[গল্পে ব্যবহৃত অধিকাংশ বিষয়বস্তু কাল্পনিক ও অবাস্তব, বাস্তব বা কোনো ধর্মের সাথে এ গল্পের কোনো সম্পর্ক নেই।]
#Demon_King#
The Beginning
পর্ব:২২৭
লেখকঃ হৃদয় বাপ্পী
.
.
.
পুরো ওয়ার্ল্ডের মধ্যে একটা ট্রেন্ডিং নিউজ চলছে। ওয়ার্ল্ডের সবচেয়ে শক্তিশালী হান্টার এবং সবচেয়ে জনপ্রিয় হিরো জুলিয়ান যে কিনা লাক্সের একটা স্টুডেন্টকে নিজের ডাইরেক্ট স্টুডেন্ট হিসেবে গ্রহন করার অফার দিয়েছে। পৃথিবীতে এমন কোনো মানুষ নেই যে এই ব্যাপার টা সম্পর্কে জানে না।
একটা রাস্তার মধ্যে বেশ কিছু ইয়াং ছেলে মেয়েদের মধ্যে কথা হচ্ছিলো। তাদের কথা বার্তা এরকম,
-> ইস, এই এলেক্স নামের ছেলেটা তো আসলেই পৃথিবীর সবচেয়ে লাকি ব্যক্তি। যে জুলিয়ান তার নিজের ছেলেকেই কিছু শিক্ষা দেয় না পার্সোনাল ভাবে, সে এই ছেলেটাকে ডাইরেক্ট স্টুডেন্ট বানানোর অফার দিয়েছে।
-> আমাকে এরকম অফার দিলে তো আমি সাথে সাথে রাজি হয়ে যেতাম। কিন্তু শুনেছি ছেলেটা নাকি কোনো রকমের উত্তর দেই নি।
-> ছেলেটার মাথায় মনে হয় সমস্যা রয়েছে। কিংবা এমনো হতে পারে সে নাম্বার ওয়ান হিরো সম্পর্কে কিছুই জানে না।
-> কিন্তু ছেলেটাও তো জনপ্রিয় হয়ে গিয়েছে রাতা রাতি এই বিষয়ের কারণে। গতকাল তার নামে কোনো রকমের সামাজিক যোগযোগের একাউন্ট ছিলো না, কিন্তু আজকে সকাল থেকেই কয়েক হাজার দেখতে পারছি।
-> তোরা এখনো ফলো করিস নি? আমি তো ফলো করেছি সবচেয়ে বেশি ফলোয়ার রয়েছে যেটায় সেটাতে।
-> হ্যাঁ এটায় আসল আইডি, যদিও নামটা অন্যান্য আইডির সাথে মিলে না কিন্তু এটার মধ্যে দুটো ভিডিও রয়েছে এলেক্সের।
-> দুটো ভিডিও কিন্তু মারাত্মক। জুলিয়ান যে এলেক্সকে স্টুডেন্ট বানাতে চাচ্ছে কেনো আমি বুঝতে পারছি। এই বয়সে একা লেভেল ১,২ এর ড্যানজন ক্লিয়ার করতে পারাটা সবচেয়ে ট্যালেন্টেড ব্যক্তিদের জন্যও কষ্টকর।
-> তারপর আবার শোনা যাচ্ছে লাক্সের এরিয়া এক্সের টেস্টের মধ্যে এলেক্স রেড ড্রাগনের বাচ্চাকে ফ্যামিলিয়ার বানিয়েছে।
-> এটা ফ্যামিলিয়ার নয় বোকা, বন্ডিং হবে। মনে নাই আজকে সকালেই লাক্সের প্রিন্সিপাল একটা ভিডিও দিয়ে এক্সপ্লেইন করলো বিষয় টা।
-> সে যায়হোক মাত্র পনেরো বছরে এতোকিছু করতে পারছে যা অন্যকারো দ্বারা সম্ভব হয় নি, তাই এক বার ভাবো আরো কিছুটা বয়স পার হলে এলেক্স কি করবে।
-> আজ থেকে আমার জুলিয়ানের পরে পছন্দের মানুষ হবে রেড-ফক্স।
ছেলেগুলো কথা বার্তা বলতে বলতে এতোটা অমনোযোগী ছিলো যে কখন তাদের পিছনে আরো পাঁচ জন ব্যক্তি চলে এসেছে সেটা তারা বুঝতেই পারে নি। পাঁচজন ব্যক্তিই লম্বা হুডি সহ পোষাক পরে থাকায় তাদের ভালো মতো কেউ দেখতে পারলো না। তবে তাদেরকে দেখেই ভয়ে কোনো রকমের কথা ছেলেগুলো বলতে পারলো না। পাঁচজনের মধ্য থেকে একজন বলতে লাগলো,
-> তোমরা মানুষেরা আসলেই কোনো কাজের না। নিজেরা শক্তিশালী না হওয়ার চেষ্টা করে সব সময় শক্তিশালীদের পিছনে তাকিয়ে থাকো চোখ বড় করে। কিছুদিন পরে দেখতে পারবে সবার প্রথমে তোমরা মারা যাবে।
লোকটার কথা শুনে আরো ভয় পেয়ে গেলো ছেলেগুলো। তাই পাঁচজনের মধ্য থেকে একজন তার হুডি নামিয়ে ছেলেগুলোর কাছে এগিয়ে এলো। সে একটা মেয়ে ছিলো, তার চেহারা বলতে গেলে অতুলনীয়, যা কখনো ছেলে গুলো সামনে দেখে নি। মেয়েটাকে দেখার সাথে সাথে তাদের ভয় কেটে গেলো। এবার মেয়েটা বলতে লাগলো,
-> তোমরা মানুষেরা আসলেই অনেক দুর্বল। যদি বাচ্চাদেরই এরকম মন দুর্বল থাকে তাহলে তোমাদের বানানো শক্তিশালী হিরো ও দুর্বল হবে। কিছুদিন পরই দেখতে পারবে এই মার্জ হওয়া ওয়ার্ল্ডের মধ্যে সবচেয়ে শক্তিশালী আর কোনো মানুষ থাকবে না। মানুষ এতো দিন সুখে থাকলেও তাদের কঠিন সময় চলে এসেছে।
মেয়েটার মুখে কোনো রকমের এক্সপ্রেশন ছিলো না। এতোক্ষণ তার সৌন্দর্য দেখে ছেলে গুলোর মুগ্ধ হয়ে ভয় কেটে গেলেও এখন আবারো তারা ভয় পেয়ে গেলো। দ্রুত সে জায়গা থেকে তারা পালিয়ে গেলো।
-> এজন্যই আমি প্রথমেই বলেছিলাম, এক্সব্লকে প্রবেশের পূর্বে আমাদের এই মার্জ হওয়া ওয়ার্ল্ডকে নিজেদের করে নেওয়া। এরকম দুর্বল বস্তু দিয়ে এক্সব্লকে কিভাবে টিকে থাকবে আমরা?
তার কথা শুনে হুডি নামানো মেয়েটা বলতে লাগলো,
-> যেহেতু সব কিছু শ্যাডো এবং ভ্যাম্পায়ার লর্ডের সিদ্ধান্ত ছিলো তাই এখানে আমাদের করার কিছু নেই। কিন্তু যেহেতু তারা শুধুমাত্র রেডকে দিয়ে এতোদিন এই ওয়ার্ল্ডের পাওয়ার আমাদের জন্য বজায় রাখার চেষ্টা করেছে তাই আমাদের করার মতো কিছু ছিলোও না। এখন রেডের মৃত্যুর পর ভ্যাম্পায়ার লর্ড নিজেও একশন নিবে তাই শ্যাডো এর আদেশের অপেক্ষা করা আমাদের জন্যও ঠিক হবে না।
-> রেডের মৃত্যুর পরে মানুষেরা আমাদের স্পিসিজকে খুব ছোট করে দেখতে শুরু করেছে। তাদের দেখাতে হবে আসল ভয় কাকে বলে।
* * * * *
একটা গলির মধ্যে,
চারটা লোকট দাঁড়িয়ে আছে। আর একটা লোক বসে আছে। বসা লোকটার সামনে তিনটা মেয়ের লাশ পরে আছে। লোকটার মুখে রক্ত লেগে আছে। মেয়েদের ঘাড়ে দুটো ফুটো দেখা যাচ্ছিলো। লোকটা তার বাকি চারজন লোক যারা দাঁড়িয়ে আছে তাদের উদ্দেশ্যে বলতে লাগলো,
-> মেয়ে গুলো গতকালের মতো নয়। এদের ব্লাড থেকে আমি কম করে হলেও চল্লিশটা ছেলে মানুষের দুর্গন্ধ পাচ্ছি।
চারজনের মধ্য থেকে একজন এবার বলতে লাগলো,
-> লর্ড মেয়ে গুলো নাইটমেয়ারদের মতো কাজ করে বেরাচ্ছিলো, তাই মনে হয় তাদের সাথে অন্য ছেলেদের গন্ধ রয়েছে।
লোকটার কথা শুনে বসে থাকা তাদের লর্ড এবার উঠে দাঁড়ালো। উঠে এবার বলতে লাগলো,
-> না এগুলোতে আমার হচ্ছে না। আরো কম বয়স্ক এবং মজাদার খাবার লাগবে আমার। আর এভাবে লুকিয়ে থাকাও চলবে না আর। তোমরা কি আমাদের কুইনের সাথে যোগাযোগ করেছো?
-> না লর্ড, কুইনের কোনো খোঁজ এখনো পাওয়া যায় নি?
তাদের লর্ড আবারো বলতে লাগলো,
-> কি একটা ঝামেলা। কুইনের সন্ধান পাওয়ার আগ পর্যন্ত আমাদের একটায় মিশন, সব পিওর এবং হাফ ভ্যাম্পায়ারদের জানিয়ে দাও। আমরা এই মার্জ হয়ে যাওয়া ওয়ার্ল্ডের মধ্যে নিজেদের অবস্থান তৈরি করবো। (লর্ড)
* * * * *
লাক্স,
ভাইস প্রিন্সিপাল ওজ একটা চেয়ারের উপরে বসে আছে। সে তাকিয়ে আছে এলেক্সের দিকে যে তার সামনে একটা চেয়ারের মধ্যে বসে আছে।
-> তাহলে তুমি বলতে চাচ্ছো এরিয়া এক্সের মধ্যে প্রবেশ করে ভাগ্যক্রমে রেড ড্রাগনের লেয়ারে প্রবেশ করার পরে রেড ড্রাগন জীবিত হয়ে যায়। এবং রেড ড্রাগন নিজে তার ড্রাগন হার্ট তোমাকে দিয়েছে যেটা ড্রাগনরা কখনোই করে না। এবং সে তার ড্রাগন হার্ট দিয়ে তোমাকে সেটার সাথে তার সন্তানকে দেখে রাখার কথা বলে সম্পূর্ণ ভাবে মারা যায়, আর তুমি ড্রাগনের হার্ট কাঁচা খেয়ে ফেলার কারণে এখন তোমার কোর তৈরি হয়েছে। (ওজ)
-> হ্যাঁ (এলেক্স)
-> আবার লেয়ার থেকে বের হওয়ার পরে তোমার সাথে ড্রাগনের বাচ্চাটার সাথে দেখা হয়, যেটার সাথে বন্ডিং তৈরি হয় এবং সেটার নাম ড্রাকো রাখো তুমি। (ওজ)
-> জ্বী মাস্টার। (এলেক্স)
-> আর সবশেষে জুলিয়ান আসে যে তোমাকে নিজের স্টুডেন্ট বানানোর অফার করে যেটা নিয়ে তুমি কোনো কথা বলো নি? (ওজ)
-> যেহেতু আপনিই বলেছেন আমার আর কিছু শেখার মতো নেই, তাই দ্বিতীয় কোনো মাস্টারের দরকার আমি মনে করি না। তারপরও আপনার আদেশ ব্যতীত আমি কোনো রকমের উত্তর তাকে দিতে পারি নি। (এলেক্স)
এলেক্সের কথা শুনে ওজের মুখে মুচকি একটা হাসি ফুটে উঠলো। সে তার হাসিকে থামাতে না পেরে এখন দাঁত বের করে জোরে জোরেই হাসতে শুরু করলো। সে এলেক্সকে বলতে লাগলো,
-> তাহলে জুলিয়ানের ডাইরেক্ট স্টুডেন্ট হওয়ার কোনো আগ্রহ নেই তোমার? (ওজ)
-> জ্বী না। আপনি আমার মাস্টার, এখন যদি সবচেয়ে শক্তিশালী কন্সটেলেশন এসেও অফার করে এবং বিভিন্ন আইটেম বা রেলিকের লোভ দেখায় তারপরও আমার মত বদলাবে না। (এলেক্স)
এলেক্সের কথা শুনে ওজ ভাবতে শুরু করলো,
❝জুলিয়ান এবার বুঝতে পারবে নিজের পছন্দের জিনিস অন্যরা নিজের করে নিলে কেমন লাগে।❞ (ওজ)
ওজ তার চিন্তায় মগ্ন ছিলো, ঠিক তখনি এলেক্স বিষ্ময়কর একটা প্রশ্ন তুলে দিলো ওজের মুখে।
-> মাস্টার, আমি একটা বিষয় খেয়াল করেছি। এই জুলিয়ান এবং আপনার চেহারা অনেকটা একই রকমের। যদিও তেমন মিল না তারপরও একইরকম মনে হয় আমার। (এলেক্স)
এলেক্সের কথা শুনে ওজের মুখে মুচকি একটা হাসি ফুটে উঠলো আবারো। সে হাসি মুখে বলতে লাগলো,
-> কারণ জুলিয়ান আমার বড় ভাই, এজন্য আমাদের কিছুটা একইরকম দেখা যায় চেহারার দিক দিয়ে। (ওজ)
-> ও, আমিও এটায় মনে করেছিলাম প্রথমে তাকে দেখে। (এলেক্স)
ওজ এবার মনে মনে ভাবতে লাগলো,
❝শুধু আমাদের চেহারা নয় বরং আমাদের চিন্তা ভাবনাও প্রায় একই। যে কারণে আমার যে জিনিস পছন্দ সেটা জুলিয়ানেরও পছন্দ হয়। শুধুমাত্র আমাদের লক্ষ্য ভিন্ন যেখানে আমি ছোট থেকেই আমার পছন্দের জিনিস না পেলে তেমন কিছু মনে করতাম না। অন্যদিকে জুলিয়ান তার পছন্দের জিনিস যতক্ষণ পর্যন্ত না পাবে ততক্ষণ সে তার সম্পূর্ণ চেষ্টা করবে। জুলিয়ান আমিও এবার দেখতে চাই তুই কিভাবে এলেক্সকে রাজি করাতে পারিস।❞ (ওজ ভাবছে)
* * * * *
লাক্সের অরিয়েন্টেশন ক্লাসে,
সব গুলো স্টুডেন্ট একত্রিত হয়েছে। চার ইয়ারের রয়েল এমনকি কমন ক্লাসের সবাই দাড়িয়ে আছে। যেহেতু রয়েল ক্লাস নামেই একটা দামী ভাব বহন করে তাই রয়েল ক্লাসের ছেলে মেয়েরা কমন ক্লাসের ছেলে মেয়েদের সাথে কোনো রকমের কথা বলে না। অধিকাংশই রয়েল ক্লাসের ছেলে মেয়ে কমন ক্লাসের ছেলেমেয়েদের একদম ছোট মনে। প্রথম ইয়ারেও একই রকম বিষয় লক্ষ্য করা যাচ্ছে, এক মাস পূর্বেও যাদের মধ্যে ভালো সম্পর্ক ছিলো এখন দুজনে দুই ক্লাসে থাকার কারণে তাদের মধ্যে আর সেরকম সম্পর্ক নেই, বরং রয়েল ক্লাসের হওয়ার কারণে সে কমন ক্লাসের বন্ধুদের এভোইড করে যাচ্ছে। প্রথম ইয়ারের কিছু কমন ক্লাসের ছেলে মেয়েদের মধ্যে কথা হচ্ছে এরকম,
-> মানুষ যে এভাবে পাল্টে যাবে সেটা ভাবতেই পারি নি। লাক্সে প্রবেশ করার পরে মেয়েটা আমার সাথে সম্পর্ক তৈরি করলো নিজে সাপোর্ট জব-ক্লাসের হওয়ার কারণে। রয়েল ক্লাসের এক্সামের মধ্যে কোনোভাবে টিমে ভালো একজন থাকার কারণে রয়েল ক্লাসে উঠে গিয়ে এখন সে মনে হয় আমাকে চিনেই না।
-> এই ছোট বিষয় নিয়ে চিন্তা করিস নারে ভাই। তোকে বারবার বলেছিলাম ওর সাথে কথা বলিস না। লাক্সে ঢোকার পরে আমার সাথেও কয়েকবার আগ বারিয়ে কথা বলার চেষ্টা করেছিলো। কিন্তু আমি পাত্তা দেই নি কোনো।
-> রয়েল ক্লাস এমনি ভাই, আমরা কম ক্লাস থেকে যদি সামনে বার উঠতে পারি তাহলে আমরাও এমন হয়ে যাবো।
-> একটা মেয়ে হয়ে মেয়েটার কষ্ট আমি বুঝি। রয়েল ক্লাসে ঢুকলে তারা নিজে থেকে কমন ক্লাসের কারো সাথে কথা বলতে পারে না। যদি বলার চেষ্টা করে তাহলে বাকি রয়েল ক্লাসের স্টুডেন্ট গুলো জীবনটা তেজপাতা করে দেয়।
-> তুমি মেয়ে হয়ে মেয়েদের সাপোর্ট নিচ্ছো। তুমি মনে হয় ওর গফ এর চরিত্র সম্পর্কে জানো না। ঠিক আছে সে কথা না বলুক, কিন্তু এভাবে এতো লোকের সামনে আরেকটা রয়েল ক্লাসের ছেলের শরীরের শরীর মিলিয়ে থাকতে হবে কেনো?
-> আরে ভাই তোরা ঝগড়া করিস না। মেয়ে মানুষ তো, এরকম করবেই। তারা যেখানে সুবিধা বেশি পাবে সেখানেই যাবে। আবার সব মেয়েরা যাকে পছন্দ করবে তাকে তোর গফ ও পছন্দ করবে, এটাই মেয়েদের মন।
-> কিন্তু সব মেয়ে এমন নয়।
-> হ্যাঁ এটা আমরা মানলাম সব মেয়ে এক নয়। কিন্তু মেয়ে হয়ে হাজারে কয়টা মেয়ে দেখেছিস যারা এমন নয়? তুই নিজেও তো সেই কাতারে।
ছেলে মেয়েগুলোর পাশেই দাঁড়িয়ে ছিলো এলেক্স। সে নতুন কালারের জামা এবং মাস্ক পরে থাকার কারণে কেউ তাকে চিনতে পারছিলো না। যেহেতু আশেপাশে সামনে থেকে এলেক্সকে খুব কম মানুষই দেখেছে তাই তার চোখ দেখেও কেউ ঠিক করতে পারছিলো না সেটা এলেক্স। কোনো রকমের ঝামেলা ছাড়াই এলেক্স ভিড়ের মাঝে এসে দাঁড়িয়ে পরলো। ঠিক এই সময় স্টেজের উপরে এসে দাঁড়ালো লাক্সের প্রিন্সিপাল। শুধু প্রিন্সিপাল নয় বরং তার সাথে হুট করেই এসেছে ওয়ার্ল্ডের নাম্বার ওয়ান হিরো জুলিয়ান। আজকে জুলিয়ানের এন্ট্রি এর সাথে সাথে পুরো অরিয়েন্টেশন ক্লাসে চিল্লানি শোনা যাচ্ছিলো। সবাই স্লোগান দিচ্ছিলো জুলিয়ানের নাম বলে। ঠিক এই সময়ে হঠাৎ করে পুরো অরিয়েন্টেশন ক্লাসের মধ্যে থাকা সব গুলো স্টুডেন্টের কথা বন্ধ হয়ে গেলো। তাদের কথা বন্ধ হয়ে যাওয়ার একটায় কারণ ছিলো, প্রতিটা স্টুডেন্ট ভিন্ন ভিন্ন ভাবে প্রেসার অনুভব করতে পারছিলো। যেহেতু ভিন্ন ভিন্ন র্যাংকের স্টুডেন্ট ছিলো সেখানে যাদের এক একজনের পাওয়ার কম বেশি রয়েছে, তাই তাদের এনার্জির উপরে ডিপেন্ড করে তাদের উপরে গ্রাভিটি ফোর্স প্রয়োগ হয়েছে। ফোর্সটা এতোটাও বেশি ছিলো না যে তাদের দাঁড়িয়ে থাকতে কষ্ট হবে, কিন্তু তাদের মুখ থেকে এই ফোর্সে কোনো রকমের কথা বের হচ্ছিলো না। জুলিয়ান পিছনে তাকালো, পিছনেই ভাইস প্রিন্সিপাল ওজ দাঁড়িয়ে ছিলো জুলিয়ানের দিকেই। জুলিয়ানকে দেখেই মুচকি একটা হাসি দিলো এবং হাত নারিয়ে হাই জানালো। জুলিয়ান এবার বলতে লাগলো,
-> লাক্সের ভাইস প্রিন্সিপাল মনে হচ্ছে নিজের প্রথম ডাইরেক্ট স্টুডেন্টকে ভিলেন বানানোর পরে এখন কিভাবে স্টুডেন্টদের শাসন করতে হয় সেটা ভালো করেই জানে। (জুলিয়ান)
জুলিয়ানের কথায় ওজ কিছু বললো না, তবে প্রিন্সিপাল বুঝতে পারলো তাদের মধ্যে বেশিক্ষণ কথা বলতে দিলে এখানে একটা ফাইটও হতে পারে তাই সে নিজেই কথা বলতে শুরু করলো।
-> যদিও এটা বলতে আমাদের কাছে খারাপ লাগে, কিন্তু মানুষেরা যেহেতু এভাবেই বুঝতে পারে তাই আমি এভাবেই বলছি, গত এক্সামের ১৪ দিন পর্যন্ত ড্রাগনের বাচ্চাটার রাইট স্পিসিজ এসোসিয়েশনের ছিলো। ড্রাগনের বাচ্চাটাও একটা স্পিসিজের অন্তর্ভুক্ত এবং রেড ড্রাগনের মৃত্যুর মাধ্যমে ড্রাগন স্পিসিজ একশন না নিলেও বাচ্চাটার সাথে কিছু হলে তারা একশন নিতে পারে এটা ভেবে স্পিসিজ এসোসিয়েশন চেয়েছিলো এই ১৪ দিনে কেউ ড্রাগনটার সাথে কন্ট্রাক তৈরি করুক। যদি কোনো মানুষ কন্ট্রাকটা তৈরি করতো তাহলে আরো নিশ্চিতে থাকতে পারতো স্পিসিজ এসোসিয়েশন, কারণ তাতে বাচ্চা ড্রাগনের কন্ট্রাকটর হওয়ার জন্যও মানুষেরা ড্রাগনদের সাথে শত্রুতা এরিয়ে চলতে পারতো। যদি বাচ্চা ড্রাগনের সাথে কেউ কন্ট্রাক তৈরি করে নি এবং কেউ ফ্যামিলিয়ার বানাতে পারে নি তাকে, কিন্তু আমাদের একটা স্টুডেন্ট তার সাথে বন্ড তৈরি করেছে, ফ্যামিলিয়ার কন্ট্রাকের থেকে এই বন্ডিং অনেক ভিন্ন যা আমি পূর্বেও বলেছি, যেখানে ফ্যামিলিয়ার গুলো অনেকটা চাকরের মতো থাকে তাদের মাস্টারের এবং মাস্টারের দেওয়া সকল আদেশ মানতে হয় তাদের। সেখানে একটা বিস্টের সাথে বন্ড তৈরি করলে সেই সম্পর্কটা অনেকটা বন্ধুত্বের মতো হয়। যেহেতু এটা নিয়ে আমি গতকাল বলেছি তাই আর কিছু বলবো না আজকে। তবে আমার মূল টপিক হলো, এই ড্রাগনের বাচ্চা স্পিসিজ এসোসিয়েশনের দখলে ছিলো ১৪ দিনের জন্য এবং স্পিসিজ এসোসিয়েশন কথা দিয়েছিলো কোনো রকমের বিপদ হবে না ড্রাগনের জন্য। কিন্তু যেহেতু এক্সামের মধ্যে ড্রাগটাকে ধরার জন্য অনেক ছেলে মেয়ে একত্রিত হয়েছিলো তাই অনেকেই আহত হয়েছে গুরুতর ভাবে। এজন্য স্পিসিজ এসোসিয়েশন সবাইকে খুশি করানোর জন্য দুটো ব্যবস্থা নিয়েছে। এক্সামে অংশগ্রহন কারী সবাইকে হাই এল্ফের তৈরি লাইফ পোশন্ দান করা হবে যাতে তারা খুশি হয় এবং পুরো লাক্সকে খুশি করার জন্য বিস্ট ওয়ার্ল্ডের দরজা খুলে দিবে স্পিসিজ এসোসিয়েশন। (প্রিন্সিপাল)
প্রিন্সিপালের কথাটা শুনে শুধুমাত্র সব স্টুডেন্ট, অফিসার, এমনকি শিক্ষকরা সহ তার পাশে থাকা জুলিয়ানও অবাক হয়ে গেলো। জুলিয়ানের অবাক হওয়া মুখটা দেখে বোঝা যাচ্ছিলো সে এটা সম্পর্কে পূর্বে জানে না। সে এবার আস্তে আস্তে প্রিন্সিপালকে জিজ্ঞেস করলো,
-> একসাথে এতো গুলো স্টুডেন্টকে কিভাবে স্পিসিজ এসোসিয়েশন বিস্ট ওয়ার্ল্ডে পাঠাবে? (জুলিয়ান)
জুলিয়ানের কথায় প্রিন্সিপালও আস্তে আস্তে বলে জুলিয়ানকে চুপ করিয়ে দিলো,
-> সেটা স্পিসিজ এসোসিয়েশনই ভালো জানে। (প্রিন্সিপাল)
প্রিন্সিপালের কথাটা শুনে জুলিয়ান তার হাতটা শক্ত করে মুঠো করে ধরলো। সে আর কিছু জিজ্ঞেস না করে মুচকি একটা হাসি দিলো। মনে মনে ভাবতে লাগলো এবার,
❝একবার রাউন্ড টেবিলের সব গুলো আইটেম এবং বাকি গোল্ডেন আপেল গুলো আমার হাতে আসুক। তারপর তোমরা সবাই জানতে পারবে রাউন্ড টেবিলের কি ক্ষমতা। তারপরও বিষয়টা আজব।❞ (জুলিয়ান ভাবছে)
জুলিয়ান আরো কিছু ভাবতে যাবে তার পূর্বেই তার সামনে একটা মেসেজ চলে আসলো। মেসেজটা এরকম,
ཌ আমার পাওয়ার দিয়ে আমি তোমাকে কয়েকবার বিস্ট ওয়ার্ল্ডে পাঠিয়েছি, চাইলে যতবার তুমি যেতে চাও আরো ততবার পাঠাতে পারবো, শুধু আমি নয় বাকি কন্সটেলেশন গুলোও পারবে না। কিন্তু হাতে গোনা কয়েকজন উচ্চতর কন্সটেলেশন এবং সুপ্রিম কন্সটেলেশন ব্যতীত কোনো কন্সটেলেশনই পারবে না এতোগুলো ব্যক্তিকে কিংবা অন্য কারো অ্যাভেটারকে বিস্ট ওয়ার্ল্ডে পাঠাতে। মুন কন্সটেলেশনের বানানো বিস্ট ওয়ার্ল্ড কিভাবে কাজ করে এটা আজ পর্যন্ত কোনো কন্সটেলেশনও বের করতে পারে নি। জায়গাটা কি আদৌও এক্সব্লকের ভিতরে না বাইরে সেটা সম্পর্কেও কেউ জানে না। যেহেতু বাইরে থেকে এতো গুলো মানুষকে ঢোকাতে পারছে স্পিসিজ এসোসিয়েশন তাই আমার ধারণা স্পিসিজ এসোসিয়েশনের মধ্যে একজন রয়েছে যার কন্সটেলেশন উচ্চতর লেভেলের এবং বিস্ট ওয়ার্ল্ডের গেইটকিপারের দায়িত্ব পালন করছে। যায়হোক আমি আশা করছি এলেক্স নামের ছেলেটা ভালো কিছু করতে পারবে এই সুযোগের ব্যবহার করে, যেহেতু আমি তাকে আমার পরবর্তী শরীর হিসেবে ব্যবহার করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। তাই তাকে শক্তিশালী হতে হবে আরো। ད
* * * * *
To Be Continued
* * * * *
কেমন হলো জানাবেন।