[গল্পটা পুরো কাল্পনিক, বাস্তবের সাথে এর কোনো সম্পর্ক নেই।]
#Demon_King#
লেখকঃ হৃদয় বাপ্পী
পর্বঃ২৮
।
।
(ডিমনিক ফরেস্ট)
এলেক্স এবং এলিনের মধ্যে অনেক ভয়ানক একটা লড়াই শুরু হতে যাচ্ছিলো। এলেক্সের এজিলিটি এই সময়ে কিছুটা কম হলেই সে এলিনের বিশাল ক্রসবোর তীরে ক্ষতিগ্রস্ত হতো। এমনকি মৃত্যুও হতে পারতো তার যদি সে কেয়ারলেস হতো সামান্য পরিমানের জন্য। এলিন পুরো হিরোর মতো একটা এন্ট্রি নিয়েছে। যদিও সে হিরো না হিরোইন হবে।
-->>আমি সেদিনের জন্য দুঃখিত।(এলেক্স)
এলেক্স সেদিন মাইরার সাথে ধাক্কা খেয়েছিলো। এবং এলিনের সাথেও ধাক্কা খেতে যাচ্ছিলো, এলেক্স তো ভাবছে সেটার জন্যই রেগে আছে এলিন। তবে এটাই কি আসল কারন?
-->>আমি সিওর ছিলাম না, তবে এবার সিওর হলাম।(এলিন)
এলিন কি বললো এলেক্স কিছুই বুঝলো না। তবে এলেক্স এলিনের থেকে ব্লাড লাস্ট অনুভব করতে পারছিলো। যেটা ভালো কোনো কিছুই না। এই অবস্থায় তার এখানে থাকা মোটেও ভালো না। তাই এলেক্স চলে যাওয়ার কথা ভাবছিলো। কিন্তু এলিন এতো সহজে এলেক্সকে ছেড়ে দেওয়ার পাত্র নয়। এলিনের বাম হাতে থাকা ব্রেসলেট হঠাৎ কালো ধোয়া তৈরী করতে লাগলো। যেটা থেকে একটা ছোট আকারের কালো পাখি বেরিয়ে আসলো। এটা কোনো সাধারন পাখি ছিলো না। পাখিটার শরীর থেকে কালো আগুন নিমজ্জিত হচ্ছিলো। কারন এটা "হেল ফায়ার ফিনিক্স"।
"এটা তো সেই পাখি, যেটাকে আমি স্বপ্নে দেখেছিলাম!"
এলেক্স চিনতে ভুল করলো না। কারন তার দেখা স্বপ্নটা তার এখনো মনে আছে। স্বপ্নটার একটা অংশও ভোলার মতো ছিলো না। তবে এলেক্স কোনো রকম এক্সপ্রেশন দিলো না। কারন তাতে কিছু একটা খারাপ হতে পারে। এলেক্স এমন একটা ভাব নিচ্ছে যাতে সে পাখিটাকে সাধারনই মনে করছে।
"তাহলে বিলজবাব এর অন্য একটা ম্যাজিকাল আইটেম এলিনের কাছে রয়েছে।"
এলেক্স ভেবেছিলো বাকি আইটেমের জন্য এলেক্সকে টাওয়ারে প্রবেশ করতে হবে। কিন্তু এভাবেই তার পাশে একটা চলে আসবে এটা এলেক্স ভাবতেও পারে নি। কিন্তু জোরপূর্বক এলেক্স ম্যাজিকাল আইটেম নিতে পারবে না। এলেক্স নিজের রিং পেয়ে যতটা বুঝতে পেরেছে যে বিলজবাবের পারশোনাল ম্যাজিকাল আইটেম গুলো একবার কোনো হোস্ট খুজে পেলে সেগুলো জোরপূর্বক আলাদা করা যায় না। আর এলিনকে কিছু করতেও পারবে না এলেক্স। কারন তার প্রথম মিশন শেষ না হলে পরের গুলোতে সে পা দিতে পারবে না।
এলিন এলেক্সের সামনে দাড়িয়ে ছিলো। এই সময়ে এলেক্সের মাথায় অনেক চিন্তা এসে বাসা বেধেছে। তবে এলিন কিছুই ভাবছে না। সে কোল্ড একটা লুক দিলো এলেক্সের দিকে।
"আমাকে জিডুরীকে উদ্ধার করতে হবে। কিন্তু আমি জোরপূর্বক কিছু করতে পারবো না আপাতোতো। তাই আমাকে প্রথমে কথা বলে নিতে হবে জিডুরীর হোস্টের সাথে।"
এলিন এলেক্সের সাথে কথা না বলতে চাইলেও তাকে কথা বলতে হবে। কারন তাতে সে কিছুটা হলেও আশ্বস্ত করতে পারবে। বাকি চাবি গুলোর মতো নয় জিডুরীর। জিডুরীর স্মৃতিতে সিল থাকায় এখনো পর্যন্ত পাঁচ চাবির কোনো কিছুই এলেক্স জানে না এটা এলিন বুঝতে পেরেছে। তা নাহলে তার হাতের ব্রেসলেট যেটা কিনা পাঁচ চাবির একটা সেটা দেখলেই কিছু একটা রিয়াকশন দেখা যেতো এলেক্সের মাঝে। কিন্তু এলেক্সের কোনো আগ্রহ নেই সেদিকে। তাই আপাতোতো সে যেটা বলবে সেটায় বিশ্বাস করবে এলেক্স এটা মনে করছে এলিন। এই প্লান কাজে না দিলে তার কাছে সেকেন্ড প্লানও রয়েছে।
-->>আমি তোমাকে মানা কোর মানাতে সাহায্য করবো।(এলিন)
হঠাৎ এলিনের মুখে এই কথা শুনে অবাক হয়ে গেলো। এলিন মূলত বিষয়টা তার হাতের ব্রেসলেটে থাকা "হেল ফায়ার ফিনিক্স" এর কাছ থেকে জানতে পেরেছে এলেক্সের কোর গঠিত হয়নি। এলেক্সের বিশ্বাস অর্জন করার জন্য এটা অনেক ভালো একটা উপায় এলিনের জন্য। তাই সে হাতছাড়া করতে চাচ্ছে না এটাকে।
-->>আপনি জানলেন কিভাবে?(এলেক্স)
এলেক্স তার আগ্রহকে ধরে রাখতে পারলো না। তাই সে প্রশ্ন করলো এলিনকে। এলেক্স তার মানা কোরের ব্যাপারে কাউকে বলে নি। এটা শুধু জিডুরী তাকে বলেছে। এলেক্স তার মাথার ব্যবহার করতে শুরু করলো।
"এই ফিনিক্সটা স্বাভাবিক নয় তাহলে।"
এলেক্স বুঝতে পেরেছে যে এলিন এটা ফিনিক্সটার মাধ্যমেই জানতে পেরেছে। যাইহোক আপাতোতো সে সেদিকে নজর দিলো না। মানা কোর এলেক্সের জন্য গুরুত্বপূর্ন। কিন্তু এলিন যে ফ্রিতে তাকে সাহায্য করবে না এটা এলেক্স ভালো করেই বুঝতে পারছে।
-->>কিভাবে জানলাম তার থেকে গুরুত্বপূর্ন বিষয় কিভাবে বানানো যাবে তাই না?(এলিন)
এলিন ঠান্ডা একটা লুক নিয়ে এলেক্সকে বললো এলেক্সের হঠাৎ এলিনের লুক দেখে তার স্ত্রীর কথা মনে পরে গেলো। যদিও বাইরে থেকে এলেক্সের বয়স মাত্র এগারোর মতো। কিন্তু এলেক্স এর পূর্বে ছাব্বিশ বছরের জীবন পার করেছে। তাই স্ত্রী থাকাটা তার জন্য স্বাভাবিক। হঠাৎ পুরানো কথা মনে পরে গেলো তার। মেঘার বিশ্বাসঘাতকতা তাকে কিছুটা হলেও মোটিভেট করলো।
"আমাকে শক্তিশালী হতেই হবে।"
এলেক্স মনে মনে ভাবলো। সে এলিনের সাহায্যকে মানা করতে পারবে না। কারন তার মানা কোর অনেক প্রয়োজন। যদিও সে জিডুরীর কোরের মাধ্যমে ম্যাজিক ব্যবহার করছে, কিন্তু এটা পারফেক্ট না এলেক্স নিজেও জানে। নিজের ঘর এবং অন্যের ঘরের মাঝে অনেকটা পার্থক্য থাকে। তাই তো এলেক্সকে নিজের ঘর সাজাতে হবে প্রথমে।
-->>আমার তো মনে হচ্ছে না ফ্রিতে সাহায্য করবেন। আর তারপরও আমি একজন সাধারন কমনার, আর আপনি ডিউকের কন্যা। কি লাভ পাবেন সেটা আমি বুঝতে পারছি না।(এলেক্স)
এলিন কোনো কিছু চিন্তা করছে না এলেক্সের মতো। তার স্বাভাবিক উত্তর সব সময়েই।,
-->>দুনিয়াতে ফ্রি জিনিস বলতে কিছু নেই। সব কিছুরই একটা না একটা মূল্য রয়েছে। অবশ্যই আমার সাহায্যেও একটা মূল্য রয়েছে।(এলিন)
এলেক্সের মানা কোরের প্রয়োজন, তাই যেকোনো মূল্য দিতেই রাজি আছে সে মানসিক ভাবে। তবে এটা কি এতোটা সহজ?
-->>আমি তোমার মানা কোর তৈরীর সকল উপাদানের নাম বলবো। সেটার বিনিময়ে কোর তৈরী হওয়ার পর একটা জিনিস আমার দরকার।(এলিন)
এলিনের নজরটা এলেক্সের রিং এর দিকে ছিলো। এলেক্স বুঝতে পারলো এলিনের কি প্রয়োজন। তাই অফারটা ভালো হলেও সে এটাই রাজি হতে পারছে না। এই রিংটা তার জীবনটা পাল্টে দিয়েছে। সে প্রথমে রিংটাকে অনেক গালাগালি দিলেও এই রিং এর জন্য আজ জীবিত আছে। তাই এটাকে কোনো ভাবেই হারাতে চাই না।
-->>আমি দুঃখিত। মানা কের আমার জন্য প্রয়োজনীয় হলেও এই রিংটা আমার কাছে বেশী গুরুত্বপূর্ন।(এলেক্স)
এলেক্সের উত্তর এলিন আশা করছিলো। সে জানে এতো সহজ হবে না জিনিসটা। এলিনকে অন্য কিছু ভাবতে হবে। যদিও এলিনের রিংটা প্রয়োজন কিন্তু সেটাকে সুরক্ষিত রাখার ক্ষমতা তার কাছে নেই। তাই আপাতোতে এটার হোস্টের কাছেই থাকা ভালো।
-->>ঠিক আছে।(এলিন)
এলিন আর কিছু বললো না। সোজা ক্যাম্পের দিকে যেতে লাগলো। এলেক্স হাবলার মতো দাড়িয়ে আছে। সে এখনো ফাইটের জন্য প্রস্তুত ছিলো। যেভাবে এলিন এখানে এসেছিলো তাতে একটা লড়াই হওয়ার কথায় ছিলো। কিন্তু সেরকম কিছু হলো না। এলেক্স স্বাভাবিক হয়ে গেলো। সে হেটে ডুফেসের সামনে চলে আসলো। ডুফেস চোখ বন্ধ করে তাকিয়ে আছে। মনের আনন্দে গান গাচ্ছে সে,
-->>আমি হবো হিরো, বাকি সবাই জিরো। এলিন, মাইরা, স্নেরা, লুবা, মিও সবাই খাবে ক্রাস, আমি করবো সবার মনে রাজ।(ডুফেস)
এলেক্সের মনে চাচ্ছিলো গানটা রেকর্ড করার। তবে সেটা হচ্ছে না মোবাইল না থাকায়। হয়তো পৃথিবীতে থাকলে এই গানকে ভাইরাল করে দিতে পারতো। এলেক্স ভাবছে এই গানটা যদি এলিন কিংবা বাকি সবাই শুনে তাহলে ডুফেসের কি হবে?
-->>ডুফেস, চলো আমাদের কাজ হয়ে গেছে।(এলেক্স)
-->>কিন্তু এলেক্স আমি তো তাকাতে পারবো না।(ডুফেস)
ডুফেস অনেকটা দূরেই ছিলো। তাই এলিনের বিশাল তীরের শব্দ তেমন কানে পৌছায় নি। তারপরও প্রতিনিয়ত শব্দ হচ্ছেই বিভিন্ন রকমের, তাই সেই শব্দে তার কান পরে নি।
এলেক্স তার ব্যাগ থেকে একটা পানির পাত্র বের করলো। বাঁশের তৈরী পানির পাত্র দেখতে অনেকটা সুন্দর। সাথে ওয়াটার এট্রিবিউটের কেউ থাকলে পানির চিন্তা করতে হয় না। তারপরও এলেক্স সব সময় পানির পাত্র তার কাছে রেখেছে। অনেক সময়ে কাজে দেই সেটা।
এলেক্স ডুফেসের হাতে পানির পাত্রটা দিয়ে দিলো। ডুফেস পাত্র থেকে পানি নিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলতে লাগলো। এক মিনিটের মধ্যেই ডুফেসের নতুন লুক চলে আসলো। এলেক্স সেদিকে কিছুক্ষন তাকিয়ে রইলো। যদি এটা পৃথিবী হতো তাহলে একটা জিনিসই শুনতে পেতে। সেটা হলো আটা ময়টা। লাল রঙের ব্যারীটা মেকআপের মতো একটা স্তর তৈরী করে স্কিনের উপরে। যেটা অনেকটা ফর্সা করে দেই শরীরকে। এটা মূলত এলেক্সের আম্মাকে ব্যবহার করতে দেখেছে। সাধারনত মেয়েদের স্কিনেই এটা ভালো কাজ করে। কারন ছেলেদের মেকআপে মোটেও ভালো লাগে না।
এলেক্স ডুফেসের চুলটা কিছুটা স্টাইল করে দিলো। অনেকটা হানি সিং এর মতো একটা কাটিং দিয়ে দিলো ছুড়ি দিয়ে। যেটা পৃথিবীতে দেখতে আকর্ষনীয় মনে হলেও এই ওয়ার্ল্ডে এটা একদম নতুন। তাই সব নজর তার দিকেই আসবে।
-->>এলেক্স সত্যিই কি আমি হিরোর মতো লাগছি?
ডুফেস এলেক্সের দুই কাধে হাত রেখে বলতে লাগলো। তার চোখ দুটো তারার মতো উজ্জ্বলিত হচ্ছে। সে অপেক্ষায় আছে এলেক্সের মুখ থেকে হ্যা শোনার জন্য।
-->>হ্যা। একদম পুরো হিরো নাম্বার ওয়ান।(এলেক্স)
-->>ধন্যবাদ এলেক্স। তুমি সত্যিই আমার বেষ্ট ফ্রেন্ড।(ডুফেস এলেক্সের হাত ধরে বললো)
এলেক্স আরো উত্তেজিত করে দিলো ডুফেসকে। তাই ডুফেস আর অপেক্ষা করতে পারলো না তার নতুন লুক অন্যদের দেখাতে। সে লাফাতে লাফাতে প্রথমেই ক্যাম্পের দিকে যেতে লাগলো।
"আদৌও কি কাজে দিবে এটা?"
এলেক্সের ঠোটের কোনায় কিছুটা হাসি দেখা গেলো। অনেকদিন পর কেউ তাকে বন্ধু বলেছে। যেটা সচারচার সে কখনো শুনে নি। হয়তো সামাজিক ব্যবহার এলেক্সের পূর্বে ভালো ছিলো না। একজন প্রোগ্রামারের জীবন সহজ হয় না। ব্যক্তিগত জীবনটাকে ত্যাগ করতে হয় এই দিকে যেতে হলে। তাই কোনো বন্ধু ছিলো না এলেক্সের পূর্বে।
ডুফেস মনের খুশিতে লাফাচ্ছে। মাঝে মাঝে মাথার চুলে হাত দিয়ে নতুন স্টাইলটা দেখছে। সেই সাথে গান গাচ্ছে,
-->>আমি হবো হিরো, বাকি সবাই জিরো। এলিন, মাইরা, স্নেরা, লুবা, মিও সবাই খাবে ক্রাস, আমি করবো সবার মনে রাজ।(ডুফেস)
* * *
To Be Continue
* * *
কেমন হলো জানাবেন।