আসসালামু আলাইকুম। গল্প প্রতি শনিবার, সোমবার এবং বুধবার রাত ১০টা থেকে ১১ টার মধ্যে ওয়েবসাইটে পোস্ট হবে।

Want Premium Membership!

Demon King পর্বঃ ৮৬

হৃদয় বাপ্পী
Please wait 0 seconds...
Scroll Down and click on Go to Link for destination
Congrats! Link is Generated
 [প্রথমেই বলি গল্পটা পুরো কাল্পনিক, কেউ বাস্তব কিংবা ধর্মের সাথে তুলনা করবেন না]

#Demon_King#

পর্ব:৮৬

লেখকঃহৃদয় বাপ্পী
.
.
.
(কোনো এক ইউনিভার্সে)

তিনটা মেয়ে একত্রিত ছিলো একটা রুমের মধ্যে। তারা তিনজনেই খুব হাসি মুখে গল্প করছিলো একে অপরের সাথে। তখনি রুমে চতুর্থ একটা মেয়ের প্রবেশ হলো।

-->> খারাপ খবর, হৃদয়ের মতো ওর বোন এবং আরোহীকে কোথাও খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।

তিনজন হাসি মুখে গল্প করলেও নিউজটা শোনার পরে তাদের মুখে আর হাসি থাকলো না। তারা চারজনই এখন একে অপরের দিকে তাকিয়ে আছে। কিছু করবে এই সময়ে কিছুই বুঝতে পারছে না তারা।

-->> আমি আমার ভাই নিয়াকের থেকে একটা শেষ মেসেজ পেয়েছিলাম, যাতে সে বলেছে ইউনিভার্সে খারাপ কিছু হচ্ছে। আমার মনে হয় তিনজনের নিখোঁজ এর সাথে সেটার কিছু সম্পর্ক রয়েছে।

-->> আমাদেরকে চেষ্টা করতে হবে। স্যাটেলাইটের মাধ্যমে আমি আবারো খোঁজার চেষ্টা করছি। তাছাড়া আমাদের সিকরেট টিমের কয়েক হাজার সদস্য এখন খুঁজে বেরাচ্ছে পৃথিবীর সবটা অংশ। দেখা যাক কি হয়। 

-->> এই সময়ে টাইম মেশিন এবং ডাইমেনশনাল পোর্টালও কোনো কাজ করছে না। আমি বুঝতে পারছি না আমাদের ইউনিভার্সের সাথে কি হচ্ছে। 

-->> যাইহোক আমি শুধু আশা করছি আমাদের স্বামী, ননদ এবং মেয়েটা ঠিক থাকুক। 

-->> হ্যাঁ।


* * * * * 

(টাওয়ার অফ গ্লাটোনি)

পুরো ব্লু কিংডমের মধ্যে দ্রুত একটা খবর ছড়িয়ে গিয়েছে। একাডেমির যে ব্যক্তিটা ডিভাইন বিস্ট ড্রাগনের সাথে কন্ট্রাক তৈরী করেছে সে এবং তার সাথে অন্য একটা স্টুডেন্ট হঠাৎ মাটির ভিতরে হারিয়ে গিয়েছে। কেউ আজ পর্যন্ত এই রকম কোনো বিষয় সম্পর্কে শোনে নি। তাই তো খবরটা পুরো কিংডমের মধ্যে ছড়িয়ে যেতে সময় লাগছে না। শুধু যে এটা ব্লু কিংডমের মধ্যেই ছড়িয়েছে এমন নয়, বরং অন্যান্য দুটো কিংডমের মধ্যেও ছড়িয়েছে।

সিকরেট কিংডম,

রাতের সময়, তাই প্যালেসের বা কিংডমের কোনো রকম কাজ এখন আর কুইন মারিয়ার নেই। সে এই সময়ে ফ্রি ছিলো। তাই তার স্বামীর সাথে সময় কাটাচ্ছিলো সে। 

-->> শুনছো প্রিয়? (মারিয়া)

-->> হ্যাঁ। (এলমন্ড)

মারিয়া বিছানায় বসে বসে বই পড়ছিলো ল্যাম্পের হালকা আলোতে। অপরদিকে এলমন্ড ঘুমানোর চেষ্টা করছিলো। 

-->> আমি একটা গুজব শুনলাম আজকে ক্রাউন রুমের মধ্যে। ব্লু কিংডমের একাডেমিতে এবার দুজন ডিভাইন বিস্ট ফ্যামিলিয়ারের সাথে কন্ট্রাক তৈরী করেছে। তোমার কি মনে হয় আমাদের এলেক্স কি তাদের মধ্যে একজন হবে? (মারিয়া)

-->> হতে পারে, আবার নাও হতে পারে। (এলমন্ড)

-->> এভাবে বলছো কেনো? তোমার স্পাই তো সেখানে রয়েছে, আমি জানি তুমি সবই জানো। তারপরও আমার ছেলের সাথে দেখা করতে বা তার ব্যাপারে কিছু বলছো না তুমি। (মারিয়া)

-->> এমন নয় হানি, আমি জানি তুমি এলেক্সকে নিয়ে অনেক চিন্তা করছো। কিন্তু আমাদের ছেলে এখন বড় হয়েছে। ওর এখন বন্ধু বান্ধব বানানোর সময়, এখনি যদি ও জানতে পারে যে সে একজন প্রিন্স তাহলে সেই সুযোগটা সহজেই পাবে না। (এলমন্ড)

-->> বুঝতে পেরেছি। (মারিয়া)

-->> তাছাড়া সময় এবং লাক্ দুটোই আমাদের দিকে। খুব দ্রুত আমরা একত্র হতে পারবো এবং এই ওয়ার্ল্ডের মায়াজাল থেকে বের হতে পারবো। (এলমন্ডের)

এলমন্ডের শেষ কথাটা মারিয়া তেমন বুঝলো না। সে বোঝার তেমন চেষ্টাও করলো না। এলমন্ড শুয়ে পরলো। 

"তোমার কোনো চিন্তা করতে হবে না। এলেক্স নিজেকে সব অবস্থায় সামলানোর ক্ষমতা রাখে এখন। তারপরও আমার ফ্যামিলিয়ার সব সময় তাকে পর্যবেক্ষন করে যাচ্ছে।" (এলমন্ড ভাবছে)


* * * * * 

(অজানা একটা গুহা)

এলেক্স পাথরের মেঝের উপরে বসে ছিলো। সে এই পর্যন্ত তার কাছে আসা মনস্টার গুলোর কারন খুঁজে পেয়েছে। প্রতিবার যখন মাইরা মনস্টার সম্পর্কে কথা বলে তখনি আজব ধরনের কালো কিছু মনস্টার তৈরী হয়। যাদের লেভেল অতিরিক্ত থাকলেও সেগুলোর মাঝে কোনে এবিলিটি কিংবা স্ট্রেন্থ নেই। যদিও ভালো পরিমাণ এক্সপি তারা এলেক্সকে দিয়েছে, তারপরও সেগুলো তাদের স্ট্রেন্থ এবং এবিলিটি না থাকার কারনে বেশী ছিলো না। তারপরও এলেক্স এই সুযোগে তার স্ট্যাটাস দেখে নিলো,

"স্ট্যাটাস"


××× স্ট্যাটাস ×××

নেইম: এলেক্স
টাইটেলঃ কনজিউমার, সোল কালেক্টর, প্রোগ্রামার
জব:হোস্ট অফ জিডুরী
সাব-জব: এসাসিন
লেভেল: ১১৯

স্ট্রেন্থ : ২৭৭
ভাইটালিটি : ১৬৬
এজিলিটি : ১৯৩
স্ট্যােমানা : ১৬৪
ইন্টেলিজেন্স : ১৮৭
লাক্ : ২৫

স্ট্যাট পয়েন্ট: ২২০

××× ×××

এলেক্স এক নজরে তার স্ট্যাটাস দেখে নিলো। এবং উঠে নিজের প্যান্টের পিছনের অংশের ময়লা ঝাড়তে লাগলো। এবার সে দাঁড়িয়ে থাকা মাইরার দিকে এগিয়ে গেলো,

-->> তো প্রিন্সেস অফ ডার্কনেস, কথা কি বলবে নাকি আমাকে জোর করতে হবে। (এলেক্স)

কথাটা বলেই এলেক্স তার বাম হাতে শক্ত করে তার মুন ড্যাগারকে ধরলো।

-->> ওয়েট ওয়েট আমি বলছি সব। শুধু আমাকে আঘাত করো না। (মাইরা)

একটা ছোট বাচ্চার মতো মাইরা কথাটা বললো। কথাটা বলার সাথে সাথে সে কেঁদেও দিলো। চোখের পানি এবং নাকের পানি দুটো এক হয়ে গেলো। এলেক্স বুঝতে পারছিলো না সে এই অবস্থায় কি করবে। আপাতোতো তার সামনে মাইরা ছিলো না, বরং প্রিন্সেস অফ ডার্কনেস যে শুধু তার কথা দিয়েই মনস্টার তৈরী করতে পারে। সে এভাবে কাঁদতে পারবে সেটা এলেক্স আশাও করে নি। তারপরও এলেক্স তার গার্ডে ছিলো, যদি এটা ডার্কনেস প্রিন্সেসের কোনো ট্রাপ হয়ে থাকে সেজন্য। 

-->> আনার মাম  আনোহী।

কথাটার কিছুই বুঝলো না এলেক্স কান্নার ফলে চোখ এবং নাকের পানি এক হয়ে গিয়েছে মাইরার, সেই সাথে কান্নার ফলে কি বলছে সেটার কিছুই বোঝা যাচ্ছিলো না। হাত দিয়ে চোখের আর নাকের পানি মুছতে লাগলো। কিন্তু তাতেও কাজ না হওয়ার ফলে সে এলেক্সের দিকে এগিয়ে গেলো। এলেক্স প্রস্তুত ছিলো এট্যাকের জন্য। তবে মাইরা এলেক্সের জামাটা টান দিলো এবং তাতে নাকের পানি মুছে নিলো। এবার সে এলেক্সের থেকে কিছুটা দূরে সরে গেলো এবং বলতে লাগলো,

-->> আমার নাম আরোহী। এবং আমি শক্তিশালী বাবার মেয়ে।

-->> এটা কিরকম পরিচয়? (এলেক্স)

-->> আমি জানি তুমি হয়তো বিশ্বাস করবে না। তবে আমি এতোদিন একটা ভূত ছিলাম। ভূত, যাদেরকে মানুষ দেখেই ভয় পেয়ে যায়।

-->> তোমার কথা আমি বুঝতে পারছি না। (এলেক্স)

-->> আচ্ছা তাহলে আমি সব কিছু সহজ করে দিচ্ছি তোমার জন্য। কিন্তু আমি আশা করবো তুমি ভয় পাবে না আমাকে দেখে। 

এলেক্স তার গার্ডে ছিলো, তারপরও সে আশা করে নি যেটা হতে চলেছিলো। মাইরা আবারো এলেক্সের দিকে এগিয়ে আসতে লাগলো। আবারো নাকের পানি মুছতে আসছে মনে করে এলেক্স তেমন গুরুত্ব দেই নি। তবে এবার মাইরা নাকের পানি মুছতে নয়। বরং এলেক্সের দিকে এগিয়ে এসে তার ঠোঁটে ঠোঁট মিলিয়ে দিলো। এলেক্স পুরোই অফ গার্ডে ছিলো। তাই সে খেয়ালই করে নি,

"পয়জন, আমাকে বিষ খাইয়ে দিয়েছে মনে হয়।" (এলেক্স ভাবছে)

মেয়েদের এরকম স্বভাবের জন্যই তাদের কাছে এলেক্স যেতে চাই না। তবে এটা কি হলো, মাইরা যে তাকে কিস করবে সেটা কখনো সে চিন্তা করে নি। সাথে সাথে এলেক্স সরে যেতে চাইলো। তবে সে পারছিলো না। তার শরীর অনেকটা প্যারালাইস হয়ে গিয়েছে। তখনি মাইরার শরীর উজ্জ্বল হতে শুরু করলো এবং মাইরা নিচে পরে গেলো। তবে এখনো এলেক্সের ঠোঁটের সাথে মাইরার ঠোঁট এক মিনিট ছিলো, যে মেঝের উপরে উড়ছিলো। প্রথমে দেখতে আবছা হলেও আস্তে আস্তে সে আকারটা ক্লিয়ার হতে লাগলো। একটা সুন্দরী মেয়ে ছিলো, যাকে এলেক্স কখনো দেখে নি। তবে তার চেহারা দেখে এই টুকু সে বুঝতে পারলো সে এই ওয়ার্ল্ডের নয়। দুজনের ঠোঁট আলাদা হয়ে গেলো। এলেক্স এবার ভালো করে তাকিয়ে দেখতে লাগলো। 

-->> সাধারণত তুমি আমাকে দেখতে পারতে না, তবে আমি ফুপি-আম্মার থেকে শুনেছি সউল কন্ট্রাকের মাধ্যমে আমাকে শুধু সেই ব্যক্তিই দেখতে পারবে যাকে আমি প্রথম কিস করবো।

এলেক্স পূর্বে এতোটা অবাক হয় নি যতটা সে আজকে এখন এই মুহূর্তে হয়েছে। সে তার চোখকে বিশ্বাস করতে পারছিলো না। 

-->> তুমি পৃথিবী থেকে এসেছো? (এলেক্স)

এলেক্সের সোজা প্রশ্ন ছিলো। যদিও মেয়েটাকে এলেক্স চিনে না তারপরও চেহারা দেখেই সে বুঝতে পেরেছে। এলেক্স বর্তমানে যে ওয়ার্ল্ডে আছে এটা পৃথিবী নয়। তারপরও এখানের যে স্পিসিজ গুলো রয়েছে তা মানুষ।  পৃথিবীতে এক এক দেশের মানুষেরা যেমন দেখতে এক এক রকম হয়। ঠিক তেমনি এগনোলেনিয়া এবং পৃথিবীর প্রধান স্পিসিজ মানুষ হলেও তারা দেখতে অনেক ভিন্ন। এখানের মানুষ গুলো অনেক দিন বাঁচে। সেই সাথে তারা দেখতে সম্পূর্ণ ভিন্ন। যার কারনে এলেক্স এক নজর দেখেই বুঝতে পারলো তার সামনের মেয়েটা পৃথিবী থেকে এসেছে।

-->> তাহলে তুমি বলতে চাচ্ছো এটা পৃথিবী না? বরং একটা এলিয়েন প্লানেটে চলে এসেছি এবং দশ বছর এখানেই আটকা আছি।

-->> ওয়েট, তুমি দশ বছর এই জায়গার মধ্যে বন্ধী ছিলে? (এলেক্স)

-->> হ্যাঁ, প্রথমে কষ্ট হয়েছিলো, পানি থাকলেও খাবারে অভাবে এক মাসের মধ্যেই আমি এখানে মারা গিয়েছিলাম। তাই এখন ভূত হয়ে গিয়েছি। 

মেয়েটা কথাটা বললো এবং সাথে সাথে কান্না করে দিলো। আবারো তার চোখের এবং নাকের পানি এক হতে লাগলো,

-->> আমি খুব ভয়ে ছিলাম, কিন্তু কোনো ভাবে এই জায়গা থেকে বের হতে পারছিলাম না। জায়গাটা অনেকটা একটা জেলখানার মতো, যা আমাকে আটকে দিয়েছে। 

-->> ঠিক আছে তুমি ঠান্ডা হও প্রথমে। এরপর এক এক করে পুরো কাহিনী আমাকে বলো। (এলেক্স)

এলেক্স যদিও মেয়েদের সাথে তেমন কথা বলতে চাই না, তারপরও এখনকার ব্যাপারটা ভিন্ন। কারন তার সামনে পৃথিবীর একটা মেয়ে বসে আছে। যদিও সে দশ বছর এখানে বন্ধী রয়েছে তারপরও তার এটা জেনে ভালো লাগছে যে সে পৃথিবীর একজন। যদিও মেয়েটার বিবরন শোনার পর এলেক্স বুঝতে পারলো মেয়েটা যে পৃথিবীর কথা বলছে সেটা মোটেও তার নিজ পৃথিবী ছিলো না। যদি দশ বছর পূর্বের পৃথিবীও বলা হয় তাহলেও কোনো কিছুতে মিলে না।

"তাহলে অন্য একটা ইউনিভার্সের পৃথিবী থেকে দশ বছর পূর্বে এসেছো তুমি।" (এলেক্স ভাবছে)

মেয়েটার সাথে কথা বলার মাধ্যমে এলেক্স যেসব বিষয় জানতে পারলো তা হলো, মেয়েটার নাম আরোহী। সে পৃথিবীর হিডেন একটা রাজার কন্যা। তার বাবার নাম হারকিউমাস, যে একই সাথে জলরাজ্য, আকাশরাজ্য, পাতালরাজ্যে রাজ করে। তার বাবা তাদের পৃথিবীর সবথেকে শক্তিশালী ব্যক্তি যে এই পর্যন্ত সকল শত্রুকে হারিয়েছে। একদিন তার বাবা একটা ব্লাক হোলের মধ্যে জোর পূর্বক পরে যায়। যা থেকে বের হওয়ার কোনো সুযোগই ছিলো না। আরোহী তার বাবাকে বাঁচানোর জন্য ডাইমেনশনাল পোর্টাল নাম একটা ডিভাইস ব্যবহার করেছিলো। তবে ডাইমেনশনাল পোর্টাল শেষ সময়ে কাজ করে নি বরং একটা ব্লাস্টের মাধ্যমে আরোহীকে এই অর্ধঅন্ধকার গুহার মধ্যে নিয়ে এসেছে। সে জীবনে কখনো একাকীত্ব বোধ করে নি, তবে এখানে দশটা বছর একা থাকার পরে সে বুঝে গিয়েছিলো তার জন্য কোনো হোপ ছিলো না। গুহার মধ্যে পানি ছিলো তবে কোনো খাবার ছিলো না। একটা মাস সে খাবার ছাড়া শুধু পানি খেয়ে জীবিত ছিলো। এরপর তার মৃত্যু হয়। খাবার হীন অনেক ভয়ানক মৃত্যু। এখনো সেই কষ্টের কথা মনে পরলে তার গলা আটকে আসে। প্রথম মাসে সে মারা গেলেও তার কথা মতো সে ভূত হয়ে গিয়েছিলো এরপরে। কিভাবে বা কেনো সেটা সে নিজেও জানে না। তবে একটা জিনিস সে এলেক্সকে বলেছে, আর সেটা হলো, এখন থেকে এলেক্স ব্যতীত কেউই আরোহীকে দেখতে এবং স্পর্শ করতে পারবে না। অনেকটা ভূতের মতোই, 

-->> তাহলে বলতে চাচ্ছো তুমি এই জায়গায় দশ বছর বন্ধী ছিলে একটা ভূত হয়ে। এবং এখন তোমার কিসের কারনে আমি ব্যতীত কেউ তোমাকে দেখতে বা স্পর্শ পারবে না? (এলেক্স)

-->> হ্যাঁ। 

কিসের কথাটা শোনার সাথে সাথেই আরোহী লজ্জা পেয়ে গেলো। সে কি করবে কিছুই জানে না, তাই সে তার সকল বিশ্বাস এবং আশা এলেক্সের উপরে ফেলে দিয়েছে।

-->> তাহলে তুমি মাইরার সাথে কি করেছিলে? (এলেক্স)

-->> ও এই মেয়েটা তো পানিতে ডুবে প্রায় মারাই যাচ্ছিলো। আর আমিও দেখার চেষ্টা করেছিলাম তার ভিতরে ঢুকতে পারি কিনা। শেষ সময়ে যখন এর শরীর প্রবেশ করলাম তখন বিশাল একটা ব্যক্তি আমাকে ধরে নিয়ে যায়। আমি ভয় পেয়েছিলাম। তবে শেষ পর্যন্ত তোমাকে খুঁজে পেয়েছিলাম। 

-->> তাহলে আমার নাম জানলে কিভাবে? (এলেক্স)

-->> মেয়েটার শরীরে যাওয়ার পর তার আংশিক স্মৃতি আমি দেখতে বা মনে করতে পেরেছি, তাতেই তোমার নাম এবং পরিচয় সম্পর্কে জানতে পেরেছি। নাহলে কি তোমাকে আমি বিশ্বাস করতাম এতো সহজে? 

এলেক্স এখন অনেক বড় একটা কনফিউশানের মধ্যে পরে গেলো। সে এখানে কি করবে বুঝতে পারছিলো না। মেয়েটার কাহিনী শুনলে যে কারো মায়া হবে। দশটা বছর সে কষ্ট করে এখানে একা বন্ধী ছিলো। তাকে তো কিছুতেই এখানে সে ফেলে রাখতে পারবে না। তবে এলেক্স এখানে কি করবে সেটা বুঝতে পারছে না। একটা মেয়ের ঝামেলা অনেক বড় একটা ঝামেলা। যার মধ্যে সে পরতে চাই না। বিশেষ করে মাইরার এই অবস্থাতে। 

-->> আচ্ছা পরিস্থিতি আমি বুঝতে পেরেছি। আমরা এখন একটা প্রিজনের মধ্যে আছি যেখান থেকে ভূত হয়ে দশ বছর ঘোরার পরও তুমি বের হতে পারো নি? (এলেক্স)

এবার মেয়েটা আর কোনো কথা বললো না। তার চুপ করে থাকা মানেই সে সেটা সম্মতি জানানো ছিলো। এলেক্স তার ফ্যামিলিয়ার একলিপ্সকে সাম্মন করলো। একজনের ফ্যামিলিয়ার যদি তাদের মাস্টারের থেকে অনেকটা দূর চলে যায় তাহলে মাস্টার তাদের ফ্যামিলিয়ার গুলোকে আবারো সাম্মন করতে পারবে। এই সাম্মনের মাধ্যমে ফ্যামিলিয়ার যেখানেই থাকুক না কেনো সে তার মাস্টারের কাছে চলে আসবে। এলেক্স তার হাত কাটলো এবং এক ফোঁটা ব্লাডের মাধ্যমে সে একলিপ্সকে সাম্মন করে ফেললো। আরোহী বুঝতে পারছিলো না এলেক্স কি করছিলো, তবে সে এলেক্সের হাতকে ব্যান্ডেজ করে দিতে চাচ্ছিলো। তবে হঠাৎ উজ্জ্বল আলো জ্বলার কারনে সেটা আর সম্ভব হলো না। একলিপ্স সাম্মন হয়ে গেলো। 

-->> ওয়াও কত কিউট একটা পেট। (আরোহী)

আরোহী এখন তার দুঃখ এবং কষ্টের কথা ভুলে গেলো এবং একলিপ্সকে জরিয়ে ধরে ঘোরাতে লাগলো। সে এমনিতেও হাওয়ার মাঝে ভাসছিলো এবং ছোট একটা বাচ্চার মতো ব্যবহার করছিলো। এলেক্সের একটু হাসতে মন চাচ্ছিলো, কারন এই ওয়ার্ল্ডে আসার পর তার কোনো দিন দিক দিয়ে নিজের জায়গা মনে হয় নি। এখানে দশ বছর হলেই ছেলে মেয়েদের ম্যাজিক শেখানো হয়, ডিমনিক বিস্ট বা টাওয়ারের মনস্টারের সাথে ফাইট করানো হয়। আবার অনেক সময় তো একে অপরের সাথেও ফাইট করে। হঠাৎ এলেক্সের সামনের মেয়েটার ব্যবহার এবং তার চেহারা দেখতে পেয়ে এলেক্সের পৃথিবীর কথা খুব মনে পরে গেলো।

"একবার ফিরে গেলে ভালোই হতো।" (এলেক্স ভাবছে)

আরোহীর চাপে একলিপ্স দম ছারতে পারছিলো না।

[মাস্টার হেল্প মি, এই পেত্নীটা আমাকে মেরে ফেলবে।]

পাঁচ মিনিট পরে, 

সব কিছু স্বাভাবিক হয়েছে। একলিপ্স প্রথমে ভয় পেলেও এবার সে স্বাভাবিক হয়ে গিয়েছে। 

"প্রাক্তন রুলার অফ ডেড আমি, আমার জীবনের সবথেকে লজ্জা জনক বিষয় মনে হয় এটাই হবে। তারপরেও আমার ভালোই লাগছে।" (একলিপ্স ভাবছে)

আরোহী হাওয়ার মধ্যে বসে ছিলো। আর তার কোলে ছিলো একলিপ্স। সে কোনো কিছুতেই একলিপ্সকে ছারবে না।

[আমার তোমাকে পছন্দ হয়েছে। মাস্টার আপনি আমার সাথে কন্ট্রাক ভেঙে দিন। আমি আপনার ভূত গার্লফ্রেন্ডের ফ্যামিলিয়ার হবো।] (একলিপ্স)

-->> আমি তোমার ফালতু কথা শোনার জন্য এখানে সাম্মন করি নি। তাই চুপচাপ শুধু আমার প্রশ্নের উত্তর দাও। (এলেক্স হাত মুঠো করে)

[ঠিক আছে মাস্টার।]

-->> হাহাহাহা, আমি আমার জীবনে এরকম কিউট পেট কখনো দেখি নি। এই এলিয়েন ওয়ার্ল্ডে কি আরো এর মতো পেট রয়েছে? (আরোহী)

এলেক্স কিছুটা বিরক্ত হলো, সে শক্ত চোখে তাকিয়ে আছে। যা দেখে আরোহী ভয় পেয়ে আর কিছু বললো না বরং সে একলিপ্সের মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে লাগলো।

-->> তো একলিপ্স আমাকে এটা বলো আমরা কোথায় আছি এখন? (এলেক্স)

এই পাঁচ মিনিটে এলেক্স টুকটাক বিষয়টা একলিপ্সকে বলেছে। যেহেতু সে একসময় গড ছিলো তাই তার জানার কথা বলে আশা করেছিলো এলেক্স,

[মাস্টার আমার এবং কাইসেলের পর্যবেক্ষনে আমি যতদূর বুঝতে পারছি এটা একটা টাইম প্রিজন।]

-->> টাইম প্রিজন! সেটা আবার কি? (এলেক্স)

[মাস্টার সৃষ্টির শুরুতে মাত্র একটা ইউনিভার্স ছিলো, যেখানে কেয়সের মাধ্যমে জন্ম হয় বিভিন্ন স্পিসিজের প্রানীর। সবার কাছেই আলাদা রকম শক্তিশালী পাওয়ার ছিলো যা প্রকৃতির নিয়মের বাইরে যেতে। এক শ্রেনীর কাছে পাওয়ার ছিলো সময়ের। তারা নিজ ইচ্ছা মতো সময়কে ম্যানুপুলেট করতে পারতো। তারা যে কয়বার সময়কে ম্যানুপুলেট করেছে সে কয়টা ইউনিভার্সকে তৈরী করেছে তারা। সব কিছু তাদের অজান্তেই হয়েছিলো। শুধু যে ইউনিভার্স তৈরী করেছিলো এমন নয়, তাতে থাকা প্রতিটা স্পিসিজও তাদের মতোই ছিলো এক কথায় পুরো কপি ছিলো। সেসব স্পিসিজদের প্রিমোর্ডিয়াল গড বলা হতো। প্রতিটা ইউনিভার্সেই এক সংখ্যক প্রিমোর্ডিয়াল গডের সংখ্যা বারতে থাকে। এক সময়ে অনেক সংখ্যক ইউনিভার্স তৈরী হয়ে যাওয়ার পর প্রিমোর্ডিয়াল গডদের মাত্রাও বেরে যায়। প্রতি ইউনিভার্সেই একই এবং সমান সংখ্যক গডরা বস করতে থাকে। যেহেতু ইউনিভার্স গুলো পাশাপাশি ছিলো তাই তাদের মধ্যে যুদ্ধ লাগতে সময় লাগলো না। এক ইউনিভার্স অন্য ইউনিভার্সের সাথে যুদ্ধ শুরু করলো। এক প্রিমোর্ডিয়াল অন্য প্রিমোর্ডিয়াল গড বা অন্য ইউনিভার্সের নিজের কপিদের সাথেই ফাইট করতে শুরু করলো এবং হত্যা করতে লাগলো। সব মিলিয়ে পুরো পরিস্থিতি এমন হয়ে গিয়েছিলো যে সব গুলো ইউনিভার্সই ধ্বংস হয়ে যাবে। আর ঠিক তখনি দুজন ব্যক্তি  কেয়স এর থেকে সাহায্য গ্রহন করে সব ইউনিভার্সের যুদ্ধকে শেষ করে দেই। সকল ইউনিভার্সের কপি প্রিমোর্ডিয়াল গডদের হত্যা করে শুধু আসল অরিজিন যুক্ত গডদের রেখে পুরো ইউনিভার্সের মধ্যে লিমিটার লাগিয়ে দেওয়া হয়। যাতে কেউ আর কখনো সেই ভয়ানক যুদ্ধ তৈরী করতে না পারে।] (একলিপ্স)

-->> তাহলে এটাই এতো গুলো ইউনিভার্সের অরিজিন ছিলো? ঠিক আছে বুঝলাম, তবে এর মধ্যে আমরা কোথায় আছি তার সাথে সম্পর্ক তো বুঝলাম না? (এলেক্স)

এলেক্স একলিপ্সের মাথায় আস্তে করে একটা ঘুষি দিয়ে কথাটা বললো। একলিপ্স মাথায় হাত বোলাতে বোলাতে বলতে লাগলো,

[আউচচচ, সেখানেই যাচ্ছিলাম। তো দুজন সুপ্রিম গড লিমিটার হিসেবে সব গুলো প্রিমোর্ডিয়াল গডদের নিয়ে একটা টাওয়ার তৈরী করে। যার নাম এক্সব্লক। টাওয়ারের মধ্যে অসংখ্য নিয়ম রয়েছে যার মধ্যে একটা হলো টাইম ট্রাভেল, কোনো ব্যক্তিই তাদের নিজ সময় থেকে অতীত বা ভবিষ্যতে টাইম ট্রাভেল করতে পারবে না। যদিও এই নিয়মটা শুধু টাওয়ারের মধ্যে তবে টাওয়ারের বাইরে মানে এইসব বিভিন্ন ইউনিভার্সে টাইম ট্রাভেল করা সম্ভব। তবে সেখানেও কিছু নিয়ম রয়েছে। টাইম ট্রাভেল শুধু অতীতেই করা যাবে। কারন সুপ্রিম গডদের নিয়মের ফলে তা কোনো নতুন ইউনিভার্সকে তৈরী করে না। বরং সেটা নিজের বর্তমানকে পাল্টিয়ে দেই। অপর দিকে ভবিষ্যতে কখনোই টাইম ট্রাভেল করা গেলেও সেটাকে সুপ্রিম গড ফরবিডেন বলে ঘোষনা করেছে। যদি কখনো কোনো ব্যক্তি ভবিষ্যতে টাইম ট্রাভেল করে এবং ফিরে এসে টাইমলাইন চেঞ্জ করলে বা ভবিষ্যতেই টাইমলাইন চেঞ্জ করলে সেই পুরো ইউনিভার্স টাইম লুপের মধ্যে পরে যাবে। আর একবার কোনো ইউনিভার্স টাইম লুপের মধ্যে পরে গেলে সেই ইউনিভার্সে টাইম ট্রাভেল, ইউনিভার্স ট্রাভেল সব কিছু বন্ধ হয়ে যায়। সেই সাথে সেই ইউনিভার্স গডদের ব্যাটেলফিল্ড হয়ে যায়।]

একলিপ্স কিছুটা থেমে নিলো এবং আবার বলতে শুরু করলো,

[এখন আশা যাক আপনার গার্লফ্রেন্ডের কথায়,]

-->> তোমাকে কি বার বার মনে করিয়ে দিতে হবে ও আমার গার্লফ্রেন্ড না। (এলেক্স)

[আচ্ছা আসল বিষয়ে ফিরে যাওয়া যাক। টাইম লুপের মধ্যে থাকা ইউনিভার্স গুলোতে টাইম ট্রাভেল কিং ডাইমেনশাল ট্রাভেল সম্ভব না। তারপরও যদি কেউ চেষ্টা করে তাহলে তাদেরকে টাইম প্রিজনের মধ্যে আটক করে রাখা হয়। আর মাস্টার আমরা বর্তমানে যে জায়গায় রয়েছি এটা একটা টাইম প্রিজন।]

-->> তাহলে বলতে চাচ্ছো আমরা সময়ের একটা প্রিজনের মধ্যে আছি যেখানে হাজার হাজার সময় চলে গেলেও বাইরের সবার জন্য মাত্র কিছু সময় ছিলো? (এলেক্স)

[হ্যাঁ, মাস্টার বুঝতে পারছেন।]

[তবে এখন আর আমার মনে হয় না এটা বাইরের সময়ের ব্যবধানে চলছে। যেহেতু বাইরে থেকে টাইম প্রিজনে প্রবেশ করাটা অসম্ভব ধারনা করা হয় তাই আমার মনে হয় আপনাদের দুজনের প্রবেশের ফলে এই জায়গাটার সময় বাইরের মতোই হয়ে গিয়েছে।]

-->> সব বাদ দিয়ে প্রথমে এটা বলো এই জায়গা থেকে বের হবো কিভাবে? (এলেক্স)

[যেভাবে প্রবেশ করেছেন?]

-->> এটা কিরকম কথা? সেটা জানলে আমি তোমাকে জিজ্ঞাসা করতাম নাকি? না ওয়েট আমার মনে হয় আমি বুঝতে পেরেছি কিভাবে এই জায়গা থেকে বের হবো। (এলেক্স)

এলেক্স কথাটা বলেই মাইরার দিকে তাকালো। যে এখনো মেঝের উপরে পরে ছিলো। তারা দুজনেই এই জায়গায় এসেছে মাইরার সেই এট্যাকের ফলে। মাইরা তার ফ্যামিলিয়ারের সাথে প্রজেস হয়ে যখন ফ্লেম স্পেল ব্যবহার করেছিলো তখনি এখানে থাকা টাইম প্রিজনের মধ্যে একটা গেইট তৈরী হয় যা এলেক্স এবং মাইরাকে এই জায়গার মধ্যে নিয়ে আসে।

-->> এলেক্স এটা কি তুমি? আহ, আমার মাথা ঘুরছে শুধু। (মাইরা)

হঠাৎ মাইরা তার সেন্সে ফিরে আসলো। সে মৃদু স্বরে এলেক্সকে কথাটা বললো।

-->> যাক তুমি ভালো সময়ে ঘুম থেকে উঠেছো, এই জায়গা থেকে বের হতে হলে আমাদের তোমার সেই স্পেলের প্রয়োজন হবে। (এলেক্স)

এলেক্সের কথা বা তার দিকে মাইরার কোনো নজর ছিলো না। মাইরার চোখ গেলো হাওয়ার মধ্যে ভাসতে থাকা একলিপ্সের দিকে। যে আরোহীর কোলে বসে ছিলো। আরোহী বর্তমানে ভূত হওয়ার কারনে মাইরা তাকে দেখতে পারলো না। তবে উড়ন্ত একটা মনস্টার না বিস্ট, যাইহোক সেটা ঠিকই দেখতে পারলো মাইরা,

-->> আমার মাথা একদম ঘুরছে, মনে হচ্ছে আমি কোনো স্বপ্ন দেখছি। এলেক্স তোমার ফ্যামিলিয়ার না একটা ড্রাগন? (মাইরা)


* * *

To Be Continued 

* * *


কেমন হলো জানাবেন।

About the Author

হৃদয় বাপ্পী
Hello Friends, My Name is Bappy and Welcome To Our Website. My Passion is to Share Knowledge With Everyone. Also I am a writer.

1 comment

  1. Supper. Ter mane ekhon ridoy pabbir meye ekhon hiyer moto elexer sathe thakbe ekhon theke.
Cookie Consent
We serve cookies on this site to analyze traffic, remember your preferences, and optimize your experience.
AdBlock Detected!
We have detected that you are using adblocking plugin in your browser.
The revenue we earn by the advertisements is used to manage this website, we request you to whitelist our website in your adblocking plugin.
Site is Blocked
Sorry! This site is not available in your country.