাসির মাধ্যমে উড়িয়ে দিলো। সে একটা নেকলেস বের করলো কাপড়ে বোরানো একটা ব্যাগের মধ্য থেকে। নেকলেসটা স্বচ্ছ মুক্তার তৈরী। যেটা সাধারনত এখন দেখা যায় না। যদিও এটা অনেক কম দেখা যায় তারপরও এর মূল্য তেমন বেশী না। প্রিন্সেস খুব যত্নে এটাকে এলিনের গলায় পরিয়ে দিলো। সে তার ঠান্ডা ভাবকে দূর করে একটা নকল হাসি মুখে এনে বলতে লাগলো,
-->>আজ আজব একটা ছেলের সাথে দেখা হয়েছিলো, যে আমার কাছ থেকে এই নেকলেসটা নেওয়ার জন্য ঝগড়া করছিলো। কিন্তু আমি যখন দুটো গোল্ড কয়েন দিয়ে এটা কিনে ফেলি তখন তার মুখে কোনো শব্দই বের হচ্ছিলো না। তুমি সেখানে থাকলে হয়তো হেসেই মরে যেতে।(প্রিন্সেস)
এলিন বিরক্ত হয়ে বললো,
-->>তুমি কিন্তু মূল টপিক ঘুরাচ্ছো। দুই প্রিন্স তোমাকে তাদের কাছে রাখার জন্য যা ইচ্ছা তাই করতে পারে। তুমি যতদিন ডিউকের ম্যানসনে কিংবা তার প্রটেকশনে থাকবে ততদিন তারা কিছু করতে পারবে না কিন্তু আজকের মতো গোপনে বের হয়ে গেলে তাদের কাজ কিন্তু সহজ হয়ে যাবে।(এলিন)
-->>হ্যা আমি বুঝতে পেরেছি। তোমার প্রথম দিন কেমন গেলো একাডেমিতে?
-->>কেমন যাবে ভালোই।(এলিন)
-->>মাইরার চিঠিতে শুনলাম তুমি নাকি ওর সাথে ঝগড়া করেছো আবার কারন একটা কমনার ছেলের জন্য।
এলিন রেগে গেলো মাইরার কথা শুনে। আজ একাডেমির ক্লাস শেষ হওয়ার পর একটা কমনারের জন্য তার ঝগড়া হয় মাইরার সাথে। যার জন্য সে এখনো রেগে আছে। মূলত রাগ মাইরার প্রতি নয়। সেই সাধারন ছেলেটার প্রতি যে এটা শুরু করেছিলো। এলিন চিন্তা করেছে সে ছেলেটার একাডেমির জীবন পাতা পাতা করে দিবে।
-->>আমি বুঝলাম না দুই ডিউক কন্যা একটা সাধারন ছেলের প্রেমে পরলো কিভাবে? এটায় তো কিংডমের মধ্যে আরো বড় যুদ্ধ তৈরী হবে।(প্রিন্সেস হেসে বললো)
এলিন প্রিন্সেসকে রাগে কিছু বলতে পারলো না। সে বেলকনিতে চলে গেলো রাগ করে। প্রিন্সেস এদিকে মনটা খারাপ করে বিছানার উপরে শুয়ে পরলো। প্রিন্সেস দুঃখ পাচ্ছে তার বাবার শেষ সময়ে সে সেখানে থাকতে পারে নি বলে। তাকে পালিয়ে চলে আসতে হয়েছে এখানে। তার দুই ভাই অন্য কিংডমের প্রিন্সের সাথে তার বিবাহ ঠিক করতে চাচ্ছিলো। দুই প্রিন্স নিজেদের লাভের জন্য নিজের কিংডম বিক্রি করার চিন্তা করছে। কিংডমের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে প্রিন্সেসের মন আরো খারাপ হয়ে গেলো।
এদিকে এলিন বেলকনিতে দাড়িয়ে ছিলো। তার ব্রেসলেটে সে হাত দিয়ে ধরে রেখেছে। ব্রেসলেট সে কখনো খুলতে পারে না। তবে এক হাত থেকে অন্য হাতে ট্রান্সফার করতে পারে নিজ ইচ্ছায়। এলিন তাকিয়ে রইলো আকাশের দিকে,
-->>তুমি কি সিওর যে জিডুরীর হোস্ট সেই ছেলেটায়?
এলিনের প্রশ্নে হঠাৎ ব্রেসলেটের মধ্য থেকে আওয়াজ শোনা গেলো সেই জলন্ত পাখির,
-->>হ্যা আমি একশো এক পারসেন্ট সিওর যে ঔ ছেলের হাতেই জিডুরী ছিলো।
-->>তাহলে কি জিডুরী তোমাকে চিনতে পেরেছে?(এলিনের প্রশ্ন)
[নোটঃ পূর্বে কোথাও মিডুরী ব্যবহার করে থাকলে এখন থেকে একটু সংশোধন করে পড়বেন। আসলে জিডুরী হবে। ধন্যবাদ]
-->>আমার মনে হয় না। সে সিল রয়েছে রিং এর মধ্যে। তাই আমার মনে হয় সে আমাকে চিনতে পারে নি। আপনি কি করতে চাচ্ছেন এখন?
-->>অবশ্যই আমি আসল ক্ষমতা দেখতে চাই জিডুরীর হোস্টের।
-->>সেটা কিভাবে করবেন? যতদূর আমি দেখলাম তার হোস্ট এখনো জিডুরীর ক্ষমতা ব্যবহার করতে পারে না। তা নাহলে আপনার সেই স্পেলে এতো সহজে আক্রান্ত হতো কিভাবে।
-->>একজনের আসল রূপ দেখতে হলে তার রাগের সময় ছাড়া আর কোনো সময় ভালো হতে পারে না। তোমাকে কোনো চিন্তা করতে হবে না। আমি কোনো ভুল পথে পা দিবো না। আমার মূল লক্ষেই আমি থাকবো সব সময়।(এলিন)
-->>যেটা আপনার ইচ্ছা।
এলিনের মুখ সিরিয়াস হয়ে গেলো। সে ভাবতে লাগলো অনেক জিনিস। তার ব্রেসলেট থেকে শুধু একটা হাসি শোনা গেলো। এলিনের মুখেও হয়তো সেই জাসি তৈরী হতে যাচ্ছিলো, কিন্তু সেটা তার সিরিয়াস চেহারায় হারিয়ে গেলো।
* * * * *
ডিমনিক ফরেস্ট,
ডিমনিক ফরেস্টের অধিকাংশ অংশ মেফাস কিংডমে অবস্থিত। এটা একটা জায়গা যেখানে বিশাল আকারে ডিমনিক এনার্জি পাওয়া যায়। এবং এই জায়গার মধ্যেই অধিকাংশ ডিমনিক বিস্টের জন্ম হয়। মেফাস অনেক সমৃদ্ধশালী একটা কিংডমে পরিনত হতে পেরেছে এই ডিমনিক ফরেস্ট থাকার ফলেই। বিভিন্ন কিংডমের হান্টার, মার্সেনারী, নাইট, ম্যাজ, হিলার এবং এ্যালকেমিস্ট মেফাসে প্রবেশ করে এই ডিমনিক ফরেস্ট মেফাসে থাকার কারনে।
ডিমনিক ফরেস্টের একদম গহীনে একটা পোর্টাল তৈরী হয়েছে। যার মধ্য দিয়ে তিনজন ব্যক্তি বেরিয়ে আসলো। তাদের ব্যক্তি বললে ভুল হবে। তিনজন মূলত তিনটা ডেভিল। তিন ডেভিলের নাম এমোরাস, কেমোরাস, জেমোরাস। তার তিনজনই বায়োলজিক্যাল ভাই।
-->>ব্রাদার আমরা কোথায় এসেছি?
কেমোরাস এমোরাসকে প্রশ্ন করলো। এমোরাস আকাশের দিকে তাকিয়ে উত্তর দিতে লাগলো,
-->>আমাদের মাস্টারের হুকুম পালন করতে।(এমোরাস)
-->>প্রিন্স Beelzebub এর সাথে আমাদের ডেভিলদের সম্পর্ক মোটেও ভালো ছিলো না, আমরা কি সমস্যায় পরবো না তার এরিয়ায় আসার জন্য?(জেমোরাস)
জেমোরাসের প্রশ্নে অনেকটা ভয় দেখা গেলো। স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছিলো সে কিছুটা চিন্তায় ছিলো।
-->>প্রিন্স এখনো জীবিত হয় নি। তাই আমাদেরকে প্রথমেই প্রিন্সের পাঁচ চাবি নিয়ে মাস্টারকে দিতে হবে।(এমোরাস)
-->>ব্রাদার তাহলে কি আমি ইচ্ছামতো ধ্বংস করতে পারবো সব কিছু?(কেমোরাস)
কেমোরাসের মুখে হাসি ফুটে উঠলো। যদি এমোরাস চিন্তিত ছিলো। কারন সে এই ওয়ার্ল্ডে তাদের চেয়েও কয়েকজন শক্তিশালী ব্যক্তিদের এনার্জি অনুভব করতে পারছিলো। তারপরও তারা নিশ্চিত ছিলো তাদের নজরে না এসে মিশন শেষ করে তারা চলে যাবে।
--আমাদের তারপরও সাবধান হতে হবে। যতই হোক আমরা প্রিন্স Beelzebub এর এরিয়ায় আছি।(এমোরাস)
* *
To Be Continue
* *
কেমন হলো জানাবেন।