আসসালামু আলাইকুম। গল্প প্রতি শনিবার, সোমবার এবং বুধবার রাত ১০টা থেকে ১১ টার মধ্যে ওয়েবসাইটে পোস্ট হবে।

Want Premium Membership!

Demon King Part: 220

Please wait 0 seconds...
Scroll Down and click on Go to Link for destination
Congrats! Link is Generated
 [গল্পে ব্যবহৃত অধিকাংশ বিষয়বস্তু কাল্পনিক ও অবাস্তব, বাস্তব বা কোনো ধর্মের সাথে এ গল্পের কোনো সম্পর্ক নেই।]

#Demon_King#


The Beginning

পর্ব:২২০

লেখকঃ হৃদয় বাপ্পী
.
.
.
বড় একটা রুমের মধ্যে এলেক্স বসে মেডিটেশন করছিলো। প্রথম দিকে এটা একটা বিরক্তকর জিনিস হলেও এলেক্স ড্রিম ওয়ার্ল্ডে কতটা সময় মেডিটেশন করেছিলো সেটা সম্পর্কে এখন বলতে পারবে না। তবে একটা কাজ টানা এক বছর করলেই সেটা একজনের অভ্যাসে পরিণত হয়ে যায় আর এলেক্স তো ড্রিম ওয়ার্ল্ডে এক মিলিয়ন বছর কাটিয়েছে, যার কারণে মেডিটেশন করাটাও এখন তার অভ্যাসে এবং প্রতিদিনের ট্রেনিং এ যুক্ত হয়েছে।

-> যদিও এটা নিয়ে আর ভাবতে চাই না, কিন্তু বার বার এই একটা কথায় আমার মাথায় আসছে যতবার আমি তোমাকে দেখছি। আমি সিওর তুমি টেস্টের দুদিন আগেও এমন ছিলে না। কিন্তু এখন ফাইলে তোমার ছবি সহ তোমার আসল চেহারা সব কিছুই চেঞ্জ হয়ে গিয়েছে। যা সবচেয়ে আজব করার বিষয়। (ওজ)

ওজের কথা শুনে এলেক্স সামনে তাকালো। সে উঠে দাঁড়ালো বসা অবস্থা থেকে। ফ্লোরে পরে থাকা মাস্কটা তুলে মুখ ঢেকে নিলো।

-> জানি না কি হচ্ছে, যেসব স্কিল তোমার দেখতে পাচ্ছি তা পূর্বে কখনো দেখি নি। হয়তোবা এটাও কোনো স্কিলের জন্য হচ্ছে। তবে এটা অনেক প্যারাময় একটা স্কিল হবে তোমার জন্য। (ওজ)

ওজের কথা শুনে এলেক্স উল্টো ওজকে বলতে লাগলো,

-> আচ্ছা মাস্টার! সেদিন প্রিন্সিপালকে সম্পূর্ণ আলাদা একটা ব্যক্তি মনে হচ্ছিলো, এটার কারণ কি? (এলেক্স)

এলেক্স মাস্ক দিয়ে মুখ ঢেকে কথাটা ওজকে বললো। এলেক্সের কথা শুনে ওজ মুচকি হাসতে লাগলো,

-> মনে হচ্ছে সময় হয়েছে তোমাকে এক্সব্লক এবং কন্সটেলেশন সম্পর্কে বলার। (ওজ)

-> কন্সটেলেশন! (এলেক্স)

-> শনি নামক একটা গ্রহ রয়েছে, যার চারপাশ দিয়ে একটা রিং এর মতো দেখা যায়। দূর থেকে সেটাকে একটা রিং মনে হলেও কাছ থেকে দেখতে গেলে দেখা যাবে শনি গ্রহের চার পাশ দিয়ে একটা গোল লাইন আকারে লক্ষ লক্ষ ছোট বড় পাথর রয়েছে যারা একসাথে শনির চারপাশ দিয়ে ঘুরে যাচ্ছে। ঠিক এমনি একটা গ্রহের মতো একটা টাওয়ার রয়েছে যার নাম এক্সব্লক। এই টাওয়ারের চারপাশ দিয়েও একটা রিং রয়েছে। লক্ষ লক্ষ ওয়ার্ল্ড এই টাওয়ারের চাশপাশ দিয়ে প্রতিনিয়ত ঘুরে বেরাচ্ছে। আর সে লক্ষ লক্ষ ওয়ার্ল্ডের মধ্যে আমাদের পৃথিবী একটা। এক্সব্লকের মধ্যে অনেক অজানা জিনিস রয়েছে যা সম্পর্কে আমরা জানি না। কিন্তু একটা জিনিস সম্পর্কে আমরা জানি যেটা হলো কন্সটেলেশন। এক্সব্লকের শক্তিশালী কিছু বিয়িং যারা আমাদের থেকে অনেক দূরে থাকা সত্ত্বেও আমাদেরকে তাদের পাওয়ার প্রদান করতে পারে, এদেরকে কন্সটেলেশন বলা হয়। যারা কন্সটেলেশনদের সাথে কন্ট্রাক তৈরি করে তাদেরকে অ্যাভেটার বলা হয়। অ্যাভেটার গুলো তাদের কন্সটেলেশনের পাওয়ার ব্যবহার করে অনেক দ্রুত শক্তিশালী হয়ে উঠে। এখন তুমি যেহেতু বলেছো প্রিন্সিপালের ব্যবহার অন্য রকম ছিলো, এটার কারণ হলো প্রিন্সিপালের কন্সটেলেশন। প্রতিটা ব্যক্তি যেসব কন্সটেলেশনের অ্যাভেটার সেসব কন্সটেলেশন চাইলে কিছু সময়ের জন্য কিংবা সব সময়ের জন্য তাদের অ্যাভেটারের শরীরকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে। এই স্কিলকে প্রসেস বলা হয়। (ওজ)

ওজের কথা মনোযোগ দিয়ে শুনলো এলেক্স। ওজ আবারো বলতে লাগলো,

-> তো এলেক্স তোমার কাছে আমার একটা প্রশ্ন। ধরো তোমার কাছে দুটো রাস্তা রয়েছে। প্রথমত দিন রাত দিয়ে ১৫ বছর ট্রেনিং করে শক্তিশালী হতে পারবে, আর দ্বিতীয়ত ত্রিশ বছর ট্রেনিং করে যতটা শক্তিশালী হতে পারবে তা এক পলকের মধ্যেই হয়ে যাবে একটা কন্সটেলেশনের সাথে কন্ট্রাক তৈরি করে। এখন তুমি কোনটা বেছে নিবে? (ওজ)

ওজের প্রশ্নটা শুনে এলেক্স কিছুক্ষণ চুপ রইলো। এই সময়ে ওজ ভাবছে,

❝দেখা যাক তোমার কিরকম চিন্তা ভাবনা হলো কন্সটেলেশন সম্পর্কে।❞ (ওজ ভাবছে)

এলেক্স এবার উত্তর দিতে শুরু করলো,

-> যেহেতু কন্সটেলেশনদের সাথে কন্ট্রাক তৈরি করলে তারা আমাদের শরীরকে যখন ইচ্ছা তখন কন্ট্রোল করতে পারবে তাই আমি প্রেফার করবো কন্ট্রাক না করে ৩০ বছর ট্রেনিং করা। এতে করে আমার শরীরটা দিয়ে আমার ইচ্ছার বাইরে কেউ কিছু করাতে পারবে না। (এলেক্স)

এলেক্সের উত্তরটা শুনে ওজ হেঁসে দিলো। 

-> হাহাহা, যদি এরকম চিন্তা ভাবনা যদি আমার প্রথম স্টুডেন্ট করতো তাহলে হয়তো আজ তার থেকেও কিছু শিখতে পারতে। (ওজ)

ওজের চেহারা দেখে এলেক্স বুঝতে পারলো তার মাস্টার চিন্তিত ছিলো কোনো একটা বিষয়ে। যেহেতু তার প্রথম স্টুডেন্টের বিষয়ে প্রথমবার উল্লেখ করলো ওজ এলেক্সের কাছে তাই এলেক্সের উচিত ছিলো ইন্টারেস্ট দেখানোর। কিন্তু এলেক্স বিষয়টা এরিয়ে গেলো।

-> তোমার সাথে কথা বলে আসলেই কোনো মজা নেই। যায়হোক, অনেক বড় একটা ইভেন্ট হয়ে গিয়েছে এই এক মাসে। তুমি তো বালা কিংডম থেকে এসেছো তাই না? (ওজ)

-> জ্বী মাস্টার। (এলেক্স)

-> এরিয়া এক্সের সম্পর্কে তো নিশ্চয় জানার কথা। যেখানে রেড ড্রাগনের বাস। দুদিন আগে এরিয়া এক্সের মধ্যে রেড ড্রাগনকে মৃত পাওয়া গিয়েছে। (ওজ)

-> রেড ড্রাগন! (এলেক্স)

এলেক্সের মনে পরলো তার একটা স্কোর বাকি ছিলো রেড ড্রাগনের সাথে। যদিও সে কোনো রকমের দুঃখ বা রাগ অনুভব করে না রেড ড্রাগনের উপরে, তারপরও কোনো একটা বইয়ে পড়েছিলো কেউ তোমার বাবা মাকে হত্যা করলে তোমারও উচিত তাদের প্রতিশোধ নেওয়া। এলেক্স শুধুমাত্র এই লাইনটা অনুসরণ করছিলো। কিন্তু এখন যেহেতু এলেক্স শুনতে পারলো রেড ড্রাগন মারা গিয়েছে তাই তার প্রয়োজন ছিলো না আর প্রতিশোধ নেওয়ার।

-> আর ওয়ার্ল্ড গভর্নমেন্ট এটার জন্যও দায়ী করছে আমার প্রথম স্টুডেন্টকে। এতোদিন শুধু ওয়ার্ল্ড গভর্নমেন্ট আমাকে চেক দিয়ে রেখেছে, কিন্তু এখন এই কান্ডের পরে নতুন প্রিন্সিপালও আমার প্রতিটা মুভমেন্ট লক্ষ্য করে যাচ্ছে। (ওজ)

-> নতুন প্রিন্সিপাল! (এলেক্স)

এলেক্স অবাক হলো, নতুন প্রিন্সিপাল কেনো আসবে লাক্সে? তখনি আসার কথা যখন পুরাতন প্রিন্সিপাল মারা যাবে বা গুরুতর আহত হবে কিংবা নিজে থেকে চাকরি ছেড়ে দিবে। এলেক্সের সেদিনের কথা মনে পরে গেলো। সেটা মোটেও ভালো একটা সময় ছিলো না কারো জন্য। এরপরে প্রিন্সিপালের সাথে কি হয়েছে সেটা সম্পর্কেও এলেক্স জানে না। 

-> পুরাতন প্রিন্সিপালের স্টেটমেন্ট মতে তুমি গভীর ঘুমে ছিলে যে কারণে সব শিক্ষক এবং অফিসাররা তোমাকে অরিয়েন্টেশন ক্লাসে রেখে চলে গিয়েছিলো। বিষয়টা প্রিন্সিপাল লক্ষ্য করে অরিয়েন্টেশন ক্লাসেই থেকে যায়। ঠিক এরকম সময়ে একটা লেভেল ১০ এর মনস্টার অরিয়েন্টেশন ক্লাসে প্রবেশ করে এবং তোমার উপরে হামলা করতে যায়। প্রিন্সিপাল তখন মনস্টারের সাথে ফাইট করে এবং সেটাকে হত্যা করে, কিন্তু এর ফলে প্রিন্সিপালও অনেক গুরুতর আহত হয়। যেহেতু মনস্টারের লাশ পরে আর খুঁজে পাওয়া যায় নি, তাই এটাও আমার প্রথম স্টুডেন্টের উপরে চাপিয়ে দিয়েছে ওয়ার্ল্ড গভর্নমেন্ট। (ওজ)

ওজের কথা গুলো এলেক্স মনোযোগ দিয়ে শুনে যাচ্ছে।

-> কিন্তু সাজানোর একটা লিমিট থাকে। এতো বাজে স্ক্রিপ্ট নিয়ে তো লেখকও গল্প লেখে না। তারপরও আমি বুঝি না এটা পুরো ওয়ার্ল্ড কিভাবে বিশ্বাস করে নিলো। লেভেল ১০ এর একটা মনস্টার আর কোথাও নয় বরং প্রিন্সিপালের সামনে অরিয়েন্টেশন ক্লাসে প্রবেশ করে হামলা করবে এটা কি ফাজলামো নয়। (ওজ)

-> আমি বুঝতে পারছি আপনি আপনার প্রথম স্টুডেন্ট সম্পর্কে বলতে চাচ্ছেন। (এলেক্স)

এলেক্স লাক্সে আসার পর ভাইস প্রিন্সিপাল ওজের ডাইরেক্ট স্টুডেন্ট হওয়ার পর থেকেই তার মাস্টারের প্রতিটা আচরণ লক্ষ্য করে আসছে। যেহেতু বার বার ওজ তার প্রথম স্টুডেন্টকে কথার মধ্যে নিয়ে আসছিলো তাই এলেক্স বুঝতে পারছে ওজ এলেক্সকে এই বিষয়ে ইন্টারেস্ট দিতে বলছে, কিন্তু এলেক্সকেও ওজ ভালো করে চিনে। এলেক্স এসব বিষয়ে কোনো রকমের ইন্টারেস্ট দিবে না শুধুমাত্র বিষয়টা ট্রেনিং রিলেটেড ব্যতিত। তাই ওজও অবাক হলো এলেক্সের কথা শুনে। ওজ তার প্রথম স্টুডেন্ট সম্পর্কে বলতে যাচ্ছিলো ঠিক এই সময়েই রুমের দরজায় একটা টোকা পরলো। দরজা খুলে ভিতরে লাক্সের নতুন প্রিন্সিপাল প্রবেশ করলেন। 

-> প্রিন্সিপাল! (ওজ)

প্রিন্সিপালের প্রবেশের কারণ ওজ তার প্রথম স্টুডেন্ট সম্পর্কে বলার সুযোগ হারিয়ে ফেললো এলেক্সকে। প্রিন্সিপাল এলিয়ানোর আস্তে আস্তে এলেক্স এবং ভাইস প্রিন্সিপাল ওজের কাছে চলে আসলো এবং বলতে লাগলো,

-> তাহলে এটায় ভাইস প্রিন্সিপাল ওজের ডাইরেক্ট স্টুডেন্ট? বলতে হবে ভাইস প্রিন্সিপাল ওজের চোখ রয়েছে ট্যালেন্টেড ব্যক্তিদের বেছে নেওয়ার। (এলিয়ানোর)

একটা মিষ্টি হাসি দিয়ে এলিয়ানোর কথাটা বললো। ভাইস প্রিন্সিপাল ওজ বলতে লাগলো,

-> হঠাৎ প্রিন্সিপালের আগমন কেনো হলো জানতে পারি? (ওজ)

মুখে হাত দিয়ে আরো একটা হাসি দিয়ে প্রিন্সিপাল বলতে লাগলো,

-> আমার এখানে আসাটা শুধুমাত্র প্রিন্সিপাল হিসেবে লাক্সের একটা স্টুডেন্টকে দেখতে আসা। যেহেতু এলেক্স এতোদিন এবনর্মাল একটা অবস্থায় ছিলো এবং এখন সম্পূর্ণ সুস্থ হয়েছে, তাই এটাও জানাতে এসেছি যে রয়েল ক্লাসের স্টুডেন্ট হিসেবে তাকে অন্যান্যদের মতো ফিল্ড মিশনে অংশগ্রহন করতে হবে। (প্রিন্সিপাল)

-> যেহেতু এখনো টিম তৈরি করা হয় নি, তাই এলেক্সের হাতে এখনো সময় রয়েছে। (ওজ)

-> সেটা ঠিক, কিন্তু তাকে থিওরি ক্লাসে অংশগ্রহন করতে হবে। রয়েল ক্লাসের প্রথম র‍্যাংকিং এ থাকা স্টুডেন্ট যদি প্রতিটা ক্লাসে অনুপস্থিত থাকে তাহলে কি সেটা লাক্সের জন্য অসম্মান নয়? আর তাছাড়া টিম সিলেকশনের কাজটা আপনার উপরে পরেছে মিস্টার ভাইস প্রিন্সিপাল। আমার টেবিলে ফাইল রাখা রয়েছে সেটা নিয়ে আসুন। (প্রিন্সিপাল)

প্রিন্সিপালের কথা শুনে ভাইস প্রিন্সিপালও উঠে পরলো। সে রওনা দিলো প্রিন্সিপালের অফিসের দিকে। এবার এলেক্সের দিকে তাকালো প্রিন্সিপাল।

-> তোমার ফাইলে লেখা রয়েছে ক্রেজি ফাইভ হান্টার গ্রুপের লিডার তোমার আঙ্কেল হয়। এটা কি সত্য? (প্রিন্সিপাল)

প্রিন্সিপালের কথার সাথে সাথে পুরো আবহাওয়া চেঞ্জ হয়ে গেলো চারপাশ দিয়ে। এলেক্সের শরীরের চারপাশ দিয়ে প্রেসার তৈরি হতে শুরু করলো। এলেক্সের কাছে বিষয়টা নতুন নয়। প্রসারে এলেক্সের কিছুই মনে হচ্ছিলো না।

-> জ্বী। (এলেক্স)

প্রিন্সিপাল অবাক হয়ে গেলো। তার প্রদান করা প্রসারে এলেক্স কেনো, লাক্সের কোনো অফিসারও দাড়িয়ে থাকতে পারবে না। 

❝আমি এক মুহুর্তের জন্য আমার এনার্জি রিলিজ করে ছেলেটাকে ফেলে দিতে চেয়েছিলাম। কিন্তু ছেলেটার মুখের এক্সপ্রেশন দেখে মনে হচ্ছে এই এনার্জি ওর জন্য কিছুই না।❞ (প্রিন্সিপাল ভাবছে)

-> আমার নাম এলিয়ানোর। যদিও আমি লাক্সের প্রিন্সিপাল, কিন্তু আমার আরেকটা পরিচয় রয়েছে। স্পিসিজ এসোসিয়েশনের একজন ইন্সপেক্টর আমি। যদিও যে কেসটা ফলো করতেছিলাম সেটা এখন ক্লোজড হয়ে গিয়েছে রেড ড্রাগনের মৃত্যুর কারণে কিন্তু এখনো আমার কিছু প্রশ্ন রয়েছে যেগুলোর উত্তর আমি বের করতে পারি নি, তাই আমি তোমাকে কয়েকটা প্রশ্ন করবো। আশা করবো সঠিক উত্তর দিবে সব গুলো প্রশ্নের।

-> জ্বী চেষ্টা করবো। (এলেক্স)

এলেক্সের কোনো রকমের এক্সপ্রেশন দেখা যাচ্ছিলো না এজন্য প্রিন্সিপাল কিছুটা বিরক্ত হলো। একটা ছেলে যে বয়সের দিক দিয়ে এতেটা ছোট, সে সব সময় হাসি মুখে কিংবা শক্তিশালী কাউকে দেখতে উত্তেজিত কিংবা ভয়ে থাকবে তার কোনো কিছুই এলেক্সের মাঝে দেখা যাচ্ছিলো না।

-> প্রথমত কে তুমি? সকল রেকর্ডে আজ থেকে প্রায় তিন মাস পূর্বে তোমার কোনো চিহ্নই ছিলো না। হঠাৎ করে কোথায় থেকে উদয় হয়েছো? (প্রিন্সিপাল)

প্রিন্সিপালের কথা শুনে এলেক্স বলতে লাগলো,

-> আমার নাম এলেক্স। আমি জন্মের পর থেকে একটা ফোর্টেজের মধ্যে আটক ছিলাম। হয়তো এ কারণেই আমার পূর্বের কোনো রেকর্ড নেই। (এলেক্স)

এলেক্সের কথা শুনে অবাক হয়ে গেলো প্রিন্সিপাল।

❝ফোর্টেজ! যতদূর আমি জানি ১৫ বছর পূর্বে যখন ওয়ার্ল্ড গুলো মার্জ হতে শুরু করলো তার পূর্বেই পৃথিবীর কন্সটেলেশন মানুষকে বাঁচানোর জন্য ফোর্টেজ তৈরি করে পৃথিবীর বিভিন্ন জায়গায়। তখন কার সময়ে যাদের কাছে ফোর্টেজ ছিলো তারা হয়তো পৃথিবীর সবচেয়ে পাওয়ারফুল ব্যক্তি কিংবা সবচেয়ে ধনী ব্যক্তি ছিলো।❞ (প্রিন্সিপাল ভাবছে)

-> তোমার অফিসিয়াল বয়স ১৫, আর তুমি বলতেছো তুমি ফোর্টেজের মধ্যে জীবিত ছিলে ১৫ বছর। তাহলে তোমার বাবা মা কোথায়? (প্রিন্সিপাল)

-> তারা ১৫ বছর পূর্বে ড্রাগনের এট্যাকে মারা গিয়েছেন। (এলেক্স)

❝প্রায় তিন মাস আগে ক্রেজি ফাইভ বাউন্টি হান্টার গ্রুপ এরিয়া এক্সে প্রবেশ করেছিলো। যেহেতু তাদের রেকর্ডও রয়েছে ড্রাগনের ডিম চুরি করার মিশনে, তাই আমি এবার সিওর তারা সেখানে থাকা কোনো ফোর্টেজের লোকেশনও জানতো। এসব বিষয় একসাথে করলে হয়তো ছেলেটার কথার সত্যতা যাচায় করা যায়। তারপরও অনেকটা বিষয় রয়েছে যা ছেলেটার কথা অনুযায়ী মিলছে না।❞ (প্রিন্সিপাল ভাবছে)

হঠাৎ করে প্রিন্সিপাল একটা কথা শুনতে পেলো তার কানে। কথাটা এরকম,

«প্রতিটা ফোর্টেজ বানানোর সময়েই এই পৃথিবীর কন্সটেলেশন গুলো তাদের মধ্যে অনেকটা এনার্জি লুকিয়ে রেখেছিলো। তাহলে নিশ্চয় বুঝতে পারছেন ক্রেজি ফাইভ বাউন্টি হান্টার গ্রুপের হঠাৎ শক্তিশালী হওয়ার কারণ।» 

কথাটায় প্রিন্সিপাল কোনো রকমের কান দিলো না। সে এবার এলেক্সের দিকে তাকালো।

-> আমার শেষ প্রশ্ন। ক্রেজি ফাইভ বাউন্টি হান্টার গ্রুপের সাথে তোমার কি সম্পর্ক? (প্রিন্সিপাল)

-> গ্রুপের লিডার আমার আঙ্কেল হন। (এলেক্স)

প্রিন্সিপাল আবারো এলেক্সকে প্রশ্ন করলো,

-> সে তোমার আঙ্কেল সেটা কাগজে কলমে দেওয়ায় আছে, কিন্তু আমি সেটা শুনতে চাই নি। (প্রিন্সিপাল)

এলেক্স চুপ হয়ে রইলো। সে কোনো রকমের কথা বললো না। তার চুপ হয়ে থাকার কারণে প্রিন্সিপাল মুচকি হেঁসে বলতে লাগলো,

-> আমি তোমার অবস্থা বুঝতে পেরেছি। তাই আর কিছু বলতে হবে না তোমাকে। যেহেতু কেসটা ক্লোজড হয়ে গিয়েছে তাই আমি শুধু কিছু অজানা তথ্য বের করছিলাম। যেহেতু আমি জানতে পেরেছি সেসব তাই এই বিষয়ে তোমাকে আমি বিরক্ত করবো না। (প্রিন্সিপাল)

প্রিন্সিপাল পিছনে ফিরে হেঁটে হেঁটে চলে যেতে লাগলো। কিন্তু দরজায় হাত লাগানোর সাথে সাথে সে বলতে লাগলো,

-> হয়তো তোমার ফোর্টেজ থেকে বের হওয়ার পরেই আমি রেড ড্রাগনের সাথে দেখা করতে গিয়েছিলাম। যদিও এটা অন্যদের চোখে আসবে না কিন্তু এখন তোমার এনার্জির প্রকৃতি দেখে সিওর হলাম। তুমিই ছিলে যে রেড ড্রাগনের একটা শিং ভেঙেছিলো তাই না? (প্রিন্সিপাল)

এলেক্স এবারো কিছু বললো না। এলেক্সের নিরব থাকতে দেখে প্রিন্সিপাল তার উত্তর পেয়ে গেলো। প্রিন্সিপাল রুমের বাইরে প্রবেশ করার পর বলতে লাগলো,

-> ওয়ার্ল্ড গভর্নমেন্ট মনে হয় কিছু একটা জানে যেটা আমাদের থেকে লুকাচ্ছে। (প্রিন্সিপাল)

হঠাৎ প্রিন্সিপালের ছায়া থেকে একটা আওয়াজ আসতে লাগলো,

-> তাহলে কি আমি এই ছেলেটার সম্পর্কে হেডকোয়ার্টারকে জানাবো?

-> না সেটার প্রয়োজন হবে না। আপাতোতো আমরা শুধু দেখতে থাকি পরিস্থিতি কোন দিকে যায়। যেহেতু মার্জের সময় কাছে চলে এসেছে তাই আমাদের এরকম পর্যাপ্ত মনস্টারের প্রয়োজন হবে। (প্রিন্সিপাল)


* * * * * 

রয়েল ক্লাস সামনে,

লাক্সের প্রতি ইয়ারের স্টুডেন্টদের জন্য দুটো ক্লাস থাকে। প্রথমত কমন ক্লাস এবং দ্বিতীয়ত রয়েল ক্লাস। কমন ক্লাসে লাক্সের অধিকাংশ স্টুডেন্ট থাকে এবং এদের লাক্স থেকে বের হওয়ার কোনো অনুমতি থাকে না। যতদিন লাক্সের স্টুডেন্ট হয়ে থাকবে ততদিন কমন ক্লাসের স্টুডেন্টদের লাক্সের মধ্যেই থাকতে হবে। অন্যদিকে রয়েল ক্লাস সম্পূর্ণ ভিন্ন। রয়েল ক্লাসে যেসব স্টুডেন্ট থাকে তারা রয়েল ক্লাসে প্রবেশের এক মাস পর থেকেই লাক্সের বাইরে যেতে পারে। লাক্সের অধীনে থাকা বিভিন্ন ড্যানজন এবং আরো বিভিন্ন মিশনেও যেতে পারে রয়েল ক্লাসের স্টুডেন্ট গুলো। যে কারণে কমন স্টুডেন্টদের থেকে রয়েল ক্লাসের স্টুডেন্ট গুলো বেশি অভিজ্ঞতা অর্জন করে দ্রুত শক্তিশালী হয়ে উঠে। অবশ্য এই একই কারণে রয়েল ক্লাসের প্রায় প্রতিটা স্টুডেন্টদেরই গর্ব বেশি থাকে। তারা তাদের সম্মানের জন্য সব কিছুই করতে রাজি আছে।

যেহেতু এক মাস এলেক্স কোমার মতো একটা অবস্থায় ছিলো তাই তাকে কোনো ক্লাসে অংশগ্রহন করতে হয় নি। কিন্তু আজকে এলেক্স প্রথম রয়েল ক্লাসে অংশগ্রহণ করার জন্য এসেছে।

-> বাথরুম তো এদিকেই ছিলো তাই না? (এলেক্স)

এলেক্স ক্লাসরুমে প্রবেশের পূর্বে বাথরুম দিকে রওনা দিলো। কিছুক্ষণ খোজ করার পর পেয়েও গেলো। বিশাল হল যুক্ত বাথরুম। যার এক কোনায় গোসল করার জায়গা এবং বাকি সাইট গুলোতে টয়লেট রয়েছে ছোট ছোট রুম করে। এলেক্স রুমের দিকে তেমন নজর রাখতে পারলো না। বরং তার নজর আরো একটা জায়গায় পরে গেলো। বাথরুমের হলের একদম মাঝখানে একটা মোটা ছেলে ঘোড়ার অবস্থায় রয়েছে। তার পিঠের উপরে আরো একটা ছেলে বসে আছে। পিঠের উপরে বসে থাকা ছেলেটার হাতে একটা সিগার রয়েছে, যেটা মুখে দিয়ে মাঝে মাঝে টান দিয়ে ধোঁয়া বের করছিলো। তার পিছনে কয়েকটা ছেলে দাঁড়িয়ে ছিলো। সামনে দুটো ছেলে পরে আছে ফ্লোরে। পরে থাকা ছেলেদের অবস্থা তেমন ভালো মনে হচ্ছিলো না। শরীর থেকে ব্লাড বের হয়ে ফ্লোর মাখিয়ে গিয়েছে। এলেক্সের বাথরুমে প্রবেশের সাথে সাথে সবার নজর এলেক্সের উপরে পরলো। সাথে সাথে পিঠের উপরে বসে থাকা সাব্বিরের মুখে একটা হাসি ফুটে উঠলো।

-> হাহাহা, দেখো দেখো আমাদের ক্লাসের ফার্স্ট বয় এসেছে। সবাই তাকে আমার এম্পায়ারে স্বাগতম জানাও। (সাব্বির)

এলেক্স কোনো রকম কথা না বলে সাব্বিরকে ইগনোর করে একটা টয়লেটের দিকে পা বাড়ালো। কিন্তু তখনি পিছন থেকে একটা ছেলে এসে এলেক্সের শার্টের কলার ধরে ফেললো। পিছন থেকে সাব্বির সিগারটা মুখে নিয়ে আরেকটা টান দিয়ে ধোঁয়া বের করে বলতে লাগলো,

-> ফার্স্ট বয় মাই ফুট। আমার তো মনে হচ্ছে ভাইস প্রিন্সিপালের অবৈধ সন্তান তুই। যেহেতু সবাই জানে ভাইস প্রিন্সিপালের এখানে সেখানে মুখ দেওয়ার স্বভাব রয়েছে তাই এটা অবিশ্বাস্য কোনো ব্যাপার নয়। আর ভাইস প্রিন্সিপালের কাছে লাক্সের একটা পরীক্ষার রেজাল্ট নিয়ন্ত্রণ করাটা কষ্টকর কোনো বিষয় না। এখন দেখা যাক আমার এম্পায়ারে কিভাবে তোর অবৈধ বাপ বাঁচায় তোকে। (সাব্বির)

তুই শব্দ ব্যবহার করলাম। যদি আনইজি লাগে পড়তে তাহলে জানাবেন। বরাবরের মতো তুমি ব্যবহার করবো পড়তে খারাপ লাগলে


এলেক্সের কলার যে ধরেছিলো সে তার হাতে সমস্ত এনার্জি সংগ্রহ করলো এবং এলেক্সের মাথা বরাবর একটা পান্স মারলো। এনার্জিতে তার পান্স আলোকিত হয়ে গিয়েছিলো প্রথমে, কিন্তু সেটা এলেক্সের মাথায় স্পর্শ করার পূর্বেই হারিয়ে গেলো। ছেলেটা একদম বিচলিত হয়ে গেলো। পান্সটা এলেক্সের মাথায় লাগলো কিন্তু যে পান্সটা মারলো সে এলেক্সের কলার ছেড়ে দিয়ে পান্স মারা হাতটা ধরে ফ্লোরে পরে গেলো। তার হাতের কব্জি ভেঙে গিয়েছে এবং কোনো ভাবেই সে হাত নারাতে পারছিলো না।

-> হাহাহাহা, মনে হচ্ছে ভাইস প্রিন্সিপাল শক্তিশালী কোনো আর্মার দিয়েছে তোকে। কিন্তু কোনো লাভ হবে না একটু পরেই তোকে আমার পায়ের নিচে পরতে হবে। (সাব্বির)

সাব্বির তার হাতের সিগারটা ফেলে দিলো। এবার তার হাতে থাকা একটা রিং উজ্জ্বল হয়ে গেলো। তার হাতের রিং থেকে একটা আলো বের হয়ে একটা স্পেয়ার চলে আসলো সাব্বিরের হাতে।

-> যদিও এটা আসল আইটেম নয়, তারপরও এটা A ক্লাস আইটেম। এটা স্পেশাল ভাবে তোর জন্য সংগ্রহ করে রেখেছি। আজকে আমি দেখাবো এই সাব্বির কে কেনো বাথরুমের এম্পেরর বলা হয়। (সাব্বির)

সাব্বির দুই হাত উপরে তুলে কথাটা বললো। 

-> ঠিক আছে। (এলেক্স)

এলেক্স কথাটা বলে টয়লেটের মধ্যে চলে গেলো। সে সাব্বিরকে কোনো রকমের গুরুত্বই দিলো না।

-> এই অবৈধ সন্তানটা কি আমাকে ইগনোর করলো মাত্র? (সাব্বির)

এলেক্সের থেকে ইগনোর হয়ে সাব্বিরের মেজাজ গেলো একদম রেগে। সে তার রাগকে কন্ট্রোল করতে না পেরে তার সমস্ত এনার্জি স্পেয়ারে ফোকাস করতে লাগলো,

-> ঠিক আছে, আমি তোর টয়লেট সহ তোকে উড়িয়ে ফেলবো। (সাব্বির)


* * * * *

To Be Continued 


* * * * *

কেমন হলো জানাবেন। 

Post a Comment

Cookie Consent
We serve cookies on this site to analyze traffic, remember your preferences, and optimize your experience.
AdBlock Detected!
We have detected that you are using adblocking plugin in your browser.
The revenue we earn by the advertisements is used to manage this website, we request you to whitelist our website in your adblocking plugin.
Site is Blocked
Sorry! This site is not available in your country.