#Demon_King#
পর্ব:৮৭
লেখকঃহৃদয় বাপ্পী
.
.
.
মাইরা তার চোখকে বিশ্বাস করতে পারছিলো না। সে এলেক্সের কাছে সম্পূর্ণ নতুন একটা ফ্যামিলিয়ার দেখতে পাচ্ছিলো। তাই নিজের চোখকে সে একবার ভালো করে মুছে নিলো। মুছে নেওয়ার পরে আবার দেখতে লাগলো, এবার আর সেখানে কোনো ফ্যামিলিয়ারই ছিলো না।
-->> আমি হয়তো ভুল দেখেছি। (মাইরা)
মাইরা তার চোখ বুঝার সাথে সাথে এলেক্স একলিপ্স বিস্ট ওয়ার্ল্ডে পাঠিয়ে দেই। যার কারনে মাইরা আর দেখতে পেলো না এবং দেখার ভুল ভেবে এটা নিয়ে আর কোনো কথা বললো না।
-->> কিন্তু আমরা কোথায় আছি এখন এলেক্স? (মাইরা)
মাইরা কোনো রকমে উঠলো এবং কথাটা বললো। সে আশে পাশ দেখতে লাগলো, জায়গাটা সে পূর্বে কখনো দেখে নি
-->> এটা কি কোনো আন্ডারগ্রাউন ড্যানজন, যা সম্পর্কে একাডেমি জানতো না? (মাইরা)
-->> প্রথমে আমারও এটা একটা ড্যানজন মনে হয়েছিলো, তবে এটা কোনো ড্যানজন নয়। বরং এক কথায় বলতে গেলে এটা একটা প্রিজন। (এলেক্স)
এলেক্সের কথা শুনে আরো অবাক হয়ে গেলো মাইরা। তার ব্রেইন এখানে সঠিক ভাবে কাজ করছিলো না। একে তো মাথা অনেক যন্ত্রনা করছে তার, আবার সেই সাথে তার কিছু লজ্জাজনক স্মৃতি মনে পরছে।
"আমি জানি না এসব স্মৃতি কোথায় থেকে আসলো, কিন্তু না আমি এগুলো করতে পারি না। আমি এলেক্সকে কিভাবে কিস করতে পারি? একটা ছেলেই তো মেয়েদের কিস করে, আর সেখানে আমি,,,, না না কি ভাবছি। এগুলো হয়তো স্বপ্ন ছিলো। তাইতো বাস্তব মনে হচ্ছে না আমার।" (মাইরা)
মাইরার চেহারা পুরো লাল হয়ে গেলো। সে লজ্জায় কথা বলতে পারছে না।
-->> তুমি ঠিক আছো মাইরা? (এলেক্স)
-->> হ্যাঁ, কিছুই হয় নি আমার। আমি কিছুই করি নি। (মাইরা)
মাইরা সাথে সাথে প্রশ্ন ঘোরানোর জন্য কথাটা বলে দিলো এলেক্সের মুখের উপরে। পাশ থেকে আরোহী হাওয়ার মধ্যে উড়ছিলো আর হাসছিলো। যা এলেক্সকে অনেক বিরক্ত করছিলো। একে তো সামনে একটা মেয়ে যাকে এই পরিস্থিতি বোঝাতে পারছে না আর পাশে একটা বাচ্চার মতো ব্যবহার করছে।
-->> দেখো আমাদের এই জায়গা থেকে বের হতে হলে তোমার স্পিরিট বিস্ট এবং তোমার সেই স্পেলের প্রয়োজন হবে। (এলেক্স)
-->> ট্রিভিয়া? (মাইরা)
-->> হ্যাঁ। (এলেক্স)
-->> তাহলে কি করতে হবে সেটা বলে দাও। (মাইরা)
-->> তোমার ফ্যামিলিয়ারকে প্রজেস করতে দিবে তোমাকে, এরপর উপরের দিকে তোমার ফ্লেম স্পেল ব্যবহার করবে। তাতে উপরে একটা রাস্তা তৈরী হবে। যা দিয়ে আমরা চলে যেতে পারবো। (এলেক্স)
-->> ঠিক আছে সবই বুঝলাম, কিন্তু আমরা তো উড়তে পারি না। উপরে কিভাবে যাবো? (মাইরা)
-->> সেটা নিয়ে তোমাকে ভাবতে হবে না। আমি কোনো না কোনো ব্যবস্থা করেই নিবো। (এলেক্স)
-->> ক্ষুধা লেগেছে অনেক, তাই আমার কাছে তেমন মানা এনার্জি নেই, তবে একটা স্পেল ব্যবহার করতে পারবো। কিন্তু তারপর হয়তো সেন্স হারিয়ে ফেলবো। (মাইরা)
-->> তোমাকে সে বিষয়ে চিন্তা করতে হবে। তোমাকে সুরক্ষিত ভাবে নিয়ে যাওয়ার দায়িত্ব আমার। (এলেক্স)
-->> তুমি যদি তখন আমার সাথে কিছু করার চেষ্টা করো না, তাহলে কিন্তু খবর আছে বলে দিলাম। (মাইরা)
এলেক্সের আবারো মাইরাকে অন্যরকম লাগছিলো। সে ডান সাইডে তাকিয়ে দেখে নিলো একবার। আরোহী হাওয়ার মধ্যেই উড়ছিলো,
"প্রজেস হয় নি ভূতটা দিয়ে, তাহলে এমন ব্যবহার করছে কেনো? মনে হচ্ছে প্রজেস এর সাইড ইফেক্ট এটা।" (এলেক্স ভাবছে)
একজন নোবেল ডিউকের কন্যার কাছ থেকে এরকম ব্যবহার আশা করা যাচ্ছে না। এলেক্স আর কিছু বললো না। সে চুপচাপ হয়ে গেলো। মাইরা এলেক্সের কথা শুনে তার ফ্যামিলিয়ারকে সামন করে ফেললো। একটা মানুষের মতো দেখতে প্রজাপ্রতিদের ডানা যুক্ত ছোট ফায়ার স্পিরিট যাকে দেখার সাথে সাথেই আরোহী তাকে জরিয়ে ধরতে এগিয়ে যাচ্ছিলো। মাইরা আরোহীকে দেখতে না পারলেও তার ফায়ার স্পিরিট তাকে দেখতে পেরে ভয় পেলো এবং মাইরার চুলের মধ্যে গিয়ে লুকিয়ে পরলো। নিজের ফায়ার স্পিরিট হওয়ার কারনে তার আগুনে মাইরার কোনো ক্ষতি হবে না বা হচ্ছে না।
মাইরা কোনো কথা বললো না। সে চোখ খোলার পর থেকেই এই জায়গা টা থেকে একটা ক্রিপি স্মেল পাচ্ছিলো। যার কারনে তার শরীরের লোম গুলোও বার বার দাঁড়িয়ে যাচ্ছিলো। তার ফায়ার স্পিরিট কোনো একটা জিনিস দেখেছে, যার জন্য মাইরার শরীরের লোম গুলো বার বার দাঁড়িয়ে যাচ্ছে। তাই সে এই জায়গা থেকে তারাতাড়ি বের হতে চাই।
"প্রজেস"
মাইরার ফায়ার স্পিরিট তাকে প্রজেস করে ফেললো। হঠাৎ মাইরার চুল গুলো আগুনে পরিণত হতে লাগলো।
"ফ্লেম"
মাইরা তার স্পেল ব্যবহার করলো। ফ্লেম স্পেল ব্যবহারের কিছুক্ষন পরই একটা রাস্তা তৈরী হয়েছিলো মাটির মধ্যে। যার মধ্যে তারা দুজন পরে গিয়েছিলো। তাই এখানেও এটা ব্যবহার করলে একটা রাস্তা তৈরী হওয়ার কথা। আর সেটা দিয়ে তারা বের হতে পারবে। মাইরার দুই হাত থেকে আগুন বের হতে লাগলো। তা একটা লাইন বরাবর উপরের পাথরে লাগলো। পুরো স্পেলটা শেষ হওয়ার সাথে সাথে মাইরা তার সেন্স হারিয়ে ফেললো। সেই সাথে তার ফ্যামিলিয়ারও বিস্ট ওয়ার্ল্ডে চলে গেলো। এলেক্স এখন শুধু অপেক্ষা করছিলো উপরের রাস্তা খোলার।
-->> সত্যিই কি আমরা এখান থেকে বের হতে পারবো? (আরোহী)
-->> হ্যাঁ, তুমি শুধু আমার বাম হাত শক্ত করে ধরবে। (এলেক্স)
একটা রাস্তা তৈরী হলো উপরে। যা দিয়ে অনেক উপরে উজ্জ্বল আলোও দেখা যাচ্ছিলো। এলেক্স জানে এটা বেশীক্ষন সময় খোলা থাকবে না। মাত্র কয়েক সেকেন্ডের ব্যাপার তারপর এটা আবার বন্ধ হয়ে যাবে। তাই এখন থেকে বের হওয়ার সাধারণ কোনো পথ নেই। তবে এলেক্সের জন্য এটা ভিন্ন একটা ব্যাপার।
"ফ্লাইট মুড"
এলেক্স তার আর্মার পরে ছিলো। যা তার থেকে খুলছে না কোনো ভাবেই। আর্মারটা সাধারণ ভাবে দেখা যায় না। জামা পরলে সেটার সাথে এডজাস্ট হয়ে যায়। তার সামনে সিস্টেম থেকে একটা মেসেজ আসলো,
-""মাস্টার ড্রাগন স্যুট আর্মারের ফ্লাইট মুড অন করেছেন।""-
এতোক্ষন তার শরীরে কোনো আর্মার দেখা যাচ্ছিলো না। তবে এবার একটা আর্মার দৃশ্যমান হলো। আর্মারটার ইনফো এখনো এলেক্স তার লেভেলে দেখতে পারে না। তবে একটা জিনিস সে জানে, যে আর্মারটা এলেক্সকে তার মাস্টার বলে মেনে নিয়েছে। যার জন্য এলেক্স এটাকে ব্যবহার করতে পারছে সব সময়ের জন্যই।
"ইনফো না জানার কারনে এটার রহস্য আমি জানি না, কিভাবে অদৃশ্যমান হয়ে আমার শরীরে আছে, কখনো মনেই হয় না আমি কোনো আর্মার পরেছি। এই সব কিছু হয়তো ইনফো দেখতে বুঝতে পারতাম।" (এলেক্স ভাবছে)
এলেক্স আর ভাবনায় সময় নষ্ট করলো না। সে তার ডান হাত দিয়ে মাইরাকে বুকের মধ্যে জরিয়ে ধরলো এবং বাম হাত দিয়ে আরোহীর হাত ধরলো। যেহেতু মাইরা সেন্স লেস হয়ে আছে তাই তাকে গুরুত্ব দিতে হবে এই সময়ে বেশী। প্রিজনের উপরে তৈরী রাস্তাটা নিজ থেকে বন্ধ হতে শুরু করেছিলো, তবে এলেক্স ড্রাগন স্যুট আর্মারের ফ্লাইট মুড অন করার ফলে তার পিঠের সাইডে দুটো ডানা বের হয়েছে। এটা তার নিজস্ব ডানা নয়, বরং ড্রাগন স্যুট আর্মারের মেকানিজম ছিলো। এলেক্স একটা লাফ দিয়ে, যার ফলে ড্রাগন স্যুট আর্মারটা তাকে তিন সেকেন্ডের মধ্যে নিচ থেকে প্রিজনের বাইরে নিয়ে গেলো। এলেক্স বাইরে আসার সাথে সাথে সুপার হিরোর মতো ল্যান্ডিং করলো।
* * * * *
এলিন, এনরি, এবা, জেবা, স্নেরা, ডুফেস এবং জেয়াব সেই জায়গাতেই ছিলো যেখানে এলেক্স এবং মাইরা নিখোঁজ হয়েছে। হাজারো মিটার মাটি খোঁড়ার পরও তাদের দুজনের সন্ধান পাওয়া যায় নি। তাইতো তারা অন্য কিছু খোঁজার চেষ্টা করছিলো। একটা প্যাটার্ন, কিংবা কোনো রকমের সিকরেট দরজা। সময়টা বিকালের ছিলো, একটু পরই তাদের আবার একাডেমিতে ফেরত যেতে হবে। আজকে এলেক্স এবং মাইরার নিখোঁজের চতুর্থ দিন শেষ হবে।
-->> কিছু কি পেলে তোমরা? (ডুফেস)
-->> না। আমরা তো পুরো এরিয়া কয়েকবার করে খুঁজেছি তারপরও কোনো সিকরেট দরজা বা প্যাটার্ন খুঁজে পাই নি। (এবা)
-->> আমার মনে হয় একাডেমির শিক্ষকরাই এলেক্স এবং মাইরাকে কিডন্যাপ করেছে। যার কারনে আমরা তাদের খুঁজে পাচ্ছি না। (এনরি)
-->> এটাও হতে পারে। তবে আমাদের আরেকটা চেষ্টা করে দেখা উচিত। ( স্নেরা)
-->> হ্যাঁ, স্নেরা ঠিক বলেছে। (জেয়াব)
-->> আই উইশ এলেক্স আর মাইরা এখন আকাশ থেকে উড়ে আমাদের সামনে চলে আসতো। (ডুফেস)
ডুফেস জোরে করে চোখ বন্ধ করে কথাটা বললো। আর তখনি তাদের সবার সামনে মাটিতে একটা গর্ত হলো। শ্নেরা সাথে সাথে সেটাকে চিনতে পারলো, তবে সে কিছু বলতে যাবে তার পূর্বেই গর্তের মধ্য থেকে কিছু একটা বের হলো যা আকাশের উপরে উড়তে লাগলো। সুপার হিরোর মতো ল্যান্ড করলো এলেক্স সবার সামনে মাইরাকে বুকে জরিয়ে ধরে। এলেক্স এবং মাইরা বাদে সবাই ডুফেসের দিকে তাকালো করা নজরে।
-->> আমি সুপার পাওয়ার পেয়েছি। আমার ইচ্ছা পূর্ণ হয়েছে। ওয়াও। (ডুফেস)
এবার আর কারো দৃষ্টি ডুফেসের দিকে গেলো না, বরং তারা এলেক্সের দিকে তাকালো। তবে এলেক্স এতোক্ষনে মাইরাকে নিয়ে একসাথে মাটির উপরে পরে গিয়েছে। ক্ষুধার্ত থাকার কারনে দুজনেই একে অপরের উপরে পরে রইলো। যা কারো কারো জন্য দেখার বিষয় ছিলো না।
-->> ওয়াও, তাহলে গর্তের ভিতরে এলেক্সের সাথে আমাদের টিম লিডারের সেটিং হয়ে গিয়েছে। (ডুফেস)
ডুফেসের কথাটা বলার সাথে সাথে স্নেরা তার দিকে আগুন চোখে তাকালো।
-->> আমি কি বললাম আবার? (ডুফেস)
এলিন এবং এনরি এগিয়ে গিয়ে মাইরাকে ধরলো। আর ডুফেস আর জেয়াব গিয়ে এলেক্সকে। এনরি তার হিলিং স্পেল ব্যবহার করলো মাইরার উপরে আর স্নেরা এলেক্সের উপরে।
-->> আমার মনে হয় ওরা ঠিক হয়ে যাবে কিছু বিশ্রাম আর খাবারের পরে। (এনরি)
-->> এই কয়েকদিন কিছুই খেতে পারে নি। তাই সেন্স হারিয়েছে দুজনেই। (স্নেরা)
-->> তাহলে ফেরা যাক একাডেমির দিকে। (এলিন)
* * * * *
(টাওয়ার অফ র্যাথ)
কোনো এক অজানা ইউনিভার্সের একটা প্লানেটের উপরে টাওয়ার অফ র্যাথ প্রথম দেখা দিয়েছিলো প্রায় তিনশত বছর পূর্বে। এটা শুধু এক স্পিসিজদের ওয়ার্ল্ড ছিলো না। মানুষ, এল্ফ, ডার্ক এল্ফ, মনস্টার, ভ্যাম্পায়ার ইত্যাদি স্পিসিজদের বাস ছিলো সেখানে। টাওয়ার প্রথম উদয় হওয়ার পর সবাই সুযোগ পায় অসীম ক্ষমতা অর্জনের। যার জন্য প্রতিটা স্পিসিজের মধ্যে বিশাল বড় যুদ্ধ তৈরী হয়। যুদ্ধের মধ্যেই একশত বছর পূর্বে একটা ব্যক্তি টাওয়ার অফ র্যাথকে ক্লিয়ার করতে পারে। আর সেই ব্যক্তির মাঝেই রেইনকার্নের হয় ডিম্যান প্রিন্স অফ র্যাথ এ.কে.এ সাটান। সকল ডিম্যান প্রিন্সদের মধ্যে শক্তিশালী ব্যক্তি হলেও ফাইটের মধ্য দিয়ে কখনো লুসিফারকে হারাতে পারে নি। তারপরও তাকে অন্যতম শক্তিশালী ব্যক্তি বলে ধারনা করা হতো।
সাটান রেইনকার্নেট হওয়ার পরে প্রথমত যে কাজটা সে করেছে তা হলো, তার টাওয়ার যে ওয়ার্ল্ডে ছিলো সেই পুরো ওয়ার্ল্ডকে ধ্বংস করেছে। টাওয়ারের বাইরে এখন জীবন হীন একটা প্লানেট পরে আছে যেখানে এক সেকেন্ডের জন্য বের হয়ে থাকা অসম্ভব। এরপরে সাটান তার টাওয়ারের মধ্যে সকল স্পিসিজ যারা টাওয়ারে প্রবেশ করেছিলো তাদেরকে নিজের গোলাম বানিয়ে তাদের উপরে রাজ করতে শুরু করেছে।
সাটান বিশাল বড় একটা ক্যাসেলের মধ্যে থাকে। যেখানের বিশাল বড় একটা রুমের মধ্যে সে প্রায় বিভিন্ন স্পিসিজের অর্ধশত সুন্দরী মেয়েদের সাথে শুয়ে ছিলো। সাটান উঠলো তার বিশাল বিছানা থেকে এবং তার রুমের বিশাল বড় বেলকনিতে গেলো। বেলকনিতে একটা টেবিল ছিলো যার উপরে বেশ কিছু দামী ওয়াইন ছিলো। একটা ওয়াইনের গ্লাসে ওয়াইন ঢেলে নিয়ে সাটান সেটা পান করতে করতে বাইরে ভিউটা দেখতে লাগলো।
-->> মনে হচ্ছে আমাকে এবার কাজে নামতেই হবে। বিলজবাব রেইনকার্নেট হওয়ার পূর্বেই জিডুরীকে আমার করতে হবে। (সাটান)
কথাটা বলেই সাটান তার ওয়াইনের গ্লাসকে বেলকনি থেকে ফেলে দিলো এবং আবার রুমের ভিতরে প্রবেশ করলো।
* * * * *
(একাডেমি)
এলেক্স এবং মাইরা একাডেমিতে ফিরেছে আজ দুই দিন হলো। তাদের ফেরার কথাটা পুরো কিংডমের মধ্যে ছড়িয়ে পরেছে যেভাবে তাদের নিখোঁজের খবরটা ছড়িয়েছিলো। আজ একাডেমির খুব গুরুত্বপূর্ণ একটা দিন হতে চলেছে সবার জন্যই, তাই সকাল সকাল সবাই একাডেমির বিশাল স্টেজ রুমের মধ্যে প্রবেশ করেছে। এলেক্স এবং মাইরা চারদিন নিখোঁজ থাকার সময়ে একাডেমি একটা বিশাল ইভেন্টের ব্যবস্থা করেছিলো। যা প্রতি পাঁচ বছর অন্তর অন্তর দেখা যায়।
-->> সবাইকে স্বাগতম। আমি ব্লু কিংডমের একাডেমির প্রিন্সিপাল। এখানের সবার এতোক্ষনে জেনে যাওয়া উচিত তোমরা কেনো এখানে এসেছো। তারপরও ছোট করে আমি বলে দিচ্ছি। একাডেমি প্রতি পাঁচ বছর অন্তর একটা বিশাল ইভেন্টের তৈরী করে, যেখানে একাডেমির প্রতিটা স্টুডেন্ট তাদের মেধা এবং পাওয়ার দেখাতে পারে। "টুর্নামেন্ট", হ্যা আমরা একটা টুর্নামেন্টের আয়োজন করি প্রতি পাঁচ বছর অন্তরে। যার মধ্যে সকল র্যাংকের স্টুডেন্টই অংশ নিতে পারবে এবং নিজেদের ট্যালেন্ট পুরো কিংডমের মধ্যে তুলে ধরতে পারবে। টুর্নামেন্টের নিয়ম গুলো আমাদের ভাইস প্রিন্সিপাল সবাইকে বুঝিয়ে দিবে। (প্রিন্সিপাল)
স্টেজ রুম বিশাল বড় একটা জায়গা। যার মধ্যে একাডেমির সকল স্টুডেন্টরা চার পাঁচ বার করে বসতে পারবে। স্টেজ রুমের স্টেজের উপরে সকল শিক্ষকরা দাঁড়িয়ে ছিলো যার মধ্য থেকে প্রিন্সিপাল কথাটা বললো। সাউন্ড স্টোনের ব্যবহার করে পুরো রুমের ভিতরে কথাগুলোকে ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছিলো, যাতে সবাই শুনতে পাই। প্রিন্সিপালের কথাটা শেষ হওয়ার পরে একজন মহিলা কথা বলতে শুরু করলেন। যিনি একাডেমির ভাইস প্রিন্সিপাল নামেও পরিচিত। ভাইস প্রিন্সিপাল বলতে লাগলো,
-->> হ্যাঁ স্টুডেন্টস, আমি তোমাদের ভাইস প্রিন্সিপাল। এবং এই টুর্নামেন্টের গাইড। এই টুর্নামেন্টকে মজার করতে সকল রকম ব্যবস্থা করা হয়েছে। যদিও মৃত্যুর মতো ভয়ানক জিনিস রয়েছে তারপরও আমরা কিছুটা সেফটির ব্যবস্থা করেছি। বেশী কথা না বলে আসল বিষয়ে আসা যাক। এই চারদিন হয়তো তোমরা সকল বিষয় সম্পর্কে জেনেই গিয়েছো, তাই বিস্তারিত বলছি না আমি। কারন তাতে তোমরাই বিরক্ত হবে। টুর্নামেন্টকে মোট তিন রাউন্ডে ভাগ করা হয়েছে। যার প্রতিটার নিয়ম প্রতিটা রাউন্ড শুরু হওয়ার পূর্বে বলে দেওয়া হবে। যেহেতু প্রথম রাউন্ড এখন শুরু হবে তাই প্রথমটার নিয়ম আমি ছোট করে বুঝিয়ে দিচ্ছি। (ভাইস প্রিন্সিপাল)
ভাইস প্রিন্সিপাল কিছুটা থামলো এটুকু বলে। সে আবারো বলতে লাগলো,
-->> প্রতিটা রাউন্ডেই টিম হিসেবে অংশ নিতে হবে। প্রতি টিমে দশজন স্টুডেন্ট থাকতে পারবে। দশজনের দশজনের কম নিয়ে অংশ নেওয়া যাবে তবে বেশী হওয়া যাবে না। চাইলে প্রথম রাউন্ডে এক টিম অন্য টিমের সাহায্য করতে পারবে, সেটা টিমদের উপরেই নির্ভর করবে। যাইহোক আসল কথায় আসা যাক। প্রথম রাউন্ডের নাম, "কয়েন কালেকশন"। আমাদের একাডেমির আন্ডারে থাকা প্রথম ফ্লোরের এক হাজার ড্যানজনকে আমরা প্রথম রাউন্ডের ভ্যানু হিসেবে সিলেক্ট করেছি। প্রতিটা ড্যানজনের মধ্যেই মনস্টার রয়েছে, তাছাড়াও সেসব ড্যানজনের মধ্যে রয়েছে কয়েন। কয়েন গুলে বিভিন্ন জায়গার মধ্যে লুকায়িত অবস্থায় আছে। হয়তো মাটির নিচে, কিংবা কোনো মনস্টারের পেটে। প্রতিটা টিমের কাজ হলো, তারা সেসব ড্যানজনের মধ্যে প্রবেশ করে কয়েকগুলো কালেক্ট করবে। এক টিম আবার অন্য টিমের কয়েনও ছিনিয়ে নিতে পারবে তাদেরকে হারিয়ে। কিন্তু বলে রাখি সকল শিক্ষকই সব স্টুডেন্টদের দেখবে। তাই কোনো স্টুডেন্টকেই হত্যা করা যাবে না। সেই সাথে বিপক্ষ টিমের কয়েন নিতে চাইলে অবশ্যই কোনো ড্যানজনের মধ্যে থাকতে হবে। ড্যানজনের বাইরে কেউ কয়নের জন্য বা অন্য কোনো কারনে ফাইট করে টুর্নামেন্ট থেকে বাতিল হয়ে যাবে সেই সাথে একাডেমি থেকে তাদের বের করে দেওয়া হবে। (ভাইস প্রিন্সিপাল)
সে আবারে থেমে নিলো একটু, তারপর আবার বলতে লাগলো,
-->> প্রতি রাউন্ডে র্যাংকের ব্যবস্থা করা হয়েছে। প্রথম রাউন্ডে যে টিম যত বেশী সংখ্যাক কয়েন সংগ্রহ করতে পারবে তাদের র্যাংকও তত বৃদ্ধি পাবে। তিন রাউন্ড শেষ হয়ে যাওয়ার পর প্রতি র্যাংকে থাকা টিমকেই রিওয়ার্ড দেওয়া হবে। যাদের র্যাংক বেশী থাকবে তারা বেশী ভালো রিওয়ার্ড পাবে। সব শেষে টপ পাঁচটা টিম পাবে ব্লু কিংডমের রয়েল প্যালেসের বিশেষ আমন্ত্রণ যেখানে তার রাজ্যের সকল নোবেল এমনকি কিং দের সাথে দেখা করার সুযোগ পাবে। সেই সাথে স্পেশাল রিওয়ার্ড তো আছেই। (ভাইস প্রিন্সিপাল)
ভাইস প্রিন্সিপালের কথা শেষ হলো। এবার প্রিন্সিপাল বলতে লাগলো,
-->> সবাই স্টার্ট লাইনে চলে যাও এখন তাহলে, ঠিক পনেরো মিনিট পরে শুরু হবে আমাদের টুর্নামেন্টের প্রথম রাউন্ড। (প্রিন্সিপাল)
প্রিন্সিপালের কথাটা শেষ হওয়ার পরই সকল স্টুডেন্ট বের হলো এবং একাডেমির গেইটের দিকে রওনা দিলো।
-->> ওয়াও এলেক্স, আমরা তো তাহলে অনেক সুন্দর একটা গেম খেলতে যাচ্ছি। (আরোহী)
আরোহী এলেক্সকে কথাটা বললো। সে সকল স্টুডেন্টদের উপর দিয়ে উড়ছিলো এবং নাচানাচি করছিলো। কেউ তাকে দেখতে পারছিলো না। সেই জন্য তার অনেক ভালো লাগছিলো।
"আমার বলতে মন চাচ্ছে ও আমার সাথে এখানে কি করছে। কিন্তু কিছু বলতে পারছি না। এখানে কথা বললে হয়তো সবাই আমাকে পাগল মনে করবে।" (এলেক্স ভাবছে)
এলেক্স ভেবেছিলো আরোহী সেই জায়গা থেকে মুক্ত হওয়ার পর নিজের মতো কোনো জায়গায় চলে যাবে। কিন্তু তেমন কিছুই হয় নি। আরোহী রাতের সময় যদিও মাইরাদের কাছে চলে যায়, তবে দিনের সবটা সময় এলেক্সের কাছেই থাকে। এলেক্স আপাতোতো এই বিষয়কে ভোলার চেষ্টা করতে লাগলো,
"একাডেমির অনেক শক্তিশালী ড্যানজন রয়েছে। আমার মনে হয় এই টুর্নামেন্টের মাধ্যমে আমি অনেকটা লেভেল বৃদ্ধি করতে পারবো।" (এলেক্স ভাবছে)
সবাই চললো টুর্নামেন্টে অংশ নেওয়ার জন্য। এলেক্সের টিম প্রস্তুত ছিলো। মাইরা, এলিন, এনরি, স্নেরা, এবা, জেবা, ডুফেস, হ্যারি, জেয়াব এবং এলেক্স স্টার্ট লাইনে চলে গেলো।
* * *
To Be Continued
* * *
কেমন হলো জানাবেন।