[প্রথমেই বলি গল্পটা পুরো কাল্পনিক, কেউ বাস্তব কিংবা ধর্মের সাথে তুলনা করবেন না]
#Demon_King#
পর্ব:৭৪
লেখকঃহৃদয় বাপ্পী
.
.
.
একাডেমিতে প্রতিদিন সকালে দুটো ক্লাস হয়ে থাকে। একটা নিজ এনার্জি সম্পর্কিত অন্যটা প্রাকটিক্যাল। এনার্জি সম্পর্কিত ক্লাসের মধ্যে আবার ভাগ রয়েছে। যেহেতু এট্রিবিউটের সংখ্যা অনেক গুলো তাই আবার এট্রিবিউটকে ভাগ করে নিয়ে ক্লাস তৈরী করা হয়েছে। মাইরা এবং বাকিরা কালকে চেইন এবং লুবার থেকে সব শুনে নিয়েছে যার কারনে তাদের নিজ নিজ ক্লাসে যেতে কোনো সমস্যা হচ্ছে না। একাডেমি অনেক বড় একটা জায়গা। যার মধ্যে ভিন্ন ভিন্ন এট্রিবিউটের ভিন্ন ক্লাস রয়েছে। আবার যারা প্রাণ এনার্জি ব্যবহারকারী তাদেরও ভিন্ন ক্লাস রয়েছে। একজন প্রান ইউজার শুধু যে হিলার হতে পারবে এমন নয়, সে চাইলে অ্যালকেমিস্ট, হিলার, পয়জন মাস্টার ইত্যাদি যেকোনোটায় হওয়ার সুযোগ রাখে। তাই একাডেমির মধ্যে তাদেরও ভিন্ন ভিন্ন ক্লাস রয়েছে। একাডেমি কাউকে জোর করে না, তবে সবাইকে প্রতিদিন একটা হলেও ক্লাসে উপস্থিত থাকতে হবে। এটা একাডেমির সবথেকে শক্তিশালী নিয়মের মধ্যে একটা। যদি একটা ছেলে বা মেয়ে অকারনে একদিন ক্লাসে না আসে আর সেটার সঠিক কারন না দেখাতে পারে তাহলে সে একাডেমি থেকে বহিস্কার হবে। তাইতো সবাই প্রতিদিন একটা ক্লাসে উপস্থিত থাকার চেষ্টা করে। এবং ক্লাসটা শেষ হলেই নিজেদের কাজে বা মিশনে চলে যায়।
মাইরা এবং বাকিরা তাদের নিজ নিজ পছন্দ অনুযায়ী ক্লাসের মধ্যে চলে গিয়েছে। যেহেতু এট্রিবিউট এবং এনার্জি অনুযায়ী ক্লাস হয় এখানে তাই সবাইকে তাদের নিজ নিজ এনার্জি এবং এট্রিবিউটের ক্লাসেই যেতে হবে। এখন কারো কাছে দুটো এট্রিবিউট থাকলে সে চাইলে দুটোর যে কোনো একটার মধ্যে প্রবেশ করতে পারবে, কিন্তু ঔ দুটো ব্যতীত সে অন্য কোথাও প্রবেশ করতে পারবে না। তাই আপাতোতো সময়ের জন্য সবাই তাদের নিজ এট্রিবিউটের ক্লাসের মধ্যে প্রবেশ করলো। যার মধ্যে প্রবেশ করার পর কেউই তেমন খুশি হতে পারলো না। প্রতিটা ক্লাস অনেক বড় যার মধ্যে প্রায় একাডেমির সমস্ত ছেলে মেয়েরাই বসে থাকতে পারবে। ক্লাসের আকার অনেকটা সাধারণ, তবে ভিতরে স্পেস ম্যাজিক ব্যবহার করা হয়েছে বলেই ভিতর থেকে রুমকে অনেক বড় মনে হয়। প্রতিটা ক্লাসের মধ্যে সব রকমের র্যাংকের স্টুডেন্ট থাকার কারনে অনেকটা কম্পিটেশন দেখা যায়।
মাইরা চলে গেলো তার ফায়ার মানা ক্লাসে, এলিন চলে গেলো আইস মানা ক্লাসে, ডুফেস ও জেয়াব চলে গেলো তাদের অউরা ক্লাসে, এবা ও জেবা চলে গেলো প্লান্ট মানা ক্লাসে, সর্বশেষ স্নেরা এবং এনরি চলে গিয়েছে তাদের হিলার ক্লাসের মধ্যে। প্রথম দিনের ক্লাস সবার জন্য তেমন ভালো কাটলো না। সবারই কোনো না কোনো কারনে বিরক্ত লেগেছে বা রাগ তৈরী হয়েছে। যদিও এই ব্যাপারটা লুবা এবং চেইন স্পেশাল ভাবে তাদের বুঝিয়ে দিয়েছিলো তারপরও সামনা সামনি দেখতে পেয়ে তারা বুঝতে পারলো এতো দিন তারা কমনারদের সাথে যেমনটা ব্যবহার করেছ তাদের সাথেও আজ সেরকম ব্যবহারই হয়েছে।
টাওয়ারের মধ্যে দুই ধরনের মানুষ থাকে। প্রথমত ইনসাইডার যারা টাওয়ারের ভিতরের নাগরিক এবং দ্বিতীয়ত আউটসাইডার যারা টাওয়ারের বাইরের পাঁচ এম্পায়ার থেকে এসেছে। ইনসাইডার গুলো টাওয়ারের ভিতরে থাকার কারনে আউটসাইডারদের থেকে অনেক বেশী সুযোগ সুবিধা পেয়ে থাকে, এজন্য তার সকল আউটসাইডারদের ছোট করে দেখে। ঠিক যেভাবে নোবেলরা কমনারদের ছোট করে দেখে তেমনি একজন ইনসাইডারও আউটসাইডারদের ছোট করে দেখে।
-->>চেইন যখন আমাকে বলেছিলো যে এখানে আমরা কমনার ছাড়া কিছুই না, তখন আমি ভেবেছিলাম সে মজা করেছে।(জেয়াব)
-->>ছেলেদের ব্যবহার তো অনেক খারাপই, সেই সাথে মেয়েগুলোর ব্যবহারও খারাপ। আমি তো ভেবেছিলাম এখানে আমার চার পাঁচটা গার্লফ্রেন্ড একসাথে হবে।(ডুফেস)
ডুফেসের ফানি জোক্সে কেউ হাসলো না। বরং সবাই অনেকটা সিরিয়াস মুডে ছিলো। বিশেষ করা মেয়েরা। তাদের টিমের সব মেয়েরাই সুন্দর শুধু এনরি বাদে। এনরি একটা স্পেশাল মেক আপ ব্যবহার করে তার সৌন্দর্যকে গোপন করে রাখার চেষ্টা করছে যাতে করে কেউই তার প্রিন্সেস পরিচয় জানতে না পারে। তাই একমাত্র সে বাদে অন্যান্য মেয়েদের চেহারায় রাগের ছাপ স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে।
-->>আমাদের শিক্ষকদের কাছে বলে দেওয়া উচিত।(স্নেরা)
-->>না লুবার কথা অনুযায়ী শিক্ষকদের বলে আমাদের কোনো লাভ হবে না। সেটা করলে এসব ছেলেরা আরো খারাপ ভাষা এবং খারাপ ব্যবহার করবে আমাদের সাথে।(এবা)
-->>এবা ঠিকই বলেছে। আমাদের এখন এসবে নজর দেওয়ার সময় নেই। এরা সবাই আমাদের নিয়ে অনেক কিছুই বলবে, কিন্তু কিছু করার সুযোগ পাবে না একাডেমির ভিতরে, তাই আপাতোতো সব রকমের ঝগড়া থেকে আমাদের দূরে থাকতে হবে।(মাইরা)
-->>আমাদের মিশনে ফোকাস দেওয়া উচিত।(এলিন)
-->>হ্যা আমিও সহমত।(এনরি)
সবাই মিশনে যাওয়ার কথা চিন্তা করলো। তবে তার পূর্বে তাদেরকে স্টোরেজ হলের দিকে যেতে হবে। স্টোরেজ হল একাডেমির অনেক বড় একটা কেন্দ্র যার মধ্যে সবচেয়ে বেশী সিকিউরিটি রয়েছে। এই হলের মধ্যে অনেক অনেক রকমের ম্যাজিকাল আইটেম রয়েছে। যা একাডেমির স্টুডেন্টরা তাদের শেষ করা মিশন পয়েন্ট দ্বারা ক্রয় করতে পারে। তাছাড়া একাডেমিতে প্রবেশ করার সময় প্রতিটা আউটসাইডারদের একটা টেস্টের মাধ্যমে এখানে প্রবেশ করতে হয় ঠিক তেমনি আলাদা ভাবে ইনসাইডারদেরও একটা পরীক্ষা নেওয়া হয়। যার পাশ করার পরে তাদেরকে চার রঙের ভিন্ন ভিন্ন কার্ডের একটা দেওয়া হয়। কার্ড গুলো তাদের টেস্টের ফলাফলের প্রতিরূপ হিসেবে কাজ করে। প্রতিটা স্টুডেন্টদের প্রথম মিশনে যেতে হলে প্রথনে তাদের পাওয়া কার্ড ব্যবহার করে স্টোরেজ হল থেকে একটা আইটেম সংগ্রহ করতে হবে এবং সেই আইটেমকে নিজের নামে রেজিস্টার করিয়ে প্রথম মিশনে যেতে হবে।
-->>তাহলে এটা স্টোরেজ হল, ওয়াও। অনেক বিশাল একটা জায়গা।(ডুফেস)
পুরো টিম একসাথে স্টোরেজ রুমের দিকে চলে গেলো। তাদের সবারই উদ্দেশ্য ছিলো একটা শক্তিশালী ম্যাজিকাল আইটেম সিলেক্ট করা এবং দ্রুত একটা মিশন শেষ করা আজকে।
* * * * *
(ফ্রস্ট ড্যানজন)
এলেক্স ড্যানজনের বস রুমের বাইরে দেওয়ালে পিঠ ঠেকিয়ে বসে ছিলো। অনেকটা ঘুম ঘুম আসছিলো তার। তবে নিজের বড় বড় চুল গুলো চোখের উপর দিয়ে বার বার পরছিলো বলে তার বিরক্ত লাগছিলো। ড্যানজনে সে পুরো একটা রাত পার করেছে। যা আসলেই বিশ্বাস করবে না সে। একা কেউ কোনো ড্যানজনের মধ্যে পুরো রাত থাকাটার কথা কল্পনাতেও আনবে না। বিশেষ করে বস যদি এখনো জীবিত থাকে তাহলে তার রুমের সামনে তো রাত থাকতে কেউ সাহসই করবে না।
-""কনগ্রাচুলেশন মাস্টার, সিস্টেম আপডেট সম্পূর্ণ হয়েছে। আপনি সিস্টেমের নতুন জিনিস গুলো ব্যবহার করতে পারবেন।""-
এলেক্সের চোখের সামনে থ্রিডি প্রজেকশনের আলো পরার সাথে সাথে সে লাফিয়ে উঠলো।
"ক্যারেক্টার চেঞ্জ"
এলেক্স সাথে সাথে তার ক্যারেক্টার চেঞ্জ করে নিলো। এমিয়াসের চরিত্রে তার বেশী ভালো লাগছিলো না। এমিয়াস এমনি দিক দিয়ে ভালো হলেও তার মাঝে এলেক্সের ফেয়ারলেস অনুভূতিটা নাই। তাইতো এতোক্ষন এলেক্স ভয় পাচ্ছিলো বস রুমের মধ্যে প্রবেশ করার জন্য। তবে এলেক্স তার মেইন ফর্মে চলে আসার পর সেই ভয়ের বিন্দুমাত্র চিহ্ন তার মধ্যে এখন নেই। এলেক্সের সিস্টেমের কোনো চেঞ্জ সে দেখলো না। সেগুলো না দেখেই সে বস রুমের মধ্যে প্রবেশ করলো। ড্যানজনের বস রুমের মধ্যে বিশাল একটা ফ্রস্ট মনস্টার ছিলো যা এলেক্সের জন্যই অপেক্ষা করছিলো। বাইরের ফ্রস্ট মনস্টারের থেকে বসের আকার এবং আয়তন দিটোই ভিন্ন। প্রায় নয় থেকে দশ ফুটের ফ্রস্ট মনস্টার যা এলেক্স তার ইনফো স্কিল দিয়ে দেখার চেষ্টা করলো।
"ইনফো"
এলেক্সের ইনফো স্কিল এক্টিভেট হলো এবং সে মনস্টারের নাম সহ লেভেল দেখতে পারছিলো। শুধু তাই নয়, এলেক্স আরো কিছু দেখতে পারছিলো,
××× ইনফো ×××
নেইমঃ ফ্রস্ট জায়েন্ট(বস)
লেভেলঃ ১৯০
লাইফঃ ১/১০০০০০
বিবরনঃ এরা ঠান্ডা জায়গার মনস্টার। অতিরিক্ত এট্যাক পাওয়ার, ডিফেন্স এবং লাইফ নিয়ে এদের শরীর গঠিত।
××× ×××
বস মনস্টারের অবস্থা তেমন ভালো না। এলেক্স এরকম অবস্থার কথা পূর্বে কখনো শুনে নি বা দেখি নি। এমিয়াসের চরিত্রে থাকলে হয়তো সে বুঝতেই পারতো না বসের সাথে কি হয়েছে, কিন্তু সিস্টেম আপডেট এবং এলেক্সের মেইন চরিত্রে থাকার কারনে এলেক্স সব স্পষ্ট বুঝতে পেরেছে। সিস্টেম আপডেট হওয়ার সাথে সাথে তার ইনফো স্কিলও আপডেট হয়েছে। সে বেশী লেভেলের মনস্টারের লেভেলও দেখতে পারছে। তবে অবাক করার বিষয় হলো সে এমিয়াস হয়ে পুরো রাত বস মনস্টারের রুমের বাইরে বসে ছিলো। যার ফলে তার লাক্ ইফেক্টটা বস মনস্টারের উপরেও কাজ করেছে। পুরো রাতই বস মনস্টার তার জীবনের সবচেয়ে খারাপ লাক্ এর জীবন কাটিয়েছে। ড্যানজন অনেক শক্তিশালী পাথর দিয়ে তৈরী, যা কোনো মনস্টারের দ্বারা ভাঙা অসম্ভব। একটা মানুষ দুর্বল হলেও ড্যানজনের দেওয়াল, ছাদ কিংবা ফ্লোর তার জন্য ভাঙা সম্ভব। কিন্তু একটা মনস্টারের জন্য ড্যানজনের ফ্লোর বাদে অন্য কিছু ভাঙা সম্ভব নয়। তবে এখানে অন্যরকম একটা সিন দেখা যাচ্ছে।
-->>আমার একরাত অপেক্ষা করার দরকার ছিলো ড্যানজনে প্রবেশ করার পূর্বেই।(এলেক্স)
এলেক্স চাচ্ছিলো ভালো একটা ফাইট করার জন্য। নিজের লিমিটকে একদম শেষ পর্যায়ে পরীক্ষা করার জন্য, কিন্তু সেটা সম্ভব হলো না। তারপরও এলেক্স হতাশ না হয়ে নিজের নেকরো ব্লেডকে বের করে নিলো। এবং তার মধ্যে এনার্জি প্রবেশ করালো। ফ্রস্ট জায়েন্ট কোনো নারাচারা করছিলো না। সে প্রায় অর্ধমৃত অবস্থায় ছিলো। এক লক্ষ লাইফ দেখাচ্ছিলো মনস্টারের। কিন্তু সেই লাইফের মাত্র এক বাকি ছিলো। মানে সামান্য একটা পিঁপড়ার কামড়েও তার মৃত্যু হতে পারে এখন। সাধারনত সব মনস্টার একটা ড্যানজনের মধ্যে স্ট্যাচুর মতো থাকে। যদিও তারা জীবিত থাকে তারপরও কেউ সেই ড্যানজনে প্রবেশ করার আগ পর্যন্ত তারা নারাচারা করতে পারে না। অনেক গভীর ঘুমের মধ্যে বন্ধী থাকে তারা। যখন কেউ ড্যানজনের মধ্যে প্রবেশ করে তখন সব মনস্টারের ঘুম ভেঙে যায় এবং তারা তাদের বাসায় প্রবেশকৃত ব্যক্তিদের হত্যা করার জন্য প্রস্তুত হয়ে যায়। ঠিক তেমনি একটা বস মনস্টারের রুমে প্রবেশ করার পূর্বে সেই বস মনস্টারও ঘুমের মধ্যে থাকে। বস রুমের দরজা খোলার সাথে সাথেই বসের ঘুম ভেঙে যায় এবং সে প্রবেশকৃত ব্যক্তিদের উপরে আক্রমন করে। তবে এখানে তেমন কিছু হচ্ছে না। এলেক্স মনস্টারের অনেকটা কাছে চলে এসেছে, তবে এখনো মনস্টার কোনো নারাচারা করছে না। করবেই বা কিভাবে। সে যে জায়গায় দাড়িয়ে ছিলো সেখানেই উপর থেকে সূঁচালো পাথর পরেছে উপর থেকে। মনস্টারটা চিৎ হয়ে পরে ছিলো, যার ফলে তার পিঠে থাকা সজারুর মতো কাটা গুলো ফ্লোরের মধ্যে গেঁথে রয়েছে। ড্যানজনের ছাদ থেকে বেশ কয়েকটা সূঁচালো পাথর পরেছে যা জায়েন্ট ফ্রস্টের পেট দিয়ে ঢুকে পিঠের অংশ দিয়ে বেরিয়ে গিয়েছে। এলেক্সের এখানে কিছু করার নেই বলে সে বসের কাছে চলে এসেছে তাকে শেষ করার জন্য। যদিও সে একটু হতাশ হয়েছে তারপরও এটাকে হত্যার পরে তার লেভেল অনেকটা বৃদ্ধি পাবে। এই আশায় এলেক্স নেকরো ব্লেড দিয়ে মনস্টারকে আক্রমন করবে তার এনার্জির মাধ্যমে, তখনি মনস্টারটা নরে উঠলো।
পেটে বিঁধে থাকা সূঁচালো পাথর সহ সে দাঁড়ালো দুই পায়ে। মৃত্যুর পথে থাকলেও তাকে দেখে মনেই হচ্ছে না যে এক লাইফ নিয়ে সে এলেক্সের সামনে দাঁড়িয়ে ছিলো। এলেক্স মনস্টারকে উঠতে দেখে কিছুটা খুশি হলো। কারন এতে একটু হলেও সে তার সাথে ফাইট করতে পারবে। মনস্টারটা একটা জোরালো চিৎকার দিলো, যেটার ফলে পুরো বস রুম সহ কেঁপে উঠলো। রুমটা ড্যানজনের ভিতরের পরিবেশ থেকে সম্পূর্ণ আলাদা। বাইরের তাপমাত্রা স্বাভাবিক থাকলেও বস রুমের ফ্লোরের যেখানে সেখানে কয়েকটা উজ্জ্বল ক্রিসটাল দেখা যাচ্ছিলো। যা রুমের তাপমাত্রাকে সাথে সাথে কমিয়ে দিলো অনেকটা। এলেক্স হঠাৎ ঠান্ডা অনুভব করতে লাগলো। এটা শুধু ঠান্ডা ছিলো না, ঠান্ডাটা এতো ছিলো যার ফলে সে হাল্কা ভাবে কাঁপতেও শুরু করলো।
××× ইনফো ×××
নেইমঃ ফ্রস্ট জায়েন্ট(বস)
লেভেলঃ ১৯০
লাইফঃ ১০০০/১০০০০০
বিবরনঃ এরা ঠান্ডা জায়গার মনস্টার। অতিরিক্ত এট্যাক পাওয়ার, ডিফেন্স এবং লাইফ নিয়ে এদের শরীর গঠিত।
××× ×××
××× ইনফো ×××
নেইমঃ ফ্রস্ট জায়েন্ট(বস)
লেভেলঃ ১৯০
লাইফঃ ২০০০/১০০০০০
বিবরনঃ এরা ঠান্ডা জায়গার মনস্টার। অতিরিক্ত এট্যাক পাওয়ার, ডিফেন্স এবং লাইফ নিয়ে এদের শরীর গঠিত।
××× ×××
××× ইনফো ×××
নেইমঃ ফ্রস্ট জায়েন্ট(বস)
লেভেলঃ ১৯০
লাইফঃ ৩০০০/১০০০০০
বিবরনঃ এরা ঠান্ডা জায়গার মনস্টার। অতিরিক্ত এট্যাক পাওয়ার, ডিফেন্স এবং লাইফ নিয়ে এদের শরীর গঠিত।
××× ×××
এলেক্স অবাক হয়ে গেলো। কারন প্রতি সেকেন্ডেই বসের লাইফ এক হাজার করে বৃদ্ধি পাচ্ছিলো। যা কিছু সময়ের মধ্যেই পূর্ণ হয়ে যাবে।
-->>তাহলে আমি বুঝতে পেরেছি কেনো এটা A+ ড্যানজন।(এলেক্স)
এলেক্সের মুখে একটা হাসি ফুটে উঠলো। সে চাচ্ছিলো একটা ফাইট করতে, জীবন মৃত্যুর একটা ফাইট যেখানে সে হারাবে অনেক কষ্ট করে একজনকে। সুযোগটা সে পেয়েই গিয়েছে।
-->>তাহলে আমাকে প্রথম থেকে অল আউটে যেতে হবে।(এলেক্স)
এলেক্স পূর্বের ফ্রস্টদের সাথে ফাইট করেছে তাই সে জানে তাদের উপরে শারিরীক এট্যাক কাজ করে না। কিন্তু সেটা যদি ম্যাজিক এট্যাক হয় তাহলে আরেক কথা। এলেক্স তার প্লানকে এক্সিকিউট করার কথা চিন্তা করছিলো তখনি ফ্রস্ট জায়েন্ট তার পেটে বিধে থাকা বিশাল পাথরের টুকরো বের করে এলেক্সের দিকে ছুড়ে মারে। যা এলেক্স শেষ সময়ে লক্ষ করে মাটিয়ে শুয়ে পরে। সে মাটিতে শুইয়ে পরার কারনে এক হাত উঁচু দিয়ে সেই পাথর গিয়ে ড্যানজনের দেওয়ালের সাথে বারি খেলো।
-->>এটা অনেক ক্লোজ ছিলো।(এলেক্স)
এলেক্স তার টাইটেল ব্যবহার করার চিন্তা করলো এখানে। যেহেতু তার স্পেল এখনো সেই লেভেলে পৌছায় নি, তাই তাকে তার টাইটেলের ব্যবহার করতে হচ্ছে। টাওয়ারে প্রবেশের পরে এলেক্স তার টাইটেল ব্যবহারের ট্রিক্স জেনেছে। যা তার কাছে সবচেয়ে সহজ মনে হয়। এলেক্স কিছু সেকেন্ডের জন্য তার মাইন্ডের মধ্যে চলে গেলো। যে জায়গাটা ছিলো পুরো অন্ধকার। জায়গাটার মধ্যে কিছুই ছিলো না শুধু এলেক্স নিজে দাঁড়িয়ে ছিলো হাতে একটা কলম নিয়ে। সে দ্রুত লেখতে শুরু করলো। প্রোগ্রাম কোড লেখতে লাগলো। হাজারো কোড কিছু সময়ের মধ্যে এলেক্স লেখে ফেললো যা প্রায় অবিশ্বাস্য একটা বিষয়। তবে এটায় তার টাইটেলের স্পেশাল এবং হিডেন ইফেক্ট। এলেক্স তার মাইন্ড থেকে বের হলো, যার পরে তার ডান হাতে বেশ কিছু লেখা দেখা যাচ্ছিলো, যার অর্থ এলেক্স বাদে কেউই বুঝতে পারবে না হয়তো।
"ফায়ার মেশিনগান"
এলেক্স তার স্পেলকে মডিফাই করেছে। ফায়ার বুলেট নামক একটা স্পেল সে ব্যবহার করেছিলো যার কোডিং সে চেঞ্জ করেছে। সিঙ্গেল ফায়ারের জায়গায় এলেক্স মাল্টিপল ফায়ার এবং ফায়ার বুলেটের আকারও এলেক্স চেঞ্জ করেছে যার ফলে ড্যামেজও বেশী হয়। পুরো বিষয়টা এলেক্স খুব দ্রুত করতে পেরেছে কারন পূর্বে সে একজন প্রোগ্রামার ছিলো। একটা স্পেল মডিফাই করাটা একদম সহজ কোনো ব্যাপার না। আর এটা অসংখ্যবারও ব্যবহার করা যায় না। মডিফাই এর জন্য প্রচুর পরিমাণের এনার্জির প্রয়োজন হয়, যা এলেক্স এখন দুইবার কোনো স্পেল মডিফাই করলেই আর ফাইট করতে পারবে না। তাই তো সে দেখতে চাচ্ছিলো তার স্পেলটা এখন কিরকম ড্যামেজ দিতে পারে।
এলেক্সের ডান হাতে কিছু লেখা ছিলো। যা থেকে তার হাতে লাল আগুনের একটা মেশিনগান চলে আসলো। যেটা এলেক্স ধরলো শক্ত করে এবং তার স্পেল একটিভ হওয়ার সাথে সাথে প্রায় একশত গুলি সেটা থেকে বের হলো। হয়তো এটায় যথেষ্ট ছিলো বসটাকে হত্যা করার জন্য কিন্তু এলেক্সের পূর্বে কোনো মেশিনগান চালানোর অভিজ্ঞতা না থাকার কারনে দু একটা ছাড়া একটাও বসের শরীরে লাগলো না। এলেক্সের মেশিন গানের পুরোটা গুলিই রিকোয়েল হয়েছে। স্পেলের ইফেক্ট শেষ হওয়ার সাথে সাথে আগুনের তৈরী মেশিনগানও উধাও হয়ে গেলো সেই সাথে এলেক্সের হাতের লেখা গুলোও। এলেক্স চাইলে আরেকবার মডিফাই করতে পারতো তার স্কিল, তবে সেটায় সময় এবং এনার্জি নষ্ট হবে বলে সে এটাকে আপাতোতো সাইডে রাখলো। তাছাড়াও শেষ সময়ের জন্য তাকে গ্লাটোনিও রেখে দিতে হবে।
-->>আমাকে প্রথমে ওর লাইফ সাপ্লাই কেটে দিতে হবে।(এলেক্স)
এলেক্সের যেই ভাবা সেই কাজ। মেশিনগানের গুলিতে প্রায় এক হাজারের মতো লাইফ চলে গিয়েছে যা মারাত্মক ছিলো। তবে সেটা ব্যর্থ হওয়াতে এলেক্সকে দ্রুত কাজটা শেষ করতে হবে। সে ইনভেন্টরি থেকে দ্রুত তার মুন ড্যাগার বের করে নিলো এবং নিজের দ্রুত মুভমেন্টের মাধ্যমে রুমের মধ্যে থাকা প্রতিটা উজ্জ্বল ক্রিসটাল গুলোকে ভাঙতে শুরু করলো।
-->>আমি ঠিকই ভেবেছিলাম। এগুলোই বসের লাইফ বৃদ্ধি করছে।(এলেক্স)
প্রায় অর্ধেক ক্রিসটাল এলেক্স ভেঙে ফেলেছে যার ফলে এখন বসের লাইফও পূর্বের থেকে অর্ধেক হয়ে বৃদ্ধি পাচ্ছে। তবে এতোক্ষনে বসের অর্ধেকের মতো লাইফ বৃদ্ধি পেয়েছে তাই তার হয়তো আর প্রয়োজনই হবে না ক্রিসটালে। এলেক্স শুধু দৌড়িয়ে যাচ্ছিলো এবং ক্রিসটাল ভাঙছিলো, যা করতে করতে সে একটা বিষয় খেয়ালই করে নি। ফ্রস্ট জায়েন্ট তার পেটে থাকা আরেকটা পাথরের টুকরো নিক্ষেপ করলো এলেক্সের দিকে। যা এলেক্স খেয়াল করে নি। পাথরের টুকরোটা ঠিক এলেক্সের ডান হাত বরাবর লাগলো। ন্যাকরো ব্লেডটা ছিটকে পরে গেলো। ডান হাত যদিও ছিঁড়ে যায় নি তারপরও পুরো বাঁকা হয়ে গেলো। এলেক্স পাথরের ফোর্সের কারণে দেওয়ালে গিয়ে বারি খেলো এবং নিজের শরীরের বেশ কয়েকটা হাড় ভেঙে ফেললো। এলেক্স জোরে করে একটা কাসি দিলো যা থেকে তার মুখ থেকে অনেকটা ব্লাড পরে গেলো। অন্য কেউ হলে সেখানেই মারা যেতো সে, কিন্তু এলেক্স হাত এবং শরীরের অনেক গুলো হাড় নিয়েও কোনো রকমের দাঁড়িয়ে রইলো।
-->>আমার মনে হচ্ছে, আমার এখনো অনেক দূর যেতে হবে।(এলেক্স)
এলেক্স তার ব্লাড লাস্ট ফর্মে চলে গেলো। যে ফর্মে যাওয়ার পর তার ভাঙা হাতকে সে টান দিয়ে সোজা করে ফেললো যা সে কোনো ব্যথা ছাড়ায় নারাতে পারছিলো এখন। শরীরের অন্যান্য ইনজুরি গুলোও তার দূর হতে লাগলো।
-->>যেহেতু এটাও আপাতোতো একদিনে একবারই ব্যবহার করতে পারি আমি, তাই এখনি আমাকে শেষ করতে হবে ফাইটটা।(এলেক্স)
এলেক্স তার ব্লাডলাস্ট ফর্মে পুরো একটা বিস্ট হয়ে যায়। তার চুল এবং চোখ দুটোই লাল হয়ে যায়। শরীরের মাংস পেশী গুলোও বৃদ্ধি পায় অনেক। পুরো দানবের মতো স্ট্রেন্থ চলে আসে তার কাছে। এলেক্সের এজিলিটি প্রায় দ্বিগুন বৃদ্ধি পেয়েছে তাই তো মুহুর্তের মধ্যেই সে চলে গেলো জায়েন্ট ফ্রস্টের কাছে। বসটা এলেক্সকে দেখেই তার দিকে একটা ঘুষি মারতে যাবে তখনি সেটা এলেক্স তার বাম হাত দিয়ে ধরে ফেললো।
-->>হয়তো ভাবছো আমি হঠাৎ এতো শক্তিশালী হলাম কিভাবে? ওয়েল আমি আমার একশত স্ট্যাট পয়েন্ট মাত্র আমার স্ট্রেন্থের মধ্যে প্রয়োগ করেছি। এবং এই লাল ফর্মটা আমার স্ট্রেন্থকে দ্বিগুন করে দিচ্ছে, তাই বলতে পারো তোমার স্ট্রেন্থের থেকেও আমারটা এখন বেশী।(এলেক্স)
এলেক্স আঘাত খাওয়ার পর দ্রুত তার স্ট্যাট পয়েন্ট তার স্ট্রেন্থের মধ্যে প্রয়োগ করে যার ফলে সে এখন ব্লাডলাস্ট ফর্মে বসের বিপক্ষে নিজের স্ট্রেন্থ দিয়ে দাঁড়াতে পারছে।
-->>একটা আনডেড এর দুর্বলতা তাদের মাথা থাকে, যা ভেঙে দিলেই তারা মারা যায়। কিন্তু তোমাদের মতো মনস্টারদের দুর্বলতা হলো তোমাদের কোর। তাই ওপারে ভালো থাকবে।(এলেক্স)
এলেক্স বাম হাত দিয়ে ফ্রস্টের ঘুষিটা আটকেছিলো, আর তখনি সে ডান হাত দিয়ে বস মনস্টারের ঠিক বুক বরাবর আঘাত করে। যে আঘাতে বসের বুক ভেদ করে চলে যায় এলেক্সের হাত। এলেক্স ভিতর থেকে মনস্টারটার কোর বের করে নিয়ে আসে এবং সেটাকে চাপ দিয়ে ভেঙে ফেলে।
-""কনগ্রাচুলেশন মাস্টার। আপনি ফ্রস্ট ড্যানজন ক্লিয়ার করেছেন। আপনার হান্টার মিশন সম্পূর্ণ হয়েছে। হান্টার হাউসে গিয়ে আপনি আপনার রিওয়ার্ড কালেক্ট করতে পারবেন।"
* * *
To Be Continued
* * *
কেমন হলো জানাবেন।