#Demon_King#
পর্ব:৮৮
লেখকঃহৃদয় বাপ্পী
.
.
.
(টুর্নামেন্ট)
একাডেমির পাঁচ বছর অন্তর হওয়া টুর্নামেন্টটা শুরু হয়েছে। টুর্নামেন্টের প্রথম রাউন্ড খুব সহজ। একাডেমির এক হাজার ড্যানজনের রাইট রয়েছে, যার সব গুলোর মধ্যেই সকল স্টুডেন্ট প্রবেশ করতে পারবে। স্টুডেন্টদের সংখ্যা অনেক হওয়ার কারনে তাদেরকে দশ জনের একটা করে টিম তৈরী করে দেওয়া হয়েছে। মূলত স্টুডেন্টরা নিজেই টিম তৈরী করেছে। নিয়ম অনুযায়ী কোনো টিমের মধ্যে দশ জনের উপরে বা নিচে থাকতে পারবে না। দশজন ব্যক্তিরা সবাই চাইলে একটা কিংবা আলাদা হয়ে ভিন্ন ভিন্ন ড্যানজনের মধ্যে প্রবেশ করতে পারবে। ড্যানজনের বাইরে দুটো বিপরীত টিমের সাথে কোনো রকমের ফাইট হতে পারবে না। কেউ ফাইট করলে তারা টুর্নামেন্ট থেকে তো বাদ হবেই সেই সাথে একাডেমি থেকেও তাদের এক্সপেল করে দেওয়া হবে। তাই কোনো স্টুডেন্টই সেটা করার চেষ্টা করবে না। টুর্নামেন্টের মূল লক্ষ হলো কয়েন সংগ্রহ করা। প্রতিটা ড্যানজনের মধ্যে তিন ধরনের কয়েন লুকিয়ে রাখা হয়েছে। একাডেমির ভাইস প্রিন্সিপাল তিন কয়েনের ব্যাপারে তেমন কিছু বলে নি বরং স্টুডেন্টদেরই সেটার মিস্ট্রি বের করার জন্য দিয়েছে।
-->> তাহলে আমরা সবার থেকে বেশী কয়েন সংগ্রহ করলেই জিততে পারবো? (ডুফেস)
-->> হ্যাঁ, তবে আমার মনে হয় না আমাদের জন্য সেটা সম্ভব হবে। (জেয়াব)
-->> আমাদের অনেক সিনিয়র রয়েছে, যারা পাওয়ারের দিক দিয়ে আমাদের থেকে অনেক শক্তিশালী। তাদের কাছে আমাদের টিমের জেতার সুযোগ নগন্য বললেই চলো। (এনরি)
-->> কিন্তু আমরা এখনো কোনো ড্যানজনের মধ্যে প্রবেশ করছি না কেনো? (এবা)
-->> এতোক্ষনে তো বাকি টিম রা অনেক গুলো কয়েন সংগ্রহ করে ফেলেছে। (জেবা)
-->> তোমরা চিন্তা করো না। আমরাও অনেক গুলো কয়েন সংগ্রহ করবে। দেখলেই তো পূর্ব ড্যানজন গুলোর মধ্যে কত গুলো টিম প্রবেশ করলো। (স্নেরা)
-->> আমরা এতো গুলো টিমের মধ্যে কোনো ড্যানজনে প্রবেশ করলে মোটেও সেটার থেকে পর্যাপ্ত গোল্ড কয়েন পাবো না। (মাইরা)
-->> কিন্তু একটা জিনিস আমি বুঝতে পারছি না। আমাদের এই রাউন্ডের সময় কতটুকু? এ নিয়ে তো ভাইস প্রিন্সিপাল কিছু বলে নি। (এলিন)
-->> ভাইস প্রিন্সিপাল অনেক রহস্যময়ী মানুষ। সে রহস্যকে অনেক ভালো বাসে। তাই প্রতিবছর কোনো ইভেন্ট তৈরী হলে তার মাঝে কিছু না কিছু রহস্য তিনি দিয়ে রাখবেন। তবে আমাদের চিন্তার বিষয় নেই। প্রতি পাঁচ বছর অন্তর এই টুর্নামেন্ট হয় যার প্রতিটা রাউন্ড প্রতি বার একই না হলেও তাদের সময় একই থাকে। মানে পূর্বের বারের প্রথম রাউন্ড এবং এইবারের প্রথম রাউন্ড সম্পূর্ণ ভিন্ন হলেও তাদের সময়কাল একই থাকবে। (হ্যারি)
-->> ও তাহলে কতদিন সময়? (ডুফেস)
-->> দুদিন। আমাদের কাছে দুদিন সময় রয়েছে কয়েন গুলো সংগ্রহ করার। (হ্যারি)
-->> দুদিন? মাত্র দুদিন? দুদিনে আমরা কতটা কয়েনই আর সংগ্রহ করতে পারবো? একটা ড্যানজনে যেতে যেতেই তো প্রায় একদিন চলে যাবে এভাবে। (ডুফেস)
-->> অধৈর্য হওয়ার কোনো দরকার নেই। প্রথমে আমাদের ফাঁকা একটা ড্যানজন খুঁজে বের করতে হবে এবং সেটার মধ্যকার কয়েন গুলোকে সংগ্রহ করতে হবে। (মাইরা)
মাইরা এবং তার টিম হাঁটছিলো এবং কথা বলছিলো। দশজনই পূর্বে অনেক গুলো ড্যানজনকে পিছে রেখে এসেছে। যেহেতু কয়েক হাজার টিম রয়েছে তাই তাদের সাথে একটা ড্যানজনে প্রবেশ করলে কয়েন পাওয়ার সম্ভবনা অনেক কম থাকবে। সেই সাথে তাদের সাথে ফাইটও বেশী হবে। যেটা চাচ্ছিলো না মাইরা। তাইতো তার নেতৃত্বে তাদের টিম ফাঁকা একটা ড্যানজন খোঁজার চেষ্টা করছিলো। প্রথম ফ্লোরে অনেক গুলো ড্যানজন রয়েছে। একাডেমির কাছে যে শুধু এক হাজার ড্যানজনের রাইট রয়েছে এমন নয়। আরো ড্যানজনের রাইট রয়েছে তবে শুধু এক হাজার ড্যানজনই এই টুর্নামেন্টের জন্য ব্যবহার করা হয়েছে।
-->> একটা জিনিসে আমি সত্যিই অবাক হয়েছে। তোমরা দুজন হারিয়ে যাওয়ার পর একাডেমির মধ্যে একটা বিশাল আলোড়ন তৈরী হয়েছিলো। বিশেষ করে খবরটা যখন টাওয়ারের বাইরে পৌঁছে যায় তখন। তবে হঠাৎ করে এই খবরটা যে ধামাচাপা পরে যাবে সেটা আমি ভাবিও নি। (ডুফেস)
-->> এজন্যই তো আমরা খোঁজার জন্য গিয়েছিলাম। আমার মনে হয়েছিলো একাডেমি মাইরা এবং এলেক্সের বিষয়টা লুকানোর জন্যই এই টুর্নামেন্টের আয়োজন করেছে। (এনরি)
-->> আমারও তাই মনে হচ্ছে। টুর্নামেন্ট এতো তারাতাড়ি শুরু হওয়ার কথা ছিলো না। আরো এক মাস বা দু মাস পরে সেটা হওয়ার কথা ছিলো। তবে মাইরা এবং এলেক্সের দুর্ঘটনার জন্য হয়তো তারা ইভেন্টটা এগিয়ে আনছে। যার কারনে এলেক্স এবং মাইরাকে নিয়ে এখন আর কথা হচ্ছে না। (হ্যারি)
-->> কিন্তু একাডেমি এটা করতে যাবে কেনো আমি বুঝলাম না। (মাইরা)
-->> অবশ্যই একাডেমির চোখের ভিতরে তোমরা হারিয়ে গিয়েছো, এই খবরটা কোনো ভাবে তো ধামাচাপা দিতেই হবে। তাই তো আমার মনে হয় একাডেমি টুর্নামেন্টের ব্যবস্থা সময়ের পূর্বে করেছে। (হ্যারি)
সবাই তাদের নিজ মতবাত জানাচ্ছিলো একে অপরের সাথে। তখনি তবে সবার মাঝে এলেক্স চুপ ছিলো। এমন নয় যে তার কথা বলতে মন চাচ্ছিলো না। বরং সে কারো কথায় ভালো মতো শুনতে পাচ্ছিলো না। তার চারপাশ দিয়ে আরোহী উড়ে বেরাচ্ছিলো এবং একের পর এক কথা বলতেছিলো। চুপ হওয়ার কোনো নামই নিচ্ছে না সে। তার কথা বলার কারনে আশে পাশের কারো কথায় শুনতে পাচ্ছিলো না এলেক্স।
-->> আচ্ছা আমাকে তোমার কেমন লাগে?
-->> আমি কি ঔ মাইরা আর এলিনের থেকেও সুন্দরী না?
-->> আচ্ছা তুমি বললে পৃথিবীকে তুমি চিনো? পৃথিবীতে গিয়েছিলে কখনো?
-->> তাহলে কি আমার এলিয়েন আম্মা এই প্লানেট থেকে আমাদের পৃথিবীতে গিয়েছিলো।
-->> আচ্ছা এখান থেকে পৃথিবীতে কিভাবে যাবো?
-->> এখানে কি কোনো বিশাল এলিয়েন মাদার শীপ আছে?
-->> নাকি তোমাদের ম্যাজিকের মাধ্যমে যাওয়া আসা করা যায়।
-->> আমি তো ভাবছি এখানে বিয়ে করে, তোমাকে নিয়ে চলে যাবো পৃথিবীতে। শ্বশুর বাড়ি ঘুরিয়ে নিয়ে আসবো তোমাকে।
-->> তুমি কি শুনছো? আমার মনে হচ্ছে আমি একটু কম কথা বলছি। হয়তো লজ্জা পাচ্ছি তোমার সামনে তাই।
আরোহী একের পর এক কথা বলেই যাচ্ছে। যা এলেক্সকে বারবারই বিরক্ত করছিলো।
"কানে না শোনার বা কাউকে বোবা করে দেওয়ার কোনো স্কিল থাকলে অনেক ভালো হতো এখন।" (এলেক্স ভাবছে)
এলেক্সের মাথায় হঠাৎ ভালো একটা বুদ্ধি আসলো। তাই সে হঠাৎ সবার পিছনে চলে গেলো। হাঁটার গতি সে অন্যদের থেকে কমিয়ে দিয়েছে তার জন্য সে সবার পিছনে পরলো।
-->> আমি তোমাকে বেশ কয়েকটা কাজ দিবো, তবে আমার মনে হয় না তুমি সে গুলো করতে পারবে। (এলেক্স)
এলেক্সের কথাটা শোনার পর আরোহী ঠিক এলেক্সের মুখের সামনে চলে আসলো। সে সামনে আসার পরই এলেক্সকে বলতে লাগলো,
-->> তুমি আমাকে কম ভাবছো। আমি মেয়ে হলেও অনেক কিছু করতে পারি। আর মারা যাওয়ার পরে তো এখন দেওয়ালের এপার-ওপারেও যেতে পারি। (আরোহী)
-->> তাহলে সামনের দুটো ড্যানজন রয়েছে, তোমার সহজ একটা কাজ করতে হবে। তবে আমার মনে হয় না তুমি পারবে সেটা। দুটো ড্যানজনের মধ্যে প্রবেশ করবে এবং সেগুলোর মধ্যে অন্য কেউ রয়েছে কিনা সেটা দেখে আসবে। (এলেক্স)
-->> এটা তো খুব সহজ কাজ। আমি এখনি যাচ্ছি এবং এখনি আসছি। (আরোহী)
এলেক্স কিছুটা সময় শান্ত হতে পারলো। আরোহী চলে যাওয়ার পরে তার কাছে মনে হলো বড় একটা বোঝা তার শরীর থেকে নেমে গেলো। সে বাকিদের সাথে এগিয়ে যেতে লাগলো। তবে তার শান্ত ভাবটা বেশীক্ষন থাকলো না। কারন আরোহী একটু পরই আবার ফেরত চলে আসলো,
-->> আমি দেখেছি, দুটো ড্যানজনের প্রথমটাই একটা টিম রয়েছে, তবে দ্বিতীয়টার মধ্যে এখনো কোনো টিম প্রবেশ করে নি। (আরোহী)
এলেক্স কথাটা শুনে আর আরোহীর দিকে তাকালো না। বরং সে তার টিমের বাকি সদস্যদের দিকে যাচ্ছিলো। আরোহী মন খারাপ করে এলেক্সের পিছনে যেতে লাগলো। তার মন খারাপ হয়ে গেলো কারন এলেক্স তার কাজের জন্য তাকে ধন্যবাদ কিংবা তেমন কিছুই বলে নি। আর এজন্যই সে মুখ ফুলিয়ে রইলো।
-->> আমার মনে হয় এই ড্যানজনের পিছনের ড্যানজনে যাওয়া উচিত আমাদের। (এলেক্স)
-->> ওয়েল ওয়েল, তাহলে আমাদের বোবা ব্যক্তিটা তার মুখ খুলেছে অবশেষে। (জেয়াব)
-->> আমি বুঝি না এতো সময় তুমি কিভাবে চুপ থাকতে পারো। (ডুফেস)
-->> তোমার হঠাৎ কেনো মনে হলো যে আমাদের দ্বিতীয়টার মধ্যে যাওয়া উচিত? (এনরি)
-->> ঠিক আছে আমরা দ্বিতীয়টার মধ্যে যাচ্ছি। (মাইরা)
-->> কিন্তু মাইরা, আমাদের তো প্রথমে জানা উচিত। প্রথমটা কি ভুল করলো? (এনরি)
এনরি হঠাৎ ঝগড়া করতে লাগলো এলেক্সকে নিয়ে। এনরি একজন প্রিন্সেস হওয়ার ফলে সে খুব সহজেই একজন মানুষকে চিন্তে পারে। এলেক্সের ব্যবহারটা অনেক রহস্যময়ী যার কারনে সে সহজেই তাকে বিশ্বাস করতে পারে না। বিশেষ করে মাইরার সাথে হয়ে যাওয়া ঘটনার পরে তার আর এলেক্সের উপরে কোনো বিশ্বাস হয় না। এলেক্স তাদের ঝগড়াকে কোনো গুরুত্ব না দিয়ে পাশ কাটিয়ে এগিয়ে গেলো।
-->> তোমরা আসলে আসতে পারো, নাহলে প্রথমটার মধ্যেই প্রবেশ করো। (এলেক্স)
হঠাৎ তাদের সবার কথা বার্তা থেমে গেলো। এলেক্স তার প্যান্টের পকেটে হাত দিয়ে কোনো কথা না বলে সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছিলো। বাকিরা তার দিকে তাকিয়ে ছিলো। প্রথমে হ্যারি, এরপর আস্তে আস্তে বাকিরাও এলেক্সের পিছন পিছন যেতে লাগলো। এনরি যেতে চাচ্ছিলো না তারপরও সে বাকিদের ফলো করে পিছনের দ্বিতীয় ড্যানজনের মধ্যে প্রবেশ করলো।
* * * * *
একাডেমির প্রতিটা ড্যানজনের বাইরে সিকিউরিটি থাকে। তবে আজকে কোনো সিকিউরিটি নেই। বরং দূর থেকে সকল ড্যানজন এবং এরিয়াকে মনিটর করা হচ্ছিলো। তাই একাডেমির কোনো ড্যানজনের মধ্যে প্রবেশ করতে কোনো টিমেরই সমস্যা হচ্ছিলো না। যেহেতু বাইরে কোনো টিম ফাইট করতে পারবে না তাই ভিতরে অনেক টিমের মধ্যেই ফাইট হচ্ছে। একাডেমি তাদের ড্যানজনের বিভিন্ন জায়গার মধ্যে কয়েন গুলোকে লুকিয়ে রেখেছে। মনস্টারের পেটে, মাটির নিচে, দেওয়ালের বিপরীতে কিংবা কোনো সিকরেট রাস্তার মধ্যে। প্রতি টিমই ড্যানজনে প্রবেশ করে কয়েন গুলো সংগ্রহ নিয়ে ব্যস্ত। আবার কিছু টিম যারা সংগ্রহ করেছে তাদেরকে গুরুতর ভাবে আহত করে তাদের থেকে কয়েন ছিনিয়ে নেওয়া নিয়ে ব্যস্ত। সব মিলিয়ে এখন প্রতিটা ড্যানজনের মধ্যেই আলোড়ন হচ্ছিলো।
মাইরা এবং তার টিম একসাথে মিলে একটা ড্যানজনের মধ্যে প্রবেশ করেছে। ড্যানজনটার মধ্যে কোনো টিমই এখনো প্রবেশ করে নি। তাই তারা সবাই মিলে কয়েন খোঁজা নিয়ে ব্যস্ত। দশজনের টিম মোট দুই ভাগে ভাগ হয়েছে। প্রথম ভাগে ছিলো ডুফেস, জেয়াব, এলেক্স এবং স্নেরা। আর বাকি ভাগে অন্যরা। ডুফেস, জেয়াব এবং এলেক্সের কাজ হলো সকল মনস্টারদের হত্যা করা এবং স্নেরা তাদের হিলার হিসেবে রয়েছে। অন্যদিকে বাকি ছয়জনের কাজ হলো এই ড্যানজনের বিভিন্ন জায়গার মধ্যে থাকা কয়েন সংগ্রহ করা। চারজন সামনে চলে গিয়েছে মনস্টার হত্যা করতে করতে। আর অন্যদিকে ছয়জন মনস্টারের মৃত শরীর এবং মাটিতে লুকিয়ে থাকা বিভিন্ন জায়গা থেকে কয়েন খুঁজে বের করছিলো।
-->> এলেক্স এই ড্যানজন গুলোর মনস্টার তো অনেক শক্তিশালী। আমাদের কি বাকিদেরও নিয়ে আসা উচিত ছিলো না? পরে না হয় কয়েন গুলো সংগ্রহ করতাম। (ডুফেস)
-->> তুমি পাগল হয়েছো ডুফেস? আমরা যদি মনস্টার গুলো হত্যা করা নিয়ে প্রথমে ব্যস্ত থাকি, তাহলে সেই সময়ে যদি অন্য টিম এই ড্যানজনে প্রবেশ করে। তাহলে তো আমরা একটা কয়েনও পাবো না। (জেয়াব)
-->> হ্যাঁ তোমার কথাতেও যুক্তি আছে। তবে আমার কেনো জানি মনে হচ্ছে সামনের মনস্টার গুলো আরো শক্তিশালী হবে। (ডুফেস)
-->> যদি এমন কোনো মনস্টার গুলো আমাদের স্ট্রেন্থের বাইরে চলে যায় তাহলে অবশ্যই আমরা বাকিদের ডেকে আনতে পারবো। তখন একসাথে মনস্টার হত্যাও করা যাবে সেই সাথে কয়েনও সংগ্রহ করা যাবে। (স্নেরা)
তিনজনে কথা নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, এই সময়ে এলেক্সের মাথায় অনেক ভালো একটা বুদ্ধি আবারো খেলা করলো। তবে সে একটা বিষয়ে অবাক হচ্ছিলো। আরোহী সেই সময়ের পর থেকে আর কথা বলে নি এলেক্সের সাথে। মুখ ফুলিয়ে উড়ে বেরাচ্ছিলো। হয়তো অপেক্ষা করছিলো এলেক্সের মুখ থেকে কিছু শেনার জন্য। তিনজন পিছনে কথা বলার কারনে সেই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে এলেক্স আরোহীর সাথে আস্তে আস্তে কথা বলতে লাগলো,
-->> আনোহী? (এলেক্স)
-->> এই আমার নাম আনোহী না, আমার নাম আরোহী। (আরোহী)
হঠাৎ আরোহীর মনে পরলো। কিছুদিন পূর্বে এলেক্সের সাথে প্রথম সাক্ষাতের সময় সে কান্নামাখা স্বরে কথা বলার সময় নিজেকে আনোহী বলে পরিচয় দিয়েছিলো। পূর্বের কথাটা মনে করে অনেক লজ্জা পেলো সে। নিজের মুখ ঢাকার চেষ্টা করলো এবং এলেক্সের কথার অপেক্ষায় ছিলো,
-->> আমি ভাবতেও পারি নি তুমি এতো সুন্দর করে পূর্বের কাজটা করতে পারবে। তাহলে তোমার ট্যালেন্ট আছে বলতে হবে। (এলেক্স)
-->> হাহাহাহাহা, দেখতে হবে না আমি কে? আমি আমার বাবার সবচেয়ে শক্তিশালী প্রিন্সেস। (আরোহী)
-->> আচ্ছা, তাহলে কি আরেকটা কাজ করতে পারবে? (এলেক্স)
-->> এরকম কোনো কাজ নেই যেটা আমি আরোহী পারি না। (আরোহী)
-->> তাহলে এই ড্যানজনের মধ্যে যত গুলো কয়েন রয়েছে সব গুলো সংগ্রহ করো, বা সেগুলো যেনো আমার টিম খুঁজে পাই সে ব্যবস্থা করে দাও। (এলেক্স)
-->> হিহিহিহিহি, এটা তো আমার পা হাতের খেলা। আমি যাচ্ছি আর সব কয়েন তোমার কাছে নিয়ে আসছি। (আরোহী)
কথাটা বলেই আরোহী হাওয়ার মধ্যে উড়তে উড়তে চলে গেলো পিছের দিকে। একদম পিছে থেকে সে লুকিয়ে থাকা কয়েন খুঁজে বের করতে লাগলো। যেহেতু দেওয়ালের এপার-ওপারে যাওয়ার এবিলিটি রয়েছে তার ভূত হওয়ার কারনে তাই ড্যানজনের ভিতরে কোথায় কয়েন আছে এটা দেখতে কোনো সমস্যায় হবে না তার।
"তাহলে এই ড্যানজন থেকে একটা কয়েনও বাদ রাখছি না আমি।" (এলেক্স)
এলেক্স মূলত তার শক্তিকে দেখাতে পছন্দ করে না অন্যদের সামনে। এটার মূল কারন, যত বেশী শক্তি দেখাবে একজন অন্যদের নজর ততই বারতে থাকবে। আর এটাই এলেক্সের পছন্দ না। তারপরও এলেক্স তার টিমের মধ্যে নিজের সব পাওয়ারই গোপন রাখে। যেটার কারনে তাকে সবাই ততটা শক্তিশালীও মনে করে না। তবে ড্রাগন ফ্যামিলিয়ারের সাথে কন্ট্রাক তৈরীর পরে এলেক্সের গুরুত্ব শুধু যে তার টিমের মধ্যে বেরেছে এমন নয়। পুরো একাডেমির মধ্যেই এলেক্সের গুরুত্ব রয়েছে এখন। পূর্বে যেসব শিক্ষক এলেক্সের চেহারাকে দেখেও নি কখনো এখন সবারই মুখস্ত হয়ে গিয়েছে এলেক্সের চেহারা। এলেক্স তার পাওয়ার গোপন রাখার চেষ্টা করলেও এবার সে সেটা করতে চাচ্ছে না। যদিও সব কিছু ব্যবহার করবে না, তারপরও সে এবার চেষ্টা করছে। যার মূল কারন এই টুর্নামেন্টের রিওয়ার্ড।
* * * * *
(একাডেমি)
একাডেমির একটা ছোট রুমের মধ্যে সকল শিক্ষক বসে ছিলেন। প্রায় একশত শিক্ষক এই রুমের মধ্যে বসে আছে। বিভিন্ন হল এবং বিভিন্ন ক্লাসের শিক্ষক তারা সবাই। সবার সামনে বেশ কিছু স্টোন রয়েছে, যেগুলো মধ্য দিয়ে একের পর এক ড্যানজনে থাকা স্টুডেন্টদের সরাসরি দেখা যাচ্ছিলো।
-->> প্রিন্সিপাল, আমাদের কি এতো শীঘ্রই টুর্নামেন্টের আয়োজন করা উচিত হয়েছে? (একজন শিক্ষক)
-->> হ্যাঁ প্রিন্সিপাল, আরো তো দুই মাসের মতো সময় ছিলো টুর্নামেন্টের। আমরা তো এই তিন দিনে তেমন ভাবে স্টেজ গুলো সাজাতেও পারি নি। (আরেকজন শিক্ষক)
একের পর এক শিক্ষক তাদের রিপোর্ট দিতে লাগলো প্রিন্সিপালের কাছে। এবার প্রিন্সিপাল বলতে লাগলো,
-->> আমরা এতো বছর পরে একজন স্টুডেন্ট পেয়েছি যে ডিভাইন বিস্ট ড্রাগনের সাথে কন্ট্রাক করতে পেরেছে। তবে শেষে কি হলো? কয়েকদিন পরেই তার নিখোঁজের খবর পাওয়া গেলো। যেখানে আমরা রহস্যময়ী এক ধরনের ডার্ক এনার্জি ছাড়া আর কিছুই খুঁজে পায় নি। বিষয়টা কতটা সিরিয়াস ছিলো সেটা কি তোমরা কেউ জানো? (প্রিন্সিপাল)
-->> তাদের খুঁজে পাচ্ছিলাম না তাই কিংডমের সকল নোবেল এমনকি কিং ও আমাদের এই বিষয় নিয়ে প্রেসার দিচ্ছিলো। তাদের প্রেসারকে অন্য দিকে নেওয়ার কারনেই আমাদের টুর্নামেন্টকে এগিয়ে আনা হয়েছে। তাছাড়া তারা দুজন এখন ফিরে এসেছে। তাই আমাদের চিন্তার কোনো কারনই নেই। (ভাইস প্রিন্সিপাল)
প্রিন্সিপালের কথাটা শেষ হওয়ার পরই বিষয়টা ভালো করে ভাইস প্রিন্সিপাল বুঝিয়ে দিলো।
-->> আমাদের কিংডমের মারাত্মক একটা অস্ত্র হিসেবে আমি তাকে বানাতে চাচ্ছিলাম, এতো সহজেই যদি মারা যায় বা হারিয়ে যায় তাহলে সেটা ব্যবহার অযোগ্য পন্যই আমাদের কাছে। সেসব ব্যক্তিদের ছুঁড়ে ফেলে দিতে হয়। যেহেতু এখনো ঠিক রয়েছে তাই আমি তার গ্রোথটা প্রথমে দেখতে চাই।
* * * * *
(ড্যানজন)
একের পর এক শক্তিশালী মনস্টার আসছিলো। ডুফেস এবং জেয়াবের দ্বারা মনস্টার গুলোকে হত্যা করা সম্ভব হচ্ছিলো না। তাই তারা এলেক্সকে ব্যাকআপ দিচ্ছিলো পিছনে থেকে। আর এলেক্স তার ছোট ড্যাগারের ব্যবহার করে প্রতিটা মনস্টারকে খুব সহজেই হত্যা করে ফেলছিলো।
-->> তোমরা দুজন তো কোনো কাজেরই না। আমার এলেক্স কত কষ্ট করে মনস্টার গুলোকে হত্যা করছে। আর তোমরা বসে বসে বিশ্রাম নিচ্ছো। (স্নেরা)
-->> কিছু করার নেই, মনস্টার গুলো অনেক শক্তিশালী। (ডুফেস)
-->> ওয়েট এ মিনিট, তোমার এলেক্স মানে। (জেয়াব)
-->> সরি, আমি বলতে চাচ্ছিলাম আমাদের এলেক্স। (স্নেরা)
-->> থাক বুঝেছি, তলে তলে টেম্পু চালাচ্ছো। (জেয়াব)
-->> টেম্পু চালায় কিভাবে জেয়াব? আমিও চালাবো। (ডুফেস)
হঠাৎ স্নেরা রেগে গিয়ে দুজনের মাথাতেই দুটো পান্স দিলো। অন্যদিকে এলেক্স একের পর এক মনস্টার হত্যা করেই যাচ্ছিলো।
"মনস্টার গুলো দেখে মনে হচ্ছে এটা B কিংবা A র্যাংকের হবে। তা নাহলে এতো শক্তিশালী মনস্টার এখানে থাকার কথা না।" (এলেক্স ভাবছে)
এলেক্সকের ইনফো স্কিল একটিভ ছিলো। যা দিয়ে সে মনস্টারের ইনফো দেখতে পারছিলো।
××× ইনফো ×××
নেইমঃ ট্রিন্ড
লেভেলঃ ১২০
ডিটেইলসঃ এটি একটি ট্রি মনস্টার, যাদের আকার ছোট হলেও অনেক ভয়াঙ্কর। এরা তাদের শরীরে পয়জন বহন করে থাকে।
××× ×××
মনস্টার গুলো দেখতে আজব। তাদের নিজ স্পিড নেই বললেই চলে। তবে তাদের কান্ড অনেক স্পিডে নরতে পারে। পাতার অংশে বেশ কিছু বিন রয়েছে যা দিয়ে বন্ধুকের মতো গুলি ছুরতে পারে, সেইসাথে সেটা হা করলে ধারালো দাঁতের মতো তৈরী হয় যা দিয়ে পয়জন বের হয়। গাছের আকার ছোট হলেও মনস্টার গুলো তাদের কান্ড আকার অনেক বড় করলে পারে সেকেন্ডের মধ্যেই। প্রথমে এদের হত্যা করা সহজ হলেও এদের লেভেল বৃদ্ধি সাথে এরাও শক্তিশালী হয়ে উঠেছে
তাই ডুফেস এবং জেয়াবকে এলেক্স একসাইডে থেকে রেস্ট নিতে বলেছে।
-->> আমি যতবারই এলেক্সকে একটা সোর্ড ব্যবহার করতে দেখি ততবারই আমার মনে হয় না ও মানা ইউজার। (ডুফেস)
-->> হ্যাঁ, এটা ভাবা যায় না। একটা মানা ইউজার হয়েও এলেক্স আমাদের মতো অউরা ইউজারদের থেকেও ভালো ভাবে ড্যাগারটা ব্যবহার করতে পারে। (জেয়াব)
অন্যদিকে এলেক্স তার স্পিডের সাহায্যে এবং ন্যাকরো ব্লেডের সাহায্যে খুব সহজেই মনস্টার গুলোকে হত্যা করছিলো। ড্যাগারের ব্লেডে হালকা ফায়ার তৈরী করে এলেক্স প্রতিটা স্লাস দিচ্ছিলো। যার প্রতিটাই মারাত্মক ছিলো।
"যাক আমি ভাবতেও পারি নি আমার লেভেল বৃদ্ধি করার সুযোগ পাবো এখানে।" (এলেক্স)
* * * * *
টাওয়ার অফ গ্লাটোনির বাইরে,
পাঁচ কিংডমের মধ্যে একটার কোনো এক জায়গার মধ্যে হঠাৎ একটা জায়গার মধ্যে একটা পোর্টাল দেখা দিয়েছিলো। যার মধ্য থেকে একজন রহস্যময়ী ব্যক্তি বের হয়। জায়গাটা একটা বিশাল শহর ছিলো। লোকটা সেখানে শহরটা থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পর পুরো শহরটার মধ্যে শুধু আগুনই দেখা যাচ্ছিলো। পিছনের দিকে লোকটা তাকিয়ে মুচকি একটু হেসে বলতে লাগলো,
-->> তাহলে দেখা যাক বিলজবাব কোথায় শুয়ে আছে।
* * *
To Be Continued
* * *
কেমন হলো জানাবেন।