[গল্পে ব্যবহৃত অধিকাংশ বিষয়বস্তু কাল্পনিক ও অবাস্তব, বাস্তব বা কোনো ধর্মের সাথে এ গল্পের কোনো সম্পর্ক নেই।]
#Demon_King#
The Beginning
পর্ব:২২৯
লেখকঃ হৃদয় বাপ্পী
.
.
.
বিস্ট ওয়ার্ল্ড,
এলেক্স এবং ক্রিস এক সাথে অনেক দূরে চলে এসেছে। এই পর্যন্ত তাদের সামনে অনেক রকমের বিস্ট, এবং স্পিরিট পরেছে। কিন্তু তাদের কোনো টার সাথেই কোনো রকমের ফাইট করতে হয় নি এলেক্স কিংবা ক্রিসকে।
-> একটা বিষয় আমি বুঝতে পারছি না, বিস্ট ওয়ার্ল্ডের বিস্ট এবং স্পিরিট গুলো এতো ভিতু ছিলো সেটা আমার জানা ছিলো না। এই পর্যন্ত যতগুলোর সাথে দেখা হলো আমাদের এট্যাক না করে সেগুলো এভাবে পালিয়ে যাচ্ছে যে তারা ভূত দেখেছে। (ক্রিস)
ক্রিস বুক ফুলিয়ে কথাটা বললো। সে মনে মনে ভাবছে তার মতো বীরপুরুষকে দেখেই হয়তো সব পালিয়ে যাচ্ছিলো।
-> এলেক্স এভাবে তো আমরা একটা ফ্যামিলিয়ারও তৈরি করতে পারবো না। (ক্রিস)
এলেক্স বেশ কিছুক্ষণ যাবৎ লক্ষ্য করছে, এই পর্যন্ত তাদের সামনে আসা প্রতিটা বিস্ট কিংবা স্পিরিট এলেক্সের দিকে তাকানোর সাথে সাথেই পালিয়ে যাচ্ছিলো।
-> তবে আমি অবাক হয়েছি এই জায়গায় এসে। এরিয়া এক্সের মধ্যে যেসব বিস্ট এবং স্পিরিট দেখেছিলাম সেগুলো এইখানের বিস্ট এবং স্পিরিটের কাছে কিছুই না। প্রতিটা বিস্ট একদম দেখতে ইউনিক এবং প্রতিটা স্পিরিটের শরীরের উজ্জ্বলতা আরো বেশি। (ক্রিস)
এলেক্স এখনো কোনো কথা বলছে না। তাই ক্রিস নিজে নিজেই বলতে শুরু করলো,
-> এলেক্স আমরা কি আদৌও কোনো ফ্যামিলিয়ার বানাতে পারবো? (ক্রিস)
এলেক্সের কোনো রকমের কথা না শুনে ক্রিস একই কথা বার বার বলতে শুরু করেছে তা নিজেও খেয়াল করছে না। এলেক্সের থেকে চারপাঁচ হাত দূরে হেঁটে চলে এসেছে ক্রিস। ঠিক এমন সময় নিচে পরে যাওয়ার একটা শব্দ পেলো ক্রিস। সাথে সাথে পিছনে তাকালো।
-> আবারো। (ক্রিস)
ক্রিস এগিয়ে গেলো এলেক্সের কাছে। এলেক্সের হাত ধরে দাঁড় করালো এবং উঁচু করে তাকে পিঠের উপরে তুলে নিলো।
এলেক্সের শরীরের পোষাক গুলো সাধারণ ছিলো এবার, তাই ক্রিসের উঠাতে কোনো রকমের সমস্যা হলো না। এলেক্সকে পিঠে নিয়ে এবার ক্রিস হাঁটতে লাগলো,
-> মাঝে মাঝে অনেক বিরক্ত কর লাগে তোকে তোর এই স্কিলের কারণে। বিরক্ত লাগাটা স্বাভাবিক, এতো গুরুত্বপূর্ণ একটা জায়গায় যেখানে একটা ভুল পদক্ষেপ আমাদের মৃত্যু হতে পারে সেখানে যদি দুজনের মধ্যে একজন ঘুমিয়ে যায় এবং আরেকজনকে পুরো একদিনের জন্য ঘুমানো ব্যক্তিকে পাহারা দিতে হবে তাহলে যেকেউ বিরক্ত হবে। (ক্রিস)
ক্রিস কিছুক্ষণ হাটলো, এরপর আবারো বলতে লাগলো,
-> বিস্টম্যানদের মতো শক্তিশালী বারসার্কার আউটার ওয়ার্ল্ডে কেউ নেই। অন্য জবের স্পিসিজের থেকেও শক্তিশালী হতে চাইলে আমাদের প্রথমে সত্যকারের বারসার্কার হতে হয়। যেখানে একজন বারসার্কারকে সারাজীবন একা থাকতে হয়। ভালোবাসার মতো কেউ থাকে না, বন্ধু বলতে কেউ থাকে না, পরিবার বলতে কেউ থাকে না। আমি সেরকম বারসার্কার হতে চাই না যেখানে আমাকে আমার একাম্ত চিন্তা ভাবনা বাদ দিয়ে সাইকোপ্যাথিক কিলার হতে হবে। হয়তো তোর সাথে দেখা না হলে আমি সে পথেই পা দিতাম। (ক্রিস)
ক্রিস পূর্বের কিছু কথা মনে করতে লাগলো। তার স্বপ্ন ছিলো একজন বারসার্কার হওয়া এবং এক্সব্লকে প্রবেশ করে নিজের নাম এবং স্পিসিজকে অনেক উপরে নিয়ে যাওয়া। কিন্তু একটা বারসার্কার হতে হলে প্রথমে নিজের মধ্যে থেকে ভালো খারাপের চিন্তা ভাবনা দূর করতে হয়। সামনে যেই থাকুক না কেনো, একজন বারসার্কারের মন চাইলো সে তাকে হত্যা করবেই এবং যতক্ষণ না পর্যন্ত নিজে কিংবা তার টার্গেট হত্যা হচ্ছে না আশেপাশে নিজের বাবা মা মারা গেলেও বারসার্কারের মনোযোগ নরবে না। ক্রিস এই পথেই যাত্রা দিচ্ছিলো এবং একজন নামকরা বারসার্কার হওয়ার স্বপ্ন দেখছিলো। কিন্তু তার স্বপ্নটা চেঞ্জ হয়ে যায় সর্ব প্রথম এলেক্সের সাথে দেখা করে। একটা বারসার্কারের কাছে তাদের প্রথম হার সব সময় ভাবায়। ক্রিসকেও লাক্সের প্রথম অরিয়েন্টেশন ক্লাসের পর থেকে রোজ ভাবিয়েছে এলেক্সের বিষয়টা।
-> প্রথম দিন তোর সাথে ফাইট করার সময়ই আমি একটা অন্যরকম অনুভব করেছি। আমার লাইফে আমি অনেক ফাইট করেছি। পনেরো বছর কম সময় হলেও আমি হাজার হাজার ব্যক্তিদের হারিয়েছি। তারা সবাই আমার থেকে অনেক শক্তিশালী ছিলো। কিন্তু তাদের সাথে যতই ফাইট করি, সে ফাইটে আমি কোনো রকম মজা পায় নি। কিন্তু আমার জীবনে সর্বপ্রথম একটা ফাইটে আমি আসল ফাইটের আনন্দ পেয়েছিলাম, আর সেটা তোর সাথে। সেদিন ফাইটের পর আমি অনেক ভেবেছি, আজও ভেবে যাচ্ছি। এটা কিরকম অনুভূতি জানি না কিন্তু আমার মনে হচ্ছে তোর সাথে আমার ডেস্টিনি লেগে আছে। (ক্রিস)
ক্রিস মুচকি একটা হাসি দিলো। আবার সে বলতে লাগলো,
-> যদিও এটা শুনলে মানুষ পাগল বলবে আমাকে, তারপরও আমি একটা স্বপ্ন দেখেছি। যা আমি কাউকে বলতে পারছি না এই সময়ে। কি হবে আমার সাথে সেটা আমি নিজেও জানি না, যেহেতু স্বপ্ন গুলো সব সময় মূল্যহীন হয় তাই আমি এতো কিছু ভাবি না। কিন্তু তারপরও মনের মধ্যে এই একটা অনুভূতি রয়েছে যা আমি সরাতে পারছি না। (ক্রিসের)
ক্রিস নিচের দিকে তাকিয়ে মুচকি মুচকি হাসতে হাসতে সে হাঁটতে লাগলো।
❝তাহলে কথাটা আমি এখনো বলতে পারলাম না। যেহেতু এটা এমন একটা বিষয় যা আমার মুখ থেকে কেউ ঘুমিয়ে থাকলেও বের হচ্ছে না, তাহলে আমি আমার সবটা দিয়ে চেষ্টা করবো এলেক্সের বেস্ট ফ্রেন্ড হয়ে থাকার। হয়তো আমার শেষ ইচ্ছাটা এলেক্স পূর্ণ করবে তাতে করে।❞ (ক্রিস ভাবছে)
নিচের দিকে তাকিয়ে ক্রিস কথাটা ভাবতে লাগলো, ঠিক তখনি চোখের সামনে দুটো চোখ ভেসে উঠলো। ছায়ার মধ্য থেকে দুটো চোখ দেখে ক্রিস একদম ভয় পেয়ে গেলো। সে ভয়ে এলেক্সকে নিয়ে সেখানে ফেলে দিয়ে একটা পান্স মারলো মাটিতে, তার একটা পান্সে মাটি অনেকটা গর্ত হয়ে গেলো।
-> এটা কি কোনো স্পিরিট ছিলো? (ক্রিস)
যেহেতু মাটিতে চোখের মতো দেখেছিলো ক্রিস তাই এটা একটা স্পিরিটই হবে বলে মনে করছে ক্রিস, কিন্তু তার ধারণা ভুল করে দিলো সেটা যখন সে এলেক্সের দিকে তাকালো। এলেক্সের ছায়ার থেকে দুটো চোখ দেখা যাচ্ছিলো।
ཌ আমার কিং ঘুমিয়ে আছে, তারপরও আমি অবাক হলাম যে আমার কিং এর অনুমতি ব্যতীত অন্য কেউ আমাকে দেখতে পারছে।ད
ক্রিস ভয় পেয়ে গেলো এবং একটা পান্স মারতে চাইলো এলেক্সের পাশেই কিন্তু এলেক্স সেখানে ছিলো দেখে সে পান্স না মেরে বলতে লাগলো,
-> স্পিরিট নিজের ভালো চাইলে এলেক্সের থেকে সরে এসে আমার সাথে ফাইট কর। (ক্রিস)
ক্রিসের কথা শোনার পরে ছায়ার মধ্য থেকে একটা হাসার শব্দ শোনা গেলো।
ཌ মনে হচ্ছে আপনি ভুল ধারনা করেছেন। আমি আমার কিং এর শ্যাডো।ད
কথাটা শুনে ক্রিস আশেপাশে কিং কে খুঁজতে লাগলো, কিন্তু কাউকে না পেয়ে সে এলেক্সের দিকেই তাকালো।
-> না না এটা হতে পারে না। এলেক্স আমাকে কখনো বলেই নি ও কোনো কিংডমের কিং। (ক্রিস)
ছায়া থেকে আর এই বিষয় নিয়ে কিছু বোঝানোর মতো কিছু বললো না। বরং,
ཌ আমার মনে হয় আপনি কিছুটা ভুল ধারনা করে আছেন। আমার কিং এর সাথে কারো ডেস্টিনি যুক্ত থাকলে সেটা শত্রুতার হবে। যেহেতু আপনি স্বিকার করছেন আপনি মাস্টারের বেস্ট ফ্রেন্ড হবেন তাই আমার মনে হয় না আমার কিং এর সাথে আপনার কেনো ডেস্টিনি যুক্ত রয়েছে। তবে যেহেতু আপনি আমাকে দেখতে পারছেন আমার কিং এর অনুমতি ছাড়ায় তাই আমার মনে হয় আপনার সাথে আমার কোনো ডেস্টিনি থাকতে পারে।ད
ছায়ার থেকে কথা শুনে ক্রিস একদম বোকা হয়ে গেলো, সে কি বলবে কিছুই ভেবে পাচ্ছিলো না। ছায়াতে থাকা চোখ দুটো কি ছিলো সেটা সম্পর্কেও ক্রিসের কোনো রকমের ধারনা ছিলো না। তবে আবারো ছায়ার মধ্য থেকে একটা কথা আসলো যা শুনে ক্রিসের মাথা গরম হয়ে গেলো।
ཌ ডেস্টিনি সব সময় ভালো জিনিসের থাকে না। যদিও আমার সঠিক কিছু মনে নাই তবে ধারণা করে বলতে পারছি আজ পর্যন্ত আমার সাথে যাদের ডেস্টিনি ছিলো তারা কেউ বেচে নেই। সবাই আমার হাতে মারা গিয়েছে। ད
কথাটা বলেই চোখটা গায়েব হয়ে গেলো ছায়ার মধ্য থেকে। ক্রিস কিছুটা সামনে গিয়ে এবার পা দিয়ে এলেক্সের ছায়ার উপরে লাথি মারতে শুরু করলো। নিজের রাগ কমিয়ে সে কিছুক্ষণ পর আবারো এলেক্সকে পিঠের উপরে তুলে নিলো।
-> জানি না কি সিক্রেট আছে আরো এলেক্সের কাছে। কিন্তু এরকম একটা জিনিস নিয়ে টয়লেটে যায় কিভাবে এলেক্স সেটায় ভাবছি আমি। (ক্রিস)
* * * * *
অন্যদিকে জুলিয়ান এবং অন্যান্য সব স্টুডেন্ট গুলো ফরেস্টের মধ্যে আটকা পরেছিলো। বিশাল বিশাল গাছ জীবন্ত হয়ে তাদের লম্বা এবং মোটা শিকড় দিয়ে এট্যাক করে অন্য স্টুডেন্টকেই মেরে ফেলেছে। ৫শত এর মধ্যে প্রায় ৪০০ স্টুডেন্ট মারা গিয়েছে, যেটা একটু সময়ের মধ্যেই হয়ে যাওয়ার কারণে জুলিয়ানও কিছু করতে পারে নি।
জুলিয়ানের কোনো এট্যাকই বিস্ট ওয়ার্ল্ডের গাছ গুলোকো কাটতে পারে নি, যা তার কাছে অস্বাভাবিক কোনো ব্যাপার ছিলো না। এরপূর্বেও বিস্ট ওয়ার্ল্ডে প্রবেশ করার সুবিধার্তে জুলিয়ান জানে তার লিমিট কতটুকু। গাছগুলোকে ধ্বংস বা হত্যা না করতে পারলেও জুলিয়ান সেগুলোর কয়েকটা পাতলা শিকড় কেটে প্রায় ১০০ স্টুডেন্টের নিয়ে দূরে সরে আসে।
-> গাছ গুলো সাধারণ ছিলো না। সেগুলো স্পিরিট ট্রি ছিলো যেগুলো খুব রেয়ার একটা প্রজাতি। এই ট্রি গুলো জন্ম নেই যখন একটা ফ্যামিলিয়ার মারা যায় বিস্ট ওয়ার্ল্ডের বাইরে। যদিও এটা আমাদের কোনো কাজের নয় কিন্তু এরাই বিস্ট ওয়ার্ল্ডের সৌন্দর্য বজায় রাখে। (জুলিয়ান)
জুলিয়ান বাকি স্টুডেন্টদের আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধি করার জন্য কিছু কথা বলেছে পূর্বে কিন্তু সেগুলো কাজে দেই নি। কেউ তার কথা শোনাতে গুরুত্ব দিচ্ছিলো না। সবাই নিজেদের জীবন বাঁচানোর চিন্তাই করে যাচ্ছে।
-> তোমরা জানো না তবে এখানে মারা গেলেও তোমাদের কিছুই হবে না। যেহেতু আমি গাছ গুলোর সাথে আমার সব দিয়ে ফাইট করতে পারি নি এটায় প্রমান দেয় আমাদের আসল শরীর এখানে নেই, স্পিসিজ এসোসিয়েশন কোনো এক রেলিক কিংবা কোনো এক কন্সটেলেশনের পাওয়ার ব্যবহার করে আমাদের আসল শরীরকে অন্যত্র রেখে আমাদের স্পিরিটকে বিস্ট ওয়ার্ল্ডে পাঠিয়েছে। যে কারণে এখানে আমরা মারা গেলেও সত্যি সত্যি মারা যাবো না। (জুলিয়ান)
জুলিয়ানের কথাটা শুনে সবার নজর এখন জুলিয়ানের দিকে গেলো। তারা চুপ করে রইলো কিছুক্ষণ এরপর একে একে কথা বলতে শুরু করলো।
-> যেহেতু কোনো রেলিক কিংবা শক্তিশালী কন্সটেলেশন এর পিছনে রয়েছে তাই এটা অসম্ভব কোনো ব্যাপার না।
-> তারপরও আমার ভাবতেই কেমন লাগে যে ভূত হয়ে আমরা বিস্ট ওয়ার্ল্ডে ঘুরে বেরাচ্ছি।
-> তাহলে তো কোনো চিন্তার বিষয় নেই।
-> আমি এখানে মারা গেলেও সবচেয়ে শক্তিশালী বিস্টের সাথে কন্ট্রাক তৈরি করবো তাহলে।
-> আমিও বলি, আমাদের সাথে সবচেয়ে শক্তিশালী হিরো স্যার জুলিয়ান থাকতেও কিভাবে সে কিছু করতে পারলো না।
-> লক্ষ্য করে দেখলামও আমিও প্রায় আমার অর্ধেকের মতো পাওয়ার ব্যবহার করতে পারছি না।
-> স্যার জুলিয়ান তো অনেক শক্তিশালী, তাই হয়তো তার পাওয়ার বেশি সিল হয়ে আছে এইখানে।
-> একটু আগে একটা বিড়াল দেখেছিলাম আমাদের সামনে, সেটাকে কি কেউ দেখেছে? আমার তো সেটাকে ভালো লেগেছে।
জুলিয়ান সবার দিকে তাকালো, সবাই এবার কিছুটা আত্মবিশ্বাস ফিরে পেয়েছে। তবে কার থেকে বিড়ালের কথাটা শুনতে পেয়ে জুলিয়ানেরও মনে পরলো একটা বিড়ালের কথা। গাছগুলো নরে উঠার আগে বিড়ালটাকে জুলিয়ানও দেখেছিলো, কিন্তু এখন আশেপাশের কোথাও সেটার কোনো খবর নেই। জুলিয়ান একটা দীর্ঘশ্বাস ফেললো এবং ভাবতে লাগলো,
❝ প্রতিটা কালো বিড়ালই খারাপ ভাগ্য নিয়ে আসে।❞ (জুলিয়ান ভাবছে)
-> ঠিক আছে যেহেতু তোমরা এখনো একশত এর মতো ঠিক ঠাক আছো তাই আমাদের অন্য কোনো চিন্তা আপাতোতো না করে তোমাদের যাদের ফ্যামিলিয়ার নেই তাদেরকে ফ্যামিলিয়ারদের সাথে কন্ট্রাকের ব্যবস্থা করে দেই। (জুলিয়ান)
* * * * *
ক্রিস এলেক্সকে কাধে নিয়ে হাঁটতে হাঁটতে অনেক দূরে চলে এসেছপ। তারপরও এখনো কোনো রকমের বিস্ট কিংবা ফ্যামিলিয়ারকে ধরতে পারে নি তারা। তাই ক্রিস এলেক্সকে একটা গাছের নিচে শুইয়ে দিয়ে নিজেও পাশে বসে একটু বিশ্রাম নিচ্ছে।
-> আজব একটা বিষয়, এখানে আসা হয়েছে আমাদের এক দিনের মতো হয়ে যাবে মনে হচ্ছে। তারপরও এখন পর্যন্ত আমার কোনো রকমের ক্ষুধা লাগছে না কেনো। (ক্রিস)
ক্রিস কথাটা বলে পাশে তাকালো। সে দেখতে পারলো এলেক্স তার গভীর ঘুম থেকে উঠে গিয়েছে। এলেক্স একদম দাঁড়িয়ে পরলো। ঘুম থেকে উঠে যে ক্লান্তি ভাবটা থাকে শরীরে সেটা এলেক্সের মাঝে ছিলো না।
-> স্কিলটা বোরিং না একদম? যেখানে সেখানে ঘুমিয়ে পরে যাস। (ক্রিস)
ক্রিসের কথায় এলেক্স জবাব দিলো,
-> একবার বিরক্ত লেগেছিলো যেখন আমি আমার মিশন কমপ্লিট করতে না পেরেই ঘুমিয়ে গিয়েছিলাম। তবে এখন মনে হচ্ছে আমি আমার স্কিলটাকে আস্তে আস্তে বুঝতে শুরু করেছি। (এলেক্স)
ক্রিস আর কিছু জিজ্ঞাসা করলো না স্কিল সম্পর্কে। সে এলেক্সকে অন্য বিষয়ে বলতে লাগলো,
-> এখনো একটা স্পিরিট বা ফ্যামিলিয়ার ধরতে পারি নি। মনে হচ্ছে আমাদের খালি হাতে যেতে হবে। (ক্রিস)
এলেক্স ক্রিসের কথা শুনলো কিন্তু সেটায় উত্তর না দিয়ে ভাবতে লাগলো,
❝লাক্সে আসার পর থেকে আমার মনে হচ্ছে আমি যে কারণে এসেছি সেটায় করতে পারছি না। এই সময়ে আমার ক্রিসের সাথে না থেকে এলিজাবেথের সাথে থাকার প্রয়োজন ছিলো।❞ (এলেক্স ভাবছে)
এলেক্স এবং ক্রিস আর কিছু বলতে যাবে এমন সময় ক্রিসের নজরে একটা পাখি চলে আসলো। আকাশ দিয়ে আগুনে জ্বলছিলো এমন একটা পাখি দেখতে পারছিলো ক্রিস। সেটা কি তা না জেনেই ক্রিস উঠে দাঁড়ালো। এতেক্ষনের বিস্ট এবং স্পিরিট না ধরতে পারার স্ট্রেস সে পাখিটার উপরে প্রয়োগ করলো। মাটিতে থাকা শক্ত একটা পাথর তুলে সেটাকে এনার্জি প্রয়োগ করে নিজের পুরো শক্তিতে নিক্ষেপ করলো পাখিটার দিকে। পাথরটা পাখিটার একটা পাখার সাথে লেগে একটা পালক ছিঁড়ে ফেললো। পাথর লাগার কারণে পাখিটা একটা পল্টিও দিলো আকাশের উপরে। পাখিটা সেখানেই কিছুক্ষণ ডানা ঝাপটিয়ে উড়তে লাগলো।
-> কাজ সারছে, এতো কিছু রেখে একটা ফিনিক্সকে রাগিয়ে দিলাম মনে হচ্ছে। (ক্রিস)
আগুনে জ্বলতে থাকা পাখিটার একটা পালক আস্তে আস্তে নিচে পরতে লাগলো। সেটা গাছের একটা পাতার সাথে স্পর্শ করার সাথে সাথে বিশাল একটা বিস্ফোরণ তৈরি করলো। পাখিটা দূরে থাকার কারণে পালকটা দূরেই পরেছিলো। যে কারণে ক্রিস এবং এলেক্সের কিছুই হলো মা বিস্ফোরণে, কিন্তু ক্রিস সেটা দেখেই বুঝতে পারলো,
-> এইরকম একটা বিস্ফোরণেই আমাদের শরীর টুকরো টুকরো হয়ে যাবে। এলেক্স ভালোই হয়েছে, মনে হচ্ছে ফিনিক্সটা আমাদের উপরে হামলা করবে না বরং একটা ওয়ার্নিং দিয়েছে। এই সুযোগে আমাদের পালিয়ে যাওয়া উচিত এলেক্স। (ক্রিস)
ক্রিসের মুখে ভয় এবং অবাকের ছাপ দেখা যাচ্ছিলো। অন্যদিকে এলেক্স একদম স্বাভাবিকই ছিলো। এমনিতেই মাস্কের কারনে ক্রিস দেখতে পারছিলো না তারপরও ক্রিস জানে এখন কিরকম মুখ করে আছে এলেক্স। বরাবরের মতোই নিজের কোনো রকমের এক্সপ্রেশন দেখাতে পারছে না এলেক্স। আর ঠিক এই বিষয়টা ক্রিসকে পরিবর্তন করেছে।
❝ নিজের ইমোশন হারাতে পারলে হয়তো আমার আর সাইকোপ্যাথ বারসার্কার হওয়ার কোনো প্রয়োজন ছিলো না। বরং একটা ইমোশনলেস বারসার্কার হতে পারতাম যে তার স্বাভাবিক চিন্তা ভাবনা হারায় না কখনো। ❞ (ক্রিস ভাবছে)
ক্রিসের ভাবনাতে পানি ফেলো দিলো আকাশের পাখিটা। তারা পালিয়ে যেতে চাইলেও পালিয়ে যেতে পারলো না। পাখিটা তার বড় পাখা ঝাপটানো বন্ধ করে দিয়ে এখন সোজা ক্রিসের দিকে তেড়ে আসছিলো। ঠিক ক্রিসের শরীরের কাছে এসে সেটা তার স্পিড কমিয়ে দিয়ে পা দিয়ে এট্যাক করতে গেলো। ক্রিস ভয়ে তার চোখ বন্ধ করে হাত দিয়ে মুখ ঢেকে রেখেছে যেভাবে বক্সিং এর সময় রাখে। এই সময়ে এলেক্স ফুল স্পিডে এগিয়ে আসলো এবং নিজের হাতে হার্ট থেকে কিছুটা এনার্জি বের করলো। হাতটা মুঠো করে ধরলো। ফুল স্পিডে সে ক্রিসকে ধাক্কা মেরে ফেলে দিয়ে ফিনিক্সের বাম পাশে নিজের বাম পা রাখলো। এবার ডান হাতের মুঠো করা ফিস্ট দিয়ে সরাসরি একটা পান্স মারলো যেখানে শুধু হাতকে স্পর্শ করলো এলেক্স ফিনিক্সের শরীরে। সাথে সাথে ফিনিক্সের শরীরের আগুনের কারণে বিস্ফোরণ হতে যাচ্ছিলো, ঠিক এই সময়ে হার্ট থেকে আরো অনেকটা এনার্জি হাতে প্রয়োগ করে এলেক্স তার হাতকে নিচের দিকে নিয়ে আসলে ফিনিক্সকে সহ। এবার মাটির দিকে ফুল ফোর্সে ফেলে দিলো এলেক্স ফিনিক্সকে। এলেক্সের হাত স্পর্শ করার কারণে বিস্ফোরণ হওয়ার আগেই ফিনিক্সের শরীর থেকে অনেক পরিমাণ এনার্জি এলেক্সের হাতে রিং এবজোর্ব করে নিলো, যে কারনে একটা বিস্ফোরণ তৈরি হলেও সেটা এলেক্সের শরীরে কোনো রকমের ক্ষত তৈরি করতে পারে নি। তবে সে বিস্ফোরণটা এলেক্সের হাতের পান্সের কাছে কিছুই ছিলো না। ফিনিক্সটা মাটিতে পরার সাথে সাথে এলেক্সের হাত থেকে উজ্জ্বল আলো বেরিয়ে আসলো। নিচে সেটা যেতে না পারার কারণে এনার্জি আকাশের দিকে রিলিজ হয়ে গেলো। ক্রিস মাটিতে পরে থাকলেও এই দৃশ্যটা না দেখে থাকতে পারলো না। এলেক্সের পান্সের কারণে একটা লাল রঙের এনার্জির ড্রাগন আকাশের দিকে উঠে একটা চিল্লানি দিলো।
❝ ফিনিক্সরা কি এতো দুর্বল হয়ে থাকে? যে একটা ড্রাগন ফিস্টেই এটা সেন্সলেস হয়ে গেলো? না রিংটা একটু বেশি এনার্জি এবজোর্ব করে নিয়েছে?❞ (এলেক্স ভাবছে)
-> আমার মনে হয় এটা তোমার ফ্যামিলিয়ার হিসেবে ভালো হবে ক্রিস। (এলেক্স)
ক্রিস কোনো রকমের কথা বলতে পারছিলো না। সে শুধু অবাক হয়ে তাকিয়ে রইলো। কিছুক্ষণ পর সে নিজেই বলতে লাগলো।
-> কাছ থেকে দেখে এখন বলা যাচ্ছে ফিনিক্সটা একটা বাচ্চা, এ কারণে এটার তেমন স্ট্রেন্থ ছিলো না। মনে হচ্ছে আমিও ফাইট করে এটাকে হারাতে পারতাম। শুধু শুধুই ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম। (ক্রিস)
* * * * *
To Be Continued
* * * * *
কেমন হলো জানাবেন।