[প্রথমেই বলি গল্পটা পুরো কাল্পনিক, কেউ বাস্তব কিংবা ধর্মের সাথে তুলনা করবেন না]
#ডিম্যান_কিং_সিরিজ#
#সুপ্রিম_বিয়িং#
পর্ব:৩৭
লেখকঃহৃদয় বাপ্পী
.
.
.
(দ্বিতীয় ফ্লোর)
ড্যানজনের মোট দশটা ফ্লোর রয়েছে, আর এই দশটা লেভেল কেউ বা তাদের পার্টি ক্লিয়ার করতে পারলেই টাওয়ারে পৌছাতে পারবে তারা। পৃথিবী যেটা পুরো ধ্বংসের মুখেই চলে গিয়েছে। মানুষ একে অপরের সাথে যুদ্ধ করতে করতে তাদের মাতৃভূমি গুলোকে মরুভূমি তৈরী করে ফেলেছে। নিউক্লিয়ার বোমার ফলে পৃথিবীর সমস্ত জায়গাটাতেই রয়েছে বিষাক্ত রেডিয়েশন। আর এই সময়ের মধ্যে এসোসিয়েশন ছাব্বিশটা এরিয়া নিয়ে পৃথিবীর বুকে এক নতুন লিডার হয়ে কাম ব্যাক করে। সকল মানুষ যারা এই বিশাল মহামারির মাঝেও কিছুটা আশা সংগ্রহ করতে পেরেছিলো। আর যখন টাওয়ারের আবির্ভাব হয় তখন থেকে তো সবাই তাদের সর্বোচ্চ চেষ্টা করতে শুরু করে। পৃথিবী যার মাঝে সকল জিনিসের অভাব রয়েছে এখন, যেটা কিছুদিন হলেই পুরো ধ্বংসের মাঝে আছে, ঠিক সেই পৃথিবীর শেষ মানুষগুলোর কাছে টাওয়ার হ্যাভেন এর মতো চলে আসে। টাওয়ার যার মাঝে অগণিত খাবার, অগণিত জায়গা এবং সেই সাথে রয়েছে ম্যাজিক। মানুষ সেই জায়গাতে যাওয়ার জন্য সব কিছুই করতে পারে। যদি নিজের সন্তানকেও ত্যাগ করতে হয়, তারপরও অনেকেই রাজি আছে সেখানে যেতে। আর এসব নির্মম সত্য জ্যাক এবং জিতুর চোখে ভাসছিলো।
-->>সিনিয়র, আমি আশা করি নি এরকম কিছু একটা এখানে দেখতে পারবো।(জিতু)
জিতু যদিও খান পরিবারের জন্য নিজের হাত লাল করেছে, তারপরও কোনো অসহায় কিংবা দুর্বল কাউকে সে কখনো হত্যা করে নি। বলতে গেলে এ পর্যন্ত খান পরিবারের বিপক্ষ শত্রুদের শক্তিশালী ব্যক্তিদের সে হত্যা করেছে। যেহেতু তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরে সকল নিয়ম কানুনের সময় শেষ হয়ে গিয়েছে তাই বেঁচে থাকা মানুষের মধ্যে নব্বই পার্সেন্টেজ মানুষই তাদের হাত লাল করেছে। সেটা না করলে এই নিয়মহীন ওয়ার্ল্ডে থাকাটা অনেক কষ্টকর। পৃথিবীটা এমন হয়ে দাঁড়িয়েছে, হয়তো হত্যা করো, নাহলে মারা যাও কারো হাতে। যদিও জিতু কাউকে হত্যা করেছিলো পূর্বে, কিন্তু সে তার জীবনে কখনো এরকম সিন দেখে নি। মানুষ কতটা নির্মম হতে পারে তার দৃশ্য জ্যাক এবং জিতুর সামনে ফুটে উঠেছে স্পষ্ট। জিতু রাগে তার দুই চোয়ালের দাঁত শক্ত করে কামড়ে ধরেছে। সে জ্যাকের দিকে একবার তাকালো। কিন্তু জ্যাকের কোনো অনুভূতি লক্ষ না করতে পেরে সে আবারো তাদের সামনে তাকালো।
জ্যাক মাক্স পরা থাকায় তার মুখের কোনো৷ এক্সপ্রেশনই বোঝা যায় না। তারপরও এতো সময় জিতু জ্যাকের সাথে থাকার সুবাধে জ্যাকের মনোভাব কিছুটা হলেও বুঝতে পেরেছে। জ্যাক তাকিয়ে ছিলো সামনের দিকে। তাদের সামনে অনেক ভয়ানক একটা দৃশ্য হয়ে গিয়েছে। মূলত এই ড্যানজনের সকল প্লেয়ারদের কাজ হলো ড্যানজনটাকে ক্লিয়ার করা। দশটা ফ্লোর ক্লিয়ার করতে পারলেই টাওয়ারে প্রবেশের অধিকার পাবে সকল প্লেয়ার। আর ড্যানজন ক্লিয়ার করতে হলে প্রতিটা ফ্লোরের মনস্টার হত্যা করে শক্তিশালী হতে হবে এবং ফ্লোরের যেকোনো একটা বসকে হত্যা করতে হবে। জ্যাক এবং জিতুর উদ্দেশ্যও ছিলো দ্বিতীয় ফ্লোরের ফিল্ড বসকে হত্যা করা। কিন্তু মাঝ পথে তারা অন্য একটা বিষয় দেখে ফেলেছে।
-->>তাহলে বুড়ো লোকটার ইনফরমেশন ভুল ছিলো না।(জ্যাক)
ফিল্ড বসের কাছে আসার সময়ই ফিল্ড বস হত্যা হয়ে যায়। আর জ্যাক এবং জিতু দেখতে পারে যারা ফিল্ড বসকে হত্যা করে তাদের সংখ্যা প্রায় একশো জনের মতো হবে। যেহেতু নতুন প্লেয়ারের কেউই প্রথম ফ্লোরের ফিল্ড বসকে হত্যা করতে পারে নি জ্যাক এবং জিতু বাদে, তাই তারা কেউই নতুন প্লেয়ার ছিলো না। পুরাতন প্লেয়ার হওয়ায় বলা যায় তারা পূর্বের বছরের কেউ হতে পারে। ফিল্ড বসকে হত্যার মাধ্যমে বেশ ভালো লুটই তারা পেয়েছিলো বলে আশা করা যাচ্ছিলো। যেহেতু সবাই একসাথে ছিলো তাই বলা যাচ্ছিলো তারা একটা পার্টির মধ্যে ছিলো। সেখানে অনেক মেয়ে, এমনকি আঠারো এর নিচে কিছু বাচ্চাও ছিলো। সব কিছুই ভালো যাচ্ছিলো, আর তখনি তাদের পার্টির মধ্য থেকে পাঁচজন মিলে পুরো পার্টির মেম্বারদের হত্যা করতে শুরু করে। হত্যাকান্ডটা এতো নির্মম ছিলো যে তারা বাচ্চা সহ মেয়েদের কেও জীবিত রাখে নি। তাদের হত্যাকান্ড শেষ হওয়ার পরে তারা সে জায়গা থেকে সরে যায়। জিতু এবং জ্যাক শুধু দূর থেকে এটা দেখা ছাড়া কিছুই করতে পারছিলো না।
-->>তাহলে কি এটাকেই বলে লেভেল এবং আইটেম ডিফারেন্স?(জিতু)
জিতুর মতো জ্যাকেরও একই প্রশ্ন ঘুরপাক করছিলো। পাঁচজন ব্যক্তি যখন তাদের হত্যাকান্ড মনস্টার রেখে মানুষের উপরে শিফ্ট করলো তখনই জিতু এবং জ্যাক সেখানে যেতে চেয়েছিলো, তারা দুজনেই মনে করেছিলো পঁচানব্বই জন খুব সহজেই পাঁচজনকে আটকাতে পারবে, তারপরও তারা সাহায্যের জন্য এগিয়ে যেতে চাচ্ছিলো। কিন্তু কিছুটা সময় যেতেই যখন এক এক করে সমস্ত প্লেয়ার মাটিতে পরে গেলো তখন দুজনই বুঝতে পারলো তারা কতটা অসহায় ছিলো সেখানে। লেভেলের মধ্যে পার্থক্যটা অনেক বড় একটা জিনিস। সকল প্লেয়ারদের পাওয়ার পরিমাপ করা হয় তিন বিষয়ের উপরে নির্ভর করে। লেভেল, স্কিল এবং আইটেম। এই তিন বিষয়ের মধ্যে লেভেল সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ একটা বিষয়। যদিও একটা লেজেন্ডারি লেভেলের আইটেম এক লেভেলের প্লেয়ারকেও শক্তিশালী করবে, কিন্তু ভেবে দেখার বিষয় সেই একই আইটেম নিয়ে দশ লেভেলের প্লেয়ার তাহলে কতটা শক্তিশালী হবে?
"একটা প্লেয়ার এক লেভেলে থাকলে সে তিন লেভেলের মনস্টারও হত্যা করতে পারে, কিন্তু একটা প্লেয়ার খুব সহজেই তাদের নিজের লেভেলের প্লেয়ারদের হত্যা করতে পারে না। আর যারা কম সময়েই কোনো কষ্ট ছাড়া অসংখ্য প্লেয়ারকে হত্যা করতে পারে তাদেরকে বলা হয় র্যাংকার। এটাই ছিলো বুড়োর মতাবাদ এই বিষয়ে।" (জ্যাক ভাবছে)
জ্যাকের ভাবনা তীক্ষ্ণ হলো। সে বুঝতে পারলো এই বিষয়ে সে কিছু করতে পারবে না। তাই ভাবনা টাকে সে বাদ দিলো। যদিও সে এবং জিতু অনেকটা দূরে ছিলো, তারপরও তার সন্দেহ হচ্ছে পাঁচটা লোকই তাদের দুজনকে দূর থেকে লক্ষ করেছেে। তারা যে জ্যাক এবং জিতুকে কিছু করে নি এ জন্য নয় যে জ্যাক এবং জিতু শক্তিশালী, বরং এজন্য যে তারা এতোটা দুর্বল যে তাদের কিছু করতেই হতো না।
* * * *
পাঁচ ব্যক্তি তাঁদের হত্যাকান্ড শেষ করে টেলিপোর্টেশন স্ক্রোলের মাধ্যমে টেলিপোর্ট হয়ে আন্ডারগ্রাউন্ড সিটিতে প্রবেশ করে। পাঁচ জনের একজন তাদের টিমের লিডারকে বলতে শুরু করলো,
-->>লিডার, এভাবে কি দুজন সাক্ষীকে রাখা ঠিক হয়েছে? আমাদের তো তাদেরকেও হত্যা করা উচিত ছিলো।
টিম লিডার তার টিমের সদস্য কে বলতে লাগলো।
-->>তোমরা হয়তো নিশ্চয় জানো নতুন প্লেয়াররা এসেছে। আর তাদের সবার ইন্টারেস্ট এখন হোয়াইট পার্টির দিকে। আর আমাদের রেপুটেশন বৃদ্ধি করতে হলে নিশ্চয় কিছু গুজব চারিদিকে ছড়াতে হবে। আর আমার মনে হয় সেই গুজবের জন্য উক্ত দুই নুব প্লেয়ারই যথেষ্ট।(টিম লিডার)
-->>কিন্তু টিম লিডার আমাদের কাজে যদি পার্টি লিডার সন্তুষ্ট না হয়?
-->>সেটা নিয়ে ভাবতে হবে না। কারন পার্টি লিডারের আদেশই ছিলো আমাদের কাজের গুজব গুলে যেনো চারিদিকে ছড়িয়ে পরে।(টিম লিডার)
টিম লিডারের কথায় বাকি চারজন আর কিছু বললো না। চারজনই প্রস্তুত ছিলো জ্যাক এবং জিতুকে হত্যা করার জন্য। কিন্তু তাদের টিম লিডারের আদেশে তারা সেটা না করেই সে জায়গা থেকে চলে আসে। আর তাদের কাজটা আশানুরূপ না হলে এমন নয় যে তারা সেই দুটো প্লেয়ারকে কিছু করতে পারবে না। দুটো প্লেয়ারই নুব ছিলো, যাদেরকে যেকোনো সময়ই তারা চাইলে হত্যা করতে পারবে। তাই এ বিষয়ে তারা আর কোনো কথা বললো না। টিমের পাঁচজনই তাদের আসল পার্টির হেডকোয়ার্টারের মধ্যে প্রবেশ করলো। পার্টি লিডারের অফিস রুমে তারা প্রবেশ করেছে যেখানে পার্টি লিডার বসে কিছু ব্যক্তিদের সাথে কথা বললো। রুমে পাঁচজন নতুন ব্যক্তির প্রবেশ দেখতে পেয়ে রাজ খান এবং আফিফ চৌধুরী দুজনেই পথে দাঁড়ানো থেকে সরে তাদের জন্য রাস্তা করে দিলো।
-->>তাহলে মিশনটা সাকসেস?(পার্টি লিডার)
টিম লিডার সাথে সাথে উত্তর দিলো,
-->>গ্রিন স্নেক পার্টির সকল সদস্যদের আমরা হান্ট করেছি।
পার্টি লিডারের মনেযোগ এবার সেই টিম লিডারের থেকে নতুন দুই ব্যক্তির দিকে চলে গেলো,
-->>তো নাম কি ছিলো তোমাদের? ও রাজ খান এবং আফিফ চৌধুরী। আমাদের প্রথম ফ্লোরের রেইড কিছু দিনের মধ্যে শুরু হবে, আমি চাইবো হোয়াইট পার্টির মতো কোনো ভুল যেনো না হয়। নাহলে ফল কিন্তু মোটেও ভালো হবে না।
পার্টি লিডার বসে ছিলো তার জায়গাতে, কিন্তু কথাটা বলার মাঝে এতোটা ব্লাডলাস্ট ছিলো যে, যাদের উদ্দেশ্যে কথাটা বলা হয়েছে তারা ভয়ে কাঁপতে শুরু করলো। দুজনে কোনো কথা না বলতে পেরে শুধু তাদের মাথা নারিয়ে হ্যাঁ উত্তর দিলো।
* * * * *
জ্যাক এবং জিতু ফিল্ড বসের স্পন হওয়া জায়গার উপরে দাঁড়িয়ে আছে অনেকক্ষন হলো। যেহেতু এক সপ্তাহ লাগবে এই ফিল্ড বস আবারো স্পন হওয়ার জন্য, তাই আপাতোতো জ্যাকের কিছু করার নেই এখানে। কিন্তু সে একটা জিনিস বেশ বুঝতে পেরেছে,
-->>সিনিয়র, আমার মনে হয় না আমরা এই বসকে দুজনে মিলে হারাতে পারতাম।(জিতু)
জিতুর কথাটায় ঠিক ছিলো। একটা ফিল্ড বস যে পূর্বের বসের থেকে অন্য একটা লেভেলে ছিলো তাকে হারানোর জন্য একশ জন প্লেয়ার চেষ্টা করেছে। যদিও জ্যাক সবার শেষে এসেছিলো, কিন্তু তারপরও তাদের ফাইট দেখে সে বুঝতে পেরেছে মনস্টারটা অন্য এক লেভেলে ছিলো। যে লেভেলে এখনো জ্যাক পৌছাতে পারে নি। জ্যাক সরাসরি বস মনস্টারের কাছে এসেছিলো এটা ভেবে যে তার কাছে একটা মারাত্মক লেভেলের এবিলিটি রয়েছে, যেটার মাধ্যমে সে পূর্বের বসটাকে হত্যা করতে পেরেছে। কিন্তু,
"এবার আমার হাজারো মৃত্যুতেও আমি কিছু করতে পারবো না।" (জ্যাক ভাবছে)
দ্বিতীয় ফ্লোরের ফিল্ড বস একটা গরিলা। যেটার আকার অনেকটা বড়। অবশ্য কিং কং এর মতো নয়, তারপরও বড় সাইজের একটা গরিলা যার উচ্চতা একটা হাতির থেকে কিছুটা কম হবে। সাধারণত গরিলা মনস্টারদের প্রচন্ড শক্তি এবং অত্যাধিক লাইফ থাকে, তাই তাদের বিপক্ষে সামনাসামনি ফাইট বোকামি ছাড়া আর কিছু না। আর জ্যাক এবং জিতু দুজনেই সামনাসামনি ফাইট করার মতো প্লেয়ার। যাদের ক্লোজ রেঞ্জ ড্যামেজ ডিলার বলা হয়। সাধারনত ড্যামেজ ডিলার বলা হয় যারা, কোনো মনস্টারকে বাকি সব প্লেয়ারদের থেকে বেশী ড্যামেজ দিতে পারে। চার ভাগে ভাগ করা হয় প্লেয়ারদের মধ্যে, যাদের মধ্যে ড্যামেজ ডিলার, সাপোর্টার, ট্যাংক এবং সর্বশেষ ম্যাজ। এই চার ভাগের মধ্য থেকে শুধুমাত্র ড্যামেজ ডিলাররাই মনস্টারদের বেশী ড্যামেজ দিয়ে থাকে। ড্যামেজ ডিলারদের মধ্যে আবার তিন ধরনের প্লেয়ার থাকে। যাদের কিছু আছে যারা ম্যাজিক স্পেল ব্যবহার করে, কিছু লং রেঞ্জের আবার কিছু শর্ট রেঞ্জের। এই সমস্ত বিভাগের মধ্য থেকে জ্যাক এবং জিতু দুজনেই ক্লোজ রেঞ্জ ড্যামেজ ডিলার। যদিও জ্যাক মাঝে মাঝে এখন বো ব্যবহার করে, তারপরও তার প্রধান অস্ত্র সোর্ড। আর অন্যদিকে জিতু একজন ফাইটার, সেই সুবাদে এই ফ্লোরের ফিল্ড বসকে হত্যা করতে হলে তাদের দুজনেই সামনা সামনি ফাইট করতে হবে। আর গরিলাটা এতোটা শক্তিশালী ছিলো যে জ্যাক এবং জিতুর খেল খতম হতে বেশী সময় লাগতো না।
-->>সিনিয়র তাহলে এখন কি আমরা হিডেন বসের কাছে যাবো?(জিতু)
জ্যাকের কাছে যে তথ্য ছিলো সে অনুযায়ী সে চিন্তা করেছিলো কোনো ভাবে সে গরিলাকে হারাতে পারতো। কিন্তু সে ভাবনা তার মাথা থেকে চলে গিয়েছে এখন। আর যেহেতু ফিল্ড বসকে হত্যা করতে পারতো না, সেই জন্য হিডেন বসের জন্যও তারা প্রস্তুত হয় নি।
-->>আমাদের এক্সপি প্রয়োজন প্রথমে।(জ্যাক)
জ্যাক জিতুকে আর কিছু না বলে মনস্টার হান্ট করার জন্য রওনা দিলো। প্রথম ফ্লোরের মধ্যে শুধু স্লাইম মনস্টার থাকলেও দ্বিতীয় ফ্লোরে বেশ কিছু মনস্টারের বাস রয়েছে। যাদের মধ্যে স্পাইডার, ওল্ফ, গ্রিন স্লাইম এবং রেড স্লাইম রয়েছে। গ্রিন স্লাইম প্রথম ফ্লোরে থাকার পরও দ্বিতীয় ফ্লোরে আছে, আর সেই সাথে রয়েছে তাদের উন্নত হাইব্রিড জাত রেড স্লাইম। জ্যাক এক এক করে সকল মনস্টারদের হত্যা করা শুরু করেছে। যদিও দ্বিতীয় ফ্লোরের বস মনস্টার থেকে শুরু করে একটা গ্রিন স্লাইম সকলের লেভেলেই দুই, তারপরও তাদের ভিতরে পার্থক্য রয়েছে। একজন প্লেয়ার খুব সহজেই একশো গ্রিন স্লাইমকে হত্যা করতে পারে, কিন্তু একশত প্লেয়ার মিলে একটা ফিল্ড বসকে হত্যা করাও অনেক সময় সম্ভব হয় না। এটাকেই ক্ষমতার পার্থক্য বলে। জ্যাক যেহেতু এক লেভেলে আছে তাই জন্য সাধারন দুই লেভেলের মনস্টার হত্যা কোনো ব্যাপারই হবে না। কিন্তু একটা বস এখন তার ছোয়ার বাইরে।
জ্যাক দ্বিতীয় ফ্লোরের এক মনস্টার গুলোকে এক এক করে হত্যা করতে শুরু করলো। প্রথমে তার টার্গেট বস মনস্টার হলেও সেই লেভেলে জ্যাক এখনো পৌছায় নি। হয়তো বড় কোনো পার্টির সাথে থাকলে জ্যাকের জন্য সম্ভব হতো বসকে হারানো। কিন্তু আপাতোতো জ্যাক এবং জিতুর জন্য এটা অসম্ভব হয়ে দাঁড়িয়েছে। সে অনেকটা কনফিডেন্সে বসের কাছে গিয়েছিলো, কিন্তু সেটা এখন আর নেই। হয়তো এক সময়ে অসীম শক্তির অধিকারী হওয়ার সাইড ইফেক্ট এটা। যেহেতু জ্যাক এক সময়ে তার ওয়ার্ল্ডের সবচেয়ে শক্তিশালী ব্যক্তির মধ্যে একজন ছিলো, তাই সেই সুবাধে জ্যাক মাঝে মাঝে বেশীই কনফিডেন্স হয়ে যায়। আর তা "বিরিং মি ব্যাক" স্কিলটা তো তার কনফিডেন্সকে আরো বৃদ্ধি করে। কিন্তু এই সময়ে তার মনে পরেছে সে একটা সাধারন মানুষ ছাড়া কিছুই না, যার কাছে হাফ-ডিম্যান, ডেভিলদের মতো শারিরীক ডিফেন্স নাই। নেই এঞ্জেল এবং ভ্যাম্পায়ারদের মতো শারিরীক শক্তি। তাই জ্যাককে এখানে অহসায় ছাড়া আর কিছু বলা যাচ্ছে না। যেহেতু এরকম জীবনে সে আগেও অভিজ্ঞ তাই তার পরিস্থিতির সাথে খাপ মেলাতে সমস্যা হচ্ছে না।
ওল্ফ ফরেস্টের মধ্যে জ্যাক এবং জিতু হামলা করেছে। বিশাল একটা ফরেস্টের মাঝে রয়েছে অসংখ্য ওল্ফ মনস্টার। যারা প্রথম ফ্লোরের ফিল্ড বসের থেকে অনেক অংশে দুর্বল। জ্যাক এবং জিতু পিঠে পিঠ মিলিয়ে রেখে দুইপাশে ওল্ফ মনস্টারদের সাথে ফাইট করে যাচ্ছে। জ্যাক তার সোর্ডের ব্যবহার করছে এবং জিতু তার হাতের ব্যবহার করছে। জিতুর কাছেও একটা সোর্ড রয়েছে কিন্তু সেটা ব্যবহার করতে সে পছন্দ করে না। প্রথম ফ্লোরের ফিল্ড বস হত্যার পর দুজনেই ভালো পুরষ্কার লাভ করেছে। যার মধ্যে জিতু একটা শিল্ড এবং ভালো একটা সোর্ড পেয়েছে। কিন্তু সেটার কোনোটাই জিতু ব্যবহার করতে চাচ্ছে না। যে জন্মগত ভাবে একজন ফাইটার ছিলো সে কখনো কোনো কিছুর পিছনে লুকাতে চাই না, এটাই জিতুর মন্তব্য এই বিষয়ে। তাই জ্যাকও কিছু বলে নি তাকে।
জ্যাক তার সোর্ড স্কিল এবং এমনি এমনি সোর্ড স্লাইসের মাধ্যমে বেশ অনেক ওল্ফকে হত্যা করেছে। ওল্ফ গুলোর এক্সপি প্রথমে বেশী মনে হলেও সময়ের সাথে সেগুলো কম বলে মনে হচ্ছে জ্যাকের কাছে। প্রতিটা ওল্ফ মনস্টার হত্যার ফলে পঞ্চাশ করে এক্সপি পাওয়া যাচ্ছে, যেগুলোকে প্রথম ফ্লোরের গ্রিন স্লাইমের সাথে তুলনা করলে প্রায় পঞ্চাশ গুণ বেশী। কিন্তু এই এক্সপিতেও জ্যাকের হচ্ছে না। শূন্য লেভেল থেকে প্রথম লেভেলে উঠা অনেকটা কষ্টকর হলেও প্রথম লেভেল থেকে দ্বিতীয় লেভেলে উঠা সেই তুলনায় সহজ। যেখানে প্রথম ফ্লোরে প্রথম লেভেলে উঠার জন্য সবাইকে এক হাজার স্লাইম হত্যা করতে হতো, সেখানে দ্বিতীয় ফ্লোরে একশো ওল্ফ হত্যা করতে পারলেই দ্বিতীয় লেভেলে উঠা যায়। কিন্তু একশত ওল্ফ হত্যা করা কি মুখের কথা?
জ্যাক এবং জিতুকে নয়টা ওল্ফ মনস্টার এট্যাক করেছিলো। যাদের মধ্য থেকে তিনটাকে জিতু এবং ছয়টাকে জ্যাক হত্যা করেছে। আর এই সব কিছুর মাঝ থেকে জ্যাক মাত্র ৩০০ এক্সপি পয়েন্ট পয়েছে, যেটা তাকে দ্বিতীয় লেভেলে পৌছাতে কিছুটা হেল্প করেছে। চারপাশে ওল্ফ মনস্টারের মৃত রক্তের গন্ধে ভরে গিয়েছে, আর এই সময়ে জ্যাক সামনের দিকে হেটে যাচ্ছে। জিতু পিছনে ছিলো, সেটা জ্যাক এক পলকে দেখে নিলো। আর এই সময়েই হঠাৎ সময় যেনো থেমে গেলো। সব কিছু স্থির হয়ে গেলো। উপর থেকে কিছু পাতা পরছিলো গাছ থেকে, সেগুলোও থেমে গিয়েছে। তখনি জ্যাকের ব্যাগের ভিতর থেকে একটা ম্যাজিকাল আইটেম বের হয়ে গেলো। আইটেমটা একটা ক্রস ছিলো। যেটা পূর্বে কিভাবে জ্যাক পেয়েছে সেটা সে বলতে পারছে না। ম্যাজিকাল আইটেমটা সে শুধু তার পাশে পরে থাকতে দেখেছিলো। উক্ত আইটেম তার ব্যাগ থেকে বের হয়ে হাওয়ার মধ্যে ভাসতে শুরু করলো এবং সেই সাথে মৃত ওল্ফ মনস্টারের শরীর থেকে এনার্জি এবজোর্ব করতে লাগলো। এনার্জি গুলো এবজোর্ব শেষ হওয়ার সাথে সাথে ক্রসটা আবারো জ্যাকের ব্যাগের ভিতরে প্রবেশ করলো।
-->>এই সামান্য কাজের জন্য এতো ড্রামা করার কি দরকার ছিলো নিগ্গা।(জ্যাক)
* * *
To Be Continued
* * *
কেমন হলো জানাবেন।