[প্রথমেই বলি গল্পটা পুরো কাল্পনিক, কেউ বাস্তব কিংবা ধর্মের সাথে তুলনা করবেন না]
#Demon_King#
পর্ব:৫৮
লেখকঃহৃদয় বাপ্পী
.
.
.
এলেক্স লুসিফারের সাথে কথা বলতে লাগলো। দুজনে অনেক বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছে। আলোচনা বলতে লুসিফার শুধু এলেক্সের প্রশ্নের উত্তর দিয়েছে। এলেক্সের মনের মধ্যে অনেক অজানা প্রশ্ন ছিলো, আর সেগুলোই সাধারনত লুসিফার এক এক করে উত্তর দিচ্ছে। যদিও লুসিফার সব গুলো প্রশ্নের উত্তর দিতে পারবে না, তারপরও এলেক্সের কিছুটা হলেও সাহায্য হচ্ছে। এলেক্স যে এক সময়ে হৃদয় নামক এক ছাব্বিশ বছরের যুবক ছিলো, তার জীবন হঠাৎ এভাবে কিভাবে পরিবর্তন হতে পারে। যদিও তার স্বপ্নের কথা এখনো মনে আছে তারপরও তার একটা ইচ্ছার জন্য এসব কিছু এভাবে চেন্জ হতে পারতো না কখনো। এলেক্স প্রথমে নিজের ইচ্ছাটাকেই দোষী মনে করলে লুসিফারের সাথে কথা শেষ হওয়ার পরে সে বুঝতে পেরেছে তার ইচ্ছাটা কোনো ভাবেই উক্ত ভবিষ্যতের সাথে সম্পর্কযুক্ত নয়। হ্যা এটা ঠিক যে হৃদয়ের ইচ্ছা পূর্ণ না হলে সেখানে অন্যকারো ইচ্ছা পূর্ণ হতো ঠিকই, কিন্তু এই বলে এটা নয় যে হৃদয়ের ইচ্ছাটা কোনো ভুল ছিলো। সে যদি ইচ্ছাটা না ও চাইতো তাহলে যা হবার সেটাই হতো।
"তাহলে আমি সেই ইচ্ছাটা না চাইলেও পৃথিবীতে টাওয়ারের আবির্ভাব হতো।" (এলেক্স ভাবছে)
সেভেন ডিম্যান টাওয়ার মূলত ডিম্যান কিং এর তৈরী করা সাত ডিম্যান প্যালেস। এই সাত প্যালেসের মধ্যে সাত প্রিন্স ট্রেনিং করতো এবং তারা শক্তিশালী হতো। অনেকটা বলা চলে এটা তাদের নিজস্ব ট্রেনিং গ্রাউন্ড ছিলো। তবে ডিম্যান কিং মারা যাওয়ার পর থেকে এই সাত ডিম্যান প্যালেস সাত ডিম্যান টাওয়ার নামে পরিচিত হয়। প্যালেস গুলোর সর্বোচ্চ কন্ট্রোল ছিলো ডিম্যান কিং এর হাতে। তবে ডিম্যান কিং মারা যাওয়ার পর সেই টাওয়ারের কন্ট্রোল চলে যায় সাত ডিম্যান প্রিন্সদের হাতে। একমাত্র ডিম্যান প্রিন্স অফ প্রাইড বাদে বাকি সবাই তাদের জীবন বাঁচানোর জন্য এক্সব্লক থেকে বেরিয়ে আসে। আর জোরপূর্বক বেরিয়ে আসার ফলে তাদের সবাইকে অনেক মারাত্মক শাস্তি ভোগ করতে হয়েছে। সবাই তাদের পাওয়ার এবং শরীর হারিয়ে ইটার্নাল স্লিপের মধ্যে প্রবেশ করেছিলো। ডিম্যান কিং মারা যাওয়ার পূর্ব মুহুর্তে সকল ডিম্যান প্রিন্সদের তাদের নিজস্ব প্যালেসের মধ্যে তাদের সউলকে আটকে টাওয়ার থেকে বের হওয়ার সুযোগ করে দেয়। আর এর ফলেই তারা নিরাপদে সকল গডদের হাত থেকে বেঁচে ফিরে।
তবে একমাত্র লুসিফারই ছিলো সাত ডিম্যান প্রিন্সদের মধ্যে যার সউল সিল হয়েছিলো না। ডিম্যান কিং যখন শক্তিশালী গড, উচ্চ গড এবং উচ্চতর গডদের সাথে ফাইট করছিলো, তখন লুসিফারই একমাত্র ব্যক্তি ছিলো যে ডিম্যান কিং এর পাশে ছিলো। এমনকি ডিম্যান কিং এর মৃত্যুর আগ মুহূর্তেও সে ডিম্যান কিং এর পাশে ছিলো। লুসিফারের মৃত্যুও ডিম্যান কিং এর সাথে হতো, কিন্তু শেষ পর্যায়ে ডিম্যান কিং তার শেষ পাওয়ারটুকুও লুসিফারকে বাঁচানোর জন্য শেষ করে দেয়। আর যার ফলে লুসিফার ঠিকমতো এক্সব্লকের বাইরে চলে এলেও ডিম্যান কিং সেখানেই গত, উচ্চ গড এবং উচ্চতর গডদের সাথে থেকে যায়। ডিম্যান কিং এমন একটা অস্তিত্ব ছিলো যে কিনা উচ্চতর গডদের মধ্যে শক্তিশালী ছিলো। তাই তো তার ক্ষমতাকে সবাই ভয় করতো। আর সেই কিং এর সবচেয়ে বিশ্বস্ত লোকই ছিলো লুসিফার দ্যা ওয়ান।
-->>তাহলে তুমি বলতে চাচ্ছো, ডিম্যান কিং মারা গিয়েছে এবং সাত ডিম্যান প্রিন্সকে এখন তাদের মধ্যে ফাইট করতে হবে এবং শেষে যে থাকবে সেই ডিম্যান কিং এর জায়গা দখল করতে পারবে?(এলেক্স)
এলেক্স কৌতূহল মনে জিজ্ঞাসা করলো। যদিও সব বিষয় তার কাছে ক্লিয়ার না, তারপরও হালকা ভাবে সে বুঝতে পেরেছে। লুসিফার একজন ডিম্যান প্রিন্স হলেও বেশী ডিটেইলস সেও জানে না। যেহেতু সে অন্য ডিম্যান প্রিন্স এবং ডিম্যান কিং কে কখনো দেখে নি নিজ চোখে, তাই সে অনেক কিছুই বিস্তারিত জানে না। তার চাকর যারা রয়েছে তাদের মধ্য থেকে যা শুনেছে এবং নিজের লুসিফার দ্যা টু এর থেকে যতটুকু শুনেছে ততটুকু সম্পর্কেই লুসিফার দ্যা থ্রি জানে। আর তার জানার মধ্যে ডিম্যান কিং মারা গিয়েছে টাওয়ারের মধ্যে। আর নতুন ডিম্যান কিং হওয়ার যোগ্য সাত ডিম্যান প্রিন্সই রাখে। সাতজন ডিম্যান প্রিন্সদের মধ্যে সবথেকে শক্তিশালী ডিম্যান প্রিন্সই সুযোগ পাবে পরবর্তী ডিম্যান কিং হওয়ার। ডিম্যান কিং একটা সাধারন টাইটেল নয়, আর লুসিফার সবথেকে শক্তিশালী হওয়ার পরও সেই টাইটেল পাওয়ার আশা করছে না।
-->>বর্তমানে ডিম্যান কিং এর জায়গাটা ফাঁকা রয়েছে, তাই ডিম্যান ওয়ার্ল্ডের মধ্যে অনেকের চোখই সেই জায়গার দিকে রয়েছে।(লুসিফার)
-->>আমার জানা মতে তো শুধু সাত ডিম্যান প্রিন্সই ডিম্যান কিং হওয়ার যোগ্যতা রাখে।(এলেক্স)
-->>আমার বলার ভুল মানে বুঝতে পেরেছো তুমি। যদিও আমি বলেছি যে শক্তিশালী ডিম্যান প্রিন্সই পরবর্তী ডিম্যান কিং হওয়ার যোগ্যতা রাখে, কিন্তু তাই বলে এটা নয় যে সে ডিম্যান কিং হতে পারবে।(লুসিফার)
-->>মানে?(লুসিফার)
-->>জিনিসগুলো শুধু ডিম্যানদের জন্যই বরাদ্দ। যেহেতু তুমি একজন ডিম্যান নও তাই এই কথাটা আমি বলতে পারছি না তোমাকে।(লুসিফার)
এলেক্সের মনে আবারো চিন্তা বারতে লাগলো। যদিও তাদের কথোপকথন সাধারন ছিলো যার মানে অন্য কেউ বুঝবে না, কিন্তু এলেক্স ঠিকই তার মধ্য দিয়ে নিজের বেশ কিছু প্রশ্নের উত্তর পেয়েছে। সব যোগ করলে এলেক্স যেসব জিনিস জানতে পেরেছে তা হলো, সাত টাওয়ার যেগুলো যথাক্রমে টাওয়ার অফ প্রাইড, টাওয়ার অফ র্যাথ, টাওয়ার অফ গ্লাটোনি, টাওয়ার অফ গ্রিড, টাওয়ার অফ এনভি, টাওয়ার অফ লাস্ট এবং সর্বশেষ টাওয়ার অফ স্লোথ। এই টাওয়ার গুলো ডিম্যান কিং এর হাতের তৈরী ছিলো যেগুলোকে ডিম্যান প্যালেস বলা হতো। আর সেই ডিম্যান প্যালেসের মধ্যে সাত ডিম্যান প্রিন্স নিজেদেরকে শক্তিশালী করার জন্য ট্রেনিং করতো। ডিম্যান ওয়ার্ল্ডের মধ্যে সবচেয়ে শক্তিশালী অস্তিত্ব ডিম্যান কিং। কিন্তু এমন নয় যে এক ব্যক্তিই সারা জীবন ডিম্যান কিং থাকবে। ঠিক যেমন কোনো ডিম্যান প্রিন্সকে সাধারন কোনো ডিম্যান হারালে সেই সাধারন ডিম্যান, ডিম্যান প্রিন্স হতে পারে। আবার অন্যদিকে যদি কোনো ডিম্যান প্রিন্স বা সাধারন ডিম্যান, ডিম্যান কিং কে হারাতে পারলে ডিম্যান কিং হতে পারবে।
এলেক্স আরো বুঝতে পারলো সাত টাওয়ারের রহস্য এবং কেনো সেগুলো বিভিন্ন ওয়ার্ডের মাঝে উদয় হয়েছে। টাওয়ার অফ প্রাইড বাদে বাকি ছয় টাওয়ার ভিন্ন ছয়টা ওয়ার্ল্ডের মধ্যে উদয় হয়েছে মূলত ছয়টা ডিম্যান প্রিন্সের রেইনকার্নেটের জন্য। ডিম্যান প্রিন্সদের এক্সব্লক থেকে বের হওয়ার জন্য নিজেদের পাওয়ার এবং শরীরকে ত্যাগ করতে হয়েছে। তাছাড়াও অনেক রহস্য রয়েছে যেগুলো এখনো এলেক্সের মাথায় প্রশ্নই হয়ে আছে। এলেক্স আপাতোতো এবিষয়ে চিন্তা বাদ দিলো। তার চিন্তা আবার পূর্বের জায়গায় চলে আসলো।
লুসিফার অন্য বিষয় নিয়ে বেশী কথা বলে না। তার বেশীর ভাগ কথায় নিজেকে নিয়ে এবং লুসিফার দ্যা ওয়ানকে নিয়ে। যদিও প্রথম লুসিফারের কোনো কিছু সে নিজ চোখে দেখে নি তারপরও তার বাবার থেকে কাহিনী শুনতে শুনতে তার ব্যাপারে অনেক কিছুই জানতে পেরেছে। আর এলেক্সের সাথে সেই বিষয়েই কথা বলছিলো সে। এলেক্স যদিও আগ্রহ দেখাচ্ছে, কিন্তু তার এ কথা গুলো শুনতে মন চাচ্ছিলো না। কিন্তু হঠাৎ একটা ইন্টারেস্টিং কথার মধ্যে আটকে গেলো লুসিফার।
-->>লুসিফারের সব কাহিনীর মধ্যে আমার একটা কাহিনী সবচেয়ে বেশী ভালো লাগে। সময়টা ছিলো যখন মাংকি কিং সকল গডদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষনা করেছিলো, মাংকি কিং তার বেশ অনেক গড এমনকি উচ্চ গডদের হত্যা করেছিলো সেই যুদ্ধে। আর সেই সময়েই মাংকি কিং এবং প্রথম লুসিফারের দেখা হয়। মাংকি কিং যে সে সময়ে একটা সাধারন উচ্চ গডকেও হত্যা করতে পারতো, সেখানে লুসিফার নতুন নতুন ডিম্যান প্রিন্স হয়েছিলো। মাংকি কিং এবং লুসিফারের মধ্যে অনেক ভয়ানক একটা লড়াই হয় তখন, যার শেষ ফল মাংকি কিং হেরে যায়।(লুসিফার)
লুসিফার বুক ফুলিয়ে কথাটা বললো। মাংকি কিং, সে এমন একটা চরিত্র যেটা সম্পর্কে এলেক্স পূর্বেও জানতো। গেম নিয়ে কাজ করার সুবাদে এলেক্সের পূর্বের সময়ের সব স্মৃতিই আছে। যদিও সে নতুন একটা শরীরে এসেছে, তারপরও তার মাইন্ড চেন্জ হয় নি। আর এজন্য মাইথোলজি সম্পর্কে তার ধারনা এখনো রয়েছে। মাংকি কিং, যে বানরদের একটা কিং ছিলো, যদিও সে উচ্চতর গডদের খাতায় পরে না, তারপরও তার ক্ষমতা নির্দিরায় একজন উচ্চ গডের খাতায় পরে। বিশেষ করে সেই সময়ের পর যখন সে দ্বিতীয়বার যুদ্ধ করে সকল গডদের সাথে।
এলেক্স যদিও মাংকি কিং এর কাহিনী এতোদিন কাল্পনিক মনে করতো, কারন তার পড়া একটা নোভেলের মধ্যে মাংকি কিং এর পুরো কাহিনী ছিলো যার নাম, "জার্নি টু দ্যা ওয়েস্ট"। সেখানে মাংকি কিং এর যেসব বিবরণ ছিলো সব কিছুই লুসিফারের কথায় মিলে যাচ্ছে। আর এজন্যই এলেক্সের মাথায় আরো চিন্তা চলে আসলো। যদিও সে এসব বিষয় হবে এটা আগেও জানতো। কিন্তু সব কিছু যে এভাবে মিলে যাবে এটা এলেক্স ভাবে নি।
"ওয়েল আনডেড টার স্মৃতি এখন আসছে আমার কাছে।" (এলেক্স মনে মনে নিজেকে বলতে লাগলো)
লিচ্ দ্যা আনডেডকে এবজোর্ব করার ফলে তার কিছু স্মৃতি এলেক্সের স্মৃতির সাথে মার্জ হয়েছে। কিন্তু সে স্মৃতি সব সময় এলেক্সের মনে পরে না, সময় উপলক্ষে, সাধারন ভাবে বলতে গেলে আমরা যখন একটা কাজ করতে যায় তখন আপনাআপনি থেকে আমাদের ব্রেইন বলে দেই কাজটা আমাদের কিভাবে করতে হবে, আর সেই নির্দেশ মতে আমাদের শরীর কাজ করে। ঠিক সেইভাবেই লিচ্ দ্যা আনডেড যে কিনা রুলার অফ ডেড ছিলো তার স্মৃতি গুলোও সময় উপলক্ষে এলেক্সের মনে পরে। যেমন এখন সে মাংকি কিংকে নিয়ে ভাবছিলো, তাই আরো কিছু তথ্য আসলো। আর তথ্য গুলো খারাপ না।
"তাহলে এজগার্ড, অলিম্পাস ইত্যাদি সবই রয়েছে। আমার তো সহ্যই হচ্ছে না, কবে যে সেগুলো দেখতে পারবো।" (এলেক্স ভাবছে)
অলিম্পাস, এজগার্ড এগুলো এলেক্সের পূর্বের ওয়ার্ল্ডে রূপকথা ছাড়া আর কিছুই ছিলো না। তবে সেটা যে সত্য হবে এটা তার ধারনায় ছিলো না। প্রথমে এসব বিষয়ে না জানলেও লিচ্ দ্যা আনডেড এর স্মৃতিট জন্য এলেক্স অনেক কিছু সম্পর্কে জানতে পেরেছ। যদিও সেগুলো শুধু আংশিক। তারপরও এলেক্সের আগ্রহকে শক্ত করার জন্য সেটুকুই যথেষ্ট।
-->>তোমার তো কথা ছিলো আমাকে তোমার স্পেশাল মুভটা শেখাবে।(এলেক্স)
এলেক্স সমস্ত চিন্তা ভাবনাকে একপাশে ফেলে দিয়ে আসল কথায় আসলো। লুসিফার মূলত এখানে এসেছিলোও এক উদ্দেশ্যে। এলেক্সকে সে ট্রেনিং দিতে চাই। যদিও সে চেয়েছিলো সেটা, কিন্তু পথমধ্যে সে ধারনা ত্যাগ করেছে।
-->>ওয়েল এলেক্স আমি চেয়েছিলাম তোমাকে ট্রেনিং করাতে, কিন্তু আমার মনে হয় না তোমার সেটার প্রয়োজন হবে।(লুসিফার)
-->>এটা কিরকম কথা?(এলেক্স)
-->>তোমার বাবা তোমাকে যে ট্রেনিং দিচ্ছে, আমি নিজেও সেরকম ট্রেনিং এর ব্যবস্থায় করে দিতাম। তাই আমার মনে হয় না আমার ট্রেনিং এর প্রয়োজন হবে তোমার। আর কুইক ড্র তো প্রত্যেকটা সোর্ডসম্যানই ব্যবহার করতে পারে।(লুসিফার)
-->>কিন্তু ১০০% এর মধ্যে শুধু ০.০১% লোকই তো সেটাকে মাস্টার করতে পারে। আর তার মধ্যে তুমি একজন।(এলেক্স)
এলেক্সের রাগ হতে লাগলো। সে আশা করেছিলো লুসিফার তার সুপার স্ট্রেন্থ সম্পর্কে কিছু একটা বলবে এলেক্সকে, কিন্তু ট্রেনিং এর ব্যাপারটা সে সম্পূর্ন এরিয়ে যাচ্ছে। লুসিফার বলতে শুরু করলো,
-->>আসলে আমি এই জায়গায় অনেকদিন থাকতে চেয়েছিলাম। বিশেষ করে বিলজবাব এর রেইনকার্নেট এর সময় পর্যন্ত। কিন্তু সেটা সম্ভব হবে না আর মনে হচ্ছে।(লুসিফার)
-->>মানে তুমি অন্য কোনো ডিম্যান প্রিন্সের টাওয়ারে যেতে চাচ্ছো?(এলেক্স)
-->>না, আমি এক্সব্লকের জন্য রওনা দিবো।(লুসিফার)
লুসিফারের কথা শুনে এলেক্স হঠাৎ স্তব্ধ হয়ে গেলো। এক্সব্লকের কথা সে যতই মনে করে ততই তার মন কেপে উঠে। হ্যাঁ সেখানে একদিন তাকেও যেতে হবে। একটা অদৃশ্য টান তাকে সেটার মধ্যে টানছে, শুধু এলেক্স একা নয়, এক্সব্লক সম্পর্কে যে ব্যক্তিই একবার শুনবে তাকে এক্সব্লক নিজের দিকে টানবে। এটা নিয়ে অনেক রহস্য রয়েছে যেটা এলেক্স এখনো সমাধান করতে পারে নি। কিন্তু হঠাৎ লুসিফার যে এক্সব্লকের মধ্যে যেতে চাচ্ছে এটাতে এলেক্স কিছু বলতে পারছে না। তারও আগ্রহ জাগছে, তাইতো সে একটা বোকার মতো প্রশ্ন করে ফেললো,
-->>কিভাবে প্রবেশ করা যাবে সেখানে?(এলেক্স)
এলেক্সের কাছে লিচ্ দ্যা আনডেড এর কিছু স্মৃতি রয়েছে, কিন্তু সেগুলো খুবই সামান্য। যা এলেক্সকে এক্সব্লক সম্পর্কে তেমন কোনো তথ্য জানায় নি। আর এজন্য এক্সব্লকের আংশিক বিবরণে জায়গাটা আসলেই কেমন সেটা জানার জন্য এলেক্সের মনও ব্যাকুল হয়ে আছে। ঠিক বিষয়টা একটা মুভির ট্রেলার বা ট্রিজারের মতো। ট্রেলার দেখলে যেমন মুভির জন্য সবাই আগ্রহ নিয়ে বসে থাকে, এলেক্সের অবস্থাও তেমন। লুসিফার এলেক্সের কথা শুনে হালকা একটা হাসি দিলো। সেই সাথে সে বলতে লাগলো,
-->>সময় হলে সব কিছু তুমি এমনিতেই জানতে পারবে। আমি এক্সব্লকে আরো পরে যেতে চেয়েছিলাম। কিন্তু সময় সবার জন্য অপেক্ষা করে না। তোমার শরীরে স্পেশাল একজনের ব্লাড রয়েছে, তাই তুমি বিলজবাবের পাওয়ার ছাড়ায় এক সময়ে অনেক শক্তিশালী হতে পারবে। ভবিষ্যতে এমন একটা সময় আসবে যখন আমি তোমার সামনে দাঁড়াতেই পারবো না।(লুসিফার)
লুসিফার এলেক্সের দিকে তাকিয়ে সিরিয়াস হয়ে কথাটা বললো। কিন্তু এলেক্স কথাটার ক, খ কিছুই বুঝলো না। যদিও সে একটা বিশ্লেষণের আশা করেছিলো, কিন্তু লুসিফার তেমন ভাবে কিছু বললো না তাকে।
-->>মেইন টাওয়ারের বাইরে সব কিছুরই একটা লিমিট থাকে। যেহেতু সেই লিমিটে আমি পৌছে গিয়েছি তাই এখানে থেকে আমার আর লাভ হবে না। যদি ভবিষ্যতে তোমার পাশে কিংবা তোমার সাথে আমাকে লড়তে হয় তাহলে আমাকে আমার লিমিটকে অতিক্রম করতে হবে। আর সেটা তখনি হবে যখন আমি এক্সব্লকে প্রবেশ করবো।(লুসিফার)
এলেক্স কি বলবে বুঝতে পারছে না। লুসিফারের সাথে তার পরিচয় মাত্র দুদিনের। একদিনে সাক্ষাত হয়েছিলো এবং আজ অনেকক্ষন দুজনে একত্রে গল্প করছে। যেকেউ দেখলে ভাববে তাদের মাঝে একটা সুন্দর বন্ধুত্ব তৈরী হয়েছে, কিন্তু এমন কিছু নয়। যদিও লুসিফার আপাতোতো এলেক্সকে একজন বন্ধুর মতোই দেখছে, কিন্তু এলেক্স সেরকম কিছু ভাবছে না লুসিফারকে নিয়ে। এলেক্স কাউকেই বিশ্বাস করে না। আর সেখানে লুসিফার তো একজন ডিম্যান প্রিন্স, তাকে বিশ্বাস করার আরো প্রশ্নই উঠে না এলেক্সের কাছে। যদিও এলেক্স কিছুটা কষ্ট পাচ্ছে দুই বিষয়ের জন্য। প্রথমত ডিম্যান প্রিন্স হওয়া সত্ত্বেও লুসিফারের সাধারন জ্ঞান অনেক কম, আর এই কারনে এলেক্স তেমন গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সংগ্রহ করতে পারে নি। আর দ্বিতীয়ত লুসিফার তার স্ট্রেন্থের ব্যাপারে কিছু বললো না।
-->>এলেক্স আমি ভেবেছিলাম এই ওয়ার্ল্ডে হয়তো শক্তিশালী কেউ নেই, কিন্তু সেটা হয়তো আমার ভুল ধারনা ছিলো। একটা উপদেশ আমি দিতে চায়, কখনো কোনো ড্রাগনের সাথে বা বিপক্ষে যাওয়ার কথা চিন্তা করো না, তারা অনেক ভয়ানক কিছু বিয়িং। যাদের থেকে ডিম্যান কিং ও নাকি দূরে থাকতো সর্বদা। আর আমার ধারনা সেই ড্রাগনদের একটা এই ওয়ার্ল্ডে রয়েছে। তাই আমি বলবো তুমি সাবধানে থেকো।
-->>হ্যাঁ(এলেক্স)
এলেক্সের কাছে বিরক্ত লাগতে শুরু হলো। লুসিফার যেভাবে বিদায় নিচ্ছে, মনে হচ্ছে এলেক্সের জনম জনমের বন্ধু সে, আর কোনো দিন দেখা হবে না বিধায় সে অনেক কিছু বলে বিদায় নিচ্ছে। এলেক্সের মন চাচ্ছিলো সে তার গ্লাটোনি ব্যবহার করবে, কিন্তু এলেক্স জানে সেটা কখনোই সফল হবে না। এলেক্সের গ্লাটোনি ব্যবহার করার পূর্বেই এলেক্সের গলা লুসিফারের কাটানার সাহায্যে কেটে যাবে। তাইতো সে সহ্য করছিলো লুসিফারের কথা গুলোও। যদিও লুসিফারের শেষ কথায় এলেক্সের মন আটকে যায়।
-->>ড্রাগন!(এলেক্স)
এতোক্ষনে লুসিফার জানালা দিয়ে চলে গিয়েছে। এলেক্স অনেক পরে খেয়াল করেছে সেটা। তার মন আটকে ছিলো বিরক্তিভাবের মধ্যে। এলমন্ড এবং মারিয়া বাসায় ছিলো না। তারা দুজনে ফিরে এসেছে নিচে এবং এলেক্সের রুমের দিকেই আসছিলো। লুসিফার তাদের আসার বিষয় অনুভব করতে পেরেই যত সম্ভব তারাতারি এলেক্সের থেকে বিদায় নিয়ে নেয়। অন্যদিকে এলেক্সের ভাবনা ড্রাগনের উপরে আটকে গেলো। লিচ্ দ্যা আনডেড যে কিনা একজন রুলার ছিলো যাকে ডেড গডও হতো। সে এমন শক্তিশালী বিয়িং ছিলো যার এক পলকের মাধ্যমেই মেফাসের মতো শহরের সকল জীবিত বস্তু মারা যেতো। সেই রুলার অফ ডেড একজনের চাকর ছিলো। রুলার অফ ডেডের মালিক, বা তার পাওয়ারের সোর্চ ছিলো ব্লাক ড্রাগন। ড্রাগন সম্পর্কে আর কিছু না জানলেও এলেক্স এটুকু সিওর জানে যে ব্লাক ড্রাগন কতটা শক্তিশালী। এলেক্স যেখানে আছে এই পুরো ওয়ার্ল্ডকে ধ্বংস করতে ড্রাগনটার শুধু তার ডানা দুটোর ঝাপটায় প্রয়োজন।
এলেক্সের রুমের মধ্যে এলমন্ড, মারিয়া এবং মারিয়ার বন্ধু চেসলি প্রবেশ করলো। চেসলি মূলত এসেছে এলেক্সের পায়ের জন্য। চেসলি এক মাস সময়ের কথা বলেছিলো, কিন্তু দুই মাস হয়ে গিয়েছে তারপরও এলেক্সের পায়ে এখনো কোনো সমস্যা দেখা দেয় নি। আর এজন্যই চেসলি এসেছে চেক করতে। চেসলির ধারনা মতে একমাস পরে আবারো সমস্যা হওয়ার কথা ছিলো। কিন্তু তেমন কিছুই হয় নি এখনো।
* * *
লুসিফার খুব তারাতারি বের হয়েছে এলেক্সের বাসা থেকে। সে এর পূর্বেও এই এনার্জি অনুভব করেছিলো, তাইতো সে আবারো সেটা অনুভব করতে চাই না।
-->>আমি জানি না সে কে। কিন্তু এলেক্সের বাবা আসলেই অনেক ভয়ঙ্কর একজন ব্যক্তি। আমি সবচেয়ে শক্তিশালী ডিম্যান প্রিন্স হওয়া সত্ত্বেও আমি তার সামনে কেনো জানি দাঁড়িয়ে থাকতেই পারি না।(লুসিফার)
* * *
To Be Continued
* * *
কেমন হলো জানাবেন।