[গল্পটা পুরো কাল্পনিক, বাস্তবের সাথে এর কোনো সম্পর্ক নেই।]
#Demon_King#
লেখকঃ হৃদয় বাপ্পী
পর্বঃ২৯
।
।
(ডিমনিক ফরেস্ট)
মারফি এবং মারফা ডিমনিক ফরেস্টে প্রবেশ করেছে। তারা এক একটা গাছের উপর দিয়ে লাফ দিয়ে খুব সহজেই অনেকটা রাস্তা দ্রুত পার করছে। সেই সাথে দুজন নিজেদের এনার্জিও ব্লক করে রেখেছে। ডিমনিক ফরেস্টের মধ্যে আপাতোতো টেস্টের জন্য অনেক চোখ কান রয়েছে, তাই দুজন তাদের পরিচয় এখানে ফাস করতে চাই না। যা কিছু করবে গোপনে।
-->>আচ্ছা মারফা আমরা তো চলে আসলাম তোমার জন্য। কিন্তু যদি জুনিয়র এলেক্সকে আমরা চিনতে না পারি।(মারফি)
বড় বোন হঠাৎ ছোট জনকে বললো কথাটা। মারফা এতোক্ষন অন্য চিন্তায় ছিলো, তাই এলেক্স এর নাম শুনতেই তার মুখ লাল হয়ে গেলো। সে উত্তর দিতে লাগলো,
-->>আমাদের যে কেউ দেখলেই বলে দিতে পারবে আমরা দুজন একে অপরের বোন। তাই জুনিয়র এলেক্সকে দেখলেও আমরা বলতে পারবো।
-->>যদি না বলতে পারো তাহলে?(মারফি)
মারফি একটা প্রশ্ন করলো যেটার উত্তর মারফা দিতে পারলে না। আসলেই কি সে চিন্তে পারবে না? হঠাৎ কিছু অস্বাভাবিক চিন্তা ভাবনা মারফাকে ঘিরে ধরলো৷ এরকম সে পূর্বে কখনো অনুভব করে নি।
-->>সেটা পরেই দেখা যাবে।(মারফা)
দুজনের মধ্যে নীরবতা দেখা দিতে লাগলো। কেউ কথা বললো না। একের পর এক ডিমনিক ফরেস্টের গাছের ডালের উপর দিয়ে লাফিয়ে দুজনে সেকেন্ড জোনের মধ্যে প্রবেশ করতে যাচ্ছে।
* * * * *
ডুফেস মনের খুশিতে লাফাতে ছিলো। তার কারন তার চেহারা অনেক সুন্দর হয়েছে। তার সোর্ডের ব্লেডে নিজের চেহারার প্রতিবিম্ব দেখে সে নিজের প্রতি গর্ববোধ করতে লাগলো।
-->>এলেক্স তুমি সিওর এভাবে আমি এলিন কে পটাতে পারবো?(ডুফেস)
-->>ওয়েল আমি সঠিক জানি না এলিনের টেস্ট কি রকম। তবে আমার বাবার থেকে শুনেছি এরকম লুকে যেকেনো ছেলেই মেয়েদের মনের মধ্যে গেথে যায়।(এলেক্স)
ডুফেস হঠাৎ আগ্রহী হলো এলেক্সের বাবার সম্পর্কে শোনার জন্য। যে এতো সুন্দর একটা টিপস জানে সে তো নিশ্চয়ই একটা লাভ গুরু হবে।
-->>এলেক্স তোমার বাবার তো মনে হয় তাহলে অনেক এক্সপিরিয়েন্স আছে?(ডুফেস)
-->>সঠিক বলতে পারবো না। তবে আম্মার থেকে যতটা শুনেছি এক সময়ে হাজার হাজার মেয়েদের মনে রাজ করতো সে।(এলেক্স)
এলেক্সের কথায় ডুফেসের চোখ উজ্জ্বল হয়ে গেলো। হাজার মেয়েদের মনে রাজ করতো একজন। আর সে এলেক্সের বাবা, ডুফেসের হিংসে হচ্ছে। যদি সে নোবেল না হয়ে এরকম কারো সন্তান হতো? ডুফেসের চিন্তা এগুলোই আসছে। যাইহোক সময় হলে একদিন সে সরাসরি কিছু টিপস নিয়ে আসবে এলেক্সের বাবার থেকে, তাই আপাতোতো সে এলেক্সকে ভালো বন্ধু রাখার চেষ্টায় ব্যস্ত হতে লাগলো।
-->>এলেক্স তুমি চিন্তা করো না। এরপরে যখন তোমার এট্রিবিউট আনলক হবে দেখবে হয়তো ফায়ার কিংবা লাইটনিং এট্রিবিউটই আনলক হবে।(ডুফেস)
ডুফেস এলেক্সকে শান্তনা দিতে লাগলো। সে জানে একজন ডার্ক এট্রিবিউটর এর জীবন অনেকটা কষ্টকর হয়ে যায়। যদি সে অন্য কোনো এট্রিবিউট আনলক করতে না পারে তাহলে তো তাদের জন্য জীবনটা হেল এর মতো হয়ে যায়। ডুফেস জানে না এলেক্স কিভাবে শুধু তার ডার্ক এট্রিবিউটের মাধ্যমে একাডেমিতে ঢোকার সুযোগ পেয়েছে, তবে এসব নিয়ে সে ভাবছে না আর। এই পর্যন্ত ডুফেসের সাহায্য কেউ করে নি। জেয়াব তো নামে মাত্র বন্ধু তার। কিন্তু এলেক্স যেহেতু তাকে সাহায্য করেছে তাই এটা সে ভুলবে না কখনো।
ডুফেস এবং এলেক্স তাদের ক্যাম্পে ফিরে আসলো। সবার নজর ডুফেসের দিকে গেলো। কেউ চিনতে পারছিলো না। যদিও চেহারায় মেকআপ ধরা যায় তবে এরকম হেয়ারকাট তারা কখনো দেখে নি। দুই পাশে চুল নেই, মাঝখানের চুল স্পাইক করা। যেটা নতুন একটা স্টাইল সবার জন্য। হয়তোবা নতুন নয়। এরকম কিছু বাউন্টি হান্টার রয়েছে যারা দুই সাইডে টাক করে এবং মাঝখানে অনেক বড় স্পাইক করা চুল থাকে। তবে ডুফেসের স্টাইল তাদের থেকে ভিন্ন। বাউন্টি হান্টারদের সেই লুকের মাধ্যমে ভয়ানক দেখায়। তবে ডুফেসকে একটু ভালোই দেখাচ্ছে সেই তুলনায়।
প্রথমে কেউ ডুফেসকে চিন্তে পারে নি। তাই অবাক হয়ে তাকি আছে। ডুফেস তার চুলটাকে পিছনের দিকে হাত দিয়ে ঠিক করলো। কারন সবাই তার দিকেই তাকিয়ে আছে। নিজের পেটটাকে ভিতরে নিয়ে সে হিরোর মতো একটা পোছ দিয়ে দাড়ালো।
তখনি মাইরা জিজ্ঞেস করলো,
-->>এলেক্স তুমি ডুফেস এর সাথে গিয়েছিলে না? ওকে তো দেখতে পাচ্ছি না। আর এটা কি ঔ টিমের কেউ?(মাইরা)
মাইরার প্রশ্নে ডুফেস বুক ফুলিয়ে ফেললো। সে গর্বে বলতে শুরু করলো,
-->>আমি তো সবাইকে আমার আসল চেহারা দেখাতে চাই নি। এটাই আমার আসল রূপ আসল চেহারা। আমিই হিরো ডুফেস।(ডুফেস)
ডুফেস দুই হাত দিয়ে আকাশে ড্যাপ দিলো এবং কথাটা বললো। ডুফেস কারো দিকে তাকাচ্ছে না, তবে সে বুঝতে পারছে সবাই তার দিকেই তাকিয়ে আছে। তাই তো তাদের হাসি মাখা মুখ সে দেখতে পাই নি। সবাই ডুফেসের কথায় এবং চেহারা দেখে মুখে হাত দিয়ে হাসতে লাগলো। তাদের হাসিটা যাতে শুনতে না পায় ডুফেস তাই কেউ শব্দ করে নি। ডুফেস যখন সবার দিকে তাকালো তখন সবাই স্বাভাবিক হওয়ার ভাব নিলো। এই আট-নয়দিনে সবার মাঝে অনেক ভালো একটা সম্পর্ক তৈরী হয়েছে। তাই কেউ ডুফেসকে কষ্ট দিতে চাই না।
সবাই ডুফেসের নতুন লুককে প্রশংসা করতে লাগলো। এটা চোখের ভালো লাগাতে নয়, বরং ডুফেসকে খুশি করাতে। তাই ডুফেসের মনের হিরো ভাবটা গেলো না।
* * * * *
দুই ক্যাম্প দুই পাশে তৈরী হয়েছে। যদিও দু টিমের লিডার একে অপরের সাথে থাকতে চাই না, তারপরও তাদের মধ্যকার ঝগড়ার জন্য তারা ছোটদের ক্ষতি হতে দিতে পারে না। তাই তারা একে অপরের সাথে কাজ করার জন্য চুক্তি তৈরী করেছে। দুটো টিম তাদের মধ্যে বেশ কিছু দূরত্ব নিয়ন্ত্রন করে যাতায়াত করবে। এতে করে দু টিম শক্তিশালী কোনো ডিমনিক বিস্টের সংস্পর্শে আসলে একে অপরের সাহায্য করতে পারবে।
চেইন তার ক্যাম্পের মধ্যে সবাইকে পরবর্তী প্লানের সম্পর্কে বলছে। সবাই মনোযোগ দিয়ে চেইনের কথা শুনছে,
-->>আরেকটা টিমের সাথে চুক্তিতে আসার ফলে আমাদের সুবিধা এবং অসুবিধা দুটোই দেখা যাবে। প্রথমে সুবিধার কথা বলি। যেহেতু আরেকটা টিম আমাদের সাহায্য করবে, তাই কোনো শক্তিশালী ডিমনিক বিস্ট আমাদের সামনে আসলে আমাদের সার্ভাইভ করার চান্স বেড়ে যাবে।(চেইন)
-->>তাহলে অসুবিধাটা কি?(ডুফেস)
চেইন সবার দিকে তাকালো একবার। সবাই মনোযোগ দিয়ে তার দিকেই তাকিয়ে আছে। একটা লজ্জাজনক সময় কেটেছে তার জন্য। তাই সেটাকে ভুলতে হলে তাকে হিরোগিরি দেখানো বন্ধ করতে হবে। একজন সত্য লিডারের মতো কাজ করতে হবে এখন থেকে।
-->>যেহেতু আমরা দুই টিম পাশাপাশি যাতায়াত করবো কিছুটা দূরত্ব নিয়ন্ত্রন করে তাই আমাদের সামনে খুব কম ডিমনিক বিস্ট আসবে।(চেইন)
ডুফেস, স্নিরা, এবা এবং মাইরা অবাক হলো চেইনের কথায়। ডিমনিক বিস্ট কম আশাটা একটা অসুবিধা কিভাবে হয়। এটা তো তাদের জন্য একটা ভালো জিনিস। কম ডিমনিক বিস্ট তাদের সামনে আসলে তাদের সার্ভাইভ করার চান্সও বেশী থাকবে। তবে এলেক্স এবং এলিন গম্ভীর হয়ে গেলো চেইনের কথায়।
"কম ডিমনিক বিস্ট মানে আমার লেভেল ও কম আপ হবে।"(এলেক্সের ভাবনা)
" কম ডিমনিক বিস্ট মানে আমার এনার্জি লেভেল কম বৃদ্ধি পাবে।"(এলিনের ভাবনা)
চেইন ডুফেসদের ভাবনা বুঝতে পেরে তাদেরকে বলতে লাগলো,
-->>আমি জানি তোমরা কি ভাবছো। যত কম ডিমনিক বিস্ট আমাদের সামনে আসবে ততই আমাদের সার্ভাইভ করার চান্স বেড়ে যাবে। কিন্তু আসলেই কি সেটা আমাদের জন্য ভালো হবে? আমাদের মূলত এই টেস্টে পাঠানো হয়েছে কেনো কেউ বলতে পারবে?(চেইন)
চেইনের কথায় এবা উত্তর দিতে লাগলো,
-->>এই টেস্টের মাধ্যমে আমাদের নিজেদের এনার্জি সম্পর্কে ধারনা বেশী বারবে। সেই সাথে লাইভ প্রাকটিস হবে যেটা আমাদের টাওয়ারের টেস্টের জন্য প্রয়োজন হবে।(এবা)
চেইন এবা এর কথায় একটা হাত তালি দিলো এবং বলতে লাগলো,
-->>তোমাদের সবাই এখানে নতুন এনার্জি ব্যবহারকারী। তাই নিজেদের এনার্জির সাথে তেমন ভালো সম্পর্ক হয়ে উঠে নি তোমাদের। সরাসরি প্রাকটিস এর মাধ্যমে তোমাদের ট্রেনিং সবচেয়ে বেশী তারাতারি বৃদ্ধি পাবে। আর সেটার জন্য ডিমনিক বিস্ট হান্ট করাটা প্রয়োজন। যত বেশী ডিমনিক বিস্ট হান্ট করতে পারবে তোমাদের এক্সপিরিয়েন্স তত বৃদ্ধি পাবে। একটা সময় পুরো একটা ডিমনিক বিস্টের দলকে একা একাই হান্ট করতে পারবে।
-->>আমি বুঝেছি, যেহেতু দুটো টিম একসাথে যাতায়াত করবো তাই বিস্ট গুলোও ভাগ হয়ে যাবে। এতে আমাদের ট্রেনিং এ ইফেক্ট পরবে।(মাইরা)
-->>হ্যা তাহলে বুঝতে পেরেছো। আমাদের তোমাদের স্পেল এবং আমাদের অউরা স্কিল গুলো শক্তিশালী করার জন্য আমাদের অধিক পরিমান ডিমনিক বিস্ট হত্যা করতে হবে।(চেইন)
-->>আমি কিছু লোকেশন সম্পর্কে জানি যেটা আমাদের সাহায্য করতে পারে। সেখানে অনেক দুই লেভেল এর ডিমনিক বিস্ট পাওয়া যাবে।(মিও)
-->>তুমি পূর্বে এখানে এসেছিলে?(লুবার প্রশ্ন হঠাৎ)
-->>হ্যা একবার এসেছিলাম। তবে জায়গাটা আমার সঠিক মনে নেই।(মিও)
-->>তাহলে তো কোনো সমস্যা নেই। মিও মনে করবে জায়গাটা কোথায়, এবং আমরা সেগুলো হত্যা করবো।(চেইন)
সবার মিটিং শেষ হয়ে গেলে যে যার যার তাবুর মধ্যে প্রবেশ করতে লাগলো। মাইরা এলিনের সাথে একই তাবুতে যাওয়ার জন্য পা বারাচ্ছিলো। তবে এলিন তাকিয়ে আছে মিও এর দিকে,
"জানি না কেনো? তবে তার চোখের দিকে তাকালেই আমার শরীর কাপতে শুরু হয়। কে এই মিও? মনে হচ্ছে ইচ্ছা করে সে তার পরিচয় লুকানোর চেষ্টা করছে।"
এলিন মাইরার সাথে তাবুর মধ্যে প্রবেশ করতে লাগলো। তার মনে হঠাৎ কিছু অজানা প্রশ্ন ভাসতে লাগলো। যেগুলোর উত্তর সে খুজে পাচ্ছে না। সে তাবুর মধ্যে এসে ঘুমিয়ে পরলো মাইরার সাথে।
*
(এলিনের স্বপ্নে)
কালো পোষাকে একটা লোক একটা ছোট ছেলের দিকে হাত বাড়িয়ে আছে। ছেলেটার পুরো শরীর রক্তে লাল হয়ে আছে। হাতে তার একটা ছুড়ি রয়েছে। ছেলেটা দেখতে একটা জীবন্ত কঙ্কাল ছাড়া কিছুই না। তার শরীরের প্রতিটা হাড় গোনা যাচ্ছে। কালো পোষাকে ঢাকা লোকটা তার হাত ছেলেটার দিকে দিয়ে বলতে লাগলো,
-->>নাম কি তোমার?
ছেলেটা লোকটার দিকে তাকালো না। সে কিছু বলছেও না। লোকটা আবারো জিজ্ঞাসা করলো?
-->>একটা ইচ্ছা যদি দেই তোমাকে, তাহলে কি চাইবে?
ছেলেটা এবার লোকটার দিকে তাকালো। তার চোখ দুটো দিয়ে পানি পরছিলো। হাত এবং পুরো শরীরে তার পরিবারকে হত্যা করা খুনিদের রক্ত মেখে আছে। ছেলেটা মুখে একটা হাসি নিয়ে বলতে লাগলো,
-->>ইচ্ছা? ওয়ার্ল্ডকে আমি এবজোর্ব করতে চাই।
ছেলেটার ইচ্ছার কথা শুনে লোকটা ছেলেটার হাতকে ধরলো। এবং বলতে লাগলো,
-->>আজ থেকে তোমার নাম বিলজবাব। গ্লাটোনি তোমার ক্ষমতা।
লোকটা কথাটা বলেই ছেলেটাকে নিয়ে অদৃশ্য হয়ে গেলো। কোথায় গেলো কেউ জানে না।
* * *
To Be Continue
* * *
কেমন হলো জানাবেন।