#ডিম্যান_কিং_সিরিজ#
#সুপ্রিম_বিয়িং#
পর্ব:৫৯
লেখকঃহৃদয় বাপ্পী
.
.
.
(দশম ফ্লোর)
দশম ফ্লোরে দুটো জায়গা রয়েছে। সিড়ি দিয়ে ফ্লোর প্রবেশের পরে দুই দিকে দুটো পথ গিয়েছে। একটা সোজা এবং অন্যটা ডান দিকে। তাছাড়া বাকি জায়গা গুলোতে বিশাল বিশাল পাথর দিয়ে আটকানো ছিলো। মাস্ক পার্টি দাঁড়িয়ে ছিলো দুটো রাস্তার মাঝখানে। তারা এখানে কি করবে সেটা এখনো জানে না। তাই তাদের লিডারের আদেশের অপেক্ষা করছিলো।
-->> জ্যাক, আমরা সামনে দিয়ে গেলে সোজা টাওয়ারে প্রবেশ করবো এবং ডান সাইডের রোড দিয়ে গেলে এই পুরো ড্যানজনের সবচেয়ে ভয়ানক মনস্টারের সাথে দেখা করবো। (রোজা)
-->> ভয়ানক মনস্টার? (জ্যাক)
সব অষ্টম ফ্লোর পর্যন্তই সকল তথ্য জানতে পেরেছিলো বুড়ো লোকটার কাছ থেকে। তাই দশম ফ্লোর কিংবা টাওয়ারের সম্পর্কে সে তেমন কিছুই জানে না। যেহেতু সব গুলো ফ্লোরে বস মনস্টার থাকে, তাই জ্যাক এটাও আশা করেছিলো যে দশম ফ্লোরেও মনস্টার থাকবে।
-->> আমাদের জানা মতে দশম ফ্লোরে বসকে এক ব্যক্তি ছাড়া আজ পর্যন্ত কেউই হারাতে পারে নি। (রোজা)
-->> তাহলে তো ভালোই। এমন নয় যে কেউই হারায় নি এখনো। যেহেতু একজন হারিয়েছে তাই দ্বিতীয় ব্যক্তিরা আমরা হবো। (জ্যাক)
জ্যাক চাচ্ছিলো এই শেষ বসকে হত্যা করে এই জায়গা থেকে টাওয়ারে চলে যেতে। তবে সে তার পার্টির সদস্যদের কোনো ভয়ানক অবস্থায় ফেলতে চাচ্ছে না। যেহেতু তাদের পরবর্তী সময়েও প্রয়োজন হবে জ্যাকের তাই তাদের বলতে লাগলো,
-->> তোমরা টাওয়ারে প্রবেশ করো, আমার আন্ডার গ্রাউন্ড সিটির মধ্যে কিছু কাজ রয়েছে। (জ্যাক)
টাওয়ারে প্রবেশ করার সুযোগ পেলে কেউই পিছনে তাকানোর চেষ্টা করে না। তাই পার্টির সদস্যরা অবাক হলো জ্যাকের কথায়। তবে তারা তাদের লিডারের কথা ফেলতে পারবে না। আনন্দের সাথে তারা প্রবেশ করলো টাওয়ারের মধ্যে।
-->> তাহলে দেখা যাক কি রকম মনস্টার যা মাত্র একজনই হত্যা করতে পেরেছে। (জ্যাক)
জ্যাক এবার ডান দিকে রোড বরাবর হাঁটতে শুরু করলো। প্রায় অনেকদূর হাঁটার পরে সে কারো এনার্জি ফিল করলো পিছনে তাই সে বলতে লাগলো,
-->> তুমি যাও নি এথিনা? (জ্যাক)
এথিনার এনার্জিটা অনেক চেনা জ্যাকের। এনার্জি গুলো একজন গডের কাছে ঘ্রাণ বা গন্ধের মতো মনে হয়। সেখানে এথিনার এনার্জির ঘ্রাণটা সবচেয়ে ইউনিক এবং মাতাল করে ফেলবে।
-->> আমি জানতাম তুমি এমন কিছু একটাই করবে। তাই পিছনে চলে আসলাম। (এথিনা)
-->> বাকিরা? (জ্যাক)
-->> বাকিরাও আসতে চেয়েছিলো, তবে রোজা তাদেরকে নিয়ে টাওয়ারে প্রবেশ করেছে। (এথিনা)
-->> তাহলে তো ভালোই হলো। তবে তুমি এখানে আসলে কেনো? আমার জীবন নিয়ে চিন্তা হচ্ছিলো? (জ্যাক)
-->> সেরকম কিছু নয়। আমি শুধু চেক করতে এসেছি তুমি কোনো খারাপ প্লান করছো কিনা? (এথিনা)
সাথে সাথেই জ্যাক এথিনার একদম কাছে চলে গেলো তার সুপার স্পিড এবিলিটি ব্যবহার করে। এথিনার কাছে যাওয়ার সাথে সাথে সে এথিনার কোমরে তার বাম হাত রাখলো এবং তাকে টান দিয়ে নিজের বাহুতে আনলো,
-->> আমি সিওর তুমি দেখতে এসেছো আমি অন্য কোনো মেয়ের সাথে আবার সময় কাটায় কিনা। (জ্যাক)
-->> একদমই না। (এথিনা)
এথিনা জ্যাকের কাছ থেকে সরে গেলো।
-->> আমি এখানে এসেছিলাম তোমাকে ওয়ার্নিং দিতে। (এথিনা)
-->> ওয়ার্নিং? (জ্যাক)
-->> কিং অফ ডেস্টিনি অলিম্পাসকে নিয়ে একটা প্রফেসি দেখেছে যা আপাতোতো বাবার হাতে রয়েছে। (এথিনা)
-->> তাহলে কি প্রফেসিতে আমি ছিলাম? আমি কি আবারো অলিম্পাসে যুদ্ধ ঘোষনা করেছি? (জ্যাক)
-->> এটা মজার কোনো বিষয় না। তুমি অলিম্পাসের সাথে যুদ্ধ করতে চাইলেও কখনো সেটা ধ্বংস করার চেষ্টা করবে না সেটা আমি এবং অলিম্পাসের সকলেই ভালো করে জানে। (এথিনা)
-->> তো কিছু ছিলো এই প্রফেসিতে? (জ্যাক)
এথিনা কিছুক্ষন চুপ রইলো। সে এই ঘটনা সম্পর্কে নিজেও কিছুই জানতো না। তবে আজ বেশ কিছুদিন হয়েছে তার পেঁচা ইয়োলো অলিম্পাসে গিয়েছে। আর ইয়োলো অলিম্পাস থেকেই এই গোপন খবরটা শুনে এথিনাকে দিয়েছে।
-->> অলিম্পাস ধ্বংস হয়ে যাবে। একটা ব্যক্তি পুরো অলিম্পাস সহ তাদের মধ্যে থাকা সকল গডকে হত্যা করে ফেলবে। (এথিনা)
-->>কি? একটা ব্যক্তির দ্বারা কিভাবে সম্ভব? (জ্যাক)
জ্যাক অবাক হলো। এথিনা তাকে এই কথা গুলো বলতো না যদি না সে তাকে বিশ্বাস করতো। এই কথা গুলো বলার মাধ্যমেই জ্যাক বুঝতে পারলো তার উপরে এথিনার বিশ্বাস রয়েছে। তবে,
"কিং অফ ডেস্টিনির প্রসেফিতে কোনো রকম ভুল বা চেঞ্জ হয় না। নিশ্চয় কেউ অলিম্পাসকে ধ্বংস করবে। এখন শুধু দেখার বিষয় সেটা আমি কিনা।" (জ্যাক ভাবছে)
-->> প্রফেসিতে যতদূর দেখা গিয়েছে একটা পনেরো থেকে আঠারো বছরের ছেলে, যে আজব এক ধরনের ডার্ক এনার্জি ব্যবহার করছিলো সে একাই পুরো অলিম্পাসকে ধ্বংস করে দিবে। (এথিনা)
-->> ওয়েট ওয়েট, পনেরো থেকে আঠারো বছরের ছেলে? (জ্যাক)
-->> হ্যাঁ, এটা শুনে আমারও বিশ্বাস হচ্ছিলো না। আমার মনে হয় কোনো শক্তিশালী গডের জন্ম হয়ে গিয়েছে। (এথিনা)
-->> তুমি শুধু এটুকু আমাকে বলো, সেই ছেলেটার চোখের মনি দুটো কি লালচে নীল এবং চুল গুলো হালকা হলুদ এবং সিলভারের মিশ্রন ছিলো? (জ্যাক)
[হ্যাঁ এটাই এপোলোর বিবরণের সাথে মিলে যাচ্ছে।] (ইয়োলো)
-->> তুমি কি জানো এই ব্যক্তিটা কে? আমাদের যে করেই হোক প্রফেসিটার সময় হওয়ার পূর্বেই তা শেষ করে দিতে হবে। (এথিনা)
-->> কিভাবে? জিউস এবং ক্রোনোস যেভাবে তার সিংহাসন হারাতে না চাওয়ায় তাদের সন্তানদের হত্যা করেছে সেভাবে? (জ্যাক)
-->> তাছাড়া আমাদের কোনো উপায়...... (এথিনার কথা শেষ না হতে হতেই জ্যাক আবার বলতে লাগলো)
-->> সব কিছুরই উপায় রয়েছে একটা। শুধু সেটা বের করে নিতে হয় আমাদের। যাইহোক আমি তোমাদের অলিম্পাস ছেড়ে দিয়েছি। তাই সেটাই কি হলো তার কোনো কিছুতে আমার মাথা ঘামবে না। শুধু বলবো জিউস আর ক্রোনোস এর মতো না হতে। (জ্যাক)
জ্যাক কথাটা বলেই সামনে হাঁটতে লাগলো এথিনাকে রেখে। এথিনা পিছনে দাঁড়িয়ে রইলো। সে চাচ্ছিলো এই সুযোগে পোসেইডনকে আবারো অলিম্পাসে জায়গা করে দিতে। যদি অলিম্পাসের বিপদে পোসেইডন সাহায্য করে তাহলে নিশ্চয় জিউস তাকে একটা সুযোগ দিবে, এই আশা করেই এথিনা জ্যাকের সাথে কথা বলতে এসেছিলো।
-->> তবে আমি আশা করি নি, জ্যাক ঔ ব্যক্তিকে চিনবে। তবে সেই ব্যক্তি ও নিজে কখনো হতে পারে না। অলিম্পাসকে ধ্বংস কখনোই ও করবে না ও। (এথিনা)
-->> তাহলে ভাববার বিষয় হলে কে এই ব্যক্তি? জ্যাক ঠিকই বলেছে, সে কিছু করার পূূর্বে আমরা তাকে কিছু করার অধিকার রাখি না। তবে আমার মনে হয় না বাবা বসে থাকবে চুপ করে। (এথিনা)
এথিনা জ্যাকের কথাটা ঠিক মনে করলো। একজন গডেস অফ ওয়ার হিসেবে সে শুধু তাদেরই শাস্তি দেওয়ার অধিকার রাখে যারা অলিম্পাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষনা করে বা করতে চাই।
-->> হয়তোবা প্রফেসিকে চেঞ্জ করার চেষ্টা করতে গিয়েই আমরা প্রফেসিকে তৈরী করে ফেলবো। (এথিনা)
সে কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে নিজ চিন্তার মধ্যে হারিয়ে গিয়েছিলো। তবে এবার সে জ্যাকের পিছন পিছন যেতে লাগলো। জ্যাক অনেক পূর্বেই সে জায়গা থেকে চলে গিয়েছে, তারপরও এথিনার বেশী সময় লাগবে না জ্যাককে ধরতে।
* * * * *
জ্যাক খুব দ্রুত বস মনস্টারের কাছে চলে এসেছে। সে তার নিজের চোখকে বিশ্বাস করতে পারছিলো না সে কি দেখছিলো। একটা মিনোটর তার সামনে ছিলো। যার সাইজটা মোটেও কোনো মজার বিষয় ছিলো না।
-->> এখানে একটা ষাড় দেখতে পারবো তা কখনো আশা করি নি আমি। (জ্যাক)
মিনোটর, যা দেখতে অর্ধেক মানুষ এবং অর্ধেক ষাঁড়ের মতো। এরা মানুষের মতো দুই পায়ে দাঁড়াতে, হাঁটতে ও দৌড়াতে পারে। দুই হাত দিয়ে অস্ত্র চালাতে পারে। এটাই এদের অর্ধ মানব প্রকৃতি। তাছাড়া এদের শরীরের সব অংশই একটা ষাঁড়ের। স্ট্রেন্থের দিক দিয়ে এরা এজগার্ডের ভাইকিংস দের মতোই। বীর যোদ্ধা যারা তাদের মৃত্যুকেও ভয় পাই না।
-->> এরকম একটা মনস্টার এখানে দেখতে পারবো তার আশা মোটেও ছিলো না। (জ্যাক)
মনস্টার গুলোর স্ট্রেন্থ অনেক কম ছিলো। সাধারণত এই ড্যানজন এখানে আনা হয়েছে মানুষদের শক্তিশালী করে তুলতে। তাই সেগুলোকে কখনো একটা গডের সাথে তুলনা করা যায় না। এক গড চাইলে এই পুরো ড্যানজনের মনস্টার গুলোকে তাদের এক এট্যাকেই হত্যা করে ফেলতে পারবে। আবার কেউ কেউ তো পুরো ড্যানজনই ধ্বংস করে দিতে পারবে।
-->> তবে এই মিনোটর বাকি মনস্টারদের থেকে সম্পূর্ণ ভিন্ন। (জ্যাক)
* * * * *
(টাওয়ারের কোনো এক জায়গা)
গ্রিড তার মনিটর রুমের মধ্যে ব্যস্ত ছিলো সব কিছু দেখার জন্য। যদিও সে তার নতুন হোস্ট পেয়ে গিয়েছে, তারপরও সে অপেক্ষা করে যাচ্ছে।
-->> আমার গ্রেট অস্ত্রটা তৈরী না হওয়া পর্যন্ত হয়তো আমাকে এখানেই থাকতে হবে। (গ্রিড)
গ্রিড সব কিছু মনিটর করতে ছিলো। টেস্ট ড্যানজন থেকে শুরু করে টাওয়ারের সব ফ্লোরের ভিডিও গুলো হাজারো স্ক্রিনে তার সামনে ভাসছে। তবে গ্রিডের নজর একটার দিকেই ছিলো।
-->> ইন্টারেস্টিং! তাহলে তুমি এ বার দশম ফ্লোরের বসকে হত্যা করতে চাচ্ছো, গড অফ ওয়াটার পোসেইডন। (গ্রিড)
ডিম্যান প্রিন্স অফ গ্রিড এ.কে.এ ম্যামন এই ড্যানজনের জি.এম। এক কথায় সে এটার মালিক। এখানে কোথায় কি হচ্ছে সেটা আর কেউ না জানলে গ্রিড ভালো করেই জানে। প্রথমে যদিও সে জ্যাককে রুলার অফ ডেড এর অ্যাভেটার মনে করেছিলো। তবে এরপরে যখন এথিনার সাথে সে জ্যাকে তার আসল ফর্মে দেখেছিলো তখনি গ্রিড বুঝতে পেরেছে জ্যাকের আসল পরিচয়।
-->> আমি চিন্তাও করি নি, যে ব্যক্তি ইটার্নাল কার্সে ভুগছিলো সেই ব্যক্তি কিভাবে সেটা থেকে মুক্ত হলো। (গ্রিড)
গ্রিড হাসলো কিছুটা। সে যেহেতু এই টাওয়ারকে গেমের মতো করে তৈরী করেছে, তাই যেকোনো সময়ে যেকোনো মনস্টারের লেভেল সে ঠিক করতে পারে।
-->> যদিও মিনোটরটার লেভেল মাত্র দশ, তারপরও সেটা টাওয়ারের সকল বস মনস্টারের থেকে শক্তিশালী একটা ব্যক্তি। দেখা যাক আমাদের গড অপ ওয়াটার এখন কি করে। (গ্রিড)
-->> হাহাহাহাহাহাহাহাহাহা। (গ্রিড)
গ্রিড হাসতে লাগলো, তার হাসিটা অনেক ভয়ানক ছিলো। যা শুধু সে একাই শুনতে পাচ্ছিলো।
* * * * *
(টেস্ট ড্যানজন)
জ্যাক বর্তমানে টেস্ট ড্যানজনের দশম ফ্লোরে অবস্থান করছে। যেখানে সে একা নয় বরং তার সাথে এথিনাও ছিলো। যদিও বলা যায় এথিনা তার নিজ শরীরে ছিলো না বরং অ্যাভেটারের শরীরে ছিলো, তারপরও লজিক এক জায়গায় এসে দাঁড়ায়। জ্যাক মিনোটর মনস্টারের সামনে দাঁড়িয়ে আছে, আর এথিনা অনেকটা পিছনে। সে এ পর্যন্ত ফাইটে তেমন কোনো কিছু করে নি। একজন শক্তিশালী ওয়ার গডেস হওয়ার ফলে সেটা অনেক লজ্জাজনক বিষয় যা জ্যাকের মনে হচ্ছিলো।
"আমি আমার নিজ পাওয়ারের মাত্র পাঁচ ভাগই ব্যবহার করতে পারছি। সেই সাথে গোল্ডেন ড্রাগনের মাত্র এক ভাগ। আমার মনে হয় না তারপরও আমি সহজে এই মিনোটরকে হারাতে পারবো। স্ক্যালা সাহায্য করলেও হয়তো সহজ হবে না এই ফাইটটা।" (জ্যাক ভাবছে)
মিনোটর এমন একটা মনস্টার যার শারিরীক শক্তি এবং ডিফেন্স মারাত্মক লেভেলে। যদিও জ্যাকের সামনের মনস্টারটার লেভেল মাত্র দশ ছিলো তারপরও জ্যাক এক সময়ে গড থাকার ফলে বুঝতে পারছে এটার শক্তি মারাত্মক লেভেলে। যেহেতু তার গডলি বডি আর অবশিষ্ট নেই তাই সে চাইলেই ফাইটে অংশ নিতে পারবে না। যদিও তার কাছে একটা স্কিল রয়েছে যা তাকে মৃত্যুর এক ঘন্টা পূর্বে পাঠিয়ে দিবে, তবে সেটা ব্যবহারের অনেক বড় একটা রিক্স রয়েছে। যা জ্যাক আর নিতে চাচ্ছে না।
"দেখা যাক কি হয়। নাহলে আমার পাশে তো ওয়ার গডেস আছেই" (জ্যাক ভাবছে)
মিনোটরটা বিশাল ছিলো। তার পায়ের হাটু পর্যন্ত ছিলো জ্যাকের উচ্চতা। জ্যাক উপরের দিকে তাকিয়ে আছে। মিনোটরটা দাড়িয়ে ছিলো। হাতে তার বিশাল একটা কুড়াল বা এক্স ছিলো। কুড়ালের ধারালো অংশ মাটিতে ছিলো এবং হাতলটার উপরে ভর রেখে মিনোটর ঘুমাচ্ছিলো।
-->> জ্যাক আমার মনে হয় না এটা ভালো কোনো আইডিয়া হবে। মিনোটরটা কোনো স্বাভাবিক মনস্টার নয় বরং আমাদের অলিম্পাস থেকেই তুলে আনা হয়েছে এটাকে। (এথিনা)
পিছন থেকে এথিনা কথাটা বললো। জ্যাক এথিনা দুজনের একজনও খেয়াল করলো না, তাদের কথার কারনে মিনোটরের ঘুম ভেঙে গিয়েছে। এবং সাথে সাথে তার বিশাল এক্স নিয়ে সে জ্যাকের দিকে আঘাত করতে গেলো। জ্যাকের পূর্বের সময়ের সমস্ত যুদ্ধ এবং ফাইট করার মাধ্যমে অনেকটা ফাইট সেন্স তৈরী হয়েছে। তাই সে শেষ মুহূর্তে এট্যাকটা দেখতে পারে।
"সুপার স্পিড"
-->> ওয়াও এটা তো খুব ক্লোজ একটা কল ছিলো। (জ্যাক)
জ্যাক শেষ সময়ে লাফ দিয়ে সরে গিয়েছিলো। নাহলে তো সে এখন পুরো দুই টুকরো হয়ে যেতো। মিনোটরটা তার বিশাল এক্স দিয়ে এট্যাক করেছিলো যেখানে সেখানে এক্সের ধারালো একটা সাইড পুরো মাটির মধ্যে আটকে গেছে। সেটা মাটিতে সহ দু টুকরো করে ফেলেছে।
-->> এখনো এদের ভয়ানক স্ট্রেন্থ রয়েছেই। (জ্যাক)
মিনোটর সাধারণত ভাইকিংস দের মতো যোদ্ধাদের একটা স্পিসিজ। যদিও এদের অরিজিন এক সময়ে অলিম্পাসে ছিলো, তবে জিউস কিং হওয়ার পর থেকে প্রতিটা মিনোটরদের হত্যা করেছে নাহলে তাড়িয়ে দিয়েছে। তাই প্রতিটা মিনোটরদের মনের মধ্যেই অলিম্পাস এবং তাদের গড-গডেস দের প্রতি তীব্র ঘৃণা রয়েছে। যেহেতু জ্যাকের এখন গডের শরীর নেই, তাই এদের সাথে হাড্ডাহাড্ডি ফাইট অনেক ভয়ানক একটা বিষয়।
-->> তাহলে আমাকে প্রতিটা এট্যাকই এড়াতে হবে এবং সেই সাথে একে আক্রমন করতে হবে। (জ্যাক)
-->> আমার মনে হয় না স্ক্যালার সাহায্য ছাড়া তুমি এটাকে হারাতে পারবে। আর স্ক্যালাকে দেখতে পারলে আমি নিশ্চিত, রেজ মুডে চলে যাবে এটা। (এথিনা)
পিছন থেকে এথিনা কথাটা বললো। জ্যাক কিছুটা শান্ত হলো।
"আমি শুধু শুধু উত্তেজিত হচ্ছিলাম।" (জ্যাক ভাবছে)
জ্যাক শুধু শুধু ভয় এবং উত্তেজিত হচ্ছিলো। এটা তার স্বাভাবিক চিন্তা ভাবনার মতো নয়। বরং স্কিল ব্রিং মি ব্যাক এর সাইড ইফেক্ট। স্কিলটা ব্যবহার করতে করতে এক সময়ে সব রকমের ইমোশনকে হারিয়ে ফেলতে হয়। তাছাড়া কখন কোন পরিস্থিতিতে কোন ইমোশন দেখা দিবে সেটাও ঠিক ভাবে বোঝা যায় না। জ্যাক এটা সম্পর্কে তেমন কিছু জানে না। যেহেতু এটা এক মাত্র ব্যক্তি ব্যবহার করতো, যে কিনা রুলার অফ ডেড নিজেই ছিলো। তবে রিয়েলিটি এবং টাইম নিয়ে খেলা করলে কি হয় সেটার সাধারণ একটা উদাহরণ জ্যাক ভালো করেই জানে। তাইতো তার এখন ভয় লাগার কারনটাও তার স্কিলটা ব্যবহারই হয়ে দাঁড়ায়। জ্যাক স্বাভাবিক হয়ে চিন্তা ভাবনা শুরু করলো। তবে তাকে বেশীক্ষণ চিন্তা ভাবনা করার সময় মিনোটর টা দিলো না। সেটা মাটির মধ্যে ধারালো এক পাশ আটকে থাকা এক্সটা টান দিয়ে বের করে বাকা করে সাইড বরাবর জোরে এবং দ্রুত ১৮০° ঘুরলো। এক্সের ধারালো অংশ মাটির সাথে রেখেই সে ঘুরেছে যার কারনে পুরো মাটির মধ্যে একটা বড় বৃত্ত তৈরী হয়েছে। এট্যাকটা জ্যাক বরাবর ছিলো না। বরং মিনোটর টা একটা বৃত্ত তৈরী করেছে।
-->> তাহলে তুমি চাচ্ছো আমরা দুজনে এই বৃত্তের ভিতরে ফাইট করবো? (জ্যাক)
এই পর্যন্ত জ্যাক যে কয়টা মনস্টারের সাথে ফাইট করেছে কেউ এরকম ব্যবহার করে নি। এমনকি কেউ তো কথাও বলে নি। তাই দশম ফ্লোরের মনস্টার ব্যবহারে সে অবাক না হয়ে পারলো না।
[মি ফাইট। রাউন্ডে ফাইট, নো বের।]
মন্সটারের কথাটা খুব আজব ছিলো। তারপরও সে কি বোঝাতে চেয়েছিলো সেটা জ্যাক ভালো করেই বুঝতে পারলো। এক সময়ে মিনোটর এবং ভাইকিংস দের বিপক্ষে ফাইট করার কারনে সে তাদের স্বভাবকে অনেক ভালো করেই জানে। মিনোটর রা বীরযোদ্ধা। যারা কখনো কোনো ট্রিক বা নিম্নমানের কোনো জিনিস ব্যবহার করে না তাদের ফাইটে। নিজেদের স্ট্রেন্থ, এবিলিটি এবং অস্ত্র দিয়ে তারা প্রাইডের সাথে তাদের শত্রুদের সাথে যুদ্ধ করে।
-->> আমি সম্মান জানায় তোমার বীরত্বকে। ভেবেছিলাম কিছু আন্ডারহ্যান্ডেড মাধ্যমে তোমাকে আমি হারাবো। তবে কেনো জানি তা চেঞ্জ করতে মন চাচ্ছে। একবারও আমি সিরিয়াস হয়ে ফাইট করি নি, তাই হয়তো সেটার সময় হয়ে গিয়েছে। (জ্যাক)
জ্যাক দাঁড়ালো কোনো শব্দ করলো না সে আর। তার সামনে মিনোটর ও দাঁড়িয়ে আছো। দুজনের কেউই কোনো কথা বলছে না। এদিকে এথিনা জ্যাকের সাহায্য করতে চাচ্ছিলো তবে সে এখন আর কিছুই করতে পারবে না বলে দাঁড়িয়ে গেলো। ফাইটটা এখন সম্মানের হয়ে দাঁড়িয়েছে। একটা ছেলে এবং ছেলের মধ্যে সম্মানের ফাইট, যেখানে এথিনা প্রবেশ করে তাদের প্রাইডে আঘাত করতে চাচ্ছিলো না। যদিও সেটা একটা মনস্টার ছিলো, তারপরও।
"সুপার হিউম্যান স্ট্রেন্থ"
"সুপার স্পিড"
জ্যাক তার দুটো এবিলিটি এক সাথে ব্যবহার করলো। তার কাছে কোনো অস্ত্র নেই, অন্য দিকে মিনোটর জ্যাকের নরাচরা করা দেখতে পেয়েই তার এক্স দিয়ে জ্যাককে এট্যাক করলো তার এক্স দিয়ে। জ্যাক তার সুপার হিউম্যান স্ট্রিন্থের মাধ্যমে অনেকটা শক্তিশালী হয়ে গিয়েছে। সেই সাথে তার সুপার স্পিড। দুটো একসাথে ব্যবহারের ফলে তার দ্রুত এবং এট্যাক গুলো অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। টেকনিক্যাল ভাবে মিনোটরের থেকে এখন অনেকটা দ্রুত ছিলো, তবে তারপরও জ্যাকের কাছে মনে হচ্ছিলো তার স্পিডকে মিনোটর ধরে ফেলছিলো। মিনোটরের প্রতিটা এট্যাক স্লো হলেও তার এট্যাকের পরিমাণ অনেক ছিলো। একের পর এক এট্যাক করেই যাচ্ছিলো মিনোটরটা। যা এতোটাও ফাস্ট না হওয়ার কারনে জ্যাক তার সুপার স্পিডের কারনে এড়াতে পারছিলো। তবে জ্যাক তার এট্যাক করার কোনো সময়ই পাচ্ছিলো না। সে মিনোটরের কাছে যাওয়ার চেষ্টা করলেই সেটা তার এক্স দিয়ে জ্যাককে এট্যাক করতে থাকে। যার কারনে জ্যাক সেটার কাছে যেতে পারছিলো না।
-->> ওয়েল আমি এট্যাক করার সময়ই পাচ্ছি না। (জ্যাক)
জ্যাক রেগে গেলো। সে তার এট্যাক গুলো করতে পারছিলো না অনেক বিরক্তকর বিষয় ছিলো। তবে এবার সে এট্যাক করতেই যাচ্ছিলো তখনি মিনোটর তার পা দিয়ে মাটিতে জোরালে করে একটা লাথি দিলো। লাথিটার ফলে পুরো মাটি ফেটে গেলো। যার ফলে মাটির বড় বড় টুকরো উড়ে দূরে গিয়ে পরতে লাগলো। জ্যাক তার সুপার ন্যাচারাল এবং সুপার স্পিড এবিলিটি ব্যবহার করার ফলে সে জিনিসগুলো একটু আস্তে হলেও সে একটা খন্ডের সাথে উড়ে যাচ্ছিলো।
-->> আমি চাই নি এটা ব্যবহার করতে, তবে মনে হচ্ছে আমাকে আর এই বিষয় সিকরেট রেখে লাভ নেই। (জ্যাক)
"ডেভিল ফর্ম"
জ্যাক তার ডেভিল ফর্মে চলে গেলো। জ্যাক নামক পূর্ব ইনকার্নেট এর জীবনে তার কাছে পাঁচটা ফর্ম ছিলো। যার মধ্যে এটা একটা। যদিও সে সময়ে সবটা একসাথে ব্যবহার করতে হতো তাকে। তবে এখন সেটা আলাদা। পাঁচ ফর্মের মধ্যে মাত্র দুটো ফর্মই আপাতোতো জ্যাক ব্যবহার করতে পারে। একটা তার হিউম্যান ফর্ম যেটা নর্মাল। এবং অন্যটা বর্তমানের ফর্মটা। জ্যাকের পিঠ থেকে দুটো ডানা বের হলো। যা পুরো পাখির ডানার মতো দেখতে। তবে সেগুলো কালো রঙের ছিলো। এই ফর্মটা বেশ অনেকদিন পূর্বেই পেয়েছিলো জ্যাক।
"পঞ্চম ফ্লোর ক্লিয়ার এবং পঞ্চম লেভেলে উঠার পরে এটা গিফট হিসেবে পেয়েছিলাম। তাই আমি নিশ্চিত হয়তো দশম ফ্লোর ক্লিয়ার করলে আরো একটা ফর্ম পেতে পারি। টাওয়ারে প্রবেশের পূর্বে আমাকে দুটো ফর্ম নিয়েই যেতে হবে।" (জ্যাক)
জ্যাক তার লেভেল বৃদ্ধির চিন্তা করছিলো না। বরং তার আরেকটা ফর্ম পাওয়ার সুযোগ নিচ্ছিলো। যদিও সে জানে না কিভাবে লেভেল এবং ফ্লোরের সাথে তার ফর্ম গুলো সম্পর্ক রয়েছে, তবে একটা বিষয় শুধু জানে যে তার পাওয়ার গুলো সিল রয়েছে। পূর্ব পাওয়ার গুলো সিল রয়েছে যা জ্যাক শক্তিশালী হওয়ার সাথে সাথে ফেরত পাচ্ছে।
-->> আসো এবার তাহলে সিরিয়াস হওয়া যাক। (জ্যাক)
জ্যাক মিনোটরকে কথাটা বলেই সুপার স্পিডে উড়ে গেলো সেটার দিকে। এবং সজোরে সেটার মুখে একটা পান্স দিলো,
-->> আজ কতদিন হলো আমি উড়ার মজাটা মিস করছি। জানি না এটা আন্ডারহ্যান্ডেড কিনা। কিন্তু একটা বীরযোদ্ধার সাথে ফাইট করলে সব সময় অল আউট হয়েই ফাইট করতে হয়। (জ্যাক)
মিনোটর এবং জ্যাক দুজনের মধ্যেই এবার অনেক ভালো একটা ফাইট হচ্ছিলো। দুজনেই একে অপরকে এট্যাক করছিলো। জ্যাক তার ডেভিল ফর্মে পূর্বের থেকেও দ্বিগুন দ্রুত হয়ে গিয়েছে যার কারনে মিনোটরের কোনো এট্যাকই কাজ করছিলো না। এখন জ্যাকও সময় বুঝে মিনোটরকে এট্যাক করতে করতে পারছিলো।
"সুপার সনিক পান্স"
জ্যাক তার সুপার সনিক পান্স ব্যবহার করলো। যা লাগলো মিনোটরের থুতনি বরাবর। ডেভিল ফর্মে এবং একই সাথে সুপার হিউম্যান স্ট্রেন্থের কারনে জ্যাকের স্ট্রেন্থ এখন অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। জ্যাক প্রায় জিতার পথেই ছিলো। যদি সে তার অস্ত্র এখানে ব্যবহার করে তাহলে খুব সহজেই মিনোটরকে হারিয়ে দিতে পারতো। তবে সে নিজের স্ট্রেন্থকে দেখতে চাচ্ছিলো। মিনোটর তার এক্সে ভর করে শোয়া থেকে উঠে পরলো। সে জোরে একটা চিৎকার দিলো। যা কানের পর্দা ফেটে যাওয়ার মতো ছিলো। তবে জ্যাক ডেভিল ফর্মে থাকার কারনে তার কিছুই হলো না।
-->> এবার তো মনে হয় আরো কষ্ট করতে হবে। আমার মতো মিনোটর টাও পাওয়ার আপ করে নিলো। (জ্যাক)
"রেজ মুড"
মিনোটর তার রেজ মুডে চলে গিয়েছে। যার মধ্যে তার শক্তি পূর্বের থেকে তিনগুন বৃদ্ধি পেলো। মিনোটরের পুরো শরীরের মাংসপেশী ফুলে গেলো। সে তার এক্সকে ফেলে দিলো। এবং চারপায়ে দাঁড়ালো। মাথার উঁচু শিং দুটো দেখতে একদম ভয়ানক লাগছিলো। এতোক্ষন দুই পায়ে হাটলেও এখন যেহেতু সে চার পায়ে দাঁড়িয়েছে তাই তাকে বিশাল পাগলা একটা ষাঁড়ের মতোই লাগছিলো। যে তার সামনের সব কিছুই ধ্বংস করে দিবে।
-->> আমার মনে হয় একটা লাল কাপড়ের দরকার ছিলো এখন আমার। (জ্যাক)
* * *
To Be Continued
* * *
কেমন হলো জানাবেন।