#Demon_King#
পর্ব:১২৪
লেখকঃ হৃদয় বাপ্পী
.
.
.
টাওয়ার অফ গ্লাটোনি,
বর্ডার টাউন,
রাত কেটে গেলো সবারই একটা বিশাল ঘুমের কারণে। যেহেতু পরের দিন সকালে পোর্টাল ব্যবহার যোগ্য হবে তাই সকালের নাস্তা শেষ করে সবাই পোর্টাল হলের দিকে রওনা দিলো। আবারো বিশাল দরজা পার করে বিশাল একটা হলের মধ্যে চলে এসেছে। যেখানে একটা টেবিলের উপরে বসা ছিলো সুন্দরী এক মহিলা। স্যাম সবার সামনে ছিলো আর বাকিরা তাদের পিছনে। তাই সমস্ত কথা স্যামকেই বলতে হচ্ছিলো।
-> ম্যাম আমার মনে হয় আমাদের এখন টাওয়ারের বাইরে যাওয়ার সময় হয়ে এসেছে। (স্যাম)
-> হ্যাঁ, আমাদের মানা স্টোনের সাপ্লাই চলে এসেছে। তাই সব কিছু ঠিক ঠাক আছে এখন। তোমরা চাইলে এখনি যেতে পারো।
মহিলাটা তার চোখের চশমা খুলে টেবিলে রেখে কথাটা বললো। টেবিলের উপরে একটা বেলের মতো হলুদ একটা বস্তু ছিলো যেটার উপরে ক্লিক করাতেই একটা ঘন্টা বেজে উঠলো। আর সাথে সাথে টেবিলের সাথে থাকা ২০ মিটার জায়গা হঠাৎ উপরের দিকে উঠতে শুরু করলো। উপরেও সমান জায়গা ফাকা ছিলো যেখানে গিয়ে মিলিত হলো টেবিল সহ নিচ থেকে উঠা জায়গাটা। উপরের জায়গাটাকে সেকেন্ড ফ্লোর বলা হয় যেখানে যাওয়ার জন্য সে রুমে কোনো সিঁড়ি ছিলো না। তাই সর্টকার্টেই চলে আসছে হান্টার হাউজের ভাইস লিডারের সাহায্যে। উপরের ফ্লোরে আসার পর সবাই লক্ষ করলো এই রুমের মধ্যে একটা পোর্টাল ছিলো যেটার আকার বিশাল ছিলো। পোর্টালটা অন্যান্য পোর্টালের মতোই ছিলো যেটা দেখতে একটা গেইটের মতো ছিলো। চতুর্ভুজ আকারের একটা পোর্টাল যেটা একটিভ করা হয়েছে। আর পোর্টাল একটিভ হওয়ার ফলে তার মধ্যে পানির মতো কিছু একটা দোল খাচ্ছিলো। এই পানির মতো অংশের ভিতরে প্রবেশ করলেই এক জায়গা থেকে অন্য একটা জায়গার মধ্যে চলে যাওয়া সম্ভব।
-> এখন তোমরা এটা দিয়ে প্রবেশ করলেই হলো। আর আমি চাইবো আমার উপদেশটা মাথায় রাখবে।
মহিলাটা টেবিলের পাশে থাকা চেয়ার থেকে উঠলো না। সেখানে বসেই সে কথাটা বললো। স্যাম তার টেবিল পার করে বাকিদের নিয়ে মহিলার পিছনে থাকা বিশাল পোর্টালের দিকে চলে গেলো। সেখানে বেশ কিছু গার্ড এবং কিছু ম্যাজিসিয়ান ছিলো যারা পোর্টালের যে স্তম্ভ রয়েছে সেখানে ম্যাজিক স্টোন বসাচ্ছিলো। তাদের কাজ প্রায় শেষের দিকে তাই স্যাম এবং বাকিরা দ্রুতই পোর্টালের মধ্যে প্রবেশ করলো। সেখানের কারোর জন্যই পোর্টাল ব্যবহারটা প্রথম অভিজ্ঞতা ছিলো না, তাই সবাই স্বাভাবিক ভাবেই পোর্টালের ভিতরে প্রবেশ করলো এবং টাওয়ার অফ গ্লাটোনি থেকে বেরিয়ে আসলো।
ফায়ার এম্পায়ার,
এগনোলেনিয়ার মধ্যে মোট পাঁচটা এম্পায়ার রয়েছে। যাদের মধ্যে একটা হলো ফায়ার কিংডম। পাঁচ এম্পায়ারের মধ্যে সবচেয়ে বড় এবং শক্তিশালী এম্পায়ার হিসেবে ধরা হয় এটাকে। যদিও শক্তির দিক দিয়ে দেখতে গেলে এখন লাইটনিং এম্পায়ার খুব দ্রুত পিছনে ফেলে দিচ্ছে ফায়ার এম্পায়ারকে। সে যা হোক, টাওয়ারের মধ্য থেকে রোজ রোজ মানুষ বের হয় না এমনকি রোজ রোজ ভিতরে প্রবেশ করে না। যদিও অনেক সময় দেখা যায় এক সাথে অনেক মানুষের প্রবেশ এবং বের হওয়া দেখা যায় তবে সে সময় এখন নয়। তাই বাচ্চাদের একটা গ্রুপ বের হয়েছে টাওয়ার থেকে এটা দেখে টাওয়ারের বাইরের যে গার্ড ছিলো তারা অনেকটা অবাক হয়েছে।
-> তাহলে এটাই আমাদের পূর্ব পুরুষের জায়গা ছিলো? সত্যি এটা টাওয়ারের মধ্যকার পরিবেশ থেকে অনেকটা ভিন্ন। (হেয়া)
হেয়া আশে পাশের পরিবেশের দিকে তাকিয়ে কথাটা বললো। টাওয়ারের মধ্যকার পরিবেশ যদিও দেখতে সুন্দর, তবে ভিতরে প্রায় সব কিছুই ডিমনিক এনার্জি দিয়ে ভরা। তাই সেটা থেকে প্রাকৃতিক কোনো অনুভব পাওয়া যায় না। তাই এই প্রথম আসল প্রাকৃতিক দৃশ্য দেখতে পেয়ে অবাক না হয়ে পারলো না হেয়া।
-> এটা স্বাভাবিক, টাওয়ারের মধ্যে আমরা স্পেশাল একটা জায়গার মধ্যে আছি যেখানে প্রতিনিয়ত মনস্টারের জন্ম হচ্ছে। আর এই ওয়ার্ল্ডে শুধুমাত্র কিছু জায়গা ব্যতীত মনস্টারের দেখা পাওয়া যায় না। তাই এই জায়গার আবহাওয়াটা ভিন্ন আমাদের ভিতরের আবহাওয়া থেকে। (স্যাম)
-> হ্যা আমি লক্ষ করেছি এখানে আসার পর থেকে। বায়ুতে মানার পরিমাণও কম টাওয়ারের তুলনায়। (হেয়া)
প্রতিটা এনার্জি ইউজার তার নিজস্ব ধরনের এনার্জি মূলত মোট তিন ভাবে গ্রহন করতে পারে। এক সরাসরি বায়ু থেকে যেটার জন্য অনেকটা সময়ের প্রয়োজন হয়। এই সময়কে দ্রুত করার জন্য অনেকে মেডিটেশন ব্যবহার করে। দুই নিজস্ব এনার্জির এনার্জি স্টোন ব্যবহার করা। প্রতিটা এনার্জি স্টোনের মধ্যে বিপুল পরিমাণের এনার্জি সংগ্রহিত হয়ে থাকে। বায়ু থেকে এনার্জি এবজোর্ব করার থেকে এটার সাহায্যে দ্রুত এনার্জি এবজোর্ব করা যায়। এনার্জি স্টোন কাছে থাকলে মেডিটেশন ব্যবহার করলে দ্রুত এনার্জি এবজোর্ব হয়। এবং সবশেষে কোনো অ্যালকেমিস্ট এর তৈরি পিল ব্যবহার করে। টাওয়ার এবং টাওয়ারের বাইরে অনেক অ্যালকেমিস্ট খুঁজে পাওয়া সম্ভব। একজন প্রাণ ইউজার মূলত দুটো রাস্তা বেছে নিতে পারে। এক হলো হিলার, দুই হলো অ্যালকেমিস্ট। একজন অ্যালকেমিস্ট অনেকটা রেয়ার হয়ে থাকে। কারণ তারা বিভিন্ন ধরনের ভয়ানক পিল বা মেডিসিন তৈরি করার সামর্থ্য রাখে। কিছু কিছু পিল রয়েছে যা এক বা দুদিনের সময়ের এনার্জি মাত্র চার কিংবা পাঁচ ঘন্টার মধ্যেই ফুল করে দিতে পারে। তাই অধিকাংশ সময়ে মানুষ তাদের এনার্জি শেষ করলে অ্যালকেমিস্ট পিল ব্যবহার করে থাকে। অবশ্য এনার্জি এবজোর্ব করার আরো কয়েকটা পথ আছে যেগুলো সবাই ব্যবহার না করলেও একটা আছে যেটা সবাই ব্যবহার করে। সেটা হলো ঘুম। যদিও ঘুম প্রথমটার মধ্যেই পরে কারণ এই সময়ে বায়ু থেকে এনার্জি একা একাই এবজোর্ব হয় শরীরে। যায়হোক আসল বিষয়ে আসা যাক।
হেয়া মূলত যে বিষয়টা উল্লেখ করেছে সেটা হলো, প্রতিটা ব্যক্তিই বায়ু থেকে এনার্জি এবজোর্ব করতে পারে। যেটার কারণে এক জায়গার বায়ুতে কতটা এনার্জি রয়েছে সেটা তাদের মুখস্ত হয়ে গিয়েছে। তাই সে জায়গার থেকে কম এনার্জির জায়গাতে প্রবেশ করলে সেটা অনুভব করা কষ্টের কোনো ব্যাপার না। বিষয়টা অনেকটা বেশি বাতাসের জায়গা থেকে কম বাতাসের জায়গাতে যাওয়ার পর যে অনুভূতি হয় সেরকম। যেহেতু টাওয়ারের ভিতরে এনার্জির পরিমাণ বেশী তাই সেখানে মনস্টারের জন্মও হয়ে থাকে এবং সে এনার্জি এবজোর্বের মাধ্যমে মানুষ দ্রুত শক্তিশালী হতে পারে। এজন্যই তো টাওয়ারের বাইরের থেকে ভিতরের মানুষেরা একটু বেশি শক্তিশালী এবং সবাই টাওয়ারের ভিতরে প্রবেশ করার চেষ্টা করে।
-> এখানে এনার্জির পরিমাণ কম হলেও ধারণা করা হয় ডিমনিক ফরেস্টের একদম মধ্যকার জায়গার মধ্যে যে এনার্জি রয়েছে ততটা এনার্জি আমাদের টাওয়ারের মধ্যেও নেই। (স্যাম)
-> এটা তো সেই পাগলটার একটা ভিত্তিহীন থিওরি। আজ পর্যন্ত কেউ ডিমনিক ফরেস্টের একদম মাঝখানে প্রবেশ করে নি, তাই সে কিভাবে অনুমান করলো এটা? (হেয়া)
-> পাগলের থিওরি বলতে? (এবা)
-> আমাদের কিংডমের মধ্যে একজন গবেষক ছিলেন। তার গবেষণার মূল বিষয় ছিলো টাওয়ারের রহস্য নিয়ে। সারা জীবনে সে ডার্ক এট্রিবিউট ব্যতীত অন্য কোনো এট্রিবিউট আনলক করতে পারে নি। তাই সে তার জীবনের পুরোটা সময় গবেষণার উপরে দিয়েছে। সে বিভিন্ন ধরনের থিওরি দিয়েছে আমাদের যেটা দিন শেষে সত্যই হয়েছে। কিন্তু তার শেষ থিওরিটা কারোরই পছন্দ হয় নি। সে বলেছিলো টাওয়ারের পুরো এনার্জি একত্র করলেও ডিমনিক ফরেস্টের একদম মাঝখানের এনার্জির সমান হবে না। কেউ এ পর্যন্ত ডিমনিক ফরেস্টের একদম মাঝখানের পয়েন্টে যেতে পারে নি। সেখানে একজন ডার্ক এট্রিবিউটর যে একটা সাধারণ স্পেলও ব্যবহার করতে পারে না, তার মুখ থেকে এটা শোনার পর আমাদের কিংডমের সকল নোবেলই ক্ষিপ্ত হয়ে যায় এবং তাকে হত্যা করার সিদ্ধান্ত করে। তারা কিছুতেই মেনে নিতে পারছিলো না যে টাওয়ারের ভিতরের থেকে বাইরের জায়গার এনার্জি বেশি হবে। কারণ সেটা হলে তো টাওয়ারের ভিতর থেকেও সবাই বাইরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিবে যেটা কিংডমের জন্য ভালো লক্ষণ ছিলো না। (স্যাম)
-> তুমি এখনো সেই ফালতু গবেষকের কথায় বিশ্বাস করে আছো। (হেয়া)
-> আমি বিশ্বাস করছি না। বরং আমার লক্ষ একটাই, একদিন এতোটা শক্তিশালী হয়ে উঠবো যেনো ডিমনিক ফরেস্টের মাঝখানে কি আছে সেটা দেখতে পারি এবং সে লোকটার কথা আদৌও সত্য না মিথ্যা সেটা সবার সামনে প্রকাশ করতে পারি। (স্যাম)
স্যাম অনেকটা কনফিডেন্স নিয়ে কথাটা বললো। এখানে কেউই একটা বিষয় জানে না যেটা স্যাম জানে। তাই স্যাম মনে মনেই ভাবতে লাগলো,
❝সবাই আমাকে ডিউকের পুত্র ভাবলেও আমি জানি আমি কে? আমার বাবার কথাকে আমি সত্য প্রকাশ করেই ছারবো।❞ (স্যাম ভাবছে)
যেহেতু স্যাম এই জায়গাকে চিনে না তাই পথ দেখানোর দায়িত্ব চলে আসলো মাইরার উপরে। যেহেতু সে এ টিমের অফিসিয়াল লিডার, তাই সবাইকে নিয়ে মেফাসে রওনা দিলো কোনো রকম সময় নষ্ট না করেই। টাওয়ার থেকে বের হওয়ার কারণে সবার নজরই তাদের উপরে ছিলো। কিন্তু চাদরের মতো রোব পরার কারণে তাদের চেহারা দূর থেকে দেখা একটু কষ্টকর হচ্ছিলো। যেহেতু ভিতর থেকে তারা বাইরে এসেছে তাই এখানে কোনো রকম পরিচয় দেখানোর প্রয়োজন হবে না তাদের। বরং এখান থেকে ভিতরে যাওয়ার সময় তাদেরকে নিজেদের পরিচয় দেখিয়ে ভিতরে প্রবেশ করতে হবে। তাই সবাই দ্রুত বের হয়ে গিয়েছে। জায়গাটা ফায়ার এম্পায়ারের একদম মধ্যখানে ছিলো। যেখানে টাওয়ারকে কেন্দ্র করে এম্পায়ারের ক্যাপিটাল গঠিত হয়েছে। টাওয়ারের গেইটের সামনেই বিশাল একটা রাস্তা ছিলো যেখানে অনেক ধরনের ক্যারেজ দাঁড়িয়ে ছিলো। যেহেতু তাঁদেরকে দ্রুত যেতে হবে এখান থেকে তাই তারা দুটো ক্যারেজ ঠিক করলো এবং একটার মধ্যে ছেলেরা এবং একটার মধ্যে মেয়েরা বসে মেফাসের উদ্দেশ্যে রওনা হলো।
মেয়েদের ক্যারেজে,
-> এম্পায়ার থেকে আমাদের গন্তব্যে এভাবে যেতে কতদিন লাগবে? (হেয়া)
-> তিন থেকে চারদিন যদি ফুল স্পিডে যাওয়া হয় তাহলে। (মাইরা)
-> কি? তিন থেকে চারদিন? এতোদিন লাগবে কেনো? এর থেকে আমরা একটা টেলিপোর্টেশন পোর্টাল ব্যবহার করতাম। (হেয়া)
-> টাওয়ারের ভিতরের মানুষের মতো বড়লোক না এখানের সবাই। টেলিপোর্টেশন পোর্টাল এবং সার্কেল একবার ব্যবহার করতে যে আইটেম গুলোর প্রয়োজন হয় সেগুলো টাওয়ার চড়া দামে বিক্রি করে আমাদের কাছে। তাই যে কেউ এসব ব্যবহার করতে পারে না। মূলত একাডেমি এবং রয়েল পরিবারই মাসে হাতে গোনা কয়েকবার ব্যবহার করার সাহস পায়। সেখানে আমরা যদি বলি আমরা টেলিপোর্টেশন পোর্টাল ব্যবহার করবো তাহলে সর্বপ্রথম আমাদের আটক করবে তারা। (এলিন)
এলিন কোল্ড একটা লুক নিয়ে হেয়ার দিকে তাকিয়ে উক্ত কথাটা বললো। হেয়া সাথে সাথে উত্তর দিলো,
-> আমি বুঝি না প্রতিবার আমার দিকে তাকালে তোমার শরীর থেকে এভাবে জমে যাওয়া বরফের ধোঁয়ার মতো বের হয় কেনো? ও আমি বুঝতে পারছি, সেদিন এলেক্সের সাথে আমি নাচার সুযোগ পেয়েছি এজন্য হয়তো সেটা মেনে নিতে পারছো না। (হেয়া
হেঁসে কথাটা বললো। এখানে এলিন ঝগড়া শুরু করতে চাচ্ছিলো কিন্তু সে বাচ্চাদের মতো ঝগড়া না করে একটা বিহীত করতে চাইলো বিষয়টার। তাইতো সে তার হাতের ব্রেসলেট এর মধ্য থেকে একটা আইটেম বের করলো।
-> এটা একটা আইটেম যেটা অনেক ছোট সময়ে আমি পেয়েছিলাম আমার বাবার থেকে। এখনো একবারও এটা ব্যবহারের সাহস আমি পায় নি। তবে আমার মনে হচ্ছে এটা ব্যবহারের ভালো একটা সময় এটা। (এলিন)
এলিন একটা গোল স্বচ্ছ কাঁচের বল বের করেছে যেটার আকার একটা ফুটবলের মতোই। জিনিসটা তুলোর মতো হালকা হওয়ার কারণে মনেই হচ্ছিলো না এলিন হাতে কিছু নিয়েছে। আইটেমটা সম্পর্কে কেউই কোনো কিছু জানে না। তাই সবাই আগ্রহ নিয়ে এলিনের দিকে তাকালো,
-> এটা একটা আইটেম যা ব্যবহার করলে একজন ব্যক্তি তার ভবিষ্যৎ এর সম্ভাব্য একটা দৃশ্য দেখতে পারবে। আমাদের শুধু এটার উপরে হাত রেখে নিজেদের এনার্জি এর মধ্যে প্রয়োগ করতে হবে এবং আমরা যে দৃশ্যটা দেখার চেষ্টা করবো সেটার সম্ভাব্য ভবিষ্যৎ বলের মধ্যে দেখাবে। (এলিন)
-> সম্ভাব্য ভবিষ্যৎ বলতে? (জেবা)
-> সম্ভাব্য ভবিষ্যৎ বলতে সে ভবিষ্যৎ হওয়ার সম্ভবনা রয়েছে। যেহেতু এ পর্যন্ত কোনো আইটেমই কারো ভবিষ্যৎ সঠিক ভাবে প্রেডিক্ট করতে পারে নি তাই আমরা একটা ধারণার মধ্যে এসেছি যে ভবিষ্যৎ পরিবর্তনশীল। তাই কোনো আইটেমের সাহায্যে আমরা আমাদের ভবিষ্যৎ দেখতে সেটা হওয়ার সম্ভবনা ৫০%। আর না হওয়ার সম্ভবনা ৫০%। এজন্যই এটাকে সম্ভাব্য ভবিষ্যৎ বলা হয়। (এলিন)
-> ও তাহলে বুঝতে পেরেছি। তাহলে আমার কাছে দাও, আমি দেখবো প্রথমে। (এবা)
এলেক্সের কথা উঠার পর যেহেতু এলিন এটা বের করেছে, তাই সবারই মনে একটা বিষয় খেলা করছিলো। সেটা হলো ভবিষ্যতে তাদের জীবন সঙ্গী কে হবে। অবশ্য মেয়েরা এ বিষয় নিয়েই বেশি ফাইট করে। যদিও এবা, জেবা এবং মুখ ঢাকা মেয়েটার মধ্যে তেমন প্রতিযেগিতার ভাবনা ছিলো না, তবে এলিন, মাইরা, হেয়া এবং স্নেরার চোখে চোখে চলছিলো যুদ্ধ। এবা তার এলিনের হাত থেকে গোল বলটা নিলো এবং সেটার উপরে নিজের হাত রেখে এনার্জি প্রয়েগ করতে লাগলো। তার মনের ভিতরে যে ভাবনা ছিলো সেটা সে ভাবতে লাগলো।
❝প্লিজ, আমার ভাগ্য যেনে চেইনের সাথে থাকে। প্লিজ আমার ভাগ্য যেনো চেইনের সাথে থাকে।❞ (এবা ভাবছে)
এবা এর হাতে থাকা বলটা এবার উজ্জ্বল হয়ে গেলো এবং সেটার মধ্যে কিছু একটা দৃশ্য মান হলো। ভিতরে এবা এবং একটা ছেলেকে দেখা যাচ্ছিলো। যদিও এবাকে ক্লিয়ার দেখা যাচ্ছিলো কিন্তু ছেলেটার চেহারা দেখা যাচ্ছিলো না ক্লিয়ার ভাবে।
-> এটা মানে বুঝলাম না। এই আইটেম কি আমাদের জীবন সঙ্গী দেখাবে না? (এবা)
-> হ্যাঁ দেখাবে, কিন্তু এখানে কিছু লিমিট আছে। যদি সে ব্যক্তিকে তুমি কখনো না দেখে থাকো এখনি যার সাথে ভবিষ্যৎ তোমার বিয়ে হবে, তাহলে তার চেহারা ক্লিয়ার ভাবে দেখা যাবে না। (এলিন)
এলিনের কথায় এবা কিছুটা হতাশ হলো। যেহেতু সে চেইনকে আশা করেছিলো তার জীবন সঙ্গী হিসেবে, তাই এটা সত্যি তাকে কিছুটা দুঃখ দিলো। তারপরও সে কনফিডেন্স হারালো না, কারণ এটা মাত্র একটা ভবিষ্যৎ ছিলো যেটাকে চেঞ্জ করার সুযোগ রয়েছে। এবার হাত থেকে তার টুইন বেন জেবা বলটা নিলো এবং তাতে নিজের এনার্জি প্রয়োগ করলো। এবারো একই বিষয় হলো। জেবার চেহারা দেখা যাচ্ছিলো কিন্তু তার পাশে যে ছেলেটা ছিলো তাকে দেখা যাচ্ছিলো না।
-> মনে হচ্ছে তোমাদের জীবন সঙ্গীর সাথে এখনো তোমাদের দেখা হওয়ার ভাগ্য হয় নি। (হেয়া)
হেয়া তাদেরকে কথাটা বলে জেবার থেকে বলটা নিয়ে তাতে নিজের হাত রাখলো। বলের মধ্যে নিজের এনার্জি প্রয়োগ করার সাথে সাথে সেটা উজ্জ্বল হয়ে উঠলো। বলের মধ্যে হেয়া নিজেকে এবং একটা ছেলেকে দেখতে পেলো। যদিও সে আশা করছিলো সে ছেলেটা এলেক্স হবে তারপরও হেয়া হতাশ হলো না।
❝আমি ভালো করেই জানি আমার ভাগ্য এলেক্সের সাথে মিলবে না, তারপরও আমার বাবার উপরে আমি সিওর। তাই যেকোনো সময় ভবিষ্যৎ চেঞ্জ হতে পারে। তবে আমি বুঝতে পারছি না এই ছেলে কে? এটাকে তো পূর্বে দেখেছি বলে মনে হয় না।❞ (হেয়া ভাবছে)
হেয়ার পাশে একটা ছেলে ছিলো যার চেহারা একদম ক্লিয়ার ছিলো। হ্যান্ডসাম চেহারা যেটাকে বর্তমানের এলেক্সের থেকে অনেক আকর্ষনী লাগছিলো, তাকে হেয়া এই প্রথমবার দেখলো। যেহেতু পূর্বে দেখে নি তাকে তাই হেয়া বুঝতে পারলো না সে কে ছিলো। ডিউকের কন্যা হওয়ার সুবাধে অনেক ছেলেদেরই দেখেছে সে। কিন্তু এটা সে ছেলে গুলোর মধ্যে কে ছিলো সেটা খুঁজে পাচ্ছিলো না সে।
-> মিস হেয়ার ভবিষ্যৎ সঙ্গী তো অনেক হ্যান্ডসাম। আমার তো এখনি হিংসা হচ্ছে। (স্নেরা)
স্নেরা, মাইরা এমনকি এলিনও কিছুটা স্তস্তি অনুভব করলো। কারণ তাদের মধ্য থেকে একজন প্রতিযোগী আপাতোতো শেষ হয়েছে। হেয়া কিছুটা রাগ করে বলটা স্নেরার হাতে তুলে দিলো। স্নেরা সে বলটা হাতে নিয়ে সেটার মধ্যে এনার্জি প্রয়োগ করায় সেটা উজ্জ্বল হয়ে উঠলো। যা সবাইকে অবাক করে দিলো। সেই সাথে মাইরার ফলাফলও সবাইকে অবাক করেছে। যা সবার মুখের কথা আঁটকে ফেলেছে। কিন্তু কারো ভবিষ্যৎই মনের মতো ছিলো না। সবাইকে হতাশ হতে হয়েছে।
-> যেহেতু এটা মাত্র সম্ভাব্য ভবিষ্যৎ ছিলো তাই আমাদের হতাশ হলে চলবে না। আমাদের ভবিষ্যৎ চেঞ্জ করার দায়িত্ব আমাদের হাতে। তাই কারো মনে মানুষ থাকলে তাকে পাওয়ার সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাও। হয়তো সে তোমারই হবে। (মাইরা)
টিম লিডার হওয়ার সুবাধে মাইরা লেকচার দিয়ে সবার কনফিডেন্স বৃদ্ধি করে দিলো। অপর দিকে বলটা এখন এলিনের হাতে ছিলো। যে বলটা হাতে নিয়ে সেটাতে এনার্জি প্রয়োগের সাথে সাথে সেটা উজ্জ্বল হয়ে গেলো। কিন্তু সেখানে এলিন ব্যতীত অন্য কাউকে কেউ দেখতে পারলো না।
-> আমার মনে হয় আমাদের আইস কুইন তার কোল্ড হৃদয় নিয়ে সারাজীবন একাই থাকবে। সে জীবনে আগুন জ্বালানোর মতো কেউ থাকবে না। হাহাহাহাহা। (হেয়া)
বিষয়টা যদিও এলিনকে একটু হতাশ করেছে। তারপরও যেহেতু তার ভবিষ্যতে কেউ ছিলো না, তাই অন্যান্যদের থেকে সে সিওর ছিলো যে তার ভবিষ্যতে এলেক্স বাদে কেউ আসবে না। যেটার কারণে মনের মধ্যেই কিছুটা হেসে উঠলো সে। ক্যারেজের মধ্যে সবাই নিজেদের ভবিষ্যৎ দেখে নিলেও শুধু মুখে কাপড় পরা মেয়েটা বাকি ছিলো।
-> ও আমি তো তোমার নাম জিজ্ঞাসা করতেই ভুলে গিয়েছি। এটা আসলেই আজব যে এতোক্ষণ তোমার সাথে আছি তারপরও তোমার নাম জানি না। (মাইরা)
-> আমার নাম মিও।
মুখে কাপড়টা খুলে মিও কথাটা বললো। যদিও তাদের পূর্বে দেখা হয়েছিলো তারপরও কেউ মিওকে চিনতে পারলো না। কেনো পারলো না সেটা তো কেউ চিনতে পারলো না বলেই কারো মনে প্রশ্নে জাগলো না। এলিন তার হাতের বলটা মিও এর হাতে তুলে দিলো এবং বলতে লাগলো,
-> তোমার ভবিষ্যৎ এর কোনো অংশ দেখতে চাইলে ব্যবহার করে দেখো এটা। (এলিন)
-> আমার জীবন জঙ্গী দেখার কোনো ইচ্ছা নেই। কারণ সে অনেক পূর্বেই মারা গিয়েছে। তার মৃত্যুতে ব্লাডের সমুদ্র তৈরি হয়েছিলো। (মিও)
মিও এর কথাটা কেউ বুঝলো না। সে হয়তো মজা করছিলো এটাই ধারণা সবার। কারণ কারো ব্লাডে সমুদ্র কিভাবে তৈরী হয়। যেহেতু মিও বলেছে তার প্রিয় মানুষটা মারা গিয়েছে, তাই তাকে কিছু বলে আর কেউ দুঃখ না দিয়ে নিরবতা পালন করলো সবাই।
রাতের সময়,
ক্যারেজ চলতে চলতে রাত হয়ে গিয়েছে। শুধুমাত্র মিও ই ছিলো যে এখনো বলটা ব্যবহার করে নি। তাই এলিনও সেটাকে আর ব্রেসলেটের মধ্যে প্রবেশ করায় নি বরং সামনের ছোট টেবিলের মধ্যে রেখে দিয়েছিলো। ক্যারেজের মাঝে গোল করে বসার ব্যবস্থা ছিলো যার মাঝখানে ছোট চায়ের টেবিল ছিলো একটা। রাত হওয়ার কারণে সবাই ঘুমিয়ে গিয়েছে। এ অবস্থায় টেবিল থেকে মিও বলটা হাতে নিলো এবং তার মধ্যে এনার্জি প্রয়োগ করলো। সাথে সাথে সেটা উজ্জ্বল হয়ে গেলো এবং একটা দৃশ্য তার মধ্যে দৃশ্যমান হলো। একটা ছোট লাল কালারের ড্রাগন দেখা যাচ্ছিলো সেটার মধ্যে, যেটা দেখে মিও এর হাত থেকে বলটা পরে গেলো।
* * *
To Be Continued
* * *
কেমন হলো জানাবেন।