[প্রথমেই বলি গল্পটা পুরো কাল্পনিক, কেউ বাস্তব কিংবা ধর্মের সাথে তুলনা করবেন না]
#ডিম্যান_কিং_সিরিজ#
#সুপ্রিম_বিয়িং#
পর্ব:৪২
লেখকঃহৃদয় বাপ্পী
.
.
.
জিতু এই পর্যন্ত তিন চারটা স্কিল পেয়েছে তার লেভেল আপ এবং মনস্টার হত্যা করার মাধ্যমে। সেগুলোর মধ্য থেকে তার একমাত্র স্কিল যেটা সে সব সময় ব্যবহার করে সেটা হলো এক্সট্রিম ফিস্ট। এটা জিতুর মার্শাল আর্ট মুভ যেটা প্লেয়ার হওয়ার পর তার স্কিলে পরিণত হয়েছে। জিতুর দেখাদেখি জ্যাক নিজেও এক্সট্রিম ফিস্ট শিখেছিলো। কিন্তু তার স্কিলটা জিতুর ধারের কাছেও নাই। আর জ্যাক তার হাত দিয়ে ফাইট করতে ইচ্ছুক না বলে সেটা ব্যবহারও করে না। জ্যাকের প্লান অনুযায়ী জিতু ফিল্ড বসের সামনে এগিয়ে গেলো। জ্যাক এবার অনেকটা সিওর যে তারা দুজনে খুব সহজে এই মনস্টারকে হারাতে পারবে। যেহেতু এই বসের দুর্বলতা আগুনে, আর জ্যাকের কাছে আগুনের খুব ভালো একটা আইটেম রয়েছে তাই তারা এই রিক্সটা নিতে চাচ্ছে। দুজনেই তৃতীয় ফ্লোরের তৃতীয় লেভেলে রয়েছে। প্রথম, দ্বিতীয় এবং তৃতীয় লেভেলে উঠতে এক্সপি লেগেছে যথাক্রমে ১০০০, ৫০০০ এবং ২৫০০০। জিতুর যদিও এখনো চতুর্থ লেভেলে উঠতে অনেকটা এক্সপি পয়েন্ট বাকি আছে কিন্তু জ্যাক ১২৪৯৯৯ এক্সপি পয়েন্টে আটকে আছে। তার মাত্র এক পয়েন্ট দরকার চতুর্থ লেভেলে পা দেওয়ার জন্য। লেভেল অনেক গুরুত্বপূর্ণ একটা জিনিস, আর সেটা ফ্লোরের উপরে যাবে না যতক্ষন না পর্যন্ত উক্ত ফ্লোরের একটা বসকে হত্যা করা হচ্ছে। তৃতীয় লেভেলে উঠতে হলে দ্বিতীয় ফ্লোরের একটা বসকে হত্যা করতে হবে আবার চতুর্থ লেভেলে উঠতে হলে তৃতীয় ফ্লোরের বসকে হত্যা করতে হবে। এই টেস্ট ড্যানজনের নিয়মটা এরকম ভাবে বানানো হয়েছে যাতে করে কেউ তাদের লিমিটকে অতিক্রম করতে না পারে। অবশ্য মানুষ এটা সম্পর্কে কিছুই জানে না, তারা না জেনেই রোজ শক্তিশালী হওয়ার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করে যাচ্ছে, কিন্তু সবাই তাদের সাকসেস দেখতে পারে না।
জিতু বিশাল ব্যাট মনস্টারের সামনে গিয়ে দাঁড়ালো। বসটা ঘুমাচ্ছিলো উল্টো হয়ে। জিতু এবং জ্যাক যে তার সামনে দাঁড়িয়ে ছিলো সেদিকে তার কোনো মনোযোগই নেই। আর জিতু এই সুযোগে তার এক্সট্রিম ফিস্ট ব্যবহার করলো। লেভেল বৃদ্ধি এবং অতিরিক্ত ব্যবহারের ফলে স্কিলের পাওয়ার বৃদ্ধি পায়। যার ফলে জিতু চাইলে পুরো একটা শক্তিশালী মেটাল দেওয়ালও ফুটো করতে পারবে তার এক্সট্রিম ফিস্টের মাধ্যমে। কিন্তু যেহেতু এটা একটা বস মনস্টার তাই এটার পেটে ফুটো করা এতোটাও সহজ না। জিতুর স্কিল একটিভ হওয়ার জন্য আধা মিনিট সময় প্রয়োজন হয়। যেটা এক সময়ে এক মিনিট ছিলো। যেহেতু প্লেয়ার হওয়ার পর থেকে স্কিলের নাম বলাতেই সেগুলো ব্যবহার করা যায় তাই জিতু শুধু নামটা ডেকে আধা মিনিটের মতো চুপ থাকে এক জায়গায়। স্কিলটা একটিভ হওয়ার সাথে সাথে জিতুর হাত দিয়ে নীল কালারের এক রকম ধোঁয়া বের হতে শুরু করলো। এটা সময় ভেদে এক এক রকম হয়। এখনো জ্যাক বা জিতু নিজেও জানে না কোন সময় জিতুর কালার গুলো কিরকম হয় এবং কেনো। জিতু তার ডান হাতে সকল এনার্জি ফোকাস করে বসের পেট বরাবর এট্যাক করে। যেহেতু বাদুড়রা ঘুমানোর সময় তাদের হাতের ডানা দিয়ে বুক ঢেকে রাখে তাই জিতুর এট্যাক পুরোটায় ডানাতে লাগলো। জিতু চাইলেই পিঠে মারতে পারতো, কিন্তু জ্যাক চেয়েছিলোই এটা। যেহেতু জিতুর একট্রিম ফিস্ট মেটালকে ফুটো করার ক্ষমতা রাখে, সেখানে বসটার পেটে ফুটো না হলেও তার ডানার অবস্থাটা খারাপ হবেই।
-->>এটার মাধ্যমে এখন এটা উড়তে পারবে না।(জ্যাক)
জিতুর পান্সের মধ্যে অনেকটা ফোর্স থাকার কারনে বসটা পিছনে দাঁড়িয়ে থাকা জ্যাকের দিকে উড়ে যাচ্ছিলো। জ্যাক পূর্বেই তার রেইনবো বো এবং হলুদ এরো নিয়ে রেডি ছিলো। জিতুর পান্সের সাথে সাথে জ্যাক তার এরোকে ঠিক বাদুড়ের মাথা বরাবর ছুড়ে দিলো। বাদুড়টা জিতুর পান্সের ফলে জাগ্রত হলেও তার কিছু করার ছিলো না। কারন হঠাৎ আক্রমন ছিলো এটা। তীরটা ঠিক বাদুড়ের মাথায় গেথে গেলো এবং সেটার উল্টো ফোর্সে বাদুড়টা সেখানেই পরে গেলো। তার লাইফ এখনো অর্ধেকের মতো আছে বা তার বেশী। এই সময়ে বাদুড়টা উঠে জ্যাককে এট্যাক করবে তার পূর্বেই জ্যাক তার ফায়ার ড্রাগন সোর্ড ব্যবহার করলো এবং,
-->>ইগনাইট।(জ্যাক)
জ্যাক কথাটা বলার সাথে সাথে সোর্ডের ব্লেডে আগুন দেখা যাচ্ছিলো। আগুনটা এতো তীব্র ছিলো যা তার আশেপাশের সব কিছুকেই পুরিয়ে দিতে চাচ্ছিলো। জ্যাক সময় নষ্ট না করে তার সোর্ড স্কিল ব্যবহার করলো।
"কুইক ড্র"
সোর্ডের খাপ থেকে দ্রুত ব্লেডটা বের করে জ্যাক বাদুড়ের উপর থেকে নিচ পর্যন্ত দু টুকরো করে ফেলে। যার ফলে বসটার ব্লাড চারিদিকে ছিটে গেলো। জ্যাক তার ব্লেডটা আবার খাপের মধ্যে ভরে ফেললো এবং জিতুর দিকে তাকালো।
-->>ওয়েল ডান জিতু।(জ্যাক)
-->>সিনিয়র আমি আপনাকে যত দেখছি, ততই একটা মনস্টার হয়ে যাচ্ছেন আপনি।(জিতু)
জ্যাক এই কথাটার কোনো উত্তর দিলো না। সে নিজেই জানে সে একসময় মনস্টার ছিলো। তাই নতুন করে মনস্টার হওয়ার কোনো মানেই হয় না। যদিও পরের ওয়ার্ল্ডে বা জীবনে সে একটা মানুষের শরীরে জন্ম নিয়েছিলো তারপরও ধীরে ধীরে সে তার মনস্টার রূপটা আবারো ফেরত পেয়েছে। মনস্টার দু ভাবে চেনা যায়। এক স্বভাবে এবং এক জন্মগত ভাবে। সেখানে জ্যাক জন্মগত ভাবেই একজন মনস্টার, বা সময়ের সাথে হয়েছে যদিও তার ব্যবহার একটা মনস্টারের মতো না তারপরও এই পর্যন্ত কম জীবন সে হত্যা করে নি। ডার্ক এল্ফ, লোকির আর্মি এবং ডেভিল কিং এর আর্মি সব মিলিয়ে অনেক অনেক অনেক প্রাণের হত্যা হয়েছে জ্যাকের হাত থেকেই। তাই তাকে একজন মনস্টার বললে সে অবাক হবে না।
-->>চলো আমাদের কাজ এখনে শেষ।(জ্যাক)
জ্যাক তার মোবাইলটা বের করে তার লেভেল দেখতে পারলো। চতুর্থ লেভেলে পা দিয়েছে সে আর চতুর্থ ফ্লোরেও সে প্রবেশ করার অধিকার পেয়েছে। তৃতীয় ফ্লোরের ফিল্ড বসটা জ্যাককে মোট ৫০ হাজার এক্সপি পয়েন্ট সরবরাহ করেছে যেটা অনেক মনে হলেও সাধারণ পরের লেভেলে উঠার জন্য খুবই সামান্য। ৬ লক্ষ পঁচিশ হাজার এক্সপি পয়েন্ট দরকার জ্যাকের পরবর্তী লেভেলে যাওয়ার জন্য। আপাতোতো ড্যানজনের লিমিটের জন্য জ্যাক পঞ্চম লেভেলে উঠতে পারবে না। যেহেতু চতুর্থ ফ্লোরের বস না হত্যা পর্যন্ত লেভেল আটকেই থাকবে তাই আপাতোতো জ্যাকের সেদিকে আগ্রহ নেই। তাছাড়াও অনেক ভালো ভালো রিওয়ার্ড পাওয়া গিয়েছে। জিতু তার পাওয়া রিওয়ার্ড গুলো দেখছে না, কারন সেটার প্রতি তার কোনো ইন্টারেস্ট নেই। কিন্তু জ্যাক একবার করে তার রিওয়ার্ড গুলো দেখে নিলো।
"পঁচিশ হাজার গোল্ড কয়েন, কিছু পোশন এবং একটা নেকলেস খারাপ না লুট।" (জ্যাক ভাবছে)
জ্যাক তার রিওয়ার্ড দেখতে লাগলো। বস হত্যা মাধ্যমে তেমন বেশী লুট পাওয়া না গেলো যে আইটেম গুলো পাওয়া যায় সেগুলো মার্কেটের মধ্যে পাওয়া যায় না। ড্যানজনের মধ্যে আইটেম গুলোকে র্যাংক দেওয়া হয়েছে। দুর্বল থেকে যথাক্রমে F, E, D, C, B, A, A+ এবং S। মনস্টার হত্যা করলে কম সম্ভবনা থাকে একটা E এবং F র্যাংকের আইটেম পাওয়ার। আর মনস্টার হত্যার মাধ্যমে খুব খুব কম সম্ভবনা থাকে একটা D র্যাংকের আইটেম পাওয়ার। কিন্তু একটা বস মনস্টার হত্যা করলেই A, B, C, D র্যাংকের লুট সিওর থাকবে। অনেক সময় একের বেশীও থাকে। যাদের লাক্ ভালো বেশী তারা অনেক সময় A+ র্যাংকের আইটেমও পেয়ে যায় বস মনস্টারের মাধ্যমে। কিন্তু এখানে একটা ড্রব্যাক আছে। বস মনস্টার সবাই পার্টির সাথে হত্যা করে। জ্যাক এবং জিতু বাদে নতুন যারা আছে তাদের বড় বড় পার্টি রয়েছে। আর পার্টির মধ্যে কোনো বস হত্যার পর একটা ভালো আইটেম পেলে সেটা কখনো নিজের কাছে থাকবে না।
-->>আর এই দিক দিয়ে আমরা এগিয়ে আছি বাকিদের থেকে।(জ্যাক)
জ্যাকের হঠাৎ কথায় জিতু কিছুক্ষনের জন্য জ্যাকের দিকে তাকালো, সে কিছু বুঝতে পারলো না জ্যাকের উক্ত কথাটা। জ্যাক বোঝাতে চাচ্ছিলো যে তাদের দুইজনের পার্টির জন্য মনস্টারের এক্সপি এবং লুটের দিক দিয়ে তেমন ভাগাভাগি হচ্ছে না। আর দুজন হওয়ার ফলে বাকি টিমদের থেকে এক্সপিও বেশী পাওয়ার ফলে তারা দুজনে দ্রুত লেভেল বৃদ্ধি করতে পারছে। জ্যাক আর কোনো কথা বললো না। সে তার লাগানো সিড অফ ওয়ার্ল্ড ট্রি থেকে জন্ম নেওয়া বিশাল গাছের পাশে গেলো। গাছের চূড়াটা আকাশ ছোঁয়া মনে হচ্ছিলো জ্যাকের কাছে। সে অবাক হচ্ছিলো, একটা ড্যানজনের ফ্লোর যদি এতো বড় হয় তাহলে টাওয়ারটা কত বড় হতে পারে? জ্যাক এবং জিতু দুজনে গাছের কান্ড বেয়ে নিচে নামতে শুরু করলো। মার্কেট থেকে সাধারন চারটা সর্টসোর্ড ক্রয় করেছে জ্যাক। যেটা একটা একটা করে গাছের শরীরে আঘাত করতে করতে জ্যাক এবং জিতু নিচে নেমে গেলো।
-->>সিনিয়র এখন আমরা কোথায় যাচ্ছি?(জিতু)
-->>অবশ্যই আরো কিছু মনস্টার এবং হিডেন বসকে হত্যা করতে।(জ্যাক)
জ্যাক যেহেতু এই ফ্লোরেই চতুর্থ লেভেলে উঠেছে, তাই তাকে তার এক্সপিও পূর্ণ করে রাখতে হবে এখানে থেকে। তার ফলে পরবর্তী ফ্লোরে তার কিছুটা সময় বেঁচে যাবে।
"যেহেতু হিডেন বসকে খুঁজতে কিছুটা সময় লাগবে, তাই এই সুযোগে আমাদের একটু রেস্টও নিয়ে নেওয়া উচিত।" (জ্যাক ভাবছে)
জ্যাক জিতুর দিকে তাকালো একটু। যদিও তাকে শারিরীক ভাবে একদম ফিট দেখা যাচ্ছিলো, কিন্তু মেন্টাল ভাবে সে ঠিক নেই। জ্যাকের জন্যও সেটা প্রযোজ্য। দুজনেই ঘুমকে ভুলে গিয়ে এতোটা সময় শুধু মনস্টার হত্যা করেই যাচ্ছিলো। এজন্য তারা মানসিক ভাবে অনেকটা ক্লান্ত হয়ে আছে। বাইরে থেকে দেখা না গেলেও ভিতরে তাদের ক্লান্তকর ভাব ঠিকই রয়েছে। তাই জ্যাক ভাবছিলো এক দুদিনের জন্য প্রথমে ছোট একটা বিশ্রাম নিতে। কিন্তু সেটা এখন নয়।
-->>হিডেন বসটাকে হত্যার পরে আমাদের ছোট একটা রেস্ট নিতে হবে।(জ্যাক)
জিতু কিছু বললো না। যদিও সে অনেক হার্ড ওয়ার্কিং একটা পুরুষ যে তার দিনের সবটা সময় ট্রেনিং এর মধ্যে কাটিয়ে দিতো, সে নিজেও জ্যাকের সাথে থেকে ক্লান্তিবোধ করছে। তার শরীর তাকে বলছে আর কিছু না করতে কিন্তু,
"শক্তিশালী হতে হলে আমাকে আমার লিমিটকে অতিক্রম করতে হবে। আর সেটা সিনিয়রের সাথে থাকলেই হবে।" (জিতু ভাবছে)
* * * * *
(টাওয়ার অফ গ্রিড)
হৃদয়, এরিয়েল এবং নিয়াক বসে আছে ছোট একটা ক্যাফের মধ্যে। টাওয়ারের মধ্যে এরকম ক্যাফে পাওয়াটা দুর্লভ বিষয়। কিছু সৌখিন মানুষের জন্যই এই একটামাত্র ক্যাফে তৈরী সম্ভব হয়েছে। যেটা টাওয়ারের মধ্যে ভালোই জনপ্রিয়। সেটার মধ্যে একটা ভিআইপি রুমের মধ্যে তিনজন বসে আছে। নিয়াকের চেহারা দেখেই বোঝা যাচ্ছিলো সে রেগে আছে। তার পাশে হৃদয় চুপ করে বসে আছে। সে একবার নিয়াকের দিকে তাকাচ্ছে আবার নিচের দিকে তাকাচ্ছে।
-->>তুমি এখনো সেই বিষয়ে রেগে আছো শালাবাবু?(হৃদয়)
হৃদয় ফ্লাশব্যাকের কথা মনে করলো। এক সময়ে নিয়াকের স্ত্রীকে কিস করেছিলো হৃদয়, আবার নিয়াকের বোনকেই নিয়ে পালিয়ে এসেছে। এই বিষয়ে কোন স্বামী এবং ভাই রাগ করবে না। যদিও তাদের মধ্যকার রাগ পূর্বে শেষ হয়ে গিয়েছিলো। কিন্তু আবারো নিয়াকের এই ওয়ার্ল্ডে প্রবেশ করেছে এজন্য নিয়াক রেগে আছে বলে ধারনা করছে হৃদয়।
-->>আমার বোনকে রেখে আরো মেয়ের সাথে ফষ্টিনষ্টি করতে এসেছো তাহলে।(নিয়াক)
নিয়াক তার মাথাকে ঠান্ডা করলো এবং হৃদয়ের কথার উত্তর দিলো।
-->>একদমই না। আমি এখানে নিজ ইচ্ছায় আসতে চাই নি।(হৃদয়)
হৃদয় ব্যাখ্যা দিতে লাগলো সে কিভাবে এখানে এসেছে। তার কথা অনুযায়ী সে, প্যাসিফিকের মধ্যে মনের আনন্দে সাঁতার কাটছিলো ডলফিন নিয়ে। তখনি সেখানে ছোট একটা ব্লাক হোল তৈরী হয়। যেটা হৃদয়কে টেনে তার ভিতরে নিয়ে যায়। এবং সেই ব্লাক হোল তাকে এখানে নিয়ে আসে। আলাদা একটা জায়গা এবং আলাদা একটা সময়।
-->>তুমি শুনলে অবাক হবে। কিন্তু আমরা দুজনেই তাদের নিজস্ব সময়ে নেই।(নিয়াক)
-->>সেটা তো আমিও বুঝতে পেরেছি এই মেয়েটার কথার মাধ্যমে।(হৃদয়)
হৃদয় এরিয়েলের দিকে সংকেত দিলো। এরিয়েল যে এতোক্ষন চুপ ছিলো সে কথা বলতে লাগলো এবার।
-->>কখনো টাইম ট্রাভেল করেছ তোমরা?(এরিয়েল)
এরিয়েলের হঠাৎ প্রশ্নটা অনেক আশ্চর্যকর ছিলো। হৃদয় এবং নিয়াক দুজনেই টাইম ট্রাভেল করেছে। যেটা একবার নয়, বেশ কয়েকবার ছিলো তাদের টাইম ট্রাভেল।
-->>হ্যাঁ, বেশ কয়েকবার।(নিয়াক)
-->>তোমরা যারা সময়ের নিয়মকে অমান্য করে অতীত এবং ভবিষ্যতের সাথে খেলা করেছো তাদের নিজস্ব ওয়ার্ল্ড এখন সময়ের লুপের মধ্যে আটকা রয়েছে।(এরিয়েল)
-->>মানে?(হৃদয়)
-->>রুলার অফ টাইম মারা যাওয়ার পূর্বে বেশ কিছু নিয়ম তৈরী করেছিলো। যারা টাইম নিয়ে খেলা করবে একটা সময়ে টাইমও তাদের নিয়ে খেলা করবে। আর তোমাদের সাথে এখন সেটায় হচ্ছে।(এরিয়েল)
-->>আমরা যারা টাইম ট্রাভেল করেছি তাদের ওয়ার্ল্ড পরিত্যক্ত হয়ে গিয়েছে। যেটায় যেকোনো সময় গডদের এ্যাভেটাররা যুদ্ধের ময়দান হিসাবে ব্যবহার করে।(নিয়াক)
-->>মানে?(হৃদয়)
-->>টাওয়ারের বাইরের অবস্থা তো দেখেছো তাই না? সবার বিশ্বাস তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ হয়েছে, কিন্তু আসলেই কি তাই? এখানে গডদের অ্যাভেটার তাদের যুদ্ধ করেছে। যার মাধ্যমেই আজ এই পৃথিবীর এই অবস্থা।(নিয়াক)
-->>তাহলে তুমি বলতে চাচ্ছো আমরা টাইম ট্রাভেল করেছি বলে এই জায়গার এই অবস্থা হয়েছে? তাহলে তো আমার ওয়ার্ল্ডেরও এরকম হবে।(হৃদয়)
-->>আর আমার ধারনা আমি আর তুমি সেজন্যই এখানে। বাকিটা আমাদেরকে এই ম্যাডাম ক্লিয়ার করে দিতে পারবে।(নিয়াক)
এরিয়েল কফি খাচ্ছিলো দুজনের কথা শুনতে শুনতে। নিয়াক এরিয়েলের দিকে তাকানোর ফলে এরিয়েল আবার বলতে শুরু করলো,
-->>টাইম ট্রাভেল নির্দিষ্ট একটা পয়েন্টে কাজ করে। যদি সে পয়েন্টকে কেউ অতিক্রম করে ফেলে তাহলে তাদের ওয়ার্ল্ড টাইম লুপের মধ্যে পরে যায়। আর যেহেতু এই ওয়ার্ল্ডে তোমরা টাইমের নিয়মকে অমান্য করেছো তাই এই ওয়ার্ল্ড টাইম লুপের মধ্যে পরে গিয়েছে। এই ওয়ার্ল্ডের টাইম অন্যান্য ওয়ার্ল্ডের টাইমের থেকে ভিন্ন একটা টাইমে চলতে শুরু করেছে। টাইম লুপের মধ্যে পরার ফলে এটা বিভিন্ন ওয়ার্ল্ড যেখানে টাইম ট্রাভেল করা হয়েছে তার সাথে ব্লাক হোল তৈরী করছে। এবং তাদের সময় থেকে তাদেরকে এই জায়গাতে নিয়ে আসছে।(এরিয়েল)
-->>আচ্ছা এরিয়েল তুমি তো সব কিছুই জানো, তাই আমাকে সহজ ভাষায় একটা উত্তর দাও। আমার ওয়ার্ল্ডও কি টাইম লুপের মধ্যে আছে?(হৃদয়)
-->>সেটা সম্পর্কে আমি কিছুই বলতে পারছি না।(এরিয়েল)
এমন নয় যে এরিয়েল জানে না, এরিয়েল বলতে পারছে না কারন সে এই বিষয়ে কিছু লেখে নি। সে নিয়াকের দিকে একবার তাকালো। তার গল্পের মধ্যে একটা শক্তিশালী চরিত্র সে। যার সম্পর্কে এখনো অনেক কিছু তার লেখা বাকি ছিলো। যেহেতু গল্পের শেষটা এরিয়েল করতে পারে নি তাই অনেক কিছু সম্পর্কে তার অজানা আছে। আর গল্পকে শেষ করতে হলে সমস্ত শক্তিশালী চরিত্রকে একত্র করতে হবে। তাই তো এরিয়েল এখানে তাদের দুজনের বিশ্বাস অর্জন করার চেষ্টা করে যাচ্ছে। নিয়াক যার মধ্যে গোল্ডেন ড্রাগন সিল রয়েছে। সে গোল্ডেন ড্রাগনের আংশিক পাওয়ার ব্যবহার করতে পারে। যার মধ্যে একটা হলো "আই অফ ড্রাগন"। এটা একটা ক্ষমতা যা নিয়াককে কোনো ব্যক্তির বলা সত্য এবং মিথ্যাকে জানায়। সেটা নিয়াক ব্যবহার করছে এটা জানতে যে এরিয়েল কোনো মিথ্যা কথা বলছে কিনা। আর এটা সম্পর্কে এরিয়েলের পূর্বে থেকেই ধারনা থাকার ফলে সে কোনো মিথ্যায় এখানে বলতে পারছে না।
-->>তো তুমি সব কিছু জানো কিভাবে?(নিয়াক)
নিয়াক খুব আগ্রহ নিয়ে কথাটা বলতে লাগলো। এরিয়েল বুঝতে পারলো হৃদয় এবং নিয়াকের মধ্যে অনেকটা পার্থক্য রয়েছে। যদিও দুজনে দেখতে এক রকম। কিন্তু নিয়াককে হৃদয়ের মতো বলদ বানানো সম্ভব না। আর গল্পের শেষটা এরিয়েলকে করতে হলে নিয়াকের সাহায্য তার প্রয়োজন পরবেই।
* * *
To Be Continued
* * *
কেমন হলো জানাবেন।