#ডিম্যান_কিং_সিরিজ#
#সুপ্রিম_বিয়িং#
পর্ব:৬২
লেখকঃহৃদয় বাপ্পী
.
.
.
(টাওয়ার অফ গ্রিড)
জ্যাক একের পর এক ফ্লোর ক্লিয়ার করে যাচ্ছে, তারপরও তার খোঁজা ব্যক্তিটাকে সে খুঁজে পাচ্ছে না।
"কিছুদিন পূর্বেও সে বিভিন্ন ভাবে আমার সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেছে, তবে টাওয়ারে আসার পর তার কোনো খোঁজই পাচ্ছি না আমি। হয়তো তাকে সেখানে একা ফেলে রাখা আমার ঠিক হয় নি।" (জ্যাক ভাবছে)
একটা মাস পার হয়েছে টাওয়ারে প্রবেশের। যদিও জ্যাক চাইলে একত্রিশ ফ্লোর থেকে ড্যানজন গুলো ক্লিয়ার করতে পারবে, তারপরও সে রিক্স নিতে চাচ্ছে না। যেহেতু টাওয়ারের মন্সটারের সম্পর্কে তেমন কিছু এখনো জানে না জ্যাক তাই সে নিজে একাও একটা ড্যানজনের মধ্যে যেতে চাচ্ছে না। সব সময় বেশী কনফিডেন্স ভালো বিষয় হয় না এটা সে তার বিভিন্ন ইনকার্নেটে থাকার পরে বুঝতে পেরেছে। তাই সব বিষয়টাকে এখন সে সে স্লো ভাবে করতে চাচ্ছে।
-->> তাহলে এটা বিশ তম ফ্লোর! (জ্যাক)
প্রতিটা ফ্লোরই একই রকম টাওয়ারের। বেশী কোনো চেঞ্জ নেই। টেস্ট ড্যানজনটার মধ্যেই শুধু বিভিন্ন রকম জায়গা ছিলো। টাওয়ারের বিশটা ফ্লোরে যাতায়াত করার পর একটা জিনিস জ্যাক খুব ভালো করে বুঝলো।
-->> একটা জায়গাকেই প্রতি ফ্লোরে ঘুরিয়ে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে টাওয়ারের প্রতিটা ফ্লোরে। (জ্যাক)
টাওয়ারের মধ্যে প্রবেশ করলে অনেকের কাছেই মনে হবে প্রতিটা ফ্লোরই আলাদা আলাদা ওয়ার্ল্ড হবে যা পৃথিবীর থেকে অনেক গুন বড়। যদিও টাওয়ারের প্রতি ফ্লোর পৃথিবীর থেকে অনেক বড় তারপরও সেগুলো অনেক গুলো ওয়ার্ল্ড নয়। বরং একটা বিশাল ওয়ার্ল্ডই বার বার ঘুরিয়ে ফিরিয়ে টাওয়ারের প্রতিটা ফ্লোরে স্থাপন করা হয়েছে। কিভাবে করা হয়েছে সেটা জ্যাকের জ্ঞানের বাইরে। তাই সেই বিষয় নিয়ে ভাবলো না সে। টাওয়ারে যে ওয়ার্ল্ডটা ব্যবহার করা হয়েছে সেটার মধ্যে অনেক লোকেশন আছে, যা প্রতি ফ্লোরে হাইলাইট করা হয়, যার কারনে প্রায় সব মানুষের কাছেই মনে হয় অনেক গুলো ওয়ার্ল্ড এগুলো। তবে সে মোটেও না। জ্যাক একটা গাছের উপরে হাত দিলো।
-->> আমি সিওর দশম ফ্লোরে ঠিক এই জায়গাতেই আমাকে পিছন থেকে একটা মনস্টার হামলা করেছিলো। (জ্যাক)
জ্যাক জায়গাটা চিনতে ভুল করলো না। যদিও প্রতিটা প্রতিটা ফ্লোরে একদম র্যানডম একটা জায়গার মধ্যে নিয়ে যায় তারপরও জ্যাক একদিন সুপার স্পিডে দৌঁড়ানোর পর এই জায়গা খুঁজে পেয়েছে।
-->> তবে একটা জিনিস এখানে মিশিং, আমি পূর্বের দশম ফ্লোরের এই জায়গার গাছ গুলোতে বেশ কিছু সংকেত একে রেখেছিলাম। তবে এখানে সেগুলো নেই। (জ্যাক)
জ্যাক প্রতি ফ্লোরেই মনস্টার জোনের মনস্টার গুলো হত্যার পর সেখানে রোমান সংখ্যায় মনস্টারদের সংখ্যা একে রাখে গাছে বা পাথরের গায়ে। দশম ফ্লোরেও সেটাই করেছিলো। একটা মোটা গাছের গায়ে রোমান সংখ্যায় মনস্টারদের সংখ্যা লেখা ছিলো। তবে বর্তমানে বিশতম ফ্লোরের মধ্যে তেমন কোনো কিছুই নেই।
-->> থাক এসব বিষয় নিয়ে আমাকে ভাবতে হবে না। ডিম্যান কিং এগুলো হয়তো সুপ্রিম গডের সাহায্য নিয়েই তৈরী করেছিলো। আর তাদের কোনো কাজই আমার মাথায় ঢুকবে না। (জ্যাক)
জ্যাক তার বর্তমান ভাবনাকে বাদ দিয়ে চললো আরো সামনে। এখানে সে কোনো মনস্টারের খোঁজে আসে নি, বরং একটা বড় লিড পেয়েছিলো। বিশতম ফ্লোরে আসার পরে কিছু প্লেয়ারের সাথে জ্যাকের কথা হয়। তাদের থেকে সে জানতে পারে,
-->> এই ফ্লোরের মনস্টার গুলো পূর্বের ফ্লোরের মতোই, তেমন শক্তিশালী না, তাই সহজেই জোন গুলো ক্লিয়ার করতে পারবে।
-->> তবে সমস্যা হচ্ছে জঙ্গল এরিয়া নিয়ে। আমি শুনেছি সেখানে কিছুদিন হলো একজন উইচ বাস করে।
-->> আমার কয়েকজন বন্ধু গিয়েছিলো টিম তৈরী করে সেই উইচকে দেখার জন্য। তবে এখনো কেউ ফিরে আসি নি। আমি প্রথমে ভেবেছিলাম হয়তো কোনো মনস্টার তাদের হত্যা করে ফেলেছে।
-->> কিন্তু তারা এতোটাও দুর্বল ছিলো না যে এই ফ্লোরের জোন মনস্টার থেকে মারা যাবে। তাই আমরা কয়েকজন মিলে গিয়েছিলাম তাদের সন্ধান করতে। তবে জঙ্গল এরিয়ার মধ্যে তাদের পাথরের মূর্তি ছাড়া কিছুই খুঁজে পাই নি আমরা।
-->> মূর্তি গুলো একদম রিয়েল ছিলো, মনে হচ্ছিলো যেনো তারা পুরো জীবন্ত ছিলো।
-->> আমার মনে হয় কোনো মূর্তি নির্মাতা সেগুলো সেখানে তৈরী করেছে শখের বশে।
এগুলোই ছিলো কিছু প্লেয়ারদের কথাবার্তা। যা শোনার পরই জ্যাক তাদের দেখানো জঙ্গল এরিয়ার মধ্যে চলে এসেছে। তার একটা সন্দেহ অনেক দিনের ছিলো, যা আর সন্দেহ রয়ে যাচ্ছে না। বরং সত্যি হবার পালা ছিলো সেটা। জ্যাক এগিয়ে যাচ্ছিলো ঠিক তখনি তার সামনে বেশ কয়েকটা মূর্তি দেখতে পেলো। মূর্তি গুলোর কাছে গেলো সে এবং সেগুলোকে ধরতে লাগলো।
-->> হ্যাঁ আমি যেটা ভেবেছিলাম। এগুলো এখনো জীবিত আছে। আমি তাদের সামান্যতম এনার্জি সেন্স করতে পারছি। (জ্যাক)
মূর্তি গুলো জীবিত ছিলো। বরং সহজ ভাষায় বলতে গেলে জীবিত ব্যক্তি গুলো মূর্তি হয়েছে। সাধারণত একটা মানুষকে মূর্তিতে পরিণত করলে তারা নিশ্বাস না নিতে এবং না খাওয়া দাওয়ার কারনে মারা যাবে। তবে এই মূর্তি গুলো স্পেশাল। হাজারো হাজারো বছর হয়ে যাবে তারপরও এই মূর্তি গুলোর ভিতরের ব্যক্তিরা জীবিত থাকবে। তারা কোনো কিছু দেখতে, শুনতে বা অনুভব করতে পারবে না। একটা ঘুমের মধ্যে চলে যাবে তারা। যে ঘুম কখনো ভাঙবে না।
-->> প্রিমোর্ডিয়াল গড গরগন আসলেই অনেক ভয়ানক একটা অস্তিত্ব ছিলো সকল গডদের জন্য। তবে আমি চাচ্ছি না আমার সন্দেহটা ১০০% পূর্ণ হোক। (জ্যাক)
জ্যাক এগিয়ে গেলো আরো সামনের দিকে। শোনা গিয়েছে এখানেই উইচের একটা বাসা রয়েছে, যেখানে সে একা বাস করে। হয়তো জ্যাক যে ব্যক্তিটাকে খুঁজছে সে ঔ উইচই হবে বলে জ্যাক বাসাটাকে খোঁজার চেষ্টা করতে লাগলো।
-->> আমি কল্পনাও করি নি এতো গুলো মূর্তি একসাথে দেখতে পারবো। (জ্যাক)
একের পর এক মূর্তি দেখা যাচ্ছিলো। যেগুলো একটার পর একটা বেড়েই যাচ্ছে। জ্যাক বুঝতে পারলো সে তার গন্তব্যের খুব কাছে চলে এসেছে।
* * * * *
অন্যদিকে বনের গভীরে একটা ছোট বাড়ি রয়েছে, যা গাছপালার আড়ালে থাকার কারনে কারো নজরে তেমন পরে না। তবে একটা জিনিস খেয়াল করার মতো, সেই ছোট বাড়ির একটা বেলকনি রয়েছে। যার মধ্যে একটা মেয়ে কফির মগ হাতে নিয়ে দাঁড়িয়ে ছিলো। মেয়েটা কফিতে ফু দিয়ে চুমুক দিয়ে তা খাচ্ছিলো।
-->> আমি বুঝতে পারছি না, এই চোখ নিয়ে এখন আমি কিভাবে বের হবো? পুরো গল্পটার লেখিকার হওয়ার পরও এটার মধ্যে আমার কোনো চরিত্র ছিলো না বলে আমি বুঝতে পারছি না এখন কি করবো? গল্পের কাহিনী অনুযায়ী আমি অন্যদের কি করতে হবে সেটা সম্পর্কে বলতে পারবো, তবে নিজের এই সমস্যাটা কোনো ভাবেই আমি সমাধান করতে পারছি না।
মেয়েটা নিজের সাথেই কথা বলতে ছিলো। কফির মগে আরো এক চুমুক সে দিলো,
-->> স্বপ্ন গুলো এখন আজব হতে শুরু করেছে। আমি এখন তাতে শুধু সাদা স্ক্রিন ছাড়া আর কিছুই দেখতে পাচ্ছি না। বুঝতে পারছি না কি হচ্ছে। সব কিছু শুরু হয়েছে জ্যাকের সেই দিনের পর থেকে। হয়তো আমি বেশী এনার্জি ব্যবহার করেছিলাম, যাতে আমার মৃত্যু হওয়ার কথা ছিলো। কিন্তু কোনো ভাবে আমি বেঁচে আছি এবং এখন আমার সাথে আজব কিছু একটা হচ্ছে।
-->> সেই সাথে আমি সেদিনের সেই ঘটনার পরে কি হয়েছে কিছুই মনে করতে পারছি না। এমন মনে হয়েছিলো কেউ আমার শরীরকে পুরো কন্ট্রোল করে নিয়েছিলো। আহহহ, এই বিষয় নিয়ে ভাবলেই আমার মাথা হ্যাং হয়ে যায়।
মেয়েটা খুব বিরক্ত অনুভব করছিলো। সে কথা বলতে চাচ্ছিলো নিজের সাথে আরো কিছুক্ষন। তবে সেটা সম্ভব হলো না। দূরে সে একজন ব্যক্তি দেখতে পেলো। ব্যক্তিটা তার দিকেই আসছিলো।
-->> যেটা আমি আশা করছিলাম না। সব ব্যক্তির মধ্যে ওকেই কেনো এখানে আসতে হবে। আমাকে শীঘ্রই লুকাতে হবে এখান থেকে। কিন্তু বুকপেইজ কুলডাউনে রয়েছে, তাই আমি আরো সাত দিনের পূর্বে সেটা ব্যবহার করতে পারবো না। এখান থেকে টেলিপোর্টের কোনো সুযোগ নেই আমার। তাই নিজেই কোথাও লুকাতে হবে।
অন্যদিকে জ্যাক অনেক খোঁজার পরে একটা বাসা খুঁজে পেয়েছে। যেটাকে দেখতে উইচের মনে না হলেও যেহেতু একটা বাসা তাই সেখানে উইচ থাকতেই পারে।
-->> উইচরা কি তাদের বাসা ভয়ানক ভাবে সাজাতে পছন্দ করে না? কিন্তু এটা তো দেখতে অনেক সুন্দর। মনে হয় বিপরীত মাইন্ডের কোনো উইচ হবে এটা। (জ্যাক)
জ্যাক আর কোনো কথা না বলে সোজা বাসাটার মধ্যে প্রবেশ করলো। এই পর্যন্ত প্রায় দুইশত প্লেয়ারদের মূর্তি সে দেখতে পেয়েছে। সবই এই বাসা পর্যন্ত লিড করেছে। পাঁচটা মূর্তি তো এই বাসার সামনেও দাঁড়িয়ে ছিলো। প্রথমটা সোর্ড হাতে নিয়ে দাঁড়িয়ে ছিলো, মানে সে এট্যাক করতে যাচ্ছি। এরপরের চারজন কোনো ভাবেই প্রস্তুত ছিলো না। তারা যেভাবে দাঁড়িয়ে ছিলো সেভাবেই মূর্তি হয়ে দাঁড়িয়ে আছে।
-->> তাহলে দেখা যাক যার জন্য এসেছি তাকে এখানে পাওয়া যায় কিনা, নাকি সে সম্পূর্ণ ভিন্ন ব্যক্তি। (জ্যাক)
জ্যাক বাসার মধ্যে ঢুকলো। বাসাটা খুব ছোট যার মধ্যে তিনটা রুম রয়েছে। কাঠের তৈরী বাসাটা খুব সুন্দর করে তৈরী করা হয়েছে। তিন হাত উচু করে কাঠের মেঝে দেওয়া হয়েছে এবং দেওয়াল ও ছাদ সব কিছুই কাঠ দিয়ে তৈরী করা হয়েছে। তিনটা রুমের মধ্যে একটা ডাইনিং রুম,বাম সাইডে কিচেন এবং সামনের দিকে বেডরুম। সব মিলিয়ে একটা কাপলদের থাকার জন্য পারফেক্ট একটা জায়গা এটা।
-->> এটা কোনো উইচের বাসা হতে পারে না। (জ্যাক)
জ্যাক ঘুরে ঘুরে দেখতে লাগলো, কিচেনের মধ্যে এবং ডাইনিং রুমের মধ্যে কেউই ছিলো না। বেডরুম পুরো ফাকা ছিলো, তবে সেখানে একটা কফির কাপ ছিলো, যার মধ্যে গরম কফি ছিলো। জ্যাক ফ্লোরে কফির কাপ পরে থাকতে দেখে বুঝতে পারলো এখানে কেউ নিশ্চয় ছিলো, তার জন্য সে একটু সতর্ক হয়ে গেলো। বেডরুমের মধ্যে এটাচ বাথরুম ছিলো। যেটার দরজা ভিতর থেকে লক করা ছিলো। তাই জ্যাক শিওর ছিলো ভিতরে কেউ রয়েছে। একজনের বাথরুমে অনুমতি ছাড়া প্রবেশ করা কেমন দেখায় এটা মনে করে জ্যাক অপেক্ষা করতে চাচ্ছিলো, কিন্তু পরক্ষনেই তার মত সে পাল্টে নিলো।
"গোস্ট মুড"
জ্যাক তার গোস্ট ফর্মে চলে গেলো। এবার সে যেকোনো সলিড বস্তুর এপার এবং ওপারে পার হতে পারবে। সে বেডরুম এবং বাথরুমের দেওয়ালের মধ্য দিয়ে পার হয়ে গেলো। ভিতরে যাওয়ার পর সে নিজ চোখকে বিশ্বাস করতে পারছিলো না। এরিয়েল কালো একটা কাপড় তার চোখে বেঁধে রেখেছিলো। সেই সাথে হাতে শক্ত একটা লাঠি রেখে দরজার বাম পাশে দাঁড়িয়ে ছিলো। সে অপেক্ষায় ছিলো যদি জ্যাক ভিতরে প্রবেশ করে তাহলে সে তার দিকে না তাকিয়ে সোজা মাথায় আঘাত করে সেন্স লেস করে দিবে এবং এরপর এই জায়গা থেকে চলে যাবে। তবে জ্যাক কোনো শব্দ না করেই এরিয়েলের পিছনে চলে এসেছে।
-->> ওয়েল ওয়েল, আমি টাওয়ারে এতো দিন যার অপেক্ষা করছিলাম সে এখানে লুকিয়ে আছে তাহলে। শুধু লুকিয়ে নেই, বরং আমার মাথা ফাটানোর প্রস্তুতি নিয়েও দাঁড়িয়ে আছে। (জ্যাক)
জ্যাক তার গোস্ট মুড ক্যান্সেল করে দিয়ে কথাটা বললো। এরিয়েল ভূতের কন্ঠ শোনার মতো চমকে গেলো। সে ঘুরবে ঠিক তখনি জ্যাক এরিয়েলকে জরিয়ে ধরলো। এমনি সময়ে জ্যাক এরিয়েলকে জরিয়ে ধরার কথা চিন্তাও করতো না। তবে এখনকার ব্যাপারটা সম্পূর্ণ বিপরীত।
-->> কি করছো তুমি? আমার চোখের কাপড় খুলে যাবে। (এরিয়েল)
-->> খুলতে দাও, সাথে আরো কিছু খুলতে দাও। (জ্যাক)
-->> কিসব লুচু মার্কা কথা বলতে শুরু করেছো। আমি সিরিয়াস, চোখের কাপড়টা সরে গেলে অনেক খারাপ কিছু একটা হয়ে যাবে। তাই তোমাকে এখান থেকে চলে যাওয়া উচিত। (এরিয়েল)
-->> হ্যাঁ কাপড় সরে গেলে অনেক খারাপ একটা জিনিসই হবে। (জ্যাক)
জ্যাকের মাথায় টিটান ভর করলে না। বরং পোসেইডন ভর করলো। আর তার সামনে এখন এরিয়েল নয়, বরং তারই চেনা পরিচিত এবং সবচেয়ে পছন্দের এক ব্যক্তি দাঁড়িয়ে আছে। তাইতো এরিয়েলকে সে কোনো কথা বলতে না দিয়ে ঘুরিয়েই সোজা তার ঠোঁটে চুমু দিয়ে দিলো। এরিয়েল তার দুই হাত দিয়ে কয়েকটা পান্স দিয়ে নিজেকে ছারানোর চেষ্টা করছিলো, তবে শেষ পর্যন্ত মুক্ত না হতে পেরে সে জ্যাকের কাছে হার মেনে নিলো। কালো কাপড়ের মাঝেই সে নিজের চোখকে বন্ধ করে ফেললো। চোখ বন্ধ করার সাথে সাথে সে কিছু দেখতে পেলো। যা কোনো ভবিষ্যৎ ছিলো না। বরং নিজেরই অতীত ছিলো।
জ্যাক হঠাৎ এরিয়েলের চোখের বাধন খুলে ফেলেছে। যা এরিয়েল বুঝতেই পারে নি। সে চোখ বন্ধ করে ছিলো, কিন্তু হঠাৎ এরিয়েলের ভিশন দেখা শেষ হলে সে নিজের চোখকে খুলে ফেলে। সাথে সাথে সে জ্যাককে ধাক্কা মারলো এবং নিজের হাত দিয়ে নিজের চোখটাকে ঢেকে ফেললো।
-->> ঠিক সেই চোখ, যেটা আবারো দেখার অপেক্ষায় ছিলাম আমি। (জ্যাক)
এরিয়েল কিছুটা অবাক হলো। কারন সেদিনের বিশাল স্পেলটার পর থেকেই সে যেসব ছেলেদের দিকে তাকাচ্ছে তারা সবাই মূর্তি হয়ে যাচ্ছে। কোনো সময় নিচ্ছে না, এরিয়েলের চোখ তাদের শরীরের কোনো অংশে পরার সাথে সাথেই ছেলে গুলো মূর্তি হয়ে যাচ্ছিলো। মূর্তি বললে ভূল হবে, বরং তারা পাথর হয়ে যাচ্ছিলো। জীবন্ত পাথর বলা চলে। মাত্র সে না চাইলেও জ্যাকের দিকে তাকিয়েছিলো, জ্যাকের চোখে তার চোখ পরেছিলো। তারপরও জ্যাকের কিছু হয় নি। বরং জ্যাক এখনো কথা বলছে। এরিয়েল অবাক হলেও সে এখনো সিওর না, তাই সে তার চোখ খুলতে চাচ্ছে না। সে বর্তমানে তার গল্পের নায়িকা, তাই সে নিজের ভুলের কারনে গল্পের নায়ককে পাথর বানিয়ে দিতে পারে না।
-->> আহহহহহ,,, আমার শরীর পাথর হয়ে যাচ্ছে। (জ্যাক)
জ্যাকের কিছুই হচ্ছে না, বরং সে একটা বুদ্ধি পেয়েছে এরিয়েলকে আবারো তার দিকে চোখ ফেলানোর। যেহেতু এরিয়েল তার পাওয়ারকে দেখে এভাবে ভয় পাচ্ছে তাই জ্যাক বুঝতে পেরেছে তার সাথে কি হয়েছে। জ্যাকের কথা শুনে বুঝতে এরিয়েল বুঝতে পারলো যেটা সে করতে চাই নি একদম সেটাই হয়েছে। তাই সে আর নিজের চোখকে বন্ধ না রেখে জ্যাককে দেখলো। কিন্তু এরিয়েলের সামনে জ্যাক ছিলো না। এরিয়েল সামনের দিকে ভালো করে তাকালো, কিন্তু কোথাও তাকে দেখতে পেলো না। ঠিক সেই সময় আবারো জ্যাক এরিয়েলকে পিছন থেকে জরিয়ে ধরলো।
-->> অনেক দিন হলো তাই না ম্যাডুসা? (জ্যাক)
জ্যাকের মুখ থেকে ম্যাডুসা শব্দটা শোনার পরে এরিয়েল চোখ খোলা অবস্থাতেই আরো অনেক কিছু দেখতে পারলো। যেগুলো একটু আগেও সে দেখেছিলো। তার অতীত, যা কোনো ভাবেই সে মেনে নিতে পারছিলো না। কিন্তু এভাবে জ্যাকের বাহুতে থাকার পরে তার নিজ পরিচয়ে সন্দেহ হতে লাগলো।
-->> হয়তো আমাকে চিন্তে পারছো না, কারন তোমার পরিচয়কে তুমি আপন করে নাও নি। তাই আমি একটা সাহায্য করছি। (জ্যাক)
কথাটা বলেই জ্যাক তার আসল ফর্ম মানে পোসেইডন ফর্মে চলে আসলো। এতোক্ষন এরিয়েল তার পরিচয় নিয়ে সন্দেহ করছিলো। যে তার সারা জীবন একটা সাধারণ মানুষ হিসেবে কাটিয়েছে, তার কাছে এটা মনেই হচ্ছিলো না যে তার পূর্বের কোনো জীবন থাকতে পারে। এরিয়েল সেই গুহার পরের সময় থেকে প্রতিদিন তার অতীত নিয়ে ভিশন দেখেছে, এক সময়ে সেটা আটকে গেলেও আজ যখন জ্যাক তার সামনে এসেছে তখন সে আবারো দেখতে শুরু করেছে। এতোদিন তার পূর্বের সব কিছুকে সে মেনে নিতে পারে নি। বরং সেটার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে গিয়েছে। তবে আজ সয়ং পোসেইডন যাকে এক সময়ে সে তার সর্বোচ্চ দিয়ে ভালোবেসেছে তাকে দেখতে পেরে এরিয়েল আর তার পূর্ব স্মৃতি গুলোর বিরুদ্ধে ফাইট করতে পারছে না। বরং সে সেগুলোকে আপন করে নিলো।
{নোটঃ পোসেইডন সম্পর্কে এরিয়েল পূর্ব থেকেই জানতো, তখন সে স্বাভাবিকই ছিলো। তবে সব ইনকার্নেট গুলোকে এক করার পর থেকেই তার পূর্ব স্মৃতি গুলো ফিরে আসতে শুরু করেছে। এর পূর্বে সে অতীত না বরং ভবিষ্যতের ভিশন দেখতো।}
এরিয়েল কোনো কথা বলছে না। সে তার অতীতকে মেনে নিয়েছে। তাই তো সে তার সামনে দাঁড়িয়ে থাকা খাম্বাকে জড়িয়ে ধরলো।
-->> মাই কিং। (এরিয়েল)
জ্যাক হঠাৎ এরিয়েলের কোমরে দুই হাত দিয়ে তাকে কোলে তুলে নিলো। যেহেতু সে তার পোসেইডন ফর্মে ছিলো তাই সে এরিয়েলের থেকে অনেকটা লম্বা ছিলো তাই তার ঠোঁটে পৌঁছানো তার জন্য কষ্টকর ছিলো। এরিয়েলকে কোলে নিয়ে তাকে বলতে লাগলো,
-->> আমি এখন আর কোনো কিং নই। আমি এখন সাধারণ একজন ব্যক্তি মাত্র। আর তুমি এখন এই সাধারণ একটা ব্যক্তির মিস্ট্রেস। (জ্যাক)
জ্যাক কথাটা এরিয়েলের চোখের দিকে তাকিয়ে বলছিলো। চোখ গুলো সেই রকমই যেরকমটা সে শেষ দেখেছিলো। হ্যাঁ এটাই ছিলো ম্যাডুসা যার চোখ গুলো এখন পুরো সাপের মতো দেখাচ্ছিলো। জ্যাক আর কিছু বললো না। বরং এরিয়েলকে জরিয়ে ধরলো এবং তার ঠোঁটে চুমু দিলো।
* * * * *
অন্যদিকে,
এথিনা, আয়াব এবং ইভা তিনজন মনস্টার হত্যা করছিলো। হঠাৎ এথিনা থেমে গেলো।
"হঠাৎ আমার বাম চোখটা কাঁপছে কেনো?" (এথিনা ভাবছে)
-->> কি হলো এমিলি, তুমি থামলে কেনো, জেয়াবের উপরে তো সব মনস্টার ঝাঁপিয়ে পরছে। (ইভা)
-->> ও সরি, আমার মনে হচ্ছিলো, আমার সামনেও একটা মনস্টার চলে আসছে। (এথিনা)
* * * * *
(টাওয়ারের চূড়ায়)
গ্রিড তার নতুন হোস্টের বডিতে ছিলো। এটা পূর্বের বডির থেকেও অনেক কম্ফোর্ট লাগছিলো তার। শুধু যে সে তার পাওয়ার ফ্রি ভাবে ব্যবহার করতে পারছে সেটা না, বরং গ্রিড এখন নতুন কিছু ফাইটিং স্টাইল সম্পর্কে জানে। সে এখানে অপেক্ষা করছিলো একজন ব্যক্তির। যে অনেক স্পেশাল হতে যাচ্ছিলো তার প্লানের জন্য।
-->> লোকি! (গ্রিড)
গ্রিড লোকির নাম বলার সাথে সাথে সেখানে এক ব্যক্তি টেলিপোর্ট হয়ে চলে আসলো। ব্যক্তিটা আর কেউ ছিলো না বরং লোকি নিজে ছিলো। অ্যাভেটারের শরীরকে কন্ট্রোল করার কারনে সে দেখতে আসল না হলেও এজগার্ডের শক্তিশালী সোর্চেরর বা উইজার্ড হওয়ার কারনে সেটা ঠিক করতে তার বা হাতের খেলা ছিলো। সে তার ম্যাজিকের সাহায্যে আসল চেহারা বানিয়ে ফেললো, যা দেখতে পুরো তার মতোই ছিলো।
-->> তো গুঙনির কোথায়? (গ্রিড)
-->> তোমার অবশ্যই জানার কথা, ওডিন এখন ব্যাটেলগ্রাউন্ডে। তাই তার হাতেই সেটা রয়েছে। (লোকি)
-->> তুমি কি মজা করছো আমার সাথে লোকি? ডিলটা ছিলো আমি তোমায় একটা অ্যাভেটার খুঁজে দিবো আমার টাওয়ারে আর তুমি আমাকে গুঙনির এনে দিবে কিছু সময়ের জন্য। (গ্রিড)
-->> হ্যাঁ হ্যাঁ আমি জানি, তবে আমি এটা বলি নি যে সাথে সাথেই এনে দিবো। ওডিন ব্যাটেল গ্রাউন্ডে থাকার কারনে তার স্পেয়ার স্পর্শ করা এখন অসম্ভব। আর এমনিতেও আমি বেশ কিছুদিন এখানে রয়েছি আমার নিজস্ব ব্যবসা শেষ করার জন্য। তাই এই সময়ের মধ্যে গুঙনির পেয়ে যাবে তুমি। (লোকি)
-->> আমি জানি তুমি ট্রিক খেলতে পছন্দ করো লোকি, তবে এটা আমার টাওয়ার এটা মনে রেখো। তোমার অ্যাভেটার সম্পূর্ণ আমার কন্ট্রোলে, আমার অনুমতি ছাড়া তুমি তোমার কন্ট্রাক ভাঙতে পারবে না। (গ্রিড)
-->> হ্যাঁ হ্যাঁ আমি জানি। আমি এখানে তোমার বেকার লেকচার শুনতে আসি নি। বরং আমি আমার কাজে লেগে পরি। আমাকে সেই ব্যক্তিটাকে খুঁজতে হবে যে আমার একটা অ্যাভেটারকে শত শত বছরের জন্য বন্দী করে রেখেছে। (লোকি)
* * *
To Be Continued
* * *
কেমন হলো জানাবেন।