[প্রথমেই বলি গল্পটা পুরো কাল্পনিক, কেউ বাস্তব কিংবা ধর্মের সাথে তুলনা করবেন না]
#Demon_King#
পর্ব:৬৬
লেখকঃহৃদয় বাপ্পী
.
.
.
(টাওয়ার অফ গ্লাটোনি)
রাজ্যের কুইন ফিরে এসেছে, এই খুশিতে পুরো রাজ্যের মধ্যে অনুষ্ঠান শুরু হয়েছে। সমস্ত রাজ্যের মানুষেরা প্রচন্ড খুশি তাদের কুইনকে আবার ফিরে পেয়ে। শুধু মাত্র কিছু অফিসিয়াল বাদে কুইন মারিয়ার উপস্থিতিতে সবার মনেই উৎসব জাগছে। আর সেই কিছু অফিসিয়াল মিলেই মিটিং শুরু করেছে।
-->>আমরা এক যুগের মতো সময় অপেক্ষা করেছিলাম। কিন্তু এই একটা জিনিস আমাদের পুরো প্লানকে শেষ করে দিলো।
-->>কে ভেবেছিলো প্রিন্সেস মারিয়া ফেরত আসবে আবার, আমি তো ভেবেছিলাম তারা দুজনে কোথাও না কোথাও মারায় গিয়েছে।
-->>কিন্তু সে কি কুইন হওয়ার ক্ষমতা রাখে? আমাদের ফর্মার কিং সবচেয়ে খারাপ একটা ডিসিশন নিয়েছিলো।
-->>তার কুইন হওয়ার যোগ্যতা নেই। যে নিজের মানুষদের ছেড়ে এক যুগ সময় কাটাতে পারে সে কিভাবে আমাদের উপরে রাজ করতে পারে?
-->>কিন্তু তার কাছে গার্ডিয়ান মার্ক রয়েছে। আমরা তো মার্কের বিপক্ষে যেতে পারি না।
-->>হ্যা যার কাছে মার্ক রয়েছে সেই আমাদের এই সিকরেট কিংডমের কিং বা কুইন হতে পারবে। এটা শুধু দুর্বলরাই মানবে।
-->>হ্যাঁ মিনিস্টার আমাদের হাতের মুঠোই চলে এসেছিলো। যদি না মারিয়া তার চেহারা না দেখাতো তাহলে পুরো সিকরেট কিংডম আমাদের হাতের মুঠোর মধ্যে চলে আসতো।
-->>আমার কাছে একটা প্লান রয়েছে। যেটা কুইন এবং সিকরেট কুংডম দুটোকেই আমাদের হাতের মুঠোর মধ্যে এনে দিবে।
-->>হাহাহাহাহাহা
সবাই একসাথে হাসতে লাগলো। তাদের প্লানটা মোটেও ভালো ছিলো না, তবে সেটা যে পূর্ণ হবে এমনও নয়। একটা বদ্ধ রুমের মধ্যে তারা তাদের স্পেশাল মিটিং প্লেস নির্বাচন করেছিলো যেটা সম্পর্কে কারোরই জানার কথা ছিলো না। কিন্তু পরের দিন সেই ব্যক্তিদের আর দেখা গেলো না। বিষয়টা এমন হলো য তারা রাতারাতি কোথাও হারিয়ে গিয়েছে।
-->>তুমি কিছু করো নি তো?(মারিয়া)
মারিয়া কথাটা এলমন্ডকে বলতে লাগলো। দুজনে একসাথে থ্রোন রুমের দিকে যাচ্ছিলো। সকালেই মারিয়ার কানে খবর আসে যে কয়েকজন গুরুত্বপূর্ণ পদধারী অফিসিয়াল কাল রাত থেকে নিখোঁজ। আর এজন্যই তার প্রথম সন্দেহ আর কারো উপরে না গেয়ে এলমন্ডের উপরেই গেলো।
-->>বাবু, আমি এসবের কিছুই জানি।(এলমন্ড)
-->>তাহলে নিশ্চয়ই তোমার হাত রয়েছে। তারা এখনো আছে নাকি শেষ?(মারিয়া)
-->>আমি বুঝি না তুমি আমার মিথ্যা গুলো ধরতে পারো কিভাবে? তাদের কিছুই হয় নি, শুধু আমার প্রিজনের মধ্যে বন্ধি আছে।(এলমন্ড)
-->>তোমার মতো প্লেবয়ের বলা মিথ্যা যদি আমি ধরতে না পারি, তাহলে কত সতিনের সাথে সংসার করতে হতো তার কোনো নিশ্চয়তা কি আছে?(মারিয়া)
-->>এটা কি রকম কথা? আমি তো শুধু তোমাকেই ভালোবাসি।(এলমন্ড)
-->>এটা এই পর্যন্ত কত হাজার মেয়েকে বলেছো মিস্টার?(মারিয়া)
-->>শুধু তোমাকেই।(এলমন্ড)
-->>চাপা ছাড়ার আর জায়গা পেলে না। যাইহোক আমার এলেক্সের কি খবর?(মারিয়া)
-->>আমাদের ছেলে একদম ঠিক আছে এবং খুব তারাতাড়ি শক্তিশালী হচ্ছে। তোমাকে ওকে নিয়ে চিন্তা করতে হবে না।(এলমন্ড)
-->>আচ্ছা এলমন্ড, যদি এলেক্স কখন জানতে পারে যে....(মারিয়া বলতে যাবে তখনি এলমন্ড থামিয়ে দিলো মারিয়াকে)
-->>তুমি নিশ্চয় জানো যে এলেক্সই আমাদের ছেলে। ওর মাইন্ড বা চিন্তা ভাবনা যেমনই হোক না কেনো সবশেষে ও আমাদের এলেক্সই।(এলমন্ড)
-->>কিন্তু যদি কখনো ওর পরিচয় নিয়ে সন্দেহ করে? মানে যদি ওর পূর্বের স্মৃতি ফিরে আসে?(মারিয়া)
-->>তুমি শুধু শুধু চিন্তা করতেছো। প্রথম দিকে অবশ্যই খেয়াল করেছো এলেক্স আমাদের বাবা-আম্মা বলতো না। কিন্তু এখন কি হচ্ছে? সে আমাদের মেনে নিয়েছে অনেক পূর্বেই তাই তোমারও এই বিষয়ে চিন্তা ভাবনা করা বাদ দিতে হবে।(এলমন্ড)
-->>তুমি এতো স্বাভাবিক ভাবে কেনো বলতেছো সব কিছু? তুমি নিশ্চয় জানো আমি আমার এলেক্সকে দ্বিতীয় বার হারাতে পারবো না।(মারিয়া)
এলমন্ড আর কিছু বললো না। সে শুধু মারিয়ার কাঁধে হাত দিয়ে তাকে শান্তনা জানাতে লাগলো। মারিয়া থ্রোন রুমের মধ্যে প্রবেশ করলো, যার ফলে দুজনেই নিশ্চুপ হয়ে গেলো। মারিয়া তার সিংহাসনের উপরে বসলো এবং এলমন্ড তার পাশে দাঁড়িয়ে রইলো। মারিয়া যখন ছোট ছিলো তখন থেকেই এলমন্ডের কাজ এটা। মারিয়া যেখানে যাবে এলমন্ড তার বডিগার্ড হয়ে সেখানেই যাবে। আজ বিয়ের পরও সেই কাজটা সে ভুলতে পারে নি।
"সব কিছুই কমপ্লেক্স হয়ে আছে। যদি ছেলেটার রহস্য নিয়ে আরো কিছু বলি তাহলে তো মারিয়া আমাকে আস্ত খেয়ে ফেলবে।" (এলমন্ড ভাবছে)
মারিয়া তার রাজকীয় কাজ নিয়ে ব্যস্ত হয়ে গেলো। আর এলমন্ড পাশে দাঁড়িয়ে রইলো। পাশে দাঁড়িয়ে রইলো বললে ভুল হবে। এলমন্ড তার ক্লোন তৈরী করলো এবং সেটাকে মারিয়ার কাছে রেখে দিলো। তার আসল শরীর নিয়ে সে চলে গেলো এক অজানার মধ্যে। জায়গাটা যদিও অন্যদের কাছে পরিচিত নয় কিন্তু এলমন্ড এবং এলেক্সের কাছে অনেক পরিচিত একটা জায়গা। এলমন্ড একটা বিল্ডিং এর উপরে চলে আসলো। বিল্ডিং এর উপরে দাঁড়িয়ে সে দেখতে পেলো বিশাল একটা টাওয়ার।
-->>তাহলে এটাই টাওয়ার অফ স্লোথ। আমি ভাবি নি এতোটা স্পিড প্রয়োজন হবে আবারো এই একই জায়গায় আসার জন্য। কত বছর হলো আজ, পঁচিশ নাকি ছাব্বিশ। হ্যাঁ হৃদয়ের বয়স যতদিন হবে ততদিন আমার আসা হয় না এখানে।(এলমন্ড)
এলমন্ড হাঁটতে শুরু করলো। এক পা দু পা করে সে যে বিল্ডিং এর উপরে ইন্টার ডাইমেনশন ব্যারিয়ার তৈরী করেছিলো সেই বিল্ডিং এর একটা রুমের মধ্যে প্রবেশ করলো। রুমের ভিতরে সব কিছু গোছগাছ করা ছিলো। এলমন্ড সব কিছু ভালো করে তাকিয়ে দেখতে লাগলো। দেওয়ালে বেশ কিছু ছবি রয়েছে, যার মধ্যে দুজন কাপলের ছবিই বেশী। এলমন্ড সেদিকে বেশ কিছুক্ষন তাকিয়ে থেকে নিজেকেই বলতে শুরু করলো।
-->>ছেলেটার বেশ সুন্দর জীবন ছিলো এখানে।(এলমন্ড)
ছবি গুলোতে ছেলেটাকে সুন্দর হাসিতে দেখা যাচ্ছিলো। তা বেশ কিছুক্ষন দেখতে লাগলো এলমন্ড। এলমন্ড আরো ভিতরে আসতে লাগলো। তিনটা রুম এপার্টমেন্টের ভিতরে। একটা বেড রুম, একটা কিচেন এবং একটা ড্রয়িং রুম। ড্রয়িং রুম থেকে বেড রুমে প্রবেশ করলো এলমন্ড। যেখানে বেশ কিছু জিনিস রয়েছে, চার পাঁচটা কম্পিউটার পরে ছিলো এক কোনার টেবিলের উপরে। যেটা এলমন্ড দেখেও না দেখার ভান করলো। বিছানার ডান পাশে ছোট একটা ড্রয়ার আছে। যার উপরে এলার্ম ঘড়ি, কিছু প্রয়োজনী ঔষধের টেবলেট পরে আছে। অনেকটা সময় পার হওয়ার ফলে সেগুলো প্রায় পচনের পথেই। ড্রয়ারের উপরে একটা এলবামের মধ্যে ছবিও রয়েছে একটা। এলমন্ড সেটার সামনে থামলো এবং ছবিটা হাতে তুললো। ছবিটার দিকে সে তাকিয়ে রইলো। বিশ কিংবা বাইশ বছরের একটা মেয়ের ছবি সেটা। যদিও এখন সে বেঁচে থাকলে একটা বুড়িই বলা যেতো তাকে। এলমন্ড ছবিটার দিকে বেশ কিছুক্ষন তাকিয়ে থাকার পরে বলতে লাগলো,
-->>জানি না আমাকে ক্ষমা করবে কিনা কোনোদিন, কিন্তু তোমাকে ঔভাবে ছেড়ে যাওয়া আমার উচিত হয় নি। বিশেষ করে ঔ অবস্থায়।(এলমন্ড)
এলমন্ডের চোখের কোনা থেকে এক ফোটা পানি বের হলো। এবং সেটা ছবিটার উপরে পরতেই ছবি থেকে আলো বের হতে শুরু করলো। হলুদ কালারের একটা লাইট পুরো রুমকে ঘিরে ধরলো। সেই লাইটের মধ্য দিয়ে ছবির মেয়েটা রূপ নিতে শুরু করলো। হলুদ রঙের আলোতে পরিণত হয়ে গেলো মেয়েটা। মেয়েটা কিছু বলবে তার পূর্বেই এলমন্ড মেয়েটাকে জরিয়ে ধরলো এবং তার ঠোঁটে একটা চুমু খেলো। এলমন্ড ছেড়ে দেওয়ার সাথে সাথেই মেয়েটা কেঁদে দিলো। তার চোখের পানি সে নিজের হাত দিয়েই মুছে বলতে লাগলো,
-->>আমি জীবিত হলাম কিভাবে?
মেয়েটা তার হাত পা এবং শরীর দেখতে লাগলো। এলমন্ডের কিছু বলে দিতে হলো না। সে নিজেই বুঝতে পারলো কি হয়েছে তার সাথে।
-->>আমি শুধু তোমার স্মৃতিকে একটি জাগিয়ে তুলেছি। এটা বেশীক্ষনের জন্য না। দেখো.......(এলমন্ড)
-->>আমি জানি তুমি কি বলবে। ভুলটা তোমার আমার কারোরই ছিলো না। তাই আমরা এই অল্প সময়ে সেটা নিয়ে কথা না বলি। আমাদের ছেলের অবস্থা কি? আমি এতোটাই দুর্ভাগা যে আমার ছেলেটার চেহারাও আমি দেখতে পারি নি।
-->>হয়তো অবাক হবে তাকে দেখলে এখন। কারন সে অনেকটা চেঞ্জ হয়েছে।(এলমন্ড)
এলমন্ড তার হাত দিয়ে সামনের মেয়েটার হাত ধরলো। এবং নিজের স্মৃতির কিছু অংশ সে মেয়েটার সাথে শেয়ার করতে লাগলো। মেয়েটা স্মৃতি গুলোতে তার ছেলেকে দেখতে পেয়ে কাঁদতে শুরু করলো। তার মাথায় কিছু প্রশ্ন রয়েছে, তারপরও সে তার কান্নাকে আটকে রাখতে পারছে না। এলমন্ড তার হাতকে ধরে ড্রয়িং রুমের মধ্যে নিয়ে আসলো।
-->>আমি তোমাকে যাকে দেখালাম সেটা আমাদের সন্তানের বর্তমান অবস্থা। আর তার পূর্বের অবস্থা এইরকম ছিলো।(এলমন্ড)
এলমন্ড দেওয়া থাকা ছবি গুলো দেখাতে লাগলো। যেখানে হৃদয় এবং তার স্ত্রী মিলে রয়েছে। হৃদয়ের হাসিমাখা ছবি গুলো দেখতে পেয়ে তার মা হাঁটুতে পরে কাঁদতে শুরু করলো। একটা মায়ের জন্য সবচেয়ে অভাগা জিনিসটা আর কি হতে পারে? যে মা কষ্ট করে দশ মাস দশ দিন বাচ্চাকে পেটে রেখেও সেই বাচ্চার মুখ না দেখতে পেরেই মারা যায়, তার থেকে অভাগী দুনিয়ায় আর কেউ হতে পারে না। ঠিক হৃদয়ের মায়ের অবস্থাও একই।
ছেলেকে এভাবে দেখতে পারবে এটা মা কোনোদিন ভাবে নি। তাই তার চোখের পানি এবার আর বাধ মানছে না। এলমন্ড কি বোঝাতে চাচ্ছে দুইরকম মানুষ দেখিয়ে সেটা কিছুটা হলেও আন্দাজ করতে পেরেছে মেয়েটা। তাই সে এই ব্যাপারে আর কিছু বললো না। তার আশে পাশের লাইট গুলো হারিয়ে যেতে শুরু হলো, যা দেখে সে বুঝতে পারলো তার কাছে সময় নেই আর।
-->>আমি জানি না আমার ছেলের সাথে কি হচ্ছে এলমন্ড। কিন্তু আমি এটা জানি যে মা হয়ে আমার ছেলের পাশে আমি থাকতে পারি নি এবং ভবিষ্যতেও পারবো না। তাই ওর যদি কিছু হয়ে থাকে কখনো আমি কোনোদিনও তোমাকে মাফ করবো না।
-->>আমি তোমাকে কথা দিলাম রিজা। আমি কোনোদিনও আমাদের ছেলেকে কষ্ট পেতে দিবো না আর।(এলমন্ড)
-->>হ্যাঁ সেই বিশ্বাস আছে তোমার উপরে, তো আমাদের ছেলের নাম কি রেখেছিলে? আমার দেওয়াটা নাকি তোমার দেওয়াটা?
-->>হৃদয় এডিরামা ডি জোফার্ড ভন এলেক্স। সংক্ষেপে এইখানে হৃদয় এবং যেখানে সে এখন আছে সেখানে এলেক্স নামে পরিচিত।(এলমন্ড)
-->>তাহলে তুমি দুটো নামই ব্যবহার করেছো। আমি এখন অনেক খুশি।
তার স্মৃতি গুলো হারিয়ে যেতে লাগলো অজানার মধ্যে এবং সেই সাথে হলুদ আলো গুলোও ভাসতে ভাসতে অদৃশ্য হতে লাগলো। এলমন্ড সেদিকে তাকিয়ে আছে। শেষ সময়ে সে এই মেয়েটার কাছে থাকতে পারে নি। হাজারো মেয়ের মতো তাকেও সে ভুলে গিয়েছিলে, কিন্তু যখন মনে পরে তখন সব কিছু শেষ হয়ে গিয়েছিলো। মেয়েটা আর জীবিত ছিলো না। একটা ছেলে সন্তানকে জন্ম দিয়ে মেয়েটা মারা গিয়েছিলো। ছেলেটার অবস্থা তখন অনেক সিরিয়াস থাকার ফলে সে এলমন্ডের সংস্পর্শে আসতে পারে নি। এলমন্ডের কোনো কিছু করার ছিলো না। সে ছেলেটাকে হৃদয় নাম দিয়ে এবং একটা গার্ডিয়ান ঠিক করে দিয়ে এই ওয়ার্ল্ড থেকে চলে যায়। কারন এলমন্ডের এই ওয়ার্ল্ডে থাকার কারনটাই ছেলেটার মৃত্যুর কারন হতে চলেছিলো।
-->>আমি দুঃখিত রিজা, তুমি আমাকে অন্ধের মতো বিশ্বাস করতে এবং এখনো করো, কিন্তু আমি সত্যতা তোমাকে এখনো বলতে পারলাম না। কিন্তু তুমি চিন্তা করো না। আমাদের ছেলের কাছে আমি তখন না থাকতে পারলেও এখন সেটা চেন্জ হয়েছে। আমি ওকে কোনো কষ্ট আর পেতে দিবো না।(এলমন্ড)
এলমন্ড এলবামের ছবিটাকে সাথে নিয়ে চললো আবারো ছাদের উদ্দেশ্যে সে ছাদের উপরে প্রবেশ করার সাথে সাথে আরো একবার বলতে লাগলো,
-->>আমি যদিও তোমার ইচ্ছা গুলোকে পূর্ণ করতে পারি নি। কিন্তু আমি জানি আমাদের ছেলে সেটা ঠিকই পারবে। আর কিছু সময় শুধু অপেক্ষা করো তুমি। দেখবে আমরা আবারো একসাথে থাকতে পারবো। তুমি, আমি, আমাদের সন্তান এবং তোমার একজন সতিন।(এলমন্ড)
এলমন্ড তার কথাটা শেষ করার সাথে সাথেই সুপার স্পিডে দৌড় দিতে লাগলো। তার দৌড়ের সময় ইন্টার ডাইমেনশন ব্যারিয়ার ভেঙে গেলো এবং সেটা অন্য একটা ওয়ার্ল্ডের সাথে কানেক্ট হলো। আর সেটার মাধ্যমে এলমন্ড মারিয়ার কাছে ফেরত চলে গেলো।
"ওহো, দিন দিন আমার এনার্জি কমতে শুরু করেছে। যেখানে আমি পলক ফেলতেই হাজারো ওয়ার্ল্ড ট্রাভেল করতে পারতাম, সেখানে আমার লিমিটারের জন্য একটাতেই ট্রাভেল করতে গিয়ে অবস্থা খারাপ। আমার মনে হচ্ছে সংসারে কিছুদিন কম ফোকাস দিয়ে আমাকে আমার এনার্জি মেইনটেইন করা উচিত।" (এলমন্ড ভাবছে)
এলমন্ড তার ক্লোনকে মারিয়ার পাশ থেকে সরিয়ে দিলো এবং সেই জায়গায় নিজে গিয়ে দাঁড়ালো। মারিয়া এখনো প্রয়োজনীয় বিষয় নিয়ে কথা বলে যাচ্ছিলো।
-->>ঠিক আছো তুমি?(মারিয়া)
এলমন্ডের শারিরীক অবস্থা দেখে কেউই বলতে পারবে না যে সে এখন খারাপ আছে। কিন্তু মারিয়ার চোখকে ফাঁকি দেওয়াটা অসম্ভব।
-->>হ্যাঁ হ্যাঁ আমি ঠিক আছি। শুধু লিমিটারের সাইড ইফেক্ট।(এলমন্ড)
এলমন্ড আস্তে আস্তে মারিয়ার কানে কানে কথাটা বললো। এলমন্ড কিছুক্ষনের জন্য অসুস্থ বোধ করছিলো। আর মারিয়ার এটা বুঝতে সময় লাগলো না। সে মুহূর্তেই সমস্ত প্রয়োজনীয় মিটিং ক্যানসেল করে দিয়ে এলমন্ডকে নিয়ে তাদের রুমের মধ্যে প্রবেশ করলো।
-->>আমি তোমাকে পূর্বেও বলেছি তোমার অরিজিনাল পাওয়ার ব্যবহার না করতে। জানি তুমি শক্তিশালী বিয়িং, কিন্তু এই লিমিটার তো তোমাকে মেরে ফেলতে পারবে।(মারিয়া)
মারিয়ার চোখে চিন্তাভাবনা দেখতে পেয়ে এলমন্ড মারিয়াকে শান্তনা দিতে লাগলো। কিন্তু মারিয়া সেটা না শুনে,
-->>দেখো আমি শেষ বারের মতো বলবো তুমি তোমার অরিজিনাল পাওয়ার ব্যবহার করবে না। যদি করো তাহলে আমি বা এলেক্স কেউই তোমার সাথে কথা বলবো না।(মারিয়া)
-->>আচ্ছা বাবা ঠিক আছে।(এলমন্ড)
-->>তুমি রেস্ট নাও, আমি কিছু মেডিসিন পিল বানিয়ে দিচ্ছি তোমাকে।(মারিয়া)
মারিয়া কিছু মেডিসিন পিল তৈরী করতে চলে গেলো। আর সেই সময়ে এলমন্ড বিছানায় শুয়ে রইলো। সে শুয়ে শুয়ে ভাবতে লাগলো অতীতের একটা কথা।
ফ্লাসব্যাক,
এলমন্ডের দেখা উইশ মেকার এ.কে.এ ডিম্যান কিং এর সাথে হয়েছে। যেখানে উইশ মেকার এলমন্ডের সামনেই এক ব্যক্তির তিনটা ইচ্ছা পূর্ণ করে চলে যাচ্ছিলো। বিষয়টা এলমন্ড দেখতে পেয়ে তার লিমিটার সরিয়ে সোজা ডিম্যান কিং এর গলা টিপে ধরে। ডিম্যান কিং যে একজন উচ্চতর লেভেলের গড ছিলো সে নিজেও আশা করে নি এলমন্ডের মতো ব্যক্তির সাথে তার এরকম একটা ওয়ার্ল্ডে দেখা হবে। তার ক্যালকুলেশন খারাপের দিকেই যাচ্ছিলো, কারন এলমন্ড ডিম্যান কিং এর পরিচয় সাথে সাথে বুঝতে পেরেছিলো এবং তাকে হত্যা করারও চেষ্টা করছিলো।
-->>প্লিজ আমাকে হত্যা করবেন না। আমার পূর্ব ক্ষমতা নেই, তাই আমাকে হত্যা করাটা আপনার নিজের সম্মানের জন্যও হানি হবে।(ডিম্যান কিং)
-->>ডিম্যান কিং যে এক সময়ে সকল গডদের প্রায় হত্যা করে ফেলেছিলো সে আজ আমার কাছে তার প্রাণ ভিক্ষা চাচ্ছে বিষয়টা আসলেই হাস্যকর।(এলমন্ড)
-->>প্লিজ। আমি সব কিছু হারিয়ে ফেলেছি। তাই শেষ সম্বল টুকু হারাতে চাচ্ছি না। আমার পাপের খাতা এতো বেড়ে গিয়েছে যেটাকে কিছুটা মুছার জন্য আমি অন্যদের সাহায্য করছি।(ডিম্যান কিং)
-->>কিভাবে? অন্যদের পাপের খাতা বারিয়ে?(এলমন্ড)
-->>আমাকে ছেড়ে দিলে, আমি আপনারও যেকোনো একটা ইচ্ছা পূর্ণ করে দিতে পারবো।(ডিম্যান কিং)
-->>এখন কি ডিম্যান কিং অন্যদের ঘুষও দিতে শুরু করেছে।(এলমন্ড)
-->>মৃত ব্যক্তি জীবিত করা এবং কাউকে অমর করে দেওয়া ব্যতীত আমি যেকোনো ইচ্ছা পূর্ণ করে দিতে পারবো।(ডিম্যান কিং)
-->>যেকোনো ইচ্ছা? যদি কোনো মৃত ব্যক্তির শরীরে অন্য একটা ব্যক্তির সউলকে প্রবেশ করিয়ে দিতে পারি পারবে সেটা?(এলমন্ড)
-->>আপনি নিশ্চয় জানেন এক্সব্লকের মধ্যে আপনি নিজেও সেটা করতে পারতেন। কিন্তু এখানে আমি বাদে কেউই এই কাজ করতে পারবে না। আপনি নিজেও না।(ডিম্যান কিং)
এলমন্ড ডিম্যান কিং এর গলা ছেড়ে দিলো। ডিম্যান কিং কাঁপতে কাঁপতে নিচে পরে গেলো। সে আশা করে নি সে বেঁচে যাবে, কারন তার সামনের ব্যক্তিটা একটা হিংস্র সিংহের মতো যে কখনো তাদের শিকারকে ছেড়ে দেই না।
-->>তাহলে আমি আপনার ইচ্ছাটা পূর্ণ করে দিচ্ছি। কিন্তু সেটার জন্য আমার সময় লাগবে।(ডিম্যান কিং)
-->>আমি আমার মৃত ছেলের শরীরে আমার জীবিত ছেলেকে দেখতে চাই। এবং সেটা খুবই তারাতাড়ি, নাহলে তুমি যেখানেই পালিয়ে থাকো না কেনো, আমি তোমাকে এবং তোমার এই সুন্দর সুন্দর পিলার গুলোকে ধ্বংস করে দিবো।(এলমন্ড)
এলমন্ড কথাটা বিশাল টাওয়ারের দিকে ইঙ্গিত করে বললো। আর তখনি ডিম্যান কিং সেই জায়গা থেকে চলে গেলো।
ফ্লাসব্যাক শেষ।
এলমন্ড শুয়ে ছিলো। সে নিজেই নিজেকে বলতে লাগলো,
-->>সব কিছুতেই আমার দোষ ছিলো। হয়তো সব কিছু সম্পর্কে জানলে হৃদয় এডিরামা ডি জোফার্ড ভন এলেক্স আমাকে মাফ করতে পারবে না। কারন তার সুন্দর লাইফটা আমার জন্যই তুলনামূলক আগে নষ্ট হয়েছে। কিন্তু জিনিসটা না করলে এক সময় না একসময় তাদের হাতে ঠিকই বন্ধী হতো সে। হয়তো আমার কারন এবং ব্যবহার সে বুঝতে পারবে না। কিন্তু সবশেষে সব কিছু তার ভালোর জন্যই।(এলমন্ড)
* * *
To Be Continued
* * *
কেমন লাগলো অবশ্যই জানাবেন।