[প্রথমেই বলি গল্পটা পুরো কাল্পনিক, কেউ বাস্তব কিংবা ধর্মের সাথে তুলনা করবেন না]
#Demon_King#
পর্ব:৬৩
লেখকঃহৃদয় বাপ্পী
.
.
.
এলেক্স কিছুটা অবাক হচ্ছে এটা দেখতে পেয়ে যে তার আনডেড কথা বলছে। তারপরও এই বিষয়ে সে বেশী চিন্তা না করে সরাসরি তার কাজে খেয়াল দিলো।
-->>ওয়াটার, আমার চারিদিক দিয়ে একটা ওয়াটার ব্যারিয়ার তৈরী করো যাতে করে আমি পানির নিচে শ্বাস নিতে পারি।(এলেক্স)
এলেক্সের অর্ডার শুনতে পেয়ে তার আনডেড গবলিন বেশ কিছুক্ষন তার মাস্টারের দিকে তাকিয়ে আছে। তার ভাব দেখে মনে হচ্ছিলো এলেক্স তাকে এমন কিছু একটা করতে বলেছে যেটা একদমই সহজ। ওয়াটার বেশ কিছুক্ষন পর তার হাতের স্টাফ উচু করে একটা স্পেল কাস্ট করলো। স্পেলটা মনস্টারের ভাষায় হওয়ার ফলে এলেক্স সেটার আগামাথা কিছুই বুঝতে পারলো না। তবে যেটুকু দেখলো তাতে বুঝতে পারলো এটা অনেক সহজ একটা স্পেল। ওয়াটারের স্পেল কাস্ট করা শেষ হওয়ার পর, তার স্টাফের উপরে যেখানে মানা স্টোন ছিলো তার মধ্য বাইরে থেকে পানি সংগ্রহ হতে লাগলো। পানি সংগ্রহ হতে হতে সেই পানি একটা বলের আকৃতি নিয়ে নিলো যেটার আকার একটা মানুষের আকারের থেকেও বড় হবে। গোল বলের মতো জিনিসটা ওয়াটারের স্পেলের মাধ্যমে তৈরী হয়েছে। আর সেটা খুব সিম্পেল একটা স্পেল। নাম "ওয়াটার ব্যারিয়ার"। স্পেলটার মাধ্যমে তৈরীকৃত গোল বলটা এলেক্সের শরীরের মধ্যে দিয়ে প্রবেশ করে এলেক্সের শরীরকে আটকে দিলো তার মধ্যে। বাইরে থেকে এলেক্স খুব সহজে ভিতরে প্রবেশ করতে পারলেও বলটা এখন শক্ত বস্তুতে পরিণত হয়েছে, আর এর ফলে সে আর বের হতে পারছে না। তার আনডেডও তার সাথে ভিতরে রইলো স্পেলটা মেইনটেইন করার জন্য। যদিও এলেক্স প্রথমে ভেবেছিলো জিনিসটা কাজ করবে কিন্তু এতো সহজ ছিলো না জিনিসটা।
এলেক্স ব্যারিয়ার সহ যখন পানিতে প্রবেশ করলো, তখন তার পানি ঠিকই প্রবেশ করছিলো না। কিন্তু সমস্যা হচ্ছিলো অক্সিজেন নিয়ে। এই ব্যারিয়ারে কোনো তরল কিংবা কঠিন বস্তু প্রবেশ করতে না পারলেও গ্যাসীয় বস্তু ঠিকই প্রবেশ করতে পারে। বায়ুতে অক্সিজেন থাকার কারনে পানির উপরে এই ব্যারিয়ার তৈরী করলে নিজ ইচ্ছায় অক্সিজেন এবং কার্বন ডাই অক্সাইড এর প্রবেশ এবং বের করার রাস্তা তৈরী করা যায়। কিন্তু পানির নিচে অক্সিজেন পানির সাথে মিশ্রিত থাকে বলে সেটা ব্যারিয়ারের মধ্যে প্রবেশ করতে পারছে না। তবে এমন নয় যে দিঘিটা একদম বড় এবং এলেক্সের অসুবিধা হবে সেটার গভীরে প্রবেশ করতে। ব্যারিয়ারটা তৈরীর সময় কিছু পরিমাণ অক্সিজেন সেটা গ্রহন করেছিলো বায়ু থেকে আর সেই অক্সিজেনের সাহায্যেই এলেক্স শ্বাস নিতে পারছে। আর এলেক্সের আনডেড আর্মি যেহেতু মৃত এর তালিকায় পরে তাই সেটার শ্বাস নেওয়ার কোনো প্রয়োজনই হয় না।
-->>ওয়াটার আমাকে খুব শীঘ্রই পানির গভীরে পৌছে দাও।(এলেক্স)
এলেক্স তার প্রয়োজনীয় সময় নষ্ট করতে চাচ্ছে না। যেহেতু তার হাতে বেশী সময় নেই তাই তারাতারি কাজটা করতে হবে। তার আনডেড এর তৈরী গোল বলের মতো পানির ব্যারিয়ার টা দিঘির মধ্যে প্রবেশ করে সোজা নিচের দিকে যেতে লাগলো। সেটা অনেকটা স্পিডেই পানির নিচে পৌঁছাতে লাগলো। এলেক্স চুপ চাপ দাঁড়িয়ে দেখছিলো। যেহেতু সে ছোট একটা গোল পানির বলের মধ্যে রয়েছে এবং সেই সাথে পানির নিচে তাই তার শ্বাস দ্রুত কাজ করছে। মানুষের ফুসফুস অনেক আজব একটা জিনিস। যদি স্বাভাবিক ভাবে এক মিনিট কেউ দম আটকে রাখতে পারে, তাহলে পানির নিচে বা পানির সংস্পর্শে সেই একই ব্যক্তি অর্ধমিনিটও দম আটকে রাখতে পারবে না। তবে এখানে কিছু ব্যতিক্রমও রয়েছে। কেউ জন্ম গত ভাবেই পানির নিচে অনেক ক্ষন শ্বাস নিতে পারে, আবার কেউ ট্রেনিং এর মাধ্যমে অধিক সময় পানির নিচে শ্বাস নিতে পারে। যেহেতু এলেক্স একজন স্বাভাবিক ব্যক্তিই ছিলো, তাই তার শ্বাসের পরিমাণও একটু বেরে যাচ্ছে। এভাবে বেশীক্ষন থাকলে ব্যারিয়ারের মধ্যে তার শ্বাস নিতে সমস্যা হবে। একজন ব্যক্তি যত ক্ষমতার অধিকারীই হোক বা যতই শক্তিশালী হোক না কেনো তার সবচেয়ে দুর্বল জায়গা হলো তার শ্বাস প্রশ্বাস।
-->>আর এমনিতেও আমি সাঁতার পারি না।(এলেক্স)
এলেক্স সাঁতার পারে না, তাই সে সব সুরক্ষার ব্যাপার ভেবে চিন্তে পানির নিচে প্রবেশ করেছে। এলেক্স বাইরে দেখতে লাগলো। ব্যারিয়ারটা স্বচ্ছ হওয়ার ফলে বাইরের সব কিছু দেখা যাচ্ছিলো। যদিও এটা একটা সাধারন স্পেল, তারপরও গবলিন আনডেড এর লেভেল বেশী হওয়ায় অনেকটা শক্তিশালী ছিলো সেটা। এলেক্স দাঁড়িয়ে বাইরের দৃশ্য দেখতে লাগলো। বাইরে বেশ কিছু মনস্টার রয়েছে, যারা ঠিক এলেক্সের দিকে তাকিয়ে ছিলো। কিন্তু যেহেতু এলেক্সের নিজের ম্যাজিক ব্যবহার না হয়ে সেখানে তারই একটা মনস্টারের ম্যাজিক ব্যবহার হচ্ছে তাই পানির নিচের কোনো মনস্টার আপাতোতো এলেক্সের উপরে হামলা করছে না। লিজার্ড গুলো মনের সুখে সাতার কাটতে ছিলো। যেহেতু এলেক্সের এনার্জি ব্যারিয়ারের মধ্যে ছিলো তাই মনস্টার গুলোর নজর গুলো এলেক্সের দিকে গেলোও তারা প্রথমে হামলা করছে না। এলেক্স বুঝতে পারলো তার আনডেড এর তৈরী ব্যারিয়ার থেকে বের হলেই মনস্টার গুলো তার উপরে হামলা করবে। যেহেতু সে সাতার জানে না তাই তার জন্য এখানে সারভাইভ করাটা অনেক কষ্টকর হবে।
পানির গভীরে বিশাল একটা মনুমেন্টের মতো তৈরী আছে। যেটার পুরোটায় পাথরের তৈরী। মনুমেন্টের ভিতরে একটা গোল সার্কেলের মতো রয়েছে। এলেক্স তার আনডেডকে সরাসরি সেই সার্কেলের উপরে নামাতে বললো। সার্কেলের উপরে অনেক আজব ভাষায় কিছু লেখা ছিলো, যেগুলো এলেক্সের মাথায় ঢুকলো না। কিন্তু সে সার্কেল থেকে কিছু এনার্জি অনুভব করতে লাগলো। যদিও এটা বিপদজনক ছিলো তারপরও এলেক্স বুঝতে পারছে এটা তার জন্য ভালো কিছু হবে। এলেক্সের আনডেড তার গোল ব্যারিয়ারকে সেই সার্কেলের উপরে নিয়ে গেলো। সার্কেলের উপরে ব্যারিয়ারের স্পর্শ লাগার সাথে সাথেই উজ্জ্বল আলোর তৈরী হলো, যেটা সাথে সাথে এলেক্সকে সেই জায়গা থেকে টেলিপোর্ট করে নিলো। জায়গাটা এলেক্সের কাছে অপরিচিত নয়।
-->>তাহলে এটা একটা ড্যানজন!(এলেক্স)
এলেক্স যে এতো তারাতাড়ি একটা ড্যানজন খুজে পাবে সে আশা করে সে করে নি। সে পূর্বেও একটা টাওয়ারের টেস্ট গ্রাউন্ডে অনেক দিন ছিলো, আর সেই সুবাধে সে ভালো করেই জানে যে একটা ড্যানজন খুজে পাওয়া কতটা কষ্টকর। এলেক্স এই টাওয়ারের টেস্ট গ্রাউন্ডে আসার পরও জানতে পেরেছে যদিও একশো ড্যানজন রয়েছে এই টাওয়ারের মধ্যে, এতোটা থাকার পরও এই ড্যানজন গুলোর লোকেশন প্রতিকূল পরিবেশে হওয়ার কারনে তাদেরকে খুজে পাওয়া কষ্টকর। আর এজন্যই অনেকটা সময় লাগবে বলে আশা করেছিলো এলেক্স। কিন্তু তারাতাড়ি খুঁজে পেয়েছে এটা দেখে সে অবাকই হচ্ছে।
এলেক্স তার সময় নষ্ট না করে একপা-দুপা করে ড্যানজনের ভিতরে আগাতে লাগলো। এলেক্সের একপা বারাতেই তার সিস্টেম থেকে নোটিফিকেশন আসলো,
-""মাস্টার আপনি একটা রেড ড্যানজনের মধ্যে প্রবেশ করেছেন।""-
এলেক্স এতোক্ষন অনেক চিন্তায় ছিলো। তার চিন্তার বিষয় ছিলো ড্যানজনটা যদি সবুজ কিংবা নীল হতো সেটা নিয়ে। কিন্তু সে একটা স্বস্তির নিশ্বাস ফেললো। অবশ্য এতোটা প্রতিকূল পরিবেশে যে একটা ড্যানজন থাকতে পারে আর সেটা যে লাল ড্যানজন হবে এটা অবিশ্বাস করার মতো কিছু হতে পারে না। এখন আর এলেক্স এসব বিষয় নিয়ে না ভেবে সোজা ড্যানজনের ভিতরের দিকে প্রবেশ করতে লাগলো। সে টেস্ট গ্রাউন্ডে আসার পূর্বে এবং পরে শুনতে পেরেছে লাল ড্যানজন গুলো কিরকম হতে পারে। একটা লাল ড্যানজন চার ধরনের ড্যানজনের মধ্য থেকে সবচেয়ে ভয়ানক এবং কষ্টময় হয়ে থাকে। টাওয়ারের রেকর্ড অনুযায়ী একদম হাতের আঙ্গুলে গোনা যায় এমন মানুষই লাল ড্যানজনকে ক্লিয়ার করতে পেরেছে। আর এলেক্স সেই ভয়ানক একটা ড্যানজনের মধ্যে প্রবেশ করেছে। এখানে অন্যকেউ হলে এতোক্ষনে ভয়েই মারা যেতো, কিন্তু এলেক্স তেমন নয়। সাধারনত লাল ড্যানজনে প্রবেশ করতে হলে অধিক সংখ্যক মানুষ নিয়েই প্রবেশ করতে হয়। যেহেতু এর ভিতরের মনস্টার টেস্ট গ্রাউন্ডের বাকি ড্যানজনের মনস্টার থেকে শক্তিশালী তাই তাদের হত্যা করতেও বেশী সংখ্যক মানুষের প্রয়োজন হয়। আর কেউ যদি এরকম একটা ড্যানজনের মধ্যে একা প্রবেশ করে যেখানে হাজার জন মানুষের প্রয়োজন ক্লিয়ার করতে, তাহলে তো এক ভাবে বলা যায় তার মতো অভাগা দুনিয়ায় আর কেউ নেই। কিন্তু এলেক্স সেই অভাগাদের মধ্যকার কেউ না। ঠিক মেফাস একাডেমির প্রিন্সিপালের মতো বলতে গেলে, এলেক্স সহ বাকি সবাই যারা ডিমনিক ফরেস্ট থেকে বের হয়েছে সবাই টাওয়ারের টেস্টে পাশ হয়ে যাওয়া ব্যক্তিদের মতোই শক্তিশালী।
-->>যদিও নতুন সবাই রিক্স না নিয়েই টাওয়ারের প্রথম ফ্লোরে প্রবেশ করার সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকে, কিন্তু তাতে আমার কোনো লাভ হবে না।(এলেক্স)
সবাই যদিও রিক্স নিতে চাই না, কিন্তু এলেক্স তাদের মতো না। এলেক্স নিজে কোনো ম্যাজিকাল আইটেমের জন্য কঠিন ড্যানজনের মধ্যে প্রবেশ করছে না। বরং,
-->>আমার লেভেল বারাতে হবে।(এলেক্স)
এলেক্স ড্যানজনের মধ্যে এগিয়ে গেলো। সে প্রথম থেকেই অল আউট হয়ে যাচ্ছে। যেহেতু অনেক দিন এলেক্স কোনো ফাইট করে নি, বা তার স্পেল এবং স্কিল ব্যবহার করে নি, তাই তার রিং এ পর্যাপ্ত পরিমাণ এনার্জি রয়েছে। আর এই এনার্জিই একটা ড্যানজন ক্লিয়ার করার জন্য যথেষ্ট হবে। আর তাছাড়াও এলেক্সের কনজিউমার টাইটেল এবং গ্লাটোনি তো রয়েছেই। এসব হিডেন কার্ড থাকার কারনে এলেক্স আর ভয় করছে না এই লাল ড্যানজনটাকেও।
লাল ড্যানজন যেটা বাকি চার ড্যানজনের থেকে কঠিন এবং মারাত্মক, মূলত এই ড্যানজনের মধ্যে টেস্ট ফ্লোরের সবচেয়ে শক্তিশালী মনস্টারের বসবাস থাকে। যেহেতু এর পূর্বেও এলেক্স একা দুটো ড্যানজন ক্লিয়ার করেছে তাই তার ছোটো একটা ধারনা আছে এই ড্যানজনটা কোন লেভেলের হতে পারে। আর সেটার প্রথম মনস্টার গুলো দেখতে পেয়েই এলেক্সের ধারনা হয়ে গেলো এই ড্যানজনটা কেমন লেভেলের।
"ইনফো"
এলেক্স তার ইনফো স্কিল ব্যবহার করলো। তার সামনে এমন কিছু মনস্টার এসে দাঁড়ালো যাদের পূর্বে কখনো সে দেখে নি। অবশ্য বলতে গেলে বাস্তবে কখনো সে দেখে নি।
-->>আমি আশা করি নি লিজার্ডম্যানদের এখানে দেখতে পারবো।(এলেক্স)
এলেক্স তার জীবনে অনেক কিছুই বাস্তবে দেখে নি। শুধু সে না, পৃথিবীর সব মানুষই বাস্তবে অনেক কিছু দেখে নি। কিন্তু একটা জিনিস না দেখার পরও তাদের মাথায় নতুন চিন্তা ভাবনা আসে কিভাবে? ওয়েল এটার উত্তর এলেক্স অনেক আগেই পেয়েছে। মানুষ নতুন কোনো কিছুরই জন্ম দিতে পারে না। একজন লেখক যদি গল্প লেখে, একজন গায়ক যদি গান গায়, একজন ডাক্তার যদি অপারেশন করে, একটা প্রোগ্রামার যদি গেম তৈরী করে কিংবা পৃথিবীর হাজারো নতুন কাজের কথায় বলি না কেনো, কোনো কিছুই সেই ব্যক্তিটার নিজস্ব সৃষ্টি নয়। অন্যজনের জ্ঞান, অন্যজনের পরিশ্রমকে মিলিয়েই মানুষ নতুন কিছু তৈরী করে। উদাহরণ দিলে বলা যায়, একজন লেখক তার গল্পে যেসব লেখে সেগুলো কি তার নিজের লেখা? হ্যাঁ অবশ্যই সে নিজে থেকেই লিখছে মানে আঙ্গুল দিয়েই লিখছে নিজে। কিন্তু আসল কথা হলো সে যে টপিক গুলো উল্লেখ করছে সেটা কি তার নিজের? যদি একটা লেখক রোমান্টিক কিছু উল্লেখ করে তার গল্পে, তাহলে দেখা যাবে সেই রোমান্টিক জিনিসটা তার লেখার পূর্বেই বিলিয়ন মানুষের মধ্যে কারো না কারো সাথে হয়ে গিয়েছে। সে যে বিষয়ে লেখবে সেটার বিষয়ে যদি তার সামান্য ধারনাও না থাকে তাহলে তার দ্বারা সেই বিষয়টা লেখা সম্ভব না। সহজ ভাষায় বলতে গেলে একটা বিষয় না ঘঠলে সেটা নিয়ে লেখা বা পড়া কোনো ভাবেই সম্ভব নয়।
ঠিক সেরকম একটা বিষয় কল্পনা। মানুষের ফ্যান্টাসি অনেক অনেক দূরত্ব পর্যন্ত যেতে পারে। কিন্তু আমরা কখনো ভেবে দেখেছি এই সব ফ্যান্টাসি কোথায় থেকে আসে। হ্যাঁ মুভি, কার্টুন কিংবা গেমস খেলে মনে হয় অনেক সৃজনশীল মানুষ সেগুলো তাদের মেধা খাঁটিয়ে তৈরী করেছে, কিন্তু এক সময় যদি কাল্পনিক একটা চরিত্র নিজের সামনে চলে আসে তখন কি মনে হবে? এলেক্সও পৃথিবীতে থাকার সময় সব কিছুকেই কাল্পনিক মনে করেছে। সে একজন গেমের প্রোগ্রামার হওয়ার সুবাধে ফ্যান্টাসির অনেক গভীরে পৌছে গিয়েছিলো। ড্রাগন, এল্ফ, গবলিন, ম্যাজিক সব কিছু সম্পর্কেই তার উপরি জ্ঞান ছিলো। কিন্তু এলেক্স এখন বুঝতে পারছে,
-->>নতুন কোনো কিছুই তৈরী করা সম্ভব নয়।(এলেক্স)
এলেক্স অনেক পূর্বে থেকেই বুঝেছে পৃথিবীতে যা কিছু কাল্পনিক সে মনে করতো সব কিছুই সত্য ছিলো। আর সেই সত্য গুলোই তার সামনে এক এক করে ভেসে বেরাচ্ছে এখন। যেহেতু এই সব কিছু সত্য ছিলো তাই তো পৃথিবীর মানুষের মনের মধ্যে সেগুলো ফ্যান্টাসি হয়ে থাকতো। আর সেটার একটা কারনই এলেক্স ভেবে পাচ্ছে।
-->>কেউ একজন সকল মনস্টারই দেখেছিলো তাদের জীবনে। আর তাদের মধ্য থেকেই কেউ পৃথিবীতে প্রবেশ করেছিলো।(এলেক্স)
এলেক্সের কথা মতো বাইরের ওয়ার্ল্ডের কেউ একজন প্রবেশ করেছিলো পৃথিবীতে। আর সেই এসব কাল্পনিক জ্ঞান গুলো পৃথিবীতে ছড়িয়ে দিয়েছে। আর সেই সুবাধেই এলেক্স অনেক কাল্পনিক বিষয়েই জানতে পেরেছে। আর এ মাধ্যমেই এলেক্স অনেক মনস্টারের নাম জানে, কারন সে এক সময়ে সেসব মনস্টার নিয়েই নাইটমেয়ার নামক গেমে কাজ করেছে।
এলেক্সের সামনে বেশ কিছু মনস্টার রয়েছে। পূর্বে পানির মধ্যে লিজার্ড দেখতে পেলেও ড্যানজনের ভিতরের মনস্টার গুলো সাধারন লিজার্ড নয়। সেগুলোর আকার মানুষের মতো, মানে দু পায়ে তারা দাঁড়িয়ে আছে, দুটো হাত দিয়ে অস্ত্র ধরে রেখেছে, সেই সাথে জামা কাপড়ও পরেছে। অনেকে বলবে আমি তাদেরকে মানুষের সাথে তুলনা করলাম কেনো? অবশ্য এখানে তুলনা করার কিছু নেই, আমি শুধু আকারের কথা উল্লেখ করলাম যাতে বুঝতে সহজ হয়।
পনেরোটা লিজার্ডম্যান রয়েছে এক জায়গায় যাদেরকে এলেক্স দূর থেকে দেখতে ছিলো। এলোক্স কোনো রকম শব্দ না করে তাদের দিকে গভীর আগ্রহে তাকিয়ে ছিলো। যদিও তার গেমের ডিজাইনের সাথে মিলে না হুবুহু, তারপরও একটা বাচ্চাও সেই গেম খেললে বলে দিতে পারবে এটা একটা লিজার্ড ম্যান। আর তাছাড়াও এলেক্সের ইনফো স্কিল কখনো ভুল ইনফরমেশন দেই না। পঞ্চাশ লেভেলের পনেরোটা লিজার্ডম্যান দাঁড়িয়ে ছিলো ড্যানজনের প্রথম জায়গাতেই। আর এটা দ্বারাই এলেক্স বুঝতে পারলো ড্যানজনটা কোন লেভেলের। সে একটু স্বস্তির নিশ্বাস ফেললো, কারন তাকে গবলিন ড্যানজনের মতো বেশী কষ্ট করতে হবে না এখানে।
এলেক্স তার পাঁচটা শক্তিশালী আনডেড আর্মিকে সামন করলো। তারা এলেক্সের সামনের ফ্লোর থেকে উঠতে লাগলো এক এক করে। চারটা গবলিন উইজার্ড এবং একটা ডিমনিক ফক্স। পাঁচটা আনডেডই এলেক্সের সিগনাল পেয়ে আক্রমন শুরু করলো লিজার্ডম্যানদের। এলেক্স তার দ্রুত এজিলিটির মাধ্যমে খুব তারাতাড়ি মনস্টার গুলো থেকে সরে গেলো। যেহেতু পাঁচজন আনডেডই একেকটা সাধারন বস মনস্টারের মতোই শক্তিশালী তাই এলেক্স তাদের নিয়ে চিন্তা করলো না। এলেক্স এগিয়ে যাচ্ছে সামনের দিকে, আর তার আনডেড গুলো পিছনের মনস্টার ক্লিয়ার করছে।
এলেক্স সকল মনস্টারদের পিছনে ফেলে দিয়ে সামনে এগিয়ে যাচ্ছিলো। তার গন্তব্য ছিলো শক্তিশালী মনস্টারের দিকে, যেহেতু তার লেভেল মনস্টারের থেকে অনেকটা বেশী তাই তাদের হত্যা করলেও এলেক্স তার লেভেল বৃদ্ধি করতে পারবে না। তাই তাকে প্রথমেই শক্তিশালী মনস্টার খুজে নিতে হবে।
-->>কম লেভেলের মনস্টার গুলো থেকে কম এক্সপি পাওয়া যায়। তাই তাদের থেকে লেভেল বৃদ্ধি করতে চাইলে আমাকে অগণিত পরিমাণ মনস্টার হত্যা করতে হবে। কিন্তু আমার থেকে বেশী লেভেলের মনস্টার হত্যার মাধ্যমে আমি আমার লেভেলকে তারাতাড়ি বৃদ্ধি করতে পারবো।(এলেক্স)
যেহেতু এলেক্সের আনডেড আর্মি কোনো মনস্টারকে হত্যা করলে তার অর্ধেক এক্সপি এলেক্স পায় আর বাকিটা যে আনডেড হত্যা করেছে সে পায়, তাই এলেক্স ছোট মাছ গুলো তার আনডেডের কাছে রেখে দিয়ে নিজে বড় মাছ ধরতে যাচ্ছে। অনেকটা এগিয়ে যাওয়ার পরই এলেক্সের নজরে বেশ কিছু নতুন মনস্টার চোখে পরলো। এতোক্ষন এলেক্স যা দেখছিলো সবই লিজার্ডম্যান ছিলো। প্রায় একশত এর মতো লিজার্ডম্যানদের এলেক্স পিছনে ফেলে এসেছে। এলেক্সের নতুন পাওয়া স্কিলের সাহায্যে তাদের সামনে থেকে নিরাপদে আসাটা কোনো ব্যাপারই ছিলো না।
-->>"স্টিলথ" বেশ ভালোই কাজে দিচ্ছে।(এলেক্স)
এলেক্স তার নতুন স্কিল ব্যবহার করেছে। স্কিলটা তার সাব-জবের সাথে সম্পর্কিত। যেহেতু তার সাব-জব এসাসিন, তাই সে বিষয়েও একটা স্কিল পেয়েছে। তবে সেটার দিকে এলেক্সের প্রথমে খেয়াল ছিলো না। এলেক্সের এজিলিটি ১০০ তে পা দেওয়ার পর এলেক্স একটা স্কিল লাভ করে। স্কিলটার নাম "স্টিলথ"। এটা এমন একটা স্কিল যেটা এলেক্সকে কিছুক্ষনের জন্য সবার লোক নজর থেকে লুকিয়ে রাখে। সহজ ভাষায় বলতে গেলে এলেক্স কিছুক্ষনের জন্য ইনভিসিবল হয়ে যায়। যদিও সেটাকে সরাসরি অদৃশ্য বলা যায় না, তারপরও এটায় সহজ ভাষা তার স্কিলটাকে বিবরণ করার জন্য। এলেক্স এতোক্ষন তার স্টিলথ স্কিল ব্যবহার করছিলো, যার মাধ্যমে কোনো লিজার্ডম্যান তাকে দেখতে পারে নি। আর এজন্যই খুব সহজে সে ভিতরে চলে আসতে পেরেছে। যদিও এখনো তার স্টিলথ স্কিলের বেশ কিছু সময় ছিলো, তারপরও কিছু নতুন মনস্টার এলেক্সের চোখের সামনে পরায় এলেক্স তার স্কিলকে আন্ডু করে ফেললো।
-->>ওয়েল ওয়েল। লুক হু ইজ হেয়ার।(এলেক্স)
এলেক্সের সামনে স্কেলেটন দাঁড়িয়ে ছিলো। তাদের সংখ্যা কম নয়। আর এটাই একমাত্র মনস্টার যাদেরকে এলেক্স সবচেয়ে বেশী ঘৃণা করে। যদিও নিজের আনডেড গুলো এক সময়ে স্কেলেটন ছিলো তারপরও এলেক্স তাদেরকে ঘৃণায় করতো মনে মনে। আর তার স্কেলেটন আর্মি স্কিলটার লেভেল বৃদ্ধি পাওয়ার ফলে এলেক্স অনেকটা খুশিই হয়েছিলো। তারপরও নিজের স্কেলেটন বলতে অন্য কথা। এলেক্স স্কেলেটনদের দেখলেই অতীতের কথা চিন্তা করে। যদিও সে অতীত ভুলতে চাচ্ছে, তারপরও সেটা তার পিছু ছারতে চাচ্ছে না। আর এবার তো সেই মনস্টার গুলোই দাঁড়িয়ে আছে এলেক্সের সামনে যাদের জন্যই সব কিছু হয়েছে তার জীবনে।
-->>আমি তো ভেবেছিলাম শুধু ড্যানজনটা ক্লিয়ার করবো। কিন্তু না এখন পুরো ড্যানজনই ক্লিয়ার করে ফেলবো আমার স্টাইলে।(এলেক্স)
এলেক্স তার হাতে ছোট ড্যাগারটা নিলো। ড্যাগারের নামটা অদ্ভুদ হলেও সেটা বিলজবাবের একটা চাবি। আর সেটার পাওয়ার কেমন সেটা তো জানতেই হবে, কারন সেটা মৃত বস্তুকে এবজোর্ব করে। আর এলেক্সের সামনে তার ঘৃণিত মনস্টার স্কেলেটন দাঁড়িয়ে আছে যারা সবাই মুন ড্যাগারের খাবার হতে চলেছে।
* * *
To Be Continued
* * *
কেমন হলো জানাবেন।