[প্রথমেই বলি গল্পটা পুরো কাল্পনিক, কেউ বাস্তব কিংবা ধর্মের সাথে তুলনা করবেন না]
#ডিম্যান_কিং_সিরিজ#
#সুপ্রিম_বিয়িং#
পর্ব:৪৫
লেখকঃহৃদয় বাপ্পী
.
.
.
ছোট একটা গুহার মধ্যে জ্যাক এবং জিতু অবস্থিত ছিলো। যেখানে জ্যাকের ছোট খাটো একটা সমস্যা দেখা দিয়েছে। ছোট খাটো বললে ভুল হবে, জ্যাকের অনেক বড় একটা সমস্যায় দেখা দিয়েছে। জিতু অনেক কিছু চেষ্টা করেছে জ্যাকের স্মৃতি ফিরিয়ে আনার জন্য, কিন্তু কোনো জিনিসেই কাজ করছে না। জ্যাকের একটায় কথা, সে জ্যাক বা আকাশ চৌধুরী নামে কাউকে চিনে না। সে এটাও জানে না সে কোথায় আছে। সাধারণ পরিস্থিতিতে হয়তো নিজেকে এই অবস্থায় মানিয়ে নিতে পারতো, কিন্তু জিতু যেহেতু তার স্মৃতি ফেরানোর চেষ্টার জন্য পূর্বের সকল কিছু এক এক করে বলেছে। আর সেগুলো শোনার পর বাপ্পী যে বর্তমানে আকাশের শরীরের কন্ট্রোলে আছে সে স্বাভাবিক হতে পারছে না।
-->>তাহলে আপনি বলতে চাচ্ছেন আমরা একটা গেমের মতো ওয়ার্ল্ডে প্রবেশ করেছি যেখানে মনস্টার, ড্যানজন, ম্যাজিক, স্কিল ইত্যাদি রয়েছে?(বাপ্পী)
জিতু বুঝতে পারলো তার সব চেষ্টাই ব্যর্থ। সে বুঝতে পারলো তার সিনিয়র এতো স্পেশাল কেনো। কারন তার মাথায় হয়তো সমস্যা আছে।
"আমি সব কিছু ঠিক ভাবে অনুমান না করতে পারলেও একটা জিনিস ঠিকই বুঝতে পারছি।" (জিতু ভাবছে)
জিতু একটা জিনিস বুঝতে পেরেছে আর সেটা খুবই মারাত্মক একটা বিষয়। যদিও সে এটা সম্পর্কে ক্লিয়ার না, তারপরও ধারনা করতে পারছে শুধু। সে জানে তার মাইন্ড অন্যান্যদের মতো দ্রুত না। তারপরও একটা বিষয়ে ঘটকা লেগেছিলো তার অনেক পূর্বেই। আকাশ চৌধুরীর মৃত্যুর একটা গুজব বের হয়েছিলো কিছু মাস পূর্বে। গুজবের সোর্চ যেহেতু ব্লাক মার্কেট ছিলো তাই এটাকে অনেকেই সত্য বলে মেনে নিয়েছিলো। কিন্তু হঠাৎ সেই গুজবের পরের দিন থেকে আকাশ চৌধুরীকে জীবিত দেখা যায়। ব্লাক মার্কেটের কোনো খবর এই পর্যন্ত মিথ্যা হয় নি, এটা জিতু তার সারা জীবনের অভিজ্ঞতা থেকে বলতে পারে। আকাশ চৌধুরীকে সে অনেক পূর্বে থেকেই ফলো করে, ফলো করার কারন অবশ্য রাজ খানের অর্ডার ছিলো। আর এজন্যই জিতু বলতে পারছে যে সেই গুজবের দিনের পর থেকে আকাশ চৌধুরী পুরো চেঞ্জ হয়ে গিয়েছে। তার নতুন পরিচয় জ্যাক কিভাবে এসেছে সেটাও ধারনা করতে পেরেছে জিতু।
-->>সিনিয়র আমার মনে হয় আপনার পারসোনালিটির রোগ দেখা দিয়েছে। অবশ্য রোগটার আসল নাম আমি জানি না। তবে আমার স্ত্রীর থেকে আমি শুনেছি এমন কিছু মানুষ আছে যারা অত্যান্ত ভয় পেলে তাদের পারসোনালিটি চেঞ্জ হয়ে যায়। তার সম্পূর্ণ ভিন্ন একটা মানুষে পরিণত হয়ে যায়।(জিতু)
জিতু জ্যাককে শান্ত করানোর জন্য ছোট একটা ব্যাখ্যা তুলে ধরলো জ্যাকের সামনে। কিন্তু বাপ্পীর সেদিকে কোনো নজর নেই। সে অন্য একটা বিষয় নিয়ে ভাবছিলো বলে জিতুর কথা শুনতে পারে নি।
"মনস্টার, ম্যাজিক সব কিছু আমার কাছে আমার খেলা সেই গেমের মতো লাগছে। কি যেনো নাম গেমটার? ও হ্যাঁ নাইটমেয়ার।" (বাপ্পী ভাবছিলো)
জিতু বুঝতে পারছে না সে এখন এই অবস্থায় কি করবে, যেহেতু জ্যাকের স্মৃতি হারিয়ে গিয়েছে তাই এখন আপাতোতো তাকে একাই সব কিছু করতে হবে। সে ভাবতে লাগলো কি করবে, কিন্তু কোনো কিছু তার মাথায় ঢুকছিলো না। আর তখনি সেই গুহার মধ্যে তিনজন ব্যক্তি প্রবেশ করে। জিতু তাদেরকে গ্যাং পার্টির মেম্বার মনে করে তার এক্সট্রিম ফিস্ট ব্যবহার করলো। যেহেতু তারা গুহার মুখের সামনে ছিলো এবং বাইরে আলো তাদের পিছনে ছিলো তাই জিতু তাদেরকে দেখতে পারে নি। না দেখেই জিতু তার স্কিল ব্যবহার করলো। স্কিলটা সে ব্যবহার করতে করতে অনেক শক্তিশালী করে ফেলেছে। তাছাড়াও তার নিজ লেভেল বৃদ্ধি হয়েছে, তাই তার স্কিলটা ছোট করে দেখার কোনো বিষয় না। পূর্বে জিতুকে তার মার্শাল আর্ট স্কিলটা ব্যবহারের জন্য শারিরীক ভাবে স্পর্শ করতে হতো, মানে তার হাত দিয়ে সরাসরি কারো শরীরে বা কোনো টার্গেটে স্পর্শ করতে হতো। কিন্তু প্লেয়ার হওয়ার পর থেকে তার স্কিলও অনেকটা এডভান্সড হয়েছে। জিতু তার নিচে থাকা মাটিতে তার স্কিল ব্যবহার করে পান্স করেছে। যেটা থেকে একটা শক ওয়েব তৈরী হয়েছে। যা তিনজন ব্যক্তির দিকে এগিয়ে যাচ্ছিলো। তবে হঠাৎ তিনজন ব্যক্তির সামনে পানি চলে আসলো। যা মাটিতে থাকা তিন ব্যক্তিকে হঠাৎ করে পানির উপরে তুলে নিলো। পানিটা হাটু পর্যন্ত হওয়ার ফলে মাটিতে থাকা শক ওয়েব তিনজনকে কোনো কিছুই করলো না। জিতু তার গার্ডে দাঁড়ালো, এখানে যায় হয়ে যাক না কেনো সে কিছুতেই তার সিনিয়রকে আঘাত পেতে দিবে না।
-->>এভাবে কোনো কথা না বলে অপরিচিতদের আক্রমণ করা কিন্তু ঠিক না।
জিতুর স্কিল থেকে তৈরী শক ওয়েব শেষ হয়ে যাওয়ার পর পানি গুলো সরে গেলো যার পরে তিনজন ব্যক্তি আবারো মাটিতে নেমে গেলো। তাদের মধ্য থেকে হৃদয় টিটান উপরোক্ত কথাটা বললো। হৃদয় টিটান ভাবছিলো এতো তারাহুরা করে এরিয়েল তাদেরকে কোথায় নিয়ে আসলো? বিশেষ করে কোথায় নিয়ে আসলো সেটা তার মাথায় ঘুরছে না। বরং কিভাবে নিয়ে আসলো এটা নিয়ে সে ভাবতে ছিলো তখনি জিতু তাদের উপরে আক্রমন করে।
-->>আমি জানতাম না তুমি নিজেই ব্লাক হোল খুলতে পারো।(হৃদয় টিটান)
এরিয়েল তার হাতে থাকা একটা বইয়ের পাতা ছিঁড়ে একটা ব্লাক হোল তৈরী করেছিলো যার মধ্য দিয়ে নিয়াক এবং হৃদয়কে টেস্ট ড্যানজনের মধ্যে নিয়ে আসে। যদিও হৃদয় এই এবিলিটিতে তেমন অবাক হয় নি, কারন কিছুটা সময় এরিয়েলের সাথে কাটানোর ফলে সে তার ক্ষমতা সম্পর্কে সহজ একটা ধারনা করতে পারছিলো। তবে নিয়াকের মনে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে। নিয়াক যদিও একটা সময় সবাইকে বিশ্বাস করতো, কিন্তু সেই বিশ্বাস এক একটা ট্রাজেডি হয়ে যাওয়ার ফলে ভেঙে গিয়েছে। এখন সে যে কাউকেই বিশ্বাস করতে পারে না। যদিও তার কাছে গোল্ডেন ড্রাগনের পাওয়ার থাকার ফলে সে অন্যদের সত্য মিথ্যা যাচাই করতে পারে, তারপরও তার কাছে মনে হচ্ছে এরিয়েল তাদের দুজনের থেকে অনেক কিছু লুকাচ্ছে। আর এ এজন্যই পুরোপুরি বিশ্বাস সে করতে পারছে না তার উপরে।
"বিশ্বাস তো আমি হৃদয়কেও করি না। কিন্তু আপাতোতো এই মেয়েটাই সবচেয়ে বেশী অবিশ্বাসের যোগ্য।" (নিয়াক ভাবছে)
-->>আমরা এখানে কি এদেরকে হত্যা করতে এসেছি?(নিয়াক)
নিয়াক তার পকেট থেকে একটা কলম বের করলো। যার রং ছিলো গোল্ডেন। পূর্বে লাল কালারের একটা কলম ছিলো যা এক সময়ে হৃদয় টিটান ব্যবহার করেছিলো তার সোর্ড এবং ট্রিশুল হিসাবে। ডাইভার্সে হৃদয় সেটা নিয়াককে ফেরত দিয়েছিলো। কারন সেটার আসল মালিক প্রিন্স নিয়াকই ছিলো। তবে প্রিন্স নিয়াক ডাইভার্সের শেষে সেটা আবার হৃদয় টিটানকে ফেরত দিয়ে দেয়। অনেকটা বোনের বিয়ের যৌতুকের মতো। তাই নিয়াকের হাতে নতুন কালারের একটা অস্ত্র দেখতে পেয়ে অনেকটা অবাক হয়ে যায় হৃদয়। নিয়াক তার কলমের নিপে ক্লিক করে সেটাকে একটা সোর্ডে পরিণত করলো যেটা দেখতে একদমই মারাত্মক ছিলো। গোল্ডেন কালারের একটা বিগ হ্যান্ডেড হ্যাভি স্যাবার সোর্ড। যার আকার একটা সাধারন টু হ্যান্ডেড সোর্ডের মতো হলেও এর ব্লেড একটা স্যাবারের মতো। (স্যাবার মূলত রানদাও টাইপের একধরনের বাকা তলোয়ার) নিয়াক সেটা নিয়ে তাদের এট্যাক করা দুটো ব্যক্তির উপরে আক্রমন করার জন্য প্রস্তুত ছিলো, কিন্তু তখনি এরিয়েল আবারো তার ম্যাজিক ব্যবহার করলো। তার হাতে একটা ম্যাজিক বুক চলে আসলো যেটা একা একাই হাওয়ার মধ্যে উড়তে ছিলো। এরিয়েলের বইটার মতো সে নিজেও হাওয়ার মধ্যে ভাসতে শুরু করলো। যেটা অবশ্যই কৌতূহলের একটা বিষয় ছিলো। নিয়াক তার সোর্ড চালানোর জন্য প্রস্তুত ছিলো কিন্তু সে হঠাৎ তার শরীর নারাতে পারছিলো না। সে কেনো, তার পাশের হৃদয় এবং সামনের দুই ব্যক্তিও তাদের শরীর নারাতে পারছিলো না।
"কি হচ্ছে আমার সাথে? আমি গোল্ডেন ড্রাগনের কিছু ক্ষমতা ব্যবহারের পরেও এভাবে প্যারালাইসিস হয়ে গিয়েছি!" (নিয়াক ভাবছে)
হৃদয় এমনিতেই তার শরীর নারানোর চেষ্টা করছিলো না। এরিয়েল যা করছিলো তাতে তার শরীর থেকে উজ্জ্বল আলো জ্বলছিলো। আর হৃদয় হা করে সেদিকেই তাকিয়ে ছিলো।
"ইস আমি এই মেয়েকে পটাতে পারলাম না। এটা আমার পরবর্তী বউ হওয়ার সকল যোগ্যতাই রাখে।" (হৃদয় টিটাম ভাবছিলো)
এদিকে হৃদয় বাপ্পী যে আকাশের শরীরে থেকে কিছুই বুঝতে পারছিলো না সে এবং জিতু দুজনের কেউই নরতে পারছিলো না। যদিও হৃদয় বাপ্পী ঠিক ছিলো কিন্তুু এরিয়েল যখন তার বইয়ের থেকে একটা সাদা পাতা ছিঁড়ে সেটা জিতুর পায়ের নিচে ফেললো তখন আর সে ঠিক রইলো না। জিতুর পায়ের নিচে একটা ব্লাক হোল তৈরী হলো যা তাকে সেই জায়গা থেকে অন্য একটা জায়গার মধ্যে নিয়ে গেলো। এবার এরিয়োল তার মূল জিনিসে ফোকাস দিলো। সে এতোক্ষন তার পাওয়া স্কিল বা ক্ষমতা যেটায় বলি না কেনো সেটা ব্যবহার করেছে। যার ফলে সে তার আশেপাশে থাকা তার নিজের তৈরী গল্পের চরিত্র গুলো থেমে গিয়েছে। এটা একটা স্কিল যা এরিয়েল প্রতিদিন একবার করে মাত্র দুই মিনিটের জন্য ব্যবহার করতে পারে। আর এই দুই মিনিটই যথেষ্ট তার কাজটা শেষ করার জন্য।
-->>আমি ভেবেছিলাম গল্পের হিরো চেঞ্জ করলে হয়তো এই জিনিসটা দেখতে হতো না। কিন্তু আমার ক্যালকুলেশন হয়তো ভুল ছিলো। যেহেতু সাইড ইফেক্টটা এখনো দেখা দিয়েছে তাই যে কাজটা আমি আরো ভবিষ্যতের জন্য রেখে দিয়েছি সেটা এখনি শেষ করতে হবে।(এরিয়েল)
এরিয়েল ভবিষ্যতের জন্য বিশাল একটা প্লান তৈরী করে রেখেছিলো। যেহেতু সে তার গল্পের শেষ করতে পারে নি তাই গল্পটা কিভাবে শেষ হবে সেটা সম্পর্কে সে কিছুই জানে না। এখন সব কিছু সম্পর্কে জানলেও একটা সময়ে ঠিকই তার রাস্তা শেষ হয়ে যাবে এবং বিশাল একটা খাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে থাকবে সে। আর সেটাকে এড়াতে হলে এখনি তাকে সব ব্যবস্থা করে নিতে হবে। যেটা এরিয়েল করেছিলোও। তবে সেটা ব্যবহারের সময় এখন ছিলো না। নিয়াক তার শরীর নারাতে না পারলেও সে বুঝতে পারলো তার এবং তাদের সাথে যা হচ্ছে সব কিছুর কারন তাদের এরিয়েলই। কি হচ্ছে সেটা নিয়াক জানে না কিন্তু সে সেটা থেকে দ্রুত মুক্ত হতে চাচ্ছিলো। তবে তার ভিতরে সিল থাকা গোল্ডেন ড্রাগন হঠাৎ তার মাথায় একটা কথা বলতে লাগলো,
""নিয়াক আমার বন্ধু, তুমি মুক্ত হওয়ার চেষ্টা কইরো না। বরং যা হচ্ছে সেটাকে হতে দাও। কারন এর মাধ্যমেই আমরা আমাদের ভবিষ্যৎ দেখতে পারবো।"" (গোল্ডেন ড্রাগন)
গোল্ডেন ড্রাগনের কথাটা শোনার পরে নিয়াক আর মুক্ত হওয়ার চেষ্টা করলো না। সে নিশ্চুপ হয়ে দাঁড়িয়ে রইলো। সে তার জীবনে কাউকে বিশ্বাস না করলেও গোল্ডেন ড্রাগন এরকম একটা অস্তিত্ব, যে নিয়াককে মরতে বললেও নিয়াক হাসি মুখে মরতে রাজি।
এরিয়েল কাল নিয়াক এবং হৃদয় টিটানের নজরের বাইরে থেকে তাদের ব্লাড সংগ্রহ করেছিলো। যা তার বর্তমান ম্যাজিকের জন্য প্রয়োজন হবে। এরিয়েল দুজনের ব্লাডকে বের করলো যেগুলো তার হাতের উপরে ভাসমান বইয়ের ভিতরে ছিলো। ব্লাড গুলো ভাসমান অবস্থাতেই সেগুলো আকাশ চৌধুরীর শরীরের দিকে রকেটের স্পিডে চলে গেলো। আকাশ চৌধুরীর শরীরের এক আঙ্গুল দূরত্বে ব্লাড দাঁড়িয়ে গেলো। ব্লাডের অংশ অনেক কম হওয়ার পরও সেটা ছোট আকারের একটা ব্লেডে রূপ নিলো যে ব্লেডটা বলতে লাগলো,
<<আমি থাকতে আমার মাস্টারের উপরে কেউ হাত দিতে পারবে না।>>
এরিয়েল হাওয়ার মধ্য থেকেই কিছুটা বিচলিত হলো। সে ভাবে নি যে আকাশ চৌধুরী এখনি এটাকে আনলক করবে। কিন্তু যেহেতু তার সামনে আকাশ চৌধুরী নিজেই দাঁড়িয়ে ছিলো তাই এরিয়েলের চিন্তার কোনো বিষয় ছিলো না।
"কারন সব কিছু গল্পের মতোই হবে।" (এরিয়েল ভাবছে)
আকাশ চৌধুরীর শরীর এতোক্ষন হৃদয় বাপ্পী কন্ট্রোল করছিলো। কিন্তু হঠাৎ সেটার মালিকত্ব পাল্টে গেলো। পোসেইডন সেই শরীরের কন্ট্রোলে চলে আসলো। পোসেইডন বলতে লাগলো,
-->>স্ক্যালা?(পোসোইডন)
<<মাস্টার!>>
পোসেইডনের কথা এতো বছর পর শুনতে পেরে স্ক্যালা কি বলবে কি বুঝতে পারছিলো না। তবে পোসেইডন তাকে বললো,
-->>চলে আসো আমার মধ্যে।(পোসেইডন)
পোসেইডনের আদেশ করতে দেরী হলো কিন্তু স্ক্যালার সেটা মানতে সময় লাগলো না। সে ড্যাগারের রূপ থেকে আবারো পূর্বের মতো ব্লাডের বিন্দুকনা হয়ে গেলো এবং তার মাস্টারের নাক দিয়ে তার শরীরে প্রবেশ করলো। গুহার সাইজ টা ছোট হওয়ার কারনে এরিয়েল বেশী উপরে ভাসতে পারলো না। সে আরেকটু উপরে উড়তে গিয়ে গুহার ছাদের সাথে মাথায় গুঁতো খেলো। ব্যথা পেয়ে মাথায় হাত বুলাতে বুলাতে লাগলো,
-->>সব জানা লেখিকা হয়েও আমি এটা দেখতে পারে নি। যদি কোনো পাঠক বা পাঠিকা পড়তো এটা তাহলে অবশ্যই হেঁসে বমি করে দিতো।(এরিয়েল)
এরিয়েলের মনোযোগ কিছু সময়ের জন্য দূরে ছিলো যে সময়ের ভিতরে পোসেইডন তার গড ফর্মে চলে আসলো। যদিও এরিয়েল সেটাকে না দেখার ভাব করেছিলো তবে সে জানতো এটায় হবে। তার ম্যাজিকের জন্য সব কিছু এখানে প্রস্তুত। প্রথমত, তিনটা ওয়ার্ল্ডের আলাদা আলাদা হৃদয় বাপ্পী যাদের ডিনএনএ এর স্ট্রাকচার একই হলেও একটা থেকে আরেকটা উন্নত এবং শক্তিশালী। দ্বিতীয়ত, তিনজনের জন্যই শক্তিশালী একটা শরীর প্রস্তুত যা তিনজনের পাওয়ারকে ধরে রাখতে পারবে। সর্বশেষ, ম্যাজিকটা সম্পূর্ন করার জন্য একজন গডের পাওয়ার। সব মিলিয়ে এরিয়েলের কাছে সব গুলো টুকরো এখন রয়েছে। যদিও সে এখনি এটাকে ব্যবহার করতে চাচ্ছিলো না। কিন্তু,
-->>কিন্তু একটা গাজনি হিরোকে দিয়ে আমার গল্পটা শেষ হবে না।(এরিয়েল)
এরিয়েল তার ম্যাজিক স্পেল ব্যবহার করতে লাগলো। অবশ্য সবাই তাদের ম্যাজিক স্পেল মুখ দিয়ে বলে। কিন্তু এরিয়েল তার বইয়ের মধ্যে স্পেলটা লেখতে শুরু করেছে। অবশ্য স্পেল বলা যায় না সেটাকে। সে শুধু তার গল্পের ভবিষ্যতের লেখা লাইনটা এখন লেখতেছে। যেখানে সব কিছু ভবিষ্যতে হওয়ার কথা ছিলো সেটা এখন হবে এবং হচ্ছে।
তিন দিকে থাকা তিন ব্যক্তি হৃদয় টিটান, প্রিন্স নিয়াক এবং পোসেইডন তিন জন ম্যাগনেটের মতো তিন পাশ থেকে একে অপরের সাথে একত্রিত হয়ে গেলো। কিছু সময় পূর্বে সেখানে তিন ব্যক্তি ছিলো কিন্তু বর্তমানে সেখানে একজন হয়ে গিয়েছে। শ্যাম বর্ণের চেহারা যুক্ত এক ব্যক্তি যার উচ্চতা সাত ফুটের থেকেও কিছুটা বেশী হবে। চোখের মনি দুটো ঠিক সাগরের নীল পানির মতো। চুল গুলো একদম কালো এবং কোমর পর্যন্ত রয়েছে। পোসেইডন বড় একটা নিশ্বাস নিলো
-->>নিজের অংশ পূর্ন হলে আসলেই মনে হয় আবার জন্ম নিয়েছি। অলিম্পাস আর একটু অপেক্ষা করো, কারন আমি পোসেইডন খুব শীঘ্রই আসছি।(পোসেইডন)
এরিয়েলের ম্যাজিকে এরিয়েল একটা গডকে তৈরী করেছে। অবশ্য সে তৈরী করে নি। বরং তৈরী করা গডের অংশ ছড়িয়ে ছিলো। সে শুধু সেই অংশ গুলোকে জোড়া লাগিয়েছে।
"আমার তৈরী করা সবচেয়ে পারফেক্ট হিরো তার ফাইনাল ফর্মে। সামনে থেকে দেখতে তাকে আরো বেশী হ্যান্ডসাম লাগে। না না কি ভাবছি আমি, আমি এখনি এটাকে ব্যবহার করতে চাই নি। যেহেতু এই আকাশ চৌধুরীর শরীর এখনো সেই লেভেলে পৌছায় নি গড লেভেল ক্ষমতাকে সংরক্ষণ করার জন্য তাই এখনো আমাদের অনেক দূর যেতে হবে।" (এরিয়েল)
পোসেইডন তার হাত পা দেখা নিয়ে ব্যস্ত ছিলো। সে বুঝতে পারলো তার অনেকটা এনার্জি ব্যবহার হয়েছে তাদের ফিউশনের জন্য। যেটার কারনে সে আপাতোতো ঘুমের স্ট্যাটের মধ্যে চলে যাবে। কিন্তু এমন নয় যে সে হারিয়ে যাচ্ছে শরীরের কোনো এক জায়গায়। এরিয়েল সব কিছু তার গল্প অনুযায়ী ক্যালকুলেশন করেছে। যা অনুযায়ী পোসেইডন এর মোট তিনজন রেইনকার্নেট ছিলো। যাদের সবার মাঝেই পোসেইডনের সউল অবস্থিত ছিলো। এরিয়েলের গল্প অনুযায়ী এটাই হওয়ার কথা ছিলো। কিন্তু একটা জায়গায় তার ক্যালকুলেশন সঠিক হয় নি। কারন সেখানে তিনজন হৃদয় বাপ্পী ছিলো না বরং চারজন ছিলো। আর এই ক্যালকুলেশনে এরিয়েল ভুল করেছে। যদিও সে জানতো উইশ মেকারের সাহায্যে আকাশ চৌধুরী জীবিত হয়েছিলো যার অর্থ দ্বারায় অন্য কেউ তার মাঝে ছিলো তার গল্পের চরিত্র বাদে। কিন্তু এরিয়েলের মাথায় আসেই নি যে জ্যাক তার প্রথম জীবনের পৃথিবীতে হৃদয় বাপ্পী নামে পরিচিত ছিলো। আর চারজন একই ব্যক্তি যাদের ওয়ার্ল্ড, যাদের পরিচয়, যাদের জীবনের কার্স একে অপরের থেকে সম্পূর্ণ ভিন্ন হলেও তারা পোসেইডনের পাওয়া কার্সে ভুক্তে ছিলো। তবে সে কার্স এখন আর তাদের মাঝে নেই। আর পোসেইডনও এখন তার সম্পূর্ণ অংশ ফিরে পেয়েছে। তবে এখানে একটা ভুল হয়েছে যেটা এরিয়েল কিংবা পোসেইডন কেউই খেয়াল করে নি। জ্যাক যে কিনা তার পূর্বের ওয়ার্ল্ডে পোসেইডনের রেইনকার্নেট ছিলো সে তার প্রথম জীবনে মারা যায়। যার ফলে তার মধ্যে থাকা পোসেইডনের সউলও মারা যায়। দ্বিতীয় বার জীবিত হয় সে অন্যের শরীর যে নিজেও পোসেইডনের সউল বহন করছিলো, কিন্তু সেই ব্যক্তিও মারা যায়। যার ফলে পোসেইডনের সাথে জ্যাকের কোনো সম্পর্ক থাকে না বা ছিলো না। কিন্তু পোসেইডনের সউল আবার জ্যাকের সউলের সাথে একত্রিত হওয়ার পরে ফিউশনটাকে রিভার্স হয়ে যায়। ফিউশনের মূল লক্ষ ছিলো যাতে পোসেইডন এই ওয়ার্ল্ডে তার সকল রেইনকার্নেট এর স্মৃতি সম্পর্কে ভুলে যাবে। কিন্তু জ্যাকের অংশ এখানে থাকার ফলে তিন হৃদয় বাপ্পী সহ জ্যাকের স্মৃতিও পোসেইডনের সাথে একত্রিত হয়েছে। যার ফলে তৈরী হয়েছে নতুন একটা ক্যারেক্টারের। যার নাম আকাশ চৌধুরী। যে এক দিক দিয়ে প্রিন্স নিয়াক, এক দিক দিয়ে হৃদয় টিটান, এক দিক দিয়ে হৃদয় বাপ্পী, এক দিক দিয়ে গড অফ ওয়াটার পোসেইডন এবং একদিক দিয়ে জ্যাক।
-->>সবটা আমার প্লান মতো হয় নি। তবে এটুকু নিয়ে থাকতে পারবো।(পোসেইডন)
পোসেইডন তার ফর্মে চলে আসার পর জ্যাকের পরা মাস্কটা পরে গিয়েছিলো নিচে। পোসেইডন তার ফর্ম হারিয়ে ফেললো, যেহেতু তার গড পাওয়ার ব্যবহার করেছে এই ফিউশনের জন্য তাই আপাতোতো সে অনেক ক্লান্ত এবং তার নিজস্ব এনার্জি নেই। তাই সে তার ফর্মকে আর বেশীক্ষন ধরে রাখতে পারলো না। পোসেইডনের ফর্ম চলে গেলে আবারো আকাশ চৌধুরীর শরীর হয়ে গেলো তার। যদিও এটাকে এখন আকাশের ফর্ম বলা যায় না। সব কিছু ঠিক থাকলেও আকাশের ডান চোখের মনিটা শুধু লাল হয়ে রয়েছে যা থেকে অন্ধকারেও উজ্জ্বল একটা আলো বের হয়।
-->>সব নামের মধ্য থেকে আমার জ্যাক নামটায় সবচেয়ে পছন্দ হয়েছে। তাহলে আজ থেকে আমি হৃদয়, নিয়াক, বাপ্পী, পোসেইডন কোনো একটাও না। আমি জ্যাকসেইডন। সংক্ষেপে তোমরা আমাকে জ্যাক বলতে পারো।(জ্যাক)
চারজনের স্মৃতি একত্রিত হয়েছে এবং চারজন মিলে পোসেইডন হয়েছে। জ্যাক মাটিতে পরা তার মাস্কটা উঠালো এবং সামনের দিকে তাকালো। উপরের কথাটা সে এরিয়েলের উদ্দেশ্যে বলেছিলো কিন্তু জ্যাক বুঝতে পারলো সে শুধু শুধুই কথাটা বলেছে। এরিয়েল তার ম্যাজিক ব্যবহারের ফলে নিজের লিমিটকে পার করে ফেলেছে এবং সেন্সলেস হয়ে গিয়েছে। পোসেইডনের ফিউশনের কারনে তার শরীর থেকে মারাত্মক লেভেলের গডলি এনার্জি বের হয়েছিলো। যেটা এরিয়েলের এনার্জিকে অনেক দ্রুত এবজোর্ব করেছে। শুধু এরিয়েলের ম্যাজিক এনার্জি নয় বরং সেই সাথে এরিয়েলের লাইফ এনার্জিও এবজোর্ব করেছে পোসেইডনের গডলি এনার্জি।
-->>আমি জানতাম এটা আমার ডেসটিনি ছিলো। কিন্তু মেয়েটাকে আমি এভাবে মরতে দিতে পারি না। অবশ্য পারবো না।(জ্যাক)
জ্যাক আর কোনো এনার্জি ব্যবহার করতে পারছে না ফিউশনের কারনে। যদিও সেটা ব্যবহার করতে হলে আরো অনেকক্ষন অপেক্ষা করতে হবে। কিন্তু ততক্ষনে এরিয়েল তার লাইফ এনার্জি হারিয়ে মারা যাবে। এরিয়েল যে উইশ মেকারের থেকে ইচ্ছা চেয়েছিলো সে যেনো কখনো বৃদ্ধ না হয়। তার মানে এই না যে এরিয়েলের বয়স বারবে না। এরিয়েলের মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তার বয়স বারবে ঠিকই কিন্তু তার লুক চেঞ্জ হবে না। আর জ্যাক বা পোসেইডন যায় বলি না কেনো, সে তার গডলি সেন্স ফিরে পাওয়ার কারনে এটা স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছে। জ্যাক এরিয়েলকে তার কোলে তুলে নিলো। যেহেতু সে তার এনার্জি ব্যবহার করতে পারবে না, তারপরও সে একজন গড। অবশ্য সত্যিকারে গড এখনো তাকে বলা যায় না। হাফগড বললে একটু ভালো শোনায়, অথবা ডেমিগড বললেও ভালো শোনায়। গড লেভেলে ক্ষমতা পৌঁছালে তারা অনেক কিছুই করতে পারে। প্রকৃতির নিয়ম নিয়ে খেলা করা তখন হাতের মুঠোয় থাকে তাদের। আর জ্যাক সেটায় করতে চাচ্ছে। জ্যাক এরিয়েলের ঠোঁটে একটা কিস দিলো এবং নিজের লাইফ এনার্জি শেয়ার করলো এরিয়েলের সাথে। যার ফলে এরিয়েল তার হারিয়ে যাওয়া লাইফ এনার্জির থেকেও বেশী এনার্জি পেয়ে গেলো। যেটা তাকে তার জীবনের বয়সকে আরো বাড়াতে সাহায্য করেছে। জ্যাক তার ঠোঁটটা এরিয়েলের ঠোঁট থেকে সরাবে তখনি একটা আওয়াজ তার কানে ভেসে উঠলো।
-->>পোসেইডননননননননন, আমি জানতাম তুমি ভালো হবে না। এখানে এসেও মেয়েদের জীবন নিয়ে খেলা করছো। আজকে তোমাকে আমার স্পেয়ারের সম্মুখিন হতে হবে।(এথিনা)
এথিনা যে এতোক্ষন এমিলির শরীরেই ছিলো হঠাৎ রাগে তার গডেস ফর্মে চলে আসলো। তার বাম হাতে গরগনের মাথার শিল্ড এবং ডান হাতে একটা বড় বর্ষা। চোখে দেখা যাচ্ছে রাগ, রাগটা অবশ্য একটা স্ত্রীর মতো যার স্বামী তার সামনে অন্য একটা মেয়েকে কিস করেছে।
* * * * *
অন্যদিকে টাওয়ারের মধ্যে গ্রিড তার অন্ধকার রুমে সব কিছু পর্যবেক্ষন করছিলো। যেহেতু এরিয়েল তাকে কিছু ছবি দিয়েছিলো আর সেই ছবির মধ্যে একজন জিতু ছিলো তাই খুব মনোযোগ দিয়ে তাদের দেখতে ছিলো গ্রিড। তবে তার মনোযোগ রাগে পরিনত হয় যখন এরিয়েল টেস্ট ড্যানজনে প্রবেশ করে। তবে রাগটা আবার খুশিতে পরিণত হয় যখন এরিয়েল জিতুকে ব্লাক হোলে মাধ্যমে ঠিক গ্রিডের সামনে পাঠিয়ে দেই।
-->>আমি ঘুষ নেই না। কিন্তু পাপি পেটের কথা। তাই নিতেই হলো। হাহাহাহাহাহাহাহা।(গ্রিড)
গ্রিড একটা ভয়ঙ্কর হাসি দিলো যাতে পুরো টাওয়ার কেঁপে উঠলো। তার মতো খুশি ব্যক্তি আর কেউ ছিলো না। যেহেতু তার বর্তমান হোস্ট মারা যাচ্ছিলো তাই তাকে একটা পারফেক্ট হোস্ট প্রয়োজন ছিলো খুব দ্রুত। আর সেটা সে পেয়ে গিয়েছে।
* * *
To Be Continued
* * *
কেমন হলো জানাবেন।