#ডিম্যান_কিং_সিরিজ#
#সুপ্রিম_বিয়িং#
পর্ব:৬৩
লেখকঃহৃদয় বাপ্পী
.
.
.
(টাওয়ার অফ গ্রিড)
বিশতম ফ্লোরের জঙ্গল এরিয়ার মধ্যে একটা বাসার বেডরুমের মধ্যে জ্যাক শুয়ে ছিলো। তার বাহুর মধ্যে এরিয়েল ঘুমাচ্ছিলো চুপ করে। জ্যাক যখন পূর্ব সময়ে পোসেইডন ছিলো তখন তার বেশ অনেক মেয়েদের সাথেই সম্পর্ক ছিলো। তবে সব গুলোই তার মিস্ট্রেস হওয়ার যোগ্যতা রাখে নি। পোসেইডনের একজন স্ত্রী এবং চারজন মিস্ট্রেস ছিলো। যে চারজন মিস্ট্রেসের মধ্যে তিনজনই এখন অন্যের কাছে, তাই তাদের নিয়ে জ্যাক ততোটা চিন্তা করছে না যতটা না ম্যাডুসাকে নিয়ে করছে। ম্যাডুসার সাথে কি হয়েছে তার ধারনা জ্যাক পেয়েছে এথিনার হাতের এজিস দেখতে পেরে। এথিনার যে শিল্ড সেটা তৈরী হয়েছে গর্গনের মাথা দিয়ে। আর সেই গর্গনটা জ্যাকের খুব পরিচিত একজন ছিলো। আপাতোতো সে আর এই বিষয়ে ভাবলো না। কারন ম্যাডুসার সাথে যা হয়েছে সেটা কোনো মূল্য রাখে না এখন, মূল্যের বিষয় এটা যে ম্যাডুসা এখন এরিয়েল হয়ে জ্যাকের সামনে এসেছে।
"আমি ভাবতেও পারি নি তুমি আবার জন্ম নিবে।" (ম্যাডুসা)
-->> মাই কিং? (এরিয়েল)
এরিয়েলের ঘুম হঠাৎ ভেঙে গেলো এবং সে আবারো তার পুরাতন অভ্যাসের কারনে জ্যাককে কিং বলতে লাগলো। অলিম্পাসের নিচে থাকার সময়েও জ্যাক এই ডাকটা পছন্দ করতো না এমনকি এখনো সে এটা পছন্দ করে না। সে কখনো কোনো লিডার হতে চাই নি। পরিস্থিতি এবং সময় সব সময় তাকে একটা লিডার বানিয়ে দিয়েছে।
-->> আরো একবার আমাকে কিং বললে অনেক গুরুতর একটা শাস্তি দিবো তোমাকে। (জ্যাক)
-->> আচ্ছা ঠিক আছে এখন থেকে জ্যাক বলবো। (এরিয়েল)
এরিয়েল কথাটা বলেই জ্যাককে আরো শক্ত করে জরিয়ে ধরলো।
-->> এখন তো তোমার স্মৃতি ফিরে এসেছে, তাহলে তো তুমি এখন নিজের এবিলিটিকে কন্ট্রোল করতে পারবে। এখন আর মনে হয় না যেখানে সেখানে মানুষ পাথর হয়ে পরে থাকবে আর। (জ্যাক)
-->> তুমি মজা নিচ্ছো? জানোই তো এটা আমার কাছে একটা কার্সের মতো। (এরিয়েল)
-->> এটা কোনো কার্স নয়, বরং তোমাকে এই রূপেই আমার কাছে সবথেকে বেশী সুন্দর লাগে। আর তাছাড়া এথিনার কার্স এখন আর নেই। এখন যেটা তোমার কাছে আছে সেটা কোনো কার্স নই বরং সেটাই তোমার শক্তি। (জ্যাক)
এরিয়েল জ্যাকের কথাটা শুনে বিছানা থেকে উঠলো। পাতলা কাঁথা শরীরে পেঁচিয়ে নিয়ে সে বাথরুমে যাচ্ছিলো চেঞ্জ হতে।
-->> কোথায় যাচ্ছো? (জ্যাক)
-->> পাথর গুলোকে ঠিক করতে। (এরিয়েল)
জ্যাক হঠাৎ লক্ষ করলো এরিয়েলের চেহারাটা ঠিক তার পূর্ব সময়ের চেহারার মতো উজ্জ্বল হয়েছে। এতোক্ষন সে লক্ষ করে নি তবে এরিয়েল তার পূর্ব জীবনে অলিম্পাসের সেরা সুন্দরী নারীদের মধ্যে অন্যতম ছিলো। সৌন্দর্যের দিক দিয়ে সে এথিনারও উপরে ছিলো। যদিও সে মারা যাওয়ার সাথে সাথে তার সেই সৌন্দর্য হারিয়ে ফেলেছে তবে এই সময়েও তার সৌন্দর্য কম না।
জ্যাক উঠলো, সে কিছুটা সময় নষ্ট করেছে। তবে সে যাকে খুঁজতে এসেছিলো তাকে পেয়ে গিয়েছে, তাই এখন আর তাকে বেশী কিছু নিয়ে চিন্তা করতে হবে না।
-->> তাহলে এই জায়গা থেকে বের হওয়ার চিন্তা ভাবনা করা যাক। (জ্যাক)
বাথরুম থেকে এরিয়েল একবারে গোসল করে ফিরে আসলো। এরিয়েল কিছুদিন দেখতে আঠারো বছরের মেয়ে হলেও তার বয়স সেটার থেকে দ্বিগুন। এরিয়েল উইশ মেকারের থেকে তিনটা উইশ পেয়েছিলো। যার একটা দিয়ে এরিয়েল তার শরীরের গ্রোথকে বন্ধ করতে পেরেছে। এর কারনে বিশ বছরের মধ্যেও এরিয়েলের শরীরের বয়স বৃদ্ধি পায় নি। ওয়েল সাধারণ ভাবে বললে তার বয়স বারে নি বলা যাবে। কিন্তু আসলে সেটা হয় নি। এরিয়েলের বয়স ঠিকই বেরেছে শুধু বয়সের সাথে তার শরীরের কোনো গ্রোথ হয় নি। মানে আপাতোতো সে চল্লিশ বছর জীবন কাটিয়েছে, মানে তার থেকে চল্লিশটা বছর চলে গিয়েছে। তারপরও এরিয়েল দেখতে আঠারো বছরের একটা বালিকার মতোই। এমন নয় যে সে মারা যাবে না। তার আয়ু যদি ষাট বছর থাকতো তাহলে আর বিশ বছর পর ঠিকই সে মারা যেতো। মারা যাওয়ার সময় সে বৃদ্ধ হলেও তার চেহারা দেখে কখনো বৃদ্ধ মনে হবে না। সব মিলিয়ে এরিয়েল এর বয়স এখন চল্লিশ, তারপরও সে চল্লিশের মতো দেখতে না। কিছুদিন পূর্বেও সে স্বাভাবিক ছিলো, তবে জ্যাককে একত্র করতে গিয়ে যে স্পেল ব্যবহার করে তাতে এরিয়েল তার লাইফ এনার্জি হারিয়ে ফেলেছিলো। জ্যাকের সাহায্যে এরিয়েল এখন একটা মানুষের থেকেও অধিক লাইফ এনার্জি বহন করছে, যার কারনে তার কাছে তার পূর্ব উজ্জ্বলতাও ফিরে এসেছে।
-->> এভাবে তাকিয়ে আছো কেনো? (এরিয়েল)
-->> দেখছি, আমার উপপত্নীকে। (জ্যাক)
এরিয়েল বাথরুম থেকে একবারে গোসল করে এসেছে। ভেজা চুল গুলো একটা টাওয়েল দিয়ে মুছতেছিলো, যার দিকে জ্যাক হা করে তাকিয়ে আছে।
-->> আচ্ছা তাহলে আমাকে খুলে বলো, কি হয়েছে তোমার সাথে। সম্পূর্ণ কিছু এক এক করে বলো। (জ্যাক)
জ্যাক শুনতে চাচ্ছিলো না এরিয়েলের অতীত, তারপরও সে কেনো জানি আগ্রহ হলো তাতে। সে এরিয়েলকে জিজ্ঞেস করার সাথে সাথেই এরিয়েল বলতে লাগলো,
-->> আমার অতীত সম্পর্কে সবই তুমি জানো, নতুন করে সেটা বলার আর কি আছে। (এরিয়েল)
-->> আমি পূর্বের অতীতের কথা বলছি না। বরং এই ওয়ার্ল্ডে রেইনকার্নেট হওয়ার পর কি কি হয়েছে তোমার সাথে সেটা জানতে চাচ্ছি। (জ্যাক)
এরিয়েল ভেবেছিলো হয়তো সে কিভাবে মারা গিয়েছিলো সেটা জিজ্ঞেস করবে জ্যাক, আর জিজ্ঞেস করলেও এরিয়েলের বলার মতো কিছু ছিলো না সেই বিষয়ে। তাই তো সেটা নিয়ে কথা বলতে চাচ্ছিলো না সে। তবে জ্যাক যে এই জীবনের অতীত নিয়ে জিজ্ঞেস করবে সেটা একটা সারপ্রাইজ ছিলো।
-->> আমার পূর্ব স্মৃতি গুলো ছাড়া, একটা সাধারণ মানুষের মতোই আমার জীবন কেটেছে, ছোট থেকে বড় হয়েছি বাবা-মা ছাড়াই। তারপরও কোনো কিছুতেই হার মানি নি। কষ্ট করে নিজের উপার্জন করা টাকায় বড় হয়েছি। ছোট থেকে লেখালেখির প্রতি ঝোঁক ছিলো, তাই অনেক গল্প লেখেছি কিন্তু একটাও ফেসবুকে বা ওয়েবসাইটে চলে নি। তবে আমার বয়স যখন পনেরো পার হয় তখন থেকেই আমি আজব ভিশন দেখতে শুরু করি, যা তখন বুঝতে পারি নি। তখন সেটাকে স্বাভাবিক স্বপ্ন মনে করতাম, তাই সে বিষয়কে প্রথমে তেমন গুরুত্ব দেই নি। পরে একটা সময় মনে হলো স্বপ্ন গুলো কাল্পনিক হলেও অনেকটা বাস্তবের সাথে মিলে যাচ্ছিলো। এরপর সিদ্ধান্ত নিলাম স্বপ্নের কাহিনী গুলো নিয়ে আমি একটা গল্পের বই বের করবো। সিদ্ধান্তকে বেশীদিন রেখে দিলাম না। তিন বছর টানা স্বপ্ন দেখতে দেখতে আমি বইটা সম্পূর্ণ করে ফেললাম। কিন্তু তখন কাল্পনিক গল্পের তেমন দাম ছিলো না, বিশেষ করে আমার জনরার তেমন কোনো দাম ছিলো না। তাই তো মাত্র তিনটা বই ব্যতীত আর কোনো বই বিক্রি হলো না। আমি অনেক কষ্টে ছিলাম তখন। কি করবো ভেবে পাচ্ছিলাম না। ঠিক তখনি দেখলাম আমার লেখা গল্পটাই কোনো এক ছদ্মনাম ব্যবহারকারী লেখক গল্পের কিছু নাম, কিছু বিষয় এবং লেখিকার নাম পাল্টে দিয়ে অনলাইনে পাবলিস করছিলো। যেখানে আমি আমার গল্পের জন্য কোনো পাঠক বা পাঠিকা পায় নি, সেখানে আমারই গল্প কপি করে একজন ব্যক্তি রাতারাতি জনপ্রিয় হয়ে গেলো। কিছুদিন পরে একটা খবরে দেখতে পেয়েছিলাম গল্পটা নিয়ে নাকি হলিউড কাজ করবে এবং অনেক মোটা অংকের টাকা দিয়ে সেটা কিনে নিয়েছে। আমি পুলিশের কাছে কপিরাইটের মামলা দিয়েছিলাম, সাইবার পুলিশের কাছে মামলা দিয়েছিলাম। কোনো কিছুতেই লাভ হয়নি। শেষ মেষে সব কিছুর আড়ালে পরে গিয়েছিলাম এবং নিজেই কপিবাজের মামলার মধ্যে পরেছিলাম। সব মিলিয়ে আমার জীবনটা প্রায় শেষের দিকে চলে গিয়েছিলো আর তখনি আমার দেখা হয় উইশ মেকারের সাথে। তার থেকে তিনটা উইশ পেয়ে একটা আমি ব্যবহার করেছিলাম এই পুরো ওয়ার্ল্ডকে আমার গল্পের মতো করে দিতে। (এরিয়েল)
এরিয়েল তার এই ওয়ার্ল্ডের অতীতের কথা জ্যাককে বলতে লাগলো। যা থেকে জ্যাক কিছু একটা ধারনা করতে পারলো।
-->> উইশ মেকার যা কিছু করে তার পিছনে কোনো না কোনো কারন আছে। (জ্যাক)
-->> প্রথমে আমি বুঝতে পারি নি, আমার পূর্ব স্মৃতি গুলো থাকলে হয়তো আমি ব্যাপারটা অনেক পূর্বেই বুঝতে পারতাম। প্রথমে আমি মনে করতাম এই ব্যাপারটা আমার দ্বারাই শুরু হয়েছিলো। এরপরে ভাবতে শুরু করেছিলাম যে সব কিছু ভবিষ্যতে হওয়ারই কথা ছিলো। কিন্তু আমার স্মৃতি গুলো ফিরে আসার পরে আমি এখন বুঝতে পারছি...(এরিয়েল থামলো)
-->> এখন তুমি বুঝতে পারছো যে এটা হওয়ারই কথা ছিলো, যা শুরু হয়েছে তোমার জন্য এবং তা শুরু করেছে উইশ মেকার। (জ্যাক)
এরিয়েল জ্যাকের দিকে তাকালো। দুজনেই এই বিষয়টা বুঝতে পারলো। এই সব কিছু যা হচ্ছে এই ওয়ার্ল্ডে তার সব কিছুর পিছনে উইশ মেকারের হাত ছিলো। উইশ মেকারের কারনেই এই সব কিছু হচ্ছে যা আজ থেকে পঁচিশ বছর পূর্বে এরিয়েল স্বপ্নে দেখেছিলো। আর তার দেখা স্বপ্ন নিয়েই সে গল্পের বই বের করেছিলো একটা। যেটাকে সত্য বানাতে উইশ মেকার আসে ম্যাডুসার ইনকার্নেট এরিয়েলের কাছে এবং তাকে উইশ দিয়ে এই সব কিছু তৈরী করে।
-->> তুমি তখন সেই উইশটা না চাইলে এই ওয়ার্ল্ড পুরো স্বাভাবিক থাকতো। (জ্যাক)
-->> ভবিষ্যৎ পরিবর্তনশীল। তাই তো উইশ মেকার আমাকে তিনটা উইশ দিয়ে পুরো ভবিষ্যৎ বদলে দিয়েছে। (এরিয়েল)
দুজনে এই বিষয়ে আরো কিছু কথা বললো, তবে কোনো ভাবেই তারা কারন খুঁজে পেলো না। উইশ মেকার অনেক রহস্যময়ী একজন ব্যক্তি, যে কোনো কাজ করলে তার কারন কি সেটা বলতে পারবে না। তাই তো জ্যাক এবং এরিয়েল কেউই সেটার কারন খুঁজে পেলো না।
-->> আমি আমার এবিলিটি ব্যবহার করতে যাচ্ছি। (এরিয়েল)
জ্যাক এরিয়েলের সাথে কথা বলে এরিয়েল কেও রহস্য বের করতে আগ্রহী করে তুললো। যদিও তাদের কাছে এর থেকেও গুরুত্বপূর্ণ কাজ ছিলো, তারপরও তারা সময় পার করার জন্য সব কিছু চেষ্টা করছিলো। সেই সাথে এতো কথা বার্তার মাধ্যমে জ্যাক আবারো তার এরিয়েলের, মানে ম্যাডুসার কাছাকাছি চলে এসেছে। তাই এক ঢিলে দুই পাখি মারা হয়ে গিয়েছে তার। এরিয়েল তার এবিলিটি ব্যবহার করলো। পূর্বে সে এটা ঘুমের মধ্যে ব্যবহার করতে পারলেও এখন যেহেতু তার সমস্ত স্মৃতিকে সে আপন করে নিয়েছে এবং নিজেকে ম্যাডুসা মনে করছে তাই সে তার পাওয়ারকে যেকোনো সময়ই ব্যবহার করতে পারবে। মূলত ভবিষ্যৎ শুধুমাত্র গড বা গডেসরাই দেখার ক্ষমতা রাখে। ০.১% গডদের কাছে ভবিষ্যৎ দেখার এবিলিটি থাকে। যাদের মধ্যে ম্যাডুসা কোনো গডেস না হলেও সে অনেক স্পেশাল। একটা গড বা গডেসকে যদি ভবিষ্যতের কোনো অংশ দেখতে হয় তাহলে তাদেরকে ঘুমাতে হবে এবং স্বপ্নের মধ্যে সেটা তারা দেখতে পারবে। তবে সেখানেই ম্যাডুসার স্পেশাল পাওয়ারের মাধ্যমে সে শুধু যে ঘুমের মধ্যে ভবিষ্যৎ দেখতে পারবে এমন নয়, বরং সে তাকিয়ে থেকেও ভবিষ্যৎ দেখতে পারে।
-->> যদিও আমি চাই না আমার এই রূপ তোমাকে দেখাতে, তারপরও কিছু করার নেই। (এরিয়েল)
এরিয়েল কথাটা শেষ করার সাথে সাথেই তার এবিলিটি ব্যবহার করলো। তার চোখ পূর্বে হালকা সাপের মতো দেখতে লাগলেও এবার সেটা পুরো সাপের মতো হয়ে গিয়েছে। এরিয়েলের এবিলিটি শুধু নিজে ভবিষ্যৎ দেখা নয়, বরং সে চাইলে তার সাথে অন্যদেরও সেই একই ভবিষ্যৎ দেখতে দিতে পারবে। এরজন্য শুধু এরিয়েলকে অন্য ব্যক্তির হাতকে ধরতে হবে শক্ত করে। এরিয়েল জ্যাকের হাতকে শক্ত করে ধরলো। এরিয়েলের দুই চোখের পাশ দিয়ে কিছুটা লাল ব্লাড বের হতে শুরু করলো, যা এই এবিলিটি ব্যবহারের একটা সাইড ইফেক্ট।
* * * * *
জ্যাক এবং এরিয়েল দুজনেই ভবিষ্যৎ দেখতে লাগলো। বা সঠিক ভাষায় বলতে গেলে তারা একটা প্রফেসি দেখতে লাগলো। ম্যাডুসার দেখা প্রফেসি গুলো প্রায় সব সময়ই সত্য হয়ে থাকে, তাই জ্যাক এবারো সিওর ছিলো যে এটা ভবিষ্যৎ এ হতে যাচ্ছে। জ্যাক তার চোখের সামনে আরেকটা গ্রেট ওয়ার দেখতে পেয়েছে। যেখানে এজগার্ড অলিম্পাসের মধ্যে লড়ছিলো না। যেখানে হ্যাভেন আন্ডারওয়ার্ল্ডের সাথে লড়ছিলো না। যেখানে প্রিমোর্ডিয়াল গড গুলোও একে অপরের সাথে যুদ্ধ করছিলো না। বরং বিশাল এক বাহিনী যা কালো ছিলো। কালো বাহিনীর সামনে হাতের আঙ্গুলে গোনা যাবে এরকম কয়েকজন ব্যক্তি দাঁড়িয়ে ছিলো। যাদের কয়েকজনকে দেখেই জ্যাক চিনতে পারলো। তবে সেখানে সবচেয়ে নিজেকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে সবচেয়ে বেশী অবাক হয়েছে।
এরিয়েলের লিমিট শেষ হয়েছে, তাই প্রফেসিও বন্ধ হয়ে গিয়েছে। এরিয়েল টাওয়েল দিয়ে চোখ দিয়ে বের হওয়া ব্লাডটা মুছে নিলো সাথে সাথে। এবারো তার চোখ স্বাভাবিক হলো না। বরং চোখের মনিটা কিছুটা দেখতে সাপের মতোই লাগছিলো।
-->> গ্রেট ওয়ার, আবারো একটা গ্রেট ওয়ার হতে যাচ্ছে। (জ্যাক)
-->> যতদূর আমি বুঝতে পেরেছি কারো সৈনিক গুলো স্যাডো আর্মি ছিলো। আর তাদের সামনে তাদের লিডার দাঁড়িয়ে ছিলো। (এরিয়েল)
-->> তাহলে আমার ডেস্টিনি এই পথে যাচ্ছে। (জ্যাক)
-->> তোমাকে কোনো চিন্তা করতে হবে না। আমরা চাইলেই প্রফেসিকে চেঞ্জ করতে পারবো। শুধুমাত্র ইভেন্টটা শুরু করে এমন পয়েন্ট গুলোকে খুঁজে বের করতে হবে আমাদের। (এরিয়েল)
-->> না এরিয়েল, যেটা হচ্ছে সেটা হতে দাও। ঠিক তোমার সেই শেষ কথাটার মতোই। আমরা আর বন্ধী থাকতে চাই না। এবার মুক্ত হতে চাই সকল বন্ধন থেকে। (জ্যাক)
জ্যাক কথাটা বললো এবং উঠে গেলো। সে নিজের শার্টের বোতাম লাগাতে লাগাতে এরিয়েলকে বলতে লাগলো,
-->> মূর্তি গুলো ব্যবস্থা করে একুশ তম ফ্লোরে দেখা করো আমার সাথে। (জ্যাক)
* * * * *
পরের দিন,
মাস্ক পার্টির সমস্ত সদস্য একত্র হয়েছে একুশ তম ফ্লোরে। জ্যাকের সামনে তার পার্টির সকল মেম্বারই দাঁড়িয়ে আছে।
"আমি তাদের কাউকেই আসতে বলে নি, তারপরও তারা এখন এখানপ আমার সামনে দাড়িয়ে আছে কেনো বুঝতে পারছি না।" (জ্যাক ভাবছে)
সবাই চুপচাপ দাঁড়িয়ে ছিলো, শুধু এথিনা এবং এরিয়েল একে অপরের দিকে রাগী লুক নিয়ে তাকিয়ে ছিলো। জ্যাক কিছু বলার মতো পাচ্ছিলো না।
-->> তোমরা সবাই এখানে......(জ্যাক বলতে যাচ্ছিলো)
জ্যাকের কথা শেষ না হতে হতেই ঠিক পিছনে আরেকটা ব্যক্তি কথা বলতপ শুরু করলো।
-->> তোমরা তাহলে সবাই এসেছো এখানে। যাক ভালোই হলো।
ব্যক্তিটা আর কেউ ছিলো না বরং জ্যাক নিজেই ছিলো। ঠিক জ্যাকের মতো পোষাক, জ্যাকের মতো শরীরের ঘটন, জ্যাকের মতোই মাস্ক এবং কন্ঠও ঠিক জ্যাকের মতো।
-->> কি হচ্ছে, কে তুমি? (জ্যাক)
জ্যাক বুঝতে পারলো না তার সামনে হঠাৎ এই ব্যক্তিটা কে যে তারই মতো দেখতে এবং তারই মতো কথা বলছিলো। তবে একটা জিনিস সে ঠিকই বুঝতে পারলো লোকটা সুবিধার ছিলো না। লোকটার হাতে একটা স্টাফ ছিলো। যার উপরে হলুদ কালারের একটা জেম বা স্টোনের মতো ছিলো। জ্যাক সেটা দেখতে পেয়েই তাকে চিনে ফেললো।
-->> মাইন্ড জেম। ও মাই গড। (জ্যাক)
জ্যাক তার চারপাশে খেয়াল করলো। সবার চোখের মনি হলুদ হয়ে গিয়েছে। মানে তারা মাইন্ড জেমের কন্ট্রোলে চলে গিয়েছে। তাই তো তারা এতোক্ষন কোনো কথা বলছিলো না শুধু চুপ করে দাঁড়িয়ে ছিলো।
-->> আমার মনে হচ্ছে এখান থেকে আমাদের চলে যাওয়া উচিত হবে জ্যাক। এমিলিও মাইন্ড জেমের কন্ট্রোলে চলে গিয়েছে। (এরিয়েল)
এরিয়েল এবং জ্যাক বাদে সবাই মাইন্ড জেমের কন্ট্রোলে চলে গিয়েছে। আর মাইন্ড জেম ছিলো জ্যাক সেজে থাকা এক ব্যক্তির হাতে। এখন পুরো মাস্ক পার্টির সকল সদস্যই জেম হাতে থাকা ব্যক্তিকে আসল জ্যাক, তাদের লিডার মনে করছে। আর অন্যদিকে তাদের সামনে থাকা জ্যাককে নিয়ে কনফিউশনে আছে তারা।
-->> আমার পার্টি মেম্বাররা, এই ব্যক্তি আমাকে কপি করেছে। আমি এটাকে হত্যা করে নিজের হাত গন্ধ করতে চাচ্ছি না। তাই আমার হয়ে তোমরা এ কাজ করে দাও।
লোকটার আদেশের সাথে সাথে পুরো এগারোজন একসাথে জ্যাকের উপরে হামলা করতে লাগলো। অন্যদিকে এথিনা তার এদিকে কোনো নজরই ছিলো না। সে শুধু এরিয়েলের দিকেই রাগী চোখে তাকিয়ে ছিলো। একজন শক্তিশালী গডেস হওয়ার কারনে মাইন্ড জেম তার উপরে কাজ করতো না। তবে সে এরিয়েলের চোখকে দেখার কর নিজের ইমোশন ধরে রাখতে পারে নি। রাগের কারনে তাকেও মাইন্ড জেম কন্ট্রোল করে নিয়েছে। যদিও সবাই জ্যাকের উপরে হামলা শুরু করেছে, তবে এথিনা সেটা না করে এরিয়েলের উপরে হামলা শুরু করলো।
-->> হাহাহাহাহাহাহা, কেমন লাগছে জ্যাক এ.কে.এ ইনকার্নেট অফ পোসেইডন।
সবাই একসাথে জ্যাককে এট্যাক করছিলো। জ্যাক তার সুপার স্পিড এবিলিটি দিয়ে কোনো রকমে সবার এট্যাক গুলো প্রতিরোধ করছিলো। এই সময়ে লোকটা যে কথাটা বললো সেটা জ্যাকের আওয়াজে ছিলো না। বরং খুব পরিচিত একটা আওয়াজ ছিলো।
-->> লোকি! (জ্যাক)
জ্যাকের কপি ভার্সন এবার তার মাস্ক খুলে ফেললো তার চেহারাটা পুরো আকাশের মতো ছিলো। তবে সাথে সাথে সে তার শেপ-শিফটিং এবিলিটি ব্যবহার করলো এবং নিজের আসল চেহারায় চলে আসলো। লোকি হয়ে গেলো সে।
-->> হ্যালো জ্যাক, আমি এসেছি রিভেঞ্জের জন্য। (লোকি)
* * *
(To Be Continued)