[প্রথমেই বলি গল্পটা পুরো কাল্পনিক, কেউ বাস্তব কিংবা ধর্মের সাথে তুলনা করবেন না]
#ডিম্যান_কিং_সিরিজ#
#সুপ্রিম_বিয়িং#
পর্ব:৩৯
লেখকঃহৃদয় বাপ্পী
.
.
.
(দ্বিতীয় ফ্লোর)
আন্ডারগ্রাউন্ড ড্যানজন যা মোট দশটা ফ্লোরে বিভক্ত। এই ড্যানজন নতুন প্লেয়ারদের জন্য একটা টেস্ট। প্রথম থেকে দশম ফ্লোর ক্লিয়ার করতে পারলেই সব প্লেয়ার টাওয়ার অফ গ্রিডের মধ্যে প্রবেশ করতে পারবে, যেখানে তাদের সকল স্বপ্নই পূর্ণ হবে। কিন্তু সেই স্বপ্নকে পূর্ণ করতে হলে সবাইকে কষ্ট করতে হবে। ড্যানজনের মধ্যে প্রতি মুহুর্তেই জীবন নাশের ভয় রয়েছে। শুধু যে ভয়ানক ভয়ানক মনস্টারই যে ভয়ের কারন সেটা নয়। কিছু প্লেয়ার নামক মনস্টারও পাওয়া যায় এই ড্যানজনের মধ্যে, যারা গোল্ড কয়েন এবং বিভিন্ন আইটেমের জন্য কোনো কিছুই করতে পারে। তবে সবশেষে সবাই চেষ্টা করে এই জায়গা থেকে মুক্ত হওয়ার। সবাই চাই তাদের স্বপ্নের জায়গায় যেতে। তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরে যখন পুরো পৃথিবী এবং তার মধ্যে বেঁচে থাকা কিছু মানুষেরা ধ্বংসের মুখে ছিলো, তখন টাওয়ার নতুন একটা হোপ নিয়ে সবার কাছে উদয় হয়। টাওয়ারের বেশ কিছু ব্যক্তি বাইরেও এসেছে, যারা টাওয়ারের সম্পর্কে বিভিন্ন রকম কথা বলেছে। আর সব মিলিয়ে সাধারণ মানুষের কাছে জায়গাটা স্বপ্নের মতো মনে হচ্ছে।
সবার কাছে জায়গাটা স্বপ্নের হলেও জ্যাকের জন্যা সেটা ব্যতিক্রম। জ্যাক নিজের স্বপ্ন পূর্ণ করার জন্য টাওয়ারের মধ্যে প্রবেশ করছে না। বরং তার আগ্রহ একটা বিষয় জানার আর সেটার জন্যই সে এই টাওয়ারে প্রবেশ করার চেষ্টা করছে। যে জ্যাক এক সময়ে তার ওয়ার্ল্ডের সবচেয়ে শক্তিশালী ব্যক্তি ছিলো, সেই জ্যাকের ক্ষমতা এখন মার্কেটে বিক্রি হচ্ছে। এটা কে বা কারা করেছে, সেটা জ্যাক খোজার চেষ্টা করছে।
"এবং সেটা করার জন্য আমার আরো পাওয়ার লাগবে।" (জ্যাক ভাবছে)
জ্যাক বসে আছে একটা পাথরের উপরে। তার পুরো শরীর আঠালো পদার্থে ভিজে আছে। পাশে জিতুও বসে আছে। দুজনেরই একই অবস্থা।
-->>সিনিয়র আমি ভাবি নি একটা স্লাইম মনস্টার এরকম হবে।(জিতু)
-->>সে একটা বস মনস্টার ছিলো, তাই তার এবিলিটি থাকবে এটাই স্বাভাবিক।(জ্যাক)
জ্যাক এবং জিতু ফিল্ড বসকে হত্যা করতে না পেরে হিডেন বসের খোঁজে আসে। হিডেন বস তার নামের মতোই, তাদের লোকেশন র্যানডম হওয়ার কারনে তাদের খুজে পাওয়া কষ্টকর হয়। কিন্তু বুড়ো লোকটার তথ্যের মাধ্যমে জ্যাক হিডেন বসকে খুব তারাতারি খুঁজে পেয়েছে। লোকটা জ্যাককে দ্বিতীয় ফ্লোরের হিডেন বসের ঠিক লোকেশন দিয়েছিলো। পশ্চিম দিকে ঘন বনের আড়ালে একটা মনুমেন্ট আছে। আর সেই মনুমেন্টের মধ্যে হিডেন বসের বাস। জ্যাক এবং জিতু সঠিক তথ্য পাওয়া সত্ত্বেও মনুমেন্ট খুজতে অনেক সময় লাগিয়েছে। আর শুধু তারা একাই ছিলো না পথে হিডেন বসের জন্য। মাঝ পথে আরো অনেক প্লেয়ারদের সাথে দেখা হয়েছিলো। কিন্তু জ্যাক তাদের এরিয়ে সবার প্রথমেই মনুমেন্ট খুঁজে বের করেছে। বুড়ো লোকটার তথ্যের মধ্যে হিডেন বস কিরকম ছিলো সেটা সম্পর্কে কিছু বলা হয়নি। শুধু বলা হয়েছিলো তার লোকেশন সম্পর্কেই। যেহেতু হিডেন বস এবং অনেকেই ক্লিয়ার করেছে তাই জ্যাক এবার কোনো গডকে আশা করে নি।
একটা বিশাল স্লাইম। হ্যাঁ একটা হাতির সমান আকৃতির স্লাইম ছিলো দ্বিতীয় ফ্লোরের হিডেন বস। সাধারন স্লাইমের আকার একটা ফুটবলের সমান হয়ে থাকে। খুব রেয়ার দেখা যায় যেগুলো দুটো ফুটবলের সমান আকার নিয়ে থাকে। আর সেইখানে জ্যাকের সামনের বস ছিলো একটা বিশাল স্লাইম। স্লাইমটাকে হত্যা করা একদম সহজ কোনো ব্যাপার ছিলো না। কারন কোনো শারিরীক এট্যাকে স্লাইমের কিছুই হচ্ছিলো না। কোনো আইটেমও কাজ করছিলো না।
"কয়বার মারা গিয়েছিলাম আমি?" (জ্যাক)
জ্যাক হিসাব করতে পারছে না সে কয়বার মারা গিয়েছিলো। স্লাইম বসের একটা স্পেশাল এবিলিটি রয়েছে। সে তার শরীরের যেকোনো অংশ দিয়ে এক বিষাক্ত তরল নিক্ষেপ করতে পারে। কখন এবং কোন জায়গা দিয়ে সেটা নিক্ষেপ করবে সেটা জ্যাক বা জিতু কেউই জানে না। আর যেটার ফলে জ্যাক এবং জিতু দুজনেই বেশ কয়েকবার মারা গিয়েছে। জ্যাকের স্পেশাল স্কিল ব্রিং মি ব্যাক এর ফলে প্রতিবারই তারা জীবিত হয়েছে। জীবিত হয়েছে বললে অন্য রকম দেখায়। বরং প্রতি বার জ্যাকের মৃত্যুর পর সময় এক ঘন্টা পিছিয়ে যায়। আর একের পর এক মৃত্যুর পরে অবশেষে জ্যাক স্লাইমটার দুর্বল দিক বুঝতে পেরেছে।
"লাইটনিং, হ্যাঁ লাইটনিং ছিলো তার দুর্বল দিক।" (জ্যাক ভাবছে)
জ্যাকের স্কিল ছিলো লাইটনিং ম্যানিপুলেশন। আর সেটার মাধ্যমে সে সাধারণ একটা লাইটনিং তৈরী করতে পারে তার হাতে। যদিও সরাসরি সেই লাইটনিং নিক্ষেপ করতে পারে না। তারপরও সেটা ব্যবহারের একটা দিক সে পেয়েছে। জ্যাকের কাছে রেইবো বো ছিলো, যার একটা তীরও স্লাইমের উপরে কাজ করছিলো না। কিন্তু জ্যাক যখন তার লাইটনিং ম্যানিপুলেশন স্কিল তার রেইনবো বো এর মাধ্যমে ব্যবহার করে তখন সেটা স্লাইমের শরীরে ঠিকই ড্যামেজ করেছিলো। প্রায় অনেকবার মারা যাওয়ার পর জ্যাক শেষ মেষ স্লাইম বসকে হত্যা করতে পেরেছে।
-->>শেষের কাজটা না করলেও হতো।(জ্যাক)
জ্যাক সর্বশেষে নিজের হাতে লাইটনিং বানিয়ে সোজা ঝাঁপিয়ে পরে স্লাইমের শরীরের ভিতরে। স্লাইমের শরীরটা লাইটনিং এর প্রতি দুর্বল ছিলো। তার শরীরের ভিতরে লাইটনিং প্রবেশ করার ফলে পুরো শরীরটা ব্লাস্ট হয়ে যায়। আর সেই ব্লাস্টে স্লাইমের শরীরের আংশিক অংশ জ্যাক এবং জিতুর শরীরে মাখিয়ে যায়। স্লাইমের শরীর এমনিতেই জেলির মতো, যেটা শরীরে লাগলে সহজে ছারতে চাই না। আর বর্তমানে জ্যাক এবং জিতু সেই স্পেশাল জেলিকে পুরো শরীরে মাখিয়ে নিয়ে বসে আছে। জিতু সেগুলোকে হাত দিয়ে ছরানোর ব্যর্থ চেষ্টা করছে কিন্তু জ্যাক চুপ করে বসে আছে।
"আমি কোনো কিছু ফিল করতে পারছি না!" (জ্যাক ভাবছে)
জ্যাক এই বসের হাতে কয়বার মারা গিয়েছে সেটা সে নিজেই জানে না। তবে একটা জিনিস সে ভালো করেই বুঝতে পারছে। তার ইমোশন গুলো হারিয়ে যাচ্ছে এক এক করে। পূর্বে সে ডার্ক ম্যাজিক সম্পর্কে কিছুটা ধারনা পেয়েছে, আর সেই থেকে ছোট একটা বিষয় সে ভালো করেই জানে। যারা ডার্ক ম্যাজিক ব্যবহার করতো তাদের ওয়ার্ল্ডে তারা ব্যথা, ঘৃণা এবং রাগ ছাড়া অন্য কোনো কিছু অনুভব করতো না। ঠিক সেভাবেই জ্যাক তার ইমোশন গুলো হারাচ্ছে।
-->>সিনিয়র আমরা দুজনেই তো তৃতীয় লেভেলে পৌঁছে গিয়েছি, তাহলে এখন কি তৃতীয় ফ্লোরে প্রবেশ করবো আমরা? নাকি এখানেই অপেক্ষা করবো ফিল্ড বসের জন্য?(জিতু)
জিতু বুঝতে পারছিলো না জ্যাক কি করবে। এই বিষয়ে জ্যাক কিছু বলে নি জিতুকে। তাই সে সিওর হওয়ার জন্য জিজ্ঞাসা করলো।
-->>আমরা তৃতীয় ফ্লোরে প্রবেশ করবো। আপাতোতো আমাদের লেভেল আপ করার জন্য এই ফ্লোরে কোনো মনস্টার নেই।(জ্যাক)
জ্যাকের কথা জিতু বুঝতে পারলো। যেহেতু বস মনস্টার হত্যা করার ফলে তাদের আটকে থাকা এক্সপি বৃদ্ধি পেয়েছে তাই তাদের লেভেল বৃদ্ধি পেয়েছে। তৃতীয় লেভেলে প্রবেশ করতে ২৫০০০ এক্সপি পয়েন্ট প্রয়োজন হয়। কিন্তু এখন সেটা বৃদ্ধি পেয়ে ১২৫০০০ হয়েছে। মানে চতুর্থ লেভেলে পৌছাতে হলে এই জায়গাতে ২৫০০ এর উপরে মনস্টার হান্ট করলে জ্যাক এবং জিতু ১২৪৯৯৯ এক্সপি পয়েন্ট বানাতে পারবে। কিন্তু সেটার মতো সময় এবং ধৈর্য্য জ্যাক তৈরী করতে পারছে না। আর ফিল্ড বসের স্পন হতে এখনো অনেকটা সময় রয়েছে, এই সময়টা জ্যাক নষ্ট করতে চাচ্ছে না। ফিল্ড বস স্পন হওয়ার দিনই সে আসবে বলে ভেবে নিয়েছে।
* * * * *
কোনো এক অচেনা জায়গার মধ্যে দুজন ব্যক্তি বসে আছে। একজন ছেলে এবং একজন মেয়ে। তারা মোটেও রোমান্টিক কাপল নই, তাই সে চিন্তা করে লাভ নেই। এরিয়েল এবং হৃদয় টিটান, দুজনে এক অচেনা জায়গার মধ্যে প্রবেশ করেছে। জায়গাটা এমন একটা জায়গার মধ্যে যেটা সম্পর্কে আজ পর্যন্ত কেউ শুনেও নি বা দেখেও নি। জায়গাটার তৈরী কৃত ব্যক্তি ছাড়া এখানে কেউ প্রবেশও করে নি। গ্রিড এ.কে.এ ডিম্যান প্রিন্স অফ গ্রিড ম্যামন তৈরী করেছে জায়গাটা। একমাত্র সে বাদে অন্য কেউ এই জায়গা সম্পর্কে জানে না। কিন্তু সেখানেই এরিয়েল হৃদয় টিটানকে এই জায়গাতে নিয়ে এসেছে।
-->>আমাকে আমার পরিচয় সম্পর্কে জানাতে নিয়ে আসলে কোথায়?(হৃদয়)
হৃদয়ের কথায় এরিয়েল উত্তর দিতে লাগলো,
-->>এটা এই টাওয়ারের মালিকের সার্ভার রুম। আর তোমার প্রশ্নের সকল উত্তর তুমি এখানেই পাবে।(এরিয়েল)
এরিয়েল এই জায়গা আগে দেখে নি। যেহেতু তার নিজের গল্পে সে নিজেই এই জায়গা সম্পর্কে লেখেছিলো তাই জায়গাটা সম্পর্কে তার না জানার কিছু থাকতে পারে না। এরিয়েলের কথা বলা শেষ হতে হতেই সে এগিয়ে গেলো। সামনে বিশাল বিশাল সার্ভার রয়েছে, যেগুলো ম্যাজিকাল এনার্জির মাধ্যমে কাজ করে যাচ্ছে এবং একে অপরের সাথে কানেক্টেড রয়েছে। গ্রিড নিজে এগুলো তৈরী করেছে তার হোস্টের স্মৃতিগুলো কাজে লাগিয়ে এবং নিজের ইন্জিনিয়ারিং মাইন্ডের সাহায্যে। কিন্তু লজিক্যাল ভাবে বলতে গেলে সব কিছুর তৈরী এরিয়েলের কলমের জন্যই সম্ভব হয়েছে। এরিয়েল বিশাল সার্ভারের সামনে গিয়ে দাঁড়ালো। তাকে ফলো করে হৃদয় টিটানও এগিয়ে গেলো। টিটানের মনে ভয় জাগতে শুরু হলো। সে চাচ্ছিলো এরিয়েলের হাতটা ধরতে, কিন্তু সেটা সম্ভব নয়। এরিয়েল সার্ভারের সামনে দাঁড়ানোর পরে তার সামনে একটা ভাসমান থ্রিডি কি-বোর্ড দৃশ্যমান হলো। এই কি-বোর্ডের মধ্যে এরিয়েল কিছু একটা টাইপ করছিলো, তখনি তাদের দুজনের সামনে বড় একটা স্ক্রিনে ভিডিও শুরু হতে লাগলো। ভিডিওটা ছোট ছিলো, কিন্তু হৃদয় খুব মনোযোগ দিয়ে সেটা দেখলো। এক ব্যক্তি যার হাতে পানির তৈরী একটা ট্রিশুল ছিলো সে একাই বিশাল বিশাল দৈত্যদের সাথে ফাইট করছে।
-->>এটা?(হৃদয়)
-->>গড অফ ওয়াটার, পোসেইডন তার নাম। এবং এই ব্যক্তিটাই তোমার পূর্বপুরুষ।(এরিয়েল)
-->>আমার একটা প্রশ্ন আছে?(হৃদয়)
-->>আমি তোমার পূর্বপুরুষ সম্পর্কে জানলাম কিভাবে?(এরিয়েল)
-->>হ্যাঁ, বুঝলাম তুমি সব কিছু সম্পর্কে জানো, কিন্তু তোমার এই জানার জ্ঞানটা তো এই ওয়ার্ল্ডের জন্য হবে। আর আমি তো অন্য একটা ওয়ার্ল্ডের।(হৃদয়)
-->>তোমার লজিকটা ভালো কিন্তু আমি অনেক কিছু সম্পর্কেই জানি, উদাহরণ স্বরূপ কত বড় মাপের প্লেয়ার তুমি সেটাও আমি জানি। তাই আমি কিভাবে এতো কিছু জানি সেটা সম্পর্কে না জানলেই হলো।(এরিয়েল)
এরিয়েলের কথায় হৃদয় চুপ হয়ে গেলো। তার মুখে কোনো কথা নাই কিছু সময়ের জন্য। কিন্তু সে বেশীক্ষন চুপ রইলো না।
-->>তাহলে আমার পূর্ব পুরুষ মানে এই গড অফ ওয়াটার কোন ওয়ার্ল্ডে আছ এটাও নিশ্চয় জানো।(হৃদয়)
-->>এখানেই আছে।(এরিয়েল)
-->>মানে এই টাওয়ারে?(হৃদয়)
-->>হ্যাঁ।(এরিয়েল)
এরিয়েলের থেকে হৃদয় আর কিছু শুনতে চাচ্ছে না। তার উত্তর সে পেয়ে গিয়েছে। তাই এখন আর এরকম কোল্ড একটা মেয়ের সাথে থাকার তার মানে হয় না। এরিয়েল কি-বোর্ডে ক্লিক করে ভিডিওটা অফ করলো এবং পিছনে ফিরলো,
-->>আমি ভেবেছিলাম অন্তত আমার থেকে বাই বলে চলে যাবে। কিন্তু যাইহোক। সময় প্রায় হয়েই গিয়েছে। আর মাত্র কিছুদিন পরেই আমাদের শিফট হতে হবে এই জায়গা থেকে আসল স্টেজের মধ্যে। আশা করি আকাশ চৌধুরী প্রস্তুত থাকবে সেই বিশাল জার্নির জন্য।(এরিয়েল)
হৃদয় এরিয়েলকে সেই জায়গায় একা রেখেই সেখান থেকে বেরিয়ে আসে। সে কখনো কোনো মেয়ের কাছে হার মানতে শিখে নি। কিন্তু,
-->>কিন্তু এই মেয়েটা সম্পূর্ণ আলাদা ছিলো। আমার কেনো জানি মনে হচ্ছিলো আমি যা বলবো তার প্রতিটা শব্দ এই মেয়েটা পূর্বে থেকেই জানতো।(হৃদয়)
হৃদয় ভেবেছিলো মেয়েটাকে পটাবে। কিন্তু একটা আনইজি বোধ করতো এরিয়েলের কাছে থাকলে। তাই তার কাছ থেকে দূরে থাকার সিদ্ধান্তই সে নিয়েছে। তাছাড়া,
-->>ভবিষ্যৎ জানতে পারবে এরকম কোনো বউ আমার দরকার নেই, নাহলে তো আমার এই রোমান্টিক লাইফের কোনো মানেই থাকবে না।(হৃদয়)
* * * * *
(অলিম্পাস)
অনেক ভয়াবহ একটা যুদ্ধ সংঘটিত হয়েছে। অলিম্পাসের ১২ গডের মধ্যে তৃতীয় গড যাকে জিউসের পরে শক্তিশালী ধরা হয় অফিসিয়াল ভাবে সে জিউসের বিরুদ্ধে, পুরো অলিম্পাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষনা করেছে। যুদ্ধের ময়দানে পোসেইডনের সমস্ত বাহিনী পানির উপরে রয়েছে আর অলিম্পাসের সৈন্য আকাশে। পরিস্থিতি পোসেইডনের জন্য মোটেও ভালো যাচ্ছে না। সে জিউস কন্যা এথিনার হাতে পরাজিত হয়েছে এবং অলিম্পাসের রুলার গডদের সামনে তাকে পেস করা হয়েছে। পোসেইডনের শেষ সময়ে অতীতের কিছু ভাবনা জাগলো।
ফ্লাসব্যাক,
সময়টা ছিলো অনেক অনেক অনেক পূর্বের। যখন অলিম্পাসে রাজ করতো টাইটান। জিউস, হেডিস এবং পোসেইডন এই তিনজনের পিতা ছিলেন ক্রোনোস, যে ছিলো অলিম্পাসের রাজা। ক্রোনোস এমন একজন টাইটান গড ছিলো যে তার সন্তানদের জীবিত খেয়ে ফেলতে দ্বিধাবোধ করতো না। অলিম্পাসের মধ্যে একটা শক্তিশালী কার্স রয়েছে। গডেস অফ আর্থ গাইয়া অলিম্পাসের মধ্যে একটা কার্স দিয়ে দেই। যার ফলে সকল অলিম্পাসের রাজারা তাদের সন্তানদের হত্যা করবে এবং সকল সন্তানরা তাদের রাজা বাবাকে হত্যা করবে। আর এর ফলেই ক্রোনোস তার সন্তানদের হত্যা করতো। কিন্তু ক্রোনোসের বিপক্ষে তারই সন্তান জিউস যুদ্ধ ঘোষনা করে। জিউসের নেতৃত্বে পোসাইডন এবং হেডিসের সহযোগিতায় বিশাল সেনা নিয়ে জিউস ক্রোনোসকে হারিয়ে ফেলে এবং তাকে খেয়ে ফেলে। ক্রোনোসকে হারিয়ে ফেলার সময় একটা মুহুর্তে পোসেইডনের মনে পরছে।
-->>তো পোসেইডন আমার ভাই, যখন আমাদের এই যুদ্ধ শেষ হবে তখন কি করবে তুমি? যেহেতু আমার জন্ম হয়েছিলো রাজ করার জন্য তাই আমি অলিম্পাসের সিংহাসনে বসবো। হেডিস চুপচাপ থাকতে পছন্দ করে বলে সে আন্ডারওয়ার্ল্ড বেছে নিয়েছে রাজ করার জন্য। কিন্তু তুমি?(জিউস)
পোসেইডন দূরে তাকিয়ে দেখতে লাগলো। গডেস মেটিসের দিকে তার নজর ছিলো।
-->>আমার ভাই পোসেইডন, আমি তোমার যেকোনো একটা আশা পূর্ণ করতে পারবো। কিন্তু এটা বাদে।(জিউস)
পোসেইডন বুঝতে পারলো, তাই সে আর কোনো কথা বললো না। মেটিসের দিক থেকে তার চোখকে সরিয়ে নিলো। দীর্ঘ বছরের ভালোবাসা থাকা সত্ত্বেও সে জানে জিউসের পছন্দের জিনিসে কখনো তার ভাগ হবে না।
-->>না আমার চাওয়ার মতো কিছুই নেই।(পোসেইডন)
ফ্লাশব্যাক চেন্জ,
মেটিস দাঁড়িয়ে আছে। পিছনে পোসেইডনও দাঁড়িয়ে আছে। পোসেইডন বলতে লাগলো,
-->>মেটিস তুমি কেনো করছো এটা? তুমি নিশ্চয় জানো জিউসের কাছে তুমি একটা সামান্য খেলনা ছাড়া কিছুই না। আর কিছুদিন পর বাকিদের মতো তোমাকেও ফেলে দিবে কোনো এক ময়লার মধ্যে হয়তো।(পোসেইডন)
-->>পোসেইডন তুমি হয়তো বুঝবে না। হয়তো কাউকে কখনো ভালো বাসো নি বলে তোমার এই বিষয়টা বোঝার ক্ষমতা হয় নি। ভালোবাসার মানুষটার জন্য একজন তার জীবনও দিতে পারে।(মেটিস)
-->>কিন্তু এভাবে?(পোসেইডন)
-->>পোসেইডন আমার সব থেকে বিশ্বস্ত এবং কাছের বন্ধ তুমি, আমার শেষ একটা কথা রাখবে?(মেটিস)
-->>মেটিস এখনো সময় আছে, তুমি পাগলামি করো না। জিউস তোমাকে জীবন্ত খেয়ে ফেলবে। তুমি আমার সাথে পালিয়ে চলো।(পোসেইডন)
-->>আমার ভাগ্যে এটায় লেখা ছিলো, কিন্তু পোসেইডন তোমাকে আমার শেষ কথাটা রাখতেই হবে। আমার পেটে জিউসের সন্তান রয়েছে। জানিনা আমি তাকে দেখতে পারবো কি না কোনোদিন। তোমাকে কথা দিতে হবে যে আমি যাওয়ার পর ওর খেয়াল তুমিই রাখবে। ওর অবস্থা যেনো ওর বাকি ভাই বোনদের মতো না হয়।(মেটিস)
-->>মেটিস, মেটিস।(পোসেইডন)
ফ্লাসব্যাক শেষ,
পোসেইডন দুই হাঁটুতে ভর করে বসে আছে অলিম্পাসের সমস্ত গডদের সামনে। জিউস তার বিচার করছে। অলিম্পাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষনা করার থেকে বড় অপরাধ আর একটাও হতে পারে না। পোসেইডনের এই বিষয়ে কোনো খেয়াল নাই। সে শেষ বারের মতো এথিনার দিকে তাকালো একবার। মনের মধ্যেই সে বলতে লাগলো,
"হ্যা মেটিস আমি কাউকে কখনো ভালোবাসি নি, তাইতো আজ জীবন দিচ্ছি একটা কথা রাখার জন্য। হয়তো আমি লেট ছিলাম তাই তোমাকে পাই নি। তোমার কথা আমি রেখেছি। এখন আমি তোমার কথা থেকে মুক্ত। আর হ্যাঁ এথিনা ভালোই থাকবে অলিম্পাসের মধ্যে। কারন সে এখন জিউসের থেকেও শক্তিশালী।" (পোসেইডন ভাবছে)
তখনি জিউসের সন্তান এরিস পোসেইডনের বুকে পোসেইডনের ট্রিশুল দিয়েই আঘাত করে পোসেইডনকে হত্যা করে ফেলে এবং তার সউলের উপরে কার্স দিয়ে পৃথিবীতে পাঠিয়ে দেই।
* * *
To Be Continued
* * *
কেমন হলো জানাবেন।