[গল্পে ব্যবহৃত অধিকাংশ বিষয়বস্তু কাল্পনিক ও অবাস্তব, বাস্তব বা কোনো ধর্মের সাথে এ গল্পের কোনো সম্পর্ক নেই।]
#Demon_King#
The Beginning
পর্ব:২৭২
লেখকঃ হৃদয় বাপ্পী
.
.
.
বিয়ার গ্রিল্স এর শরীর থেকে বিষ দূর করার পর শরীর দুর্বল হওয়ার কারণে সে ঘুমাচ্ছে। অন্যদিকে তার পাশে বসে আছে তার এসাসিন সঙ্গী। হোটেলের মধ্যে এলেক্সের কোনো নাম গন্ধও নেই। আর পার্সি, সে শুধু জানালার দিকে তাকিয়ে রয়েছে। তাদের এসাসিন সঙ্গী জানেই না যে সেখানে যে পার্সি রয়েছে সেটা শুধু একটা ক্লোন মাত্র।
বাইরে এমন কোনো জায়গা নেই যেখানে মার্সেনারিরা অবস্থান করছে না। তারা অপেক্ষা করছে একটা সুযোগের, যে সুযোগ পেলেই তারা আক্রমন শুরু করে দিবে। আর তাদের মাঝেই হারিয়ে রয়েছে পার্সি। সে নিজেও অপেক্ষা করছিলো মার্সেনারিদের হত্যা করার জন্য।
দুই পক্ষ সঠিক সময়ের অপেক্ষা করছিলো, কিন্তু তাদের অপেক্ষা ভাবনায় পরিবর্তন হলো। অনেকটা দূরে, যেখানে মার্সেনারি কিং এর ম্যানশন থাকার কথা সেখানে বিশাল একটা বিস্ফোরণ হলো। রাতের সময় হলেও চাঁদের আলোতে ভালো ভাবেই সব কিছু দেখা যাচ্ছিলো। তারপরও একটা বিস্ফোরণ দেখার জন্য রাত কিংবা দিনের প্রয়োজন হয় না। যেহেতু সেটা নিজেই আলো তৈরি করে তাই দূর থেকে সবার চোখেই পৌছাতে পারে। মার্সেনারি গুলো তাদের এট্যাকের কথা বাদ দিয়ে, সবাই একসাথে সেদিকে রওনা দিতে শুরু করলো। যেহেতু জায়গাটা তাদের মার্সেনারি কিং এর ম্যানশনের ঔখানে তাই তারা নিশ্চিত মার্সেনারি কিং হয়তো কারো সাথে ফাইট করছিলো।
-> সবাই তারাতাড়ি চল, মার্সেনারি কিং এর ফাইট প্রতিনিয়ত দেখা যায় না।
-> আজকে মিস করলে হয়তো আমরা আবারো কয়েক বছরের মধ্যে তার ফাইট দেখতে পারবো না।
সবাই এই রকম চিন্তা করে সামনের দিকে এগোতে শুরু করলো, সামনে গিয়ে তারা ঠিকই মার্সেনারি কিংকে দেখতে পারলো, কিন্তু তারা যেটা দেখছিলো সেটা বিশ্বাস করতে পারছিলো না তারা। মার্সেনারি কিং এর শরীর থেকে কালো ধোঁয়া বের হচ্ছি, তার চোখ দুটোও কালো হয়ে গিয়েছে। সে একের পর এক মার্সেনারিকে হত্যা করে যাচ্ছে কোনো রকম চিন্তা ছাড়াই।
-> মাই লর্ড, আপনি কি করছেন, শান্ত হন একটু।
কারো কথা মার্সেনারি কিং এর কানে যাচ্ছে না। সে তার স্পেয়ার দিয়ে এক একটা মার্সেনারিকে দ্বিখণ্ডিত করছিলো। প্রতিটা এট্যাকেই বিস্ফোরণ তৈরি হচ্ছিলো যা পুরো শহরের মার্সেনারি গুলোকে একত্রিত করে ফেলেছে। মার্সেনারি কিং তার আশেপাশে থাকা ব্যক্তি গুলোর দিকে তাকালো, তারা ভয়ে রয়েছে। বুঝতে পারছে না কি হচ্ছে এই সময়ে। দূরে মার্সেনারি গুলোর মধ্যে লুকিয়ে থাকা পার্সি বিষয়টা দেখছিলো। মার্সেনারি কিং কে দেখেই সে ভাবতে লাগলো,
❝ লোকটা জীবিত নেই, কোনো ন্যাকরোমেন্সার তাকে হত্যা করেছে মনে হচ্ছে এবং এরপর তার ম্যাজিক দিয়ে জীবিত করেছে। প্রথম ফ্লোরে এই সময়ে এতোটা শক্তিশালী ন্যাকরোমেন্সার থাকার কথা নয় যে এতোটা শক্তিশালী একটা আনডেড নিয়ন্ত্রন করতে পারবে। তবে যেহেতু এবারের টাইমলাইন প্রথম থেকেই চেঞ্জ হচ্ছে তাই আমি বলতে পারবো এটা কার কাজ।❞ (পার্সি ভাবছে)
পার্সি এদিকে সেদিক তাকাচ্ছে। সে খুজে যাচ্ছে একজন ব্যক্তিকে। কিছুটা দূরে থাকা বিশাল ম্যানশনের উপরে তার নজর পরলো। ম্যানশনের উপরে কেউ একজন দাঁড়িয়ে আছে।
❝ হ্যাঁ এটা শুধু তোমার দ্বারায় সম্ভব এলেক্স। যে প্রতিটা ভবিষ্যতে আনডেড দের নিয়ে ভিন্ন ভিন্ন ফ্লোরে রাজত্ব করেছে। এবার তুমি কি করবে এলেক্স, সেটায় আমার দেখার ইচ্ছা।❞ (পার্সি আবারো ভাবছে)
পার্সির ভাবনায় কাটা পরে গেলো, মার্সেনারি কিং তীব্র বেগে এদিকেই আসছিলো। এমন একটা অবস্থায় তার কোনো কিছু করার আছে বলে মনে হলো না। সাথে সাথে সে জায়গা থেকে হারিয়ে গেলো পার্সির ক্লোন। সে ফিরে আসলো হোটেলের রুমে। মূলত তার স্কিলটা জটিল, যেটা তাকে ক্লোন তৈরি করতে দেয়, এবং নিজ ইচ্ছায় সে তার আসল শরীর এবং ক্লোন নির্ধারণ করতে পারে। যে কারণে সে ক্লোন তৈরি করলে সব গুলোই তার ক্লোন হয় এবং সে যেকেনো সময়ে তার যেকোনো ক্লোনকেই প্রধান শরীর হিসেবে নির্ধারণ করতে পারবে। স্কিলটা সম্পর্কে সে একা ছাড়া কেউ জানে না।
-> এক্সবি, মনে হচ্ছে আমাদের কিছুই করতে হবে না। (পার্সি)
পার্সির কথা শুনে এসাসিনটা কিছুই বললো না। সে চুপ করে শুধু শুনে বসে রইলো।
* * *
সকালটা প্রতিটা শহরের জন্য ভালো গেলেও মার্সেনারিদের এই শহরের জন্য মোটেও ভালো যায় নি। পুরো শহর মার্সেনারিদের রক্তাক্ত শরীরে ভেসে রয়েছে। শুধুমাত্র মহিলা এবং বাচ্চারা ব্যতীত যারা গতরাতে জাগ্রত অবস্থায় ছিলো তারা প্রতিটা ব্যক্তি মারা গিয়েছে। আর তাদের হত্যা করেছে এই শহরের লর্ড এবং মার্সেনারিদের লিডার নিজেই।
এলেক্সের ক্যারেজে করে ম্যানশনের থাকা গতরাতের মেয়েরা সিলভার এম্পায়ারের দিকে রওনা দিয়েছে। আর এলেক্স এবং বাকিরা যারা গতদিনে এসেছিলো মার্সেনারিদের এই শহরে তারা এম্পায়ারের ক্যাপিটালের দিকে রওনা দিয়েছে। এক সপ্তাহ সময়ও লাগলো না পুরো এম্পায়ারের মধ্যে গুজব ছড়াতে। সবার মুখে মুখেই একটা কথা এক সপ্তাহ পরে,
-> তোমাদের কি মনে হয় মার্সেনারি কিং পালিয়েছে কেনো সবাইকে হত্যা করে?
-> আমি তো শুনেছি সিলভার থেকে এম্পেরর এর চিঠি নিয়ে একজন প্রবেশ করেছিলো। আমার মনে হয় তাকে হত্যা করে চিঠিটা নিজের করতেই মার্সেনারি কিং সবাইকে হত্যা করেছে।
-> হ্যাঁ আমারও সেটায় মনে হয়। যেহেতু চিঠি সহ সেই ব্যক্তি আর মার্সেনারি কিং দুজনেরই কোনো খবর নেই তাই আমার মনে হয় মার্সেনারি কিং সবাইকে হত্যা করে লুকিয়ে আছে এবং পরিস্থিতি ঠান্ডা হলে চিঠি নিয়ে হাজির হবে এম্পেরর এর কাছে।
-> তোমার কি মনে হয় এম্পেরর তাকে নিজের জনগনকে হত্যা করার জন্য শাস্তি না দিয়ে পুরস্কৃত করবে?
-> অবশ্যই করবে যেহেতু অন্য এম্পায়ারের একজন প্রার্থীর থেকে সে চিঠি নিয়েছে, তাই এম্পেরর নিশ্চয় তাকে পুরস্কৃত করবে। আমাদের এম্পেরর কখনো নিজের প্রজাদের কি হলো সেটা দেখে না। সে চাই অন্য এম্পায়ার থেকে যেনো তার মর্যাদা ও পাওয়ার বেশি উঁচু থাকে।
-> আমরা কি সেটা হতে দিবো? পুরো এম্পায়ার এখন মার্সেনারি কিং কে খুঁজে বেরাচ্ছে, যেহেতু টুর্নামেন্ট শুরু হতে যাচ্ছে তাই মার্সেনারি কিং অবশ্যই ক্যাপিটালে প্রবেশ করবে। আর তখনি আমাদের তাকে ধরতে হবে।
কথাগুলো হচ্ছিলো ক্যাপিটালে প্রবেশের বিশাল গেইটের সামনে। চারজন ব্যক্তি গেইটের সামনে দাঁড়িয়ে রয়েছে, তাদের পরিচয় পত্র গুলো চেক করা হচ্ছিলো। সবার হাতে একটা করে মার্সেনারি কার্ড রয়েছে, যেগুলো দেখছিলো ভালো করে গেইটের রক্ষী গুলো।
-> তাহলে তোমরা বলতে চাচ্ছো তোমরা অন্য শহরে মিশনের জন্য ছিলে?
গেইটের রক্ষক জিজ্ঞেস করলো চারজনকে। যেহেতু প্রতিটা মার্সেনারি এই সময়ে সন্দেহ, আর এমন নয় যে সব মার্সেনারি শুধু মার্সেনারি শহরেই থাকে। প্রতিটা শহরেই তারা বিভিন্ন মিশনের কারণে অবস্থান করে থাকে। রক্ষক গুলো তাদের কার্ড গুলো ভালো করে চেক করছিলো। এমন সময় পিছন থেকে আরেকজন রক্ষক এসে বলতে লাগলো,
-> তোমার কি মনে হয় এরা মার্সেনারি কিং হবে? এরা তো মার্সেনারি কিং এর শরীরের অর্ধেকও না। কার্ড ঠিক থাকলে যেতে দাও এদের, টুর্নামেন্টের জন্য অনেক মানুষ ভীর লাগিয়ে রয়েছে প্রবেশ করার জন্য।
তার কথা শুনে চারজন সহজেই ভিতরে প্রবেশ করতে পারলো। চারজনের মধ্য থেকে বিয়ার গ্রুিল্স মুখ ঢাকা এক্সবি কে বলতে লাগলো,
-> তোমার এই হাতের স্কিলটা তো দারুন। আমাদের সন্দেহ করতেই পারলো না।
চারজনের মধ্যে পার্সি আর বিয়ার গ্রিল্সের মুখে ক্ষতের দাগ রয়েছে যা এক্সবি বানিয়েছে তার স্কিল দিয়ে। তাদের মুখ তেমন ভালো দেখা যাচ্ছে না তাই আর কেউ এক্সবি এবং এলেক্সের মুখ খুলে দেখার চেষ্টা করে নি। তারা ভেবেছিলো তাদের চেহারা আরো খারাপ হবে।
-> গুজবটা আমাদের ভালোই সাহায্য করেছে, আমরা সবার চোখের আড়ালে থেকে এম্পায়ারে চলে আসতে পেরেছি, কিন্তু সবাইকে সাবধান থাকতে হবে, এখানে যেকোনো সময় যেকোনো বিষয় হয়ে যেতে পারে। আমি আর এলেক্স যাবো টুর্নামেন্টের জায়গায় আর তোমরা সাধারণ মানুষের মাঝে মিশে থাকবে। (পার্সি)
পার্সি কথাটা বলতে বলতে এলেক্সের দিকে তাকালো। এলেক্স মাত্রই তাদের পাশে ছিলো, কিন্তু এখন তাকে কোথাও দেখা যাচ্ছে না।
❝আমি ভাবছিলাম এমন কিছুই হবে। এলেক্স আমাদের রেখে পালিয়ে গিয়েছে।❞ (পার্সি ভাবছে)
কিন্তু আসলেই এমন কিছু হয় নি, একটা বড় ক্যারেজ তাদের পাশ দিয়ে যাচ্ছিলো যেটা থেকে তিন চারটা হাত বের হয়ে এলেক্সকে ভিতরে নিয়ে চলে যায়। বিষয়টা এতো দ্রুত হয়ে যে কেউই খেয়াল করে নি সেখান থেকে একটা ব্যক্তি গায়েব হয়েছে।
* * *
ক্যারেজের মধ্যে, একটা মেয়ে বসে আছে। এলেক্সকে সে দেখেছে এবার প্রথম নয়। ক্যাপিটালে আসার পূর্বে একটা শহরে তাদের দেখা হয়েছিলো। বিশাল বড় একটা শহর ছিলো, যেখানে এলেক্সরা মার্সেনারিদের শহরে থাকা টেলিপোর্টেশন পোর্টাল দিয়ে এসেছিলো। ঠিক একই ভাবে একটা কিংডম থেকে মেয়েটাও এসেছিলো সেই একই শহরে। সেখানেই সর্বপ্রথম মেয়েটা এলেক্সকে দেখে। মাস্ক পরা অবস্থায় এলেক্সকে দেখে সে চিনতে না পারলেও মনের ভিতর থেকে সে একটা টান অনুভব করতে পারলো এলেক্সের প্রতি।
❝এটা আজব বিষয়, আমি এই ব্যক্তিকে পূর্বে কখনো দেখেছি বলে আমার মনে হয় না। তারপরও আমার এমন কেনো মনে হচ্ছে আমার খুব পরিচিত একটা মানুষ এটা। আমি বুঝতে পারছি না কি হচ্ছে। কোনো কিছু না ভেবেই আমি তাকে ক্যারেজের মধ্যে তুলে নিয়েছি, জানি না আমার নানা দেখতে পারলে কি বলবে এই বিষয়ে।❞ (মেয়েটা ভাবছে)
কিছুক্ষণ পরেই ক্যারেজটা থেমে গেলো এবং বাইরে থেকে ক্যারেজের ড্রাইভার বলতে লাগলো,
-> লেডি এলিজাবেথ আমরা চলে এসেছি এম্পায়ারের প্যালেসে।
তার কথা শুনে মেয়েটা এবার সিরিয়াস ভাবে ভাবতে লাগলো। এতোক্ষণে ছোট ছোট সাদা বৃত্তের ভিতর থেকে প্রায় দশ বারোটা হাত বের হয়ে সেগুলো এলেক্সকে ধরে রেখেছে। হাত গুলো সাধারণ কোনো হাত ছিলো না। হাত গুলোর স্পর্শের কারণে এলেক্স কোনোভাবেই তার স্ট্রেন্থ এমনকি এনার্জি ব্যবহার করতে পারছিলো না। একদম দুর্বল অসুস্থ ব্যক্তির মতো সে পরে আছে।
❝ কি একটা অবস্থা।❞ (এলেক্স ভাবছে)
* * * * *
To Be Continued
* * * * *
এই মাসে আর মনে হয় না গল্প আসলেও তেমন বেশি একটা বড় হবে, সামনে মাসে পরীক্ষা হওয়ার কারণে সময় কম পাচ্ছি।