[প্রথমেই বলি গল্পটা পুরো কাল্পনিক, কেউ বাস্তব কিংবা ধর্মের সাথে তুলনা করবেন না]
#Demon_King#
পর্ব:৭০
লেখকঃহৃদয় বাপ্পী
.
.
.
(সিক্রেট কিংডম)
টাওয়ারের তিন কিংডমের একটা হলো সিক্রেট কিংডম। এটি অন্যান্য দুটি কিংডমের মতো একটিভ নয়। এটি ছায়ার মধ্য থেকে তার কাজ করতে পছন্দ করে। ব্লু এবং গ্রিন কিংডমের মধ্যে সব সময় যুদ্ধ লেগেই থাকে। কিন্তু সিক্রেট কিংডমের জন্যই তারা একে অপরের সাথে বড় যুদ্ধে অংশ নিতে পারে না। সিক্রেট কিংডমের রয়েল প্যালেসের মধ্যে কিংডমের কুইন মারিয়া এবং তার স্বামী তাদের রুমে রয়েছে। মারিয়া একটা বিশাল আয়নার সামনে বসে ছিলো, আর এলমন্ড পিছন থেকে মারিয়ার চুলে তেল দিয়ে দিচ্ছিলো।
-->>ওগো শুনছো? এলেক্সকে কি আমাদের এখানে নিয়ে আসা উচিত না এখন?(মারিয়া)
মারিয়া আয়নার মধ্য থেকে এলমন্ডের দিকে তাকিয়ে কথাটা বললো। এলমন্ড মারিয়ার দিকে তাকিয়ে উত্তর দিতে লাগলো,
-->>এলেক্স আপাতোতো যে জায়গায় আছে সেখানেই ওর থাকা উচিত। যেহেতু ওর পরিচয় গোপন রয়েছে তাই ওর সুরক্ষা নিয়ে আমাদের ভাবতে হবে না।(এলমন্ড)
-->>কিন্তু......
-->>আমি জানি তুমি ভাবছো আমি সেলফিশ বিহেব করছি। কিন্তু মোটেও না। সবটা এলেক্সের ভালোর জন্যই। আপাতোতো একাডেমিতে ওর কিছু বন্ধু হয়েছে, আর এই সময়ে ওর নিজের বন্ধুদেরই প্রয়োজন নাকি বাবা-মাকে।(এলমন্ড)
-->>কিন্তু আমার যে ওকে দেখতে মন চাচ্ছে। এমনিতেই একাডেমির টেস্টের কারনে আমি ওকে অনেকটা সময় দেখতে পারি নি। আবার এখন কতটা সময় পার হয়ে গেলো।(মারিয়া)
-->>মারিয়া, এলেক্স এখন বড় হচ্ছে। ওর এখন নিজস্ব সময় দরকার। আপাতোতো ও একাডেমিতে থাকুক, যেহেতু এখানে তোমার অনেক কাজ রয়েছে। তুমি তোমার কাজটা শেষ করো তারপর আমরা ওকে এখানে নিয়ে আসবো।(এলমন্ড)
এলমন্ডের কথা শুনে মারিয়া আর কিছু বললো না। সে জানে এলেক্স বড় হয়েছে, আর এই সময়ে নিজের মতোই চলতে পছন্দ করবে, তারপরও পূর্বের কিছু স্মৃতি মনে করলে মারিয়ার হৃদয় কেঁপে উঠে। তাইতো সে বেশী চিন্তা করে যাচ্ছে। কিন্তু যেহেতু এলমন্ড বলেছে এবার কিছুই হবে না, তারপরও মারিয়ার চিন্তা কম হচ্ছে না।
* * * * *
(ব্লু কিংডম)
বাইরের এম্পায়ার এবং কিংডমের মতোই টাওয়ারের তিন কিংডম। প্রথম ফ্লোরকে মোট তিনভাগে ভাগ করা হয়েছে। যেটার মধ্যে তিন কিংডম অবস্থিত। কিংডম গুলো বিশাল, যেহেতু পুরো প্রথম ফ্লোরের আকার অনেকটা বড়। তিন কিংডমের ক্যাপিটালই মূলত তাদের প্রধান অংশ। আর ব্লু কিংডমের ক্যাপিটালের মধ্যেই একাডেমি অবস্থিত। টাওয়ারের বাইরের একাডেমি শুধু তাদের স্টুডেন্টদের ম্যাজিক এবং স্পেল সম্পর্কেই শিক্ষা দিয়ে থাকে। কিন্তু টাওয়ারের ভিতরের একাডেমি সেটা থেকে সম্পূর্ণ ভিন্ন। যদিও এখানেও স্পেল এবং ম্যাজিক সম্পর্কে শেখানো হয়, কিন্তু সেটা বেশীরভাগই প্রাকটিক্যালের মাধ্যমে। একাডেমি অনেকটা হান্টার অরগানাইজেশানের মতোই কাজ করে। তারা তাদের স্টুডেন্টদের পাওয়ার অনুযায়ী তাদেরকে নির্দিষ্ট র্যাংক দিয়ে থাকে। এবং তাদের সেই র্যাংক অনুযায়ী তাদেরকে কিছু মিশন দিয়ে থাকে। মিশন গুলোর মাধ্যমে স্টুডেন্টরা শক্তিশালী হতে পারে এবং সেই সাথে কিছু অর্থও উপার্জন করতে পারে। যেহেতু টাওয়ারের মধ্যে থাকতে হলে অনেক কিছুরই প্রয়োজন আছে তাই কমনারদের জন্য এটা অনেক ভালো সুযোগ টাওয়ারকে সঠিক ভাবে ইনজয় করার জন্য। তবে নোবেলদের অর্থের জন্য কোনো চিন্তা করতে হয় না। তারা তো তাদের মিশনের মাধ্যমে নিজেদের র্যাংক বৃদ্ধি নিয়ে ব্যস্ত থাকে। টাওয়ারের ভিতরের একাডেমি কোনো স্টুডেন্টদের পাওয়ার বা কয়টা এট্রিবিউট আছে তার সেটা দেখে না। একাডেমি দেখে কোন স্টুডেন্ট কয়টা মিশন শেষ করেছে। আর এই মিশনের মাধ্যমেই একাডেমি সবার র্যাংক নির্বাচন করে।
লুবা এবং চেইন তাদের টাওয়ারে আসা নতুন বন্ধুদের সমস্ত নিয়ম সম্পর্কে জানাচ্ছিলো। যা তাদের মানতেই হবে। নিয়ম গুলো টাওয়ারের বাইরের একাডেমি থেকে কোনো অংশে কম নয়। শুধু কয়েকটা পার্থক্য রয়েছে।
-->>আমাদের র্যাংক গুলো এভাবে নির্ধারিত হয়, F>E>D>C>B>A>A+>S>S+।(লুবা)
-->>টাওয়ারের বাইরের র্যাংক এখানে কোনো কাজে আসবে না। এখানের একাডেমিতে যারা প্রথম প্রবেশ করবে তাদের সবাই F র্যাংকের মধ্যে থাকবে। কিন্তু তারা মিশন শেষ করে প্রতিটা র্যাংকে অতিক্রম করতে পারবে।(চেইন)
-->>আচ্ছা মিশন বলতে, কি রকম মিশন?(মাইরা)
মাইরা কৌতূহল নিয়ে একটা প্রশ্ন করলো। যেহেতু তাদের এখন থেকে অনেকটা বছর এখানেই থাকতে হবে তাই তাদের জন্য এখানে সব গুলো নিয়ম জেনে রাখা কর্তব্য।
-->>অনেক রকমের মিশনই হতে পারে। যদি উদাহরন দিয়ে বলি তাহলে আমরা যখন F র্যাংকে ছিলাম তখন আমাদের প্রথম মিশনটা ছিলো কিছু মনস্টার হান্ট করার।(লুবা)
-->>তাহলে কি আমাদের সাথে ডিমনিক ফরেস্টে যাওয়াটাও তোমাদের একটা মিশন ছিলো?(মাইরা)
-->>হ্যাঁ, কিন্তু সেটা পুরোপুরি কম্প্লিট করতে পারি নি।(লুবা)
ডুফেসের মনে এতোক্ষন একটা প্রশ্ন ঘুরঘুর করছিলো তাই সে প্রশ্নটা করেই ফেললো।
-->>তাহলে তোমাদের র্যাংক কত?(ডুফেস)
ডুফেসের কথা শুনে লুবা এবং চেইন একে অপরের দিকে তাকালো। তারপর হেসে নিয়ে তারা তাদের জামার কলারে থাকা একটা ব্যাজ দেখাচ্ছে, যেখানে D লেখা ছিলো।
-->>আমাদের ব্যাচের মধ্যে শুধু আমরা চারজনই আছি যারা এতো দ্রুত D র্যাংকে পৌঁছাতে পেরেছি।(চেইন)
লুবা এবং চেইন আরো কিছু নিয়ম সম্পর্কে তাদেরকে বলতে লাগলো। যার মধ্যে, র্যাংক বৃদ্ধি করাটা একদম সহজ কাজ নয়। প্রতিটা র্যাংকে থাকা স্টুডেন্টদের পরবর্তী র্যাংকে প্রবেশ করতে হলে সেই মোট একশত মিশন শেষ করতে হবে। এই মিশন গুলো প্রতিটা র্যাংক অনুযায়ী আলাদা করা যায়। F র্যাংকের স্টুডেন্ট F র্যাংকের মিশনই সিলেক্ট করতে পারবে। সে চাইলেও একটা E র্যাংকের মিশনে যেতে পারবে না শিক্ষকদের অনুমতি ছাড়া। আবার এক মিশন একই র্যাংকের একাধিক ব্যক্তি নিতে পারবে, এতে করে তারা একটা টিম বলে গনিত হবে। এরকম নিজ র্যাংকের একশত মিশন শেষ করলেই পরবর্তী র্যাংকে প্রবেশ করতে পারবে সবাই এবং সেই সাথে পরবর্তী র্যাংকের মিশনও শেষ করার সুযোগ পাবে। যত উপরের র্যাংকের মিশন ততই তার পুরস্কার বেশী এবং মিশন গুলোও কঠিন হতে থাকে। শুধু এটাই নয়, যত উপরে র্যাংক উঠবে টাওয়ারের মধ্যে ততই সম্মান বারতে থাকবে।
চেইন এবং লুবার বলা মতে আজকে মাইরাদের প্রথম দিন টাওয়ারের মধ্যে, তাই তাদের কোনো মিশনে যাওয়ার সুযোগ থাকছে না। আজকে একাডেমিতে শুধু তাদের পূর্ব পরিচয় দিয়ে রেজিস্টার করে নিজেদের কলারের র্যাংক ব্যাজ সংগ্রহ করতে হবে। বাকি মিশন গুলো এবং ক্লাস গুলোতে কালকে থেকে সবাই নিতে পারবে। লুবা এবং চেইন আটজনকে একাডেমির মধ্যে নিয়ে আসলো। পোর্টালটা ঠিক একাডেমি সামনের জায়গায় থাকার ফলে বেশী সময় লাগলো না তাদের একাডেমিতে পৌঁছাতে। সবাই টাওয়ারের এই কিংডমের চিত্র গুলো দেখে অনেক অবাক হচ্ছে। যদিও সবাই এখানের ব্যাপারে পূর্বেই শুনেছিলো তারপরও নিজ চোখে দেখার আলাদা একটা মজা রয়েছে। রাস্তার ফ্লোর গুলো সাদা পাথরের মাধ্যমে তৈরী, বাসা গুলো মার্বেল পাথর দিয়ে তৈরী, সেই সাথে ওয়াল গুলো বিভিন্ন রঙিন পাথর গুলো দিয়ে তৈরী। যা পরিবেশের মাঝে আলাদা একটা রঙ নিয়ে আসছে। রাস্তার পাশে কয়েক হাত পর পরই মাঝারি সাইজের ফলের গাছ রয়েছে দুই পাশে যা জায়গাটার সৌন্দর্য আরো বৃদ্ধি করছে। সবাই এতোক্ষন হা করে সেগুলো তাকিয়ে দেখছিলো এবং একাডেমির মধ্যে প্রবেশ করছিলো।
চেইন এবং লুবা তাদের পরিচয় দেখিয়ে আটজনকে নিয়ে একাডেমির মধ্যে প্রবেশ করেছে। একাডেমির বাইরে অনেকটা প্যালেসের মতোই সিকিউরিটি রয়েছে। পুরো একাডেমির বাউন্ডারি বিশাল বিশাল রঙিন পাথর দিয়ে তৈরী যার উপর দিয়ে একটা জায়েন্টও আসতে পারবে না। তারা সবাই মিলে রেজিস্টার রুমের মধ্যে প্রবেশ করলে যেখানে নতুন আটজনের রেজিস্ট্রেশন হবে এবং তারা তাদের ব্যাজ সংগ্রহ করবে। রেজিস্টার রুমের মধ্যে এক বয়স্ক ব্যক্তি বসে ছিলো, যে বিভিন্ন রকমের রেকর্ড দেখছিলো। পেপারে নতুন স্টুডেন্টদের রেকর্ড ছিলো আর সেই ব্যক্তি সেটাই ঘুরিয়ে ফিরিয়ে দেখতে ছিলো।
চেইন এবং লুবা রুমের বাইরে থেকে এলিন, মাইরা, ডুফেস, জেয়াব, এবা, জেবা, স্নেরা এবং এনরি আটজনই একসাথে রুমে প্রবেশ করেছে। তাদের দেখা মাত্রই বুড়ো লোকটা তার হাতে একটা গোল বল নিলো তার সামনের টেবিল থেকে। বলটা সাথে সাথে আটজনের উপরে লাইটের একটা ফ্লাশ মারলো। যা থেকে আটটা আলাদা পেপারে তাদের ছবি, নাম, পরিচয় এবং পূর্বের একাডেমির ইনফরমেশন গুলো লেখা হয়ে গেলো। এটা একটা ম্যাজিকাল আইটেম, যা পূর্বের একাডেমি তথ্য এখানে নিয়ে আসতে সাহায্য করে। আর সেটায় মাত্র করা হয়েছে। বুড়ো লোকটা আটটা F র্যাংকের ব্যাজ দিয়ে দিলো তাদের প্রত্যেকজনের কাছে এবং বলতে লাগলো,
-->>এবার মেফাস একাডেমির সাথে কি হয়েছে? তাদের মধ্য থেকে সবাই টাওয়ারের টেস্ট সম্পূর্ণ করেছে।(বুড়ো লোকটা)
বুড়ো লোকটা অবাক না হয়ে পারলো না। কারন সে এখানে বসে লক্ষ করেছে অন্যান্য সকল একাডেমি থেকে একজন হলেও টেস্ট সম্পূর্ণ করতে পারে নি। কিন্তু সেখানে মেফাস একাডেমির সকল স্টুডেন্টই এখানে প্রবেশ করেছে। তারমানে তাদের সবার মাঝে একটা রহস্য তো আছেই। পেপারের মধ্যে শুধু তাদের পূর্ব ইনফরমেশনই নেই, বরং তারা কোন ড্যানজনের মধ্যে প্রবেশ করেছিলো এবং কয়জন প্রবেশ করেছিলো সেটাও উল্লেখ আছে। আর বুড়ো লোকটা সেটা দেখেই দ্বিতীয় বারের মতো অবাক হয়েছে। বুড়ো লোকটা তার টেবিলের উপর থেকে আটটা এক রকমের কার্ড নিলো এবং সেটা আটজনের হাতে দিয়ে দিলো,
-->>এটা একটা হলুদ ড্যানজন ক্লিয়ার করার জন্য তোমাদেরকে দেওয়া হলো। আমি আশা করি এখানে ভালোই কাজে দিবে। কাল থেকে তোমাদের রেকর্ড পাবলিক হবে, তোমরা কি ড্যানজন ক্লিয়ারের ব্যাপারটা গোপন রাখতে চাও নাকি সবাইকেই জানাতে চাও।(বুড়ো লোকটা)
লোকটার আসল কথার অর্থ কেউ বুঝলো না। কিন্তু ডুফেস এটার চাই না তার হলুদ ড্যানজন ক্লিয়ার করার বিষয়টা গোপন হতে। কারন সে এখানে এসেছেই একজন হিরো হতে। আর তার থেকে সেই সুযোগ চলে যাবে সেটা সে চাই না।
-->>অবশ্যই সবাই জানুক। আমরা আটজন একটা হলুদ ড্যানজন ক্লিয়ার করেছি এটা তো আমাদের মেফাস একাডেমির জন্য একটা সম্মানের ব্যাপার।(ডুফেস)
লোকটা ডুফেসের দিকে একবার তাকালো। যেহেতু অন্যদের এই ব্যাপারে কোনো মাথা ব্যথা নাই তাই তারা কিছু বললো না। বুড়ো লোকটা বলতে লাগলো ডুফেসের কথা শুনে,
-->>তাহলে তোমাদের এক একজনের চয়েজ এক এক রকম। ঠিক আছে এখন যেতে পারো। তোমাদের গাইড তোমাদের বাকি জিনিস সম্পর্কে পরিচিত করে দিবে।(বুড়ো লোকটা)
সবাই তাদের হাতে ব্যাজ এবং একটা হলুদ রঙের কার্ড নিয়ে রেজিস্টার রুম থেকে বের হলো। ব্যাজটা সাধারন ছিলো কিন্তু তাদের সবার হাতে একটা করে হলুদ কার্ড দেখতে পেয়ে বাইরে থাকা চেইন এবং লুবা দুজনেই অবাক হলো।
-->>এখন এটা বইলো না যে তোমরা একটা হলুদ ড্যানজন ক্লিয়ার করেছো!(চেইন)
-->>লাইটনিং স্নেক ড্যানজন।(জেয়াব)
-->>ম্যান, আমাদের জন্য কিছুই ছিলো না ড্যানজনটা।(ডুফেস)
চেইন এলিনের দিকে তাকালো। যার তাদের কোনো কথার দিকে মনোযোগ নাই। চেইন বুঝতে পারলো তারা কিভাবে একটা হলুদ ড্যানজনকে ক্লিয়ার করেছে। তার উপরে আবার লাইটনিং স্নেক ড্যানজনটা।
-->>তাহলে তো আমাদের সেলিব্রেট করতে হবে আজকে। কিন্তু প্রথমে আমি তোমাদেরকে তোমাদের থাকার জায়গায় নিয়ে যায়। তারপরের জিনিস পরে দেখা যাবে।(লুবা)
সবাই লুবা এবং চেইনের পিছনে যেতে লাগলো।
-->>তোমরা হয়তো জানো না, কিন্তু এই হলুদ কার্ডটা এখানে তোমাদের জন্য অনেক মূল্যবান একটা জিনিস। তাই কালকের আগ পর্যন্ত এটাকে ভালো করে নিজের কাছে রেখে দিয়ো।(চেইন)
-->>আমি বাবার থেকে শুনেছি এই কার্ড গুলো থাকলে পছন্দ অনুযায়ী একটা ম্যাজিকাল আইটেম নিতে পারবো একাডেমি থেকে।(মাইরা)
মেফাস একাডেমির মধ্যে খুব কম স্টুডেন্টই ছিলো যাদের কাছে একটা ম্যাজিকাল আইটেম রয়েছে। আর থাকলেও সেগুলো তারা ব্যবহার করে না সবার সামনে। কিংবা ব্যবহার করার মতো অনুমতি এখনো তাদের পরিবার থেকে পায় নি। তাই একাডেমি থেকে একটা ম্যাজিকাল আইটেম পাওয়াটা তাদের কাছে অনেকটা স্বপ্নের মতো।
-->>আমাদের কথা না হয় বাদ দিলাম। কিন্তু এলেক্স কোথায়? ওর সাথে আমাদের দেখা করা উচিত।(স্নেরা)
সবাই ম্যাজিকাল আইটেম নিয়ে ভাবতে ছিলো কিন্তু হঠাৎ স্নেরার মনের মধ্যে এই প্রশ্নটা জেগে উঠলো। এলেক্স যে ফায়ার এট্রিবিউট আনলক করলেও সেটা ব্যবহারের অভিজ্ঞতা লাভ করে নি। তাইতো তাকে নিয়ে স্নেরা চিন্তা করছিলো। শুধু যে স্নেরা তাকে নিয়ে চিন্তা করছিলো এমন নয়। তাদের আটজনের মধ্যে ছয়জনই এলেক্সকে নিয়ে চিন্তা করছিলো। জেবা এবং এনরি দুজনে এল টিমে পূর্বে না থাকার কারনে এলেক্সকে সেভাবে চিনে না। তাই তারা এ বিষয়ে তেমন কিছু ভাবছে না।
-->>এলেক্স!(চেইন)
-->>হ্যাঁ কোথায় ও?(স্নেরা)
-->>এলেক্স তার মিশনে রয়েছে।(লুবা)
-->>এলেক্স পুরো চেঞ্জ হয়ে গিয়েছে। ডিমনিক ফরেস্টের সেই এলেক্স আর এই এলেক্সের মাঝে আমি রাত দিন পার্থক্য দেখতে পেয়েছি। যে এলেক্স তখন সারাদিন আমাদের পিছনে থাকতো, সে এখন প্রতিনিয়ত মিশন শেষ করছে।(চেইন)
-->>প্রতি নিয়ত মিশন শেষ করছে?(মাইরা)
-->>সবার মাঝে একটা লিমিট থাকে। আমার কথায় যদি বলি, আমি দুটো মিশন এক টানা করলে প্রায় তিন থেকে এক সপ্তাহের জন্য একটা ছুটি নিয়ে থাকি এখন। কিন্তু এলেক্স, ও তো এক দিনেই তিন থেকে চারটা মিশন শেষ করছে।(চেইন)
-->>কি তোমরা কেউ ওকে মানা করো নি? আমরা জানি ওর কাছে ফায়ার এট্রিবিউট আছে কিন্তু নিজের উপরে এতো চাপ দেওয়াটা তো ঠিক হবে না।(স্নেরা)
-->>আসুক মিশন থেকে আজকে, তারপর নাহয় সামনাসামনি কথা বইলো তোমরা। আপাতোতো চলো, তোমরা সবাই ক্লান্ত। মেয়েরা আমার সাথে আসো, আর ছেলেরা চেইনকে ফলো করো এখান থেকে।(লুবা)
সবাই জানতো এলেক্স অনেক আজব একটা ছেলে ছিলো। যেহেতু তাদের মাঝে একমাত্র কমনার সেই ছিলো, তাই সে যে তার লিমিটকে দেখার চেষ্টা করবে এটা তারা জানতো। কিন্তু এভাবে যে সেটা হবে এটা আশা করে নি। তারপরও তার সাথে দেখা হলে সব কিছু জানতে পারবে বলে তারা আপাতোতো এই বিষয়ে ভাবলো না।
"তুমি শক্তিশালী হচ্ছো, আমাকেও শক্তিশালী হতে হবে। নাহলে এক সময়ে আমার স্বপ্ন পূর্ণ হবে না।" (এলিন ভাবছে)
* * * * *
(ব্লু কিংডমের এক ড্যানজনের মধ্যে)
প্রথম ফ্লোর নিরাপদ জায়গা হলেও এর মাঝে অনেক মনস্টার আছে। কিন্তু তারা সব গুলোই বিভিন্ন রকমের ড্যানজনের মধ্যে। প্রতিটা কিংডমের মধ্যে হাজারো হাজারো ড্যানজন রয়েছে। যার মধ্যে একটার মধ্যে এলেক্স প্রবেশ করেছে। সবচেয়ে লো র্যাংকের ড্যানজন হওয়ার কারনে এলেক্সের কোনো আগ্রহই ছিলো না এটা ক্লিয়ার করার জন্য। কিন্তু তার র্যাংক অনুযায়ী এটাই সবচেয়ে কষ্টকর মিশন ছিলো। তাই এলেক্সকে যেভাবেই হোক শেষ করতে হবে এটাকে। আর এলেক্স সেভাবেই শেষ করে যাচ্ছে। সে তার সামনে স্ক্রিনের সিস্টেমের মেসেজ দেখতে লাগলো,
××× একাডেমি মিশন ×××
নেইমঃ ক্লিয়ার মাংকি ড্যানজন
ডিফিকাল্টিঃ F
অবজেক্টিভঃ বসের মাথা সংগ্রহ।
রিওয়ার্ডঃ ১০০ গোল্ড কয়েন।
বিশেষ নোটঃ এটা একটা গ্রুপ মিশন। তাই টিম বানিয়ে ক্লিয়ার করার অনুরোধ রইলো। নাহলে ড্যানজনে কিছু হলো একাডেমি তার জন্য দায়ী থাকবে না।
এলেক্স হাঁটতে লাগলো আর তার মিশনের দিকে তাকিয়ে রইলো। একাডেমি থেকে যে মিশন সে গ্রহন করেছে সেটা তার সিস্টেমের মধ্যেও দেখাতে শুরু করেছে যেটা তার জন্য ভালো। যেহেতু সে একাডেমির কিছু স্টুডেন্টদের মধ্যে একজন যারা একাধিক মিশন একসাথে গ্রহন করতে পারে। আর মিশন গুলো সহজে মনে রাখার জন্য এটা ভালো একটা ব্যবস্থা এলেক্সের জন্য। এলেক্স তার চারপাশে তাকালো। সমস্ত মাংকি মনস্টার গুলোর লাশ পরে আছে ফ্লোরের মধ্যে। যেগুলো তার জেনারেল এবং ইগ্রিত মিলে হত্যা করেছে।
>>মাই কিং, এখন শুধু বস মনস্টারই রয়েছে।<<(ইগ্রিত)
এলেক্সের সামনে ইগ্রিত এসে এক পায়ের হাটুতে ভর করে বসলো এবং কথাটা বলতে লাগলো। এলেক্সের কাছে মাস্টার শব্দটা শুনতে বিরক্ত লাগে। তাই ইগ্রিত তাকে কিং বলে ডাকছে, যেটাও তার কাছে বিরক্ত লাগে কিন্তু মাস্টারের কিছুটা হলেও ভালো শোনায়।
-->>অনেক ভিতরে চলে এসেছি আমি। ঠিক আছে ইগ্রিত আমি ড্যানজনের বাইরে বের হচ্ছি। আর বাইরে বের হওয়ার পূর্বেই আমি ড্যানজনটা ক্লিয়ার দেখতে চাই।(এলেক্স)
>>এজ ইউ কমান্ড, মাই কিং।<<(ইগ্রিত)
ইগ্রিত তার মুখ দিয়ে একটা শীষ দিলো যেটার ফলে ড্যানজনের প্রথম দিক থেকে তার ঘোড়া দৌড়ে চলে আসলো। ইগ্রিত সেটা উপরে লাফ দিয়ে উঠে বসলো এবং সোজা বস রুমের দিকে রওনা দিলো। আর এই সময়ে এলেক্স জেনারেলের পিঠের উপরে বসলো। জেনারেলকে সে আদেশ করলো,
-->>জেনারেল তোমার পুরো স্পিডে ড্যানজনের বাইরে নিয়ে যাও আমাকে।(এলেক্স)
এলেক্সের আদেশ পাওয়ার সাথে সাথে জেনারেল তার পুরো স্পিডে এলেক্সকে নিয়ে ড্যানজনের বাইরে চলে যেতে লাগলো। এলেক্স বস রুমের সামনেই চলে এসেছিলো তাই ইগ্রিতের এখানে বেশী সময় লাগার কথা ছিলো না। তারপরও এলেক্স দেখতে চাই কতটা তারাতাড়ি সে বসটাকে হত্যা করতে পারে। এলেক্স প্রায় ড্যানজনের গেইটের সামনে চলে আসবে তখনি তার সামনে সিস্টেম থেকে মেসেজ আসলো।
-""কনগ্রাচুলেশন মাস্টার। আপনি মাংকি ড্যানজন ক্লিয়ার করেছেন। আপনার রিওয়ার্ড আপনি একাডেমি থেকে পেয়ে যাবেন।""-
-->>যা ভেবেছিলাম তার থেকে তারাতাড়ি হয়েছে।(এলেক্স)
এলেক্স জেনারেলকে দাঁড়াতে বললো। পিছন থেকে ইগ্রিত তার ঘোড়ার উপরে বসে বস মনস্টারের মাথা হাতে করে নিয়ে আসলো। দূর থেকে এলেক্স ভাবছিলো ইগ্রিতের হাতে ইগ্রিতের নিজের মাথায় ছিলো, যেহেতু সে একটা দুলাহান তাই সেটা তার অভ্যাস ছিলো। কিন্তু পরে খেয়াল করলো সেটা বসের মাথা ছিলো। যেহেতু এই মিশনটা শেষ করার প্রমান দেখানো হবে তাই মিশনেই বলা ছিলো বসের মাথা সংগ্রহ করতে। আর পূর্বে এলেক্স সংগ্রহ করেছে বলে ইগ্রিত সেটা বুঝতে পেরেই নিয়ে এসেছে।
-->>গুড জব ইগ্রিত।(এলেক্স)
এলেক্স মাথাটা তার ইনভেন্টরির মধ্যে দিলো এবং তার দুটো আনডেডকে আনসামন করে ড্যানজনের বাইরে প্রবেশ করতে লাগলো। যেহেতু সে তার আনডেড গুলোকে বাইরের কাউকে দেখতে চাই না, তাই সে এটাকে গোপন রাখারই চেষ্টা করছে
-->>তাহলে এটা দিয়ে ৭০ টা মিশন গেলো। এই গুলোতে আমার হচ্ছে না। একাডেমির নিয়ম গুলো আসলেই আমার বিরক্ত লাগছে এখন। দ্বিতীয় ফ্লোরে যেতে কেনো যে আমাকে E র্যাংকে উঠতে হবে? কিন্তু কিছু করার নেই এখানে আমার। আমাকে আমার লেভেল বৃদ্ধি করতে হলে এটা করতেই হবে।(এলেক্স)
এলেক্স ড্যানজন থেকে বের হয়ে গেলো। একাডেমির দিকে সে যাচ্ছে না। যদিও তার সেদিকে যাওয়ার কথা ছিলো, কারন একাডেমি থেকে নেওয়া মিশন গুলো শেষ করেছে। কিন্তু এলেক্স যে শুধু একাডেমির মিশন থেকে বিরক্ত হচ্ছে। তাইতো সে আরো কিছু মিশন শেষ করার উদ্দেশ্যে রওনা দিলো।
-->>সময় হয়েছে আমার সিক্রেট ব্যবহার করার।(এলেক্স)
এলেক্সের কাছে একটা স্কিল ছিলো যেটা সম্পর্কে সে নিজেই জানতো না। কিন্তু হঠাৎ টাওয়ারে প্রবেশ করার পর সে এটাকে দেখতে পেরেছে। স্কিলটা একটা স্বপ্নের মধ্যে এসেছে তার কাছে। যেখানে সে একজন অচেনা ব্যক্তির সাথে মার্জ হয়েছে। সেই ব্যক্তিটা কে ছিলো সেটা সম্পর্কে এলেক্সের কোনো ধারনায় নেই। চেহারা কিংবা পরিচয় কোনো টায় সে জানে না। শুধু স্বপ্নটা দেখার পর থেকে একটা স্কিল এলেক্স ব্যবহার করতে পারে। যেটা তার স্কিল লিস্টের মধ্যে এড হয়েছে।
"চেঞ্জ ক্যারেক্টার"
এলেক্স তার স্কিল ব্যবহার করলো। যার ফলে তার চেহারা পাল্টে গেলো। সে আর এগারো বছরের ছোট ছেলে রইলো না। তাকে একজন আঠারো থেকে বাইশ বছরের ছেলে মনে হচ্ছিলো, যার উচ্চতা ৬ ফুট ছিলো। চেহারাটা এতোটা হ্যান্ডসাম যে, যেকেউ তার দিকে তাকালে একটা টান অনুভব করবে। মাথার চুল গুলো বড় হওয়ার কারনে পিছন থেকে অনেকে তাকে মেয়ে মনে করতে পারে এজন্য সে চুলগুলোকে মাথার উপরে বেধে নিলো। স্কিলটা অনেক মারাত্মক হলেও এই চুলের কারনে তার ভালো লাগে না এটাকে। যদিও কাটতে চেয়েছিলো কিন্তু তাতে কোনো লাভ হয়নি। কাটার এক মিনিটেই সেগুলো তাদের মতো আবার বড় হয়ে গিয়েছিলো।
-->>তাহলে যাওয়া যাক হান্টার অরগানাইজেশানে। যেখান থেকে আশা করা যাচ্ছে আমি ভালো একটা মিশন সিলেক্ট করতে পারবো।(এলেক্স)
* * *
To Be Continued
* * *
কেমন হলো জানাবেন।