[প্রথমেই বলি গল্পটা পুরো কাল্পনিক, কেউ বাস্তব কিংবা ধর্মের সাথে তুলনা করবেন না]
#ডিম্যান_কিং_সিরিজ#
#সুপ্রিম_বিয়িং#
পর্ব:৩৩
লেখকঃহৃদয় বাপ্পী
.
.
.
জ্যাক প্রথম ফ্লোরের ফিল্ড বসকে দ্বিতীয়বারের মতো হত্যা করেছে। যেহেতু সে এখনো পার্টিতে যুক্ত রয়েছে তাই তাদের এক্সপি পয়েন্ট আবারো ভাগ হয়ে গেলো। পূর্বে দুইজনই এক হাজার করে এক্সপি পেয়ে লেভেল ১ এ প্রবেশ করেছে। কিন্তু এবার সেই এক্সপিও অর্ধেক হয়ে তারপর ভাগ হয়েছে। দ্বিতীয় লেভেলে প্রবেশের জন্য পাঁচ হাজার এক্সপি পয়েন্ট দরকার। আর এই ফিল্ড বস জ্যাককে মাত্র পাঁচশত এক্সপি পয়েন্টই দিয়েছে। যতদূর জ্যাকের তথ্য আছে, আবার এটাকে হান্ট করলে এর এক্সপি আবারো অর্ধেক কমে যাবে। আর এটায় মূল কারন এক বসকে কোনো প্লেয়ার দ্বিতীয়বার হত্যা করতে চাই না। বিশেষ করে তাদের জন্য অসুবিধা হয় যারা অনেক বড় পার্টিতে বসকে হান্ট করে।
জ্যাক আপাতোতো তার এই এক্সপি নিয়ে অনেকটা খুশি, যেহেতু সে তার পাওয়ার সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত একটা ধারনা পেয়েছে। প্রথমে শূন্য লেভেলে থাকায় সেখানে জ্যাকের পাওয়ার একটা সাধারন মানুষের লিমিটেই ছিলো। কিন্তু এখন,
-->>এখন আমার সেই লিমিট ভেঙে গিয়েছে এবং আমি অন্য একটা ব্যক্তিতে পরিনত হয়েছি।(জ্যাক)
জ্যাক জায়গাটা থেকে বের হতে শুরু করলো। সে অনেকক্ষন হলো এখানে দাঁড়িয়ে আছে। মূলত প্রাক্তন রুলার অফ ডেডের কথাগুলো তাকে এখানে স্তব্ধ করে রেখেছিলো। কথাগুলো ভয়েস রেকর্ডের মতো ছিলো, তাই জ্যাক কোনো উত্তর আশা করেও পায় নি। আর এটা তাকে অনেক রাগান্বিত করেছে। জ্যাক সেসব ভাবনা আপাতোতো মাথা থেকে দূরে সরিয়ে তার পা বারালো হাটার জন্য। তার এক পা বারানোর সাথে সাথেই পুরো ফ্লোর ভেঙে গেলো। গুহাটা অনেক শক্তিশালী ছিলো, যার মধ্যে জ্যাক তার সোর্ড স্কিল ১ ব্যবহার করেও কোনো কিছু করতে পারে নি। সেই গুহার ফ্লোরটা কোনো কথা বা শব্দ ছাড়ায় ভেঙে গেলো। যেহেতু জিতু বড় রুমটার মধ্যে ছিলো না তাই সে ভাঙা ফ্লোরের সংস্পর্শে আসলো না। শুধু ভেঙে নিচে পরেছে ভিতরের রুমটুকু।
-->>সিনিয়র, আপনি কি ঠিক আছেন?(জিতু)
জিতু এগিয়ে আসলো ভাঙা মেঝে কাছে। নিচে কালো অন্ধকার হওয়ায় কিছুই দেখা যাচ্ছে না। সেই সাথে জ্যাকেরও কোনো উত্তর পাওয়া যাচ্ছে না। এরকম জায়গা সম্পর্কে বুড়ো লোকটা কোনো তথ্য দিতে পারে নি, তাইতো জিতু বুঝতে পারছে না কি করবে। সে একবার ভাবলো লাফ দিয়ে দেখবে নিচে কি হয়েছে। কারন মেঝের সকল পাথর নিচে পরেছে, হয়তো জ্যাক সেই পাথরের ভিতরে আটকা পরেছে। কিন্তু জ্যাকের উত্তর আসলো,
-->>আমি ঠিক আছি জিতু। কোনো চিন্তা করতে হবে না। তুমি ওখানেই অপেক্ষা করো, আমি একটু পরই চলে আসছি।(জ্যাক)
জিতু কোনো কিছু না বলেই চুপ হয়ে গেলো। সে বুঝতে পারলো জ্যাক ঠিক আছে, তাই চিন্তা না করে সেখানেই নিজের ফিস্ট স্কিল নিয়ে ট্রেনিং করতে লাগলো। অন্যদিকে জ্যাক বেশ আজব একটা জায়গার মধ্যে প্রবেশ করেছে। উপরের দিকে কিছুই দেখা যাচ্ছে না। জ্যাক উপরে উঠার চিন্তা আপাতোতো ভুলে গেলো, কারন সে অনেক সুন্দর একটা জায়গার মধ্যে প্রবেশ করেছে। হয়তো এটা তার ভাগ্যই ছিলো তাই।
* * *
গ্রিড তার মনিটরের স্ক্রিনে সকল কিছু দেখতে ছিলো। ড্যানজনের মধ্যে কে কি করছিলো সব কিছু তার নজরের মধ্যে ছিলো। কিন্তু এই সব কাজই অনেকটা বোরিং ছিলো। আর সেই বোরিং ভাবটা হঠাৎ এর জন্য কেটে গেলো। তার নজর ঠিক প্রথম ফ্লোরের এক প্লেয়ারের উপরে পরলো। শুধু তার নজর নয়, গ্রিডের সাথে কন্ট্রাকরত প্রায় অনেক গডের নজরই সেই ছেলের উপরে। আর সে হলো জ্যাক। আপাতোতো সবার ধারনা সে যেকোনো একটা ডেড গডের অ্যাভেটার, কিন্তু সেটা সিওর বলা যাচ্ছে না।
-->>সকল ডেড গডদেরই ব্যান করা হয়েছে নতুন কোনো অ্যাভেটার সংগ্রহ করা থেকে, তাই কোনো ডেড গডই সাহস করবে না। কিন্তু একমাত্র লিচ্ দ্যা আনডেডের মাধ্যমেই এটা সম্ভব। যেহেতু সে নিখোঁজ।(গ্রিড)
-->>না সে কোনো গডেরই অ্যাভেটার নয়।
-->>আহহহহহ।(গ্রিড)
গ্রিড ভয় পেয়ে গেলো। সে মনোযোগ দিয়ে জ্যাককে ফলো করছিলো আর এমন সময় পিছন থেকে একজন হঠাৎ কথা বলে তাকে ভয় পাইয়ে দিয়েছে।
-->>এ্যাপোলো আমি এর পূর্বেও বলেছি এভাবে আমাকে ভয় না দেখাতে।(গ্রিড)
পিছন থেকে এ্যাপোলো বা এ্যাপোলোর অ্যাভেটার কথাটা বলেছিলো। গ্রিড অনেকটা অবাক হয়েছে হঠাৎ কথাটার জন্য। এ্যাপোলো মূলত এসেছিলো ডিম্যান প্রিন্স অফ গ্রিডের সাথে কিছু কথা বলতে, কিন্তু তার নজরে বেশ ভালো কিছু চলে আসলো।
-->>এই জায়গাটা থেকে খুব পরিচিত ঘ্রাণ আসছে।(এ্যাপোলো)
এ্যাপোলো স্ক্রিনে থাকা জ্যাকের অবস্থানকে অনুভব করতে পারছিলো। যেহেতু সে একজন গড এবং অসীম ক্ষমতার অধিকারী তাই এক ওয়ার্ল্ডের মধ্যে তার অ্যাভেটার দিয়ে যে কারো এনার্জির ঘ্রাণ চেনা এবং খুজে বের করা একদম সহজ কাজ। আর জ্যাক যে জায়গায় রয়েছে সেখান থেকে খুব পরিচিত একটা ঘ্রাণ পাওয়া যাচ্ছে।
-->>আমি তোমাকে সাবধান করেছি। কিন্তু তুমি মনে হচ্ছে আরো বড় একটা ঝামেলার মধ্যে পরে যাবে।(এ্যাপোলো)
-->>সব ঝামেলা শুরু আগেই সব কিছু শেষ যাবে। তাই কেউ বুঝতেই পারবে না।(গ্রিড)
-->>যায়হোক, আমি আমার দেওয়া ওয়ার্নিং দিলাম। এখন তোমার কাজ তুমি করো। আমি এসেছিলাম একটা কথা জানাতে।(এ্যাপোলো)
-->>হ্যা বুঝতে পেরেছি কি বলতে যাচ্ছো। কিন্তু গডেস এথিনার অ্যাভেটারকে হত্যার মাধ্যমে তো আমি তার সবচেয়ে বড় শত্রু হতে চাই না।(গ্রিড)
-->>তুমিই তো বলেছো এই টাওয়ারের মধ্যে সমস্ত কন্ট্রোল তোমার হাতেই। তাই এতোটা সহজ কাজ করা কোনো সমস্যা হবে বলে আমার মনে হয় না। আর বিনামূল্যে তো এটা করছো না।(এ্যাপোলো)
-->>সমস্ত কন্ট্রোল আমার হাতে থাকলেও আমি এথিনার শত্রু হতে চাই না।(গ্রিড)
-->>তাহলে কি আমার শত্রু হতে চাও?(এ্যাপোলো)
এ্যাপোলো কথাটা অনেকটা সিরিয়াস হয়ে বললো। গ্রিড বুঝতে পারছে না সে এখানে কি করবে। দুটো গড এবং গডেসই অলিম্পাসের সেরা গডদের মধ্যে রয়েছে। আর তাদের বিরুদ্ধে গ্রিড একা কিছুই করতে পারবে না। এথিনার অ্যাভেটার নতুন হওয়ার ফলে তাকে নিয়ে বেশী চিন্তা না থাকলেও এ্যাপোলোর সাথে কোনো ভাবেই শত্রুতা করতে চাচ্ছে না গ্রিড। কারন এ্যাপোলোর এই অ্যাভেটারই,
"তার অ্যাভেটার একজন হিরো। আর তার সাথে এখন শত্রুতা মানে নিজের জন্য মাটি খুঁড়া।" (গ্রিড ভাবছে)
-->>তাহলে আমি ভেবে নিচ্ছি তুমি শীঘ্রই এথিনাকে এখান থেকে পাঠানোর ব্যবস্থা করবে।(এ্যাপোলো)
এ্যাপোলো এই কথাটা বলেই গ্রিডের সামনে থেকে চলে গেলো। টেলিপোর্টেশন ম্যাজিকের ব্যবহার করে সে তার অ্যাভেটারের ওয়ার্ল্ডে চলে আসলো। গড-গডেস তাদের অ্যাভেটার তৈরী করিয়ে তাদের বিভিন্ন রকম টেস্ট দিয়ে থাকে। আর এই টেস্টে অ্যাভেটার গুলো পাশ করতে পারলে তারা তাদের গডের ক্ষমতা গুলো ব্যবহার করতে পারে। আর এই টেস্টে পাশ করলেই অ্যাভেটার গুলো একটা টাইটেল লাভ করে। আর সেই টাইটেল হলো হিরো। আর এ্যাপোলোর অ্যাভেটার সেই হিরোদের মধ্যে একজন। যদিও আপাতোতো সময়ের জন্য তার অ্যাভেটারের শরীর সে কন্ট্রোল করছিলো, কিন্তু অধিকাংশ সময়েই অন্যান্য অ্যাভাটারের মতোই তার হিরোও নিজের মতোই থাকে।
-->>আমি জানি না আঙ্কেল কি ভাবতেছে এখন। কিন্তু যতদূর আমি তাকে চিনি, তার ভিতরে অনেক ভাবনায় রয়েছে। আর সেটা আমি কিংবা এথিনাকে কখনোই সে জানাবে না। যদিও আমরা চুপ রয়েছি এই বিষয়ে কিন্তু এরিস মোটেও এই বিষয়ে চুপ থাকবে না। তাইতো এথিনাকে আমাকে এখান থেকে নিয়ে যেতে হবে।(এ্যাপোলো)
এ্যাপোলো তার অ্যাভেটারের শরীর থেকে চলে গেলো। আর তার অ্যাভেটার তার নিজের দৈনন্দিন কাজে যুক্ত হয়ে গেলো।
* * * *
অন্যদিকে গুহার ফ্লোর ভেঙে যাওয়ার ফলে জ্যাক মেঝের নিচে পরে গিয়েছে। উপরের দিকে কোনো কিছু দেখা যাচ্ছে না। একটা কালো ছায়ার মতো জিনিস উপরের আলোকে ব্লক করে রাখছে। জ্যাক প্রথমে বুঝতে পারে নি কোথায় আসলো সে। কিন্তু আশে পাশের জায়গাকে ভালে করে দেখার পর সে বুঝতে পারলো।
-->>আমি ভাবি নি এক রুমের নিচে আরেকটা রুম থাকবে।(জ্যাক)
জ্যাকের মোবাইল ফোনে ম্যাসেজ চলে আসলো।
<প্লেয়ার জ্যাক, ড্যানজনের প্রথম ফ্লোরের হিডেন রুমে প্রবেশ করেছে। প্রথম ফ্লোরের হিডেন বস জন্ম নিচ্ছে।>
<হিডেন বসকে হত্যা ছাড়া প্লেয়ার জ্যাক এই জায়গা থেকে বের হতে পারবে না।>
জ্যাক মোবাইলের স্ক্রিনের দিকে তাকালো। মেসেজ দুটো তার নজরে পরলো। মনটা চাঙ্গা হয়ে গেলো তার কিছুক্ষনের জন্য। প্রথম ফ্লোরের হিডেন বসকে আজ পর্যন্ত কোনো প্লেয়ারই খুজে বের করতে পারে নি। কিন্তু জ্যাকই প্রথম ব্যক্তি য কিনা প্রথম ফ্লোরের হিডেন বসকে খুজে বের করেছে।
-->>প্রথমে ফিল্ড বসকে দুই বার হত্যা করেছি, এবং এখন হিডেন বসকে খুজে পেলাম। হয়তো আমার ভাগ্যটায় ভালো ছিলো।(জ্যাক)
জ্যাক দাঁড়িয়ে ছিলো নিজ স্থানেই। সে তার আশেপাশের বিষয়বস্তুকে ভালো করে দেখে নিচ্ছে। একটা বিশাল রুমের ঠিক মাঝখানে জ্যাক দাঁড়িয়ে ছিলো। উপর থেকে মেঝে ভেঙে পরার ফলে তার দাঁড়ানোর জায়গাতে পাথরের উঁচু স্তর তৈরী হয়েছে। জ্যাক সেখান থেকে আস্তে আস্তে নেমে গেলো। সে নেমে দাঁড়ানোর সাথে সাথে পুরো ফ্লোরটা কেঁপে উঠলো। জ্যাক দাঁড়িয়ে থাকতে না পেরে ফ্লোরের উপরে পরে গেলো। একটা কালো এনার্জি পুরো রুমের মধ্যে ভরে গেলো। যেটার মধ্যে জ্যাকের দম আটকে যেতে লাগলো। এনার্জিটা খুব পরিচিত লাগলো জ্যাকের কাছে। যদিও সে সম্পূর্ণ ভাবে বুঝতে পারছে না।
গুহার নিচের এই ফ্লোরের মধ্য থেকে ডেড এনার্জি বের হচ্ছিলো। যেটা অনেক বড় সড় একটা ভূমিকম্পের সৃষ্টি করেছে। কাপনিটা অনেক শক্তিশালী হওয়ায় জ্যাক ঠিক ভাবে দাঁড়িয়ে থাকতে পারে নি। আর এই সময়ের মধ্যেই রুমের এক পাশ থেকে একটা মনস্টার স্পন হতে শুরু করলো। মনস্টারটা অনেকটা একটা ফক্সের মতো, যার মধ্য থেকে মারাত্মক একটা এনার্জি বের হতে শুরু করলো। জ্যাক পূর্বে যদিও একটু থাকতে পেরেছিলো এই অবস্থায়, কিন্তু বর্তমানে তার অবস্থা একদম খারাপের দিকে। সারা রুমের মধ্য দিয়ে ডেড এনার্জি ভরে গেলো, যার মধ্যে একটা জীবিত বস্তুও এক নিমিষেই মারা যাবে। কিন্তু জ্যাকের কাছে রুলার অফ ডেড এর রিং রয়েছে এবং সেই রিং এ থাকা ডেড এনার্জি তার শরীরের চারপাশ দিয়ে একটা ছোট পাতলা ব্যারিয়ার তৈরী করেছে। যদিও ব্যারিয়ারটা শক্তিশালী তারপরও সেটা রুমের মধ্যে থাকা এনার্জি থেকে জ্যাককে পুরোপুরি ভাবে নিরাপদ করতে পারছে না। জ্যাকের দম নিতে কষ্ট হচ্ছে, এমন মনে হচ্ছিলে কেউ অক্সিজেনের সাপ্লাই বন্ধ করে দিয়েছে তার জন্য।
জ্যাকের সামনে একটা মনস্টারের আবির্ভাব হলো। সেটাকে কোনো মনস্টার বলা যায় না। কারন তার মধ্য থেকে যে এনার্জি বের হচ্ছিলো সেটা কখনোই সাধারন কোনো মনস্টারের হতে পারে না। একটা কালো রঙের একটা জ্যাকেল জ্যাকের সামনে স্পন হয়েছে, যার এনার্জি পরিমাপ করতে পারছে না জ্যাক কোনো ভাবেই। জ্যাকের মুঠোফোনে ম্যাসেজ আসলো,
<প্রথম ফ্লোরের হিডেন বস, আনুবিস। কোনো প্লেয়ারের জন্য ডিজাইন করে হয় নি এই ফ্লোরের বস, প্লেয়ার জ্যাকই প্রথম ব্যক্তি যে কিনা কোনো গডের অ্যাভেটার না হয়েও সরাসরি একজন গডকে দেখার সুযোগ পাচ্ছে।>
* * *
To Be Continued
* * *
ছোট হওয়ার জন্য দুঃখিত। আসলে অনেক ঘুম পাচ্ছিলো