আসসালামু আলাইকুম। গল্প প্রতি শনিবার, সোমবার এবং বুধবার রাত ১০টা থেকে ১১ টার মধ্যে ওয়েবসাইটে পোস্ট হবে।

Want Premium Membership!

Demon King পর্বঃ ১৪০

হৃদয় বাপ্পী
Please wait 0 seconds...
Scroll Down and click on Go to Link for destination
Congrats! Link is Generated
[প্রথমেই বলি গল্পটা পুরো কাল্পনিক, কেউ বাস্তব কিংবা ধর্মের সাথে তুলনা করবেন না]

#Demon_King#

পর্ব:১৪০

লেখকঃ হৃদয় বাপ্পী
.
.
.

       টাওয়ার অফ গ্লাটোনি,

দেখতে দেখতে এক সপ্তাহ সময় পার হয়ে গেলো কিভাবে কেউ বুঝতেই পারলো না। জয়েন্ট টুর্নামেন্ট শুরু হবে আজ তাই সবাই সেই উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছে। সবাই বলতে তিন কিংডমের প্রায় অধিকাংশ ব্যক্তিই এই জয়েন্ট টুর্নামেন্ট দেখার জন্য রওনা দিয়েছে। জয়েন্ট টুর্নামেন্ট এটার নিয়ম শৃঙ্খলা বজায় রাখার সকল দায়িত্ব নিয়েছে সিকরেট কিংডম, যেহেতু সিকরেট কিংডম সব সময় নিরপেক্ষ থাকে তাই এই ব্যাপারে কারো কোনো আপত্তি ছিলো না। অবশ্য আপত্তি করার কোনো প্রশ্নও এখানে আসে না। দুই কিংডমের কেউই সিকরেট কিংডমের বিপক্ষে যেতে চাইবে না। তাই সিকরেট কিংডম কিছু বললে সেটা তাদেরকে চোখ বুঝেই মান্য করতে হবে।

জয়েন্ট টুর্নামেন্টের ভ্যেনু ঠিক করা হয়েছে টাওয়ারের ১০ তম ফ্লোরের মধ্যে। যেহেতু তিন কিংডমের কোনো একটা জায়গার মধ্যে টুর্নামেন্ট সংগঠিত হলে সেটা সেই কিংডমকে একটা এডভান্টেজ তৈরি করে দিতে পারতো তাই সব বিষয় বিবেচনা করার পরে জয়েন্ট টুর্নামেন্টের এরিনা তৈরি করা হয়েছে ১০ তম ফ্লোরের মধ্যে। টাওয়ারের অর্ধেকের বেশি ফ্লোর ক্লিয়ার অবস্থায় থাকার ফলে আরো উপরে এ টুর্নামেন্টের ব্যবস্থা করা যেতো কিন্তু ছোট ছোট স্টুডেন্ট এবং কম বয়সী হান্টারদের জন্য এই ফ্লোরই যথেষ্ট ছিলো। 

যেহেতু এটা প্রথম জয়েন্ট টুর্নামেন্ট ছিলো তাই এর মাঝে তেমন কোনো নিয়ম কানুন এখনো তৈরি করা হয় নি। কিছু নিয়ম কানুন রয়েছে যেগুলো সবাইকেই মানতে হবে, যা এখনো সবাইকে বলা হয় নি। প্রতিটা কিংডম থেকেই তাদের নিজস্ব হান্টার এবং একাডেমির স্টুডেন্ট অংশগ্রহন করছে এই টুর্নামেন্টে। কিংডম ভিত্তিক একটা ইভেন্ট হওয়ার কারণে স্টুডেন্ট এবং হান্টারদের উপরে চাপ অনেকটা রয়েছে। কারন এখানে হারলে তাদের কিংডমের সম্মান নিয়ে টানাটানি হয়ে যাবে। যদিও অফিসিয়াল ভাবে সকল যুদ্ধ বন্ধ করে দিয়েছে সিকরেট কিংডম এখন। কিন্তু লজিকের দিকে দিয়ে বলতে গললে এখন এই টুর্নামেন্টই বিশাল একটা যুদ্ধক্ষেত্রে। যেখানে কোনো কিংডমই হারতে চাইবে না। যাইহোক আসল কথায় আসা যায়। টুর্নামেন্ট শুরু হওয়ার পূর্বে প্রতিটা কিংডম থেকে যেসব টিম তাদের কিংডমকে রিপ্রেজেন্ট করছিলো তাদেরকে ডাকা হয়েছে। বিশাল একটা এরিনা তৈরি করা হয়েছে যেখানে স্পেস ম্যাজিক ব্যবহার হওয়ার কারণে অসংখ্য মানুষের বসার জায়গা ছিলো। কিন্তু বাইরে কিংবা দূর থেকে দেখলে মনে হবে সে জায়গাটা অনেকটাই ছোট জায়গা নিয়ে তৈরি হয়েছে। তিন কিংডমের অধিকাংশ মানুষ এখানে আসার পরও আরো অনেক সিট অবশিষ্ট রয়েছে যা খালি রয়েছে। এছাড়াও টুর্নামেন্টের পুরো এরিনার মাঝে ম্যাজিক স্টোন থাকার কারণে সেগুলো দিয়ে ক্যাপচার হওয়ার ভিডিও গুলো সরাসরি ম্যাজিক বল কিংবা যেকোনো ধরনের প্রজেকশন আইটেমের সাহায্যে দেখার ব্যবস্থাও করা হয়েছে। মাঠের একদম মাঝখানে তিন কিংডমের তিন প্রধান টিম দাঁড়িয়ে ছিলো। তাদের সাথে তিন কিংডমের সকল গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরাও ছিলো। গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি বলতে তিন কিংডমের রয়েল ফ্যামিলির সদস্যরা, একাডেমির শিক্ষকরা, তিন কিংডমের হান্টার এসোসিয়েশন এর কিছু গুরুত্বপূর্ণ হান্টার এবং তাদের সাথে ছিলো তিন কিংডমের প্রধান তিন টিম যাদের মধ্যে রেড কিংডমের প্রিন্স রেড কিংডমকে রিপ্রেজেন্ট করছিলো, ব্লু কিংডমের প্রিন্স ব্লু কিংডমকে রিপ্রেজেন্ট করছিলো এবং সবশেষে সিকরেট কিংডম থেকে একজন মেয়ে রিপ্রেজেন্ট করছিলো যাকে এক দিক দিয়ে প্রিন্সেস বলায় যায়। যেহেতু এই টুর্নামেন্টের হোস্ট সিকরেট কিংডম এবারের জন্য তাই তারা সকল ধরনের ব্যবস্থা করেছে যতটা করা যায়। বাইরে থেকে এরিনাকে ছোট মনে হলেও ভিতরে স্পেস ম্যাজিক ব্যবহারের কারণে পুরো জায়গার আয়তন অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে যেটাকে আরো বৃদ্ধি করা সম্ভব। তবে আপাতোতো সেদিকে না গিয়ে আসল বিষয়ে যাওয়া যাক। পুরো এরিনার চারিদিকে ম্যাজিক স্টোন রয়েছে। অর্ধেকের বেশি ম্যাজিক স্টোন প্রতিটা ভিডিও ক্যাপচার করার জন্য ব্যবহার করা হয়েছে এবং বেশ কিছু রয়েছে যেগুলো ব্যবহার হচ্ছে কথা গুলো অনেক উচ্চস্বরে এবং দূরে পৌঁছানোর জন্য। তিন কিংডমের কিং তাদের ভাষন দিলো প্রথমে, যেটা দ্রুতই শেষ হয়ে গেলো। কারণ তারা এখানে ভাষণ দিতে এবং অন্যরা এখানে শুনতে আসে নি। কথা বলার জন্য একটা ছোট আকারের ম্যাজিক স্টোন তৈরি করা হয়েছে, যেটাকে হাতে দিয়ে কথা বলতে হয়েছে সবাইকে। কিন্তু সিকরেট কিংডমের কুইনের জামার সাথে একটা লাগানো অবস্থায় ছিলো, মারিয়া শুধু তার হাত থেকে কিছুটা এনার্জি সেখানে প্রবেশ করালো। এবার সে তার মিষ্টি গলায় কথা বলতে শুরু করলো।

-> আমি সবাইকে ধন্যবাদ এবং শুভেচ্ছা জানাচ্ছি এখানে আসার জন্য। এই জয়েন্ট টুর্নামেন্ট বাচ্চাদের সময় কাটানোর কিংবা আনন্দ করার একটা ইভেন্ট নয়। বরং এটা রেড এবং ব্লু কিংডমের শত শত বছরের ঝামেলার একটা সমাধান। সবটা সময় তো ইনোসেন্ট মানুষগুলোর জীবনের বিনিময়ে আমরা কিছু হাসিল করতে পারি না তাই না। তাই এখন থেকে এই টুর্নামেন্টই নির্ধারণ করে দিবে টাওয়ারের মধ্যে কারা সবচেয়ে পাওয়ারফুল। ওল্ড জেনারেশনের কেউই এখন কোনো ফাইটে যাবে না। সব কিছু এখন থেকে আমরা ইয়াং জেনারেশনের উপরে ছেড়ে দিবো। কোনো হত্যা ব্যতীত তারা তাদের পাওয়ার দেখাতে পারলে আমরা তাদেরকেই শক্তিশালী হিসেবে ঘোষনা করবো। (মারিয়া)

মারিয়া একটু থেমে নিলো। সে মূলত এই কথাটা বলেছে তিন কিংডমের ডিপ্লোমেটিক সমস্যা সমাধানের জন্য। মূলত এই সময়ে তিন কিংডমের মধ্যেই অনেক ব্যক্তি আছে যারা একে অপরের সাথে যুদ্ধ করে টাওয়ারকে একা শাসন করতে চায়। সিকরেট কিংডম নিউট্রল বসে থাকলেও তাদের মধ্যেও এমন কিছু ব্যক্তি আছে যারা টাওয়ারের সব কিছু একার জন্যই চেয়ে থাকে। তাই মারিয়াকে এখানে পদক্ষেপ নিতে হয়েছে এবং নতুন একটা ব্যবস্থা সে গ্রহন করেছে। যেটা আদৌও কাজে দিবে কিনা সে জানে না। কিন্তু অন্তত সে এটা দ্বারা যুদ্ধকে বন্ধ করতে পেরেছে এটুকুতেই সে খুশি হয়ে আছে।

-> যাক অনেক বললাম এখন আসল কথায় আসা যাক। মূলত আমরা এখানে সবাই একত্রিত হয়েছি জয়েন্ট টুর্নামেন্টের জন্য। যেটা আজ থেকে শুরু হতে যাচ্ছে। আজ থেকে শুরু হতে যাচ্ছে মানে এটা অনেক দিন ব্যাপি চলবে। জানি অনেকেই বোর হবেন, এমনকি ফ্লোর ১ থেকে ১০ এ যাতায়াতেও অনেকটা গোল্ড কয়েনের প্রয়োজন হয়। যেটা সবার জন্য সম্ভব নয়। তাই ১০ তম ফ্লোরে যত রেসিডেন্সি রয়েছে তাদের সব গুলোতে আপনারা ফ্রিতে থাকতে পারবেন। (মারিয়া)

মারিয়া একটু থেমে নিলো, এরকম ভাষন দেওয়ার অভ্যাস তার তেমন একটা নেই। তাই সে একটু নার্ভাস হয়ে আছে। কখন কি বলে ফেলছে সেটা সে নিজেও জানে না। 

-> জয়েন্ট টুর্নামেন্ট মোট পাঁচটা অংশে বিভক্ত হবে। প্রতিটা ভাগকে এক একটা রাউন্ড বলা হবে। এবং কিছু রাউন্ডে বেশ কিছু স্টেজও দেখা যাবে। যারা ব্লু কিংডমের টুর্নামেন্ট দেখেছেন তারা অবশ্যই বুঝতে পারছেন স্টেজ এবং রাউন্ড গুলো কিরকম হতে পারে। কিন্তু একটা জিনিস আমি ক্লিয়ার করি এখানে। এটা মোটেও ব্লু কিংডমের সেই টুর্নামেন্টের মতো হচ্ছে না। আমাদের জয়েন্ট টুর্নামেন্ট ব্লু কিংডমের উক্ত টুর্নামেন্ট থেকে আরো শত গুণ কঠিন এবং কষ্টকর হতে যাচ্ছে। যেখানে একটা স্টুডেন্ট কিংবা হান্টারের একটা ভুলের কারণে পুরো টিম মারা যেতে পারে। আমি ক্লিয়ার করে বলছি, একটা টিমের একজনের ভুলের কারণে পুরো টিম মারা যেতে পারে। এখানে কিন্তু সত্যি কথাটায় বলা হচ্ছে। অবশ্য এভাবে বললে আমাদের স্টুডেন্ট এবং হান্টারগণ বুঝবে কম এবং ভয় বেশি পাবে। তাই আমি সব কিছু ভালো করে বুঝিয়ে দেওয়ার জন্য আমাদের টুর্নামেন্টের রুল মেকার এবং নির্নায়ককে নিয়ম গুলো ভালো করে বুঝিয়ে দেওয়ার জন্য আমন্ত্রণ করলাম। (মারিয়া)

মারিয়ার পাশে দাঁড়িয়ে ছিলো তার রয়েল নাইট এবং হাসবেন্ড এলমন্ড। যে নাইটের ড্রেসে আজকে অনেকটা সুন্দর করে সেজে ছিলো। শুধু কি সে, সেখানে দাঁড়িয়ে থাকা সবাই তাদের বেস্ট পোষাকে দাঁড়িয়ে ছিলো। এলমন্ড তার লুকের ব্যাপারে তেমন গুরুত্ব দেই না। কিন্তু এই দিনটা তার স্ত্রীর জন্য স্পেশাল ছিলো তাই সে ক্যাজুয়াল ড্রেসে এসে এখানে তার স্ত্রীকে লজ্জিত করতে চায় নি। তাই তো সুন্দর করে সেজে এসেছে স্যুট পরে। কিন্তু বিষয়টা মারিয়ার একদমই ভালো লাগে নি। সে এলমন্ডের কানে কানে বলতে লাগলো,

-> তোমাকে কে বলেছে এতো সুন্দর করে সাজতে? আজকে রাত হোক বোঝাবো তোমাকে। (মারিয়া)

মারিয়া কথাটা বলে চুপচাপ পিছনে চলে গেলো। অন্যদিকে এলমন্ড এগিয়ে আসলো সবার থেকে একটু যাতে বাকিরা তাকে দেখতে পারে। পিছন থেকে ব্লু কিংডমের কিং এর হাত থেকে ম্যাজিক স্টোন নিয়ে সিকরেট কিংডমের একজন নাইট সেটা এলমন্ডের হাতে দিতে চাইলো কিন্তু এলমন্ড মুচকি একটা হাসি দিয়ে বলতে লাগলো,

-> এগুলো তো বাচ্চারা ব্যবহার করে। রিয়েল ম্যানদের স্বর তো একটা ভয়ানক বিস্টের মতো হওয়া দরকার যাতে হাজারো মাইল থেকেও সেটা শোনা যায়। (এলমন্ড)

কথাটা বলেই এলমন্ড একটা কাশি দিলো বিশাল কন্ঠে। তাকে কোনো রকম ম্যাজিক স্টোনের ব্যবহার করতে হলো না। বরং সে এমনিতেই তার কন্ঠকে সেই স্টোনের পাওয়ারের থেকে বেশি বৃদ্ধি করে ফেললো। এলমন্ডকে চিল্লাতে হলো না, সে তার স্বাভাবিক কন্ঠেই কথা বলছিলো, তবে সেটা অনেক জোড়ালো শব্দে বের হচ্ছিলো।

-> আমার বেশি কিছু বলতে ভালো লাগে না। তাই সহজেই আমি নিয়ম গুলো শেষ করবো। কেউ না বুঝলে মারা যেতে পারো কিংবা এই টুর্নামেন্ট থেকে চলে যেতে পারো। এটা তিন কিংডমের মধ্যে একটা টুর্নামেন্ট যেটা টাওয়ারের মধ্যে কারা পাওয়ারে থাকবে সেটা নির্ধারণ করবে। যদিও শান্তি চুক্তি তৈরি করা হয়েছে তারপরও একটা কিংডমের পাওয়ার অন্যান্যদের থেকে বেশি না থাকলে এই চুক্তি কখনোই টিকে থাকবে না। আর এটাই টিকিয়ে রাখার জন্য এই টুর্নামেন্টের ব্যবস্থা, যেখানে ইয়াং জেনারেশন তাদের পাওয়ার দেখিয়ে এই টাওয়ারকে থাকার মতো সুন্দর একটা জায়গা তৈরি করবে। আর এই টুর্নামেন্টের মেজর পাওয়ার হাউস হওয়ার বিষয়টা কি এতোটাই সোজা হতে পারে? অবশ্যই না, এতো সহজ হলে তো কেউ মেনে নিবে না জয়ী কিংডমকে। তাই আমাদের জয়েন্ট টুর্নামেন্টকে যতটা কঠিন করা যায় আমরা সেটায় করেছি। আমাদের কুইন বলেছেন এই টুর্নামেন্টে একজনের ভুলের কারণে পুরো টিমের মৃত্যু হতে পারে। হ্যাঁ এখানে তিনি ঠিক বলেছেন, কিন্তু আমি একটা জিনিস ক্লিয়ার করি। কোনো ব্যক্তিই নিয়মের বাইরে কাউকে হত্যা করতে পারবে না। মানে যদি কোনো রাউন্ডে হত্যার শর্ত থাকে তাহলেই একজন ব্যক্তি অন্য কাউকে হত্যা করতে পারবে। শর্ত ব্যতীত যদি কারো হাতে একটা ব্যক্তির জীবন চলে যায় তাহলে তাকে আমার সাথে ফাইট করতে হবে। এই বিষয়টা শুধু যে তার জন্য এমন নয়। টুর্নামেন্টে যে ব্যক্তি নিয়ম ভঙ্গ করবে তাকে আমার সাথে ফাইট করতে হবে। যদি সে আমাকে হারাতে পারে তাহলে আবারো সে টুর্নামেন্টে অংশগ্রহণ করতে পারবে। আর আমাকে না হারাতে পারলে তাকে টুর্নামেন্ট থেকে বের হয়ে যেতে হবে। আমি তোমাদের জায়গায় থাকলে সেই একটা বা দুইটা রাউন্ড নিয়ে চিন্তা করবো না যেখানে হত্যার শর্ত থাকবে, বরং আমি চিন্তা করবো প্রতিটা রাউন্ডেই। কারণ প্রতিটা রাউন্ডেই তোমাদের জীবন ঝুঁকির মধ্যে থাকবে। ১০ তম ফ্লোরের শুধু মাত্র ফ্লোর বসকে হত্যা করা হয়েছিলো একটা কারণেই। কিন্তু এখন এই টুর্নামেন্টের মাধ্যমে তোমাদের ব্যবহার করা হবে বাকি সব মনস্টারকে ক্লিয়ার করতে। এর মানে হয়তো বুঝতেই পারছো। হাজারো, লক্ষ্য লক্ষ্য মনস্টারের সাথে তোমাদের ফাইট করতে হবে, যেখানে মৃত্যু যে কোনো সময় চলে আসতে পারে একটা ভুলের কারণে। (এলমন্ড)

এলমন্ড তার নিয়ম গুলোকে সুন্দর করে বুঝিয়ে দিলো। নিয়মের ভিতরে তেমন কোনো নিয়ম ছিলো না। শুধু হত্যা বিষয়ক জিনিসটা সে বুঝিয়ে দিলো। যেটা প্রথম থেকেই তার জানানো দরকার ছিলো। এলমন্ড বুঝতে পারলো তার সামনে দাঁড়িয়ে থাকা তিন টিমের মনের মধ্যেই ভয় ছিলো। তারপরও তিন টিমের চোখের মধ্যে আলাদা একটা কনফিডেন্স ছিলো যেটা সে পূর্বের কারো মধ্যে দেখে নি।

      ❝এই জেনারেশনের ছেলে-মেয়েরা আসলেই অনেক স্পেশাল।❞ (এলমন্ড ভাবছে)

এলমন্ড আবারো বলতে লাগলো,

-> ঠিক আছে, তাহলে আমি নিয়মকানুনকে এক সাইডে রেখে তোমাদের প্রথম রাউন্ড সম্পর্কে বিস্তারিত বলছি। প্রথম রাউন্ড মোট দুটো স্টেজে বিভক্ত। যেখানে প্রথম স্টেজে তোমাদের ড্যানজন ক্লিয়ার করতে হবে। দ্বিতীয় স্টেজ সম্পর্কে প্রথম স্টেজ শেষ হলেই বলে দেওয়া হবে। এখন আসা যাক আমরা রেজাল্ট কিভাবে বের করবো। এখানেই আসল বিষয়। আমরা কোনো রকম পয়েন্ট কিংবা র‍্যাংকিং তোমাদের দিবো না। এমনকি কোনো রকম প্রটেকশনও তোমরা পাবে না। যে জায়গায় প্রবেশ করবে সব জায়গায় ম্যাজিক স্টোন থাকার কারণে প্রতিটা ড্যানজনের ভিতরে কি হচ্ছে সব স্পষ্ট দেখা যাবে। এমনকি ড্যানজনের ভিতরে আমাদের বিশেষ কিছু ফ্যামিলিয়ারও অবস্থান করবে যারা প্রতিটা স্টুডেন্ট এবং হান্টারদের দিকে নজর রাখবে। এখন সবার মনে প্রশ্ন থাকবে তাহলে জয়ী বের করবো কিভাবে আমরা? একটা রাউন্ডের একটা স্টেজে জয়ী টিম বের করা কখনোই সম্ভব না। কিন্তু আমরা প্রতিরা রাউন্ডের প্রতিটা স্টেজেই টিম বাতিল করতে পারি। অবশ্য এখানে আমাদের বাতিল করতে হবে না। ড্যানজনের ভিতরে প্রবেশ করলে তোমরা এমনিতেই বাতিল হয়ে যাবে। এভাবে উপরের স্টেজে এবং রাউন্ডে প্রবেশ করলে পূর্বের থেকে কম টিম অবস্থান করবে। আর প্রথম রাউন্ডের প্রথম স্টেজের জন্য আমরা খুব স্পেশাল একটা ড্যানজন সিলেক্ট করা হয়েছে। এই ড্যানজনের মধ্যে এখনো কোনো ব্যক্তি প্রবেশ করে নি। যেটাকে ধারণা মতেই নাম দেওয়া হয়েছে, "ড্যানজন অফ ড্রিম"। কারো মাথায় যদি অন্য চিন্তা থেকে থাকে তাহলে এখনি বাসায় গিয়ে আম্মুর আঁচলে কান্না করতে বলবো আমি। (এলমন্ড)

এলমন্ড ছোট ছোট বাচ্চাদের সম্মানের আঘাত করলো। তাই রিক্স এবং ভয় থাকার পরেও কেউ বাইরে যাওয়ার চিন্তা করলো না। কারণ তাদের উপরে একাডেমি এবং নিজেদের সম্মান নির্ভর করছিলো এখন। 

এলমন্ড আর কোনো কথা না বলে টুর্নামেন্ট শুরু করে দিলো। টুর্নামেন্ট শুরু হওয়ার সাথে সাথে তিন রিপ্রেজেন্টিভ টিম তাদের কিংডমের অন্যান্য টিমের কাছে চলে গেলো। তারা মূলত এরিনার গ্যালারির নিচের একটা রুমের মধ্যে ছিলো, যেখান থেকে সব কিছু শুনতে পেরেছে। পুরো বিষয়টা লাইভ স্ট্রিম করা হচ্ছিলো ম্যাজিক স্টোন মাধ্যমে যা ম্যাজিকাল বল দ্বারা দেখা যাচ্ছিলো। তাই যারা আসতে পারে নি এই ফ্লোরে তারা বাসায় থেকেই এটা এনজয় করতেছে। তিন কিংডমের সকল টিম তাদের জায়গা মতো চলে যাওয়ার পরই সেখান থেকে সবাই একত্রে টেলিপোর্ট হয়ে গেলো। মূলত তারা যে বিশাল রুমের মধ্যে ছিলো সেটার নিচে টেলিপোর্টেশন সার্কেট আকানো ছিলো, যে সার্কেল তাদের সবাইকে টেলিপোর্ট করে নিয়ে যায় এই রাউন্ডের কাঙ্খিত জায়গাতে। আর এই রাউন্ডের প্রথম স্টেজের কাঙ্খিত জায়গাটা ছিলো "ড্যানজন অফ ড্রিম"। যার ভিতরে কি আছে সেটা কেউই জানে না। তাই এটা অনেক বড় একটা সারপ্রাইজ হতে পারে।

সব গুলো টিম ড্যানজন অফ ড্রিমের বাইরে দাঁড়িয়ে ছিলো। ড্যানজনটা বিশাল একটা পাহাড়ের গায়ে তৈরি হয়েছে। পাহাড়ের গায়ে বিশাল একটা দরজা ছিলো যেখানে প্রবেশ করার মাধ্যমেই এই ড্যানজনে প্রবেশ করা সম্ভব। এতোক্ষণে অনেক টিম সেখানে তাড়াহুরো করে প্রবেশ করা শুরু করে দিয়েছে। কিন্তু বেশ কিছু টিম বসে বসে প্লান তৈরি করছে। এরিনা এবং পুরো টাওয়ারের মধ্য থেকেই সব কিছু লাইভে দেখা যাচ্ছিলো। এরিনার মধ্য থেকে তাদের পছন্দের স্টুডেন্ট এবং হান্টারদের সাপোর্ট শোনা যাচ্ছিলো। ম্যাজিক স্টোনে পছন্দের স্টুডেন্ট কিংবা হান্টারদের দেখার পর সকল দর্শকই চিল্লিয়ে উঠছিলো। যাদের মধ্যে প্রতিটা কিংডমের জনপ্রিয় স্টুডেন্ট এবং হান্টার ছিলো। তারা প্রজেশনের মাধ্যমে তিন কিংডমের প্রিন্স এবং প্রিন্সেসকে দেখে ততটা খুশি হলো না যতটা না তারা এলেক্স এবং স্যামকে দেখে হলো। পুরো টাওয়ারের মধ্যেই এলেক্স এবং স্যামের অনেক ফলোয়ার বৃদ্ধি পেয়েছে টুর্নামেন্টের সেই ফাইটের পর থেকে। তাই তাদের সাপোর্টার বাকি ব্লু কিংডমের একাডেমির স্টুডেন্টদের থেকে একটু বেশি। তবে তাদের সাপোর্টার তো খুব কমই ছিলো। যখন ম্যাজিক স্টোনের প্রজেকশনে একজন হান্টারকে দেখালো তখন পুরো এরিনা কেঁপে উঠলো চিৎকারে। একটা ছেলে জন্য শুধু মেয়েরা নয় বরং কম বয়স্ক ছেলে থেকে বৃদ্ধ বয়স্ক ছেলেরাও চিল্লিয়ে উঠলো। 

সকল ব্যক্তির মাঝে একটা উজ্জ্বল বালক দাঁড়িয়ে ছিলো, যার শরীর থেকে উজ্জ্বল আলোর সাথে কেমন জানি একটা চকমকানি বের হচ্ছিলো। যেটা তার আশেপাশের সকল মেয়েকে আকৃষ্ট করছিলো। শুধু যে মেয়েরা আকৃষ্ট হচ্ছিলো এমন নয়। মেয়েদের সাথে অধিকাংশ ছেলেও আকৃষ্ট হচ্ছিলো তার দিকে। একই অবস্থা এলেক্সের টিম মেম্বারদের সাথেও হয়েছে। এলেক্স আকৃষ্ট না হলেও তার টিম মেম্বারদের মনের মধ্যে সেই হান্টারের জন্য জায়গা চলে আসলো। যেটা লক্ষ্য করে এলেক্স তাদের সবাইকে নিয়ে চলে গেলো ড্যানজনের মধ্যে। তিনটা টিম যেটার মূল লিডার মূলত প্রিন্স হ্যারির হওয়ার কথা ছিলো। কিন্তু সেটাকে ব্যাকগ্রাউন্ডে থেকে স্যাম নিয়ন্ত্রণ করছে এবং সেই টিমের মূল স্ট্রাইকার হিসেবে রয়েছে এলেক্স। যাকে নিয়ে এখন পাঠকদের মনে অনেক প্রশ্ন জাগবে। 


* * * * *

       টাওয়ার অফ স্লোথ,

টাওয়ার অফ স্লোথের মধ্যে সে টাওয়ারের মাস্টার ডিম্যান প্রিন্স অফ স্লোথ এ.কে.এ বেলফেগর রেইনকার্নেট হয়েছে একটা মেয়ের শরীরে। তার রেইনকার্নেট হওয়ার পর থেকে অনেকটা সময় পার হয়ে গিয়েছে এই ওয়ার্ল্ডের মধ্যে। তবে এর মাঝে ঘুম ব্যতীত কোনো জিনিসই করে নি বেলফেগর। একটা সাধারণ মানুষের শরীরে রেইনকার্নেট হওয়ার পরও এতো বিশাল একটা ঘুমের কারণে তার শরীর থেকে আলাদা একটা উজ্জ্বল আলো বের হচ্ছিলো। যেটা তার সৌন্দর্যকে পূর্বের থেকে বৃদ্ধি করে দিচ্ছিলো। টাওয়ারের ১০০ তম ফ্লোরের মধ্যে একটা বিশাল প্যালেসের মধ্যে অবস্থান করছিলো বেলফেগর, যেখানে তার সকল প্রয়োজনের জন্য তার রয়েল মেইড জিরো ছিলো। তবে কখনো কোনো কিছু প্রয়োজন হয় নি বেলফেগরের তাই জিরো অপেক্ষা করে যাচ্ছিলো তার মাস্টারের কখন কি লাগবে এটা শোনার জন্য। তবে তার মাস্টারের জন্য কিছু করার পূর্বেই জিরো তার শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করলো। একটা ছোট ড্যাগার জিরোর মাথা ভেদ করে গেলো। যার কারণে তার শরীর ফ্লোরে পরে গেলো। বেলফেগর এখনো ঘুমের মধ্যে ছিলো, সে এখনো ঘুমিয়ে যাচ্ছিলো। তবে তার সামনে যা হচ্ছিলো তার সবকিছু সে স্পষ্ট দেখতে পারছিলো। তাইতো সে ঘুম অবস্থাতেই বলতে লাগলো,

[মনে হচ্ছে আমার সময় চলে এসেছে এখানে।] (বেলফেগর)

-> তাহলে এতো গুলো ডিম্যান প্রিন্সের মধ্যে একজন বুঝতে পেরেছে তার সাথে কি হতে যাচ্ছে। আমার কাজে বাঁধা দিয়ো না, তাহলে অনেক যন্ত্রনা দায়ক একটা পেতো যাচ্ছো। 

মাস্ক পরা মেয়েটা ভারী একটা কন্ঠে কথাটা বলতে লাগলো,

[হাহাহাহা, কন্সটেলেশন গুলো খুব মজার একটা জিনিস তাই না? তারা কোনো দিন তোমার জীবন অতিবাহিত করে তোমাকে অ্যাভেটার বানানোর পর তোমার পুরো জীবনটায় তাদের বলে স্বিকার করে, তোমার সকল ব্যথা নিজের মনে করে। কিন্তু আসলে কিন্তু তারা কখনো তোমার জন্য ছিলো না সেই জায়গায় যখন তুমি কিছুই করতে পারো নি হাতে হাত ফেলে রেখে। তারা শুধু নিজেদের স্বার্থের জন্য অন্যদের ব্যবহার করতেই জানে। যায়হোক বেশি বলে ফেললাম। অনেকদিন হলো মন খুলে কথা বলি না। আমি আমার জীবন কাটিয়ে ফেলেছি। সেই সাথে আমার মেইডও, আমি আমার মন মতো আমার জীবনটা কাটালেও জিরো আমার জন্য তার জীবনটাকে মনের মতো কাটাতে পারে নি। আমি আমার জীবনের বিনিময়ে তার সুন্দর একটা জীবন চাচ্ছি। যেখানে সব কিছুকে ভুলে গিয়ে সে নতুন করে সব কিছু শুরু করতে পারবে। এটুকু তো পারবেন আপনি তাই না কন্সটেলেশন অফ লাইফ?] (বেলফেগর)

মাস্ক পরা মেয়েটা এগিয়ে গেলো বেলফেগরের দিকে। বেলফেগর এখনো শোয়া অবস্থায় ছিলো। মেয়েটা তার হাত বেলফেগরের মুখের উপরে রাখলো এবং তার শরীরের সকল লাইফ এনার্জি এবজোর্ব করে নিলো।

-> কন্সটেলেশন অফ লাইফ! কতদিন হলো এই নামে আমাকে কেউ ডাকে না? যায়হোক তোমার শেষ ইচ্ছা তো পূর্ণ করায় যায়। কিন্তু তুমি আমার সম্পর্কে যেটা বললে সেটা ভুল ছিলো। সময় আসবে যখন সব কিছু খোলাসা হবে এমনকি আমার অজানা স্মৃতি গুলোও। 

মাস্ক পরা মেয়েটা জিরো নামের মেয়েটার শরীরের কাছে চলে গেলো। তার কাছে চলে যাওয়ার সাথে সাথে সে তার চুটকি বাজালো দুই আঙ্গুলের সাহায্যে। সাথে সাথে জিরো এর মৃত শরীরের ফেটে তার সউল বেরিয়ে আসলো। এবার মাস্ক পরিহিত মেয়েটা জিরো নামক মেয়েটার সউলকে পাঠিয়ে দিলো অন্য কোনো এক ইউনিভার্সে,

-> তাহলে এখন থেকে একটা সাধারণ মানুষ হয়ে নিজের কাটানো শুরু করো। 

এটা বলেই মাস্ক পরা মেয়েটা চলে গেলো সেই জায়গা থেকে। তবে আশ্চর্যের বিষয় টাওয়ার অফ স্লোথ সেভাবেই তার জায়গা মতো দাঁড়িয়ে রইলো।


* * *

To Be Continued 

* * * 

কেমন হলো জানাবেন। 

About the Author

হৃদয় বাপ্পী
Hello Friends, My Name is Bappy and Welcome To Our Website. My Passion is to Share Knowledge With Everyone. Also I am a writer.

2 comments

  1. Nice
  2. Awesome bro, regular dile Valo Hoy akhon irregular e moja pabo nah
Cookie Consent
We serve cookies on this site to analyze traffic, remember your preferences, and optimize your experience.
AdBlock Detected!
We have detected that you are using adblocking plugin in your browser.
The revenue we earn by the advertisements is used to manage this website, we request you to whitelist our website in your adblocking plugin.
Site is Blocked
Sorry! This site is not available in your country.